রহিমা বেগম
নিজেই আত্মগোপনে ছিলেন রহিমা বেগম, আদালতে ছেলের জবানবন্দি
খুলনার রহিমা বেগম আত্মগোপনে থেকে নিজেই অপহরণের নাটক সাজিয়েছেন দাবি করে জবানবন্দি দিয়েছেন তার ছেলে মোহাম্মদ মিরাজ আল শাদী।
খুলনা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) পুলিশ সুপার সৈয়দ মুশফিকুর রহমান বলেন, সোমবার রহিমা বেগমের ছেলে কার্যালয়ে এসে স্বেচ্ছায় একটি জবানবন্দি দিতে চাইলেন। তিনি বলেন, তার মা যাদেরকে জড়িয়েছেন বা জমিজমা সংক্রান্ত যে বিরোধ মায়ের আত্মগোপনের পেছনে তাদের কোনো হাত নেই। তারা নির্দোষ। আমরা তখন তাকে বিজ্ঞ আদালতে পাঠিয়ে দেই। সংশ্লিষ্ট আদালতে তিনি জবানবন্দি দিয়েছেন।
আরও পড়ুন: খুলনার রহিমা খাতুনের খোঁজ ১৫ দিনেও মেলেনি
সৈয়দ মুশফিকুর রহমান বলেন, মিরাজ আমাদের জানিয়েছেন যে তার মা এর আগেও একাধিকবার আত্মগোপন করেছিলেন। পারিবারিক বিষয় নিয়ে তার বাবার সঙ্গে ঝগড়া করে। আর এবার জমিজমা সংক্রান্ত বিষয়ে বিরোধীদেরকে ফাঁসানোর জন্য।
মিরাজ বলেন, মায়ের আত্মগোপনের সংবাদ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আমি যখন মহেশ্বরপাশায় যেয়ে দেখি যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়েছে তারা সবাই নিজ বাসায় আছেন। পরে তাদেরকে নিয়ে আমি আমার মাকে খুঁজি। এর মানে তিনি স্বেচ্ছায় গেছেন। তার জবানবন্দি আইনানুযায়ী আদালতে রেকর্ড হয়েছে।
পিবিআই পুলিশ সুপার বলেন, চলতি মাসে মামলার প্রতিবেদন দাখিল করা হবে। কিছু প্রতিবেদনের অপেক্ষায় রয়েছি। যার মধ্যে নিখোঁজের আধাঘণ্টা আগে রহিমা বেগমের বিকাশে টাকা এসেছিল। এই টাকা কোথা থেকে এসেছিল আর কেনই এসেছিল, এসব বিষয় খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
এ বিষয়ে মিরাজ বলেন, আমার সঙ্গে মায়ের কোনো যোগাযোগ নেই। পিবিআই প্রতিবেদন দেয়ার পরই তার সঙ্গে সম্পর্কচ্ছেদ করার আইনি প্রক্রিয়ায় যাবো।
আরও পড়ুন: নিখোঁজ মাকে ফিরে পেতে ৬ সন্তানের আকুতি
রহিমা বেগমের মেয়ে মরিয়ম মান্নান বলেন, আমি ঢাকায় রয়েছি। ফের মা নিখোঁজের বিষয়ে কিছু জানি না। এ বিষয়ে আমার ভাই মিরাজ অথবা বোন আদুরীর সঙ্গে কথা বলতে পারেন।
উল্লেখ্য, গত ২৭ আগস্ট রাত আনুমানিক ১০টার দিকে খুলনা মহানগরীর মহেশ্বরপাশার উত্তর বণিকপাড়ার নিজ বাসা থেকে টিউবওয়েলে পানি আনতে গিয়ে নিখোঁজ হন রহিমা বেগম। এরপর আর ঘরে ফেরেননি তিনি। স্বামী ও ভাড়াটিয়ারা নলকূপের পাশে ঝোপঝাড়ে তার ব্যবহৃত ওড়না, স্যান্ডেল ও বালতি দেখতে পান। সেই রাতে মাকে খুঁজতে আত্মীয়-স্বজন, আশপাশসহ সম্ভাব্য সব জায়গায় খোঁজ করেন সন্তানরা।
