চিত্রা নদী
চিত্রা নদী থেকে নিখোঁজ ব্যবসায়ীর লাশ উদ্ধার
নড়াইলের চিত্রা নদী (বানকানা) থেকে নিখোঁজ ব্যবসায়ীর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। মঙ্গলবার (৩১ জানুয়ারি) সকালে সুইস গেটের নিচে থেকে লাশটি উদ্ধার করে নৌপুলিশ।
আরও পড়ুন: গাইবান্ধায় ব্রিজের নিচ থেকে গলাকাটা লাশ উদ্ধার
নিহত ইসহাক মোল্যা (৭৫) উপজেলার বড়দিয়া বাজারের গুড় ব্যবসায়ী এবং জেলার লোহাগড়া উপজেলার কোটাকোল ইউনিয়নের মঙ্গলপুর গ্রামের মৃত দীন ইসলাম মোল্যার ছেলে।
এ বিষয়ে বড়দিয়া নৌপুলিশফাঁড়ির ইনচার্জ লোকমান হোসেন বলেন, ধারণা করা হচ্ছে চার থেকে পাঁচ দিন আগেই তার মৃত্যু হয়েছে। লাশটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নড়াইল সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। রিপোর্ট পেলে মৃত্যুর আসল রহস্য জানা যাবে।
আরও পড়ুন: পাইকগাছায় ধানখেত থেকে নারীর লাশ উদ্ধার
১ বছর আগে
রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে নিশ্চিহ্নের পথে ৭১ এর আট গণকবর
মাগুরার শালিখা উপজেলার হাজরাহাটি এলাকায় চিত্রা নদীর পাড়ে অবস্থিত আটজন শহীদের গণ কবর। সংরক্ষণের উদ্যোগ না নেয়ায় যে কোন সময় বিলীন হয়ে যেতে পারে এটি।
হাজরাহাটি গ্রামে অধির অধিকারীর বাড়ির দক্ষিণ পাশে চিত্রা নদীর তীরে এ গণ কবরটি অবস্থিত।
১৯৭১ সালে ৬ ডিসেম্বর রাতে স্থানীয় রাজাকাররা পাশের জুনারী গ্রাম থেকে আটজন মুক্তিযোদ্ধাকে ধরে নিয়ে আসে। এ সমস্ত মুক্তিকামী মানুষ দেশের বিভিন্ন অংশ পাকিস্তান হানাদার মুক্ত হওয়ার পাশাপাশি মহান বিজয় অর্জিত হচ্ছে এমন খবরে নিজেদের বাড়ি ফরিদপুরের বিভিন্ন গ্রামে ফিরে যাচ্ছিলেন।
রাজাকাররা তাদেরকে ধরে এনে পরদিন ৭ ডিসেম্বর চিত্রা নদীর পাড়ে প্রথমে বর্বর নির্যাতন করে। পরে নদীর পাড়ে হাত বেঁধে তাদের গুলি করে হত্যা করে। এরপর গ্রামবাসীকে দিয়ে নদীর পাড়ে তাদের গণ কবর দেয়া হয়।
এখানে শায়িত মুক্তিযোদ্ধারা হলেন-যদুনাথ গুহ, পঞ্চানন পাল, হরিপদ দাস, নিত্যান্দন ভদ্র, মনোরঞ্জন দত্ত, নারুগোপাল রায়, সুরেশ কর ও অজ্ঞাত একজন।
এদের সবার বাড়ি ফরিদপুর জেলার বোয়ালমারী গ্রামে।
আরও পড়ুন: চলন্ত লঞ্চে আগুন: বরগুনায় গণকবরে অজ্ঞাত ২৩ লাশ দাফন
শালিখা উপজেলার হাজরাহাটি গ্রামের ছবি রাণী অধিকারী কান্না বিজড়িত কন্ঠে বলেন, আজও আমি চিত্রা নদীর পাড়ে বসে আমার ভাই যদুনাথ গুহকে খুঁজে ফিরি। তার ছবিখানা হাতে নিয়ে নদীর পাড়ে গিয়ে সেই গণকবরের কাছে যাই আর বলি- ফিরে আয় আমার ভাই, ফিরে আয় আমার ভাই।
ছবি রাণী বলেন, ১৯৭১ সালের ৭ ডিসেম্বর রাজাকাররা আমার ভাইসহ আরও সাতজন মুক্তিযোদ্ধাকে হত্যা করে। তারা শুধু তাদের হত্যাই করেনি বরং চোখ বেঁধে তাদের ওপর নির্মম অত্যাচার করে। তারপর একে একে হত্যা করে আটজন মুক্তিযোদ্ধাকে।
তিনি আরও বলেন, স্বাধীনতার ৫১ বছর পরও তাদের এ গণকবর যথাযথভাবে সংরক্ষণ করা হয়নি। বৃষ্টির ভরা মৌসুমে নদীতে যখন পানি ভরে যায় তখন গণকবরের সীমানায় পানি প্রবেশ করে। হয়তো আগামী দিনে এ গণকবর নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যাবে।
