বিজিবি
সীমান্তে বাংলাদেশি হত্যা কমার কোনো লক্ষণ নেই
বাংলাদেশের সঙ্গে প্রতিবেশী ভারতের স্থল সীমান্ত সবচেয়ে বেশি। কিন্তু প্রায় সময়েই নানা কারণে বাংলাদেশিদের বিরুদ্ধে সহিংসতার ঘটনা ঘটছে। যার কারণে মানবাধিকার লঙ্ঘনসহ নানা প্রশ্নও উঠছে। সীমান্তে অব্যাহত ভয়াবহ সহিংসতায় বাংলাদেশি নাগরিকদের প্রাণহানির সংখ্যা ক্রমেই দীর্ঘ হচ্ছে।
গত দুই বছরে হতাহতের সাম্প্রতিক পর্যালোচনায় সীমান্ত এলাকায় চলমান উত্তেজনা ও চ্যালেঞ্জের বিষয়টি উঠে এসেছে। বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) সদর দপ্তরের ২০২৩ সালের একটি পরিসংখ্যানে দেখা যায় ওই বছর সীমান্তে পৃথক ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন ২৫ জন বাংলাদেশি।
এর মধ্যে ১৯ জন ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) গুলিতে এবং বাকি ছয়জন ভারতীয় বেসামরিক নাগরিকের গুলিতে নিহত হয়েছেন।
এই ঘটনাগুলো বিএসএফ সদস্যদের প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহার এবং স্থানীয় ভারতীয় বাসিন্দাদের জড়িত বিক্ষিপ্ত সহিংসতা নিয়ে ক্রমবর্ধমান উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে।
সীমান্ত হত্যা বন্ধে অর্থাৎ শূন্যে নামিয়ে আনার জন্য বিএসএফের মহাপরিচালকের কাছ থেকে বছরের পর বছর ধরে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। তা সত্ত্বেও, প্রাণঘাতি অস্ত্রের ব্যবহার অব্যাহত রেখেছে বিএসএফ, যার ফলে বাংলাদেশি নাগরিকদের প্রাণহানি ঘটছে।
২০২৪ সালে এই প্রবণতা কমার কোনো লক্ষণ দেখা যায়নি। বিজিবি সদর দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, গেল বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে বিএসএফের হাতে আরও ১৯ জন বাংলাদেশি নিহত হয়েছেন। আর এসব নিহত আগের বছরের একই ধরনের সহিংসতার ধারাবাহিকতা।
এ ছাড়া বছরটিতে ভারতীয় বেসামরিক নাগরিকদের হাতে আরও পাঁচজনের মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। এসব হতাহতের কারণে উভয় সরকারের ক্ষোভ ও জবাবদিহিতার দাবিকে আরও বাড়িয়েছে।
তবে আশ্চর্যের বিষয় হলো দেশ দুটির সরকার পর্যায় ও বাহিনী পর্যার্য়ে ধারাবাহিক আলোচনা চললেও ২০২৫ সালেও হত্যাকাণ্ড বন্ধ হয়নি। প্রথম দুই মাসে, ১ জানুয়ারি থেকে ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত, আরও তিনজন বাংলাদেশি নাগরিক নিহত হয়েছেন। আরও এসব নিহতদের মধ্যে– একজন বিএসএফ সদস্যদের হাতে এবং দুজন ভারতীয় নাগরিকের হাতে প্রাণ হারান।
সর্বশেষ এই প্রাণহানিগুলো অর্থনৈতিক সুযোগ, অভিবাসন বা বাণিজ্যের সন্ধানে সীমান্ত অতিক্রমকারী ব্যক্তিদের চলমান ঝুঁকির কথা তুলে ধরে।
আরও পড়ুন: দহগ্রাম সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণের চেষ্টা, বিজিবির বাধা
বাংলাদেশ-ভারত সীমান্ত দীর্ঘদিন ধরে মানবাধিকার উদ্বেগের জন্য একটি কেন্দ্রবিন্দু হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই অঞ্চলে বসবাসকারীদের জীবনকে প্রভাবিত করছে ঘন ঘন সহিংসতা। এসব অঞ্চলে অবৈধ সীমান্ত অতিক্রম এবং আঞ্চলিক বিরোধের খবরও পাওয়া যাচ্ছে প্রায়ই।
