মালয়েশিয়া
মালয়েশিয়ায় জুলাই-আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানের প্রথম বর্ষপূর্তি ও রেমিট্যান্স যোদ্ধা দিবস উদযাপন
মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশ হাইকমিশনে জুলাই-আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানের প্রথম বর্ষপূর্তি এবং রেমিট্যান্স যোদ্ধা দিবস উদযাপন করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৯ আগস্ট) কুয়ালামপুরের হাইকমিশনের মিলনায়তনে মালয়েশিয়া প্রবাসী বাংলাদেশিদের অংশগ্রহনে 'জুলাই বিয়ন্ড বর্ডারস’ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
অনুষ্টানে গণ-অভ্যুত্থানে শহীদ ছাত্র-জনতার আত্মার মাগফেরাত এবং দেশের শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়। এ সময় জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শহীদদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। এছাড়া জুলাই-আগস্ট গণ অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টার বাণী পাঠ করা হয়।
অনুষ্ঠানের অংশ হিসেবে জুলাই-আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানের ওপর গ্রাফিতি ও আলোকচিত্র প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন হাইকমিশনার মো. শামীম আহসান। ডিজিটাল মাধ্যমে এই প্রদর্শনীটি দূতাবাসে আগত সেবাপ্রার্থী ও দর্শনার্থীদের জন আগামী সপ্তাহেও উন্মুক্ত থাকবে।
গ্রাফিতি ও আলোকচিত্র প্রদর্শনী উদ্বোধনের পর অনুষ্ঠানে গণঅভ্যুত্থানের ওপর এবং অভ্যুত্থানে প্রবাসী রেমিট্যান্স যোদ্ধাদের অবদান নিয়ে নির্মিত দুটি পৃথক প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়।
জুলাই-আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানের প্রথম বর্ষপূর্তি এবং রেমিট্যান্স যোদ্ধা দিবস উপলক্ষে হাইকমিশনার শামীম আহসান অতিথিদের উদ্দেশে বক্তব্য দেন।
'২৪ এর জুলাই অভ্যুত্থানের সকল শহীদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান এবং বীর যোদ্ধাদের এবং রেমিট্যান্স যোদ্ধাদের অবদান কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করেন হাইকমিশনার।
পড়ুন: জঙ্গিবাদে সম্পৃক্ত সন্দেহে বাংলাদেশিদের গ্রেপ্তারে ঢাকার উদ্বেগ, কুয়ালামপুরের সঙ্গে সমন্বয়ের আহ্বান
অভ্যুত্থানের প্রেক্ষাপট তুলে ধরে তিনি বলেন, বৈষম্যহীন রাষ্ট্র গঠনের আকাঙ্ক্ষা নিয়ে যে অভ্যুত্থান অনুষ্ঠিত হয়, সে আকাঙ্ক্ষাকে পরিপূর্ণ রুপ দিতে সকলকে একযোগে কাজ করতে হবে।
তিনি বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন প্রবাসীবান্ধব এই সরকার প্রবাসীদের কল্যাণে বহুমাত্রিক কার্যক্রম হাতে নিয়েছে। সরকারের অব্যাহত কূটনৈতিক প্রচেষ্টায় বাংলাদেশি শ্রমিকদের জন্য মাল্টিপল এন্ট্রি ভিসা চালু করেছে মালয়েশিয়ার সরকার।
প্রধান উপদেষ্টার সাম্প্রতিক মালয়েশিয়া সফরের বিভিন্ন দিক উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাংলাদেশ-মালয়েশিয়া ইতিহাসের সেরা দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে অবস্থান করছে। এছাড়া প্রবাসী শ্রমিকদের কল্যাণ নিশ্চিত, ব্যবসা বাণিজ্যসহ প্রসারসহ বহুমাত্রিক দিগন্ত উম্মোচিত হয়েছে এ সফরে।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ হাইকমিশন প্রবাসীদের চাওয়া সেবা যেমন পাসপোর্ট-ভিসা, কনসুলার সেবা, কর্মসংস্থানসহ কল্যাণমূলক সকল প্রকার সেবা দিতে সর্বোচ্চ আন্তরিকতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করছে। দূতাবাসের সেবা ডিজিটালাইজেশন করা হয়েছে ও পোস্ট অফিসের মাধ্যমেও সেবা দেওয়া হচ্ছে। হাইকমিশনের ভ্রাম্যমান কনস্যুলার সেবা ছুটির দিনগুলোতে বিভিন্ন স্থানে নিয়মিতভাবে দেওয়া হচ্ছে।
