হামাস
‘আত্মসমর্পণের’ শর্তে দেওয়া যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব প্রত্যাখান করল হামাস
গাজায় সক্রিয় সকল সশস্ত্রগোষ্ঠীকে আত্মসমর্পণ করার শর্তে দেওয়া যুদ্ধবিরতির একটি প্রস্তাব প্রত্যাখান করেছে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস।
একই সঙ্গে ফিলিস্তিনি গোষ্ঠীটি গাজায় ১৮ মাস ধরে চলমান যুদ্ধের অবসান ঘটানোর জন্য যুদ্ধবিরতির প্রচেষ্টাকে ব্যর্থ করার জন্য ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুকে দায়ী করেছে।
সোমবার (১৪ এপ্রিল) হামাসের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা সামি আবু জুহরি আল জাজিরা আরবিকে বলেন, ‘আমাদের জনগণের দুর্ভোগ লাঘবের জন্য সকল প্রস্তাবের জন্য হামাস প্রস্তুত।’ তবে সর্বশেষ খসড়া ইসরায়েলি প্রস্তাবে ফিলিস্তিনিদের ‘আত্মসমর্পণ’ করার জন্য দাবি জানানো হয়েছে।
আবু জুহরি বলেন, ‘নেতানিয়াহু যুদ্ধবিরতি চুক্তিকে ভন্ডুল করার জন্য অবাস্তব শর্ত জুড়ে দিয়েছেন।’
আরও পড়ুন: ইসরায়েলে রকেট হামলা চালালো হামাস, আহত ৩
তিনি বলেন, ‘সর্বশেষ প্রস্তাবে দখলদার ইসরায়েল পূর্ণ যুদ্ধবিরতির প্রতিশ্রুতি দেয়নি, বরং কেবল তারা বন্দীদের গ্রহণ করতে চায়। গাজা যুদ্ধের সমাপ্তি ও উপত্যকা থেকে সরে যাওয়ার শর্তে আমরা জীবিত সব বন্দীর মুক্তি ও মৃতদের লাশ হস্তান্তর করতে প্রস্তুত।’
তিনি আরও বলেন, ‘হামাস আন্দোলনের আত্মসমর্পণের কোনো সুযোগ নেই। আমরা জনগণের আকাঙ্ক্ষাকে নষ্ট করব না..হামাস আত্মসমর্পণ করবে না, সাদা পতাকা উত্তোলন করবে না। দখলদারদের বিরুদ্ধে সকল প্রকার চাপ প্রয়োগ করে যাবে হামাস।’
সবশেষ যুদ্ধবিরতির ইসরায়েলের খসড়া প্রস্তাবে দেখা যায়, এই যুদ্ধবিরতি ৪৫ দিনের জন্য কার্যকর করা হবে। এর অংশ হিসেবে হামাসের হাতে বন্দী থাকা সকল ইসরায়েলিকে পর্যায়ক্রমে মুক্তি দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।
১২ দফার এই প্রস্তাবে বলা হয়েছে, প্রথম সপ্তাহে বন্দী থাকা ইসরায়েলিদের অর্ধেক সংখ্যাকে মুক্তি দিতে হবে। এর বিনিময়ে যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজায় খাবার ও পানীয় প্রবেশের সুযোগ দেবে ইসরায়েল।
উপত্যকাটিতে ৬ সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে খাদ্য, জীবন রক্ষাকারী উপকরণ, ওষুধ, জ্বালানি ও ভোজ্যতেল প্রবেশ করতে দিচ্ছে না যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও পশ্চিমা শক্তিগুলোর মদদপুষ্ট দখলদার ইসরায়েল।
গত সপ্তাহে প্যালেস্টাইন নন-গভর্নমেন্ট অর্গানাইজেশন নেটওয়ার্ক (পিএনওএন) সতর্ক করে বলেছে, গাজার পরিস্থিতি ‘দুর্ভিক্ষের চূড়ান্ত পর্যায়ে’ পৌঁছেছে। ইসরায়েলিদের বোম হামলায় খাদ্যগুদাম, পানি বিশুদ্ধ করার প্ল্যান্ট ও কমিউনিটি রান্নাঘরগুলো ধ্বংস হয়ে গেছে।
গাজায় ‘একটি দানাও’ প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না—ইসরায়েলি অতি ডানপন্থী অর্থমন্ত্রী বেজালের এমন ঘোষণার কয়েক ঘণ্টা পর এই সতর্কবার্তা আসলো।
যুদ্ধ শুরুর পর থেকে জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞ ও অন্যান্য শীর্ষ মানবাধিকার সংস্থাগুলো ইসরায়েলের বিরুদ্ধে গাজায় ফিলিস্তিনিদের ওপর পরিকল্পিতভাবে গণহত্যা চালানোর অভিযোগ তুলে আসছে।
গাজায় গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ এনে গত বছরের নভেম্বরে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়ভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে।
