হাসিনা
মোদি-ইউনূস বৈঠক: হাসিনাকে বিষোদগারের সুযোগ না দেওয়ার অনুরোধ
বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে যাতে ভারতে বসে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে বিষোদগার করার সুযোগ না দেওয়া হয়, দেশটির কাছে সেই অনুরোধ জানানো হয়েছে বলে দাবি করেছেন প্রধান উপদেষ্টার উচ্চপ্রতিনিধি খলিলুর রহমান।
মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এমন মন্তব্য করেন। গেল ৩ থেকে ৪ এপ্রিল থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককে বিমসটেকের ষষ্ঠ শীর্ষ সম্মেলনের উল্লেখযোগ্য বৈঠক ও সফলতা নিয়ে কথা বলতে এই সংবাদ সম্মেলন হয়েছে। এ সময়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম ও উপ-প্রেসসচিব অপূর্ব জাহাঙ্গীর উপস্থিত ছিলেন।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বৈঠকের সময় শেখ হাসিনাকে ফেরত চেয়েছেন। জবাবে তারা কী বলেছেন, জানতে চাইলে খলিলুর রহমান বলেন, ‘বালাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রত্যার্পণের বিষয়ে আমরা আলোচনা করেছি। বলেছি যে প্রত্যার্পণ সাপেক্ষে তিনি (হাসিনা) দেশ ও সরকারের বিরুদ্ধে যে বিষোদগার করেছেন, সেটার সুযোগ যাতে ভারত সরকার তাকে না দেয়।’
শেখ হাসিনাকে প্রত্যার্পণের বিষয়ে মোদির জবাব কী ছিল, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমরা অনুরোধ করেছি। এ বিষয়ে দুপক্ষ কাজ করবে। ভারতের প্রধানমন্ত্রী স্পষ্টভাবে বলেছেন যে বাংলাদেশের সাথে যে সম্পর্ক সেটা কোনো ব্যক্তি বা দলের সঙ্গে না, এটা রাষ্ট্রে রাষ্ট্রে। আমরাও তা মনে করি। সেই ভিত্তিতে আমরা দুটি রাষ্ট্রের সম্পর্ক এগিয়ে নেব।’
গেল ৪ এপ্রিল ব্যাংককের সাংরিলা হোটেলে ষষ্ঠ বিমসটেক শীর্ষ সম্মেলন শেষে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে বৈঠক হয়েছে প্রধানমন্ত্রী উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের।
সংখ্যালঘুদের দাবিয়ে রাখা ক্ষতিকর
সংখ্যালঘুদের দাবিয়ে রাখার চেষ্টা একটি দেশের জন্য ক্ষতিকারক বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান উপদেষ্টার এই উচ্চপ্রতিনিধি। তিনি বলেন, একপক্ষকে আরেকটি পক্ষের বিরুদ্ধে লাগিয়ে দেওয়া ব্রিটিশদের কাজ।
যখনই ভারতের সঙ্গে আলাপ হয়, তখন বাংলাদেশের সংখ্যালঘু নির্যাতনের বিষয়টি সামনে নিয়ে আসেন তারা। কিন্তু মোদির সঙ্গে বৈঠকে ভারতের সংখ্যালঘু নির্যাতনের বিষয়টি তুলছেন কিনা; প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘সংখ্যালঘুর প্রশ্নটি ব্রিটিশ আমল থেকেই আছে। দুঃখজনক বিষয় হচ্ছে, ব্রিটিশরা চলে গেছেন, কিন্তু সমস্যাটা আমাদের দেশে রয়ে গেছে। এক সম্প্রদায়কে আরেক সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে লাগিয়ে দেওয়া ব্রিটিশদের কাজ। আমরা দুপক্ষই ভুক্তভোগী। আমাদের কোনো লাভ নেই, আমাদের বুঝতে হবে।’
‘কোনো দেশের সংখ্যালঘুদের দাবিয়ে রাখার মানে হচ্ছে, একটি জনগোষ্ঠী মূলস্রোতে আসতে পারছেন না। এটা ক্ষতি। যে দেশে এটা ঘটছে, সেটা তাদের ক্ষতি,’ যোগ করেন তিনি।
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর নানা রকমের ঘটনা ঘটেছে বলে স্বীকার করে তিনি বলেন, ‘আমরা স্বীকার করছি, ৫ আগস্টের পর পাঁচ-সাতদিন সরকার ছিল না। সে সময়ে নানা ঘটনা ঘটেছে। যে দলের পতন ঘটেছে, তাদের হিন্দু-মুসলিম নির্বিশেষে সবার ওপর নানা রকম হামলা হয়েছে। যেটা খুব দুঃখজনক। কারণ আইন হাতে নিয়ে নেওয়া উচিত না।’
তবে এখন সবাই বুঝতে পেরেছেন, সেই আগের অবস্থা নেই। সংখ্যালঘু নির্যাতনের ঘটনা ওই স্কেলে তো ঘটেনি। তবুও আমরা বলবো, আমরা কোনো ধরনের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির অভাব দেখতে চাই না। সরকার সবকিছু করতে পারবে না। আমাদের সামাজিক দায়িত্ববোধেরও একটা বিষয় আছে। আমাদের সবাইকে মিলেই কাজটি করতে হবে। আপনি বলছেন, ভারতে হচ্ছে, ভারতে হচ্ছে বলে আমাদের দেশেও হবে নাকি? আমরা তো সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির একটা উদহারণ বলে নিজেদেরকে অভিহিত করি। সেই কাজটা আমাদের চালিয়ে যেতে হবে।
গঙ্গা পানি চুক্তি নবায়নে আলোচনা
