একনেক
একনেকে ১৮ হাজার কোটি টাকার ১৯ প্রকল্প অনুমোদন
মোংলা বন্দরের উন্নয়ন ও সম্প্রসারণে একটি প্রকল্পসহ মোট ১৮ হাজার ৬৭ কোটি টাকা ব্যয়ে ১৯টি উন্নয়ন প্রকল্প অনুমোদন করেছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)।
মঙ্গলবার রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে এনইসি সম্মেলন কক্ষে একনেক চেয়ারপারসন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত একনেক সভায় এ অনুমোদন দেওয়া হয়।
বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন ‘আজ বৈঠকে ১৯টি প্রকল্প অনুমোদন করা হয়েছে। প্রকল্পগুলোর মোট আনুমানিক ব্যয় ১৮ হাজার ৬৬ কোটি ৫২ লাখ টাকা।’
পাস করা প্রকল্পগুলোর মোট ব্যয়ের মধ্যে ১২ হাজার ৬০ কোটি ১৯ লাখ টাকা সরকারের তহবিল থেকে দেওয়া হবে। আর পাঁচ হাজার ৫৫৫ কোটি ৬১ লাখ টাকা আসবে বৈদেশিক সহায়তা হিসাবে বহিরাগত উৎস থেকে এবং বাকি ৪৫০ কোটি ৭২ লাখ টাকা সংশ্লিষ্ট বিভাগের নিজস্ব তহবিল থেকে অর্থায়ন করা হবে।
অনুমোদিত প্রকল্পের মধ্যে ১২টি নতুন প্রকল্প এবং সাতটি সংশোধিত প্রকল্প।
তিনটি বৃহত্তম প্রকল্প হলো ৪ হাজার ২৮২ কোটি ৭৬ লাখ টাকার ‘মোংলা বন্দর সুবিধা সম্প্রসারণ ও উন্নয়ন’ প্রকল্প; দুই হাজার ৭৬২ কোটি ৪৩ লাখ টাকায়‘চট্টগ্রাম বিভাগের দক্ষিণাঞ্চলের ট্রান্সমিশন অবকাঠামো এবং কালিয়াকৈরে বঙ্গবন্ধু হাই-টেক সিটি’ প্রকল্প; এবং দুই হাজার ৬৮১ কোটি ২৪ লাখ টাকা ব্যয়ে ‘সুনামগঞ্জ ও হবিগঞ্জ সড়ক বিভাগের অধীনে ২০২২ সালের বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত বিভিন্ন সড়ক, সেতু ও কালভার্টের জরুরি সংস্কার ও উন্নয়ন প্রকল্প’ বাস্তবায়ন করা হবে।
আরও পড়ুন: একনেকে ১৩,৬৫৫ কোটি টাকার ১১ প্রকল্প অনুমোদন
এম এ মান্নান বলেন, বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের জন্য বরাদ্দকৃত এক বিলিয়ন জলবায়ু তহবিল থেকে তহবিল পেতে ডেল্টা প্ল্যান-২১০০ এর সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে উন্নয়ন প্রকল্পগুলোর নকশা করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বলেছেন।
তিনি বলেন, জলবায়ু তহবিল থেকে ১ বিলিয়ন ডলারের অর্থায়ন পাওয়ার বিষয়টি সম্প্রতি ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মধ্যে আলোচনা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী পানির প্রবাহ ও চ্যানেলের বন্যার পানি অপসারণ নির্বিঘ্ন করতে নিচু এলাকা ও হাওরে আরও সেতু ও কালভার্ট নির্মাণের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও প্রকৌশলীদের প্রতি নির্দেশ দেন।
বৈঠকের শুরুতে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, একনেক নয়াদিল্লিতে অনুষ্ঠিত জি-২০ শীর্ষ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর উজ্জ্বল ও প্রাণবন্ত অংশগ্রহণের জন্য উষ্ণ অভিনন্দন জানিয়েছে কারণ এটি বিশ্বমঞ্চে প্রধানমন্ত্রী ও দেশের ভাবমূর্তি আরও উজ্জ্বল করেছে।
তিনি বলেন, একনেক আরও উল্লেখ করেছে যে ফরাসি প্রেসিডেন্টের সাম্প্রতিক বাংলাদেশ সফর বৈশ্বিক অঙ্গনে দেশের ভাবমূর্তি আরও উজ্জ্বল করেছে।
বৈঠকে ইকোনমিক ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (ইআইইউ) প্রতিবেদন অনুযায়ী ২০৪০ সালের মধ্যে শীর্ষ ২০টি অর্থনীতির মধ্যে বাংলাদেশ স্থান করে নেবে বলে উল্লেখ করা হয়।
আগস্টে উচ্চ মূল্যস্ফীতির বিষয়ে মান্নান বলেন, মূল্যস্ফীতি বেড়েছে এবং সরকার এ বিষয়ে অনেক সচেতন। "আমরা অতীতের মতো এটিকে সম্বোধন করব," তিনি বলেছিলেন।
আরও পড়ুন: একনেকে ১২ প্রকল্পের অনুমোদন
অন্য ৯টি নতুন প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে- ৫৪৯ কোটি ৯৩ লাখ টাকা ব্যয়ে‘ফেনী (মোহাম্মদ আলী বাজার)-ছাগলনাইয়া-কারেরহাট সড়ক প্রশস্তকরণ (ঢাকা-চট্টগ্রাম পুরাতন মহাসড়ক) (জেড-১০৩১) এবং ফেনী নদীর উপর শুভপুর সেতু নির্মাণ প্রকল্প; এক হাজার ৭৪০ কোটি টাকা ব্যয়ে রায়েরবাজার এলাকায় স্যুয়ারেজ ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট নির্মাণের জন্য জমি অধিগ্রহণ; ১৪৮ কোটি ৪০ লাখ টাকা ব্যয়ে ‘উৎপাদনশীল এবং সম্ভাব্য কাজের সুযোগ (স্বপ্ন) - ২ অংশ’ প্রকল্পের সুবিধাভোগী নারীদের সক্ষমতা বৃদ্ধি; ১১০ কোটি ৫৮ লাখ টাকায় ‘বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গনে মাজার মসজিদ নির্মাণ’ প্রকল্প; ২৮২ কোটি ৬২ লাখ টাকা ব্যয়ে ‘কৃষক পর্যায়ে বিএডিসির বীজ সরবরাহ কর্মসূচি শক্তিশালীকরণ’ প্রকল্প; ৩০৩ কোটি ৬৭ লাখ টাকা ব্যয়ে ‘মানিকগঞ্জ, ঢাকা, মুন্সীগঞ্জ, রাজবাড়ী, ফরিদপুর, মাদারীপুর ও শরীয়তপুর জেলার নদীমাতৃক চারণ এলাকায় সমন্বিত প্রাণিসম্পদ উন্নয়ন’ প্রকল্প বাস্তবায়ন; ৬২৮ কোটি ৮৬ লাখ টাকা ব্যয়ে মেঘনা শাখা নদীর ভাঙন থেকে হিজলা উপজেলার পুরাতন হিজলা, বাউশিয়া ও হরিনাথপুর এলাকা রক্ষা প্রকল্প; ৮৫৯ কোটি ৭৭ লাখ টাকা ব্যয়ে পদ্মা নদীর ডান তীরের ভাঙন থেকে শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার মাঝিরঘাট জিরো পয়েন্ট এলাকা রক্ষা প্রকল্প এবং ৮২৭ দশমিক ০২ কোটি টাকায় চাঁদপুর সিটি রক্ষা ও সংস্কার প্রকল্প বাস্তবায়ন করবে।
