ভারতে বাংলাদেশি বিচার বিভাগ
ঢাকা-দিল্লির মধ্যে যেসব সমঝোতা স্মারক সই ও প্রকল্প ঘোষণা
বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে অভিন্ন কুশিয়ারা নদীর পানি বন্টনসহ সাতটি ক্ষেত্রে সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে। মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারত সফরকালে দুই দেশের মধ্যে এই সমঝোতা স্মারক সই হলো।
সাতটি চুক্তির মধ্যে কুশিয়ারা নদী থেকে পানি প্রত্যাহারের বিষয়ে বাংলাদেশের পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় এবং ভারতের জলশক্তি মন্ত্রণালয়ের মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক সই হয়।
ভারতে বাংলাদেশ রেলওয়ের কর্মীদের প্রশিক্ষণের বিষয়ে ভারতের রেলপথ মন্ত্রণালয় (রেলওয়ে বোর্ড), ভারত এবং বাংলাদেশের রেলপথ মন্ত্রণালয়ের মধ্যে সমঝোতা স্মারক সই হয়।
বাংলাদেশ রেলওয়ের জন্য আইটি সিস্টেম যেমন এফওআইএস এবং অন্যান্য অ্যাপ্লিকেশনে সহযোগিতার বিষয়ে দুই রেলপথ মন্ত্রণালয়ের মধ্যে আরেকটি সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে।
ভারতে বাংলাদেশি বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ ও সক্ষমতা বৃদ্ধির কর্মসূচির বিষয়ে ভারতের ন্যাশনাল জুডিশিয়াল একাডেমি এবং বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্ট একটি সমঝোতা স্মারক সই করেছে।
বাংলাদেশ বৈজ্ঞানিক ও শিল্প গবেষণা কাউন্সিল (বিসিএসআইআর) এবং ভারতের বৈজ্ঞানিক ও শিল্প গবেষণা কাউন্সিল (সিএসআইআর) এর মধ্যে বৈজ্ঞানিক ও প্রযুক্তিগত সহযোগিতার বিষয়ে একটি সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে।
এছাড়া দু’দেশ মহাকাশ প্রযুক্তির ক্ষেত্রে সহযোগিতার বিষয়ে সমঝোতা স্মারক সই করেছে।
ভারতের প্রসার ভারতী এবং বাংলাদেশ টেলিভিশন (বিটিভি) সম্প্রচারে সহযোগিতার বিষয়ে একটি সমঝোতা স্মারক সই করেছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মুদি ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লির হায়দরাবাদ হাউজে দ্বিপক্ষীয় আলোচনার পর দু’দেশের প্রত্যাশিত সহযোগিতা বৃদ্ধির জন্য এই সমঝোতা স্মারক সই প্রত্যক্ষ করেন।
মুদির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রীর আলোচনায় নিরাপত্তা সহযোগিতা, বিনিয়োগ, বর্ধিত বাণিজ্য সম্পর্ক, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের সহযোগিতা, অভিন্ন নদীর পানি বণ্টন, পানি সম্পদ ব্যবস্থাপনা, সীমান্ত ব্যবস্থাপনা, মাদক চোরাচালান ও মানব পাচার সংক্রান্ত বিষয়গুলো অগ্রাধিকার পেয়েছে।
উদ্বোধন ও ঘোষিত প্রকল্প
দুই নেতা মৈত্রী বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ইউনিট-১ এর কাজ সম্পন্নের ঘোষণা দিয়েছেন। রামপালে এক হাজার ৩২০ মেগাওয়াট সুপার ক্রিটিক্যাল কয়লা-চালিত তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রটি কনসেশনাল ফাইন্যান্সিং স্কিমের অধীনে দুই বিলিয়ন মার্কিন ডলার ব্যয়ে নির্মাণ করা হবে। এর মধ্যে উন্নয়ন সহায়তা হিসাবে ভারত ১ দশমিক ৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার দিবে।
তারা যৌথভাবে রূপসা সেতুর উদ্বোধন করেন। ৫.১৩ কিলোমিটার দীর্ঘ রূপসা রেল সেতুটি ৬৪.৭ কিলোমিটার খুলনা-মোংলা বন্দর একক ট্র্যাক ব্রডগেজ রেল প্রকল্পের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ, যা প্রথমবারের মতো মোংলা বন্দরকে খুলনার সঙ্গে রেলপথে সংযুক্ত করেছে। মধ্য ও উত্তর বাংলাদেশ এবং ভারত সীমান্ত হয়ে পশ্চিমবঙ্গের পেট্রাপোল ও গেদেকে সংযুক্ত করেছে।
সড়ক নির্মাণের সরঞ্জাম ও যন্ত্রপাতি সরবরাহ:
এই প্রকল্পটি বাংলাদেশ সড়ক ও জনপথ বিভাগকে ২৫টি প্যাকেজে সড়ক রক্ষণাবেক্ষণ এবং নির্মাণ সরঞ্জাম ও যন্ত্রপাতি সরবরাহ করে।
খুলনা দর্শনা রেললাইন সংযোগ প্রকল্প:
প্রকল্পটি বর্তমান (ব্রডগেজ দ্বিগুণ) অবকাঠামোর একটি আপগ্রেড যা গেদে-দর্শনা থেকে খুলনার বর্তমান ক্রস বর্ডার রেল সংযোগকে সংযুক্ত করেছে, যার ফলে দুই দেশের মধ্যে বিশেষ করে ঢাকা এবং ভবিষ্যতে মোংলা বন্দরের সঙ্গে রেল যোগাযোগ স্থাপন করবে । এই প্রকল্পের আনুমানিক ব্যয় ধরা হয়েছে ৩১২ দশমিক ৪৮ মিলিয়ন ডলার।
পার্বতীপুর-কাউনিয়া রেললাইন: বিদ্যমান মিটারগেজ লাইনকে ডুয়েলগেজ লাইন প্রকল্পে রূপান্তরের জন্য আনুমানিক ১২০ দশমিক ৪১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ব্যয় ধরা হয়েছে।
প্রকল্পটি বিরল (বাংলাদেশ)-রাধিকাপুর (পশ্চিমবঙ্গ) এ বিদ্যমান ক্রস বর্ডার রেলের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করবে এবং দ্বিপক্ষীয় রেল সংযোগ বৃদ্ধি করবে।
আরও পড়ুন: তিস্তা সমস্যা সমাধানে বাংলাদেশকে আবারও আশ্বাস দিয়েছে ভারত: পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী
যৌথভাবে রামপাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের ইউনিট ১- এর কাজ সম্পন্নের ঘোষণা হাসিনা-মোদির
রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র: সেপ্টেম্বরে শেখ হাসিনা-নরেন্দ্র মোদির যৌথভাবে ১ম ইউনিট সম্পন্নের ঘোষণা
২ বছর আগে