গঙ্গার পানি চুক্তি ২০২৬ সালে শেষ হচ্ছে। সেটা নবায়নে কী উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘যাতে করে আলোচনাগুলো মসৃণভাবে শুরু হয়, সে জন্য আমরা দুপক্ষই যোগাযোগ রাখছি। আমাদের ধারণা, ভারতের কাছ থেকে আমরা এ বিষয়ে ভালো সহযোগিতা পাবো। তিস্তার বিষয়ে তাদের জানিয়েছি। আমাদের দেশের ১৪ শতাংশ তিস্তা অববাহিকায় বসবাস করেন।’
আরও পড়ুন: আরাকানের যুদ্ধাবস্থা নিরসন করেই রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন: খলিলুর রহমান
‘তাদের জীবন-জীবিকা, ভবিষ্যত, ওই অঞ্চলের ইকোলজি সবকিছু নির্ভর করছে পানির সহজলভ্যতার ওপর। পানি নেই, পুরো জায়গাটিই নেই।’
খলিলুর রহমান বলেন, ‘এই তিস্তা অববাহিকায় ন্যূনতম পরিমাণ পানি নিশ্চিত করা বাংলাদেশ সরকারের একটি বিশাল অগ্রাধিকার। ১৪ শতাংশ লোককে একেবারে এ ধরনের পরিস্থিতিতে ঠেলে দিতে পারেন না। সে জন্য আমরা সবার সাথে কথা বলেছি। ভারতকে বলেছি, চুক্তিটি করেন। পাশাপাশি, অন্য বিকল্পগুলোও হাতে রাখতে হবে।’
স্মৃতিকথায় থাকবে অজিত দোভালের সঙ্গে কথোপকথন
৩ এপ্রিল রাতে বিমসটেকের অফিশিয়াল নৈশভোজে ছিলেন আপনারা। সেখানে আপনাকে দেখেছি, ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভালের সঙ্গে মগ্ন হয়ে কথা বলতে। সেখানে আপনাদের মধ্যে কী কথা হয়েছে, প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘অজিত দোভালের সঙ্গে যেদিন কথা বলি, তার দুদিন আগে আমেরিকান ডেপুটি ন্যাশনাল সিকিউরিটি অ্যাডভাইজার অ্যালেক্স এন ওয়ংয়ের সঙ্গে আমার আলাপ হয়। তিনি ফোন করেছিলেন।’
‘সেখানে বিভিন্ন বিষয়াদি নিয়ে কথা হয়েছে। অ্যালেক্স এন কিন্তু চাকরিতে আছেন। কেউ কেউ বলছেন তার চাকরি গেছে। কিন্তু তিনি চাকরিতে আছেন, তিনি ডেপুটি ন্যাশনাল সিকিউরিটি অ্যাডভাইজার এবং তিনি হোয়াইট হাউসে বসেন।’
প্রধান উপদেষ্টার উচ্চপ্রতিনিধি বলেন, ‘দোভালের সঙ্গে অনেকক্ষণ ধরে আলাপ হয়েছে। ঘড়ি ধরে তো আলাপ করিনি। আমরা আলাপে মগ্নই ছিলাম। আমি সব জানাব, আমার স্মৃতিকথায়।’
১১ দিন আগে
স্যাডিস্ট হাসিনাকে আশ্রয় দেওয়া গণতান্ত্রিক দেশের কাছে কাম্য নয়: গোলাম পরওয়ার
দুই শতাধিক মামলার আসামি স্যাডিস্ট শেখ হাসিনাকে আশ্রয় দেওয়া কোনো গণতান্ত্রিক দেশের কাছে কাম্য নয় বলে মন্তব্য করেছেন জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার।
তিনি বলেন, ভারত আমাদের নিকটতম প্রতিবেশী। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সময়ে আমাদের সঙ্গে তাদের কূটনৈতিক সম্পর্ক ঠিক থাকলেও রাজনৈতিক বিভিন্ন কারণে সম্পর্কের টানাপোড়ন ছিল। একটা দেশের সঙ্গে আরেকটা দেশের সম্পর্ক হবে সাম্য ও ন্যায্যতার ভিত্তিতে। কিন্তু, বিগত সময়ে ভারত আমাদের উপর প্রভুত্বসুলভ আচরণ করেছে।
আরও পড়ুন: রাজনীতিবিদদের কাঁদা ছোড়াছুড়ি জনগণ পছন্দ করে না: মিয়া গোলাম পরওয়ার
শনিবার (৫ এপ্রিল) বিকালে খুলনা মহানগরীর আড়ংঘাটা ঈদগাহ ময়দানে থানা জামায়াতে ইসলামী কর্মী সম্মেলন-২০২৫ এ প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
অধ্যাপক গোলাম পরওয়ার বলেন, সীমান্ত হত্যা, তিস্তার পানি চুক্তি, সংখ্যালঘু ইস্যুতে ভারত সবসময় আমাদের সাথে নানা টালবাহানা করে আসছে। ভারত ও তার জনগণ আমাদের শত্রু নয়; কিন্তু ভারতের শাসকদল ক্ষমতাসীন বিজেপি চরম সাম্প্রদায়িক একটা দল।
সম্প্রতি ব্যাংককে অনুষ্ঠিত বিমসটেক সম্মেলনে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর দ্বি-পাক্ষিক বৈঠক আমাদের রাজনীতির জন্য ইতিবাচক বলেও উল্লেখ করেন জামায়াতের এই নেতা।
গোলাম পরওয়ার বলেন, জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতা যখন তাদের ন্যায্য দাবিতে আন্দোলন করছিল, তখন এদেশের ফ্যাসিস্ট ও স্যাডিস্ট শেখ হাসিনা তাদের উপর জুলুম নির্যাতন করে ২ হাজার ছাত্র-জনতাকে হত্যা ও ৩০ হাজারের অধিক জনগণকে আহত করেছে। খুন, গুম, অর্থ পাচারসহ দুই শতাধিক মামলার আসামি স্যাডিস্ট শেখ হাসিনার বিচার আর্ন্তজার্তিক অপরাধ ট্রাইবুনালে শুরু হয়েছে। আদালত তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ও রেড অ্যালার্ট জারি করেছে। এমন একজন অপরাধীকে আশ্রয় দেওয়া কোনো অবস্থাতেই গণতান্ত্রিক দেশের কাছে কাম্য নয়।