আরও পড়ুন: একনেকে ১১ হাজার ৩৮৮ কোটি টাকা আনুমানিক ব্যয়সহ ১৮টি প্রকল্প অনুমোদন
সাতটি সংশোধিত প্রকল্প হলো- ‘জেলা মহাসড়কে যথাযথ মান ও প্রস্থে উন্নীতকরণ (খুলনা জোন) (১ম সংশোধিত)’ প্রকল্পের অতিরিক্ত ব্যয় ১০৬ কোটি ১৭ লাখ টাকা (বর্তমানে ব্যয় বেড়েছে ৮৬২ কোটি ৯৭ লাখ টাকা); ‘নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের গুদারাঘাটের কাছে শীতলক্ষ্যা নদীর উপর কদমরসুল সেতু নির্মাণ (প্রথম সংশোধিত)’ প্রকল্পের অতিরিক্ত ব্যয় ১৪৪ কোটি ৪৩ লাখ টাকা (বর্তমানে ৭৩৫ কোটি ১৮ লাখ টাকা); ‘গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ভৌত অবকাঠামো উন্নয়ন (রাস্তা ও ড্রেন) (তৃতীয় সংশোধিত ‘ প্রকল্পের ব্যয় ৭০০ কোটি ৬০ লাখ টাকা থেকে বাড়ানো ছাড়া; ‘হাতিয়া দ্বীপ, নিঝুম দ্বীপ এবং কুতুবদিয়া দ্বীপের শতভাগ নির্ভরযোগ্য এবং টেকসই বিদ্যুতায়ন (প্রথম সংশোধিত)’ প্রকল্পের অতিরিক্ত ব্যয় ২২৬ কোটি ২৪ লাখ টাকা (বর্তমানে ৬৪৭ কোটি ১২ লাখ টাকা);‘সার সঞ্চয় ও বিতরণ সুবিধার জন্য দেশের বিভিন্ন জেলায় ১৩টি নতুন বাফার গোডাউন নির্মাণ (তৃতীয় সংশোধিত)’ প্রকল্পের ব্যয় ৫৩৫ কোটি ৩৩ লাখ টাকা থেকে এক কোটি ৩৬ লাখ টাকা হ্রাস; এক হাজার ৯৭৩ কোটি ৫৮ লাখ টাকা (বর্তমানে ৬ হাজার ৯৬ কোটি টাকা) অতিরিক্ত ব্যয় সহ ‘অস্বচ্ছল মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য ঘর নির্মাণ (প্রথম সংশোধিত)’ প্রকল্প; এবং ৩৬৩ কোটি ৭০ লাখ টাকা (বর্তমানে এক হাজার ২৩ কোটি ৫০ লাখ টাকা) অতিরিক্ত ব্যয় সহ‘বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যাপক উন্নয়ন (প্রথম সংশোধিত)’ প্রকল্প।
আরও পড়ুন: একনেকে ৮৮টি পৌরসভায় নগর শাসন ও অবকাঠামো উন্নয়নে ৬,৩৪৫ কোটি টাকার প্রকল্প অনুমোদন
মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
সাধারণ মানুষ দুর্ভোগ লাঘবে মূল্যস্ফীতির লাগাম টেনে ধরার জন্য সংশ্লিষ্ট সকলকে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মঙ্গলবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান।
এসময় তিনি প্রধানমন্ত্রীর বরাতে বলেন, ‘এই মুহূর্তে আমাদের সবার প্রধান দায়িত্ব মূল্যস্ফীতির বিরুদ্ধে লড়াই করা।’
রাজধানীর শেরে বাংলানগর এলাকায় এনইসি সম্মেলন কক্ষে একনেক চেয়ারপার্সন প্রধানমন্ত্রীর সভাপতিত্বে একনেক বৈঠক শেষে মন্ত্রী সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
তিনি স্থানীয় মুদ্রার ওপর চাপ কমাতে এবং বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বাড়াতে প্রকল্প বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে বিদেশি উৎস থেকে বৃহত্তর অর্থায়নের ওপর জোর দিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বলেন।
বাংলাদেশ কম বৈদেশিক ঋণ ব্যবহার করায় বৈদেশিক ঋণের পাইপলাইন বড় হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বিদেশি ঋণ আরও বড় আকারে ব্যবহার করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানান।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ বাইরের কোনো চাপের কাছে নতি স্বীকার করবে না: প্রধানমন্ত্রী
শেখ হাসিনা বলেন, বৈদেশিক সাহায্যপ্রাপ্ত প্রকল্প সময়মতো বাস্তবায়নের প্রবণতা বাড়লে বৈদেশিক ঋণ বিতরণ বাড়বে।
তিনি অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি), জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) এবং অর্থ বিভাগসহ কর্তৃপক্ষকে উন্নয়ন প্রকল্পে অর্থায়নের জন্য আরও বেশি বৈদেশিক তহবিল এবং বৈদেশিক ঋণ ব্যবহার করে তা নিশ্চিত করতে বলেছেন, যা বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বাড়াবে।
এসময় পর্যায়ক্রমে সৌরচালিত পাম্পের মাধ্যমে শতভাগ সেচ নিশ্চিত করার আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।
১১৬ কোটি ৩২ লাখ টাকা ব্যয়ে ‘বিসিএস (ট্যাক্স) একাডেমির ভৌত অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প (ফেজ-১)’- শীর্ষক প্রকল্পের কথা উল্লেখ করে তিনি এ ধরনের প্রকল্প বাস্তবায়নের সময় কম জমি ব্যবহার করার জন্য কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন।
মঙ্গলবার একনেক ৪৮টি জেলার ৮৮টি পৌরসভায় নগর শাসন ও অবকাঠামো উন্নয়নে ৬ হাজার ৩৪৫ কোটি টাকার একটিসহ মোট ১৬টি প্রকল্প অনুমোদন করেছে।
আরও পড়ুন: আগামী জাতীয় নির্বাচন যথাসময়ে অনুষ্ঠিত হবে: জেনেভায় নাগরিক সংবর্ধনায় প্রধানমন্ত্রী
বাংলাদেশের অর্থনীতি এখন মর্যাদাপূর্ণ অবস্থানে রয়েছে: প্রধানমন্ত্রী
