তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী
পশ্চিমারা আমাদের বিপদে ফেলেছে: প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানি উপদেষ্টা
প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানি উপদেষ্টা তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী দেশের বর্তমান জ্বালানি সংকটের জন্য ‘পশ্চিমাদের’ দায়ী করেছেন।
রবিবার বাংলাদেশ এনার্জি সোসাইটি (বিইএস) আয়োজিত ‘বাংলাদেশে টেকসই শক্তি নিরাপত্তা: বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের রূপকল্প’- শীর্ষক ভার্চুয়াল সেমিনারে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘এই সঙ্কট আমাদের নিজস্ব সৃষ্টি নয়। পশ্চিমারা আমাদের বিপদে ফেলেছে।’
বর্তমান পেট্রোলিয়াম জ্বালানির দাম ৫০ শতাংশেরও বেশি বৃদ্ধির প্রতিবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, শুধু বাংলাদেশই দাম বাড়ায়নি, এমনকি যুক্তরাষ্ট্রের মতো দেশও দাম বাড়িয়েছে।
সেমিনারে তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে প্রতি গ্যালন পেট্রোল পাঁচ ডলারে বিক্রি হচ্ছে, যা লিটার প্রতি ১২০-১৩০ টাকার সমান।
তিনি বলেন, সিস্টেমে যৌক্তিকতা আনতে বিদ্যুতের লোড বদলাতে থ্রি হুইলারের জন্য সোলার-চালিত ফাস্ট চার্জিং স্টেশন ও বৈদ্যুতিক ওভেনের মাধ্যমে রান্নার মতো নতুন উদ্ভাবনী সমাধান চালু করা উচিত।
বিশিষ্ট জ্বালানি বিশেষজ্ঞ ড.তামিম বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে ইতোমধ্যেই পেট্রোলিয়ামের দাম গ্যালন প্রতি পাঁচ ডলার থেকে কমে তিন ডলারে নেমে এসেছে।
আরও পড়ুন: জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি: গণপরিবহন বন্ধে দেশজুড়ে যাত্রীদের দুর্ভোগ
এক মার্কিন গ্যালন প্রায় চার লিটারের সমান।
তিনি বলেন, বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম কমার আগেই সরকারের উচিত ছিল দাম কমানো। কিন্তু তা করা হয়নি। এখন আবার বিদ্যুতের দাম একযোগে প্রায় ৫০ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে।
এই জ্বালানি বিশেষজ্ঞ, ‘একটি সুনির্দিষ্ট নীতি থাকা উচিত, দাম কমলে লাভ একটি বিশেষ তহবিল হিসাবে সংরক্ষণ করা উচিত এবং মূল্য বৃদ্ধির সময় পেট্রোলিয়াম আমদানিতে সে তহবিল ব্যবহার করা উচিত।’
তিনি আরও বলেন, তেলের দাম শিগগিরই কমতে পারে, কারণ এটি সর্বদা চক্রাকারে ঘটে। যে দাম বৃদ্ধির পরে বাজারে সরবরাহ বাড়লে দাম স্বয়ংক্রিয়ভাবে আবার কমে যায়।
গ্যাস অনুসন্ধান এই জ্বালানি বিশেষজ্ঞ বলেন, হাইড্রোকার্বন অনুসন্ধানের জন্য রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন বাপেক্সের ওপর বেশি নির্ভরতা থাকা উচিত নয়। কারণ এটি গত ৫০ বছরে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি দেখাতে ব্যর্থ হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ‘এখন বিদেশি কোম্পানিগুলোকে উপকূলীয় ও অফশোর অনুসন্ধানের জন্য চুক্তি প্রদান করা উচিত।’
সেমিনারে আরও বক্তব্য রাখেন সামিট গ্রুপের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আজিজ খান, ৭১ টিভির প্রধান মোজাম্মেল বাবু, জ্বালানি বিশেষজ্ঞ ফিরোজ আলম, বিজনেস এক্সিকিউটিভ জাকারিয়া জালাল ও কর্মকর্তা মিজানুর রহমান।
আরও পড়ুন: অবিলম্বে জ্বালানি তেলের বর্ধিত মূল্য প্রত্যাহারের দাবি যাত্রী কল্যাণ সমিতির
প্রধানমন্ত্রীর সাবেক মুখ্য সচিব ও বিইএস-এর সভাপতি আবুল কালাম আজাদ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন এবং এনার্জি অ্যান্ড পাওয়ার ম্যাগাজিনের সম্পাদক মোল্লা আমজাদ হোসেন অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন।
মোজাম্মেল বাবু বলেন, রান্নার জন্য ইন্ডাকশন ওভেনের ব্যবহার বাধ্যতামূলক করার ব্যাপারে উৎসাহিত করা উচিত, কারণ এটি গ্যাস-ওভেনের তুলনায় বেশি কার্যকর।
তিনি বলেন, সরকারের ভিয়েতনামের মতো বৃহৎ সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য অগ্রসর হওয়া উচিত। দেশটি ইতোমধ্যে ২০ হাজার মেগাওয়াট সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্প স্থাপন করেছে।
আজিজ খান বলেন, বিদেশি তেল কোম্পানিগুলো গ্যাস রপ্তানির বিকল্প না দেয়া পর্যন্ত গ্যাস অনুসন্ধানে বিনিয়োগ করতে আগ্রহী হবে না।
তিনি বলেন, নীতিমালা পরিবর্তন হলে অনেক স্থানীয় কোম্পানি অনুসন্ধানে বিনিয়োগ করতে আগ্রহী হতে পারে।
আরও পড়ুন: জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি: বাড়ছে গণপরিবহন ও লঞ্চের ভাড়া
২ বছর আগে