মানবাধিকার সংস্থাগুলো উভয় দেশকে উত্তেজনা কমাতে, সীমান্ত সুরক্ষা প্রোটোকল জোরদার করা এবং সহিংসতার জন্য দায়ীদের জবাবদিহির আওতায় আনা নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছে।
তবে বিস্ময়ের ব্যাপপার হলো সাম্প্রতিক প্রাণহানির বিষয়ে এখন পর্যন্ত ভারতীয় কর্তৃপক্ষ কোনো আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেয়নি। তবে এর আগের ঘটনাগুলোর ব্যাপক নিন্দা জানিয়েছে বাংলাদেশ। সীমান্তে চলমান সংকটের শান্তিপূর্ণ সমাধানের জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে হস্তক্ষেপ ও চাপ দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে আন্তর্জাতিক অ্যাডভোকেসি গ্রুপগুলো।
নিহতদের পরিবারের জন্য, সহিংসতা একটি স্থায়ী দুঃখের কারণ এবং যার কোনো সমাধান নেই। মৃতের সংখ্যা বাড়তে থাকায় পরিস্থিতি মোকাবিলা এবং আরও নিরাপদ ও মানবিক সীমান্ত নীতির বাস্তবায়নে কাজ করার জন্য বাংলাদেশ ও ভারত উভয়ের ওপরই চাপ বাড়ছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিজিবি সদর দপ্তরের পরিচালক (অপারেশন) লেফটেন্যান্ট কর্নেল এস এম শফিকুর রহমান বলেন, গত ১০ বছরে ২২০ জন বাংলাদেশি নাগরিককে হত্যা করেছে ভারতের বিএসএফ। এছাড়া একই সময়ে ভারতীয় নাগরিকদের হাতে নিহত হয়েছেন আরও ৫৭ জন বাংলাদেশি।
লেফটেন্যান্ট কর্নেল রহমান জোর দিয়ে বলেন, বিজিবি সদস্যরা আন্তর্জাতিক আইন ও মানবাধিকার নীতমালা কঠোরভাবে মেনে কাজ করে। ‘যদি কোনো ভারতীয় নাগরিক অবৈধভাবে বাংলাদেশে প্রবেশ করে, তাহলে আমরা তাদের আটক করে ভারতীয় কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করি অথবা আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য স্থানীয় থানায় হস্তান্তর করি। আমরা কখনও গুলি চালাই না, যে কারণে আমাদের সীমান্তে বিজিবির হাতে কোনো ভারতীয় নাগরিকের হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা যখনই বিএসএফের সঙ্গে বৈঠক করি, কমান্ডার স্তরে হোক বা অন্য কোনো স্তরে, আমরা বারবার তাদের অনুরোধ করি যে, যদি কোনো বাংলাদেশি অবৈধভাবে সীমান্ত অতিক্রম করে তাহলে তাদেরদের উপর গুলি না চালাতে। বরং তাদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা উচিত।’
সীমান্তে বিএসএফের প্রাণঘাতী শক্তি প্রয়োগের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনগুলোকে কঠোর অবস্থান নেওয়ারও আহ্বান জানান তিনি।
বিজিবির নজরদারির পরও বাংলাদেশি নাগরিকরা কীভাবে সীমান্ত অতিক্রম করছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'সীমান্তে ৯৯ শতাংশ ঘটনা চোরাচালান সংক্রান্ত। সীমান্তের দুই পাশেই রয়েছে চোরাচালান সিন্ডিকেট। যারা চোরাচালানের উদ্দেশ্যে বাংলাদেশ থেকে সীমান্ত অতিক্রম করে তারা প্রায়ই ভারতীয় অংশের সিন্ডিকেট সদস্যদের সঙ্গে বিবাদে জড়িয়ে পড়ে। এরপর যখন তারা ফিরে আসতে থাকে তখন তারা বিএসএফের প্রতিরোধের মুখোমুখি হয়। এসময় সহিংস সংঘর্ষ হয় যেখানে বিএসএফ সদস্যরা বেশিরভাগ প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহার করে থাকে।’
