ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং
ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং: মুন্সীগঞ্জে গাছ চাপায় মা-মেয়ের মৃত্যু
ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে মুন্সীগঞ্জের লৌহজং-এ ঝড়ে ঘরের ওপর গাছ পড়ে মা ও মেয়ের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় শিশুটির বাবা আব্দুল রাজ্জাক গুরুতর আহত হয়ে ঢাকার পঙ্গু হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। সোমবার রাতে উপজেলায় কনকসারে এ ঘটনা ঘটে।
গাছচাপায় নিহতরা হলেন-মা আসমা বেগম(২৮) ও মেয়ে সুরাইয়া(৪)।
এছাড়া উপজেলায় বিভিন্ন স্থানে টানা বৃষ্টিপাত ও বাতাসে গাছপালা উপড়ে পড়েছে। এতে বিধ্বস্ত হয়েছে অনেক বসতঘর। গাছ পড়ে থাকায় লৌহজং-মাওয়া সড়কে বন্ধ রয়েছে যানচলাচল।
আরও পড়ুন: দেশে করোনায় আরও ১ জনের মৃত্যু, শনাক্ত ১৮৫
সোমবার রাত থেকে উপজেলার সর্বত্র বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। বিদুৎ না থাকায় মোবাইল ফোন ও ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সংযোগও বন্ধ রয়েছে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) ইয়াসিনা ফেরদৌস জানান, ঘরে দু’টি কক্ষ ছিল। আব্দুল রাজ্জাক স্ত্রী-কন্যাসহ ঘরের এক কক্ষে ঘুমিয়ে ছিল। রাতে ঝড়ের মধ্যে চাম্বল গাছ ঘরের ওপর পড়লে আসমা বেগম ও তার মেয়ে সুরাইয়া মারা যায়।
এ সময় আব্দুল রাজ্জাকের কোমর ভেঙ্গে যায়। তাকে ঢাকা পঙ্গু হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এছাড়া অপর কক্ষে আব্দুল রাজ্জাকের মাসহ তার আরও এক ছেলে ও এক মেয়ে ঘুমিয়ে ছিল। তারা সুস্থ রয়েছে।
ঝড়ে সড়কে গাছ পড়ে মাওয়া লৌহজং প্রধান সড়কের যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আব্দুল আউয়াল জানান, লৌহজংয়ে ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারটিকে নগদ ৫০ হাজার টাকা আর্থিক সহায়তা করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং: নোয়াখালীতে গাছ চাপা পড়ে শিশুর মৃত্যু
ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং: দেশে ১৩ জনের মৃত্যু
২ বছর আগে
যমুনায় নৌকাডুবিতে মা-ছেলের মৃত্যু
সিরাজগঞ্জ সদরে সোমবার রাতে যমুনা নদীর একটি ক্যানেলে নৌকাডুবির ঘটনায় মা ও শিশু ছেলের মৃত্যু হয়েছে। এ সময় ওই পরিবারের আরও তিন সদস্যকে উদ্ধার করা হয়েছে।
নিহতরা হলেন-উপজেলার পূর্ব মোহনপুর গ্রামের খোকন শেখের স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা (৩০) ও তাদের ছেলে আরাফাত রহমান (৫)।
বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোসাদ্দেক হোসেন জানান, রাতে নির্মাণাধীন শিল্পপার্কের উত্তরপাশে সদর উপজেলার পূর্ব মোহনপুর গ্রামের খোকন শেখ তার স্ত্রী ও ৩ সন্তানকে সাথে নিয়ে বাড়ি যাচ্ছিলেন। রাত ৮টার দিকে নৌকাযোগে যমুনা নদীর ওই ক্যানেলটি পার হওয়ার সময় মাঝ পথে আকস্মিক ঝড়ো হাওয়ায় নৌকাটি ডুবে যায়। এতে ঘটনাস্থলেই শিশু ছেলে আরাফাত পানিতে ডুবে মারা যায়।
তিনি জানান, খবর পেয়ে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে স্থানীয়দের সহায়তায় ৩ জনকে সুস্থ অবস্থায় উদ্ধার করা হলেও খোকন শেখের স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকাকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় সিরাজগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাতেই তার মৃত্যু হয়।
পড়ুন: ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং দুর্বল হয়ে নিম্নচাপে পরিণত
ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং: ঢাকা-খুলনা ও ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কে যান চলাচল সচল
২ বছর আগে
ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং: ঢাকা-খুলনা ও ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কে যান চলাচল সচল
ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে ফরিদপুরের ঢাকা–খুলনা ও ঢাকা–বরিশাল মহাসড়কে গাছ উপড়ে পড়ায় প্রায় ৯ ঘণ্টা বন্ধ থাকার পর মঙ্গলবার সকালে যান চলাচল সচল হয়েছে।
