চা-শ্রমিক
সিলেটে চা-শ্রমিকদের ৩ দফা দাবিতে মশাল মিছিল
বকেয়া বেতন প্রদান, চা-বাগানের শিক্ষার্থীদের বিনা মূল্যে শিক্ষা উপকরণ সরবরাহ ও পর্যাপ্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা এবং ভূমির অধিকারের তিন দফা দাবিতে মশাল মিছিল করেছে সিলেটের চা-শ্রমিকরা।
মঙ্গলবার (২০ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে ৫টায় ‘চা-বাগান শিক্ষা অধিকার বাস্তবায়ন পরিষদ’নামের একটি সংগঠনের ডাকেএ কর্মসূচি পালন করে শ্রমিকরা।
মশাল মিছিলটি মালনীছড়া চা বাগান থেকে শুরু হয়ে লাক্কাতুরা, চৌকিদেখি হয়ে পুনরায় রেষ্টক্যাম্প বাজারে সমাবেশে মিলিত হয়।
চা বাগান শিক্ষা অধিকার বাস্তবায়ন পরিষদের সংগঠক অধীর বাউরীর সভাপতিত্বে ও রানা বাউরীর পরিচালনায় সমাবেশে বক্তব্য দেন, সংগঠনের প্রধান সংগঠক সঞ্জয় কান্ত দাস, সংহতি জানিয়ে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ চা শ্রমিক ফেডারেশন সিলেট জেলার সাধারণ সম্পাদক অজিত রায়, চা শ্রমিক অধিকার আন্দোলন কেন্দ্রীয় কমিটির অহ্বায়ক হৃদেশ মুদি, লাক্কাতুরা চা বাগানের জাহাঙ্গীর হোসেন, কেওয়াছড়ার সঞ্জিত দাস, হিলুয়াছড়া চা বাগানের মজেন গঞ্জু প্রমুখ।
এ সময় বক্তারা বলেন, ‘নিয়ম অনুযায়ী প্রতি দুই বছর পর পর চা শ্রমিকদের মজুরিসহ অন্যান্য সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধির জন্য দ্বিপক্ষীয় চুক্তি হবার কথা। সব সময়ই মালিকরা এই চুক্তি নিয়ে টালবাহানা করে। ২০২১-২২ সালের চুক্তিও আজ পর্যন্ত হয়নি।
এদিকে ডিসেম্বরে চুক্তি হওয়ার পূর্বেই চুক্তির মেয়াদ শেষ হবার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।
৩০০ টাকা মজুরি, চুক্তি সম্পাদনসহ বিভিন্ন দাবিতে আগস্ট মাসে টানা ১৯ দিন ধর্মঘট করেন চা শ্রমিকরা। বিভিন্ন বাধা, ভয়, ভীতি উপেক্ষা চা শ্রমিকরা আন্দোলনে অনড় থাকেন।
আরও পড়ুন: প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক: চা-শ্রমিকদের মজুরি ১৭০ টাকা নির্ধারণ
২ বছর আগে
প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক: চা-শ্রমিকদের মজুরি ১৭০ টাকা নির্ধারণ
দেশের ১৬৭টি চা বাগানের চা-শ্রমিকদের দৈনিক মজুরি ১৭০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। একইসঙ্গে সোমবার থেকে চা শ্রমিকদের কাজে যোগ দেয়ার অনুরোধ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে চা-বাগান মালিকদের বৈঠকের পর গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানান প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব আহমদ কায়কাউস।
তিনি জানান, শনিবার বিকালে চা শ্রমিকদের চলমান আন্দোলন নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে এস শাহ আলমের নেতৃত্বে ১৩ জন মালিককে নিয়ে বৈঠকে এ সিন্ধান্ত হয়। এছাড়া প্রধানমন্ত্রী শিগগিরই চা শ্রমিকদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে আলোচনা করবেন।
আরও পড়ুন: ‘প্রধানমন্ত্রীর আশ্বাসে চা শ্রমিকদের ধর্মঘট স্থগিত, প্রত্যাহার নয়’