একনেকে ১১ হাজার ৩৮৮ কোটি টাকা আনুমানিক ব্যয়সহ ১৮টি প্রকল্প অনুমোদন
জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) মোট ১১ হাজার ৩৮৮ কোটি টাকা ব্যয়ে ১৮টি উন্নয়ন প্রকল্প অনুমোদন করেছে।
মঙ্গলবার রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে এনইসি সম্মেলন কক্ষে এনসেক চেয়ারপার্সন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে একনেক সভায় এ অনুমোদন দেওয়া হয়।
সভা শেষে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, ‘আজ ১৮টি প্রকল্প অনুমোদন করা হয়েছে। প্রকল্পগুলোর সামগ্রিক আনুমানিক ব্যয় ১১ হাজার ৩৮৭ কোটি ৯১ লাখ টাকা (শুধুমাত্র সংশোধিত প্রকল্পগুলো অতিরিক্ত ব্যয় এখানে গণনা করা হয়েছে)।’
তিনি জানান, ব্যয়ের মধ্যে বাংলাদেশ সরকার ৭ হাজার ৪৪৫ কোটি ৩৪ লাখ টাকা অর্থায়ন করবে, আর ৩ হাজার ৮৬১ কোটি ৭৯ লাখ টাকা আসবে বৈদেশিক উৎস থেকে এবং বাকি ৮০ কোটি ৭৮ লাখ টাকা সংশ্লিষ্ট সংস্থার তহবিল থেকে।
অনুমোদিত প্রকল্পগুলোর মধ্যে ৯টি নতুন এবং বাকিগুলো সংশোধিত প্রকল্প।
নতুন প্রকল্পগুলোর মধ্যে রয়েছে- ‘শহীদ বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সী আবদুর রউফ স্মৃতি জাদুঘরের লিংক রোড এবং ফরিদপুর জেলার অধীনে নদীতে ভাঙন ও ড্রেজিং থেকে মধুমতি নদীর বাম তীরের অন্যান্য এলাকা রক্ষা, যার আনুমানিক ব্যয় ৪৮১.১০ কোটি টাকা; ৮৭৭.৫৩ কোটি টাকার ‘বাগেরহাট জেলা পল্লী অবকাঠামো’ প্রকল্প: ১৪২৮ কোটি টাকায় ‘নেত্রকোনা জেলা পল্লী অবকাঠামো উন্নয়ন’ প্রকল্প; ২৫০ কোটি টাকায় ‘নড়াইল জেলা পল্লী অবকাঠামো উন্নয়ন’ প্রকল্প; এবং ৩৬৯.৩০ কোটি টাকায় কৃষি মন্ত্রণালয়ের ৬টি নতুন আঞ্চলিক কার্যালয় স্থাপনের মাধ্যমে অবস্থানভিত্তিক ধানের জাত ও প্রযুক্তি উদ্ভাবন এবং বিদ্যমান গবেষণাগারের উন্নয়ন।
আরও পড়ুন: একনেকে ১২ প্রকল্পের অনুমোদন
অন্য নতুন প্রকল্পগুলো হলো- ১ হাজার ৪১৮ কোটি ৭৫ লাখ টাকা ব্যয়ে ১০টি মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীদের জন্য আধুনিক সুযোগ-সুবিধা সম্বলিত ১৯টি হোস্টেল ভবন নির্মাণ; ৯৬ কোটি ৯৬ লাখ টাকায় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে চারুকলা অনুষদের ভবন নির্মাণ; ৪০১৬ কোটি ৫৭ লাখ টাকায় ‘হায়ার এডুকেশন এক্সিলারেশন অ্যান্ড ট্রান্সফরমেশন (হিট)’ এবং ৮৯ কোটি ০২ লাখ টাকায় ‘সাভার সেনানিবাস এলাকায় মাংস প্রক্রিয়াকরণ প্ল্যান্ট স্থাপন’।
সংশোধিত প্রকল্পগুলো হলো-‘পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল, পটুয়াখালী স্থাপন (১ম সংশোধিত)’ অতিরিক্ত ব্যয় ৬৬ কোটি ৫৫ লাখ টাকা (বর্তমানে ৬৫১ কোটি টাকা); ‘আশ্রয়ণ-২ (৫ম সংশোধিত) প্রকল্প’ যার খরচ কমানো হয়েছে ২ হাজার ৩৪৩ কোটি ২৩ লাখ টাকা (এখন খরচ নেমে এসেছে ৮ হাজার ৭৯৯ কোটি ৬৫ লাখ টাকা); ‘গুরুত্বপূর্ণ নগর পরিকাঠামোর উন্নয়ন (পর্যায়-২) (প্রথম সংশোধিত)’ অতিরিক্ত ব্যয়ে ৯৫৩ কোটি টাকা (এখন খরচ ৪ হাজার ৪১৮ কোটি ৫০ লাখ টাকা); ‘বাংলাদেশ আঞ্চলিক সংযোগ প্রকল্প-১ শেওলা, রামগড় ও ভোলাগঞ্জ স্থলবন্দর উন্নয়ন এবং বেনাপোল স্থলবন্দরের নিরাপত্তা ব্যবস্থার আধুনিকীকরণ (২য় সংশোধিত)’ অতিরিক্ত ব্যয়ে ২৩৪ কোটি ২৭ লাখ টাকা (বর্তমানে ৯৬৬ কোটি ১৩ লাখ টাকা); ‘সাতক্ষীরা রোড ও সিটি বাইপাস রোডের সংযোগকারী সংযোগ সড়কসহ তিনটি সংযোগ সড়ক নির্মাণ (১ম সংশোধিত)’ অতিরিক্ত ব্যয় ৩২৩ কোটি ১৩ লাখ টাকা (বর্তমানে ৭১৭ কোটি ৮০ লাখ টাকা); ‘চট্টগ্রাম সিটি আউটার রিং রোড (৪র্থ সংশোধিত)’ অতিরিক্ত ব্যয় ৬৪৮ কোটি ১৯ লাখ টাকা (বর্তমানে ৩ হাজার ৩২৪ কোটি ১৫ লাখ টাকা); ২৫৩ কোটি ৮১ লাখ টাকার অতিরিক্ত ব্যয়ে ‘ডিজিএফআই’স টেলিকমিউনিকেশন অ্যান্ড আইসিটি অবকাঠামো, মানবসম্পদ ও প্রযুক্তিগত সক্ষমতা বিল্ডিং (টিআইএইচডিটিসিবি) (দ্বিতীয় সংশোধিত)’ (এখন খরচ ১ হাজার ৫২১ কোটি ৭৬ লাখ টাকা); ‘বাংলাদেশ রেলওয়ের টঙ্গী-জয়দেবপুর সেকশনে ৩য় ও ৪র্থ ডুয়েলগেজ লাইন এবং টঙ্গী-জয়দেবপুর সেকশনে ডুয়েল-গেজ ডাবল লাইন নির্মাণ (২য় সংশোধিত)’ অতিরিক্ত ব্যয় ২ হাজার ২৩৫ কোটি ৭৫ লাখ টাকা (বর্তমানে ৩ হাজার ৩৪২ কোটি ৫৫ লাখ টাকা); এবং ২০ কোটি ৭৯ লাখ টাকা (এখন খরচ ২৩৭ কোটি ৩৮ লাখ টাকা) খরচ কমিয়ে জাতীয় উন্নয়ন প্রশাসন একাডেমি (তৃতীয় সংশোধিত) স্থাপন।
আরও পড়ুন: একনেকে ১৩,৬৫৫ কোটি টাকার ১১ প্রকল্প অনুমোদন
একনেকে ৪২৫২.৬৬ কোটি টাকার ১১ প্রকল্প অনুমোদন
একনেকে ১২ প্রকল্পের অনুমোদন
জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) মঙ্গলবার পদ্মা বহুমুখী সেতু নির্মাণব্যয় ২৪১২ দশমিক ১৩ কোটি টাকা বাড়ানো এবং ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত সময়সীমা বাড়ানোর জন্য সংশোধিত একটিসহ মোট ১২টি উন্নয়ন প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছে।