অনুষ্ঠানে স্থানীয় বাংলাদেশী কমিউনিটির নেতা, রেমিট্যান্স যোদ্ধা, ছাত্র প্রতিনিধি, প্রবাসী সাংবাদিক এবং হাইকমিশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।
১০৭ দিন আগে
নিজের নয়, জনগণের ইচ্ছায় ক্ষমতায় বসেছি: ড. ইউনূস
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, পরিবর্তনের দাবি ব্যক্তিগতভাবে তার পক্ষ থেকে আসেনি, এটি জনগণের পক্ষ থেকে এসেছে এবং তিনি কেবল তাদের নির্বাচিত পথ ধরে পথপ্রদর্শন করছেন।
তিন দিনের রাষ্ট্রীয় সফর শেষে মালয়েশিয়ার রাষ্ট্রীয় সংবাদসংস্থা বারনামাকে দেওয়া বিশেষ সাক্ষাৎকারে অধ্যাপক ইউনূস এ কথা বলেন।
ড. ইউনূস বলেন, 'এটা আমার নয়, এটা সেসব মানুষের চাওয়া, যারা পরিবর্তন চেয়েছিলেন। তারা যেভাবে চলতে চান, আমি শুধু তাদের সেভাবে চলতে সহায়তা করছি।'
গত ১১-১৩ আগস্ট মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিমের আমন্ত্রণে দেশটিতে তিন দিনের রাষ্ট্রীয় সফর করেন প্রধান উপদেষ্টা।
সফরের শেষ দিকে বারনামার প্রধান সম্পাদক আরুল রাজু দুরার রাজের সঙ্গে সাক্ষাৎকারটি দেন প্রধান উপদেষ্টা। সঙ্গে ছিলেন ইন্টারন্যাশনাল নিউজ সার্ভিসের সম্পাদক ভুন মিয়াও পিং ও বারনামার ইকোনমিক নিউজ সার্ভিসের সহকারী সম্পাদক কিশো কুমারী সুশেদারাম।
ড. ইউনূস বলেন, 'আমি নিজের কোনো সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দিই না। আমি অপেক্ষা করি এবং মানুষের ইচ্ছা কী তা দেখার জন্য অপেক্ষা করি। তারপর তা বাস্তবায়ন করি।'
অধ্যাপক ইউনূস নিজের বর্তমান ভূমিকা একজন নেতা নয় বরং গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার একজন অভিভাবক হিসেবেই তুলে ধরেন।
তবে, নিজের সামনে থাকা বিশাল চ্যালেঞ্জগুলোও স্বীকার করেন তিনি।
পড়ুন: প্রধান উপদেষ্টার ঘোষিত সময়েই নির্বাচন হবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, 'বাংলাদেশে অসুবিধা অনেক। অনেকেই এটাকে ব্যাহত করতে চায়।'
তিনি আরও বলেন, 'বাংলাদেশ থেকে বিতাড়িত রাজনৈতিক শক্তিগুলো পুরো ব্যবস্থাকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে।'
প্রধান উপদেষ্টা উল্লেখ করেন, 'বাংলাদেশে গত দেড় দশকে অনেকে নতুন ভোটার হয়েছেন, তাদের বড় অংশ আগে কখনো ভোট দেওয়ার সুযোগ পাননি। কেউ ১০ বছর ধরে অপেক্ষা করছেন। কেউ ১৫ বছর ধরে।'
তিনি বলেন, 'একবার ভাবুন, আপনার ১৮ বছর বয়স হয়েছে, আপনি ভোট দিতে আগ্রহী। কিন্তু আপনি সেই সুযোগ কখনো পাননি। এর কারণ হলো— কখনো সুষ্ঠু নির্বাচনই হয়নি। এখন তারা ১৫ বছরের মধ্যে প্রথমবার ভোট দিতে পারবেন।'
১১০ দিন আগে
মালয়েশিয়ার শীর্ষ শিল্পগোষ্ঠীকে বাংলাদেশে বিনিয়োগে প্রধান উপদেষ্টার আহ্বান
মালয়েশিয়ার শীর্ষস্থানীয় শিল্পগোষ্ঠীগুলোকে বাংলাদেশে সাশ্রয়ী মূল্যের আবাসন, বন্দর, স্বাস্থ্যসেবা ও শিক্ষা খাতে বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।
বুধবার (১৩ আগস্ট) মালয়েশিয়ার বিশিষ্ট ব্যবসায়ী নেতাদের সঙ্গে একাধিক বৈঠকে তিনি বলেন, বাংলাদেশে বিনিয়োগের এখনই সময়।
অধ্যাপক ইউনূস সানওয়ে গ্রুপের চেয়ারম্যান ও প্রতিষ্ঠাতা জেফ্রি চিয়াকে বিশেষভাবে বাংলাদেশের কারখানা শ্রমিকদের জন্য সাশ্রয়ী আবাসনের ক্ষেত্রে বিনিয়োগের আমন্ত্রণ জানান।