আরও পড়ুন: নতুন যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবে হামাসের সম্মতি, পাল্টা প্রস্তাব ইসরায়েলের
এই গ্রেপ্তারি পয়োনা জারির কয়েকদিন আগে জাতিসংঘের একটি বিশেষ কমিটি গাজায় যু্দ্ধের অস্ত্র হিসেবে দুর্ভিক্ষ তৈরি করার অভিযোগ আনে। যেটিকে ‘সম্ভাব্য গণহত্যা’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করে গত ১৮ মার্চ থেকে চালানো ইসরায়েলি হামলায় ১ হাজার ৫৭৪ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এখন পর্যন্ত ইসরায়েলি হামলায় নিহত হয়েছেন ৫০ হাজার ৯৪৪ জন।
দুইমাসের যুদ্ধবিরতির ফলে গাজায় হামলা বন্ধ করেছিল ইসরায়েল। কিন্ত মার্চের মাঝামাঝি সময়ে আবারও তীব্র হামলা শুরু করে দখলদার বাহিনী। এর কয়েকদিন পর হামাস ইসরায়েলে আবারও রকেট হামলা চালায়।
সূত্র: বিভিন্ন নিউজ এজেন্সি
২ দিন আগে
ইসরায়েলে রকেট হামলা চালালো হামাস, আহত ৩
ইসরায়েলে রকেট হামলা চালিয়েছে ফিলিস্তিনের সশস্ত্র স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাস। দক্ষিণ ইসরায়েলের আশদোদ শহরে চালানো এ হামলায় আহত হয়েছেন তিনজন।স্থানীয় সময় রবিবার (৬ এপ্রিল) এই রকেট হামলা চালানো হয়েছে বলে এক বিবৃতিতে নিশ্চিত করেছে হামাসের সশস্ত্র শাখা কাসেম ব্রিগেড। ফিলিস্তিনের বেসামরিক জনগণের উপর ইসরায়েলের চালানো গণহত্যার জবাবেই এই হামলা চালানো হয়েছে বলে জানিয়েছে তারা।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর মুখপাত্র আভিচয় আদ্রে জানায়, গাজা থেকে ইসরায়েলের শহর লক্ষ্য করে ছোড়া ১০টি রকেট শনাক্ত করেছে তারা। এর বেশিরভাগই ইসরায়েলি সেনারা প্রতিহত করেছেন বলে দাবি করেন তিনি।
ইসরায়েলের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমের বরাতে জানা যায়, আশকেলন শহরে একটি রকেট পড়ায় সেখানে তিনজন আহত হন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, হামলার সময় আশদোদ, আশকেলন ও ইয়াভনি শহরে সর্তকতামূলক সাইরেন বেজে ওঠে।
এ হামলার কড়া জবাব দিতে মধ্য গাজায় চলমান অভিযান আরও জোরদার করতে ইসরায়েলি ডিফেন্স ফোর্সকে (আইডিএফ) নির্দেশ দিয়েছে দেশটির প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু।
আরও পড়ুন: গাজায় ইসরায়েলি হামলায় আরও দুই সাংবাদিক নিহত
এরপর রবিবার রাত থেকেই মধ্য গাজার দেইর আল বালাহ শহরে বিমান হামলা শুরু করে আইডিএফ। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রাতভর লাগাতার বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে। ইসরায়েলের যুদ্ধবিমানগুলো উড়তে দেখা গেছে গাজার আকাশে।এতে আজ (সোমবার) গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বিমান হামলায় অন্তত ৪৪ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এর আগে যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করে গত ১৮ মার্চ থেকে গাজায় বড় আকারের বিমান ও স্থল অভিযান শুরু করেছে ইসরায়েল।
নতুন করে চালানো এসব হামলায় অন্তত ১ হাজার ৩৩৫ জন ফিলিস্তিনি নিহত ও ৩ হাজার ২৯৭ জন আহত হয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছে হামাস শাসিত গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
