রেজ্যুলেশন
বাংলাদেশের নেতৃত্বে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থায় পানিতে ডুবে মৃত্যুহার কমাতে রেজ্যুলেশন
বিশ্বব্যাপী পানিতে ডুবে মৃত্যুর ঘটনা প্রতিরোধে কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণের উদ্দেশ্যে বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার চলমান অধিবেশনে বাংলাদেশ ও আয়ারল্যান্ডের যৌথ নেতৃত্বে একটি রেজ্যুলেশন গৃহীত হয়েছে।
সোমবার(২৯ মে) জেনেভায় সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত এ রেজ্যুলেশনটিতে ৭৪টি দেশ কোস্পন্সরশিপ করেছে।
রেজ্যুলেশনের ওপর আলোচনায় অংশগ্রহণকারী দেশসমূহ তাদের বক্তব্যে স্বল্পোন্নত দেশসমূহে পানিতে ডুবে মৃত্যুহার সর্বাধিক উল্লেখ করে বলেন যে, অল্প খরচেই এ মৃত্যুহার কমানো সম্ভব। উন্নত বিশ্বের দেশগুলো ইতোমধ্যে শিশুদের সাঁতার শেখানোর মতো পদক্ষেপ গ্রহণ করে ব্যাপক সফলতা পেয়েছে।
বাংলাদেশ তার বক্তব্যে বলেন, যে মৃত্যুহার কমাতে আইন প্রবর্তন, প্রজেক্ট গ্রহণ এবং অর্থ বরাদ্দ করার মাধ্যমে পানিতে ডুবে মৃত্যুহার কমাতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।এ রেজ্যুলেশনে দ্রুততার সঙ্গে জাতিসংঘের সংশ্লিষ্ট এজেন্সিসমূহ, আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সহযোগী প্রতিষ্ঠানসমূহ এবং এনজিওদের সমন্বয়ে গ্লোবাল অ্যালায়েন্স প্রতিষ্ঠা করার আহ্বান জানানো হয়েছে।
আরও পড়ুন: মালদ্বীপে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিনিধি বাংলাদেশের ডা. নাজনীন আনোয়ার
বাংলাদেশে প্রতিদিন পানিতে ডুবে পাঁচ বছরের কম বয়সী ৩০ জন শিশু মারা যায়। ১৮ বছর বয়স সীমার বিবেচনায় এ মৃত্যুহার ৪০। এ দু’টি পরিসংখ্যানের আলোকে বলা যায়, এ মৃত্যু প্রতিরোধে কার্যকরী পদক্ষেপ না নেয়া হলে শিশুমৃত্যু প্রতিরোধে বাংলাদেশের সাফল্য ম্রিয়মান হয়ে যেতে পারে।
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া ও পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে পানিতে ডুবে সবচেয়ে বেশী মানুষ প্রাণ হারায়।
বিশ্বে নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোতে এ মৃত্যুহার সবচেয়ে বেশী। এ রেজ্যুলেশনের মাধ্যমে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দেশসমূহের মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতা জোরদার হবে যা পানিতে ডুবে মৃত্যুহার প্রতিরোধে কার্যকর ভূমিকা রাখবে এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের কূটনৈতিক ভাবমূর্তি বাড়বে বলে আশা করা যায়।
উল্লেখ্য যে, ২০২১ সালের ২৮ এপ্রিল নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সাধারণ সম্মেলনে এ সংক্রান্ত প্রথম রেজ্যুলেশনও বাংলাদেশ এবং আয়ারল্যান্ডের উদ্যোগে গৃহীত হয়েছিল।
আরও পড়ুন: বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ত্যাগে যুক্তরাষ্ট্রের আনুষ্ঠানিকতা শুরু
১ বছর আগে
‘কারও প্রতি বিদ্বেষ নয়, আমরা চাই সকলের সঙ্গে বন্ধুত্ব’: বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক উক্তি জাতিসংঘের রেজ্যুলেশনে অন্তর্ভুক্ত