১২টি প্রকল্পের মোট আনুমানিক ব্যয় ১৯ হাজার ৫৯৮ দশমিক ৮৪ কোটি টাকা। এখানে শুধুমাত্র চারটি সংশোধিত প্রকল্পের অতিরিক্ত ব্যয় হিসেব করা হয়েছে।
মঙ্গলবার রাজধানীর শেরেবাংলানগর এলাকায় এনইসি সম্মেলন কক্ষে একনেক চেয়ারপার্সন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় এ অনুমোদন দেওয়া হয়।
সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, ‘আজকের বৈঠকের আগে মোট ১৫টি প্রকল্প রাখা হয়েছিল। এর মধ্যে ১২টি প্রকল্প অনুমোদন পেয়েছে এবং দুটি স্থগিত করা হয়েছে। আর বাকি একটির সময় বাড়ানো হয়েছে।’
অনুমোদিত ১২টি প্রকল্পের মধ্যে ৮টি নতুন এবং বাকি চারটি সংশোধিত প্রকল্প।
এ বিষয়ে পরিকল্পনা সচিব সত্যজিৎ কর্মকার জানিয়েছেন, মোট আনুমানিক ব্যয়ের মধ্যে প্রকল্প সহায়তা হিসেবে বিদেশি উৎস থেকে ১৩ হাজার ২০৩ দশমিক ৬৬ কোটি টাকা আসবে, এবং ৬ হাজার ২৬০ দশমিক ৭২ কোটি টাকা জিওবি তহবিল থেকে এবং বাকি ১৩৪ দশমিক ৪৬ কোটি টাকা সংশ্লিষ্ট সংস্থার তহবিল থেকে।
আরও পড়ুন: একনেকে ১৩,৬৫৫ কোটি টাকার ১১ প্রকল্প অনুমোদন
পদ্মা বহুমুখী সেতু নির্মাণ প্রকল্পের ব্যয় বৃদ্ধির কারণ সম্পর্কে পরিকল্পনা কমিশনের ভৌত অবকাঠামো বিভাগের সদস্য ড. মোহাম্মদ এমদাদ উল্লাহ মিয়া বলেন, ভ্যাটের হার ১০ শতাংশ থেকে বেড়ে এখন ১৫ শতাংশ হয়েছে। পাশাপাশি নদী শাসনের জন্য নির্মাণ সামগ্রীর দাম এবং ডলারের দাম বেড়েছে।
তিনি আরও বলেন, প্রকল্পের তথ্যপত্রে বলা হয়েছে যে পদ্মা সেতু প্রকল্পের মূল কাজ ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে। কিন্তু এখন বাকি আনুষঙ্গিক কাজ শেষ করতে এবং ঠিকাদারদের বকেয়া পরিশোধের জন্য প্রকল্পের সংশোধন প্রয়োজন। তাই এ বিবেচনায় প্রকল্প অনুমোদন করা যেতে পারে।
ব্যয়ের পরিপ্রেক্ষিতে একনেক সভায় অনুমোদিত সবচেয়ে বড় তিনটি নতুন প্রকল্প হলো- ‘প্রোগ্রাম অন অ্যাগ্রিকালচারাল অ্যান্ড রুরাল ট্রান্সফরমেশন ফর নিউট্রিশন, এন্টারপ্রিনিউরশিপ অ্যান্ড রেজিল্যান্স ইন বাংলাদেশ’, যার আনুমানিক ব্যয় ৬ হাজার ৯১০ দশমিক ৯৪ কোটি টাকা; ৪ হাজার ৯৮৮ দশমিক ১৪ কোটি টাকায় ‘বাংলাদেশ রোড সেফটি প্রজেক্ট’; ২ হাজার ৬২০ দশমিক ৭৭ কোটি টাকায় জিটুজি প্রকল্পের ভিত্তিতে ২টি অপরিশোধিত তেল মাদার ট্যাঙ্কার এবং ২টি মাদার বাল্ক ক্যারিয়ার জাহাজ সংগ্রহ।
প্রধানত ঐতিহ্যবাহী কৃষি ব্যবস্থাকে বাণিজ্যিক কৃষিতে রূপান্তর এবং খাদ্যশস্য উৎপাদনে বহুমুখীকরণের লক্ষ্যে ২০২৮ সালের জুনের মধ্যে দেশের ৬৪টি জেলার ৪৯৫টি উপজেলার সকল ইউনিয়নে কৃষি (পার্টনার) প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে।
প্রকল্পের অন্যান্য প্রধান উদ্দেশ্যগুলো হলো কৃষি পণ্য রপ্তানির জন্য কৃষি উদ্যোক্তাদের উন্নয়ন এবং জলবায়ু সহনশীল কৃষি-খাদ্য মূল্য-শৃঙ্খল সম্প্রসারণ।
সড়ক দুর্ঘটনা ও ক্ষয়ক্ষতি কমানোর পাশাপাশি সড়ক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য সংশ্লিষ্ট সরকারি সংস্থাগুলোর সক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে বাংলাদেশ সড়ক নিরাপত্তা প্রকল্পটি ২০২৮ সালের জুনের মধ্যে দেশের সব উপজেলায় বাস্তবায়ন করা হবে।
অন্যান্য নতুন প্রকল্পগুলো হলো ‘ইমপ্রুভিং কম্পিউটার অ্যান্ড সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং টারশিয়ারি এডুকেশন প্রজেক্ট (আইসিএসইটিইপি)’- যার ব্যয় ১ হাজার ২১৯ দশমিক ৮০ কোটি টাকা; বরিশাল জেলার সদর উপজেলার চরকাউয়া, চাঁদমারী, জাগুয়া, লামছড়ি ও চরমোনাই এলাকা রক্ষার জন্য কীর্তনখোলা নদী ভাঙন (পর্যায়-১) থেকে ৫১২ দশমিক ৯২ কোটি টাকায় প্রকল্প; ৩ হাজার ৮০৭ কোটি টাকায় ‘এস্টাব্লিশমেন্ট অব ইনস্টিটিউট অব ন্যানোটেকনোলজি (সাভার)’; ৭৬ দশমিক ০৬ কোটি টাকা ব্যয়ে ‘বিল্ডিং ক্লাইমেট রেজিলিয়েন্ট লাইভলিহুডস ইন দ্য ভালনারেবল ল্যান্ডস্কেপস ইন বাংলাদেশ (বিসিআরএল) প্রজেক্ট’ এবং ৫৯ দশমিক ০৮ কোটি টাকা ব্যয়ে ‘সেফার সাইবারস্পেস ফর ডিজিটাল বাংলাদেশ: এনহ্যান্সিং ন্যাশনাল অ্যান্ড রিজিওনাল ডিজিটাল ইনভেস্টিগেশন ক্যাপাবিলিটি অব বাংলাদেশ পুলিশ প্রোজেক্ট’।
অন্য তিনটি সংশোধিত প্রকল্প হলো- "কন্সট্রাকশন অব ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ ডুয়েলগেজ রেলওয়ে লাইন ইন প্যারালাল টু দ্য এক্সিসটিং মিটারগেজ রেলওয়ে লাইন (১ম সংশোধিত)’, যার অতিরিক্ত ব্যয় ২৭৯ দশমিক ৬৯ কোটি টাকা (বর্তমানে ব্যয় ৬৫৮ দমমিক ৩৫ কোটি টাকা); ‘রিকন্সট্রাকশন অব ময়মনসিংহ সেন্ট্রাল জেল (সংশোধিত) প্রজেক্ট’, অতিরিক্ত ব্যয় ১১২ দশমিক ৫৪ কোটি টাকা (এখন মোট ব্যয় বেড়ে ২৪০ দশমিক ১৫ কোটি টাকা হয়েছে) এবং ‘রিইন্সটলেশন এন্ড ইমপ্রুভমেন্ট অব লেভেল ক্রসিং গেটস অব দ্য ইস্টার্ন রিজিয়ন অব বাংলাদেশ রেলওয়ে (তৃতীয় সংশোধিত), এর অতিরিক্ত ব্যয় ২৫ দশমিক ৯৯ কোটি টাকা (বর্তমানে ১৩০ দশমিক ৫০ কোটি টাকা)।