এদিকে, ২০২৩ সালের পর থেকে ইসরায়েলি হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন ৫০ হাজার ৬৯৫ জন ফিলিস্তিনি, যাদের বেশির ভাগই নারী ও শিশু। আর পোলিও টিকার অভাবে গাজার ৬ লাখ ২ হাজার শিশু স্থায়ীভাবে স্বাস্থ্যঝুঁকিতে রয়েছে।
১০ দিন আগে
নতুন যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবে হামাসের সম্মতি, পাল্টা প্রস্তাব ইসরায়েলের
মিসর ও কাতারের মধ্যস্থতায় নতুন যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হওয়ার কথা জানিয়েছে ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাস। অপরদিকে, যুক্তরাষ্ট্র ও মধ্যস্থতাকারীদের পূর্ণ সহযোগিতায় পাল্টা প্রস্তাব দেওয়ার কথা জানিয়েছে ইসরায়েল।
নিজেদের পাল্টা প্রস্তাব নিয়ে বিস্তারিত কোনো তথ্য দেয়নি ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর কার্যালয়। শনিবার (২৯ মার্চ) তারা জানিয়েছে, শুক্রবার আলাপ-আলোচনার পরই এমন প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।
এদিকে, ফিলিস্তিনি বন্দিদের মুক্তি, একটি স্থায়ী যুদ্ধবিরতি ও গাজা থেকে ইসরায়েলি সেনাদের প্রত্যাহারের বিনিময়ে অবশিষ্ট জিম্মিদের ছেড়ে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছে হামাস।
নড়বড়ে অস্ত্রবিরতি চুক্তিকে পুনর্বহাল করতে চলতি সপ্তাহের শুরুতে একটি প্রস্তাব দিয়েছিল মিসর। যদিও তার আগেই গাজায় নতুন করে সামরিক আগ্রাসন শুরু করে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী। এতে কেবল গত ১৮ মার্চই চার শতাধিক ফিলিস্তিনি নিহত হন, যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু।
হামাস নেতা খলিল আল-হাইয়া নতুন যুদ্ধবিরতিতে রাজি হওয়ার আগে তাতে কোনো পরিবর্তন আনা হয়েছে কিনা, তা নিশ্চিত হওয়া সম্ভব হয়নি।
মিসরের কর্তৃপক্ষ জানিয়েছিল, জীবিত থাকা পাঁচ জিম্মিকে ছেড়ে দেবে হামাস, যাদের মধ্যে একজন আমেরিকান-ইসরায়েলিও রয়েছেন। বিনিময়ে গাজায় মানবিক সহায়তা প্রবেশের অনুমতি দেবে ইসরায়েল। সামরিক আগ্রাসনেও সপ্তাহখানেকের জন্য বিরতি দেবে দখলদার বাহিনী। এছাড়া কয়েকশ ফিলিস্তিনি বন্দিকেও মুক্তি দেওয়ার কথা বলেছিল তারা।
হামাসের হাতে থাকা জিম্মিদের ২৪ জন এখনও জীবিত আছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। তাদের ছেড়ে দেওয়া না হলে যুদ্ধ তীব্রতর করার হুমকি দিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। এ ছাড়াও ইসরায়েলের শর্তের মধ্যে ছিল—হামাসকে নিরস্ত্র হতে হবে, গাজার ক্ষমতা ছাড়তে হবে এবং তাদের নেতাদের দেশের বাইরে নির্বাসনে পাঠাতে হবে।
শনিবার মিসর সীমান্তের কাছাকাছি রাফাহ শহরে স্থল অভিযান প্রসারিত করেছে ইসরায়েল।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের হামলার মধ্য দিয়ে গাজা যুদ্ধ শুরু হয়। তখন ১ হাজার ২০০ ইসরায়েলিকে হত্যা করেছিল হামাস। পাশাপাশি ২৫১ জনকে জিম্মি করে উপত্যকায় নিয়ে যায় তারা। তারপর থেকে গাজাজুড়ে আগ্রাসন চালিয়ে আসছে ইসরায়েল। ইসরায়েলি হামলায় এ পর্যন্ত উপত্যকার ৫০ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।
১৮ দিন আগে
গাজায় হামাসবিরোধী সবচেয়ে বড় বিক্ষোভ
ইসরায়েলের সঙ্গে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে গাজায় হামাসবিরোধী সবচেয়ে বড় বিক্ষোভে অংশ নিয়েছে অবরুদ্ধ উপত্যকাটির শত শত মানুষ। এসময় বিক্ষোভকারীদের দমনে হামাসের সদস্যরা বল প্রয়োগ করেছেন। হামাস সদস্যরা বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে লাঠসোঁটা ও অস্ত্রে সজ্জিত ছিল।