তিনি বলেন, ‘আমাদের সরকার ব্যবসায়িক পরিবেশকে আরও ব্যবসাবান্ধব করতে ব্যাপক সংস্কার করেছে, যা এখন বিনিয়োগের সুযোগ তৈরি করেছে।’
বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন বলেন, আবাসন ও নির্মাণ খাতে, বিশেষ করে দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে যেখানে নতুন বন্দর ও অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলা হচ্ছে, সেখানে বড় বিনিয়োগের প্রয়োজন।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশে নগরায়ন দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। লক্ষ লক্ষ শ্রমিক ও নতুন শহরবাসীর জন্য বাড়ি ও সুযোগ-সুবিধা তৈরিতে বড় বিনিয়োগ দরকার।
অধ্যাপক ইউনূস সানওয়ে গ্রুপকে বাংলাদেশে হাসপাতাল স্থাপনের জন্যও উৎসাহিত করেন।
জেফ্রি চিয়া বলেন, তার প্রতিষ্ঠান অবশ্যই বাংলাদেশে ব্যবসার সুযোগ খুঁজবে। তিনি বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের জন্য বৃত্তি দেওয়ার আগ্রহও প্রকাশ করেন। বর্তমানে হাজার হাজার বাংলাদেশি সানওয়ের নির্মাণ ও হাউজিং বিভাগে কাজ করছেন বলেও জানান তিনি।
পড়ুন: বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য চালু হতে পারে মালয়েশিয়ার ‘গ্র্যাজুয়েট প্লাস’ ভিসা
চিয়া বাংলাদেশি শ্রমিকদের প্রশংসা করে জানান, মালয়েশিয়ার কর্তৃপক্ষকে তিনি তাদের ছয় বছরের অনুমোদিত কর্মমেয়াদ বাড়ানোর জন্য অনুরোধ করেছেন।
পৃথক এক বৈঠকে, মালয়েশিয়ার জাতীয় গাড়ি নির্মাতা প্রোটন ও অবকাঠামো প্রতিষ্ঠান এমএমসি করপোরেশন বেরহাদের মালিক—শীর্ষ শিল্পপতি সৈয়দ মোকতার আল-বুখারি বাংলাদেশে বিনিয়োগের মাধ্যমে সমর্থনের প্রতিশ্রুতি দেন।
তিনি বলেন, ‘এটি শুধু মুনাফার জন্য নয়, আমরা এটি করতে চাই বাংলাদেশের মানুষের জন্য।’
তিনি নদী উন্নয়ন ও মৎস্যজীবী সম্প্রদায়কে প্রভাবিত করা প্রকল্পে দায়িত্বশীল পুনর্বাসনের গুরুত্বও উল্লেখ করেন।
অধ্যাপক ইউনূস পুনর্ব্যক্ত করেন, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার ব্যবসা ও বিনিয়োগ প্রক্রিয়া সহজ করতে ব্যাপক সংস্কার এনেছে।
বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী সৌরশক্তি ও কৃষি প্রক্রিয়াজাতকরণকে অগ্রাধিকারমূলক বিনিয়োগ খাত হিসেবে চিহ্নিত করেন।
সৈয়দ মোকতার বাংলাদেশের সৌরশক্তির সম্ভাবনা নিয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করেন এবং নবায়নযোগ্য শক্তি ও খাদ্য নিরাপত্তা খাতে বিনিয়োগের আগ্রহ প্রকাশ করেন।
সৈয়দ মোকতার অধ্যাপক ইউনূসকে সম্মান জানিয়ে ১৮ শতকের ভারতীয় ঔপনিবেশিক বিরোধী শাসক টিপু সুলতানের ওপর ২০ বছরের গবেষণা সংকলিত একটি বই উপহার দেন।
১১৩ দিন আগে
ক্ষমতা জনগণের হাতে ফিরিয়ে দিতে আমরা অঙ্গীকারবদ্ধ: অধ্যাপক ইউনূস
গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করা এবং ক্ষমতা তার প্রকৃত মালিক দেশের জনগণের হাতে ফিরিয়ে দেওয়ার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। বর্তমান সরকার দেশে শান্তি ও স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতেই মনোযোগী বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।
একটি বিশেষ সমাবর্তন অনুষ্ঠানে বক্তব্য প্রদানকালে তিনি বলেছেন, ‘আমরা ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও স্বচ্ছ নির্বাচন আয়োজনের জন্য কঠোর পরিশ্রম করছি, যাতে জনগণের সত্যিকারের প্রতিনিধিদের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করা যায়।’