বিগত ১৬ বছরকে জুলুম নির্যাতনের এক কালো অধ্যায় উল্লেখ করে সেক্রেটারি জেনারেল বলেন, জামায়াত নির্যাতিত নিপীড়িত মানুষের বন্ধু। মানুষের দুঃখ, দুর্দশা লাঘবে জামায়াত সংগ্রাম করে যাচ্ছে। ইসলামী রাষ্ট্রের যে ধারণা মহান রব কুরআনে উল্লেখ করেছেন জামায়াত সেই আলোকেই বাংলাদেশকে গড়তে চায়। একটি শোষণ, বঞ্চনা ও বৈষম্যহীন একটি রাষ্ট্র গড়বে যা ২৪’র আন্দোলনের ছাত্র-জনতা বুকে ধারণ করে জুলুম নির্যাতন সয়েছে তবুও পিছপা হয়নি। ছাত্ররা নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে যে স্বপ্ন দেখছে— জামায়াত তার সাথে একমত পোষণ করে। অতীতের জুলুম-নির্যাতন দখলদারমুক্ত বাংলাদেশ যদি নির্মাণ করা না যায়— তাহলে আমাদের নতুন প্রজন্মের স্বপ্ন বৃথা যাবে।
আরও পড়ুন: কল্যাণ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে ছাত্র-জনতার ঋণ পরিশোধ করতে হবে: মিয়া গোলাম পরওয়ার
আগামী বছরের জুনে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নির্বাচন অনুষ্ঠানের ঘোষণায় জামায়াতের অংশগ্রহণ প্রসঙ্গে সেক্রেটারি জেনারেল বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধের তিনটি স্তম্ভ- সাম্য, মানবিক মর্যাদা, ও সামাজিক সুবিচার। জামায়াতে ইসলামী এই তিনটিকে ধারণ করে আগামীর বাংলাদেশ গড়বে।
থানা আমির মাওলানা মুনাওয়ার আনসারীর সভাপতিত্বে ও মুহাম্মদ রিয়াজুল ইসলাম এবং মাওলানা মাহদী আল-হাদীর পরিচালনায় বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও খুলনা মহানগরী আমীর অধ্যাপক মাহফুজুর রহমান, কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও খুলনা জেলা আমির মাওলানা এমরান হুসাইন, খুলনা মহানগরী সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট শেখ জাহাঙ্গীর হুসাইন হেলাল, জেলা সেক্রেটারি মুন্সি মিজানুর রহমান, মহানগরী সহকারী সেক্রেটারি প্রিন্সিপাল শেখ জাহাঙ্গীর আলম। শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন মহানগরী ছাত্রশিবিরের সভাপতি আরাফাত হোসেন মিলন ও অন্যান্য নেতারা।
১৪ দিন আগে
শাপলা চত্বর গণহত্যা: হাসিনাসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা
২০১৩ সালে রাজধানীর শাপলা চত্বরে গণহত্যার ঘটনায় দায়ের করা মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদসহ চারজনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন ট্রাইব্যুনাল।
বুধবার (১২ মার্চ) গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এ আদেশ দেন।
এছাড়া সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শামসুল হক টুকু, সাবেক আইজিপি শহীদুল হক, নৌবাহিনীর সাবেক কর্মকর্তা জিয়াউল আহসান, সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা মোল্যা নজরুল ইসলামকে কারাগারে পাঠানোর জন্য পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত।
আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম ও প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম।
২০১৩ সালের ২৬ নভেম্বর রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে গণহত্যার ঘটনায় শেখ হাসিনাসহ ৫০ জনের বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ করেন হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হক।
আরও পড়ুন: রামপুরায় গণহত্যা: ৩ পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি
মামলার অভিযোগে বলা হয়, হেফাজতে ইসলাম কয়েকজন ব্লগারের 'ইসলাম ও মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) এর অবমাননার প্রতিবাদে' ১৩ দফা দাবি পেশ করেছিল।
দাবি আদায়ে সরকার ব্যর্থ হলে ২০১৩ সালের ৫ মে শাপলা চত্বরে জড়ো হন হেফাজতে ইসলামের সমর্থকরা।
ওইদিন রাত ১১টা থেকে পরদিন ভোর ৪টা পর্যন্ত শেখ হাসিনার নির্দেশে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ওই এলাকায় রাস্তায় ব্যারিকেড দেওয়া ও বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করাসহ মাদরাসা ছাত্র ও পথচারীদের বিরুদ্ধে গণহত্যা চালায় বলে অভিযোগ রয়েছে।
মামলার এজাহারে দাবি করা হয়, নিহতদের লাশ সিটি করপোরেশনের যানবাহন ব্যবহার করে গুম করা হয়।
সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদ, আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শেখ সেলিম, তারেক আহমেদ সিদ্দিকী ও মাহবুব খন্দকারের বিরুদ্ধে মামলাটি করা হয়েছে।
