অর্থ ও অস্ত্র
মিয়ানমারের সামরিক সরকারের অর্থ ও অস্ত্র সরবরাহ কমাতে পদক্ষেপের আহ্বান জাতিসংঘের
জনগণের ওপর দমন-নিপীড়ন বন্ধ করতে মিয়ানমারের সামরিক সরকারকে অর্থ সহায়তা ও অস্ত্র সরবরাহের সুযোগ কমাতে আরও পদক্ষেপ নিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ। শুক্রবার জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় এক প্রতিবেদনে বিষয়টি জানিয়েছে।
প্রতিবেদনটিতে মিয়ানমারের সামরিক সরকারের (তাতমাদাও) অর্থনৈতিক যোগানের বিষয়ে দেশটির স্বাধীন আন্তর্জাতিক ফ্যাক্ট-ফাইন্ডিং মিশনের (এফএফএম) করা সুপারিশের ভিত্তিতে মানবাধিকার কাউন্সিল এ অনুরোধ করেছে।
প্রতিবেদনটিতে তাতমাদাও ও এর অর্থনৈতিক যোগানের পাশাপাশি অস্ত্র নিষেধাজ্ঞার ওপরও আর্থিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করার জন্য এফএফএমের সুপারিশগুলো পুনর্ব্যক্ত করা হয়েছে।
একই সঙ্গে তুলে ধরতে হবে যে এই ধরনের পদক্ষেপগুলো অবশ্যই মানবাধিকারকে সম্মান করবে এবং প্রত্যাশিত আর্থ-সামাজিক প্রভাবগুলো প্রশমিত করার জন্য চেষ্টা চালাবে।
এতে বলা হয়েছে, বেশ কয়েকটি দেশ মিয়ানমারে অস্ত্র সরবরাহ অব্যাহত রেখেছে এবং সামরিক সহযোগিতায় নিয়োজিত রয়েছে।
আরও পড়ুন:জোরপূর্বক গুম: জাতিসংঘ ২১ দেশের ৬৯৬ মামলা পর্যালোচনা করবে
প্রতিবেদনটিতে উল্লেখ আছে, রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার নিয়ন্ত্রণ দখল করার পর মিয়ানমারের সামরিক সরকার রাষ্ট্রীয় প্রশাসন পরিষদকে অর্থবহ করতে এবং টেকসই উপায়ে শাসন করতে ব্যর্থ হয়েছে। তারা বরং মিয়ানমারের জনগণের ওপর দমন ও সন্ত্রাসী তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে।
তাতমাদাওকে অর্থনৈতিকভাবে বিচ্ছিন্ন করার জন্য এফএফএমের সুপারিশগুলোতে কিছু অগ্রগতি হয়েছে।
প্রতিবেদনে বিশেষ করে জান্তাবাহিনীর বৈদেশিক মুদ্রার সরবরাহের ওপর গুরুত্ব দেয়ার কথা বলা হয়েছে।
এটি মিয়ানমারের জনগণকে সমর্থন করার জন্য তাদের প্রচেষ্টা জোরদার করার লক্ষ্যে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে এবং সমন্বিতভাবে সামরিক সরকারের আর্থিক বিচ্ছিন্নতা নিশ্চিত করা হচ্ছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মিয়ানমারের সামরিক সরকার স্পষ্টত জনগণের কল্যাণ ও অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের বিষয়টির চেয়ে তাদের সামরিক অভিযানকে অগ্রাধিকার দিচ্ছে।
আগের বার্ষিক বাজেটের তুলনায় ২০২২-২০২৩ অর্থবছরের বাজেটে শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও সামাজিক কল্যাণে বরাদ্দ কমিয়ে প্রতিরক্ষা ব্যয় বাড়িয়েছে সেনা সরকার।
অভ্যুত্থানের পর থেকে মিয়ানমারে দারিদ্র্য কমপক্ষে দুইগুণ বেড়েছে এবং জনস্বাস্থ্য ব্যবস্থা সম্পূর্ণভাবে ভেঙে পড়েছে। স্কুলগামী শিশুদের অর্ধেকের বেশি দুই বছর ধরে শিক্ষার কোনো সুযোগ পায়নি।
এরপরও কিছু দেশ ও কোম্পানি বেশ কয়েকটি সেক্টরে সামরিক মালিকানাধীন উদ্যোগের সঙ্গে ব্যবসায়িক সম্পর্ক চালিয়ে যাচ্ছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মিয়ানমারে সক্রিয় বা দেশ থেকে পরিচালিত সমস্ত ব্যবসাকে চালু ও স্বচ্ছ রাখতে উচ্চতর মানবাধিকারের যথাযথ প্রয়োগ প্রয়োজন। সেইসঙ্গে সামরিক বাহিনীর অর্থের যোগান কমানোর ব্যাপারটি নিশ্চিত করার জন্য পদক্ষেপ নেয়া উচিত।
আরও পড়ুন:জাতিসংঘের সতর্কতা: ৩৪ কোটি ৫০ লাখ মানুষ অনাহারের ঝুঁকিতে
জাতিসংঘ অধিবেশনে যোগ দিতে নিউইয়র্ক যাওয়ার পথে লন্ডন পৌঁছেছেন প্রধানমন্ত্রী
২ বছর আগে