সৎ ভাগ্নি
চুরি দেখে ফেলায় সৎ ভাগ্নি ও তার দুই শিশুপুত্রকে হত্যা করে আইয়ুব আলী!
টাকা চুরি করা দেখে ফেলায় সৎ ভাগ্নি রওশন আরা ও তার দুই শিশুপুত্রকে হত্যা করেছে সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ার তাঁত শ্রমিক আইয়ুব আলী।
গ্রেপ্তারের পর পুলিশের কাছে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে তিনি এ কথা জানিয়েছে।
সোমবার দুপুরে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান সিরাজগঞ্জের পুলিশ সুপার মো. আরিফুর রহমান মন্ডল।
গ্রেপ্তার আইয়ুব আলী সাগর উল্লাপাড়া উপজেলার নন্দিগাঁতী গ্রামের মৃত মোকছেদ মোল্লার ছেলে। এছাড়া তিনি নিহত রওশন আরার সৎ মামা।
পুলিশ সুপার মো. আরিফুর রহমান মন্ডল বলেন, শনিবার (১ অক্টোবর) বিকালে বেলকুচি উপজেলার মবুপুর পশ্চিমপাড়া গ্রামের নিজ ঘর থেকে রওশন আরা (২৯), তার দুই ছেলে জিহাদ (১০) ও মাহিন (৩) এর লাশ উদ্ধার করা হয়।
আরও পড়ুন: জমি নিয়ে বিরোধে পল্লী চিকিৎসক খুন!
এ ঘটনায় নিহত রওশন আরার ভাই নুরুজ্জামান জামান বাদী হয়ে বেলকুচি থানায় মামলা দায়ের করেন।
এ হত্যার রহস্য উদঘাটনে পুলিশের একটি চৌকস টিম গঠন করা হয়।
রবিবার (২ অক্টোবর) দিবাগত রাত সোয়া ১২টার দিকে নিজ বাড়ির সামনে থেকে আসামি আইয়ুব আলী ওরফে সাগরকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তারের পর তাঁত শ্রমিক আইয়ুব আলী সাগরকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে তিনি জানান, তাঁতের পেশার আয় দিয়ে সংসার না চলায় দেড় বছরের মধ্যে চারটি এনজিও থেকে এক লাখ ২০ হাজার টাকা ক্ষুদ্র ঋণ নেয় আইয়ুব আলী। সংসার চালানোর পাশাপাশি ঋণের কিস্তি পরিশোধ করতে ব্যর্থ হয়ে হতাশাগ্রস্ত হয়ে গত ২৬ সেপ্টেম্বর তার সৎ ভাগ্নি রওশন আরার কাছে টাকা ধার চান।
কিন্তু রওশন আরা তার কাছে টাকা নেই বলে জানিয়ে দেয়।
আসামি আইয়ুব আলী রওশন আরার ঘরে থাকা চারটি ট্রাঙ্ক দেখে এর ভেতরে টাকা আছে ধারণা করে সে চুরির সিদ্ধান্ত নেয়।
২৮ সেপ্টেম্বর সে আবারও রওশন আরার বাড়িতে যায় এবং রাতে তাদের বাড়িতে থেকে যায়। রাতে সবাই একসঙ্গে খাবার খেয়ে ঘুমিয়ে পড়ার পর আইয়ুব আলী চাবি নিয়ে ট্রাঙ্ক খুলে খোঁজাখুঁজি করতে থাকে।
একপর্যায়ে রওশন আরা ঘুমের মধ্যে নড়চড়া করা দেখে তার চুরি দেখে ফেলেছে ভেবে আইয়ুব আলী পাটার শিল দিয়ে প্রথমে ভাগ্নি রওশন আরার বুকে আঘাত করে ও পরে গলাটিপে হত্যা করে।
এরপর ছোট শিশু মাহিন জেগে উঠলে তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে এবং সবশেষে অপর শিশু জিহাদ ঘুম থেকে জেগে উঠলে তাকেও শ্বাসরোধ করে হত্যা করে আইয়ুব আলী।
মা ও দুই সন্তানকে হত্যার পর ঘরের চারটি ট্রাঙ্ক খুলে টাকা খুঁজতে থাকে এবং কোনো প্রকার টাকা-পয়সা না পেয়ে ভোরের আজান হলে ঘরের বাইরে দরজায় শিকল দিয়ে পালিয়ে যায় সে।
তবে নিহত রওশন আরার স্বামী দ্বিতীয় বিয়ে করে অন্যত্র বাস করায় দুই শিশু সন্তানদের নিয়ে রওশন আরা মবুপুর পশ্চিমপাড়া গ্রামের মাঠের মধ্যে ফাঁকা জায়গায় ঘর নির্মাণ করে বসবাস করতো।
আরও পড়ুন: বসতঘরে মিললো যুবকের ঝুলন্ত লাশ
খুলনায় কলেজছাত্রের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার
২ বছর আগে