একনেক সভায় প্রধানমন্ত্রী দেশের কারাগারগুলোতে ভার্চুয়াল কোর্ট পরিচালনার সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন।
ময়মনসিংহ কেন্দ্রীয় কারাগার পুনর্গঠন প্রকল্পের প্রথম সংশোধনী নিয়ে আলোচনাকালে তিনি এ নির্দেশ দেন।
আরও পড়ুন: একনেকে ৪২৫২.৬৬ কোটি টাকার ১১ প্রকল্প অনুমোদন
একনেকে ৭ হাজার ১৮ কোটি টাকার ৬ প্রকল্প অনুমোদন
একনেকে ৪২৫২.৬৬ কোটি টাকার ১১ প্রকল্প অনুমোদন
জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) মোট চার হাজার ২৫২ কোটি ৬৬ লাখ টাকা ব্যয়ে মোট ১১টি প্রকল্পের অনুমোদন দিয়েছে।
মোট প্রকল্প ব্যয়ের মধ্যে তিন হাজার ৬৪৫ কোটি ২১ লাখ টাকা আসবে সরকারি তহবিল থেকে এবং প্রকল্প সহায়তা হিসেবে আসবে বাকি ৬০৭ কোটি ৪৫ লাখ টাকা।
মঙ্গলবার রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সাপ্তাহিক একনেক সভায় এ অনুমোদন দেওয়া হয়।
একনেক সভা শেষে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে বলেন, অনুমোদিত ১১টি প্রকল্পের মধ্যে ছয়টি নতুন এবং পাঁচটি সংশোধিত প্রকল্প।
অনুমোদিত প্রকল্পগুলো হলো- ২৪৬ কোটি টাকায় ঢাকা সিএমএইচ (২য় পর্যায়) ক্যান্সার সেন্টার স্থাপন, ঢাকা সংলগ্ন ১০টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় স্থাপন, ৭৬ কোটি ৯৪ লাখ টাকা অতিরিক্ত ব্যয়ে প্রথম সংশোধিত মাধ্যমিক শিক্ষা খাতে বিনিয়োগ কর্মসূচি, তৃতীয় সংশোধিত কোনো অতিরিক্ত খরচ ছাড়া।
আরও পড়ুন: একনেকে ৭ হাজার ১৮ কোটি টাকার ৬ প্রকল্প অনুমোদন
অন্যান্য প্রকল্পগুলো হলো- ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে স্বাধীনতা টাওয়ার নির্মাণ, ৩য় ধাপ, ১৩১ কোটি ৯১ লাখ টাকা অতিরিক্ত ব্যয়ে ১ম সংশোধিত, সারা বছর ফল উৎপাদনের মাধ্যমে পুষ্টি উন্নয়ন, ২য় পর্যায় ২১১ কোটি ৩২ লাখ টাকা অতিরিক্ত ব্যয়ে সংশোধিত এবং ৩০০ কোটি টাকা ব্যয়ে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্গঠনে জরুরি সহায়তা প্রকল্প।
বাকি প্রকল্পগুলো হলো- এক হাজার ১২৫ কোটি টাকায় জামালপুর জেলার অবকাঠামোগত উন্নয়ন, বাংলাদেশে ১৫৬ কোটি ২৫ লাখ টাকায় ওয়াশ সেক্টর স্ট্রেংথেনিং অ্যান্ড স্যানিটেশন মার্কেট সিস্টেম (সানমার্কস) উন্নয়ন প্রকল্প, বাংলাদেশে জলবায়ু সহনশীল টেকসই পানি সরবরাহ, স্যানিটেশন এবং স্বাস্থ্যবিধি প্রকল্প। ২৭৪ কোটি ৪৮ লাখ টাকা ব্যয়ে মোংলা বন্দর চ্যানেলের ভিতরের বারে ড্রেজিং, ১৯৮ কোটি ৫৪ লাখ টাকা অতিরিক্ত ব্যয়ে প্রথম সংশোধিত এবং এক হাজার ৫৩২ কোটি ২২ লাখ টাকা ব্যয়ে ভুলতা-আড়াইহাজার-বাঞ্ছারামপুর-নবীনগর-শিবপুর-রাধিকা আঞ্চলিক মহাসড়ক প্রশস্তকরণ ও উন্নয়ন।
আরও পড়ুন: দুর্যোগের ঝুঁকি কমাতে ৪ হাজার ৩২৩ কোটি টাকার প্রকল্প একনেকে অনুমোদন
দুর্যোগের ঝুঁকি কমাতে ৪ হাজার ৩২৩ কোটি টাকার প্রকল্প একনেকে অনুমোদন
জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) আকস্মিক বন্যাপ্রবণ জনগোষ্ঠী ও নদীর তীরবর্তী মানুষের বন্যা ঝুঁকি হ্রাস করার লক্ষ্যে ৪ হাজার ৩২৩ কোটি টাকার 'রেজিলিয়েন্ট ইনফ্রাস্ট্রাকচার ফর অ্যাডাপটেশন অ্যান্ড ভালনারেবিলিটি রিডাকশন প্রজেক্ট (রিভার)' অনুমোদন করেছে।
রবিবার রাজধানীর এনইসি সম্মেলন কক্ষে একনেক চেয়ারম্যান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে একনেক সভায় আরও সাতটি উন্নয়ন প্রকল্পের অনুমোদন দেয়া হয়েছে।
সভা শেষে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম বলেন, ‘আজ আটটি প্রকল্প অনুমোদন করা হয়েছে এবং প্রকল্পগুলোর মোট আনুমানিক ব্যয় ১২ হাজার ১৬৭ দশমিক ১৫ কোটি টাকা (এখানে শুধুমাত্র দুটি সংশোধিত প্রকল্পের অতিরিক্ত ব্যয় গণনা করা হয়েছে)।’
তিনি বলেন, মোট অর্থের মধ্যে ৩ হাজার ৯৭ দশমিক ৯১ কোটি টাকা জাতীয় কোষাগার থেকে, ৮ হাজার ৯১২ দশমিক ৭৭ কোটি টাকা বিদেশি উৎস থেকে এবং বাকি ১৫৬ দশমিক ৪৭ কোটি টাকা সংশ্লিষ্ট সংস্থার নিজস্ব তহবিল থেকে নেয়া হবে।
অনুমোদিত ৮টি প্রকল্পের মধ্যে ৬টি নতুন প্রকল্প এবং বাকি ২টি সংশোধিত প্রকল্প।
এছাড়া বৈঠকে ব্যয় না বাড়িয়ে আরও চারটি প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানোর অনুমোদন দেয়া হয়।
আরও পড়ুন: একনেকে ৭ হাজার ১৮ কোটি টাকার ৬ প্রকল্প অনুমোদন
প্ল্যান্টিং কমিশনের মতে, রেজিলিয়েন্ট ইনফ্রাস্ট্রাকচার ফর অ্যাডাপ্টেশন অ্যান্ড ভালনারেবিলিটি রিডাকশন প্রজেক্ট (রিভার) ৪ হাজার ৩২৩ দশমিক ৪৭ কোটি টাকা ব্যয়ে ২০২৮ সালের জুনের মধ্যে ১৪টি জেলার ৭৮টি উপজেলায় বাস্তবায়িত হবে।
প্রকল্প ব্যয়ের মধ্যে ৪ হাজার ২৭৫ কোটি টাকা আসবে বহিরাগত উৎস (আইডিএ) থেকে।
রিভার প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য হল আকস্মিক বন্যাপ্রবণ জনগোষ্ঠী ও নদীর তীরবর্তী মানুষের বন্যা ঝুঁকি হ্রাস করা এবং দুর্যোগ প্রস্তুতি ও প্রতিক্রিয়ার সক্ষমতা বৃদ্ধি করা।