তিনি বলেন, ‘অন্যদিকে ভারতীয় নাগরিকরা অবৈধভাবে বাংলাদেশে প্রবেশ করলে আমরা মানবাধিকার আইন মেনে চলি। গুলি চালানোর পরিবর্তে আমরা তাদের আটক করে যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করি।’
শফিকুর রহমান আরও উল্লেখ করেন, সীমান্ত ফাঁড়িগুলোর (বিওপি) মধ্যে দূরত্ব অনেক বেশি। প্রতিটি বিওপি ২০ থেকে ৩৫ জন সদস্য নিয়ে পরিচালিত হয়। তিনি বলেন, 'সারা দেশে বিজিবির প্রায় ৭০০টি দল রয়েছে। যারা সবসময় সীমান্তে টহল দিয়ে থাকে। তবে তা যথেষ্ট নয়। ফলে বিজিবির প্রতিরোধের শতচেষ্টা সত্ত্বেও কিছু বাংলাদেশি নাগরিক অজান্তেই সীমান্ত অতিক্রম করে।’
আরও পড়ুন: সীমান্তের কাছে আইএসআই জড়ো হওয়ার খবর খাঁটি কল্পকাহিনী: প্রেস উইং
ভারতে অবৈধভাবে সীমান্ত অতিক্রম রোধে গৃহীত ব্যবস্থা সম্পর্কে তিনি বলেন, বিজিবি সীমান্ত অতিক্রম নিরুৎসাহিত করতে এবং এর ঝুঁকি সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে বিভিন্নভাবে সীমান্ত এলাকার জনগোষ্ঠীর সঙ্গে যোগাযোগ করছে।
কূটনৈতিক প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকয় সীমান্ত সম্পর্কিত হতাহত রোধের বিষয়টি অগ্রাধিকারে রয়েছে। উভয় দেশকে মানবাধিকার সমুন্নত রাখতে এবং সীমান্তে বেসামরিক নাগরিকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করার জন্য ক্রমবর্ধমান চাপের মুখোমুখি হতে হচ্ছে।
২৬ দিন আগে
দহগ্রাম সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণের চেষ্টা, বিজিবির বাধা
আবারও লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার দহগ্রাম সীমান্তের শূন্য রেখায় কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণ ও লোহার খুঁটি বসানোর চেষ্টা করেছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)।
খবর পেয়ে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে তাদের বাধা দিলে কাজ বন্ধ রাখা হয়। এ নিয়ে ওই সীমান্ত এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে।
সোমবার (১৭ মার্চ) সকালে ভারত–বাংলাদেশ সীমান্তের দহগ্রাম সর্দারপাড়া সীমান্তের শূন্য রেখায় ভারতের পশ্চিমবঙ্গ ৬-বিএসএফ ব্যাটালিয়নের অরুণ ক্যাম্পের সদস্যরা কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণ ও লোহার খুঁটি বসানোর চেষ্টা করে।
৩০ দিন আগে
পঞ্চগড়ে ভারতীয় নাগরিক গ্রেপ্তার
পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া থেকে সতীশ রায় নামে এক ভারতীয় নাগরিককে আটক করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।
শনিবার (৮ মার্চ) রাতে উপজেলার মাঝিপাড়া টয়াগছ এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তারের পর তেঁতুলিয়া মডেল থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
গ্রেপ্তার সতীশ রায় ভারতের জলপাইগুঁড়ি জেলার ময়নাগুঁড়ি থানার দক্ষিণ ডাঙ্গাপাড়া এলাকার বাসিন্দা।