ভাঙ্গা হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তৈমুর আলম জানান, দুটি মহাসড়কে রাত সাড়ে ৮টা থেকে গাছ উপড়ে পড়ার জন্য যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। অন্তত ২৪-২৫টি জায়গায় গাছ উপড়ে পড়ার ঘটনা ঘটেছে।
তিনি বলেন, ঝড় এবং বৃষ্টি থামার পর মঙ্গলবার সকাল ৭টার দিকে হাইওয়ে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা উপড়ে পড়া গাছ অপসারণ করলে দুই মহাসড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস জানিয়েছে, ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে প্রবল বৃষ্টি ও ঝড়ে ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের তালমা পুকুরিয়া এলাকায় এবং ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের মাঝরা, মাঝিগাতি, রিসাতলা, জয় বাংলা, কৈলার মোড়, মনসুরাবাদ এলাকায় গাছ ভেঙে পড়ে।
এদিকে আবহাওয়া অফিস সর্বশেষ বুলেটিনে জানিয়েছে, ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং সোমবার মধ্যরাতে ভোলার কাছে বরিশাল-চট্টগ্রাম উপকূল অতিক্রম করে এবং বৃষ্টি ঝরিয়ে দ্রুত দুর্বল হয়ে নিম্নচাপে পরিণত হয়।
অধিদপ্তর জানায়, এটি এখন স্থল নিম্নচাপ আকারে ঢাকা-কুমিল্লা-ব্রাহ্মণবাড়িয়া এবং তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে।
পড়ুন: ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং দুর্বল হয়ে নিম্নচাপে পরিণত
২ বছর আগে
ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং: সুন্দরবনে জেলে বাওয়ালীদের সরিয়ে নেয়া হয়েছে
ধেয়ে আসছে সাতক্ষীরা উপকূলের দিকে ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং। কয়েক ঘন্টার মধ্যে আঘাত হানতে পারে শক্তিশালী সিত্রাং। ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে সাতক্ষীরায় বিরাজ করছে গুমোট আবহাওয়া।
সোমবার সকাল থেকে শুরু হয় গুড়িগুড়ি বৃষ্টি। আকাশে প্রচন্ড মেঘ। দিন যতই গড়াচ্ছে ততই বৃষ্টির মাত্রা বাড়ছে। সাতক্ষীরা উপকূলের নদীতে স্বাভাবিকের চেয়ে প্রায় দুই ফুট জোয়ারের পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে এখনো পর্যন্ত কোন লোকালয়ে পানি প্রবেশের খবর পাওয়া যায়নি।
আরও পড়ুন: ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং: লক্ষ্মীপুরে ১৮৫ আশ্রয়কেন্দ্র ও ৬৬ মেডিকেল টিম প্রস্তুত
ইতোমধ্যে সুন্দরবনের জেলে বাওয়ালীদেরকে নিরাপদে সরিয়ে নেয়া হয়েছে। জেলায় ৫৭টি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে।
সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হুমায়ূন কবির জানান, জেলায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের দুটি বিভাগের ৭৮০ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ রয়েছে। এর মধ্যে ১০টি পয়েন্টে ৮০ কিলোমিটার বাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। বেড়িবাঁধ ভাঙ্গন এড়াতে পানি উন্নয়ন বোর্ডের পক্ষ থেকে ২০ হাজার জিও ব্যাগ মজুদ রাখা হয়েছে।
এছাড়া জেলার আশাশুনি উপজেলায় ১০৮টি, শ্যামনগর উপজেলায় ১০৩টি আশ্রয় কেন্দ্র ও ৪৬টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রস্তুত রাখা হয়েছে। দূর্যোগ মোকাবিলায় জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে পর্যাপ্ত শুকনো খাবার, প্রয়োজনীয় ওষুধ, সুপেয় পানিসহ প্রয়োজনীয় সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়েছে।
সুন্দরবন ঘেষা দ্বীপ ইউনিয়ন গাবুরা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান জি এম মাসুদুল আলম বলেন, নদী সাঙ্গাতিক উত্তল। নদীর পানি বেড়েছে প্রায় দুই ফুট। একাধিক স্থান যে কোন সময় ধ্বসে পড়বে। মাঝে মাঝে দমকা হাওয়া বইছে। কখনও ভারী আবার কখনও মাঝারি বৃষ্টিপাত হচ্ছে।
মানুষের মধ্যে আতংক রয়েছে। আশ্রয় কেন্দ্রগুলো খুলে দেয়া হয়েছে। অনেকেই আশ্রয় কেন্দ্রে উঠেছে। সন্ধ্যার আগেই মানুষকে আশ্রয় কেন্দ্রে চলে যেতে বলা হয়েছে।
