বিদ্যুৎ সাশ্রয়
নতুন অফিস সময়: সকালেই রাজধানীতে তীব্র যানজট
বিদ্যুৎ সাশ্রয়ে সকল সরকারি ও স্বায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠানের নতুন সময়সূচীর প্রথম দিন বুধবার সকালে রাজধানীর প্রায় সব সড়কেই তীব্র যানজটে ভোগান্তিতে পড়েছেন অফিসগামীরা।
সরকার বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের জন্য প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৫টার পরিবর্তে সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৩টা পর্যন্ত সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও আধা-স্বায়ত্তশাসিত অফিসের সময়সূচির ঘোষণা দেন।
রাজধানীর মহাখালী থেকে বনানী, ধানমন্ডি, বিজয় সরণি এবং মগবাজার এলাকায় সবচেয়ে বেশি যানজট ছিল।
উত্তরা এলাকার বাসিন্দা ইশতিয়াক নাসির বলেন, ‘মনে হচ্ছে মানুষের দুর্ভোগের শেষ নেই। যানজট শুধু সময়ই নষ্ট করে না, আমাদের শক্তিও নষ্ট করে। উত্তরা থেকে বনানীতে আমার অফিসে পৌঁছাতে দুই ঘণ্টা সময় লেগেছে।’
প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদেরও সকালে যানজটের দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের একজন ঊর্ধ্বতন ট্রাফিক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, সড়কে বাসসহ বিপুল সংখ্যক যানবাহন পার্কিং করতে দেখা যায়, যা যানজটের সৃষ্টি করে।
তিনি বলেন, ‘প্রতিদিন যানজটে এক বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়, অনেক মানুষকে পায়ে হেঁটে তাদের নিজ নিজ গন্তব্যে যেতে দেখা যায়।’
পড়ুন: সরকারি অফিস সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৩টা
২ বছর আগে
বিদ্যুৎ সাশ্রয়ে সরকারকে যেভাবে সহযোগিতা করবে শাবিপ্রবি
বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সাশ্রয়ের কথা বিবেচনা করে সপ্তাহের একদিন অনলাইনে ক্লাস নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। ওইদিন সশরীরে ক্লাসের পরিবর্তে অনলাইনে ক্লাস নিবে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা।
গত বৃহস্পতিবার উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ডিন ও বিভাগীয় প্রধানদের সভায় এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, সপ্তাহের বৃহস্পতিবার অনলাইনে এবং অন্য চারদিন সরাসরি ক্লাস অনুষ্ঠিত হবে যা আগামী বৃহস্পতিবার থেকে এ সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে। এছাড়া ওইদিন বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন সেবা পুরোপুরি বন্ধ থাকবে এবং অন্যান্য দিনেও কিছু পরিবহন সেবা কিছুটা হ্রাস করা হবে।
আরও পড়ুন: বিদ্যুৎ সাশ্রয়ে শাবিপ্রবিতে সপ্তাহে ১ দিন অনলাইন ক্লাস
সভায় উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ বলেন, আন্তর্জাতিক সমস্যার কারণে সৃষ্ট জাতীয় এ সমস্যায় আমরা দেশবাসীর পাশে থাকতে চাই। আমাদেরকে দেশপ্রেমের সঙ্গে এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করতে হবে। এই বিশ্ববিদ্যালয় করোনা মহামারিতে ক্যাম্পাসে করোনা পরীক্ষার ব্যবস্থা করে দেশের মানুষের পাশে ছিল। এবারও বিশভাগ জ্বালানি ও বিদ্যুৎ সাশ্রয় করে তাদের পাশে থাকবো। তবে কোনকিছুতেই যাতে শিক্ষার্থীদের ক্ষতি না হয় সে ব্যাপারে সজাগ থাকার জন্য বিভাগীয় প্রধান ও শিক্ষকদের প্রতি তিনি অনুরোধ করেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন প্রশাসক অধ্যাপক ড. মো.কামরুজ্জামান চৌধুরী বলেন, বর্তমানে বৈশ্বিক যে সংকট তার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে বাংলাদেশ সরকার জ্বালানি সাশ্রয় নীতি গ্রহণ করেছে। সেই হিসেবে প্রতিটি প্রতিষ্ঠানকে ২০ শতাংশ জ্বালানি সাশ্রয়ের নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় একটি সরকারি প্রতিষ্ঠান তাই বিশ্ববিদ্যালয় এটি মানতে বাধ্য।
তিনি বলেন, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ক্যালেন্ডারের যাতে কোনো রকম বিঘ্নতা না ঘটে এবং একই সঙ্গে সরকারের জ্বালানি সাশ্রয়ের নির্দেশ পালন করা হয় সেই লক্ষ্যেই আমাদের একদিনের অনলাইন ক্লাস কার্যক্রম। বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন দপ্তরের একটি উপদেষ্টা কমিটি আছে। উপদেষ্টা কমিটির সুপারিশেই এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
অধ্যাপক কামরুজ্জামান বলেন, প্রতি বৃহস্পতিবার আমাদের পরিবহন দপ্তরের গাড়ি চলাচল বন্ধ থাকবে। তবে জরুরি পরিবহনগুলো (বিশেষ করে অ্যাম্বুলেন্স সেবা) ও অন্যান্য জরুরি দপ্তরের গাড়ি চলাচল চালু থাকবে। বিদ্যুতের ক্ষেত্রে যদি বলি যেহেতু একদিনের সশরীরে ক্লাস কার্যক্রম বন্ধ থাকবে সেক্ষেত্রে অনেক লাইট, ফ্যান ও এসিও বন্ধ থাকবে। এছাড়াও বৃহস্পতিবারের পর শুক্র ও শনিবার সাধারণ ছুটি হিসেবে বিদ্যুত ও জ্বালানি খাতে একইভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তর থেকে সাশ্রয়ী সম্ভব হবে।
আরও পড়ুন: প্রধানমন্ত্রীর কাছে হত্যার বিচার চাইলেন শাবির শিক্ষার্থী বুলবুলের মা
তিনি বলেন, আমাদের কাছে যে নির্দেশনা আছে তা হলো বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্বালানি ও বিদ্যুতের যে বাজেট সে জায়গাটিতে ২০ শতাংশ সাশ্রয়ী করতে হবে। সেই আদেশ বাস্তবায়নে,সরকারকে সহযোগিতা করতে এবং একাডেমিক কার্যক্রম বিঘ্নতা না ঘটাতে এই একদিনের অনলাইন ক্লাসের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন দপ্তরের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী এমরান আহমেদ চৌধুরী জানান, বর্তমানে প্রতিদিন বিশ্বিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মকর্তাদের ৮টি বাস ৩৩টি, শিক্ষার্থীদের জন্য ১০টি বাস ৩৭টি ও স্টাফদের জন্য ৪টি ট্রিপসহ মোট ৭৪টি ট্রিপ বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন দপ্তর থেকে পরিচালিত হয়। সরকারের জ্বালানি সাশ্রয়ের সহযোগিতায় শাবিপ্রবি প্রশাসন এই বাসট্রিপ বন্ধ রেখে পাশে থাকার চেষ্টা করবে। তবে জরুরি খাতের পরিবহনগুলো সচল রাখা হয়েছে।
২ বছর আগে