এদিকে সাভারের আশুলিয়ায় লাশের স্তূপীকরণের মামলায় নায়েক মো. সোহেল মিয়াকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল।
আরও পড়ুন: এমবিবিএস ও বিডিএস ডিগ্রি ছাড়া কেউ ডাক্তার লিখতে পারবে না
৩৮ দিন আগে
হাসিনার নৃশংসতার দলিল সংরক্ষণ করা দরকার: প্রধান উপদেষ্টা
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শাসনামলে করা নৃশংসতার দলিল সংরক্ষণ করা জরুরি বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। রবিবার (২ মার্চ) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় ঢাকায় জাতিসংঘের আবাসিক প্রতিনিধি গোয়েন লুইস ও জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়ের অফিসের সিনিয়র মানবাধিকার উপদেষ্টা হুমা খানের সঙ্গে বৈঠকে তিনি এমন মন্তব্য করেন।
মাওলানা দেলাওয়ার হোসেন সাঈদীর বিরুদ্ধে রায়ের প্রতিবাদে বিক্ষোভে পুলিশি নৃশংসতা, মতিঝিলের শাপলা চত্বরে বিক্ষোভকারীদের ওপর ধরপাকড় ও বিভিন্ন সময়ে বিচারবহির্ভূত হত্যার মতো নৃশংস ঘটনাবলীর দলিল সংরক্ষণে জোর দেন প্রধান উপদেষ্টা।
‘দেশের নাগরিকদের ওপর যেসব নৃশংসতা চালানো হয়েছে, তার প্রমাণ রাখা জরুরি। যদি এটা করা না হয়, তাহলে সত্য জানা যেমন কঠিন হয়ে যাবে, তেমন ন্যায়বিচারও নিশ্চিত করা যাবে না,’ বলেন ড. ইউনূস।
গোয়েন লুইস বলেন, জাতিসংঘ এই বিষয়ে কারিগরি সহায়তা দিতে ও বাংলাদেশের জনগণের সক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহযোগিতা করতে প্রস্তুত। এটি হলো সুস্থতা ও সত্য প্রতিষ্ঠার প্রক্রিয়া।
আরও পড়ুন: রমজান উপলক্ষে জীবনের সর্বস্তরে সংযমের বার্তা প্রধান উপদেষ্টার
আগামী ১৩ থেকে ১৬ মার্চ জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তনিও গুতেরেস বাংলাদেশ সফরে আসবেন বলে প্রধান উপদেষ্টার গণমাধ্যম শাখার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
জুলাই অভ্যুত্থানে মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়ে জাতিসংঘের তথ্যানুসন্ধানী প্রতিবেদনের জন্য সংস্থাটিকে ধন্যবাদ জানান প্রধান উপদেষ্টা। তিনি বলেন, আমরা খুবই আনন্দিত যে জাতিসংঘ এই প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে; এটি যথাসময়ে এসেছে। এটি সহজ কাজ ছিল না।
প্রধান উপদেষ্টাকে লুইস বলেন, জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার ভলকার টার্ক ৫ মার্চ জেনেভায় জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদের অধিবেশনে এই প্রতিবেদন তুলে ধরবেন।
তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, জাতিসংঘ মহাসচিবের আসন্ন বাংলাদেশ সফর রোহিঙ্গা সংকটকে আবারও বিশ্ব-দরবারে তুলে ধরবে, যখন ত্রাণ সহায়তা ক্রমাগত কমছে। আমরা অর্থায়ন পরিস্থিতি নিয়ে খুবই উদ্বিগ্ন। প্রতি মাসে শুধু খাদ্য সরবরাহ নিশ্চিত করতেই দেড় কোটি ডলার প্রয়োজন। সঙ্গে যোগ হয় অন্যান্য মৌলিক চাহিদা ব্যয়।
৪৮ দিন আগে
গণহত্যা: ২০ এপ্রিলের মধ্যে হাসিনাসহ ৪৬ জনের বিরুদ্ধে তদন্ত শেষ করার নির্দেশ
জুলাই-আগস্টে গণহত্যার অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ৪৬ জনের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলার তদন্ত ২০ এপ্রিলের মধ্যে শেষ করার নির্দেশ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। গত ১৭ অক্টোবর শেখ হাসিনা ও আরেক মামলায় তার পরিবারের সদস্য ও আওয়ামী লীগ নেতাসহ ৪৫ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে ট্রাইব্যুনাল।
মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) বিচারপতি গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এ আদেশ দেন। ট্রাইব্যুনালের দুই সদস্য হলেন, বিচারপতি শফিউল আলম মাহমুদ এবং অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।
আসামিদের মধ্যে ১৬ জনকে মঙ্গলবার সকাল ১০টায় হাজির করা হয় ট্রাইব্যুনালে। এরা হলেন— সাবেক মন্ত্রী আনিসুল হক, ফারুক খান, ডা. দীপু মনি, আব্দুর রাজ্জাক, শাজাহান খান, গোলাম দস্তগীর গাজী, আমির হোসেন আমু, কামরুল ইসলাম, সাবেক মন্ত্রী ও ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা তৌফিক-ই ইলাহী চৌধুরী ও সালমান এফ রহমান, সাবেক প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার ও জুনায়েদ আহমেদ পলক, আপিল বিভাগের সাবেক বিচারপতি এএইচএম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক ও সাবেক স্বরাষ্ট্র সচিব জাহাঙ্গীর আলম।
