আন্তর্জাতিক আদালত
স্ট্রাইক ফর ওয়াটার জাস্টিস: পানি আগ্রাসনের দায়ে আন্তর্জাতিক আদালতে ভারতের বিচার দাবি
পানি আগ্রাসনের দায়ে আন্তর্জাতিক আদালতে ভারতের বিচার এবং ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ দাবি করেছেন বিশিষ্টজনেরা। নদীর বাঁধ কেটে দিয়ে ফেনীসহ দেশের ১১টি জেলাকে বন্যায় ডুবিয়ে দেওয়ার প্রেক্ষিতে এই দাবি তোলেন তারা।
শুক্রবার (৬ সেপ্টেম্বর) ফেনীর শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে ‘আমরা ফেনীবাসী’র ব্যানারে ‘স্ট্রাইক ফর ওয়াটার জাস্টিস’ কর্মসূচি থেকে তারা এ দাবি জানান ।
দেশের খ্যাতনামা বিশেষজ্ঞ, নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি, সাংবাদিক, ছাত্র-জনতাসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ এতে অংশ নেন।
এতে সভাপত্বি করেন স্ট্যামফোর্ড ইউনিভার্সিটির বিজ্ঞান অনুষদের ডিন ও পরিবেশ বিজ্ঞানী অধ্যাপক ড. আহমদ কামরুজ্জামান মজুমদার।
অধ্যাপক ড. আহমদ কামরুজ্জামান মজুমদার বলেন, এই বন্যা শুধুই প্রাকৃতিক নয়, ভারত কোনোভাবে এর দায় এড়াতে পারে না। এই বন্যায় ফেনীসহ ১১টি জেলার মানুষ মানসিক, শারীরিক ও আর্থিকভাবে মারাত্মক ক্ষতির মুখে পড়েছেন। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মাধ্যমে যথাযথ ক্ষতিপূরণ দাবি করেন তিনি। একইসঙ্গে সকল অভিন্ন নদীতে ড্যাম বা বাঁধ অপসারণের দাবি জানান এই বিশেষজ্ঞ।
মোহাম্মদ এজাজ বলেন, ভারত চাইলেই যে এক দিনে বাঁধ কেটে বাংলাদেশের মানুষকে বিপদে ফেলে দিতে পারে, এবারের বন্যা তার উদাহরণ।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ ও ভারতের ৫৪টি অভিন্ন নদীতে ৬৮টি বাঁধ দিয়েছে ভারত। প্রতিটির হিসাব ভারতকে দিতে হবে। এই পানি বিশেষজ্ঞ বলেন, ভারত দীর্ঘদিন চেষ্টা করেও ফাঁরাক্কায় বাঁধ দিতে পারেনি। শেখ মুজিবের শাসনামলে ভারত এই বাঁধ দিতে সক্ষম হয়। ফেনী নদীর পূর্ণাঙ্গ নিয়ন্ত্রণ ভারতের হাতে। এ দেশে দিল্লির আধিপত্যবাদের প্রোডাক্ট ছিল শেখ হাসিনা। দেশে উন্নয়নের বয়ান হাসিনার ছিল না, এটি ছিল মোদির শেখানো বুলি। উন্নয়নের নামে নদী ও পরিবেশ ধ্বংস করেছে শেখ হাসিনা।
মিহির বিশ্বাস বলেন, ফেনীর মানুষ লড়াই-সংগ্রাম করে বেঁচে থাকতে জানে। ভারতীয় পানি আগ্রাসনের বিরুদ্ধেও ফেনীবাসী হারবে না। ভারতকে পানি নিয়ে বৈষম্যহীন আচরণের আহ্বান জানান তিনি।
হুমায়ুন কবির সুমন বলেন, দেশের এবারের বন্যা যতোটা না প্রাকৃতিক তার চেয়ে বেশি রাজনৈতিক। পানি আগ্রাসনের দায়ে আন্তর্জাতিক আদালতে ভারতের বিচার দাবি করেন তিনি।
প্লাটফর্মটির উদ্যোক্তা বুরহান উদ্দিন ফয়সলের সঞ্চালনায় স্ট্রাইক কর্মসূচিতে আরও বক্তব্য দেন বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) সাবেক সভাপতি এম আব্দুল্লাহ, নারী নেত্রী নুর তানজিলা রহমান, ফেনী প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি আব্দুর রহিম, দৈনিক ফেনীর সম্পাদক আরিফ রিজভী, ফেনী জেলা আইনজীবী সমিতির যুগ্ম সম্পাদক এমদাদ হোসাইন, কবি ও সমাজকর্মী ফজলুল হক, সমাজকর্মী আমের মক্কি, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ফেনী জেলার সমন্বয়ক আব্দুল আজিজ, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বয়ক ইমাম হোসেন, কবি ও সমাজকর্মী আলাউদ্দিন আদর। অনুষ্ঠানের শেষ দিকে এসে এই কর্মসূচির প্রতি সংহতি জানান বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নেতা অধ্যাপক লিয়াকত আলী ভুইয়া। স্বাগত বক্তব্য দেন আমরা ফেনীবাসী প্লাটফর্মের অন্যতম উদ্যোক্তা কেফায়েত শাকিল।