রহিমার ছয় সন্তান কখনো আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, কখনো মাইকিং, কখনো আত্মীয়-স্বজনদের দ্বারস্থ হয়েছেন। সাংবাদিক সম্মেলন ও মানববন্ধনও করেছেন। পুলিশ জানায়, গত ২৭ আগস্ট নগরীর মহেশ্বরপাশা এলাকার বাড়ির সামনে থেকে রহিমা বেগম নিখোঁজ হন- এ অভিযোগ তুলে তার মেয়ে আদরী খাতুন বাদী হয়ে পরদিন দৌলতপুর থানায় অপহরণ মামলা দায়ের করেন।
আরও পড়ুন: খুলনায় ৫৫ বছর বয়সী এক নারী নিখোঁজ
পরে ২৪ সেপ্টেম্বর রাত পৌনে ১১টার দিকে ফরিদপুরের বোয়ালমারীর সৈয়দপুর গ্রামের কুদ্দুসের বাড়ি থেকে রহিমা বেগমকে উদ্ধার করা হয়। পুলিশের একটি টিম দিবাগত রাত ২টার দিকে তাকে নিয়ে দৌলতপুর থানায় পৌঁছায়। পরদিন বেলা ১১টার দিকে পুলিশ রহিমা বেগমকে পিবিআইয়ের কাছে হস্তান্তর করে। ২৫ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যা সোয়া ৭টার দিকে রহিমা বেগমকে (৫২) তার ছোট মেয়ে আদরী খাতুনের জিম্মায় দেন আদালত। রাতে খুলনা মহানগরীর বয়রা এলাকায় আদরীর বাসায় তাকে নিয়ে যাওয়া হয়। ওইদিন সন্ধ্যা ৬টার দিকে খুলনা চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-২ এর বিচারক আল আমিনের কাছে জবানবন্দি দেন রহিমা বেগম।
২ বছর আগে
রহিমা বেগম ‘অপহরণ’ মামলায় ৪ জনের জামিন
খুলনায় রহিমা বেগম ‘অপহরণ’ মামলায় ছয় আসামির মধ্যে চারজন জামিন পেয়েছেন। মঙ্গলবার খুলনা মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক মাহমুদা বেগম শুনানি শেষে তদের জামিন মঞ্জুর করেন।
মহানগর দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) কে এম ইকবাল হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
জামিনপ্রাপ্তরা হলেন- মোহাম্মদ মহিউদ্দিন, গোলাম কিবরিয়া, মো. জুয়েল ও রফিকুল ইসলাম পলাশ। তবে এ মামলার আরও দুই আসামি হেলাল শরীফ ও রহিমা বেগমের দ্বিতীয় স্বামী বেলাল ঘটক বর্তমানে কারাগারে আছেন।
উল্লেখ্য, ২৭ আগস্ট রাত সাড়ে ১০টার দিকে নগরীর দৌলতপুরের মহেশ্বরপাশার বাসা থেকে পানি আনতে বাড়ি থেকে নিচে নামেন রহিমা বেগম। এরপর আর বাসায় ফেরেননি তিনি। খোঁজ নিতে গিয়ে সন্তানরা মায়ের ব্যবহৃত জুতা, ওড়না ও কলস রাস্তার ওপর পড়ে থাকতে দেখেন। রাতে সম্ভাব্য সব স্থানে খোঁজ নিয়েও তার সন্ধান মেলেনি।
আরও পড়ুন: রহিমা বেগমের নিখোঁজ ঘটনা ‘অপহরণ’ নয়: পিবিআই
এরপর সাধারণ ডায়েরি ও পরে কয়েকজনের নাম উল্লেখ করে দৌলতপুর থানায় মামলা করেন তার ছোট মেয়ে আদুরি আক্তার।
এ মামলার তদন্তকালে পুলিশ ও র্যাব অভিযান চালিয়ে ১২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ছয়জনকে গ্রেপ্তার করে। সে মামলা থেকেই জামিন পেলেন চারজন।
নিখোঁজের ২৯ দিন পর ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার সদর ইউনিয়নের সৈয়দপুর থেকে রহিমা বেগমকে উদ্ধার করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
