মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগী
ফখরুলকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডিবি কার্যালয়ে আনা হয়েছে: ডিএমপি কমিশনার
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার হাবিবুর রহমান রবিবার (২৯ অক্টোবর) বলেছেন, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশের গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) কার্যালয়ে আনা হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘তাকে (ফখরুল) জিজ্ঞাসাবাদের জন্য (তার বাসা থেকে) নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তদন্তের মাধ্যমে কিছু পেলে পরে আমরা (গণমাধ্যমকে) জানাব।’
রাজারবাগ পুলিশ লাইন্সে নিহত পুলিশ কনস্টেবল আমিরুল ইসলাম পারভেজের নামাজে জানাজা শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ডিএমপি প্রধান এ মন্তব্য করেন।
শনিবার রাজধানীর ফকিরাপুল এলাকায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে বিএনপি সমর্থকদের সংঘর্ষের সময় হামলায় আমিরুল নিহত হন।
হাবিবুর রহমান বলেন, শনিবার সহিংসতায় পুলিশের ১১৩ সদস্য আহত হয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘তাদের অনেকের অবস্থা এখনও আশঙ্কাজনক। আমরা কিছুক্ষণ আগে খবর পেয়েছি যে আরেক পুলিশ সদস্যের জীবন ঝুঁকিতে রয়েছে। আপনারা (সাংবাদিকরা) জানেন কী ঘটেছে, তা আপনারা সরাসরি দেখেছেন। এই জিনিসগুলো (হামলা) একটি আনুষ্ঠানিক সমাবেশ থেকে করা হয়েছিল।’
ডিএমপি কমিশনার বলেন, সহিংসতা ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ওপর হামলার সঙ্গে অনেকেই জড়িত থাকতে পারে। ‘সুতরাং, আমরা জিজ্ঞাসাবাদের জন্য অনেক লোককে খুঁজছি।’
আরও পড়ুন: ২৮ অক্টোবর ঢাকায় সমাবেশের জন্য ডিএমপির অনুমতি চেয়েছে বিএনপি
তিনি বলেন, সহিংসতার বিষয়ে তাদের তদন্ত চলছে। ‘তদন্ত প্রক্রিয়া শেষ হলে প্রমাণের ভিত্তিতে আমরা আরও লোককে গ্রেপ্তার করব।’
এর আগে ফখরুলকে গুলশানের বাসা থেকে আটক করে ডিবি পুলিশ।
বিএনপির মিডিয়া উইং সদস্য শায়রুল কবির খান জানান, বিএনপির হরতালের মধ্যেই ফখরুলের গুলশান-২-এর বাসায় গোয়েন্দারা অভিযান চালিয়ে সকাল ৯টা ২০ মিনিটে তাকে আটক করে।
পরে তাকে ডিবির মিন্টো রোড কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয় বলে জানিয়েছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) উপকমিশনার (মিডিয়া) ফারুক হোসেন।
শনিবার নয়াপল্টনে দলের মহাসমাবেশে সহিংসতার প্রতিবাদে বিরোধী দল বিএনপি রবিবার সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত দেশব্যাপী হরতাল ডেকেছিল বলে আটক করা হয়।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের মধ্যে সহিংস সংঘর্ষে পুলিশ কনস্টেবলসহ অন্তত দুইজন নিহত এবং কয়েক শতাধিক আহত হওয়ার পর হঠাৎ সমাবেশ স্থগিত করে ফখরুল হরতাল ঘোষণা করেন।
আরও পড়ুন: ২৮ অক্টোবর বিএনপির সমাবেশে কেউ সহিংসতার চেষ্টা করলে কঠোর ব্যবস্থা নেবে পুলিশ : ডিএমপি কমিশনার
অনুমতি ছাড়া ঢাকায় সমাবেশ করা যাবে না: ডিএমপির নতুন কমিশনার
১ বছর আগে
অন্যের সহায়তায় যারা ক্ষমতায় আছে তারা বাংলাদেশকে শাসন করতে পারে না: ফখরুল
শেখ হাসিনার সরকারকে টিকিয়ে রাখার জন্য ভারতের ‘সমর্থন’ চাওয়ায় পররাষ্ট্রমন্ত্রীর নিন্দা করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, যারা অন্যের দয়ায় ক্ষমতায় থাকে তাদের বাংলাদেশকে শাসন করার অধিকার নেই।
তিনি বলেন, ‘বর্তমান সরকার দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বে বিশ্বাস করে না এবং তারা একের পর এক তার প্রমাণ দিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশের মানুষ যখন নিজেদের স্বাধীন (জাতি) হিসেবে পরিচয় দিতে গর্ববোধ করে, তখন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ভারত সরকারকে শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় রাখতে সাহায্য করতে বলেন।’
লোডশেডিং, জ্বালানি ও নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধি ও রাজনৈতিক দমননীতির প্রতিবাদে শনিবার ইউনিভার্সিটি টিচার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ইউটিএবি)-আয়োজিত এক মানববন্ধন কর্মসূচিতে দেয়া বক্তব্যে ফখরুল এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেনের মন্তব্যে প্রতীয়মান হয়েছে যে আওয়ামী লীগ সরকার ভারত সরকারের মদদে ক্ষমতায় এসেছে।
আরও পড়ুন: ভারতের ‘সমর্থন চাওয়া’ নিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্যের ব্যাখ্যা চায় বিএনপি
তিনি বলেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী শুক্রবার তার বক্তব্যের ব্যাখ্যা দিয়েছেন। কিন্তু তিনি তার অবস্থান থেকে সরে আসেননি এবং তিনি আগে যা বলেছিলেন পুনরায় তা নিশ্চিত করেছেন।
এই বিএনপি নেতা বলেন, ‘সুতরাং আমাদের পরিষ্কারভাবে বলতে চাই, যারা অন্যের দয়ায় ক্ষমতায় থাকে তাদের এই দেশ শাসন করার অধিকার নেই। তাদের এদেশের সরকার চালানোর কোনো অধিকার নেই।’
এর আগে বৃহস্পতিবার চট্টগ্রামে জন্মাষ্টমীর এক অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বলেছিলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যাতে ক্ষমতায় থাকতে পারেন তার জন্য তিনি ভারত সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
সরকারের বিরুদ্ধে ব্যাপক লুটপাটের অভিযোগ তুলে ফখরুল বলেন, এই সরকার দেশের জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। তারা ইতোমধ্যে বাংলাদেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করেছে।
ফখরুল বলেন, ‘আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকায় দেশ নানা সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে। ‘এটাই আমাদের সমস্ত সংকটের মূল কারণ। আওয়ামী লীগ বিনা ভোটে এবং নির্বাচিত না হয়ে রাষ্ট্রযন্ত্রকে বলপ্রয়োগ করে ক্ষমতায় টিকে আছে।’
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘বাংলাদেশকে ধ্বংসকারী এই ফ্যাসিবাদী সরকারকে অপসারণ করে সত্যিকারের জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠার জন্য জনগণকে সঙ্গে নিয়ে আন্দোলন করা এখন আমাদের পবিত্র দায়িত্ব।’
আরও পড়ুন: বাম জোটের হরতালে বিএনপির সমর্থন
জ্বালানি সংকটের পেছনে রয়েছে দুর্নীতি, লুটপাট, আত্মঘাতী চুক্তি: বিএনপি
২ বছর আগে