আরও পড়ুন: বন্যায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৭১, ক্ষতিগ্রস্ত অর্ধকোটি মানুষ
৩ মাস আগে
গাজায় হামলা বন্ধে ইসরায়েলকে আন্তর্জাতিক আদালতের আদেশ, যুক্তরাষ্ট্র আরও বিচ্ছিন্ন অবস্থানে
গাজার দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর রাফাহতে সামরিক অভিযান বন্ধ করতে ইসরাইলকে নির্দেশ দিয়েছে জাতিসংঘের শীর্ষ আদালত আন্তর্জাতিক বিচার আদালত (আইসিজে)। আদালতের এই রায় যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের সম্পর্কের মধ্যকার দূরত্ব আরও বাড়িয়ে দিল।
ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে নরওয়ে, আয়ারল্যান্ড ও স্পেনের স্বীকৃতি দেওয়ার কথা ঘোষণার একদিন পরই শুক্রবার হেগভিত্তিক আন্তর্জাতিক বিচার আদালতের এই রায় ইসরায়েলকে আরও চাপের মুখে ফেলেছে।
অন্যদিকে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর পাশাপাশি হামাস নেতাদের বিরুদ্ধেও গ্রেপ্তারি পরোয়ানা চেয়েছেন পৃথক একটি আন্তর্জাতিক আদালতের চিফ প্রসিকিউটর।
ইসরায়েলের ক্ষেত্রে বিশ্ব সম্প্রদায় থেকে বাইডেন প্রশাসনের অবস্থান ভিন্ন। রাফায় বড় ধরনের আক্রমণের বিরুদ্ধে অবস্থান নিলেও অন্যদিকে বাইডেন প্রশাসন জোর দিয়ে বলছে তাদের ঘনিষ্ঠ মিত্র ইসরায়েল এখন পর্যন্ত এমন কোনো পদক্ষেপ নেয়নি, যা ‘রেড লাইন’ অতিক্রম করেছে।
আরও পড়ুন: ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়ার তিন দেশের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়
গত অক্টোবরে ইসরায়েলে হামাসের হামলার পর থেকে দেশটির ঘনিষ্ঠ মিত্র হিসেবে পূর্ণ শক্তি নিয়ে সামরিক ও রাজনৈতিক সমর্থন দিয়ে আসছে বাইডেন প্রশাসন। এখন আবার জনবসতিপূর্ণ রাফায় পূর্ণ মাত্রার সামরিক অভিযান না চালাতে ইসরায়েলকে চাপ দিচ্ছে তারা।
এ সপ্তাহে হোয়াইট হাউসে এক ব্রিফিংয়ে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জেক সুলিভান সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা এখন পর্যন্ত যা দেখেছি তা হলো, ওই এলাকায় ইসরায়েলের সামরিক অভিযান ছিল সীমিত ও লক্ষ্যবস্তু নির্ধারিত ছিল। ঘনবসতিপূর্ণ শহরাঞ্চলের কেন্দ্রস্থলে কোনো বড় সামরিক অভিযান ছিল না।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের এখন দেখতে হবে এখান থেকে কী ঘটে।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘গাজায় অভিযান এখনো রাফাহর কেন্দ্রস্থলের ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় পৌঁছায়নি।’
চলতি মাসের শুরুর দিকে হোয়াইট হাউস ঘোষণা করে, তারা প্রায় সাড়ে তিন হাজার বোমার চালান স্থগিত করছে, যার মধ্যে দুই হাজার পাউন্ড ওজনের বিস্ফোরক রয়েছে। এই ধরনের বিস্ফোরকের কারণেই বেসামরিক মানুষের মৃত্যু হয়েছে বলে উল্লেখ করেছে বাইডেন প্রশাসন।
সিএনএনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেন, 'যদি তারা রাফাহতে যায়, তাহলে আমি সেই অস্ত্র সরবরাহ করব না।’
আরও পড়ুন: ইউরোপীয় দেশগুলোর রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতিকে স্বাগত জানিয়েছে ফিলিস্তিনিরা
ইসরায়েলের ওপর চাপ প্রয়োগ করতে গিয়ে মার্কিন কর্মকর্তারা বলেছেন, রাফাহতে হামাসের হাতে অপহৃত ইসরায়েলি জিম্মিদের ফিরিয়ে দেওয়ার চুক্তির আলোচনাকে দুর্বল করে দেবে এবং বাইডেন প্রশাসনের পক্ষ থেকে অস্ত্র পাঠানোর বিষয়টির ওপরও প্রভাব ফেলবে।
তবে এই সপ্তাহে সুলিভান ইসরায়েল ও সৌদি আরব সফর থেকে ফিরে আসার পরে হোয়াইট হাউসের পক্ষ থেকে বক্তব্যে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন এসেছে। তিনি বলেন, রাফাহ থেকে হামাসকে সমূলে উৎখাতে ইসরায়েলের পরিকল্পনায় পরিবর্তন এসেছে সেটি তাকে জানানো হয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক প্রশাসনের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, সফরকালে নেতানিয়াহু ও অন্য কর্মকর্তাদের সঙ্গে সুলিভানের সাক্ষাৎকালে রাফাহ নিয়ে বাইডেনের অনেক উদ্বেগের সমাধান দিয়েছে ইসরায়েলি পক্ষ।
ওই কর্মকর্তা বলেন, বাইডেন প্রশাসন ইসরায়েলি পরিকল্পনাকে সবুজ সংকেত দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছে কিন্তু ইসরায়েলি কর্মকর্তাদের পরিকল্পনায় পরিবর্তন আনার উদ্যোগ থেকে বোঝা যাচ্ছে তারা বাইডেনের উদ্বেগকে গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছে।
বাইডেনের উদ্বেগের কথা মাথায় রেখে ইসরায়েল কর্তৃপক্ষের পরিকল্পনায় এই পরিবর্তন রাফাহতে আটকে থাকা ফিলিস্তিনিদের জন্য সান্ত্বনাস্বরূপ। গত কয়েক মাসে অন্যান্য এলাকা থেকে পালিয়ে ১০ লাখেরও বেশি মানুষ সেখানে আশ্রয় নিয়েছিল কিন্তু প্রায় ৯ লাখ মানুষ শহরটি ছেড়ে পালিয়ে গেছে।
আরও পড়ুন: ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দিচ্ছে নরওয়ে-আয়ারল্যান্ড ও স্পেন
ইসরায়েল অন্য প্রধান সীমান্ত ক্রসিং কেরেম শালোম দিয়ে শত শত সাহায্যবহনকারী ট্রাক নিয়ে এসেছে, তবে জাতিসংঘ এবং ত্রাণ সংস্থাগুলো বলছে, ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর অভিযানের কারণে ক্ষুধার্ত ফিলিস্তিনিদের জন্য খাবার, পানি ও অন্যান্য সরবরাহ গ্রহণ করা তাদের পক্ষে বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে।
ইউএস এজেন্সি ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট বলছে, দিনে প্রতিদিন অন্তত ৬০০ ট্রাক খাদ্য ও অন্যান্য সহায়তা প্রয়োজন। তাহলে উত্তরে ইউএসএআইডি ও জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির প্রধানের ব্যাখায় যে দুর্ভিক্ষের সূত্রপাত হতে যাচ্ছে তা রোধ করা যাবে এবং দক্ষিণে এটি ছড়িয়ে পড়া ঠেকানো যাবে।
এমনকি সমুদ্রপথে একটি মার্কিন জেটি অল্প পরিমাণে সহায়তা আনতে শুরু করলেও ইসরায়েলি আক্রমণ শুরুর পর থেকে যে পরিমাণ সরবরাহের প্রয়োজন তার তুলনায় স্বল্প পরিমাণই পেয়েছে গাজাবাসীরা।
আরও পড়ুন: যুদ্ধাপরাধে ইসরায়েল ও হামাসের শীর্ষ নেতাদের গ্রেপ্তারের আবেদন
