লাল গালিচা
নয়াদিল্লিতে প্রধানমন্ত্রীকে লাল গালিচায় স্বাগত
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আমন্ত্রণে নয়াদিল্লিতে জি-২০ সম্মেলনে যোগ দিতে তিন দিনের সফরে শুক্রবার বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেখানে পৌঁছালে লাল গালিচায় তাকে স্বাগত জানানো হয়েছে।
স্থানীয় সময় দুপুর ১২টা ৪০ মিনিটে (বাংলাদেশ সময় দুপুর ১টা ১০ মিনিট) ইন্দিরা গান্ধী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছালে প্রধানমন্ত্রীকে অভ্যর্থনা জানান ভারতের রেল ও বস্ত্র প্রতিমন্ত্রী দর্শনা বিক্রম জারদোশ। বিমানবন্দরে একটি সাংস্কৃতিক দল স্বাগত নৃত্যও পরিবেশন করে।
আরও পড়ুন: আলোচনার মাধ্যমে ইউক্রেন যুদ্ধের অবসান করুন: রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে প্রধানমন্ত্রী
এর আগে সকালে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি বিশেষ ফ্লাইটে শেখ হাসিনা ও তার সফরসঙ্গীরা নয়াদিল্লির উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করেন। এ সফরে বঙ্গবন্ধুর কনিষ্ঠ কন্যা শেখ রেহানাও রয়েছেন।
শুক্রবার সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মোদির সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করবেন যেখানে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দ্বিপাক্ষিক বিষয় নিয়ে আলোচনা হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
বিকেল সাড়ে ৫টা থেকে ৭টা পর্যন্ত বৈঠকের জন্য ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে পৌঁছানোর কথা রয়েছে হাসিনার।
কৃষি গবেষণায় সহযোগিতা, সাংস্কৃতিক বিনিময় কর্মসূচি এবং বাংলাদেশি টাকা ও ভারতীয় রুপির (দুই দেশের সাধারণ মানুষ) মধ্যে লেনদেন সহজ করার বিষয়ে তিনটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের আগে সই হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
তার তিন দিনের সফরে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী জি-২০ নেতাদের শীর্ষ সম্মেলনের দুটি অধিবেশনে ভাষণ দেবেন, যেটি ভারতের নয়াদিল্লির প্রগতি ময়দানের মণ্ডপম সেন্টারে 'এক পৃথিবী, একটি পরিবার এবং এক ভবিস্যৎ' প্রতিপাদ্য নিয়ে শনিবার (৯ সেপ্টেম্বর) শুরু হতে যাচ্ছে।
আরও পড়ুন: রাশিয়া থেকে এলএনজি, গম, সার সরবরাহের সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা চলছে: ল্যাভরভ
তিনি বৈশ্বিক দক্ষিণে জলবায়ু পরিবর্তন, কোভিড-১৯-পরবর্তী অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার এবং ইউরোপে চলমান যুদ্ধের কারণে জ্বালানি, খাদ্য ও সার এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় পণ্যের বৈশ্বিক সরবরাহে ব্যাঘাতের মতো বিভিন্ন চ্যালেঞ্জের দিকে আলোকপাত করবেন। তিনি সম্মেলনে অংশগ্রহণকারী বিশ্বনেতাদের কাছে বিভিন্ন আর্থ-সামাজিক ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অবিশ্বাস্য সাফল্যের অভিজ্ঞতা তুলে ধরবেন।
শীর্ষ সম্মেলনের ফাঁকে, প্রধানমন্ত্রী শনিবার আরও চার থেকে পাঁচজন সফররত নেতার সঙ্গে বৈঠক করবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
সৌদি ক্রাউন প্রিন্স ও প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ বিন সালমান বিন আবদুল আজিজ, আর্জেন্টিনার প্রেসিডেন্ট আলবার্তো অ্যাঞ্জেল ফার্নান্দেজ, সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ বিন জায়েদ আল নাহিয়ান এবং কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর সঙ্গে (দ্বিপাক্ষিক) বৈঠকের সম্ভাবনা রয়েছে।
বাংলাদেশসহ নয়টি দেশকে অতিথি হিসেবে আমন্ত্রণ জানিয়েছে জি-২০’র চেয়ারম্যান ভারত। এ সম্মেলন ৯ ও ১০ সেপ্টেম্বর নয়াদিল্লিতে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। ১৯টি দেশ ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত একটি আন্তঃসরকারি ফোরাম হলো জি-২০।
১০ সেপ্টেম্বর (রবিবার) প্রধানমন্ত্রী দুপুর সাড়ে ১২টায় বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি চার্টার্ড ফ্লাইটে নয়াদিল্লি ত্যাগ করে দেশে ফিরবেন।
আরও পড়ুন: খাদ্য, জ্বালানি ও রোহিঙ্গা ইস্যুর মতো বিষয়ে রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ল্যাভরভের সঙ্গে আলোচনা করবে ঢাকা
১ বছর আগে
ব্রুনাইয়ের সুলতান হাসানাল বলকিয়া ঢাকায় পৌঁছেছেন
ব্রুনাইয়ের সুলতান হাজী হাসানাল বলকিয়াহ বাংলাদেশে প্রথম রাষ্ট্রীয় সফরে ঢাকায় পৌঁছেছেন। শনিবার দুপুর আড়াইটার দিকে একটি বিশেষ ফ্লাইটে সুলতান ঢাকায় আসেন।