বুধবার (১৩ আগস্ট) কুয়ালালামপুরে মালয়েশিয়া ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি (ইউকেএম) মিলনায়তনে আয়োজিত এক আনন্দঘন পরিবেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলরের কাছ থেকে সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রির সনদ গ্রহণ করেন অধ্যাপক ইউনূস। সামাজিক ব্যবসায় অগ্রণী ভূমিকার স্বীকৃতিস্বরূপ বিশ্বনন্দিত এই অর্থনীতিবিদকে সম্মানে ভূষিত করে ইউকেএম।
আরও পড়ুন: সামাজিক ব্যবসায়ের পথিকৃত হিসেবে ইউকেএম থেকে সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি পেলেন অধ্যাপক ইউনূস
ডিগ্রি গ্রহণের পর দেওয়া বক্তৃতায় প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘এ এক বিশাল সম্মান এবং চমৎকার এক অনুষ্ঠান।’ তিনি বলেন, গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করে একটি আরও বলিষ্ঠ ও স্থিতিশীল বাংলাদেশ গড়ে তুলতে তার সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
তিনি আরও বলেন, এমন একটি বিশ্বের স্বপ্ন আমি দেখি, যেখানে মানুষ মর্যাদা ও স্বাধীনতার সঙ্গে বসবাস করবে, সবাই বৈষম্য ও ভয়ভীতি থেকে মুক্ত থাকবে।
১১৪ দিন আগে
সামাজিক ব্যবসায়ের পথিকৃত হিসেবে ইউকেএম থেকে সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি পেলেন অধ্যাপক ইউনূস
সামাজিক ব্যবসায় অগ্রণী ভূমিকার স্বীকৃতিস্বরূপ বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসকে সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি প্রদান করেছে মালয়েশিয়া ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি (ইউকেএম)।
বুধবার (১৩ আগস্ট) কুয়ালালামপুরে ইউকেএমের মিলনায়তনে আয়োজিত এক আনন্দঘন পরিবেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলরের কাছ থেকে সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রির সনদ গ্রহণ করেন অধ্যাপক ইউনূস।
ডিগ্রি গ্রহণের পর বক্তব্যে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘এ এক বিশাল সম্মান এবং চমৎকার এক অনুষ্ঠান।’ তিনি বলেন, গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করা এবং আরো বলিষ্ঠ ও স্থিতিশীল বাংলাদেশ গড়ে তুলতে তার সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
১১৪ দিন আগে
প্রবাসীরা দেশের অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারে বড় ভূমিকা রেখেছেন: অধ্যাপক ইউনূস
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস দেশের অর্থনীতিকে শক্তিশালী করতে প্রবাসী বাংলাদেশিদের গুরুত্বপূর্ণ অবদানের কথা উল্লেখ করে তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন।
তিনি বলেন, রেমিট্যান্স পাঠিয়ে প্রবাসীরা দেশের অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারে বড় ভূমিকা রেখেছেন।
মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) সন্ধ্যায় মালয়েশিয়ায় প্রবাসী বাংলাদেশি কমিউনিটির সদস্যদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা বলেন।
এ সময় অধ্যাপক ইউনূস জানান, প্রবাসীদের জন্য সেবার মান উন্নয়নে অন্তর্বর্তী সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ নিচ্ছে। তিনি প্রবাসীদের অভিযোগ ও মতামত শোনেন এবং উত্থাপিত সমস্যাগুলোর দ্রুত সমাধানের আশ্বাস দেন।
সভায় প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল, পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন বক্তব্য রাখেন। মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশের হাইকমিশনার শামীম আহসান সভায় সভাপতিত্ব করেন।