শুক্রবার রাতে গণমাধ্যমে খবর প্রচারিত হওয়ার পর বাংলাদেশ চা শ্রমিকদের ইউনিয়নের সাংগঠনিক সম্পাদক ও বালিশিরা ভ্যালির সভাপতি বিজয় হাজরা বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, আমরা সাধারণ চা শ্রমিকরা প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্তে একমত ও খুশি। তাই সোমবার থেকে আমরা কাজে ফিরছি।
সাতগাঁও চা বাগানের পঞ্চায়েত সাধারণ সম্পাদক সুদিপ কৈরী বলেন, আপাতত আমরা মিছিল ও মিটিং করছি না, বরং প্রধানমন্ত্রী যে রায় দিয়েছেন মেনে নিলাম।
উল্লেখ্য, স্থানীয় প্রশাসন ও মালিকপক্ষের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠকের পরও চা-শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধির বিষয়টি সমাধান হয়নি। ৩০০ টাকা মজুরির দাবিতে ৯ আগস্ট থেকে চার দিন দুই ঘণ্টা করে কর্মবিরতি ও পরে ১৩ আগস্ট থেকে সারা দেশে অনির্দিষ্টকালের জন্য ধর্মঘট পালন করে আসছিল চা-শ্রমিকরা।
আরও পড়ুন: চা শ্রমিকদের ধর্মঘট প্রত্যাহার, আগের মজুরিতেই ফিরছেন কাজে
মধ্যরাতে সিদ্ধান্ত বদল, চা শ্রমিকদের ধর্মঘট অব্যাহত
২ বছর আগে
হবিগঞ্জ-শ্রীমঙ্গল সড়ক অবরোধ চা-শ্রমিকদের
মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলের লছনা এলাকায় বুধবার দুপুর থেকে বিকাল পর্যন্ত হবিগঞ্জ-শ্রীমঙ্গল আঞ্চলিক মহাসড়ক অবরোধ করে রাখেন চা-শ্রমিকরা। এ ছাড়া জুড়ী উপজেলার কুলাউড়া-বিয়ানীবাজার আঞ্চলিক মহাসড়কও ঘেরাও করেন তারা।
শ্রীমঙ্গলের সাতগাঁও টি এস্টেটের সামনে মহাসড়ক অবরোধ করে হাজারো চা-শ্রমিক। ফলে শতাধিক গাড়ি আটকে থাকে।
শ্রীমঙ্গল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হারুন অর রশিদ তালুকদার জানান, স্থানীয় প্রশাসনের অনুরোধে ধর্মঘট প্রত্যাহার করে চা শ্রমিকেরা।
চা শ্রমিকদের মজুরি ৩০০ টাকা করার দাবিতে মৌলভীবাজার জেলার অধিকাংশ বাগানে চলছে ধর্মঘট। গতকাল কয়েকটি বাগানে শ্রমিকরা পাতা উত্তোলন করলেও বুধবার সকাল থেকেই জেলার বালিশিরা, মনু, ধলাই, জুড়ী, লংলার অধিকাংশ বাগানে শ্রমিকরা কাজে আসেননি।
প্রশাসনের পক্ষ থেকে জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ আহসানসহ কর্মকর্তারা শ্রমিকদের কাজে নামার আহ্বান জানান।
আরও পড়ুন:চা শ্রমিকদের অবরোধে সারাদেশের সঙ্গে সিলেটের রেল যোগাযোগ বন্ধ
অন্যদিকে মালিক পক্ষ জানিয়েছে, শ্রমিকদের ধর্মঘটের কারণে প্রতিদিন প্রায় ২০ কোটি টাকা লোকসান হচ্ছে।
কালিঘাট চা বাগানের চা-শ্রমিকরা জানান, প্রধানমন্ত্রীর কথা বলে তাদের ধোঁকা দেয়া হচ্ছে। তারা এ সিদ্ধান্ত মানেন না।
তারা বলেন, নেতাদের কথা আমরা বিশ্বাস করি না। আমরা প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে শুনতে চাই যে, আমাদের মজুরি বাড়াবে। প্রধানমন্ত্রী না বলা পর্যন্ত আমরা আন্দোলন থেকে ফিরব না।
প্রসঙ্গত, দেশের ১৬৭ চা বাগানে শ্রমিকের সংখ্যা দেড় লাখেরও বেশি। বর্তমানে দৈনিক মজুরি ১২০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৩০০ টাকা করার দাবিতে আন্দোলন করছেন তারা। গত ৯ আগস্ট এ আন্দোলন শুরু হয়। শুরুতে প্রথম কয়েকদিন কেবল ২ ঘণ্টা করে কর্মবিরতি পালন করা হয়। সে সময় মজুরি বৃদ্ধি ও মজুরি চুক্তি বাস্তবায়নের দাবিতে শ্রমিক ইউনিয়নগুলোর পক্ষ থেকে বাগান মালিকদের সাত দিনের আলটিমেটাম দেয়া হয়।