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক উক্তি ‘কারও প্রতি বিদ্বেষ নয়, আমরা চাই সকলের সঙ্গে বন্ধুত্ব’ যা বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতি নির্দেশ করে। যা জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের (ইউএনজিএ) রেজ্যুলেশনের ১৪ তম অনুচ্ছেদে অন্তর্ভূক্ত করা হয়। যার শিরোনাম দেয়া হয়েছে- ‘ইন্টারন্যাশনাল ইয়ার অব ডায়ালগ অ্যাজ আ গ্যারান্টি অব পিস, ২০২৩’।
কোভিড-পরবর্তী বিশ্বব্যবস্থা ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে তুর্কমেনিস্তান ইউএনজিএ’র পূর্ণাঙ্গ সভায় এই রেজ্যুলেশনটি পেশ করে।
মঙ্গলবার সর্বসম্মতিক্রমে তা গৃহীত হয়।
বিশ্ব মানবতা ও শান্তির দৃঢ় প্রবক্তা বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক উক্তিটি প্রথমবারের মতো জাতিসংঘের একটি প্রস্তাবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
আরও পড়ুন: বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের আসামিকে দেশে ফেরাতে বিকল্প পথ খুঁজতে অনুরোধ
রেজ্যুলেশনের ১৪তম অনুচ্ছেদে বঙ্গবন্ধুর উদ্ধৃতিটি যেভাবে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে: ‘দারিদ্র্য, ক্ষুধা, রোগ, নিরক্ষরতা ও বেকারত্বের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের গুরুত্ব স্বীকার করে এবং গঠনমূলক সহযোগিতা, সংলাপ ও পারস্পরিক বোঝাপড়ার চেতনায় ‘কারও প্রতি বিদ্বেষ নয়, আমরা চাই সকলের সঙ্গে বন্ধুত্ব’-এ জোর দেয়া এই উদ্দেশ্যগুলো অর্জনে সহায়তা করবে।’
এই অংশটি ১৯৭৪ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে তার প্রথম ভাষণের ভিত্তিতে তৈরি করা হয়, যেখানে বঙ্গবন্ধু বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়েছিলেন।
বুধবার বাংলাদেশ মিশন জানায়, জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ আব্দুল মুহিতের নির্দেশনায় বাংলাদেশ মিশন রেজ্যুলেশনের প্রস্তুতিতে নিবিড়ভাবে কাজ করেছে।
আরও পড়ুন: ভারতের বঙ্গবন্ধু কর্নার ও বঙ্গবন্ধু গার্ডেন উদ্বোধন করলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী
উপ-স্থায়ী প্রতিনিধি ড. মনোয়ার হোসেন সক্রিয়ভাবে আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন এবং রেজ্যুলেশনে জাতির পিতার ঐতিহাসিক উক্তি অন্তর্ভুক্ত করতে সক্ষম হন।
বাংলাদেশ ও অন্যান্য দক্ষিণ এশীয় দেশসহ ৭০টি দেশ এই রেজ্যুলেশনটি সমর্থন করে।
আরও পড়ুন: জেলহত্যা দিবস: বঙ্গবন্ধুসহ জাতীয় চার নেতার প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন প্রধানমন্ত্রীর
২ বছর আগে
১৯৭১ সালে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর কর্মকাণ্ডকে 'গণহত্যা' ঘোষণা করুন: মার্কিন কংগ্রেস সদস্যদের রেজ্যুলেশন পেশ
মার্কিন কংগ্রেস সদস্য স্টিভ চ্যাবট ও ভারতীয় বংশোদ্ভূত কংগ্রেস সদস্য রো খান্না মার্কিন হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভস-এ বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় বাঙালি ও হিন্দুদের ওপর চালানো পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর কর্মকাণ্ডকে ‘গণহত্যা’ ও ‘মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ’ হিসেবে ঘোষণা করার জন্য একটি রেজ্যুলেশন বা প্রস্তাব পেশ করেছেন।