বিমান থেকে নামার পর সুলতানকে লাল গালিচা অভ্যর্থনা জানানো হয়। এরপর তাকে গার্ড অব অনারের মাধ্যমে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ভিভিআইপি টার্মিনালে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ উষ্ণ অভ্যর্থনা জানান।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন যে সুলতানের রাষ্ট্রীয় সফর বাংলাদেশ ও ব্রুনাইয়ের মধ্যে চমৎকার দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ‘একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা করবে’।
১৪-১৬ অক্টোবর পর্যন্ত তার সফরের সময় নির্ধারিত ছিল, কিন্তু পরে এটি ১৫-১৭ অক্টোবর পুনর্নির্ধারণ করা হয়।
প্রচুর তেল ও গ্যাসের মজুদের কারণে ব্রুনাই বিশ্বের সর্বোচ্চ জীবনযাত্রার মানসম্পন্ন দেশগুলোর মধ্যে একটি।
ব্রুনাইয়ের সুলতান হাসানাল বলকিয়াহ হলেন বিশ্বের অন্যতম দীর্ঘতম রাজত্বকারী রাজাদের একজন। তার বাবা স্যার হাজী ওমর আলী সাইফুদ্দিনের পদত্যাগের পর ১৯৬৮ সালের আগস্ট মাসে তিনি রাজা হন।
আরও পড়ুন: ব্রুনাইয়ের সুলতান আসছেন ১৫ অক্টোবর: মোমেন
বিমানবন্দর থেকে ব্রুনাই সুলতানের সরাসরি সাভারের জাতীয় শহীদ স্মৃতিসৌধে যাওয়ার কথা রয়েছে।
সেখানে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক, গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী তাকে স্বাগত জানাবেন।
সুলতান মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন, দর্শনার্থীদের বইয়ে স্বাক্ষর করবেন; এবং সেখানে একটি চারা রোপণ করবেন।
সুলতান হাসানাল বলকিয়া রবিবার জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে ঢাকার ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘর পরিদর্শন করবেন।
খসড়া কর্মসূচি অনুযায়ী সেখানে বঙ্গবন্ধুর পরিবারের সদস্যরা তাকে স্বাগত জানাবেন।
ব্রুনাই সুলতান সফরকালে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠক করবেন।
সফরকালে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেনও তার সঙ্গে সাক্ষাত করবেন।
আরও পড়ুন: প্রথমবারের মতো বাংলাদেশে আসছেন ব্রুনাইয়ের সুলতান
মোমেন সাংবাদিকদের বলেন, বাংলাদেশ ও ব্রুনাই দুই দেশের মধ্যে সরাসরি ফ্লাইট চালুর চুক্তিসহ তিনটি দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতার নথিতে স্বাক্ষর করতে পারে।
বাংলাদেশী কর্মী নিয়োগ এবং দুই দেশের কর্মীদের সার্টিফিকেটের স্বীকৃতির বিষয়ে আরও দুটি সহযোগিতার নথি স্বাক্ষরিত হবে।
মোমেন বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি সফরটি সফল ও ফলপ্রসূ হবে।’
ব্রুনাইয়ের সঙ্গে জ্বালানি সহযোগিতার বিষয়ে মোমেন বলেন, বাংলাদেশ এই ক্ষেত্রে আলোচনা করছে এবং সম্ভাব্য সব বিকল্পের খোঁজ করছে।
২০১৯ সালের এপ্রিলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ব্রুনাই দারুসসালামে একটি ঐতিহাসিক সফর করেন, যা একটি নতুন মাইলফলক হিসাবে চিহ্নিত হয়েছিল। কারণ এসময় দুইদেশ গ্যাস সরবরাহ, মৎস্য, কৃষি, প্রাণিসম্পদ, শিল্প ও সংস্কৃতি, যুব ও খেলাধুলার মতো খাতসহ বিভিন্ন ধরণের সহযোগিতার জন্য বেশ কয়েকটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করেছে।
আরও পড়ুন: ব্রুনাইয়ের সুলতানের সফরের অপেক্ষায় মোমেন
বর্তমানে ব্রুনাইয়ে প্রায় ১৫ হাজার বাংলাদেশি শ্রমিক থাকতে পারে।
দেশটি বাংলাদেশিসহ ব্রুনাইয়ে কাজ করার জন্য আসা বিদেশি কর্মীদের স্বাগত জানায়।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন রবিবার সন্ধ্যায় সফর শেষে বিমানবন্দরে ব্রুনাই সুলতানকে বিদায় জানাবেন।
ব্রুনাই দারুসসালামের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এরিওয়ান ইউসুফ শুক্রবার রাতে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেনের সঙ্গে দেখা করেন।
তাদের আলোচনার সময়, দুই পররাষ্ট্রমন্ত্রী দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের গুরুত্বপূর্ণ দিক নিয়ে মতবিনিময় করেন এবং দুই দেশের পারস্পরিক সুবিধার জন্য বাণিজ্য ও বিনিয়োগের স্তরকে আরও জোরদার করার গুরুত্বের ওপর জোর দেন।
তারা আগামী দিনে বাণিজ্য, বিনিয়োগ, পর্যটন, জনগণের মধ্যে যোগাযোগ প্রভৃতির জন্য সংযোগ বাড়ানোর জন্য সহযোগিতার নতুন ক্ষেত্রগুলি অন্বেষণ করতে একমত হয়েছে।
তারা মহামারি ও ইউরোপে সংঘাত, বিশেষত খাদ্য ও শক্তির নিরাপত্তাহীনতা এবং সরবরাহ শৃঙ্খল বিঘ্নিত হওয়ার কারণে সৃষ্ট চ্যালেঞ্জের বিষয়েও মতবিনিময় করেন।
২ বছর আগে