হামাস
ইসরায়েলি হামলায় হামাসের রাজনৈতিক নেতাসহ নিহত ১৯
ইসরায়েলি বিমান হামলায় হামাসের এক জ্যেষ্ঠ রাজনৈতিক নেতাসহ ১৯ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। শনিবার (২২ মার্চ) দিবাগত রাতে এই হামলা চালানো হয়েছে। নিহতদের মধ্যে কয়েকজন নারী ও শিশুও রয়েছে।
মার্কিন বার্তা সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের খবর অনুসারে, মিসর সীমান্তের রাফাহ শহরের একটি অংশ থেকে লোকজনকে সরে যেতে বলেছে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী।
সেখানকার তেল-সুলতান অঞ্চলে অভিযান পরিচালনার কথা বলেছে তারা। এরইমধ্যে বিমান হামলায় অঞ্চলটি ভয়াবহ ধ্বংসযজ্ঞে পরিণত হয়েছে। গেল মে মাসে সেখানে বড় ধরনের অভিযান চালিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী।
আরও পড়ুন: গাজায় ইসরায়েলি হামলার প্রতিবাদে জাবিতে বিক্ষোভ মিছিল
মিসর সীমান্তের এই শহরটিতে একটি কৌশলগত করিডোর ও রাফাহ ক্রোসিং রয়েছে।
মাওয়াসি এলাকায় একটি একমুখী পথ ধরে পায়ে হেঁটে লোকজনকে চলে যেতে বলা হয়েছে। মাওয়াসিতে ব্যাপক দারিদ্র্যপীড়িত শরণার্থী শিবির রয়েছে, যেখানে উল্লেখ করার মতো সরকারি সেবা নেই।
লোকজনকে চলে যেতে এই নির্দেশ নতুন করে স্থল অভিযানের আভাস দিচ্ছে কিনা; তা এখনো পরিষ্কার না।
এক বিবৃতিতে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র কর্নেল অভিচাই আদ্রেই বলেন, ‘তেল আল-সুলতানের এসব বসতি, তাঁবু কিংবা শারণার্থী শিবিরে থাকা বা অন্য কোনো পথ ধরে হেঁটে যাওয়ার অর্থ হচ্ছে আপনার ও আপনার পরিবারের জীবন ঝুঁকিতে ঠেলে দেওয়া।’
হামাস জানিয়েছে, মাওয়াসিতে ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় স্ত্রীসহ রাজনৈতিক ব্যুরো ও ফিলিস্তিনি পার্লামেন্ট সদস্য সালাহ বারদাওয়েল নিহত হয়েছেন।
ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলনটির রাজনৈতিক শাখার একটি পরিচিত মুখ হলেন সালাহ। বহুবছর ধরে তিনি সংবাদমাধ্যমে সাক্ষাৎকার দিয়ে আসছিলেন।
দক্ষিণাঞ্চলীয় গাজার দুটি হাসপাতাল জানিয়েছে, কয়েকজন নারী ও শিশুসহ তারা সতেরোটি মরদেহ পেয়েছেন। তবে হামাস নেতার ও তার স্ত্রীর মরদেহ সেখানে ছিল না।
আরও পড়ুন: গাজায় ইসরায়েলি হামলায় নারী ও শিশুসহ ১২ ফিলিস্তিনি নিহত
দ্য ইউরোপীয় হাসপাতাল জানিয়েছে, এসব মরদেহের মধ্যে খান ইউনিসের পাঁচটি শিশু ও তাদের বাবা-মা রয়েছেন।
এছাড়া এক নারী ও শিশুর মরদেহ পাওয়ার কথা জানিয়েছে দ্য কুয়েত হাসপাতাল।
রাফাহে হামলার পর সেখানে অ্যাম্বুলেন্স যেতে দিচ্ছে না ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী বলে জানিয়েছে ফিলিস্তিনি রেড ক্রিসেন্ট। তাদের কয়েকজন চিকিৎসকও আহত হয়েছেন।
২ দিন আগে
ইসরায়েলি হামলায় দুই সাংবাদিকসহ ৯ ফিলিস্তিনি নিহত
ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকার উত্তরাঞ্চলের বেইত লাহিয়া শহরে ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ৯ জন নিহত হয়েছেন, যার মধ্যে দুইজন স্থানীয় সাংবাদিকও রয়েছেন।
স্থানীয় সময় শনিবার (১৫ মার্চ) একটি গাড়িতে ইসরায়েলের হামলায় এ ঘটনা ঘটেছে বলে এক বিবৃতিতে নিশ্চিত করেছে ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। মিসরে হামাসের সঙ্গে যুদ্ধবিরতির আলোচনা চলার মধ্যেই এই হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল।—খবর ডনের।
এ বিষয়ে প্রত্যক্ষদর্শী ও সহকর্মী সাংবাদিকরা জানান, গাড়িতে থাকা ব্যক্তিরা বেইত লাহিয়ার ‘আল-খায়ের ফাউন্ডেশন’ নামে একটি দাতব্য সংস্থার কাজে নিয়াজিত ছিলেন। হামলার সময় তাদের সঙ্গে সাংবাদিক ও ফটোগ্রাফাররাও ছিলেন।
ফিলিস্তিনি গণমাধ্যমের তথ্যমতে, নিহতদের মধ্যে কমপক্ষে তিনজন স্থানীয় সাংবাদিক রয়েছেন। এ হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে ফিলিস্তিনি সাংবাদিক সিন্ডিকেট। এতে সংঘাতের সময় সাংবাদিকদের সুরক্ষা নিশ্চিতকরণে প্রণীত জেনেভা কনভেনশনের লঙ্ঘন করা হয়েছে বলে সংগঠনটি অভিযোগ করে।
এ ঘটনায় ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে চলমান ভঙ্গুর যুদ্ধবিরতি চুক্তি আরও হুমকির মুখে পড়বে বলে আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা।
আরও পড়ুন: এক মার্কিন জিম্মিকে মুক্তি দেবে হামাস, ইসরায়েলের সন্দেহ
ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা বলছেন, ১৯ জানুয়ারি যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পরও ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ১৫০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। যুদ্ধবিরতি ভেস্তে দিতেই ইসরায়েল এসব কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ করে হামাস।
এ সময় চুক্তি মেনে ধাপে ধাপে যু্দ্ধবিরতির আলোচনায় অগ্রসর হতে ইসরায়েলকে বাধ্য করতে মধ্যস্থতাকারী দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানায় হামাস। এ সময় বর্তমানে আলোচনার স্থবিরতার জন্য ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে দায়ী করে হামাস।গত ১ মার্চ যুদ্ধবিরতির প্রথম ধাপের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর দ্বিতীয় ধাপ নিয়ে শঙ্কা দেখা দেয়। এ ধাপে ৩৩ জন ইসরায়েলি জিম্মিকে ফিরিয়ে দেওয়ার বিনিময়ে আটক কয়েকশ ফিলিস্তিনি বন্দি মুক্তি পেয়েছেন।
চুক্তির মেয়াদ শেষ হলে ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে চলমান মতানৈক্য দূর করে যুদ্ধবিরতি চুক্তি নিয়ে আলোচনা করার জন্য ছয় সপ্তাহের জন্য প্রথম ধাপের মেয়াদ বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছিলেন উইটকফ।
আরও পড়ুন: বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ, সুপেয় পানির সংকটে পড়তে যাচ্ছেন গাজাবাসী
এরপর শনিবার (১ মার্চ) রাতে মুসলমানদের পবিত্র রমজান ও ইহুদিদের পাসওভার (বসন্ত) উৎসব উপলক্ষে আগামী ছয় সপ্তাহের জন্য ফিলিস্তিনের গাজায় যুদ্ধবিরতির মেয়াদ সাময়িকভাবে বাড়ানোর বিষয়টি অনুমোদন করে ইসরায়েল সরকার।
তবে এই প্রস্তাব মানতে অস্বীকৃতি জানায় হামাস। হামাদের মুখপাত্র জানায়, তারা চুক্তি অনুযায়ী দ্বিতীয় ধাপের আলোচনা এগিয়ে নিয়ে যেতে চায়।
বর্তমানে যুদ্ধবিরতির ভবিষ্যত নিয়ে কায়রোতে আলোচনা করছে ইসরায়েল ও হামাসের প্রতিনিধি দল। গাজায় পুনরায় হামলা বন্ধে ইসরায়েলের সঙ্গে আলোচনা করতে এগিয়ে এসেছিলেন হামাস প্রধান খলিল আল হায়া।এরপর শুক্রবার ( ১৪ মার্চ) স্থায়ী যুদ্ধবিরতির শর্তে ইসরাইলের বংশোদ্ভূত এক মার্কিন সেনা এদান আলেকজান্ডারকে মুক্তি দেওয়ার ঘোষণা দেয় হামাস।
আরও পড়ুন: গাজায় মানবিক সহায়তা বন্ধের নির্দেশ দিলেন নেতানিয়াহু
৯ দিন আগে
এক মার্কিন জিম্মিকে মুক্তি দেবে হামাস, ইসরায়েলের সন্দেহ
ইসরাইলের বংশোদ্ভুত এক মার্কিন জিম্মিকে মুক্তি দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। এছাড়া আরও চার দ্বৈত নাগরিকের মৃতদেহ হস্তান্তর করতে মধ্যস্থতাকারীদের প্রস্তাব গ্রহণ করেছে সংগঠনাটি। তবে শুক্রবার (১৪ মার্চ) হামাসের এই ঘোষণাটিকে ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধবিরতির পরবর্তী পর্যায়ে কাতারে চলমান আলোচনাকে প্রভাবিত করার চেষ্টা হিসেবে দেখছে ইসরায়েল। একই সঙ্গে হামাসের বিরুদ্ধে এই প্রস্তাব নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়।
গাজা উপত্যকার নিয়ন্ত্রণকারী হামাস এখনো নিশ্চিত করেনি সৈন্য এদান আলেকজান্ডারকে কখন মুক্তি দেবে এবং মৃতদেহ চারটি কখন হস্তান্তর করবে—আর জিম্মি মুক্তি ও লাশ হস্তান্তরের বিনিময়ে তারা কী আশা করছে।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের অভিযানের সময় ১৯ বছর বয়সি সৈনিক আলেকজান্ডারকে দক্ষিণ ইসরায়েলের গাজা সীমান্তে তার ঘাঁটি থেকে জিম্মি করা হয়। ওই অভিযানটির পর ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে মারাত্মক এবং সবচেয়ে ধ্বংসাত্মক যুদ্ধের শুরু হয়।
তবে কোন মধ্যস্থতাকারী কী প্রস্তাব করেছে এবং হামাস কী নিয়ে আলোচনা করছে—তা যেমন স্পষ্ট নয়। মিশর, কাতার এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আলোচনার দিকনির্দেশনা দিচ্ছে এবং শুক্রবার রাত পর্যন্ত কেউই এই পরামর্শ দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেনি।
আরও পড়ুন: ১ মার্কিন জিম্মিকে মুক্তি দেবে হামাস, ইসরায়েলের সন্দেহ
রাষ্ট্রদূত স্টিভ উইটকফসহ মার্কিন কর্মকর্তারা শুক্রবার বলেছেন, তারা বুধবার যুদ্ধবিরতির মেয়াদ আরও কয়েক সপ্তাহ বাড়ানোর প্রস্তাব উপস্থাপন করেছেন। কর্মকর্তারা এক বিবৃতিতে বলেছেন, হামাস প্রকাশ্যে নমনীয়তা দাবি করছে। তবে এটি ব্যক্তিগতভাবে ‘সম্পূর্ণ অবাস্তব’ দাবি।
ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর কার্যালয় বলেছে, ইসরায়েল ‘উইটকফের রূপরেখা গ্রহণ করেছে এবং নমনীয়তা দেখিয়েছে’, কিন্তু হামাস তা করেনি।
জিম্মি পরিবারগুলোরে কাছে সরকারের পাঠানো একটি চিঠিতে বলা হয়েছে, ‘একই সময়ে, এটি কারসাজি এবং স্নায়ুযুদ্ধ অব্যাহত রেখেছে। আমেরিকান জিম্মিদের মুক্তি দিতে হামাসের ইচ্ছার প্রতিবেদনগুলো আলোচনাকে প্রভাবিত করার উদ্দেশ্যে করা হয়েছে।’
১০ দিন আগে
বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ, সুপেয় পানির সংকটে পড়তে যাচ্ছেন গাজাবাসী
খাদ্যপণ্যসহ সব ধরনের মানবিক সহায়তা বন্ধের পর এবার গাজায় বিদ্যুৎ সরবরাহও বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছে ইসরায়েল। এতে উপত্যকাটির অনুর্বর এলাকায় খাবার পানি পরিশোধনে একটি বিলবণীকরণ কেন্দ্র বন্ধ হয়ে গেছে। ফিলিস্তিনিদের অনাহারে মারতে ইসরায়েল এই নীতি গ্রহণ করেছে বলে দাবি করেছে ইসলামি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাস।
স্থানীয় সময় রবিবার (৯ মার্চ) এক বিবৃতিতে গাজায় বিদ্যুৎ বন্ধ করে দেওয়ার কথা জানিয়েছে ইসরায়েল। যুদ্ধবিরতির প্রথম ধাপের মেয়াদ বাড়াতে হামাসের ওপর চাপ সৃষ্টি করতেই এ ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।-খবর অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের (এপি)।
২০ লাখের বেশি বাসিন্দার গাজা উপত্যকায় গেল সপ্তাহে পণ্য সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছে ইসরায়েল। যুদ্ধের প্রথম দিকেও একই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছিল। বিলবণীকরণ কেন্দ্র বন্ধ হয়ে যাওয়ায় রমজানে উপত্যকাটির বাসিন্দারা নিরাপদ পানি থেকে বঞ্চিত হবেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
গাজায় গত ১৯ জানুয়ারি যুদ্ধবিরতির প্রথম ধাপ কার্যকর হয়। আর এ ধাপে ৩৩ ইসরায়েলি জিম্মিকে ফিরিয়ে দেওয়ার বিনিময়ে আটক কয়েকশ ফিলিস্তিনি বন্দি মুক্তি পেয়েছেন। গত ১ মার্চ প্রথম ধাপের যুদ্ধবিরতির মেয়াদ শেষ হয়েছে। কিন্তু যুদ্ধবিরতি চুক্তির প্রথম ধাপের মেয়াদ আরও বাড়াতে হামাসকে চাপ দিচ্ছে ইসরায়েল।
এদিকে স্থায়ী যুদ্ধবিরতির প্রতিশ্রুতির বিনিময়ে হামাসের হাতে থাকা ইসরায়েলি জিম্মিদের অর্ধেককে মুক্তি করে নিতে চাচ্ছে তারা। কিন্তু হামাস চাচ্ছে, যুদ্ধবিরতির দ্বিতীয় ধাপের আলোচনা শুরু করতে, যেটা আরও কঠিন হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এছাড়া স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠায় গাজা থেকে ইসরায়েলি সেনাও প্রত্যাহার চাচ্ছে ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলনটি।
হামাসের কাছে বর্তমানে ২৪ জীবিত জিম্মি ও ৩৫টি ইসরায়েলি মরদেহ রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। আলোচনা এগিয়ে নিতে সোমবার একটি প্রতিনিধি দল কাতারে পাঠিয়েছে বলে জানিয়েছে ইসরায়েল।
আরও পড়ুন: গাজায় মানবিক সহায়তা বন্ধের নির্দেশ দিলেন নেতানিয়াহু
রবিবার হুঁশিয়ারি করে হামাস জানিয়েছে, খাদ্য ও বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়া হলে জিম্মিদের ওপর ক্ষতিকর প্রভাব পড়বে। বিপরীতে সব ধরনের পানি ও বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ করে দেওয়া হবে বলে হুমকি দিয়েছে ইসরায়েল।
পনেরো মাসের যুদ্ধে গাজা ও সেখানকার সব অবকাঠামো বিধ্বস্ত হয়ে পড়েছে। বিদ্যুতের জন্য হাসপাতালসহ বেশিরভাগ স্থাপনায় বর্তমানে জেনারেটর ব্যবহার করা হচ্ছে।
হামাসের মুখপাত্র হাজেম কাসেম বলেন, ‘যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকেই গাজায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছে ইসরায়েল। কিন্তু সর্বশেষ তারা যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, সেটা হচ্ছে ফিলিস্তিনিদের ক্ষুধায় মারার নীতি। এরমধ্য দিয়ে তারা আন্তর্জাতিক সব নিয়মকানুনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়েছে।’
ফিলিস্তিনিদের চলাচলের স্বাধীনতা সুরক্ষায় কাজ করা ইসরায়েলি সংস্থা গিসা জানিয়েছে, ‘ওই বিলবণীকরণ কেন্দ্র থেকে দৈনিক গড়ে ১৮ হাজার ঘনমিটার পানি পরিশোধন করা হতো। জেনারেটর ব্যবহার করে দুই হাজার ৫০০ ঘনমিটার পানি পরিশোধন করা সম্ভব, যা একটি অলিম্পিক সুইমিংপুলের সমপরিমাণ।’