পড়ুন: মালয়েশিয়ার কোম্পানিগুলোকে বাংলাদেশে বিনিয়োগে প্রধান উপদেষ্টার আহ্বান
ড. ইউনূস প্রবাসীদের আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে অংশগ্রহণের সুযোগ নিয়েও কথা বলেন এবং তাদের জন্য ভোট প্রক্রিয়ায় ‘নতুন অভিজ্ঞতা’র ইঙ্গিত দেন।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন প্রবাসীদের সমস্যাগুলো দ্রুত সমাধানের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন। তিনি মালয়েশিয়ায় আসার আগে প্রবাসী কর্মীদের যথাযথ কাগজপত্র নিশ্চিত করার আহ্বান জানান, যাতে তারা আইনগত ও প্রশাসনিক জটিলতায় না পড়েন।
তিনি বলেন, যথাযথ কাগজপত্র ছাড়া আমরা আপনাদের সাহায্য করতে পারব না।
ড. আসিফ নজরুল প্রবাসীদের অবদানের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে জানান, সরকার সবসময় প্রবাসীদের সহায়তায় কাজ করবে।
১১৪ দিন আগে
মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশী কর্মী নিয়োগে প্রতারণার বিষয়ে হাইকমিশনের সতর্কবার্তা
মালয়েশিয়ার সাবাহ প্রদেশে বাংলাদেশ থেকে কর্মী পাঠানোর ক্ষেত্রে একটি সংঘবদ্ধ চক্রের ব্যাপক প্রতারণার প্রমাণ পাওয়া গেছে। এ কারণে দেশটিতে যেতে ইচ্ছুক বাংলাদেশিদের এসব অসাধু চক্রের ফাঁদে পা না দেওয়ার জন্য আহ্বান জানিয়েছে মালয়েশিয়াস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশন।
শুক্রবার (১ আগস্ট) কুয়ালালামপুরের বাংলাদেশ হাইকমিশনে থেকে এ বিষয়ে এক সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, মালয়েশিয়ার সাবাহ প্রদেশে কর্মী পাঠানোর কথা বলে সেখানে যেতে ইচ্ছুক বাংলাদেশিদের কাছ থেকে পাসপোর্ট ও নগদ টাকা সংগ্রহ করছে একটি সংঘবদ্ধ প্রতারকচক্র। বিষয়টি বাংলাদেশ হাইকমিশনের দৃষ্টিগোচর হয়েছে।
হাইকমিশন জানিয়েছে, বাংলাদেশ থেকে মালয়েশিয়ার সাবাহ প্রদেশে কর্মী নেওয়ার জন্য বর্তমানে মালয়েশিয়ার সরকারের সঙ্গে বাংলাদেশ সরকারের কোনো চুক্তি বা সমঝোতা নেই। এ ছাড়া, সাবাহ প্রদেশ কর্তৃপক্ষের কাছ থেকেও বাংলাদেশি কর্মী নিয়োগর কোনো সিদ্ধান্ত পাওয়া যায়নি। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা চলমান রয়েছে।
আরও পড়ুন: ৯৬ জন বাংলাদেশিসহ ১৩১ জনকে মালয়েশিয়ায় প্রবেশে বাধা
তাই সাবাহ প্রদেশ ও বাংলাদেশ সরকারের মধ্যে কর্মী নেওয়ার বিষয়ে কোনো চুক্তি বা সমঝোতা স্মারক সই না হওয়া পর্যন্ত এ ধরনের প্রতারকচক্রের মিথ্যা প্রচারণায় বিভ্রান্ত না হতে এবং এদের সঙ্গে কোনো ধরনের লেনদেন থেকে বিরত থাকার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।
বাংলাদেশি কর্মী নিয়োগের অনুমতি দেওয়া হলে সেটি কুয়ালালামপুরের বাংলাদেশ হাইকমিশনের ওয়েবসাইটের মাধ্যমে সবাইকে অবহিত করা হবে বলেও বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
১২৫ দিন আগে
মালয়েশিয়া আন্তর্জাতিক মেশিনারী মেলায় বাংলাদেশকে বিশেষ সম্মাননা
কুয়ালালামপুরের বাংলাদেশ হাইকমিশনের উদ্যোগে দ্বিতীয় বারের মতো মালয়েশিয়া আন্তর্জাতিক মেশিনারী মেলায় অংশগ্রহণ করেছে বাংলাদেশ।
শনিবার (১২ জুলাই) মেলায় সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণের জন্য বাংলাদেশকে বিশেষ সম্মাননা দেওয়া হয়।
মালয়েশিয়া প্রোমাস ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস সোসাইটি এবং ই এস ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট এ মেলা আয়োজন করে।