একই গ্রামের স্থানীয় রতন কুমার দাস বলেন, স্বাধীনতার সময় আমার বয়স ১৩ বছর। মুক্তিযুদ্ধের সময় আমাদের গ্রামের রাজাকাররা মানুষের ওপর নানা ধরনের অত্যাচার করে। নিরীহ মানুষকে ধরে তারা অত্যাচার করে মুক্তিযোদ্ধাদের খবর জানতে চায়।
তিনি বলেন, যুদ্ধের শেষ সময়ে ভারত থেকে কিছু মুক্তিযোদ্ধা আমাদের গ্রাম দিয়ে তাদের নিজ জেলা ফরিদপুর জেলায় যাচ্ছিল। এ খবর রাজাকাররা পেয়ে তাদের লোকজন দিয়ে আটজন মুক্তিযোদ্ধাকে ধরে আনে। তারপর চিত্রা নদীর পাড়ে তাদের চোখ বেঁধে নির্মমভাবে হত্যা করে চলে যায়। তখন গ্রামবাসীরা একটি কবর খুঁড়ে সেই কবরে আটজনকে মাটি চাপা দেয়।
আরও পড়ুন: কানাডার আরেকটি আদিবাসী স্কুলে গণকবরের সন্ধান
এছাড়া গণকবরটি নদীর পাড়ে হওয়ায় সেটি বিলীনের সম্মুখীন অবস্থায় রয়েছে বলে জানান তিনি।
তিনি আরও বলেন, আমরা উপজেলা প্রশাসনকে বার বার তাগিদ দেয়ার পরও তারা কোন উদ্যাগ নেয়নি। শুধু কয়েকবার পরিদর্শন করে যায়। কিন্তু কোন সংরক্ষণের কাজ করে না। বিশেষ করে ভারী বর্ষা মৌসুমে নদীতে পানি ভরে গেলে গণকবরের কাছাকাছি উঠে যায়।
মাগুরা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের জেলা ইউনিটের যুগ্ম-আহ্বায়ক ও সাবেক যুদ্ধকালীন ডেপুটি কমান্ডার এস এম আব্দুর রহমান বলেন, ১৯৭১ সালের ৭ ডিসেম্বর স্থানীয় রাজাকাররা ভারত থেকে ট্রেনিং করে ফিরে আসা আট মুক্তিযোদ্ধাকে ধরে এনে চিত্রা নদীর পাড়ে চোখ বেঁধে নির্মমভাবে হত্যা করে। পরে এলাকার স্থানীয়রা তাদের গণকবর দেয়।
তিনি বলেন, আমরা কয়েকবার ওই স্থান পরিদর্শন করেছি এবং উপজেলার প্রশাসনকে বারবার তাগিদ দিয়েছে তা সংরক্ষণ করার জন্য। তাছাড়া আমরা মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়কে এ বিষয়গুলো দেখবাল করার জন্য অনুরোধ করেছি।
তিনি আরও বলেন, এ আট মুক্তিযোদ্ধার সবার বাড়ি ফরিদপুর জেলায়। প্রতিবছর ৭ ডিসেম্বর ফরিদপুর বোয়ালমারী থেকে এ আট মুক্তিযোদ্ধার স্বজনরা ওই স্থানে এসে মিলিত হয় এবং অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
কিন্তু এবার কোন কারণবশত হয়নি।
মুক্তিযোদ্ধারা দেশের প্রাণ তাদের প্রাণের বিনিময়ে এদেশ স্বাধীন করেছে। তাই তাদের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করা আমাদের প্রতিটি নাগরিকের নৈতিক দায়িত্ব।
আরও পড়ুন: স্যাটেলাইট ছবিতে মারিউপোলের কাছে সম্ভাব্য গণকবরের সন্ধান
১ বছর আগে
চিত্রা নদীতে ধরা পড়ল বিরল প্রজাতির কুমির
নড়াইলের কালিয়া উপজেলায় চিত্রা নদীতে ধরা পড়েছে বিরল প্রজাতির প্রায় ছয় ফুট লম্বা একটি কুমির।
সোমবার (১৯ ডিসেম্বর) বিকালে কালিয়া উপজেলার খড়রিয়া গ্রামের জোবায়ের বিশ্বাসের ইটভাটা সংলগ্ন চিত্রা নদী থেকে গ্রামবাসী জাল দিয়ে কুমিরটি ধরেন।
এর আগে চিত্রা নদীতে কুমির ভাসতে দেখা গেছে বলে এলাকায় গুঞ্জন ছড়িয়েছিল।
কুমিরটিকে জালে আটকে ডাঙায় তুলে পেড়লী ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চত্বরে রাখা হয়। এসময় কুমির দেখতে সেখানে শতশত উৎসুক জনতা ভিড় করেন।
পরে বনবিভাগে খবর দিলে সন্ধ্যায় এসে কুমিরটি নিয়ে যান কর্মীরা।
আরও পড়ুন: পদ্মায় জেলের জালে ধরা পড়ল বিশাল আকৃতির কুমির