অন্য যাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়না জারি করা হয় তারা হলেন— শেখ হাসিনার বোন শেখ রেহানা, শেখ হাসিনার মন্ত্রিপরিষদের সদস্য মোহাম্মদ এ আরাফাত, আসাদুজ্জামান খান কামাল, আনিসুল হক, ডা. দীপু মনি, মোজাম্মেল হক, শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, জুনাইদ আহমেদ পলক, শেখ সেলিম, ব্যারিস্টার ফজলে নূর তাপস, শেখ ফজলে শামস পরশ, সাবেক আইজিপি আবদুল্লাহ মামুন, ডিবি হারুন, পুলিশের সাবেক কর্মকর্তা বিপ্লব কুমার সরকার, প্রলয় কুমার জোয়ার্দার, সাবেক ডিএমপি হাবিবুর রহমান, সাবেক র্যাব ডিজি হারুন অর রশিদ, সাবেক সেনা কর্মকর্তা জিয়াউল আহসান, শেখ হাসিনার সাবেক উপদেষ্টা তারেক আনাম সিদ্দিকী, সাবেক বিচারপতি মানিক, ড. জাফর ইকবাল, সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা মনিরুল ইসলামসহ ৪৬ জন।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম ও প্রসিকিউটর মিজানুর রহমান। তাদের সঙ্গে ছিলেন প্রসিকিউটর আবদুস সোবহান তরফদার ও গাজী এমএইচ তামিমসহ অন্যান্য প্রসিকিউটর। আদালতে আসামির পক্ষে ওকালতনামা জমা দেন সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেড আই খান পান্না।
এ বিষয়ে চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম বলেন, ‘গত বছরের জুলাই-আগস্ট মাসে গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের এক মামলায় শেখ হাসিনার বিষয়ে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের সময় আরও দুই মাস বাড়ানো হয়েছে। আগামী ২০ এপ্রিল নির্ধারণ করেছেন অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। এছাড়া গণহত্যার অভিযোগে গ্রেপ্তার আরও ১৬ জনের বিষয়েও তদন্ত ২০ এপ্রিলের মধ্যে শেষ করতে বলা হয়েছে।’
শেখ হাসিনার তদন্ত প্রতিবেদনের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘বর্তমান স্ট্যাটাস যে কোনো পর্যায়ে তদন্তটা আছে, সেটা আদালতে বলেছি। আমরা আশা করি আগামী মাসের মধ্যে, বিশেষ করে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে যেটা, সেটার তদন্ত রিপোর্ট দাখিল করা সম্ভব হতে পারে। এটা কোনো ফাইনাল টাইমলাইন নয় বলেও জানান তিনি।
আরও পড়ুন: শেখ হাসিনার পৈতৃক সম্পত্তিতে ভাঙচুর ও লুটপাট
‘আমাদের তদন্ত রিপোর্টের মধ্যে জাতিসংঘের রিপোর্ট ন্যাচারালি অন্তর্ভুক্ত হবে বলে আশা করছি। জাতিসংঘের প্রতিবেদনের উপাদানগুলো চেয়েছি। সেগুলো সংগ্রহের একটা প্রক্রিয়ার মধ্যে আছি। যতটুকু পাওয়া যাবে, সেটাকে তদন্ত প্রতিবেদনে সংযুক্ত করব। এটা মামলা প্রমাণের জন্য বড় এভিডেন্স (প্রমাণ) হিসেবে কাজ করবে। এ জন্য দুই মাসের সময় চেয়েছিলাম। আদালত ২০ এপ্রিল পরবর্তী তারিখ রেখেছেন। আমরা আশা করছি এর আগে তদন্ত রিপোর্ট দাখিল করতে পারব। আমরা তদন্তের একটা চূড়ান্ত পর্যায়ে আছি।’
স্বাধীনতাযুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগের বিচারে করা হয়েছিল আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইন, ১৯৭৩। সে আইনে অপরাধীদের বিচারও চলে আসছিল। কিন্তু ৫ আগস্ট পটপরিবর্তনের পর সে আইন নতুন করে আলোচনায় উঠে আসে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে কেন্দ্র করে গত জুলাই ও আগস্টে গণহত্যার অভিযোগ ওঠে। এসব অভিযোগের বিচার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে করার সিদ্ধান্ত নেয় অন্তর্বর্তী সরকার। এরই অংশ হিসেবে নতুন প্রসিকিউশন টিম ও তদন্ত সংস্থা গঠিত হয়েছে।
বিচারের জন্য উল্লেখযোগ্য সংশোধনী আনা হয়েছে আইনে। শুধু আইনেই নয়, মেরামত করে দৃষ্টিনন্দন তথা ব্যবহার উপযোগী করা হয়েছে ট্রাইব্যুনালের মূল ভবন। সংশোধিত আইনে বিচার হবে ৫ আগস্ট পর্যন্ত বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গণহত্যা চালানোর অপরাধে অভিযুক্তদের।