মূল প্রকল্পের কার্যক্রমের মধ্যে রয়েছে- ৫০০টি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও বন্যা আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণ, ১০০টি সৌরবিদ্যুৎ গ্রিড স্থাপন, প্রায় ২৫০টি মাঠের উচ্চতা হ্রাস করা ও ২৭৫ কিলোমিটার বন্যা আশ্রয়কেন্দ্র সংযোগ সড়কের উন্নয়ন, ৫০০ মিটার সেতু নির্মাণ, ১ হাজার ৩৩০ মিটার কালভার্ট নির্মাণ, ১১০ কিলোমিটার কমিউনিটি অবকাঠামো সংযোগ সড়ক উন্নয়ন, ১৫টি ল্যান্ডিং স্টেজ স্থাপন, প্রায় ৬ হাজার ৬০০টি সড়কে সোলার লাইট স্থাপন ও প্রায় ১ হাজার ৪০০টি বজ্রপাত-রোধী মেশিন স্থাপন।
আরও পড়ুন: কুমিল্লা-ব্রাহ্মণবাড়িয়া মহাসড়ক চার লেনসহ একনেকে ৬ প্রকল্প অনুমোদন
আরও পাঁচটি নতুন প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে- অতিরিক্ত ১ হাজার ৪৮ দশমিক ৪৭ কোটি টাকা ব্যয়ে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের ‘দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় ট্রান্সমিশন-গ্রিড সম্প্রসারণ (১ম সংশোধিত)’ প্রকল্প, ১২৮ দশমিক ১৬ কোটি টাকা ব্যয়ে জেন্ডার রেসপনসিভ এন্টারপ্রাইজ ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড টিভিইটি সিস্টেম (প্রগ্রেস), ১ হাজার ৬৮৬ দশমিক ৪৭ কোটি টাকা ব্যয়ে শুল্ক আধুনিকায়ন ও অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প, ১২ দশমিক ৪৪ কোটি টাকা কর্তন করে ৩য় সংশোধিত নগর টেকসই প্রকল্প (ইউআরপি): প্রজেক্ট কোঅর্ডিনেশন অ্যান্ড মনিটরিং ইউনিট (পিসিএমইউ), ৩ হাজার ৬৪৪ দশমিক ৯২ কোটি টাকা ব্যয়ে দক্ষিণ চট্টগ্রাম আঞ্চলিক উন্নয়ন (এসসিআরডি) প্রকল্প, ১হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে ময়মনসিংহ জেলার গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন, ৩৪৭ দশমিক ৬৫ কোটি টাকা ব্যয়ে মেঘনা-ধোনাগোদা সেচ প্রকল্পের পুনর্বাসন ও নদীর তীর রক্ষা।
দুটি সংশোধিত প্রকল্প হল সাউথ-ওয়েস্টার্ন পাওয়ার ট্রান্সমিশন-গ্রিডের সম্প্রসারণ (প্রথম সংশোধিত) প্রকল্প যার অতিরিক্ত ব্যয় ১ হাজার ৪৮ দশমিক ৪৭ কোটি টাকা (বর্তমানে মোট ব্যয় ৪ হাজার ৩২২ দশমিক ৩৫ কোটি টাকা বেড়েছে); এবং আরবান রেজিলিয়েন্স প্রজেক্ট (ইউআরপি): প্রজেক্ট কোঅর্ডিনেশন অ্যান্ড মনিটরিং ইউনিট (পিসিএমইউ) (তৃতীয় সংশোধিত) যার খরচ কমানো হয়েছে ১২ দশমিক ৪৪ কোটি টাকা (এখন এর খরচ কমে হয়েছে ৩২ দশমিক ৮৬ কোটি টাকা)।
আরও পড়ুন: একনেকে ২ হাজার ২১৭ কোটি টাকার ১০টি প্রকল্প অনুমোদন
৩১৩ কোটি টাকা ব্যয়ে তামাবিলসহ তিন শুল্কস্টেশন নির্মাণের উদ্যোগ
রাজস্ব আদায় বাড়াতে দেশের গুরুত্বপূর্ণ তিনটি শুল্ক স্টেশনের আধুনিকায়নে উদ্যোগ নিচ্ছে সরকার। এ জন্য একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। যা গত মাসে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় অনুমোদন দেয়া হয়।
শুল্কস্টেশন তিনটি হচ্ছে-সিলেটের তামাবিল, চাঁপাইনবাবগঞ্জের সোনামসজিদ ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া।
৩১৩ কোটি টাকা ব্যয়ে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) অর্থায়নে প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হচ্ছে। এ প্রকল্পের আওতায় কাস্টমসের অবকাঠামো তৈরি ও শুল্কায়ন প্রক্রিয়া আধুনিকায়ন করা হবে।
আরও পড়ুন: সিলেট-তামাবিল সড়ক সংস্কারে অনিয়ম, ঢালাইয়ের পরদিনই ফাটল
এনবিআরের নীতিনির্ধারক পর্যায়ের এক কর্মকর্তা গণমাধ্যমকে বলেন, ‘শুল্কস্টেশনগুলো রাজস্ব আদায়ের দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ হলেও, এগুলোর অবকাঠামো খুবই দুর্বল। এ ছাড়া জনবলের ঘাটতি রয়েছে। পূর্ণাঙ্গ শুল্ক স্টেশনের জন্য যা দরকার এসব শুল্ক স্টেশনে তা নেই। অথচ বাণিজ্যিক কর্মকাণ্ড দিন দিন বাড়ছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে এসব শুল্কস্টেশন দিয়ে পণ্য আনা-নেয়া সহজ হবে। এতে করে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যের গতি বাড়বে। সেই সঙ্গে বাড়বে রাজস্ব আদায়।’
বর্তমানে এনবিআরের অধীনে সারা দেশে ৫০টি শুল্ক স্টেশন সক্রিয় রয়েছে। এর মধ্যে অর্ধেকেরই দুর্বল অবকাঠামো।
এনবিআর সূত্র বলেছে, তিনটি শুল্ক স্টেশনের আধুনিকায়নের পর অন্যগুলো পর্যায়ক্রমে বাস্তবায়ন করা হবে।
প্রকল্পের আওতায় যে সব কাজ হবে তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে কাস্টমস অফিসের ভবন নির্মাণ, কর্মকর্তাদের জন্য আবাসিক ভবন স্থাপন, আধুনিক ল্যাব তৈরি ও কম্পিউটার ক্রয় ইত্যাদি।
বর্তমানে এসব শুল্ক স্টেশনে ম্যানুয়াল বা প্রচলিত প্রথায় পণ্যের শুল্কায়ন নিরূপণ করা হয়। প্রকল্পের কাজ শেষ হলে শুল্কায়ন প্রক্রিয়া আধুনিকায়ন হবে। এতে করে পণ্য দ্রুত খালাস হবে। সহজ হবে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য।
বর্তমানে সারা দেশে কাস্টমসের শুল্ক স্টেশনের মাধ্যমে যে পরিমাণ পণ্য আমদানি-রপ্তানি হয়, এর ৩০ ভাগ এই তিনটি স্টেশনের মাধ্যমে সম্পন্ন হয়।