পঞ্চগড় ১৮ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মনিরুল ইসলাম এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ভারতীয় নাগরিক আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
আরও পড়ুন: ঠাকুরগাঁওয়ে পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে শিক্ষক গ্রেপ্তার
বিজ্ঞপ্তিতে জানা গেছে, সতিশ রায় ১৫ থেকে ২০ দিন আগে ভারত থেকে অবৈধ পথে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে প্রবেশ করে তেঁতুলিয়া উপজেলার মাঝিপাড়া টয়াগছ এলাকার রমজান আলীর বাড়িতে থেকে দিনমজুরের কাজ করছিলেন।
শনিবার গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বিজিবির মাঝিপাড়া বিওপির সদস্যরা তাকে গ্রেপ্তার করে। রাতেই তাকে তেঁতুলিয়া মডেল থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেন। অবৈধ অনুপ্রবেশের দায়ে তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
৩৯ দিন আগে
বাস থামিয়ে তল্লাশি, দুই যুবকের শরীরে মিলল ১৮টি স্বর্ণের বার
চুয়াডাঙ্গায় বাস থামিয়ে তল্লাশি করে দুই যুবকের শরীর থেকে মোট ১৮টি স্বর্ণের বার জব্দ করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।
মঙ্গলবার (৪ মার্চ) দুপুর ১টার দিকে চুয়াডাঙ্গা-ঝিনাইদহ মহাসড়কের সরজগঞ্জ বাজার এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয় বলে জানান চুয়াডাঙ্গা ৬ বিজিবির অধিনায়ক কর্নেল মো. নাজমুল হাসান।
আরও পড়ুন: ওসমানী বিমানবন্দরে ৮টি স্বর্ণের বার জব্দ
তিনি বলেন, ‘গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা পূর্বাশা পরিবহনের একটি বাস থামিয়ে দুই সন্দেহভাজন ব্যক্তিকে আটক করে। এ সময় তাদের দেহ তল্লাশি করে অভিনব কায়দায় লুকানো অবস্থায় ১৮টি স্বর্ণের বার, ২টি মোবাইল ফোন এবং নগদ ১০,১৯০ টাকা উদ্ধার করা হয়।’
৪৩ দিন আগে
আরাকান আর্মির হাতে আটক ২৯ জেলেকে ফিরিয়ে এনেছে বিজিবি
টেকনাফের নাফ নদ থেকে মিয়ানমারের বিচ্ছিন্নতাবাদী সশস্ত্র সংগঠন আরাকান আর্মির আটক করা ২৯ জন বাংলাদেশি জেলেকে ফেরত এনেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।
বৃহস্পতিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপের জেটি ঘাট দিয়ে বিকাল ৫টার দিকে বাংলাদেশি এসব জেলেকে ফেরত আনা হয়। গত ১১ ও ২০ ফেব্রুয়ারি ভুলবশত বাংলাদেশের জলসীমা অতিক্রম করা ৬টি ইঞ্জিনচালিত বোটে ছিলেন ওই ২৯ জন।
টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ এহসান উদ্দিন বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘ফিরিয়ে আনা ২৯ জেলের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হচ্ছে। সব প্রক্রিয়া শেষে তাদের পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।’
৪৮ দিন আগে
নিজেদের মধ্যে মারামারি করলে দেশের স্বাধীনতা বিপন্ন হবে: সেনাপ্রধান
নিজেদের মধ্যে মারামারি-কাটাকাটি না করে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান। যদি কাদা ছোঁড়াছুঁড়ি বন্ধ করা না হয়; তাহলে দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব বিপন্ন হবে বলেও হুঁশিয়ারি করে দেন তিনি।