আশাশুনির প্রতাপনগর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান জাকির হোসেন বলেন, আম্পানের ক্ষতি এখনও মানুষ কাটিয়ে উঠতে পারেনি। এরই মধ্যে সিত্রাং এর খবর শুনে মানুষ আতংকগ্রস্ত হয়ে পড়েছে। বেড়িবাঁধের অবস্থা আগে থেকেই নাজুক। এছাড়া জলোচ্ছ্বাস হলে এলাকায় ভাসিয়ে নিয়ে যাবে।
আরও পড়ুন: ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং: বাগেরহাটে ৩৪৪ আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত
বরিশালে বাড়বে ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব
২ বছর আগে
ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং: বাগেরহাটে ৩৪৪ আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত
ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং ধেঁয়ে আসার খবরে বাগেরহাটের উপকূলবর্তী মানুষের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। সোমবার সকাল ৬টা থেকে ৯টা পর্যন্ত তিন ঘণ্টায় ২৯ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রের্কড করেছে মোংলা আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে।
জানা যায়, জেলার শরণখোলা, মোংলা, রামপাল ও মোড়েলগঞ্জ উপজেলায় মাইকিং করে দুর্গত মানুষকে আশ্রয় কেন্দ্রে আসতে বলা হচ্ছে। জেলার ৯টি উপজেলায় ৩৪৪টি আশ্রয় কেন্দ্রে প্রস্তত রাখা হয়েছে। এসব আশ্রয়কেন্দ্রে দুই লাখ আট হাজার ৪৩০ জন মানুষ আশ্রয় নিতে পারবে। একই সঙ্গে মানুষ তাদের গবাদী পশু আশ্রয় কেন্দ্রে নিয়ে আসতে পারবে।
আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র থেকে জানা গেছে, বাগেরহাটে এই মুহূর্তে মাঝারি ধরণের ভারী বৃষ্টি হচ্ছে। সেই সঙ্গে ঝড়ো বাতাস বয়ে যাচ্ছে। মাঝে মধ্যে দমকা বাতাস হচ্ছে, বাগেরহাটের নিম্নাঞ্চলে এরই মধ্যে পানি জমতে শুরু করেছে। জোয়ারের পানি সুন্দরবনের দুবলারচার এলাকায় প্রবেশ করতে শুরু করেছে। মোংলা বন্দরে জাহাজে মালামাল উঠানামার কাজ বন্ধ রয়েছে। বন্দরের সব ধরণের নৌযান নিরাপদে রাখা হয়েছে।
আরও পড়ুন: ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং: লক্ষ্মীপুরে ১৮৫ আশ্রয়কেন্দ্র ও ৬৬ মেডিকেল টিম প্রস্তুত
এদিকে, বাগেরহাটে নদী পাড়ের ৩০ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ঝুকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে।
এছাড়াও, জোয়ারে স্বাভাবিকের চেয়ে পানি বৃদ্ধি পেলে বিভিন্ন এলাকায় নদী পাড়ের ১০০ কিলোমিটার বাঁধ উপচে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করার আশঙ্কা করছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।
ঘুর্ণিঝড় সিত্রাং আঘাত হানলে এবং জলোচ্ছ্বাস হলে বাগেরহাটে সাদাসোনা খ্যাত চিংড়ি, আমন ধান, বিভিন্ন ফসল ও বেড়িবাঁধসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে ক্ষতির আশঙ্কা করছে সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলো।
মোংলা আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা অমরেশ চন্দ্র ঢালী জানান, ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৫৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ৮৮ কিলোমিটারে পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। মোংলা সমুদ্রবন্দরকে সাত নম্বর বিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আজিজুর রহমান জানান, আবহাওয়া অধিদপ্তর মোংলা সমুদ্র বন্দরকে সাত নম্বর বিপদ সংকেত জারি করায় জেলার উপকূলবর্তী চারটি উপজেলায় মাইকিং করে দুর্গত মানুষকে আশ্রয় কেন্দ্রে আসার জন্য বলা হচ্ছে।
তিনি বলেন, বিকালের মধ্যে দুর্গত এলাকার সব মানুষকে আশ্রয় কেন্দ্রে আনা হবে। শুকনা খাবার প্রস্তুত, মেডিকেল টিম গঠন, উদ্ধারকারি টিমসহ জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব ধরণের প্রস্ততি গ্রহণ করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং: খুলনায় প্রস্তুত ৪০৯ আশ্রয়কেন্দ্র
ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং: বরিশালে ১০৫২ আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত
২ বছর আগে