এনবিআরের কর্মকর্তারা বলেন, আধুনিকায়নের কাজ শেষ হলে বাণিজ্যক কর্মকাণ্ড কমপক্ষে ২০ ভাগ বাড়বে।
ভারতের ত্রিপুরা, আসাম, মেঘালয়সহ ৭টি রাজ্যে প্রবেশের অন্যতম দ্বার ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া শুল্কস্টেশন। ১৯৯৪ সালে চালু হয় এটি। এই স্থলবন্দর দিয়ে মাছ, পাথর, সিমেন্ট, ইট, বালি, শুঁটকি, প্লাস্টিকসামগ্রী, তুলাসহ প্রায় ৪২টি বাংলাদেশি পণ্য ভারতে রপ্তানি হয়।
ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলোর সঙ্গে বাংলাদেশের যোগাযোগের ক্ষেত্রে তামাবিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ শুল্কস্টেশন হলেও দুর্বল অবকাঠামো ও স্বল্প লোকবল দিয়ে এটি চলছে। এটিকে পূর্ণাঙ্গ শুল্কস্টেশনে উন্নীত করা হলে রাজস্ব আদায় বর্তমানের চেয়ে দ্বিগুণ হবে। গত অর্থবছরে তামাবিল শুল্ক স্টেশন থেকে এক হাজার ২০০ কোটি টাকার রাজস্ব আহরণ হয়। এই শুল্ক স্টেশন দিয়ে ভারত থেকে পাথর ও কয়লা বেশি আসে।
এ ছাড়া সোনামসজিদ দিয়ে পাথর, চাল, পেঁয়াজ, শুঁটকি, ভুট্টাসহ অন্যান্য পণ্য আমদানি করা হয়। এর মধ্যে বেশি আসে পাথর। এই শুল্কস্টেশন থেকে মাসে গড়ে ৭০ থেকে ৮০ কোটি টাকার রাজস্ব আহরণ হয়।
আরও পড়ুন: তামাবিল দিয়ে দেশে ফিরলেন ন্যাপ সভাপতিসহ ১০ বাংলাদেশি
তামাবিল স্থলবন্দর দিয়ে পাথর আমদানি বন্ধ
অক্টোবরে বাংলাদেশে মূল্যস্ফীতি খানিকটা কমে ৮.৯১%
বাংলাদেশের সামগ্রিক মূল্যস্ফীতি অক্টোবরে পয়েন্ট-টু-পয়েন্ট ভিত্তিতে ৮ দশমিক ৯১ শতাংশে নেমে এসেছে, যা সেপ্টেম্বরে ৯ দশমিক ১ শতাংশ ছিল।
মঙ্গলবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভা শেষে এক সংবাদ সম্মেলনে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, টাকার অবমূল্যায়নকে ইতিবাচকভাবে বিবেচনা করা উচিত। কারণ এটি বাজারে মার্কিন ডলারের সরবরাহ বাড়াতে সাহায্য করে।
এক প্রশ্নের জবাবে মান্নান বলেন, আইএমএফ যাই বলুক না কেন বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাবে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৩৫ বিলিয়ন ডলারের কাছাকাছি।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে মূল্যস্ফীতি: আগস্টে ৯.৫% শতাংশ, ১২ বছরে সর্বোচ্চ
চলতি বছরের আগস্টে দেশে সার্বিক মূল্যস্ফীতি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯ দশমিক ৫ শতাংশে। অর্থনীতির এই গুরুত্বপূর্ণ এবং সংবেদনশীল সূচকটি গত ১২ বছরের মধ্যে আগস্টে সর্বোচ্চ ছিল।
২০১০-১১ অর্থবছরে দেশের গড় মূল্যস্ফীতির হার ছিল ১০ দশমিক ৯২ শতাংশ। এরপর এই সূচক ৯ শতাংশের ওপরে ওঠেনি।
আন্তর্জাতিক বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র ও জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধির কারণে কয়েক মাস ধরে দেশে মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধির প্রবণতা ছিল।
৫ আগস্ট জ্বালানি তেলের দাম ৪২ থেকে ৫১ শতাংশ বাড়িয়েছে সরকার। ডিজেলের দাম লিটারপ্রতি ৩৪ টাকা, অকটেনের দাম ৪৬ টাকা এবং পেট্রোলের দাম ৪৪ টাকা বেড়েছে।
জ্বালানির দাম বৃদ্ধির এই রেকর্ড মূল্যস্ফীতিতে প্রভাব ফেলেছে।
আরও পড়ুন: সহিংসতায় দ্রব্যমূল্য ও মূল্যস্ফীতি কমানো যাবে না: পরিকল্পনামন্ত্রী
জুলাইয়ে মূল্যস্ফীতি কমে ৭.৪৮ শতাংশ: বিবিএস
এখন মেগাপ্রজেক্ট নয় জনকল্যাণমুখী প্রকল্প নিয়ে আসুন: প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে ক্ষুদ্র, গ্রামীণ বা জনকল্যাণমুখী প্রকল্প নিয়ে আসতে বলেছেন।
মঙ্গলবার রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে এনইসি সম্মেলন কক্ষে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় সভাপতিত্বকালে তিনি এ নির্দেশনা দেন।
সভা শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, মেগাপ্রজেক্ট করা যাবে না, তবে ক্ষুদ্র, গ্রামীণ প্রকল্প বা কল্যাণমুখী প্রকল্পে কোনও আপস করা যাবে না।’
আরও পড়ুন: এখনও ৫ মাসের খাদ্য আমদানি করার জন্য বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ যথেষ্ট: প্রধানমন্ত্রী
একনেক সভাপতি শেখ হাসিনা যে কোনও বড় প্রকল্প গ্রহনের ক্ষেত্রে পুঙ্খানুপুঙ্খ সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন।
তিনি দেশের সর্বত্র অনাবাদি জমি চিহ্নিত করে চাষের জন্য প্রস্তুত করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বলেন।
‘প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘উৎপাদন বাড়াতে হবে। এক ইঞ্চি জমিও অনাবাদি রাখা যাবে না’ উদ্বৃতি দিয়ে মান্নান বলেন, প্রধানমন্ত্রী মন্ত্রিপরিষদ সচিবকে জেলা প্রশাসকদের সহায়তায় অনাবাদি জমি চিহ্নিত করার নির্দেশ দিয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রী চলমান বিশ্ব মন্দার মধ্যে সবাইকে মিতব্যয়ী হতে এবং অপচয় বন্ধ করতে বলেছেন।