২০০৯ সালে তৎকালীন বিডিআর (বর্তমান বিজিবি) সদর দপ্তর পিলখানায় সংঘটিত নির্মম হত্যাকাণ্ডে শাহাদাতবরণকারী সেনা কর্মকর্তাদের স্মরণে মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) সকালে এক অনুষ্ঠানে সেনাপ্রধান এ আহ্বান জানান। রাজধানীর মহাখালীর রাওয়া ক্লাবের হেলমেট হলে এ অনুষ্ঠান হয়।
তিনি বলেন, ‘দেশ-জাতি যাতে একসাথে থাকতে পারি, সেদিকে আমাদের কাজ করতে হবে। আমাদের মতের বিরোধ থাকতে পারে, চিন্তা-চেতনার বিরোধ থাকতে পারে, কিন্তু দিনশেষে যাতে আমরা সবাই দেশ-জাতির দিকে খেয়াল করে এক থাকতে পারি; তাহলে এ দেশ উন্নত হবে—সঠিক পথে পরিচালিত হবে। না-হলে আমরা আরও সমস্যার মধ্যে পড়ে যাবে। আমরা সেদিকে যেতে চাই না।’
‘আমি আপনাদের সতর্ক করে দিচ্ছি, বলবেন যে আমি সতর্ক করিনি—আপনারা যদি নিজেদের মধ্যে ভেদাভেদ ভুলে একসাথে কাজ করতে না পারেন, নিজেরা যদি কাদা ছোঁড়াছুঁড়ি করেন, মারামারি-কাটাকাটি করেন; এ দেশ ও জাতির স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব বিপন্ন হবে,’ বলেন সেনাপ্রধান।
আরও পড়ুন: শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষায় সেনাবাহিনীকে ধৈর্যের সঙ্গে কাজ করতে হবে: সেনাপ্রধান
তিনি বলেন, ‘আমার অন্য কোনো আকাঙ্ক্ষা নেই, একটিই আকাঙ্ক্ষা দেশ ও জাতিকে একটি সুন্দর জায়গায় রাখা। আই হ্যাড ইনাফ। লাস্ট সেভেন-এইট মান্থ, আই হ্যাড এনাফ। আমি চাই, দেশ ও জাতিকে একটি সুন্দর জায়গায় রেখে আমরা সেনানিবাসে ফেরত আসবো।’
‘আরেকটি জরুরি বিষয়, দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি খারাপ হওয়ার নেপথ্যে কিছু কারণ আছে। তার মধ্যে একটি হচ্ছে—আমরা নিজেরা হানাহানির মধ্যে ব্যস্ত। একজন-আরেকজনের বিরুদ্ধে বিষোদগারে ব্যস্ত। এটা একটা চমৎকার সুযোগ অপরাধীদের জন্য। যেহেতু আমরা একটি অরাজক পরিস্থিতির মধ্যে বিরাজ করছি, সেহেতু তারা ভালোভাবেই জানেন যে এই সময় এসব অপরাধ করা গেলে এখান থেকে পরিত্রাণ পাওয়া সম্ভব। সে কারণে এই অপরাধগুলো হচ্ছে।’
ওয়াকার-উজ-জামান আরও বলেন, ‘আমরা যদি সংগঠিত থাকি, একত্রিত থাকি, তাহলে অবশ্যই এটা সম্মিলিতভাবে মোকাবিলা করা সম্ভব হবে। পুলিশ, র্যাব, বিজিবি, ডিজিএফআই, এনএসআই—এগুলো দেশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কাজ অতীতে করেছে। খারাপ কাজের সঙ্গে অসংখ্য ভালো কাজ করেছে। আজ দেশের যে স্থিতিশীলতা, দেশকে যে এতগুলো বছর স্থিতিশীল রাখা হয়েছে, এটার কারণ হচ্ছে এই সশস্ত্র বাহিনীর বহু সেনা সদস্য, সিভিলিয়ান—সবাই বিলে এই সংস্থাগুলোকে কার্যকর রেখেছে।’
আরও পড়ুন: সেনাসদস্যদের দেশপ্রেমকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে হবে: সেনাপ্রধান