চ্যাবট বলেছেন, ‘১৯৭১ সালে বাংলাদেশে গণহত্যা হয়েছিল সেটি ভুললে চলবে না। ওহাইও’র ফার্স্ট ডিস্ট্রিক্টে আমার হিন্দু ভোটারদের সহায়তায় রো খান্না ও আমি হিন্দুসহ বাঙালিদের ওপর চালানো ব্যাপক নৃশংসতা, নির্দিষ্ট করে বললে গণহত্যার স্বীকৃতির জন্য রেজ্যুলেশন পেশ করেছি।’
চ্যাবোট জানান, তারা অবশ্যই বছরের পর বছর ধরে গণহত্যার লাখ লাখ মানুষের স্মৃতি মুছে ফেলতে দেবে না।
তিনি টুইটারে লিখেন, ‘গণহত্যার স্বীকৃতি ঐতিহাসিক রেকর্ডকে শক্তিশালী করে, আমাদের সহকর্মী আমেরিকানদের জানায় এবং এই ধরনের অপরাধ সহ্য করা বা ভুলে যে যাওয়া হবে না তা অপরাধীদের জানতে দেয়।’
আরও পড়ুন: কংগ্রেসনাল বাংলাদেশ ককাস ঢাকা-ওয়াশিংটন সম্পর্ক জোরদার করবে
রো খান্না বলেন, ‘১৯৭১ সালে বাঙালি গণহত্যার স্বীকৃতি চেয়ে প্রথম রেজ্যুলেশন পেশে রিপাবলিকান স্টিভ চ্যাবোটের সঙ্গে যোগ দিতে পেরে আমি গর্বিত, যেখানে আমাদের সময়ের সবচেয়ে ভুলে যাওয়া গণহত্যায় লাখ লাখ বাঙালি, হিন্দু নিহত ও বাস্তুচ্যুত হয়েছিল।’
‘১৯৭১ সালের বাংলাদেশ গণহত্যার স্বীকৃতি’ শিরোনামের ৮ পৃষ্ঠার রেজ্যুলেশনে পাকিস্তান সরকারের এই গণহত্যার বিষয়ে যথেষ্ট প্রমাণের প্রেক্ষিতে স্বীকৃতিটি দেয়ার কথা বলা হয়। সেখানে বাংলাদেশের সরকার ও জনগণের কাছে আনুষ্ঠানিক ক্ষমা প্রার্থনা করার এবং যেসব অপরাধী এখনও জীবিত আছে আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী তাদের বিচার করার আহ্বান জানানো হয়েছে।
এটি ১৯৭১ সালের মার্চ থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত বাংলাদেশের জনগণের বিরুদ্ধে পাকিস্তানের সশস্ত্র বাহিনীর সংঘটিত নৃশংসতার নিন্দা করে। যেখানে স্বীকার করা হয় যে বাঙালি ও হিন্দুদের বিরুদ্ধে এ ধরনের নৃশংসতা মানবতাবিরোধী অপরাধ, যুদ্ধাপরাধ ও গণহত্যা। যা এই ধরনের নৃশংসতার শিকারদের মৃত্যু ও যন্ত্রণার কথা স্মরণ করে এবং তাদের কষ্টের প্রতি গভীর সমবেদনা প্রকাশ করে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার ৫০তম বার্ষিকীতে কংগ্রেসে প্রস্তাব উত্থাপন
রেজ্যুলেশনটি স্বীকার করে যে সমগ্র জাতিগত গোষ্ঠী বা ধর্মীয় সম্প্রদায়গুলো তাদের সদস্যদের দ্বারা সংঘটিত অপরাধের জন্য দায়ী নয়। ১৯৭১ সালে পাকিস্তানের সশস্ত্র বাহিনীর জাতিগত বাঙালি ও হিন্দুদের বিরুদ্ধে সংঘটিত নৃশংসতাকে মানবতাবিরোধী অপরাধ, যুদ্ধাপরাধ এবং গণহত্যা হিসেবে স্বীকৃতি দেয়ার জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের প্রতি আহ্বান জানানো হয়।
এটি ইন্দো-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে শান্তি, স্থিতিশীলতা ও আন্তঃসাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি প্রচারের জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিশ্রুতি ও জাতীয়, জাতিগত বা ধর্মীয় পটভূমি নির্বিশেষে এই অঞ্চলে বসবাসকারী সকল মানুষের অধিকারের সুবিধা ভোগ করার বিষয়টি পুনরায় নিশ্চিত করবে। যার ফলে গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান, আইনের শাসন, ধর্মের স্বাধীনতা ও অর্থনৈতিক সুযোগ উপভোগ করা যাবে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের ওপর গণহারে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে বলে বিশ্বাস করি না: মার্কিন কংগ্রেসম্যান
২ বছর আগে