১৫ দিন আগে
গাজায় মানবিক সহায়তা বন্ধের নির্দেশ দিলেন নেতানিয়াহু
গাজায় যুদ্ধবিরতি চুক্তির প্রথম ধাপের মেয়াদ সাময়িকভাবে বাড়াতে ইসরায়েলের প্রস্তাবে সম্মত না হওয়ায় উপত্যকাটিতে সব ধরনের মানবিক সহায়তা প্রবেশ বন্ধ করে দিয়েছে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু।
স্থানীয় সময় রবিবার (২ মার্চ) তার কার্যালয় থেকে এক বিবৃতির মাধ্যমে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক দূত স্টিভ উইটকফের দেওয়া যুদ্ধবিরতির মেয়াদ সাময়িকভাবে বাড়ানোর প্রস্তাবটি মানতে হামাস অস্বীকৃতি জানানোর পরেই এই পদক্ষেপ নিয়েছে নেতানিয়াহু।
বিষয়টি নিশ্চিত করে ওই বিবৃতিতে বলা হয়, উইটকফের প্রস্তাব না মানায় ও স্থানীয় সময় শনিবার (১ মার্চ) যুদ্ধবিরতি চুক্তির প্রথম ধাপের মেয়াদ শেষ হওয়ায় এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী।
আরও পড়ুন: গাজায় যুদ্ধবিরতি: আরেক দফা বন্দি বিনিময়ে সম্মত ইসরায়েল-হামাস
ইসরায়েলের এই পদক্ষেপের তীব্র নিন্দা জানিয়েছে হামাস। নেতানিয়াহুর এই সিদ্ধান্তকে প্রস্তাব মানতে বাধ্য করার উদ্দেশ্যে ‘সস্তা ব্ল্যাকমেইল’ ও যুদ্ধাপরাধ বলে অভিহিত করেছেন হামাসের এক মুখপাত্র।এ সময় গাজায় সহায়তা সরবরাহ পুনরায় চালু করতে ইসরায়েলকে বাধ্য করার জন্য মধ্যস্থতাকারীদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।এর আগে ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে চলমান মতানৈক্য দূর করে যুদ্ধবিরতি চুক্তি নিয়ে আলোচনা করার জন্য ছয় সপ্তাহের জন্য প্রথম ধাপের মেয়াদ বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছিলেন উইটকফ।
শনিবার রাতে মুসলমানদের পবিত্র রমজান ও ইহুদিদের পাসওভার (বসন্ত) উৎসব উপলক্ষে আগামী ছয় সপ্তাহের জন্য ফিলিস্তিনের গাজায় যুদ্ধবিরতির মেয়াদ সাময়িকভাবে বাড়ানোর বিষয়টি অনুমোদন করে ইসরায়েল সরকার।
উইটকফের দেওয়া ওই প্রস্তাব অনুমোদন করে ইসরায়েল জানায় জিম্মিদের মুক্তির মাধ্যমে তা কার্যকর করা হবে। এরপরে হামাস জানায়, তারা ইসরায়েলের সব জিম্মিকে মুক্তি দিতে রাজি আছে। তবে অবশ্যই তা যুদ্ধবিরতি চুক্তির দ্বিতীয় ধাপে। যেখানে মুক্তি পাবেন ইসরায়েলের কারাগারে থাকা ফিলিস্তিনি বন্দিরা। এছাড়াও হামাসের দাবি একটি স্থায়ী যুদ্ধবিরতি ও গাজা থেকে ইসরায়েলের সেনাপ্রত্যাহার।
আরও পড়ুন: ফিলিস্তিনি বন্দীদের মুক্তি দিতে শুরু করেছে ইসরায়েল
চলতি সপ্তাহে মিসরে ইসরায়েল ও হামাসে মধ্যে যুদ্ধবিরতি চুক্তির দ্বিতীয় ধাপ নিয়ে আলোচনা শুরু করার থাকলেও বেঁকে বসে ইসরায়েল।
ইহুদি রাষ্ট্রটি চাইছে প্রথম ধাপের মেয়াদই সাময়িকভাবে বাড়াতে। অন্যদিকে হামাদের মুখপাত্র জানিয়েছেন, তারা চুক্তি অনুযায়ী দ্বিতীয় ধাপের আলোচনা এগিয়ে নিয়ে যেতে চায়।
যুদ্ধবিরতি চুক্তির নিয়ম অনুযায়ী, দ্বিতীয় ধাপে হামাসের হাতে বন্দি সব জীবিত জিম্মিদের মুক্তির কথা রয়েছে। এ ছাড়াও গাজায় যুদ্ধ বন্ধ করে সেনাপ্রত্যাহার করার শর্তও রয়েছে। এরপর তৃতীয় ধাপে হামাসের হাতে বন্দি অবস্থায় মৃত জিম্মিদের লাশ ফেরত আনার কথা।
তবে ইসরায়েল জানিয়েছে হামাসের হাতে জিম্মিদের মুক্তি দেওয়া না হলে যুদ্ধবিরতি চুক্তি নিয়ে আর কোনো আলোচনা করবে না তারা।
কিন্তু, মেয়াদ বাড়ানোর পরও যদি আলোচনা ফলপ্রসূ না হয় তাহলে ইসরায়েল পুনরায় হামলা চালাতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে হামাস।
এদিকে, প্রথম ধাপের মেয়াদ বাড়ানোর এই প্রস্তাব না মানলে ভয়াবহ পরিণতি ভোগ করতে হবে বলে হামাসকে হুমকি দিয়েছে ইসরায়েল প্রশাসন। ইতোমধ্যে গাজায় মানবিক সহায়তা বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছে ইসরায়েল।হামাসের মুখপাত্র বলেন, গাজায় মানবিক সহায়তা বন্ধের নির্দেশ দিয়ে ইসরায়েল আরেকবার তাদের নিকৃষ্ট মানসিকতার পরিচয় দিয়েছে। তিনি ইসরায়েলের এই নিষ্ঠুরতা বন্ধে আর্ন্তজাতিক সম্প্রদায়কে এগিয়ে আসার আহ্ববান জানিয়েছেন।
প্রসঙ্গত, গাজায় গত ১৯ জানুয়ারি যুদ্ধবিরতির প্রথম ধাপ কার্যকর হয়। আর এ ধাপে ৩৩ জন ইসরায়েলি জিম্মিকে ফিরিয়ে দেওয়ার বিনিময়ে আটক কয়েকশ ফিলিস্তিনি বন্দি মুক্তি পেয়েছে।
আরও পড়ুন: কেমন কাটছে যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজাবাসীর জীবন?