‘সে জন্য এতদিন ধরে আমরা একটি সুন্দর পরিবেশ পেয়েছি। এরমধ্যে যারা কাজ করেছেন, যারা অপরাধ করেছেন, তাদের অবশ্যই শাস্তি হতে হবে। না-হলে এই জিনিস আবার ঘটবে। আমরা সেটাকে বন্ধ করতে চাই চিরতরে। কিন্তু তার আগে মনে রাখতে হবে, আমরা এমনভাবে কাজটা করবো, যাতে এসব সংস্থা ক্ষতিগ্রস্ত না হয়। আজকে পুলিশ সদস্য কাজ করছে না। তার একটি বড় কারণ হচ্ছে, তাদের অনেকের বিরুদ্ধে মামলা, অনেকে জেলে।’
সেনাপ্রধান বলেন, ‘দোষীদের বিচারের আওতায় আনতে হবে, তবে কাজটি এমনভাবে করতে হবে, যাতে এসব সংস্থা ক্ষতিগ্রস্ত না-হয়। এসব সংস্থাকে ক্ষতিগ্রস্ত করে যদি মনে করেন দেশে শান্তি-শৃঙ্খলা বিরাজ করবে, সবাই শান্তিতে থাকবেন, সেটা হবে না। সেটা সম্ভব না। আমি পরিষ্কার করে বলে দিচ্ছি।’
‘এই দেশের শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্ব কেবল সেনাবাহিনীর না, দুই লাখ পুলিশ আছে, বিজিবি আছে, র্যাব আছে, আনসার-ভিডিপি আছে। আমার আছে ত্রিশ হাজার সেনা। কিন্তু এই একটা ভয়েড (শূন্যতা), সেটা এই ত্রিশ হাজার সেনা দিয়ে কীভাবে পূরণ করবো? ত্রিশ হাজার আসে, আবার ত্রিশ হাজার ক্যান্টনমেন্টে চলে যায়, এটা দিয়ে দিন-রাত আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি, এখানে যেসব উচ্ছৃঙ্খল কাজ হয়েছে, সেটা আমাদের নিজস্ব তৈরি। বিপরীতমুখী কাজ করলে দেশে কখনো শান্তি-শৃঙ্খলা আসবে না, এটা মনে রাখতে হবে।’
ওয়াকার-উজ-জামান বলেন, ‘আমরা দেশে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের দিকে যাচ্ছি। তার আগে যেসব সংস্কার করা প্রয়োজন, অবশ্যই সরকার সেদিকে খেয়াল করবেন। যতবার ড. ইউনূসের সাথে কথা বলেছি, ততবার তিনি আমার সাথে একমত হয়েছেন যে একটি অবাধ-সুষ্ঠু নির্বাচন হওয়া দরকার এবং সেই নির্বাচন ডিসেম্বরের মধ্যে হতে হবে। যেটা আমি প্রথমেই বলেছিলাম আঠারো মাসের মধ্যে একটি নির্বাচন। আমার মনে হচ্ছেওয়াকার-উজ-জামানসরকার সেদিকে ধাবিত হচ্ছে। ড. ইউনূস যথাসাধ্য চেষ্টা করে যাচ্ছেন দেশটিকে ঐক্যবদ্ধ রাখতে। তাকে আমাদের সাহায্য করতে হবে।’
৫০ দিন আগে
সীমান্তে আরও বেশি বিজিবি মোতায়েনের পরামর্শ ডিসিদের
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, ‘সীমান্ত এলাকায় আরও বেশি হারে বিজিবি মোতায়েনের পরামর্শ দিয়েছেন জেলা প্রশাসকেরা (ডিসি)। এছাড়া নৌপথের নিরাপত্তা বাড়াতেও প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।’
মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে জেলা প্রশাসক সম্মেলনের তৃতীয় দিনে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং কৃষি মন্ত্রণালয়ের কার্য-অধিবেশনে প্রধান অতিথি হিসাবে অংশগ্রহণ শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে এসব কথা বলেন তিনি।
উপদেষ্টা বলেন, ‘আমাদের কার্য অধিবেশনে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি ও কৃষির উন্নয়ন নিয়ে মূলত কথা হয়েছে। জেলা প্রশাসকরা সীমান্ত এলাকায় আরও বেশি হারে বিজিবি মোতায়েন, নৌপথের নিরাপত্তা বৃদ্ধিতে নৌপুলিশ বৃদ্ধি করার কথা বলেছেন। তাছাড়া তারা গাজীপুর মেট্রোপলিটন এলাকা ও শিল্প পুলিশের জনবল বৃদ্ধির কথা বলেছেন। আমরা বিষয়সমূহ অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে দেখছি ও বিবেচনার আশ্বাস দিয়েছি।’