গাজায় যুদ্ধ বন্ধে ইসরায়েলকে দেওয়া আইসিজের এই রায়কে স্বাগত জানিয়েছে নেতৃস্থানীয় আন্তর্জাতিক মানবাধিকার গোষ্ঠীগুলো। তারা আশা করেছিল যে এই রায় ইসরায়েলের ওপর চাপ সৃষ্টি করবে। ডক্টরস উইদাউট বর্ডার্স বলেছে, এই রায়ে নিশ্চিত হয়েছে যে গাজায় ফিলিস্তিনি বেসামরিক নাগরিকরা কতটা 'বিপর্যয়কর' পরিস্থিতিতে আছে এবং 'অবিলম্বে আরও মানবিক সহায়তার ব্যাপক মাত্রায় প্রয়োজন' রয়েছে।
তবে গাজায় আক্রমণ বন্ধ, এই অঞ্চলে মানবিক সহায়তা বাড়ানো এবং যুদ্ধাপরাধ তদন্তকারীদের জন্য গাজায় প্রবেশ নিয়ে আদালতের আদেশ মেনে চলতে ইসরায়েলকে বাধ্য করার কোনো সুযোগ নেই।
শুক্রবারের আইসিজের এই রায়ের পর ইসরায়েলের গতিপথের কোনো পরিবর্তনের লক্ষণ দেখা যায়নি। গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের হামলায় ১ হাজার ২০০ জনের মৃত্যু হয়, যাদের প্রায় এক-চতুর্থাংশ সৈন্য এবং আরও ২৫০ জনকে বন্দি করা হয়। তারপর থেকে ইসরায়েলের হামলায় গাজায় অন্তত ৩৫ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে যাদের অধিকাংশই বেসামরিক।
আদালতের দাবিগুলো যুক্তরাষ্ট্র ইসরাইলের কাছে যা চেয়েছে তার চেয়েও বেশি যদিও ওয়াশিংটন ইঙ্গিত দিয়েছে যে তারা গাজায় আরও অভিযান চালানো বিপক্ষে।
বুধবার মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন দ্য হাউজ ফরেন অ্যাফেয়ার্স কমিটিকে বলেন, 'রাফাহর ওপর পূর্ণ সামরিক হামলা বেসামরিক জনগণের যে ক্ষতি করতে পারে তা নিয়ে আমরা দীর্ঘদিন ধরে আমাদের উদ্বেগের কথা জানিয়ে আসছি। রাফাহকে রক্ষার সুস্পষ্ট এবং বিশ্বাসযোগ্য কোনো পরিকল্পনাও নেই।’
ব্লিংকেন আরও বলেন, প্রশাসন বিশ্বাস করে না যে ইসরায়েল যে ফলাফল অর্জন করতে চাইছে রাফাহতে একটি বড় আক্রমণের মাধ্যমে তা অর্জন করতে পারবে। এটি হামাসের সঙ্গে কার্যকরভাবে এবং টেকসইভাবে মোকাবিলার মাধ্যমে করতে হবে।
রাফায় পূর্ণাঙ্গ সামরিক হামলার বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন ব্লিংকেন। তিনি মনে করেন, হামাসের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় আরও অনেক উপায় রয়েছে যেগুলো আরও কার্যকর এবং আরও টেকসই হতে পারে।
আরও পড়ুন: রাফাহর আরও গভীরে প্রবেশ করেছে ইসরায়েলি বাহিনী
৬ মাস আগে
রোহিঙ্গা গণহত্যা মামলা: আন্তর্জাতিক আদালতে মিয়ানমারের আপত্তি খারিজ
মিয়ানমারের মুসলিম সংখ্যালঘু রোহিঙ্গাদের ওপর গণহত্যা চালানো নিয়ে দেশটির শাসকদের অভিযুক্ত করে দায়ের করা মামলা অগ্রসর হওয়ার বিষয়ে শুক্রবার নেপিডোর প্রাথমিক আপত্তি খারিজ করে দিয়েছেন আন্তর্জাতিক আদালত (আইসিজে)।
রোহিঙ্গাদের ওপর নৃশংসতাকে অধিকার সংগঠন ও জাতিসংঘের এক তদন্ত প্রতিবেদনে ১৯৪৮ সালের গণহত্যা কনভেনশন লঙ্ঘনের সমতুল্য বলা হয়েছে। মার্চে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন বলেছেন, মিয়ানমারে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওপর সহিংস দমন-পীড়ন গণহত্যার সমান।
বার্মিজ রোহিঙ্গা অর্গানাইজেশন ইউকে-এর সভাপতি তুন খিন এই রায়কে স্বাগত জানিয়ে বলেছেন, ‘ছয় লাখ রোহিঙ্গা এখনও গণহত্যার সম্মুখীন। বাংলাদেশে ১০ লাখের বেশি মানুষ আশ্রয় নিয়েছে, তারা ন্যায়বিচারের আশায় অপেক্ষা করছে।’