আরও পড়ুন:কৃষি উৎপাদন ও জীবিকা নির্বাহের জন্য সমবায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ: যুবকদের প্রতি প্রধানমন্ত্রী
একনেক সভায় মোট তিন হাজার ৯৮১ দশমিক ৯০ কোটি টাকা আনুমানিক ব্যয়ের সাতটি প্রকল্প অনুমোদন করা হয়েছে (শুধুমাত্র তিনটি সংশোধিত প্রকল্পের অতিরিক্ত ব্যয় এখানে গণনা করা হয়েছে)।
ব্যয়ের মধ্যে সরকারের তহবিল থেকে তিন হাজার ৩৯২ দশমিক ৩৩ কোটি টাকা, সংশ্লিষ্ট সংস্থার নিজস্ব তহবিল থেকে ২৬৭ দশমিক ৩৫ কোটি টাকা এবং বৈদেশিক উৎস থেকে ৩৩২ দশমিক ২১ কোটি টাকার যোগান আসবে।
আরও পড়ুন: ২৫ জেলায় ১০০টি সেতুর উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী
একনেকে ৭ হাজার ১৮ কোটি টাকার ৬ প্রকল্প অনুমোদন
জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) মঙ্গলবার ঢাকায় ৮৯৯ কোটি টাকা ব্যয়ে চারটি খাল সংস্কারসহ ছয়টি প্রকল্পের অনুমোদন দিয়েছে।
এই প্রকল্পের আওতায় ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) অধীনে কালুনগর, জিরানী, মান্দা ও শ্যামনগর-এর প্রায় ২০ কিলোমিটার চারটি খাল পুনরুদ্ধার করা হবে জলাবদ্ধতা নিরসনে এবং সৌন্দর্য বর্ধনের মাধ্যমে পরিবেশের উন্নয়নে।
এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত একনেক সভায় এ অনুমোদন দেয়া হয়। একনেক চেয়ারম্যান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভার্চুয়াল প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন।
সভা শেষে এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, ‘কমিটি পাঁচটি নতুন প্রকল্প এবং একটি সংশোধিত প্রকল্প অনুমোদন করেছে। সংশোধিত প্রকল্পসহ ছয়টি প্রকল্পের মোট আনুমানিক ব্যয় প্রায় সাত হাজার ১৮ দশমিক ৭৩ কোটি টাকা।
তিনি বলেন, এর মধ্যে সরকারের তহবিল থেকে চার হাজার ৩৬২ দশমিক ৬৩ কোটি টাকা, সংশ্লিষ্ট সংস্থার তহবিল থেকে ২৬৯ দশমিক ৬২ কোটি টাকা এবং বৈদেশিক ঋণ হিসাবে দুই হাজার ৩৮৬ দশমিক ৪৮ কোটি টাকা বহিরাগত উৎস থেকে সংগ্রহ করা হবে।
আরও পড়ুন: কুমিল্লা-ব্রাহ্মণবাড়িয়া মহাসড়ক চার লেনসহ একনেকে ৬ প্রকল্প অনুমোদন
একনেক ঘোড়াশাল পলাশ ইউরিয়া সার প্রকল্পের প্রথম সংশোধনী অনুমোদন করেছে, যার ব্যয় ১০ হাজার ৪৬০ দশমিক ৯১ কোটি টাকা থেকে বাড়িয়ে ১৫ হাজার ৫০০ দশমিক ২১ কোটি টাকা হয়েছে এবং প্রকল্পের সময়সীমা ২০২২ সালের জুন থেকে ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে।
প্রকল্পের তথ্যপত্র অনুযায়ী, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন ৮৯৮ দশমিক ৭৩ কোটি টাকা ব্যয়ে চারটি খালের ১৯ দশমিক ৭৮ কিলোমিটার পুনরুদ্ধার বা সংস্কারের জন্য ২০২৬ সালের জুনের মধ্যে ‘খাল পুনরুদ্ধার ও সংস্কার এবং নান্দনিক পরিবেশ সৃষ্টি’- শীর্ষক প্রকল্প বাস্তবায়ন করবে।
এর মধ্যে ৬২৯ কোটি ১১ লাখ টাকা সরকারি তহবিল থেকে এবং বাকি ২৬৯ কোটি ৬২ লাখ টাকা দেবে ডিএসসিসি।
প্রকল্পের আওতায় মান্ডা খালের আট দশমিক ৯ কিলোমিটার (দুই লাখ ১৭ হাজার ৫০০ বর্গমিটার), শ্যামনগর খালের চার দশমিক ৭৮ কিলোমিটার (৫৭ হাজার ৩৬০ বর্গমিটার), জিরানী খালের তিন দশমিক ৯ কিলোমিটার (৭৮ হাজার বর্গমিটার) এবং কালুনগর খালের দুই দশমিক চার কিলোমিটার (২৮ দশমিক ৮০ বর্গমিটার) খাল পুনরুদ্ধার বা সংস্কার করা হবে।
প্রকল্পের প্রধান কার্যক্রমের মধ্যে রয়েছে- খাল পরিষ্কার করা, পলি অপসারণ, ঢাল সুরক্ষা ও নিষ্কাশন কাঠামো নির্মাণ, ল্যান্ডস্কেপ তৈরি করা এবং সংশ্লিষ্ট এলাকা সবুজায়ন।
এছাড়া প্রকল্পের অধীনে নাগরিক সুবিধার জন্য ৩৮ দশমিক ছয় কিলোমিটার চোখ ধাঁধানো সুরক্ষা দেয়াল, ৩৬টি পথচারী সেতু, গাড়ি চলাচলের জন্য ১৯টি সেতু, ১০টি পাবলিক টয়লেট, ৩২ দশমিক ৪৪ কিলোমিটার হাঁটার পথ, চারটি প্লাজা ও সাইকেল লেন স্থাপন করা হবে এবং নান্দনিক ও মনোরম পরিবেশ সৃষ্টির জন্য ৭৭১টি বাতি স্থাপন করা হবে।
অন্য চারটি প্রকল্প হলো- ৫৯ দশমিক ১৪ কোটি টাকা ব্যয়ে ‘সীমান্ত হোস্টেল কমপ্লেক্স ভবন নির্মাণ’ (চট্টগ্রামের সল্টগোলায়); ১২২ দশমিক তিন কোটি টাকায় ‘ইন্টারডাকশন অব ইন্টেলিজেন্ট ট্রান্সপোর্ট সিস্টেম (আইটিএস)’ (মুন্সিগঞ্জের কেরানীগঞ্জ ও শ্রীনগর উপজেলায়) দ্বারা বাংলাদেশের জাতীয় মহাসড়ক করিডোরগুলিতে নির্ভরযোগ্যতা ও নিরাপত্তার উন্নতি করা; ৩৪৭ দশমিক চার কোটি টাকায় ‘ঘোনাপাড়া থেকে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মাজার পর্যন্ত রাস্তাটি (শেখ লুৎফর রহমান সেতুর অ্যাপ্রোচসহ) যথাযথ মান ও প্রস্থে উন্নীতকরণ’; এবং ৫৫২ দশমিক ৪৯ কোটি টাকা ব্যয়ে শরীয়তপুর জেলার ভেদরগঞ্জ উপজেলায় পদ্মা নদীর ভাঙন রোধে নদীর তীর রক্ষা।
আরও পড়ুন: একনেকে ২ হাজার ২১৭ কোটি টাকার ১০টি প্রকল্প অনুমোদন
নারীদের আইটি দক্ষতা বাড়াতে ২৫০ কোটি টাকার একনেক প্রকল্প অনুমোদন