‘আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সন্তোষজনক কিন্তু এটাকে আরও উন্নতির অবকাশ রয়েছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ক্রমান্বয়ে উন্নতির দিকে যাচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির যাতে আরও উন্নতি ঘটে, সেজন্য সারাদেশে ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট’ পরিচালনা করা হচ্ছে,’ বলেন জাহাঙ্গীর আলম।
আরও পড়ুন: যুবকদের সার্বজনীন সামরিক প্রশিক্ষণের প্রস্তাব ডিসিদের
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের দেশের সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো দুর্নীতি। এটিকে সমূলে বিনষ্ট করতে না পারলে দেশের কাঙ্ক্ষিত অগ্রগতি হবে না। সব লেভেল থেকে দুর্নীতি কমাতে হবে। এ বিষয়ে জেলা প্রশাসকদের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।’
মন্ত্রিপরিষদ সচিব ড. শেখ আব্দুর রশীদের সভাপতিত্বে জেলা প্রশাসক সম্মেলনের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং কৃষি মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত কার্য-অধিবেশনে বিশেষ অতিথি হিসাবে বক্তৃতা করেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী খোদা বখস চৌধুরী।
এসময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব নাসিমুল গনি, কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মোহাম্মদ এমদাদ উল্লাহ মিয়ান, পুলিশ মহাপরিদর্শক বাহারুল আলম বিপিএম-সহ স্বরাষ্ট্র ও কৃষি মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন বিভিন্ন দপ্তর-সংস্থার প্রধানরা।
৫৭ দিন আগে
১৭-২০ ফেব্রুয়ারি দিল্লিতে বিজিবি-বিএসএফ বৈঠক
ফেব্রুয়ারি মাসে বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিবি ও ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের মধ্যে মহাপরিচালক (ডিজি) পর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। আগামী ১৭ থেকে ২০ ফেব্রুয়ারি ওই বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
শুক্রবার ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধির জয়সওয়াল বলেন, ‘২০২৫ সালের ১৭ থেকে ২০ ফেব্রুয়ারি নয়াদিল্লিতে বিএসএফ ও বিজিবির মধ্যে ডিজি পর্যায়ের আলোচনা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। এই আলোচনায় সীমান্ত সম্পর্কিত সব বিষয় নিয়ে আলোচনা করার প্রস্তাব করা হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা আশা করি, পারস্পরিকভাবে সম্মত সব সমঝোতা স্মারক ও চুক্তিকে সম্মান জানানো হবে। এগুলো দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মধ্যে কাঠামোগত সম্পৃক্ততার ভিত্তি এবং সীমান্তে পারস্পরিকভাবে উপকারী নিরাপত্তা ও বাণিজ্য অবকাঠামো তৈরিতে সহায়তা করে।’
৭৫ দিন আগে
এবার জয়পুরহাট সীমান্তে বিএসএফের কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণচেষ্টা রুখে দিল বিজিবি