মালয়েশিয়া ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড অ্যান্ড এক্সিবিশন সেন্টারে ১০ থেকে ১২ জুলাই ২০২৫ পর্যন্ত চলমান এই মেলায় বাংলাদেশসহ ১০টি দেশের ৪৫০টির বেশি প্রতিষ্ঠান ৭৫৩টি বুথে অংশ নিচ্ছে।
অংশগ্রহণকারী অন্যান্য দেশসমূহ হলো চীন, কোরিয়া, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, ইন্দোনেশিয়া, থাইল্যান্ড, ভারত, জাপান এবং ইরান।
শুক্রবার (১১ জুলাই) মালয়েশিয়ার প্লান্টেশন ও কমোডিটিস মন্ত্রী ওয়াইবি দাতুক সেরি জোহারি বিন আবদুল গনি আনুষ্ঠানিকভাবে মেলার উদ্বোধন করেন।
আজ মেলার শেষদিন শনিবার (১২ জুলাই) মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশের হাইকমিশনার মো. শামীম আহসান আয়োজকদের আমন্ত্রণে বিজনেস ম্যাচিং অনুষ্ঠানে গেস্ট অব অনার হিসেবে উপস্থিত থেকে বাংলাদেশে সম্ভাবনাময় বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বিষয়ে উপস্থিত ব্যবসায়িক চেম্বারের প্রতিনিধি ও বিভিন্ন ব্যবসায়ীদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য দেন।
এ সময় মেলায় সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণের জন্য বাংলাদেশকে দেওয়া বিশেষ সম্মাননা গ্রহণ করেন হাইকমিশনার মো. শামীম আহসান।
অনুষ্ঠানে গুয়াংডং ফুড অ্যান্ড প্যাকেজিং মেশিনারি ট্রেডস এসোসিয়েশন, পেনাং ইমপোর্টার্স এন্ড এক্সপোর্টার্স এসোসিয়েশন, তেওচিউ মার্চেন্টস এসোসিয়েশন পেনাং, মালয়েশিয়া পেনাং এলিট ওমেনপ্রেনারস এসোসিয়েশন এবং দেওয়ান পারনিয়াগান উসাহাওয়ান মালয়েশিয়া এর সদস্যসহ মেলায় অংশগ্রহণকারী প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
পরবর্তীতে, অন্যান্য অতিথিসহ হাইকমিশনার মেলার অন্যান্য স্টলসহ বাংলাদেশের দুটি স্টল পরিদর্শন করেন। এসময় তিনি বাংলাদেশ হাইকমিশনের স্টলে আগত ব্যবসায়ী ও দর্শনার্থীদের সঙ্গে মত বিনিময় করেন।
বাংলাদেশের দুটি স্টলে প্রাণ-আরএফএল এর প্লাস্টিক পণ্য, দুরন্ত বাইসাইকেল, ট্রাভেলো লাগেজ, গুডলাক স্টেশনারি, উইনার ক্লোথিং এবং ভিশন ইলেকট্রনিকস সামগ্রী ছাড়াও হাইকমিশনের পক্ষ থেকে চামড়াজাত পণ্য, পাটপণ্য, হস্তশিল্প এবং এ সংক্রান্ত বিভিন্ন প্রকাশনা প্রদর্শিত হচ্ছে।
এছাড়াও, লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং শিল্প, প্লাস্টিক শিল্প, প্যাকেজিং শিল্প, বাংলাদেশে ব্যবসা-বিনিয়োগ সংক্রান্ত নানা ধরনের প্রকাশনা, পর্যটন ও বাংলাদেশে বিনিয়োগ সম্ভাবনা বিষয়ে প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হচ্ছে। মেলা উদ্বোধনের দিন থেকেই বাংলাদেশি স্টলগুলোতে বিদেশি ব্যবসায়ীসহ দর্শনার্থীদের ভীড় এবং প্রদর্শিত বাংলাদেশি পণ্যসমূহ সম্পর্কে ইতিবাচক আগ্রহ দেখা গেছে।
ঢাকাস্থ এলিয়েন্ট লিমিটেড প্রতিষ্ঠানের সহযোগিতায় বাংলাদেশ ইঞ্জিনিয়ারিং ইন্ড্রাস্ট্রি মালিক সমিতির সদস্য প্রতিষ্ঠান— রাজু ইঞ্জিনিয়ারিং, নওগাঁ ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কশপ, নওগাঁ ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল, সুইস বায়োহাইজেনিক ইকু্পমেন্টস লিমিটেড, মেশিনঘর ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কস, সাত্তার মেটাল ইন্ডাস্ট্রিস, রিপন মেটাল ইন্ডাস্ট্রিস, রেলেক্স মেটাল ইন্ডাস্ট্রিস, ফেয়ার ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কস এবং এর তথ্যবহুল প্রকাশনা ও তথ্যচিত্র এবং বাংলাদেশ প্লাস্টিক পণ্য প্রস্তুত ও রপ্তানিকারক সমিতি’র (বিপিজিমইএ) সদস্য প্রতিষ্ঠান আকিজ প্লাস্টিকস, জিহান প্লাস্টিক ইন্ডাস্ট্রিস এবং আমান টয় ইন্ডাস্ট্রিস’র বহুমুখী প্লাস্টিক পণ্যসামগ্রী সংগ্রহ করে বাংলাদেশের সংশ্লিষ্ট শিল্পসমূহ সম্পর্কে প্রয়োজনীয় তথ্য বাংলাদেশ হাইকমিশনের স্টলে আগত দর্শনার্থীদের মাঝে তুলে ধরা হয়।