হামাসবিরোধী বিক্ষোভের বেশকিছু ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়েছেন হামাসের সমালোচক অ্যাক্টিভিস্টরা। এতে দেখা যায়, বুধবার (২৬ মার্চ) উপত্যকার বেইত লাহিয়ার রাস্তায় বিক্ষোভে অংশ নেওয়া তরুণরা স্লোগান দিয়ে বলছেন, হামাস তুমি চলে যাও, হামাস তুমি চলে যাও।
বিক্ষোভ নিয়ে হামাস সরাসরি কোনো মন্তব্য করেনি। তবে বুধবার(২৬ মার্চ) এক বিবৃতিতে যুদ্ধ পুনরায় শুরু করার জন্য ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে দায়ী করেছে হামাস।
আরও পড়ুন: ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের জন্য ‘বিশেষ উদ্বেগজনক’ দেশ ভারত, র’য়ের ওপর যুক্তরাষ্ট্রকে নিষেধাজ্ঞার সুপারিশ
অন্যদিকে হামাসের সমর্থকরা বিক্ষোভটিকে গুরুত্বসহকারে দেখছে না এবং অংশগ্রহণকারীদের বিশ্বাসঘাতক বলে অভিযুক্ত করেছে।
ইসলামিক জিহাদের সদস্যরা ইসরায়েলে রকেট হামলা চালানোর একদিন বেইত লাহিয়ার বিশাল অংশ খালি করার নির্দেশ দিয়েছে ইসরায়েল। এর পরই মূলত বাসিন্দাদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয় এবং গাজার উত্তরাঞ্চলে এই বিক্ষোভ শুরু হয়।
প্রায় দুই মাসের যুদ্ধবিরতির পর গাজায় আবারও সামরিক অভিযান শুরু করেছে দখলদার ইসরায়েল৷ যুদ্ধবিরতির মেয়াদ বাড়াতে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন প্রস্তাব হামাস প্রত্যাখান করেছে বলে অভিযোগ ইসরায়েলের৷ অন্যদিকে হামাস অভিযোগ করেছে, জানুয়ারিতে সই করা মূল চুক্তি লঙ্ঘণ করেছে ইসরায়েল।
চলতি মাসের ১৮ তারিখ ইসরায়েলি সামরিক অভিযান পুনরায় শুরুর পর থেকে শত শত ফিলিস্তিনি নিহত এবং হাজার হাজার মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন।
বুধবারের বিক্ষোভে অংশ নেওয়া বেইত লাহিয়ার বাসিন্দা মোহাম্মদ দিয়াব বলেন, এক বছর আগে ইসরায়েলি বিমান হামলায় তার বাড়ি ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল এবং তার ভাইকে তিনি হারিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘আমরা কারও জন্য, কোনো দলের কর্মসূচি বা বিদেশি রাষ্ট্রের স্বার্থের জন্য মরতে রাজি নই।’
তিনি বলেন, ‘হামাসকে অবশ্যই ক্ষমতা থেকে সরে যেতে হবে এবং শোকাহতদের দাবি মানতে হবে, ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে উঠে আসা কণ্ঠস্বর- এটি সবচেয়ে বাস্তব কণ্ঠস্বর।’
সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া শহরটির ভিডিওতে 'হামাসের শাসন নিপাত যাক, মুসলিম ব্রাদারহুডের শাসন নিপাত যাক' বলে বিক্ষোভকারীদের স্লোগান দিতে দেখা গেছে।
ফিলিস্তিনি নির্বাচনে জয়লাভের মাধ্যমে ২০০৭ সাল থেকে গাজা এককভাবে শাসন করছে হাসাস। এর এক বছর আগে সহিংসভাবে প্রতিপক্ষকে উৎখাত করেছিল হামাস।
তবে ২০২৩ সালের শেষ দিকে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে গাজার সড়কে এবং অনলাইনে হামাসের প্রকাশ্য সমালোচনা বেড়েছে। যদিও এখনও এমন অনেকে আছেন যারা প্রচণ্ডভাবে হামাসকে সমর্থন করেন। যদি গোষ্ঠীটি কতটুকু সমর্থন হারিয়েছেন—তা সঠিকভাবে মূল্যায়ন করা কঠিন।
গাজায় যুদ্ধের অনেক আগে থেকেই হামাসের বিরোধিতা ছিল। প্রতিশোধের ভয়ে এর বেশিরভাগই প্রকাশ্যে নয়।
মোহাম্মদ আল-নাজ্জার নামে গাজার এক বাসিন্দা তার ফেসবুকে পোস্টে লিখেছেন, ‘মাফ করবেন, কিন্তু হামাস আসলে কিসের উপর বাজি ধরছে? তারা আমাদের রক্তের উপর বাজি ধরছে, রক্ত যাকে সারা বিশ্ব শুধু সংখ্যা হিসেবে দেখে।’