জানা গেছে, ১৩ অক্টোবর কুমিরটি স্থানীয়দের নজরে আসার পর চিত্রা নদীতে কুমিরের আগমনের খবরে স্থানীয়দের মাঝে ব্যাপক চাঞ্চল্যের পাশাপাশি আতঙ্কও তৈরি হয়। কুমিরটিকে বিরক্ত না করতে এবং অহেতুক আতঙ্কিত না হওয়ারও পরামর্শ দেয় কর্তৃপক্ষ। অনেকে সেটি দেখতে ছুটে যান।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সোমবার দুপুরে জনৈক জোবায়ের বিশ্বাসের ইটভাটা সংলগ্ন নদীর পাড়ের চরে শ্রমিকরা বৃহৎ আকৃতির কুমির দেখতে পেয়ে আৎকে ওঠেন। এরপর গ্রামবাসী সবাই মিলে জাল দিয়ে ঘেরাও করে কুমিরটিকে আটক করে।
এসময় কুমিরের কামড়ে খড়রিয়া গ্রামের সরোয়ার বিশ্বাস (৬০), আমিনুর রহমান (৪৫), টুলু শিকদার (৩৫) সহ সাতজন জখম হয়।
আহতদের স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।
তারা আরও জানান, কুমিরটি প্রায় পাঁচ/সাত ফুট লম্বা হবে। চিত্রা নদীতে কয়েকমাস ধরে এটিকে বিভিন্ন স্থানে ভাসতে দেখা যায়।
ইতিমধ্যে নদীতে পানি কমতে থাকায় এবং শীতকাল হওয়ায় রোদ পোহাতে সেটি ডাঙার দিকে চলে এসেছিল।
এ ব্যাপারে পেড়লী ইউপি চেয়ারম্যান মো. জারজিদ মোল্যা বলেন, সোমবার দুপুর একটার দিকে স্থানীয়রা কুমিরটি দেখতে পেয়ে অন্যদের খবর দেয়। এরপর খড়রিয়া গ্রামের আজিমুল মোল্যাসহ ১০/১২জন মিলে চারদিকে বড় জাল দিয়ে ঘেরাও করে কুমিরটিকে আটক করে। এরপর সেটি ইউপি চত্তরে নিয়ে আসলে আমার হেফাজতে রাখা হয়। পরে সন্ধ্যার দিকে কালিয়া উপজেলা সামাজিক বন বিভাগের সহযোগিতায় বন্যপ্রাণি সম্প্রসারণ ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের খুলনা রেঞ্জ অফিসারের নিকট সন্ধ্যার পূর্বে লিখিতভাবে হস্তান্তর করা হয়।
কালিয়া উপজেলা সামাজিক বন বিভাগের ফরেস্টার আমজাদ হোসেন বলেন, কুমিরটিকে আটক করতে পারার খবর পেয়ে বন্যপ্রাণি সম্প্রসারণ এবং প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ খুলনার রেঞ্জ অফিসার মাহিনুর রহমান এসে কুমিরটি সন্ধ্যার পূর্বে নিয়ে গেছেন।
এটি মিঠাপানির বিরল প্রজাতির ঘড়িয়াল বলে মনে করছেন তারা।
কালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ তাসমীম আলম বলেন, আমরা খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে ঘড়িয়ালটির নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছি। এরপর কালিয়া উপজেলা সামাজিক বন বিভাগের সঙ্গে কথা বললে তারা বন্যপ্রাণী সস্প্রসারণ এবং প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের খুলনা অঞ্চলের কর্মকর্তাদের নিকট সেটি হস্তান্তর করা হয়।
আরও পড়ুন: শরীয়তপুরে মাছের ঘেরে মিলল ৮ ফুট কুমির
রূপসায় নদীর চরে কুমির, আতঙ্কে নদী পাড়ের মানুষ
১ বছর আগে
চাকরিতে যোগদানের ৩ দিন আগে নদীতে ডুবে যুবকের মৃত্যু
চাকরিতে যোগদানের মাত্র তিন দিন আগে নড়াইলের কালিয়ায় চিত্রা নদীতে গোসল করার সময় ডুবে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে।
৪ বছর আগে
ঝিনাইদহের ১২টি নদী এখন মরা খাল
ঝিনাইদহের ছয় উপজেলার বুক চিরে বয়ে গেছে ১২টি নদ-নদী। কিন্তু খননের অভাব আর দখলদারদের কারণে নদীগুলো পরিণত হয়েছে মরা খালে। নদীগুলোতে এখন আর যৌবন নেই। পাওয়া যায়না দেশীয় প্রজাতির মাছ। শুষ্ক মৌসুমে থাকেনা পানি। সেখানে চাষ করা হয় ধান, পাট, সরিষাসহ নানা ফসলের।
৪ বছর আগে