জয়পুরহাটের পাঁচবিবি সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণের প্রচেষ্টা এবারও রুখে দিয়েছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।
মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) সকালে উচনা সীমান্তে আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করে জিরো পয়েন্ট থেকে ৩০ গজের মধ্যে ভারতীয় অংশে বিএসএফের কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণের চেষ্টা বিজিবির বাধায় বন্ধ হয়ে যায়।
এ ঘটনায় আজ (মঙ্গলবার) বিকালে বিজিবি ও বিএসএফের কোম্পানি কমান্ডার পর্যায়ে পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বিজিবি জানায়, সকাল ৮টার দিকে ভারতীয় চকগোপাল ক্যাম্পের বিএসএফ সদস্যরা বাংলাদেশ অংশের জয়পুরহাট-২০ বিজিবির পাঁচবিবি উপজেলার হাটখোলা বিওপির আওতাধীন ধরঞ্জি ইউনিয়নের ঘোনাপাড়া-সংলগ্ন পূর্ব উচনা গ্রামের বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তের ২৮১ নম্বরে মেইন পিলারের ৩৩, ৩৪ ও ৩৫ সাব পিলার এলাকা পর্যন্ত আনুমানিক ২০-৩০ গজ জিরো পয়েন্টের ভেতরে (ভারতীয় অংশে) কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণের কাজ শুরু করে। এ ঘটনা জানতে পেরে হাটখোলা বিওপির বিজিবি সদস্যরা তাদের বাধা দিলে, বিজিবি সদস্যদের বাধার মুখে ভারতের বিএসএফ সদস্যরা বেড়া নির্মাণ সামগ্রী নিয়ে স্থান থেকে চলে যেতে বাধ্য হয়। বর্তমানে সেখানকার পরিস্থিতি শান্ত ও স্বাভাবিক রয়েছে।
আরও পড়ুন: সীমান্তে উত্তেজনা: জিরো পয়েন্ট এড়িয়ে চলার আহ্বান বিজিবির
জয়পুরহাট-২০ বিজিবির ব্যাটালিয়ন অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল নাহিদ নেওয়াজ বলেন, ‘ঘন কুয়াশার মধ্যে আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করে ভারতীয় বিএসএফ সদস্যরা কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণের চেষ্টা করে। এ সময় বিজিবির সদস্যরা বাধা দেয়। বাধা পেয়ে বিএসএফ সদস্যরা বেড়া নির্মাণ না করে ফিরে যেতে বাধ্য হন। এ ঘটনায় বিজিবি ও বিএসএফের কোম্পানি কমান্ডার পর্যায়ে পতাকা বৈঠক করার জন্য চিঠি দেওয়া হয়েছে।’
৮৫ দিন আগে
জুলাই বিপ্লবে আহত ১৮ জনকে বিজিবির সহায়তা
জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থানে আহত ১৮ জনকে আর্থিক সহায়তা দিয়েছেন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।
রবিবার (১৯ জানুয়ারি) রাজধানীর পিলখানায় বিজিবি সদর দপ্তরের সীমান্ত সম্মেলন কেন্দ্রে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল খোন্দকার শফিকুজ্জামান তাদের হাতে সহায়তার চেক তুলে দেন।
এ সময় তিনি বলেন, ‘বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের মধ্য দিয়ে বাঙালি জাতি নতুন বাংলাদেশ পেয়েছে। বাংলাদেশ বিনির্মাণে বিজিবিও ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করেছে। জুলাই বিপ্লবের শুরু থেকেই বিজিবি স্ব-উদ্যোগে বর্ডার গার্ড হাসপাতালে আন্দোলনে আহত ছাত্র-জনতাকে চিকিৎসা দিয়েছে।’
৮৭ দিন আগে