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলীয় সীমান্তে হঠাৎ হামলা চালায় হামাস। সে সময় প্রায় ১ হাজার ২০০ জন ইসরায়েলি নিহত হন। পাশাপাশি আরও প্রায় ২৫০ জনকে জিম্মি করে নিয়ে যান হামাস যোদ্ধারা।
এ ঘটনার প্রতিশোধ নিতে পরের দিন থেকে গাজাজুড়ে ব্যাপক সামরিক অভিযান শুরু করে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী। আকাশ ও স্থলপথে গত প্রায় ১৫ মাস ধরে ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় ৪৮ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে।
অন্যদিকে, এই সময়ে হামাসের ১৭ হাজারের বেশি যোদ্ধাকে হত্যার দাবি করেছে ইসরায়েল। তবে এই তথ্যের পক্ষে তারা কোনো প্রমাণ উপস্থাপন করেনি।
ইসরায়েলের হামলায় ধ্বংসনগরীতে পরিণত হয়েছে গাজা। সেখানকার ৯০ শতাংশ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে; ধ্বংস হয়েছে অবকাঠামো, ভেঙে পড়েছে গাজার স্বাস্থ্যব্যবস্থা। পাশাপাশি লড়াই চলাকালে প্রয়োজনীয় ত্রাণবাহী ট্রাকগুলোকে গাজায় প্রবেশ করতে না দেওয়ায় মানবেতর জীবনযাপন করতে হয়েছে গাজাবাসীর।
সূত্র: এপি/বিবিসি
২৩ দিন আগে
মিসরে দ্বিতীয় ধাপের যুদ্ধবিরতি আলোচনা শুরু, কার্যকারিতা নিয়ে শঙ্কা
ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের মধ্যে চলমান যুদ্ধবিরতির দ্বিতীয় ধাপ নিয়ে প্রতিবেশী দেশ মিসরে আলোচনা শুরু হয়েছে। শনিবারে (১ মার্চ) শেষ হতে যাচ্ছে যুদ্ধবিরতির চুক্তির প্রথম ধাপের ছয় সপ্তাহের মেয়াদ। তবে দ্বিতীয় ধাপের আলোচনার অগ্রগতি নিয়ে রয়েছে আশঙ্কা।
স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) মিসরের রাজধানী কায়রোতে শুরু হয়েছে এই আলোচনা। দেশটির সরকারি তথ্য সেবা দপ্তর এক বিবৃতির মাধ্যমে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, প্রথম দিন চুক্তির দ্বিতীয় ধাপ নিয়ে ইসরায়েল, কাতার ও যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তাদের মধ্যে ব্যাপক আলোচনা হয়েছে।
মধ্যস্থতাকারী দেশগুলো গাজাবাসীর জন্য মানবিক সহায়তা বাড়ানোর উপায় নিয়েও আলোচনা করেছে বলে বিবৃতিতে জানানো হয়েছে।
আরও পড়ুন: ফিলিস্তিনি বন্দীদের মুক্তি দিতে শুরু করেছে ইসরায়েল
চুক্তির প্রথম ধাপে সর্বশেষ বৃহস্পতিবার ভোরে ৪ ইসরায়েলি জিম্মির লাশ হস্তান্তর করেছে হামাস। বিনিময়ে গত শনিবারের স্থগিত হওয়া বন্দিসহ ছয় শতাধিক ফিলিস্তিনিকে মুক্তি দিয়েছে ইসরায়েল।
যুদ্ধবিরতি চুক্তির নিয়ম অনুযায়ী, দ্বিতীয় ধাপে হামাসের হাতে বন্দি সব জীবিত জিম্মিদের মুক্তির কথা রয়েছে। এ ছাড়াও গাজায় যুদ্ধ বন্ধ করে সেনা প্রত্যাহার করার শর্তও রয়েছে। এরপর তৃতীয় ধাপে হামাসের হাতে বন্দি অবস্থায় মৃত জিম্মিদের লাশ ফেরত আনার কথা।
ইসরায়েলের সরকারি হিসাব অনুযায়ী, বর্তমানে হামসের হাতে ৫৯ ইসরায়েলি জিম্মি রয়েছেন, যাদের মধ্যে ২৪ জন জীবিত রয়েছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
তবে দ্বিতীয় ধাপের আলোচনা কতটা সফল হবে, তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন বিশেষজ্ঞরা।
গত ৮ ফেব্রুয়ারি গাজায় যুদ্ধবিরতি ও বন্দিবিনিময় চুক্তির আওতার পঞ্চম পর্যায়ে তিন ইসরায়েলি জিম্মির মুক্তির পর হামাসকে নির্মূল করার ঘোষণা দেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। পরবর্তীকে তাকে সমর্থন করেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও।
আরও পড়ুন: গাজায় যুদ্ধবিরতি: আরেক দফা বন্দি বিনিময়ে সম্মত ইসরায়েল-হামাস
অন্যদিকে, প্রায় ১৫ মাস ধরে চলা ইসরায়েলের বর্বর হামলা সত্ত্বেও নতজানু হয়নি হামাস। যুদ্ধে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছের হামাসের। এছাড়া নিজেদের অনেক সেনা প্রাণ হারালেও অস্ত্র ত্যাগ করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে তারা। ফিলিস্তিনের মুক্তির জন্য লড়াই চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্তে অটল হামাস যোদ্ধারা। এ পরিস্থিতিতে আলোচনার অগ্রগতি নিয়ে আশঙ্কা রয়েই যায়।
অবশ্য চুক্তি অনুযায়ী দ্বিতীয় ধাপের যুদ্ধবিরতি নিয়ে সমঝোতা না হওয়া পর্যন্ত প্রথম ধাপের যুদ্ধবিরতি চলতে থাকবে।
এদিকে, আলোচনা শুরুর কয়েক ঘণ্টা আগে এক ইসরায়েলি কর্মকর্তা জানান, যুদ্ধবিরতির শর্তানুযায়ী গাজার ফিলাডেলফি করিডোর থেকে সৈন্য প্রত্যাহার করা হবে না।
ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাৎস জানান, সম্প্রতি করিডোরটি পরিদর্শনকালে তিনি সেখানে একটি সুড়ঙ্গ দেখতে পেয়েছেন। তবে নিজের বক্তব্যের স্বপক্ষে কোনো প্রমাণ উত্থাপন করেননি।