বাংলাদেশ-মালয়েশিয়ার দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য প্রায় ৩০০ কোটি মার্কিন ডলারের। এছাড়া, মালয়েশিয়া বাংলাদেশে বিশ্বের নবম বৃহত্তম বিনিয়োগকারী দেশ।
১৪৫ দিন আগে
মালয়েশিয়ায় ক্রেন দুর্ঘটনায় শার্শার যুবকের মৃত্যু
মালয়েশিয়ায় ক্রেন দুর্ঘটনায় রনি নামে এক বাংলাদেশি যুবকের মৃত্যু হয়েছে। শনিবার (৫ জুলাই) সকাল বাংলাদেশ সময় সাড়ে ১০ টার দিকে মালয়েশিয়ার শ্রীরামবাং শহরে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত রনি(৩৫) যশোরের শার্শার উপজেলার কায়বা ইউনিয়নের বাগুড়ি বেলতলা গ্রামের মাহমুদ সরদারের ছেলে।
নিহতের পারিবার সূত্রে জানা যায়, আড়াই বছর আগে পরিবারে স্বচ্ছলতা ফেরাতে প্রবাস জীবন শুরু করেন রনি। শুরু থেকে তিনি নির্মাণ শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন। ঘটনার দিন সকালে নির্ধারিত ভবনে কাজের সময় একটি ক্রেনের চেইন ছিড়ে রনি চাপা পড়লে ঘটনাস্থলেই মারা যান। তার এক সহযোগী শ্রমিক ফোনে বাংলাদেশে তার পরিবারকে বিষয়টি জানায়।
কায়বার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলতাব হোসেন জানান, রনি আড়াই বছর যাবৎ মালয়েশিয়ায় কাজ করছেন। আজ সকালে তার মৃত্যুর সংবাদ পেয়েছি। তার লাশ দ্রুত দেশে আনার জন্য প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের কাছে দাবি জানাচ্ছি।
শার্শা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ডা. কাজী নাজিব হাসান জানান, প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে লাশ দ্রুত দেশে নিয়ে আসার জন্য উপজেলা প্রশাসন সার্বিক সহযোগিতা করবে।
পড়ুন: মালয়েশিয়ায় নারী কর্মী নিয়োগে প্রতারণার বিষয়ে সতর্কতা
১৫২ দিন আগে
মালয়েশিয়া যেতে না পারা শ্রমিকদের টাকা ফেরতের অগ্রগতি জানাতে নির্দেশ
সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়ার পরও মালোয়েশিয়া যেতে না পারা ১৭ হাজার ৭৭৭ জন শ্রমিকের টাকা ফেরত দেওয়া এবং তাদের মালোয়েশিয়ায় যাওয়ার বিষয়ে অগ্রগতি জানাতে প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
আগামী ২৭ আগস্টের মধ্যে মন্ত্রণালয়ে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করে অগ্রগতি প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করতে বলা হয়েছে।
বিচারপতি ফাহমিদা কাদের ও বিচারপতি মুবিনা আসাফ সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এই আদেশ দেন। এর আগে মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে হাইকোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হয়। প্রতিবেদনে ১৭ হাজার ৭৭৭ জনের মালোয়েশিয়ায় যেতে না পারার দায় রিক্রুটিং এজেন্সিগুলোর বলে উল্লেখ করা হয়। আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী তানভীর আহমেদ।
আরও পড়ুন: মডেল মেঘনার আটকাদেশ কেন অবৈধ নয়: হাইকোর্টের রুল
দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর ২০২২ সালের আগস্টে মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার আবার খুলে দেওয়া হয়। ২০২৪ সালের ৩১ মে পর্যন্ত ১০১টি রিক্রুটিং এজেন্সির মাধ্যমে প্রায় পৌনে পাঁচ লাখ কর্মী মালয়েশিয়ায় পাড়ি দেন।