গণ-অভ্যুত্থানের পর শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগ, ১৪ দলের নেতা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সাবেক শীর্ষ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত গুম, হত্যা, গণহত্যাসহ একশর বেশি অভিযোগ ট্রাইব্যুনালে জমা পড়েছে। এসব মামলার মধ্যে গত ১৭ অক্টোবরে একটি মামলায় শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন ট্রাইব্যুনাল। মামলায় আরও ৪৫ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়।
৬০ দিন আগে
আল্লাহ কি হাসিনাকে নূন্যতম অপরাধবোধ দেননি: প্রশ্ন আসিফ নজরুলের
আগের মতো আত্মবিশ্বাস নিয়ে ঔদ্ধত্যপূর্ণ সুরে কথা বলায় অবাক আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল প্রশ্ন তুলেছেন, ‘আল্লাহ কি এই মানুষটার মাঝে নূন্যতম অপরাধবোধ দেননি?’
মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারি) সচিবালয়ে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে উপদেষ্টা এ কথা বলেন।
আসিফ নজরুল বলেন, ‘শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী থাকা অবস্থায় যেভাবে আত্নবিশ্বাস নিয়ে মানুষের সাথে ঔদ্ধত্যপূর্ণ সুরে কথা বলেছেন, তার শেষ সংবাদ সম্মেলনেও তিনি একদম একই সুরে কথা বলেছেন। তিনি তার বক্তব্যে আমাদের যে যন্ত্রণার স্মৃতি সেটা নিতে পরিহাস করেছেন। তিনি বলেছেন আবু সাঈদের হত্যার দৃশ্য (আর্টিফিসিয়াল ইন্টিলিজেন্স) এআই দিয়ে বানানো হয়েছে। মুগ্ধকে নাকি ছাত্ররাই গুলি করে মেরেছে। বলুন এগুলো কি সহ্য করা যায়?’
আরও পড়ুন: অক্টোবরের মধ্যে জুলাই হত্যাকাণ্ডের ৩-৪টি মামলার রায় পাওয়া যাবে: আসিফ নজরুল
আইন উপদেষ্টা বলেন, ‘মিথ্যাচারের পাশাপাশি তিনি সবাইকে উসকে দিয়েছেন; কার বাড়িতে আগুন দিতে হবে এবং কাকে তিনি ছাড়বেন না এসব নিয়ে। আশ্বর্য! আমার কাছে অবাক লাগে! আল্লাহ কি এই মানুষটার মাঝে নূন্যতম অপরাধবোধ দেননি?’
‘যার মধ্যে নূন্যতম অপরাধবোধ থাকে না তিনি তো সবই করতে পারেন। তার বাহিনীর এক অংশ শেখ হাসিনার প্রতি অন্ধ বিশ্বাস থেকেই তার মতো মিথ্যাচার করেছে। তারাও একই টোনে কথা বলেছে। তারা বিভিন্ন উসকানিমূলক, আক্রমণাত্বক এবং ষড়যন্ত্রমূলক কর্মকাণ্ডে লিপ্ত।’
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তাদের গোয়েন্দা নেটওয়ার্কের মাধ্যমে জানতে পেরেছে তারা (আওয়ামী লীগের কর্মীরা) আরও ষড়যন্ত্রমূলক কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হচ্ছে। এ কারণেই অপারেশন (অপারেশন ডেভিল হান্ট) চালানো হচ্ছে।’
৬৭ দিন আগে
হাসিনার সামরিক উপদেষ্টাসহ ১৮ জনের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা
রাজধানীর বিমানবন্দর উন্নয়ন প্রকল্পের ৮১২ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের উপদেষ্টা তারিক আহমেদ সিদ্দিকীসহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে ৪টি মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
সোমবার (২৭ জানুয়ারি) দুদকের প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত এক ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান সংস্থাটির মহাপরিচালক মো.আখতার হোসেন।
আরও পড়ুন: একাদশ জাতীয় নির্বাচনে ‘কারচুপি’ তদন্ত করবে দুদক
আসামিরা হলেন- বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সাবেক সিনিয়র সচিব মহিবুল হক, বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) চেয়ারম্যান মফিদুর রহমান।
৮২ দিন আগে
ডা. ফয়েজ হত্যা : হাসিনাসহ ৪১ জনের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ
লক্ষ্মীপুর জেলা জামায়াতের নায়েবে আমির ডা. ফয়েজ আহমদকে নিজ বাসায় গুলি করে হত্যার ঘটনায় শেখ হাসিনা, সাবেক সামরিক উপদেষ্টা তারেক আহমেদ সিদ্দিকীসহ ৪১ জনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) ফয়েজ আহমেদের ছেলে ডা. হাসানুল বান্না ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর কার্যালয়ে এ অভিযোগ দাখিল করেন। আসামিদের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ আনা হয়েছে।
২০১৩ সালের ২৩ ডিসেম্বর লক্ষ্মীপুর জেলা জামায়াতের নায়েবে আমির ডা. ফয়েজ আহমদকে নিজ বাসায় গুলি করে হত্যা করে র্যাব। হত্যার পর তাকে বাসার ছাদ থেকে নিচে ফেলে দেওয়া হয়। গভীর রাতে শহরের উত্তর তেমুহনী এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