রোহিঙ্গাদের বিষয় নিয়ে আন্তর্জাতিক ক্ষোভের মধ্যে মিয়ানমার গণহত্যা কনভেনশন লঙ্ঘন করছে বলে ২০১৯ সালে আন্তর্জাতিক আদালতে মামলা করে গাম্বিয়া। গাম্বিয়া ও মিয়ানমার উভয়ই কনভেনশনের পক্ষ এবং সব স্বাক্ষরকারীর এটি কার্যকর নিশ্চিত করার দায়িত্ব রয়েছে বলে যুক্তি দেখায় দেশটি।
মিয়ানমারের প্রতিনিধিত্বকারী আইনজীবীরা ফেব্রুয়ারিতে যুক্তি দেন, বিশ্ব আদালত কেবল রাষ্ট্রের মধ্যে মামলার শুনানি করে এবং ইসলামিক সহযোগিতা সংস্থার পক্ষ থেকে গাম্বিয়া রোহিঙ্গাদের অভিযোগ আনায় মামলাটি বাতিল করা উচিত।
তারা আরও দাবি করে, গাম্বিয়া মামলাটি আদালতে আনতে পারে না কারণ এটি মিয়ানমারের ঘটনার সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ত না এবং মামলা দায়েরের আগে দুই দেশের মধ্যে আইনি বিরোধ ছিল না।
গাম্বিয়ার অ্যাটর্নি জেনারেল ও বিচারমন্ত্রী দাউদা জালো ফেব্রুয়ারিতে বলেন, মামলাটি অগ্রসর হওয়া উচিত এবং এটি ওআইসি নয়, তার দেশই এনেছে।
জ্যালো আদালতকে বলেন, ‘আমরা কারও প্রক্সি নই।’
এ বিষয়ে নেদারল্যান্ডস ও কানাডা গাম্বিয়াকে সমর্থন করছে।
মিয়ানমারের সেনাবাহিনী রোহিঙ্গা বিদ্রোহী গোষ্ঠীর হামলার পর ২০১৭ সালে রাখাইন রাজ্যে একটি ক্লিয়ারেন্স অভিযান শুরু করে। এতে সাত লাখের বেশি রোহিঙ্গা প্রতিবেশী বাংলাদেশে পালিয়ে আসে এবং মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনীর বিরুদ্ধে গণধর্ষণ, হত্যা ও হাজার হাজার বাড়িতে অগ্নিসংযোগের অভিযোগ রয়েছে।
তবে গত বছর মিয়ানমারে সামরিক অভ্যুত্থানের কারণে আইসিজের মামলাটি জটিল হয়ে পড়ে। ফেব্রুয়ারির শুনানিতে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশটির সামরিক বাহিনীর গঠিত সরকারকে দেশটির প্রতিনিধিত্ব করার অনুমতি দেয়ার সিদ্ধান্ত তীব্র সমালোচনার জন্ম দেয়।
পড়ুন: রোহিঙ্গা গণহত্যা মামলার এখতিয়ার নিয়ে রায় দেবেন জাতিসংঘের আদালত
রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শনে থাই রাষ্ট্রদূত
২ বছর আগে
রোহিঙ্গা সঙ্কট: আন্তর্জাতিক আদালতে বাংলাদেশের পাশে থাকবে ওআইসি
জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত ১১ লাখের অধিক মিয়ানমারের নাগরিকদের আশ্রয় দেয়ার জন্য বাংলাদেশের প্রতি পূর্ণ সংহতি জানিয়েছে ইসলামিক সহযোগিতা সংস্থা (ওআইসি)।
৩ বছর আগে
রোহিঙ্গা নির্যাতন: আন্তর্জাতিক আদালতে মিশরের সহযোগিতা চায় বাংলাদেশ
ওআইসির নেতৃস্থানীয় সদস্য দেশ হিসেবে মিশরকে আন্তর্জাতিক বিচারিক আদালতে (আইসিজে) রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে গাম্বিয়াকে প্রয়োজনীয় সহায়তা অব্যাহত রাখার অনুরোধ জানিয়েছে বাংলাদেশ।
৪ বছর আগে
আন্তর্জাতিক আদালতে রোহিঙ্গাদের ন্যায় বিচারের দ্বার উন্মোক্ত হয়েছে: এইচআরডব্লিউ
দুটি আন্তর্জাতিক আদালতে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে আনা গণহত্যার অভিযোগে রোহিঙ্গাদের ন্যায় বিচারের দ্বার উন্মোক্ত হয়েছে বলে জানিয়েছে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ)।
৪ বছর আগে