অবশ্য মিসর ওই সুড়ঙ্গ ধ্বংস করছে বলে জানিয়েছে। পরে দেশটি সেখানে সামরিক বাফার জোন স্থাপন করেছে বলে নিশ্চিত করেছে।
ইসরায়েলের এই ঘোষণাকে যুদ্ধবিরতি চুক্তির সুস্পষ্ট লঙ্ঘন বলে বিবৃতি দিয়েছে হামাস। সংগঠনটি জানিয়েছে, চুক্তি মেনে না চললে বাকি ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্তি দেওয়া হবে না।
হামাস ও ইসরায়েলের এই কঠোর অবস্থান যুদ্ধবিরতি আলোচনাকে আরও জটিল করে তুলবে বলে আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা।
২৫ দিন আগে
এবার অধিকৃত পশ্চিমতীরে ট্যাংক পাঠাল ইসরায়েল
দুই দশকের মধ্যে প্রথমবারের মতো ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডের অধিকৃত পশ্চিমতীরে ট্যাংক পাঠিয়েছে ইসরায়েল। এতে পশ্চিমতীরে অস্থিরতা বাড়বে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন ফিলিস্তিনি কতৃপক্ষ।
ইসরায়েলি প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ বলেছেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর নেতানিয়াহুর সঙ্গে পরামর্শ করে তিনি সেনাবাহিনীকে জোরালো পদক্ষেপ নেওয়ার আদেশ দিয়েছেন। পশ্চিমতীরের শরণার্থী শিবিরে সন্ত্রাসবাদ দমনে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’
এ ছাড়াও তিনি জানান, ‘অঞ্চলটিতে ইসরায়েলের সেনারা এক বছর অবস্থান করবেন। এ সময় কোনো ফিলিস্তিনিকে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না।’
১৯ জানুয়ারি গাজায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার দুদিন পর থেকে পশ্চিমতীরে অভিযানের তীব্রতা বৃদ্ধি করেছে ইসরায়েল। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবরের পর হতে পশ্চিমতীরে এ পর্যন্ত ৮০০ ফিলিস্তিনি প্রাণ হারিয়েছেন, যার মধ্যে আট মাসের গর্ভবতী এক নারীর মৃত্যু বিশ্বজুড়ে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে।
আরও পড়ুন: ফিলিস্তিনি বন্দিদের মুক্তি স্থগিত করল ইসরায়েল: প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়
পশ্চিমতীরে নিজেদের আধিপত্য দীর্ঘস্থায়ী করতে এসব অভিযান চালানো হচ্ছে বলে মনে করছেন ফিলিস্তিনিরা। অঞ্চলটিতে প্রায় ৩০ লাখ ফিলিস্তিনি সামরিক শাসনের অধীনে বাস করেন। এই অভিযানে গাজা উপত্যকার মতো পরিস্থিতি হতে পারে আশঙ্কা করছেন পশ্চিমতীরের ফিলিস্তিনি বাসিন্দারা।
এর আগে, পশ্চিমতীরের কিছু শরণার্থী শিবির এলাকায় সেনাবাহিনীকে দীর্ঘদিন অবস্থানের জন্য প্রস্তুতি নিতে বলেছিলেন ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী। ওই এলাকাগুলো থেকে প্রায় ৪০ হাজার মানুষ প্রাণভয়ে পালিয়ে গেছেন।
কয়েক দশক আগে ইসরায়েলের সঙ্গে যুদ্ধের পর পালিয়ে আসা ফিলিস্তিনিরা এই শিবিরগুলোতে বাস করতেন। চলমান অভিযান কবে শেষ হবে, কবে নাগাদ তাদের ফিরতে দেওয়া হবে; সে বিষয়ে সুস্পষ্ট করে কিছু জানায়নি ইসরায়েল প্রশাসন।
আরও পড়ুন: পশ্চিমতীরে এক হাজার অবৈধ বসতি নির্মাণ করবে ইসরায়েল
প্রতিরক্ষামন্ত্রী কাটজ বলেছেন, ‘সেনাবাহিনী চলতি বছর পুরোটাই অবস্থান করতে পারে।’ নেতানিয়াহু বলেছেন, ‘যতদিন প্রয়োজন, সেনাবাহিনী ততদিন অবস্থান করবে।’
২০০২ সালে শেষবার পশ্চিম তীরে সাঁজোয়া যান পাঠিয়েছিল ইসরায়েল। সে সময় শক্তহাতে ফিলিস্তিনি আন্দোলন দমন করেছিল তেলআবিব।
ইসরায়েলের সাম্প্রতিক অভিযানকে অবৈধ আগ্রাসন হিসেবে নিন্দা জানিয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের হস্তক্ষেপ আহ্বান করেছে ফিলিস্তিনি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। ইসরায়েলি সেনাদের অভিযানে পশ্চিমতীরের অস্থিরতা বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে তারা।
জেনিন থেকে পালিয়ে আসা এক ফিলিস্তিনি মোহাম্মদ আল-সাদি বলেছেন, ‘পশ্চিম তীরের ভূমি আমাদের অধিকার। আমাদের যাওয়ার আর কোনো জায়গা নেই।’
এর আগে বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) ইসরায়েলের বাত ইয়াম ও হোলোন শহরের পার্কিং লটে তিনটি বাসে বিস্ফোরণ ঘটে।
ওই ঘটনার পর ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু গভীর রাতে নিরাপত্তা পর্যালোচনা শেষে পশ্চিম তীরে সন্ত্রাসবিরোধী অভিযান পরিচালনার নির্দেশ দেন।
এছাড়াও রবিবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) সকালে এক ঘোষনার মাধ্যমে জিম্মিদের মুক্তি দেওয়ার সময় ‘অপমানজনক অনুষ্ঠান’ করার অভিযোগ এনে ৬২০ ফিলিস্তিনি বন্দির মুক্তি আটকে দেয় ইসরায়েল প্রশাসন।