আরও পড়ুন: হাসিনার বিদ্বেষমূলক বক্তব্য প্রচার নিষিদ্ধ করল আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল
অভিযোগ দাখিলের পর এক লিখিত বক্তব্যে হাসানুল বান্না জানান, ২০১৩ সালের ১৩ ডিসেম্বর শুক্রবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে ডা. ফয়েজ আহমেদের নিজ বাসার ছাদে নিয়ে আঘাত করে, গুলি করে ছাদ থেকে ফেলে হত্যা করা হয়েছে।
ডা. ফয়েজ আহমেদ অত্যন্ত মানবিক ডা. হিসেবে পরিচিত এবং লক্ষ্মীপুর জেলা জামায়াতের নায়েবে আমীর ছিলেন।
২০১৩ সালের ১৩ ডিসেম্বর রাতে পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী সরকারি বিভিন্ন আগ্নেয়াস্ত্রে সজ্জিত হয়ে র্যাবের স্টিকার লাগানো একটি গাড়িতে করে ঘটনাস্থলের বাসায় এসে লোহার গেট ভেঙে ফেলে ও ভুক্তভোগী ডা. ফয়েজকে নিজের বাসার দোতলার কক্ষ থেকে ধরে নিয়ে বিল্ডিংয়ের ছাদে নিয়ে যায়।
এই সময় আইন-শৃংখলা বাহিনীর অন্যান্য সদস্যরা (আসামিরা) বিল্ডিংয়ে ঢুকে সব কক্ষের দরজার তালা ভেঙে তল্লাশি ও ভাঙচুর চালায়। ডা. ফয়েজ আহমেদকে ছাদে নিয়ে তাদের হাতে থাকা আগ্নেয়াস্ত্রের বাঁট দিয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে মাথার সম্মুখভাগ ও নাকে-মুখেসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে এলোপাতাড়ি পিটিয়ে গুরুতর জখম করে।
ঊর্ধ্বতন রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক কর্তাদের নির্দেশে আসামি তারেক সাইদ মোহাম্মদ তার হাতে থাকা আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে ফয়েজ আহমেদের ডান হাঁটুর ওপরে হত্যার উদ্দেশ্যে গুলি করে, তাতে ওই স্থানে গভীর ক্ষত হয়ে প্রচুর রক্তপাত হয়। এ সময় গুরুতর আহত অবস্থায় মৃত্যু নিশ্চিত করার উদ্দেশ্যে ফয়েজ আহমেদকে তিনতলার ছাদের ওপর থেকে উপুড় করে (অর্থাৎ মাথা নিচের দিকে দিয়া) বিল্ডিংয়ের সামনের অংশের নিচে ফেলে দেয়।
পরবর্তীতে তার লাশ সদর হাসপাতালে রেখে দিয়ে যায়। তৎকালীন সরকারের নির্দেশে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধটি সারা দেশে আলোড়ন সৃষ্টি করে। ভুক্তভোগী পরিবারের পক্ষ থেকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ দায়েরের মাধ্যমে তদন্ত সাপেক্ষে ওই ঘটনাটির সুষ্ঠু বিচার চেয়েছেন বলে লিখিত বক্তব্য উল্লেখ করা হয়েছে।
অভিযোগ দাখিলের বিষয়টি নিশ্চিত করে আইনজীবী আবদুস সাত্তার পালোয়ান জানান, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহিউদ্দিন খান আলমগীর, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর সামরিক উপদেষ্টা তারেক আহাম্মদ ছিদ্দিকী, সাবেক এ.ডি.জি র্যাব মে. জে. জিয়াউল আহসান, র্যাব-১১ এর সাবেক সি.ই.ও এবং আলোচিত নারায়নগেঞ্জর সাত খুন মামলার আসামি তারেক সাইদ মোহাম্মদসহ ৪১ জনের নামে এ অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: সাবেক আইজিপি মামুনসহ ৮ জন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে
৯৪ দিন আগে
হাসিনার ভিসার মেয়াদ বাড়িয়েছে ভারত
বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে প্রত্যর্পণে ঢাকার পক্ষে থেকে নতুন করে অনুরোধ সত্ত্বেও তার ভিসার মেয়াদ বাড়িয়েছে ভারতীয় সরকার। বুধবার (৮ জানুয়ারি) দেশটির সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্থান টাইমস এমন খবর দিয়েছে।
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে গেল বছরের ৫ আগস্ট দেশ ছেড়ে ভারতে যান শেখ হাসিনা। এরপর তিনি সেখানেই অবস্থান করছেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রের বরাত দিয়ে হিন্দুস্থান টাইমসের খবর বলছে, তার ভারতে অবস্থানকে সহজ করতে সম্প্রতি ভিসার মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে। তবে হাসিনাকে ভারতে রাজনৈতিক আশ্রয় দেওয়ার যে জল্পনার কথা শোনা যাচ্ছে, তা নাকচ করে দিয়েছেন তারা। কারণ রাজনৈতিক আশ্রয় কিংবা শরণার্থীর মতো বিষয়গুলো নিয়ে ভারতে সুনির্দিষ্ট কোনো আইন নেই।
সূত্র বলছে, স্থানীয় ফরেইনার্স রিজিওনাল রেজিস্ট্রেশন অফিসের (ফআরআরও) মাধ্যমে দেশটির কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় হাসিনার ভিসার মেয়াদ বাড়িয়েছে। কারণ এই মন্ত্রণালয় থেকেই এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসে।