আরও পড়ুন: খুলনার রহিমাকে পিবিআইয়ে হস্তান্তর
পিবিআইকে যা বললেন রহিমা
২ বছর আগে
রহিমা বেগমের নিখোঁজ ঘটনা ‘অপহরণ’ নয়: পিবিআই
ফরিদপুরে জীবিত খোঁজ পাওয়া রহিমা বেগমের ‘নিখোঁজ’ ঘটনা ‘অপহরণ’ নয় বলে জানিয়েছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
বুধবার পিবিআই খুলনার পুলিশ সুপার (এসপি) সৈয়দ মুশফিকুর রহমান বলেন, ‘খুলনার দৌলতপুরের বাসা থেকে অপহরণের কোনো প্রমাণ আমরা পাইনি।’
তিনি বলেন, ‘আমরা এখনও মামলাটি তদন্ত করছি এবং রহিমা বেগম তার নিখোঁজের বিষয়ে মিথ্যা অভিযোগ করে থাকলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
এদিকে, মামলায় গ্রেপ্তারদের পরিবারের সদস্যরা দাবি করেছেন, রহিমা বেগমের মেয়ে মরিয়ম মান্নান রহস্যজনকভাবে এই নিখোঁজের পেছনের ‘মাস্টারমাইন্ড’। মরিয়মসহ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে সত্য উদঘাটন করা যাবে বলে জানান তারা।
আরও পড়ুন: খুলনার ‘নিখোঁজ’ রহিমা ১৭ সেপ্টেম্বর থেকে ফরিদপুরে ছিলেন: পুলিশ
২৯ দিন ধরে ‘নিখোঁজ’ থাকা রহিমা বেগমের জবানবন্দি ২৫ সেপ্টেম্বর আদালতে রেকর্ড করার পর তাকে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
বাদীর আইনজীবী আফরুজ্জামান টুটুল জানান, পরে তাকে খুলনার বয়রা এলাকায় তার ছোট মেয়ে আদুরী আক্তারের বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়।
রহিমা তার বিবৃতিতে ‘জমি বিরোধের জেরে অপহরণ’ হওয়ার বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য দিয়েছেন।
তিনি বলেন, তাকে অপহরণ করে চট্টগ্রামে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে তিনি নিজে ফরিদপুর যান।
আগের রাতে ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলা থেকে রহিমাকে উদ্ধার করে পুলিশ।
আরও পড়ুন: খুলনার ‘নিখোঁজ’ রহিমা বেগম ফরিদপুরে জীবিত উদ্ধার: পুলিশ
খুলনায় পিবিআই কার্যালয়ে তার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দেখা করার সময় রহিমা দাবি করেন, ‘আমার বাড়ির সামনে থেকে অজ্ঞাতপরিচয়ে কয়েকজন আমাকে অপহরণ করে নিয়ে যায়।’
এ সময় রহিমার বরাত দিয়ে মুশফিকুর রহমান জানান, ‘গোলাম কিবরিয়া ও মো. মহিউদ্দিন নামে দুই ব্যক্তি যাদের সাথে জমি নিয়ে রহিমার বিরোধ ছিল তারা জোরপূর্বক একটি খালি কাগজে তার স্বাক্ষর নিয়ে মাত্র এক হাজার টাকা দিয়ে তাকে দূরবর্তী স্থানে ফেলে রেখে যায়।’
আরও পড়ুন: ময়মনসিংহে খুলনার নিখোঁজ নারীর লাশ পাওয়ার বিষয়ে পরিবারের সন্দেহ প্রকাশ
২ বছর আগে
খুলনার রহিমাকে পিবিআইয়ে হস্তান্তর
ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার একটি বাড়ি থেকে উদ্ধার হওয়া খুলনার রহিমা বেগমকে আজ পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
দৌলতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নজরুল ইসলাম জানান, রহিমা গত ২৯ দিন ধরে ‘নিখোঁজ’ ছিল এবং আজ তাকে উদ্ধার করা হয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে, ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার কুদ্দুসের বাড়ি থেকে তাকে উদ্ধার করা হয়। তিনি ১৭ সেপ্টেম্বর থেকে সেখানে ছিলেন।
খুলনা মহানগর পুলিশের (উত্তর) উপকমিশনার মোল্লা জাহাঙ্গীর হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, পুলিশ বাড়িটিতে গেলে রহিমাকে দুই নারীর সঙ্গে কথা বলতে দেখা যায়। পুলিশ অফিসাররা প্রশ্ন করা শুরু করলে তিনি কথা বলা বন্ধ করেন।
খুলনা মহানগর পুলিশের (কেএমপি) কর্মকর্তা বলেন, যেহেতু মামলাটি পিবিআইতে স্থানান্তর করা হয়েছে, তারা এখন বিষয়টি দেখবে। রহিমার ‘নিখোঁজ’ হওয়ার এই পুরো ঘটনা ও তাকে খোঁজ করা সারাদেশজুড়ে আলোড়ন তৈরি করেছে।
তিনি বলেন, ‘আল্লাহর কাছে হাজার শুকরিয়া যে আমরা তাকে খুঁজে বের করতে পেরেছি। আমরা সবাই খুশি এবং স্বস্তি পেয়েছি। বাকিটা পিবিআই তদন্ত করবে। আমি আশাবাদী যে পিবিআই রহস্য উদঘাটন করতে সক্ষম হবে।’
ফরিদপুরের যে বাড়িতে রহিমাকে পাওয়া গেছে সেখান থেকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দুই নারীসহ তিনজনকে আটক করেছে পুলিশ।
আরও পড়ুন: খুলনার ‘নিখোঁজ’ রহিমা ১৭ সেপ্টেম্বর থেকে ফরিদপুরে ছিলেন: পুলিশ
এ প্রসঙ্গে রহিমার ছেলে সাদী বলেন, ‘যেহেতু আমার মা জীবিত উদ্ধার হয়েছে, সেহেতু তার মুখে নিখোঁজের বিষয়টি জানলে তিনি ভালো বলতে পারবেন।’
তিনি বলেন, ‘এ ঘটনায় যদি আমার পরিবারের কেউ জড়িত থাকে তবে প্রশাসন তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে।’
পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) বিষয়টি আরও তদন্ত করবে বলে জানিয়েছেন মোল্লা জাহাঙ্গীর।
উল্লেখ্য, দৌলতপুর মহেশ্বরপাশা বণিকপাড়ায় গত ২৭ আগস্ট রাত সাড়ে ১০টার দিকে পানি আনতে বাড়ি থেকে বের হন রহিমা খাতুন (৫৫)। দীর্ঘ সময় পার হলেও তিনি আর বাসায় ফেরেননি। পরে মায়ের খোঁজে বের হয়ে সন্তানরা মায়ের ব্যবহৃত স্যান্ডেল, গায়ের ওড়না ও কলস রাস্তার ওপর পড়ে থাকতে দেখেন। রাতে সম্ভাব্য সব জায়গায় খোঁজ নেয়ার পর তাকে না পাওয়া গেলে সাধারণ ডায়েরি এবং পরবর্তীতে কয়েকজনের নাম উল্লেখ করে দৌলতপুর থানায় মামলা দায়ের করেন তারা।
গত ২০ দিনেও রহিমার খোঁজ মেলেনি। এ অবস্থায় পরিবারের সদস্যদের আবেদনে মামলাটি পিবিআইয়ের যাচ্ছে। এ পর্যন্ত পুলিশ ও র্যাব যৌথ অভিযান চালিয়ে সন্দেহভাজন ছয় জনকে গ্রেপ্তার করলেও কোনো তথ্য উদঘাটন করা যায়নি।
আরও পড়ুন: খুলনার ‘নিখোঁজ’ রহিমা বেগম ফরিদপুরে জীবিত উদ্ধার: পুলিশ
দৌলতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নজরুল ইসলাম বলেন, মামলাটি তদন্তের জন্য পিবিআইয়ের কাছে হস্তান্তরের আদেশ হয়েছে। কিন্তু ১৫ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত নথি হস্তান্তর হয়নি। পিবিআই যেদিন চাইবে সেদিনই নথি হস্তান্তর করা হবে। এ জটিলতার কারণে এ মামলায় গৃহবধূর স্বামীর রিমান্ড আবেদনের শুনানি হয়নি। পিবিআই মামলাটি বুঝে নিয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ নেবে। এ পর্যন্ত ছয় জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তারা হলেন খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) প্রধান প্রকৌশল কার্যালয়ের সহকারী প্রকৌশলী মো. গোলাম কিবরিয়া, নিখোঁজ গৃহবধূর স্বামী হেলাল হাওলাদার, দৌলতপুর মহেশ্বরপশা বণিকপাড়া এলাকার মহিউদ্দিন, পলাশ, জুয়েল এবং হেলাল শরীফ।
নিখোঁজ রহিমা খাতুনের মেয়ে মরিয়ম মান্নান বলেন, ১২ সেপ্টেম্বর ১৭ দিন অতিবাহিত হলেও পুলিশ আমার মায়ের সন্ধান দিতে পারেনি। ফলে ১৩ সেপ্টেম্বর ১৮তম দিনে আমার ছোট বোন আদুরি আক্তার আদালতে মামলাটি পিবিআইতে হস্তান্তরের আবেদন করে। শুনানি শেষে ওই দিনই আদালত মামলা পিবিআইতে হস্তান্তরের আদেশ দেন।
আরও পড়ুন: ময়মনসিংহে খুলনার নিখোঁজ নারীর লাশ পাওয়ার বিষয়ে পরিবারের সন্দেহ প্রকাশ
২ বছর আগে
খুলনার ‘নিখোঁজ’ রহিমা ১৭ সেপ্টেম্বর থেকে ফরিদপুরে ছিলেন: পুলিশ
নিখোঁজের ২৯ দিন পর ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলা থেকে খুলনার রহিমা বেগমকে উদ্ধার করা হয়েছে। সেখানে তিনি ১৭ সেপ্টেম্বর থেকে ছিলেন। বিষয়টি জানিয়েছে পুলিশ।
রবিববার রাত আড়াইটার দিকে খুলনার দৌলতপুর থানায় এক সংবাদ সম্মেলনে খুলনা মহানগর পুলিশের (কেএমপি) উপ-কমিশনার (উত্তর) মোল্লা জাহাঙ্গীর হোসেন এ তথ্য জানান।
মোল্লা জাহাঙ্গীর বলেন, রহিমা তার আত্মগোপনের বিষয়ে পুলিশের কোনো প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছেন না এবং তাকে পুলিশ হেফাজতে নেয়ার পর থেকে তিনি ‘নির্বাক’ রয়েছেন।
গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে শনিবার রাতে কেএমপির একটি দল ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার সৈয়দপুর গ্রামের কুদ্দুস মোল্লার বাড়িতে অভিযান চালিয়ে রহিমাকে অক্ষত অবস্থায় পায়।
আরও পড়ুন: খুলনার ‘নিখোঁজ’ রহিমা বেগম ফরিদপুরে জীবিত উদ্ধার: পুলিশ
রাত ২টার দিকে রহিমা বেগমকে দৌলতপুর থানায় নিয়ে আসা হয়।
এছাড়া জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ওই বাড়ি থেকে দুই নারীসহ তিনজনকে আটক করেছে পুলিশ।
কুদ্দুসের স্বজনরা পুলিশকে জানান, ১৭ সেপ্টেম্বর থেকে রহিমা ওই বাড়িতেই ছিলেন।