এই পরিস্থিতিতে ইসরায়েল-হামাস দ্বিতীয় ধাপের যুদ্ধবিরতি চুক্তি নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে। চুক্তির মধ্যস্ততাকারী দেশ মিসর, কাতার ও যুক্তরাষ্ট্র তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে। তবে বন্দিদের মুক্তি না দিলে কোনো চুক্তি হবেনা বলে জানিয়েছে হামাস। চুক্তির আলোচনা নিয়ে অগ্রগতি নিয়ে ইসরায়েল প্রশাসন থেকেও দেখা যায়নি কোনো দৃশ্যমান উদ্যোগ।
২৯ দিন আগে
দুই জিম্মিকে ছাড়ল হামাস, ইসরায়েল মুক্তি দিল ৬০২ বন্দিকে
যুদ্ধবিরতি চুক্তির আওতায় ৬ জিম্মির দুজনকে মুক্তি দিয়েছে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। বাকিদেরও ছেড়ে দেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে। স্থানীয় সময় শনিবারে (২২ ফেব্রুয়ারি) তাদের মুক্তি দেওয়া হয়েছে। বিপরীতে ৬০২ ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্তি দিয়েছে ইসরায়েল।
এই বন্দি বিনিময়ের মধ্য দিয়ে হামাস-ইসরায়েল যুদ্ধবিরতির প্রথম ধাপ সম্পন্ন হয়েছে। ওই ছয় জিম্মির মধ্যে রয়েছেন, এলিয়া কোহেন (২৭), তাল শোহাম (৪০), ওমরশেম তোভ (২২) ও ওমর ওয়েনকার্ট (২৩)।
ইসরায়েল থেকে যারা মুক্তি পেয়েছেন, তাদের মধ্যে ৫০ জন যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ভোগ করছিলেন। এছাড়া মুক্তি পাওয়া আরও ৬০ বন্দি দীর্ঘদিন ধরে ইসরায়েলে কারাদণ্ড ভোগ করে আসছিলেন। আরও রয়েছেন আগে বন্দিবিনিময় চুক্তিতে মুক্তি পেয়েছিলেন এমন ৪৭ জন। মুক্তি পেতে যাওয়া বাকি ৪৪৫ জন গাজায় যুদ্ধচলাকালীন আটক হয়েছিলেন।
দোহাভিত্তিক আল-জাজিরার খবর বলছে, ফিলিস্তিনি বন্দিদের মুক্তি দেওয়ার আগ পর্যন্ত ব্যাপক নির্যাতন চালিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী।
আরও পড়ুন: হামাস একটি অজ্ঞাত লাশ ফেরত দিয়েছে, অভিযোগ ইসরায়েলের
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামলার হামাসের সদস্যদের হাতে জিম্মি হয়েছিলেন তারা। তবে হিশাম আল-সায়েদ (৩৬) ও আভেরা মেঙ্গিস্তু (৩৯) প্রায় এক দশক আগে গাজায় প্রবেশ করার পর হামাসের হাতে আটক হয়েছিলেন।
এর আগে পাল্টাপাল্টি অভিযোগে বেশ কয়েকবার ভাঙনের মুখে পড়লেও ১৯ জানুয়ারি কার্যকর হওয়া চুক্তিটি শেষ হয়েছে। চুক্তির শর্তানুসারে প্রথম ধাপে ৩৩ জন জীবিত ইসরায়েলি জিম্মিকে হস্তান্তর করার কথা ছিল। এরই মধ্যে বেশির ভাগ জিম্মিকে মুক্তি দিয়েছে হামাস। কয়েকশ ফিলিস্তানিও ইসরায়েলের কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছেন।
এদিকে, বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) যুদ্ধবিরতির চুক্তির আওতায় চলমান বন্দি বিনিময়ের অংশ হিসেবে জিম্মি অবস্থায় মারা যাওয়া চার ইসরায়েলির লাশ ফেরত দেয় হামাস। যাদের মধ্যে ছিল ইসরায়েলের কেফির বিবাস ও এরিয়েলের সঙ্গে তাঁদের মা জিম্মি শিরি বিবাসের মরদেহ।
আরও পড়ুন: হামাস-ইসরায়েল যুদ্ধবিরতি: চলতি সপ্তাহে দ্বিতীয় ধাপের আলোচনা
তবে কেফির ও এরিয়েলের মরদেহ শনাক্ত করা গেলেও শিরির মরদেহের স্থলে অজ্ঞাতনামা একটি মরদেহ শনাক্ত করে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী। অজ্ঞাতনামা মরদেহ হস্তান্তরের মাধ্যমে হামাস যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করেছে বলে অভিযোগ করেছে তারা।
এই ঘটনায় ক্ষুব্ধ ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বোনয়ামিন নেতানিয়াহু প্রতিশোধ নেওয়ার ঘোষণাও দিয়েছেন।
তবে হামাস জানিয়েছে, ২০২৩ সালের নভেম্বরে ইসরায়েলি বিমান হামলায় নিহত শিরি ও তাঁর দুই ছেলের মরদেহ ধ্বংসস্তূপ থেকে উদ্ধারের পর শিরির দেহ অন্য মরদেহের সঙ্গে মিশে গেছে বলে মনে হচ্ছে।
স্থানীয় সময় শুক্রবার (২১ ফেব্রুয়ারি) হামাস আরেকটি মৃতদেহ হস্তান্তর করেছে। ওই মরদেহটি শিরির বলে ইসরায়েলি ফরেনসিক কর্মকর্তারা পরিচয় নিশ্চিত করেছেন বলে নিহতের পরিবার থেকে জানানো হয়েছে।
চলমান এই অস্থিরতা স্বত্তেও শনিবার ৬ জিম্মিকে মুক্তি দেওয়ার ঘোষনা দিয়েছে হামাসের সমরিক শাখা কাশেম ব্রিগেড। আগামী সপ্তাহে আরও ৪ মরদেহ হস্তান্তরের কথা রয়েছে হামাসের।
যুদ্ধ বিরতি চুক্তির দ্বিতীয় ধাপে ৬৪ ইসরায়েলি জিম্মি মুক্তির কথা রয়েছে, বিনিময়ে মুক্তি পাবেন কয়েক শ ফিলিস্তিনি। তবে দ্বিতীয় ধাপের আলোচনা কঠিন হবে বলে মনে করা হচ্ছে।
৩১ দিন আগে
হামাস একটি অজ্ঞাত লাশ ফেরত দিয়েছে, অভিযোগ ইসরায়েলের
যুদ্ধবিরতির চুক্তির আওতায় চলমান বন্দি বিনিময়ের অংশ হিসেবে জিম্মি অবস্থায় মারা যাওয়া চার ইসরায়েলির লাশ ফেরত দিয়েছে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস।
বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) ইসরায়েল বলেছে, তারা ফরেনসিক বিশ্লেষণ নিশ্চিত করেছে যে, হামাসের কাছ থেকে জিম্মি শিরি বিবাসের লাশ হিসেবে পাওয়া মৃতদেহটি তার নয়। শিরি বিবাসের লাশ তার দুই সন্তান এবং অন্য এক ইসরায়েলির লাশের সঙ্গে হস্তান্তর করার কথা ছিল।
এক বিবৃতিতে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী বলেছে, দেশটির ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ফরেনসিক মেডিসিন শনাক্তকরণ প্রক্রিয়ায় জানা গেছে, লাশটি পরিচিত কোনো জিম্মির নয়। এতে বলা হয়, ‘এটি একটি সাধারণ ও অপরিচিত ব্যক্তির মৃতদেহ।’
আরও পড়ুন: দামেস্কে পা রাখতে পেরে আপ্লুত দুই ইহুদি ধর্মাবলম্বী
হামাস চার জিম্মির মৃতদেহ ফেরত দিতে ব্যর্থ হওয়ার জন্য তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘনের অভিযোগ করেছে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী।
বিবাসের দুই ছেলের লাশ শনাক্ত করা হয়েছে। নিহত হওয়ার সময় এরিয়েলের বয়স ছিল চার বছর এবং কাফির বিবাসের বয়স ছিল ১০ মাস।
ইসরায়লি সেনাবাহিনী বলেছে, 'আমাদের কাছে থাকা গোয়েন্দা তথ্য এবং শনাক্তকরণ প্রক্রিয়ার ফরেনসিক তথ্যের ভিত্তিতে ২০২৩ সালের নভেম্বরে এরিয়েল ও কাফিরকে বন্দি অবস্থায় সন্ত্রাসীরা নির্মমভাবে হত্যা করেছে।’
কিব্বুটজ নীর ওজের বাড়ি থেকে মায়ের সঙ্গে শিশুদের অপহরণ করা হয়েছিল। তাদের বাবা ইয়ার্ডেন বিবাসকে আলাদাভাবে নেওয়া হলেও ১ ফেব্রুয়ারি যুদ্ধবিরতি চুক্তির আওতায় তাকে মুক্তি দেওয়া হয়।
এ ছাড়া বৃহস্পতিবার সকালে আরেক জিম্মি অবসরপ্রাপ্ত সাংবাদিক ও শান্তি কর্মী ওদেদ লিফশিটজের লাশ শনাক্ত করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: হামাস-ইসরায়েল যুদ্ধবিরতি: চলতি সপ্তাহে দ্বিতীয় ধাপের আলোচনা
৩২ দিন আগে
হামাস-ইসরায়েল যুদ্ধবিরতি: চলতি সপ্তাহে দ্বিতীয় ধাপের আলোচনা
চলতি সপ্তাহে গাজায় যুদ্ধবিরতির দ্বিতীয় পর্যায় নিয়ে ‘পরোক্ষ’ আলোচনা শুরু করবে ইসরায়েল ও হামাস। মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) এ তথ্য নিশ্চিত করেছে ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস ও ইসরায়েল প্রশাসন।—খবর আল জাজিরার
এদিকে হামাসের নেতা খলিল আল-হায়া বলেছেন, স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) ইসরায়েলের বিবাস পরিবারের সদস্যসহ চার জিম্মির মরদেহ ফেরত দেওয়া হবে। এরপর শনিবার জীবিত ছয় জিম্মিকে হস্তান্তর করা হবে।
ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর কার্যালয় এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। তারা জানায়, বৃহস্পতিবার চার জিম্মির মরদেহ, শনিবার ছয় জীবিত জিম্মি ও এরপর আরও চারজনের মুক্তি নিশ্চিত করতে মিসরের কায়রোতে একটি চুক্তি হয়েছে।
তবে জিম্মিদের পরিচয় প্রকাশে অস্বীকৃতি জানিয়েছে নেতানিয়াহুর কার্যালয়। মৃত জিম্মিদের নাম প্রকাশের আগে তাদের শনাক্তকরণের বিষয়টি নিশ্চিত করা হবে বলে জানিয়েছেন একজন ইসরায়েলি কর্মকর্তা।
আরও পড়ুন: পশ্চিমতীরে এক হাজার অবৈধ বসতি নির্মাণ করবে ইসরায়েল
যুদ্ধবিরতি চুক্তির দ্বিতীয় ধাপের আলোচনা গত ৪ ফেব্রুয়ারি শুরু হওয়ার কথা থাকলেও আনুষ্ঠানিকভাবে তা শুরু হয়নি বলে জানায় কাতার। ইসরায়েলি পররাষ্ট্রমন্ত্রী গিডিয়ন সার জেরুজালেমে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, ‘এটি (দ্বিতীয় ধাপের আলোচনা) এ সপ্তাহেই হবে।’
তিন ধাপের যুদ্ধবিরতির পরবর্তী ধাপের আলোচনায় অংশগ্রহণের বিষয়ে ইসরায়েল গত কয়েক সপ্তাহে মিশ্র সংকেত দিয়েছে।
উল্লেখ্য, গাজায় ১৯ জানুয়ারি যুদ্ধবিরতির প্রথম ধাপ কার্যকর হয়। চুক্তি অনুযায়ী, যুদ্ধবিরতির প্রথম ধাপ ৪২ দিন স্থায়ী হওয়ার কথা রয়েছে। এ ধাপে ৩৩ জন ইসরায়েলি জিম্মিকে ফিরিয়ে দেওয়ার বিনিময়ে আটক কয়েক শ ফিলিস্তিনি ও বন্দিকে মুক্তি দেওয়ার কথা রয়েছে।
চুক্তি লঙ্ঘনের পাল্টাপাল্টি অভিযোগে বাতিল হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হলেও মিসর ও কাতারের মধ্যস্ততায় এখনো চুক্তিটি কার্যকর রয়েছে।
আরও পড়ুন: গাজায় ‘জাহান্নামের সব দরজা’ খুলে দেওয়ার হুমকি ইসরায়েলের
দ্বিতীয় ধাপে ৬৪ ইসরায়েলি জিম্মি মুক্তির কথা রয়েছে, বিনিময়ে মুক্তি পাবেন কয়েক শ ফিলিস্তিনি। তবে দ্বিতীয় ধাপের আলোচনা কঠিন হবে বলে মনে করা হচ্ছে। কারণ, এ ধাপে চুক্তির শর্তে যুদ্ধ পরবর্তী গাজার প্রশাসনের রূপ কেমন হবে, সে বিষয়টি রয়েছে।
এ বিষয়ে ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে বড় মতপার্থক্য রয়েছে। গাজায় হামাসের অস্তিত্ব মেনে নেবে না বলে জানিয়েছেন ইসরায়েলের কর্মকর্তারা।
৩৪ দিন আগে