ডার্ট
মহাকাশযান গ্রহাণুর কক্ষপথ পরিবর্তন করতে সফল হয়েছে: নাসা
পৃথিবী থেকে লাখ লাখ মাইল দূরে অবস্থিত ছোট এক গ্রহাণুকে এর নিজ কক্ষপথ থেকে সরাতে সক্ষম হয়েছে মার্কিন মহাকাশ সংস্থার (নাসা) মহাকাশযান। শুধু সরিয়েই ক্ষান্ত হয়নি, ছোট ছোট টুকরায় ধ্বংসও করেছে। ‘সেভ দ্য ওয়ার্ল্ড’ বা পৃথিবীকে রক্ষার এই পরীক্ষামূলক অভিযান থেকে কী ফল পাওয়া গেছে তা মঙ্গলবার নাসা জানিয়েছে।
দুই সপ্তাহ আগে চালানো অভিযানটিতে মূলত দেখা হয়েছে যে ভবিষ্যতে পৃথিবীর দিকে গ্রহাণু বা মহাকাশীয় বস্তু ধেয়ে আসলে তা মোকাবিলায় কী করা যেতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ডিসিতে অবস্থিত মহাকাশ সংস্থার সদর দপ্তরে এক সংবাদ সম্মেলনে নাসার প্রশাসক বিল নেলসন বলেন, ‘এই অভিযানটি প্রমাণ করে যে মহাবিশ্ব পৃথিবীর দিকে যাই ছুঁড়ে দিক না কেন তা প্রতিহতে নাসা প্রস্তুত হচ্ছে।’
ডার্ট (ডাবল অ্যাস্টেরয়েড রিডাইরেকশন টেস্ট) মহাকাশযানটি ২৬ সেপ্টেম্বর ডিমরফোস নামের গ্রহাণুতে ধাক্কা খেলে সেখানে গর্ত তৈরি হয়। এতে ধুলা ও ধ্বংসস্তূপ ছড়িয়ে পড়ে, যা দেখতে অনেকটা ধূমকেতুর মতো। যার থেকে আলোর ঝলকানিও দেখা গেছে।
৫২৫ ফুটের গ্রহাণুতে কী প্রভাব পড়ল তা পর্যবেক্ষণ করতে চিলি ও দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে টেলিস্কোপের সাহায্যে বেশ সময় নিয়ে দেখতে হয়েছে নাসাকে।
ঘটনাটির আগে ছোট এই গ্রহাণু এর প্রধান গ্রহাণুকে প্রদক্ষিণ করতে ১১ ঘণ্টা ৫৫ মিনিট সময় নিয়েছিল। বিজ্ঞানীরা চেয়েছিলেন গ্রহাণুটির প্রদক্ষিণ সময় ১০ মিনিট কমিয়ে আনতে, কিন্তু নেলসন বলছেন গ্রহাণুটির কক্ষপথ প্রায় ৩২ মিনিট কমে গেছে।
আরও পড়ুন: পৃথিবীকে রক্ষা: স্পেস টেলিস্কোপে ডার্টের কর্মযজ্ঞের ঝকঝকে ছবি
নাসার গ্রহ বিজ্ঞানের পরিচালক লরি গ্লেজ বলেন, ‘আমরা পুরা বিষয়টি হজম করতে কিছুটা সময় নেই… কারণ এই প্রথমবারের মতো মানুষ কোনো গ্রহাণুর কক্ষপথে পরিবর্তন আনতে পেরেছে।’
অলাভজনক বি৬১২ ফাউন্ডেশনের একজন সহপ্রতিষ্ঠাতা, গ্রহাণুর আঘাত থেকে পৃথিবীকে রক্ষা করার জন্য নিবেদিত অ্যাপোলো মহাকাশচারী রাস্টি শোয়েইকার্ট বলেন যে তিনি স্পষ্টতই আনন্দিত। ফলাফল ও মিশনটির মাধ্যমে যে এই ক্ষেত্রে মনোযোগ এনেছে তা নিয়ে তার কোনো প্রশ্ন নেই।
আরও পড়ুন: পৃথিবীর সুরক্ষায় নাসার মহাকাশযান ধ্বংস করেছে গ্রহাণু!
জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের ফলিত পদার্থবিদ্যা গবেষণাগারের অধ্যাপক ও এই অভিযানের নেতৃত্বদানকারী ন্যান্সি চ্যাবট বলেন, এধরনের কৌশল প্রয়োগের জন্য আমাদের অবশ্যই উপযুক্ত সময় আসতে হবে যাতে তা কার্যকর হয়।
বলে রাখা ভালো, বিজ্ঞানীরা অদূর ভবিষ্যতে পৃথিবীর দিকে কোনো মহাকাশীয় বস্তুর আঘাত হানার সম্ভাবনা দেখছে না।
মহাকাশযান তৈরি ও অভিযান পরিচালনায় ৩২ কোটি ৫০ লাখ মার্কিন ডলার খরচ হয়েছে।
আরও পড়ুন: নাসার পরীক্ষামূলক চন্দ্রাভিযান: দ্বিতীয় প্রচেষ্টাও ব্যর্থ, পরবর্তী চেষ্টা কয়েক সপ্তাহ পর
২ বছর আগে
পৃথিবীকে রক্ষা: স্পেস টেলিস্কোপে ডার্টের কর্মযজ্ঞের ঝকঝকে ছবি
পৃথিবীর সুরক্ষায় গত সপ্তাহে প্রথমবারের মতো পরীক্ষামূলক গ্রহাণু ধ্বংস করেছে মার্কিন মহাকাশ সংস্থার (নাসা) ডার্ট। গ্রহাণু, ধূমকেতুসহ যেকোনো মহাকাশীয় বস্তু থেকে পৃথিবীকে রক্ষার এই কর্মযজ্ঞের ঝকঝকে ছবি দেখছে বিশ্ববাসী।
বৃহস্পতিবার হাবল ও ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপে তোলা রুদ্ধশ্বাস সে ঘটনার ছবি প্রকাশ করেছে নাসা।
পৃথিবী থেকে ৭০ লাখ মাইল দূরে অবস্থিত ডিমরফোস নামের গ্রহাণুকে সোমবার ধ্বংস করেছে নাসার মহাকাশযান ডার্ট (ডাবল অ্যাস্টেরয়েড রিডাইরেকশন টেস্ট)। সাত মহাদেশের টেলিস্কোপ অভিযানটির ওপর চোখ রেখেছিল।
এই ঘটনায় সুনির্দিষ্ট কী পরিবর্তন ঘটেছে তা বিজ্ঞানীরা নভেম্বরের আগে জানতে পারবেন না। তবে এখন তাদের হাতে যা আছে তাতেই ভবিষ্যতে পৃথিবীর দিকে ধেয়ে আসা মহাকাশীয় বস্তু থেকে নিরাপদে থাকার ক্ষেত্রে আত্মবিশ্বাস প্রকাশ করেছেন বিজ্ঞানীরা।
আরও পড়ুন: পৃথিবীর সুরক্ষায় নাসার মহাকাশযান ধ্বংস করেছে গ্রহাণু!
জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রহবিষয়ক জ্যোতির্বিজ্ঞানী ও মিশনটির নেতা অ্যান্ডি রিভকিন এক বিবৃতিতে বলেন, ‘এ এক নজিরবিহীন ঘটনার অভূতপূর্ব দৃশ্য।’
স্থিরচিত্রগুলো ডিমরফোসের মতো ছোট ছোট গ্রহ সম্পর্কে সাহায্য করবে বিজ্ঞানীদের। ডিমরফোসে নাসার মহাকাশযান আঘাত হানার পর এর ক্ষুদ্র অংশ যে চারিদিকে ছড়িয়ে যায় তা স্থিরচিত্রে আলোর রেখা আকারে দেখা যায়।
এ সক্রান্ত একটি ভিডিও প্রকাশ করেছে নাসা।
আরও পড়ুন: নাসার পরীক্ষামূলক চন্দ্রাভিযান: শনিবার উৎক্ষেপণের দ্বিতীয় চেষ্টা
মহাকাশের প্রথম রঙিন ছবি প্রকাশ করেছে নাসা
২ বছর আগে