তবে টিকিট সংক্রান্ত সমস্যার কারণে প্রায় সাড়ে ১৭ হাজার শ্রমিক আটকা পড়েন। এর মধ্যে একাংশ উড়োজাহাজের টিকিট সংগ্রহ করতে পারেননি এবং অন্য অংশ মালয়েশিয়া থেকে নিয়োগকর্তার চূড়ান্ত সম্মতি পাননি। নিয়োগকর্তারা বিমানবন্দর থেকে তাদের গ্রহণ করার নিশ্চয়তা পাঠায়নি। কর্মীদের মালয়েশিয়ায় যাওয়ার শেষ সময় ছিল ৩১ মে।
পরে জনস্বার্থে বিষয়টি সুষ্ঠু তদন্ত ও মালয়েশিয়া যেতে না পারা কর্মীদের টাকা ফেরতের দাবিতে হাইকোর্টে একটি রিট দায়ের করা হয়। ওই রিটের শুনানি নিয়ে গত বছরের ২৪ জুন হাইকোর্ট মালয়েশিয়া শ্রমিক পাঠানোর ঘটনায় ভুক্তভোগী কর্মীদের জীবন ধ্বংসের জন্য কর্তৃপক্ষের নিষ্ক্রিয়তা ও খামখেয়ালিপনাকে কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না এবং ১৭ হাজার ৭৭৭ জন শ্রমিকের কাছ থেকে নেওয়া অর্থ সুদসহ ফেরত দিতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না—তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন।
পাশাপাশি, হাইকোর্ট কর্তৃপক্ষকে প্রতি তিন মাস অন্তর এ ঘটনার অগ্রগতি প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন।
ওই আদেশের ধারাবাহিকতায় হাইকোর্টে মন্ত্রণালয়ের একটি প্রতিবেদন দাখিল করে রাষ্ট্রপক্ষ। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মালয়েশিয়ায় যেতে না পারা কর্মীদের কাছ থেকে নেওয়া সমুদয় অর্থ ফেরত প্রদানের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এছাড়া, কর্মী প্রেরণে ব্যর্থতা এবং দায়িত্বে অবহেলার জন্য সংশ্লিষ্ট রিক্রুটিং এজেন্সিগুলোর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত হয়েছে। রিক্রুটিং এজেন্সিগুলোর বিরুদ্ধে মন্ত্রণালয় নির্ধারিত সর্বোচ্চ অভিবাসন ব্যয় ৭৮ হাজার ৯৯০ টাকার অতিরিক্ত অর্থ গ্রহণের অভিযোগের আইনানুগ নিষ্পত্তির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
ভবিষ্যতে কর্মী পাঠানোর ক্ষেত্রে নির্ধারিত সময়সীমার সঙ্গে সঙ্গতি রেখে চাহিদাপত্র ও ভিসা ইস্যুর তারিখ নির্ধারণ করার সিদ্ধান্তও হয়েছে।
প্রতিবেদনে কিছু সুপারিশও করা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, মালয়েশিয়াসহ বিভিন্ন দেশে কর্মী পাঠানোর ক্ষেত্রে একটি কেন্দ্রীয় ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি চালু করা প্রয়োজন, যাতে চাহিদাপত্র ইস্যু থেকে শুরু করে কর্মী বিদেশগমন ও পরবর্তী পরিস্থিতি পর্যন্ত তদারকি করা যায়।
আরও পড়ুন: যায়যায়দিন ডিক্লারেশন অবৈধ কেন নয় জানতে চেয়ে হাইকোর্টের রুল
এই ব্যবস্থাপনায় ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ, বিদেশস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসসমূহ এবং রিক্রুটিং এজেন্সিগুলো সংযুক্ত থাকবে। মন্ত্রণালয় থেকে নিয়োগানুমতি গ্রহণের পর বিএমইটি’র ক্লিয়ারেন্স কার্ড গ্রহণ এবং কর্মী প্রেরণ নির্দিষ্ট করার সুপারিশও করা হয়েছে।
রিক্রুটিং এজেন্সিগুলোর অভিবাসী কর্মীদের কাছ থেকে ব্যয় গ্রহণের ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে। এছাড়া ই-ভিসাপ্রাপ্ত কিন্তু মালয়েশিয়ায় প্রবেশ করতে ব্যর্থ কর্মীদের বিষয়ে মালয়েশিয়াস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশনের মাধ্যমে সে দেশের সরকারের সঙ্গে কূটনৈতিক যোগাযোগ অব্যাহত রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
২২১ দিন আগে