ভারত এমন এক সময় শেখ হাসিনার ভিসার মেয়াদ বাড়াল, যখন তাকে প্রত্যর্পণে চিঠি দিয়েছে বাংলাদেশ সরকার। গেল ২৩ ডিসেম্বর পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, ‘সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে বিচারের সম্মুখীন করার জন্য বাংলাদেশ ফেরত চেয়েছে। এটা ভারতকে জানানো হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এ বিষয়ে ভারতকে নোট ভারবাল পাঠানো হয়েছে।’
আরও পড়ুন: শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণ অনুরোধে নীরব ভারত, অপেক্ষায় বাংলাদেশ
এর আগে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, ‘তাঁকে (শেখ হাসিনা) প্রত্যর্পণের জন্য ভারতকে অনুরোধ জানাতে এরই মধ্যে আমাদের (স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের) চিঠি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। এটা প্রক্রিয়াধীন আছে। আমাদের সঙ্গে তাদের একটা এক্সট্রাডিশন (প্রত্যর্পণ) চুক্তি আছেই।’
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গণ-অভ্যুত্থানের সময়ে হত্যাকাণ্ড, গত ১৬ বছরে গুম-ক্রসফায়ার, পিলখানা হত্যাকাণ্ড এবং মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড—মোটাদাগে এই কয়টি মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ এসেছে।
১০২ দিন আগে
হাসিনাকে ফিরিয়ে এনে বিচারের মুখোমুখি করা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দায়িত্ব: জোনায়েদ সাকি
গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেছেন, জুলাই-আগস্টে নির্বিচারে হত্যাযজ্ঞ হয়েছিল। এসব হত্যাকাণ্ডের জন্য হাসিনাকে ফিরিয়ে এনে বিচারের মুখোমুখি করা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দায়িত্ব।
তিনি বলেন, সরকারের সকল কাজে যে দেশের মানুষ সন্তুষ্ট হবে এমনটা কিন্তু নয়। আমাদের বুঝতে হবে কোন পরিস্থিতিতে এ সরকার ক্ষমতায় এসেছে। এছাড়া অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি আমাদের প্রত্যাশা অনেক।
সোমবার (২৩ ডিসেম্বর) বিকালে সিলেট মহানগরের কেন্দ্রীয় মুসলিম সাহিত্য সংসদে রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক রূপান্তরে নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত প্রতিষ্ঠার গণসংলাপ অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
শেখ হাসিনাকে দেশে এনে বিচারের মুখোমুখি দাঁড় করাতে হবে জানিয়ে জোনায়েদ সাকি বলেন, বাংলাদেশের মানুষ এখন ন্যায় বিচার চায়। আশাকরি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ন্যায় বিচারের কাজটি করবেন।
সাকী বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বলেছে ২০২৬ সালের জানুয়ারিতে নির্বাচন হবে। তবে নির্বাচনের আগে অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনা করতে হবে। ইতোমধ্যেই অনেকের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। নির্বাচনের আগে ও পরে কি কি সংস্কার প্রয়োজন সেটি দেখতে হবে।
আরও পড়ুন: চাঁদপুরে এমভি আল বাকেরার ঘটনায় শিল্প মন্ত্রণালয়ের তদন্ত কমিটি গঠন
তিনি বলেন, অভ্যুত্থানের রায় একটি ন্যূনতম রাজনৈতিক ব্যবস্থা। এছাড়া আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়াটা কোনো অবস্থাতেই যুক্তিসঙ্গত কাজ নয়। মুক্তিযোদ্ধাকে অসম্মান করা কোনোভাবেই কাম্য নয়। যারা এ কাজ করেছে সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে তাদের আইনের আওতায় আনতে হবে।
তিনি বলেন, ভেঙে পড়া রাষ্ট্র হাতে পাওয়ার ৪ মাস পূর্ণ হলো। কিন্তু আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ও দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়ে জনগণের মধ্যে ক্ষোভ রয়েছে। জনগণের প্রত্যাশা পূরণ হচ্ছে না সেভাবে। বর্তমানে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে সেই জায়গাগুলোতে কাজ করতে হবে।
বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ফ্যাসিবাদী শক্তি এখনও বিদ্যমান রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এসব বিষয়ে সরকারকে কঠোর অবস্থানে যেতে হবে।
১১৭ দিন আগে