এ প্রসঙ্গে রহিমার ছেলে সাদী বলেন, ‘যেহেতু আমার মা জীবিত উদ্ধার হয়েছে, সেহেতু তার মুখে নিখোঁজের বিষয়টি জানলে তিনি ভালো বলতে পারবেন।’
তিনি বলেন, ‘এ ঘটনায় যদি আমার পরিবারের কেউ জড়িত থাকে তবে প্রশাসন তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে।’
পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) বিষয়টি আরও তদন্ত করবে বলে জানিয়েছেন মোল্লা জাহাঙ্গীর।
আরও পড়ুন: ময়মনসিংহে খুলনার নিখোঁজ নারীর লাশ পাওয়ার বিষয়ে পরিবারের সন্দেহ প্রকাশ
উল্লেখ্য, দৌলতপুর মহেশ্বরপাশা বণিকপাড়ায় গত ২৭ আগস্ট রাত সাড়ে ১০টার দিকে পানি আনতে বাড়ি থেকে বের হন রহিমা খাতুন (৫৫)। দীর্ঘ সময় পার হলেও তিনি আর বাসায় ফেরেননি। পরে মায়ের খোঁজে বের হয়ে সন্তানরা মায়ের ব্যবহৃত স্যান্ডেল, গায়ের ওড়না ও কলস রাস্তার ওপর পড়ে থাকতে দেখেন। রাতে সম্ভাব্য সব জায়গায় খোঁজ নেয়ার পর তাকে না পাওয়া গেলে সাধারণ ডায়েরি এবং পরবর্তীতে কয়েকজনের নাম উল্লেখ করে দৌলতপুর থানায় মামলা দায়ের করেন তারা।
গত ২০ দিনেও রহিমার খোঁজ মেলেনি। এ অবস্থায় পরিবারের সদস্যদের আবেদনে মামলাটি পিবিআইয়ের যাচ্ছে। এ পর্যন্ত পুলিশ ও র্যাব যৌথ অভিযান চালিয়ে সন্দেহভাজন ছয় জনকে গ্রেপ্তার করলেও কোনো তথ্য উদঘাটন করা যায়নি।
আরও পড়ুন: খুলনায় রহিমা খাতুন নিখোঁজ মামলার তদন্তভার পিবিআইয়ের হাতে
দৌলতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নজরুল ইসলাম বলেন, মামলাটি তদন্তের জন্য পিবিআইয়ের কাছে হস্তান্তরের আদেশ হয়েছে। কিন্তু ১৫ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত নথি হস্তান্তর হয়নি। পিবিআই যেদিন চাইবে সেদিনই নথি হস্তান্তর করা হবে। এ জটিলতার কারণে এ মামলায় গৃহবধূর স্বামীর রিমান্ড আবেদনের শুনানি হয়নি। পিবিআই মামলাটি বুঝে নিয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ নেবে। এ পর্যন্ত ছয় জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তারা হলেন খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) প্রধান প্রকৌশল কার্যালয়ের সহকারী প্রকৌশলী মো. গোলাম কিবরিয়া, নিখোঁজ গৃহবধূর স্বামী হেলাল হাওলাদার, দৌলতপুর মহেশ্বরপশা বণিকপাড়া এলাকার মহিউদ্দিন, পলাশ, জুয়েল এবং হেলাল শরীফ।
নিখোঁজ রহিমা খাতুনের মেয়ে মরিয়ম মান্নান বলেন, ১২ সেপ্টেম্বর ১৭ দিন অতিবাহিত হলেও পুলিশ আমার মায়ের সন্ধান দিতে পারেনি। ফলে ১৩ সেপ্টেম্বর ১৮তম দিনে আমার ছোট বোন আদুরি আক্তার আদালতে মামলাটি পিবিআইতে হস্তান্তরের আবেদন করে। শুনানি শেষে ওই দিনই আদালত মামলা পিবিআইতে হস্তান্তরের আদেশ দেন।
আরও পড়ুন: খুলনায় রহিমা ১৮ দিন ধরে নিখোঁজ, স্বামীসহ গ্রেপ্তার ৬
২ বছর আগে