কিন্তু মালিক পক্ষ এই সময়ের মধ্যে বৈঠক বা সমঝোতায় না আসায় ১৩ আগস্ট থেকে লাগাতার পূর্ণ দিবস কর্মবিরতি পালন শুরু করেন শ্রমিকরা। এরপর দফায় দফায় বৈঠক করেও এখন পর্যন্ত কোনো সঠিক সমাধানে যায়নি এই সংকট।
কুলাউড়া লোহানী চা বাগানের শ্রমিক নেতা অজিদ কৈরী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে শুনতে চাই যে আমাদের মজুরি বাড়াবে। প্রধানমন্ত্রী না বলা পর্যন্ত আমরা আন্দোলন থেকে ফিরব না।’
আরও পড়ুন:সিলেটে চা বাগান শ্রমিকদের কর্মবিরতি অব্যাহত
মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে সিলেটে ২৩ চা বাগানে কর্মবিরতি পালন
২ বছর আগে
সিলেটে বিমানবন্দর সড়ক অবরোধ চা-শ্রমিকদের, দীর্ঘ যানজট
ন্যূনতম ৩০০ টাকা মজুরি করার দাবিতে আবারও আন্দোলনে নেমেছে সিলেটের চা-শ্রমিকরা। আন্দোলনের এক পর্যায়ে তারা সিলেট বিমানবন্দর সড়ক অবরোধ-মিছিল ও সমাবেশ করেন।
রবিবার সকাল ১১টা থেকে সিলেট ভ্যালির চা-শ্রমিকরা কাজে যোগ না দিয়ে আন্দোলন শুরু করেন এবং দুপুর ১২টা থেকে বেলা ২টা পর্যন্ত সিলেট বিমানবন্দর সড়ক অবরোধ করে বিভিন্ন ধরনের শ্লোগান দিতে থাকেন তারা। এসময় সড়কের দুইপাশে যান চলাচল বন্ধ হয়ে সৃষ্টি হয় যানজটের।
পরে সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শফিকুর রহমান চৌধুরীর আশ্বাসে ২৪ ঘণ্টার জন্য সড়ক অবরোধ কর্মসূচি স্থগিত করে লাক্কাতুরা চা বাগানের দুর্গা মণ্ডপের সামনে গিয়ে বিক্ষোভ করেন শ্রমিকরা। এছাড়া আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তাদের দাবি মানা না হলে আগামীকাল সোমবার থেকে ফের সড়ক অবরোধ করবেন বলে জানান তারা।
আরও পড়ুন:টানা তৃতীয় দিনের মতো পোশাক শ্রমিকদের সড়ক অবরোধ
এদিকে আন্দোলন শুরুর বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন চা-শ্রমিকের সন্তান ও আন্দোলনকারী দেবাশীষ গোয়ালা। তিনি জানান, চা-বাগান মালিকরা আমাদের সঙ্গে বৈষম্যমূলক আচরণ করছেন। ১২০ টাকা থেকে ২৫ টাকা বাড়িয়ে ১৪৫ টাকা করে আমাদের দয়া দেখাচ্ছেন তারা। কিন্তু আমরা কারও দয়া চাই না। আমরা আমাদের ন্যায্য দাবি চাই। বর্তমান যুগে কোথাও এই মজুরি নাই। এছাড়া যেখানে শ্রমিকের অধিকার বাস্তবায়ন হয় নাই, সেখানে প্রত্যাহার নয় প্রত্যাখ্যান হওয়া জরুরি। তাই আমরা আমাদের দাবিতে অনড় অবস্থায় আবারও মাঠে নেমেছি।
প্রসঙ্গত, এর আগে চলতি বছরের জুন মাসে বাংলাদেশ চা-শ্রমিক ইউনিয়ন ও মালিকপক্ষের সংগঠন বাংলাদেশ চা সংসদের বৈঠক হয়। সেখানে শ্রমিকদের দৈনিক মজুরি ৩০০ টাকা করার প্রস্তাব দেন শ্রমিক নেতারা। কিন্তু মালিকপক্ষ ১৪ টাকা বাড়িয়ে ১৩৪ টাকা মজুরির প্রস্তাব দেয়। যে কারণে শ্রমিক নেতারা তা প্রত্যাখ্যান করেন। এরপর আরও এক মাস পার হয়ে যায়। মালিকপক্ষ কোনো সিদ্ধান্ত জানায়নি।
এর প্রতিবাদে ৯-১২ আগস্ট পর্যন্ত টানা চার দিন প্রতিদিন দুই ঘণ্টা করে ধর্মঘট পালন করেন চা-শ্রমিকরা। তারপরও মালিকপক্ষ থেকে এ বিষয়ে কোনো কথা না বলায় ১৩ আগস্ট থেকে বাংলাদেশের সব চা-বাগানে অনির্দিষ্টকালের জন্য পূর্ণদিবস কর্মবিরতি শুরু করেন শ্রমিকরা।
আরও পড়ুন:গাজীপুরে শ্রমিকদের সড়ক অবরোধ, পুলিশের লাঠিচার্জ
সাভারে ঈদ বোনাসের দাবিতে পোশাক শ্রমিকদের সড়ক অবরোধ
২ বছর আগে