আরও পড়ুন: ফরাসি ঔপনিবেশিক শাসনকে ‘অপরাধ’ স্বীকৃতি দিচ্ছে আলজেরিয়া
তিনি লিখেছেন, ‘এমনকি হামাসও আমাদের সংখ্যা হিসেবে গণনা করে। পদত্যাগ করুন এবং আমাদের ক্ষতের নিরাময়ের সুযোগ দিন।’
হামাস ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামলা চালালে গাজায় যুদ্ধ শুরু হয়। সেসময় হামাসের হামলা প্রায় ১ হাজার ২০০ জন ইসরায়েলি বেসামরিক নাগরিক নিহত হন। আর ২৫১ জনকে জিম্মি করে গাজায় নিয়ে যায় হামাস।
হামাসকে ধ্বংস করতে গাজায় সামরিক অভিযানের মাধ্যমে ইসরায়েল ওই হামলার জবাব দেয়। হামাস পরিচালিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইসরায়েলের হামলায় ৫০ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।
গাজার ২১ লাখ জনসংখ্যার অধিকাংশই এখন বাস্তুচ্যুত। বাস্তুচ্যুতদের অনেকেই বেশ কয়েকবার বাস্তুচ্যুত হয়েছেন।
গাজায় আনুমানিক ৭০ শতাংশ ভবন ইসরায়েলি হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়েছে। ধসে পড়েছে জনপদটির স্বাস্থ্যসেবা, পানি ও পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা। খাদ্য, জ্বালানি, ওষুধ ও আশ্রয়ের প্রবল সংকটের মুখোমুখি উপত্যকাটির বাসিন্দারা।
সূত্র: বিভিন্ন নিউজ এজেন্সি
২১ দিন আগে
ইসরায়েলি হামলায় হামাসের রাজনৈতিক নেতাসহ নিহত ১৯
ইসরায়েলি বিমান হামলায় হামাসের এক জ্যেষ্ঠ রাজনৈতিক নেতাসহ ১৯ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। শনিবার (২২ মার্চ) দিবাগত রাতে এই হামলা চালানো হয়েছে। নিহতদের মধ্যে কয়েকজন নারী ও শিশুও রয়েছে।
মার্কিন বার্তা সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের খবর অনুসারে, মিসর সীমান্তের রাফাহ শহরের একটি অংশ থেকে লোকজনকে সরে যেতে বলেছে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী।
সেখানকার তেল-সুলতান অঞ্চলে অভিযান পরিচালনার কথা বলেছে তারা। এরইমধ্যে বিমান হামলায় অঞ্চলটি ভয়াবহ ধ্বংসযজ্ঞে পরিণত হয়েছে। গেল মে মাসে সেখানে বড় ধরনের অভিযান চালিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী।
আরও পড়ুন: গাজায় ইসরায়েলি হামলার প্রতিবাদে জাবিতে বিক্ষোভ মিছিল
মিসর সীমান্তের এই শহরটিতে একটি কৌশলগত করিডোর ও রাফাহ ক্রোসিং রয়েছে।
মাওয়াসি এলাকায় একটি একমুখী পথ ধরে পায়ে হেঁটে লোকজনকে চলে যেতে বলা হয়েছে। মাওয়াসিতে ব্যাপক দারিদ্র্যপীড়িত শরণার্থী শিবির রয়েছে, যেখানে উল্লেখ করার মতো সরকারি সেবা নেই।
লোকজনকে চলে যেতে এই নির্দেশ নতুন করে স্থল অভিযানের আভাস দিচ্ছে কিনা; তা এখনো পরিষ্কার না।
এক বিবৃতিতে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র কর্নেল অভিচাই আদ্রেই বলেন, ‘তেল আল-সুলতানের এসব বসতি, তাঁবু কিংবা শারণার্থী শিবিরে থাকা বা অন্য কোনো পথ ধরে হেঁটে যাওয়ার অর্থ হচ্ছে আপনার ও আপনার পরিবারের জীবন ঝুঁকিতে ঠেলে দেওয়া।’
হামাস জানিয়েছে, মাওয়াসিতে ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় স্ত্রীসহ রাজনৈতিক ব্যুরো ও ফিলিস্তিনি পার্লামেন্ট সদস্য সালাহ বারদাওয়েল নিহত হয়েছেন।
ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলনটির রাজনৈতিক শাখার একটি পরিচিত মুখ হলেন সালাহ। বহুবছর ধরে তিনি সংবাদমাধ্যমে সাক্ষাৎকার দিয়ে আসছিলেন।
দক্ষিণাঞ্চলীয় গাজার দুটি হাসপাতাল জানিয়েছে, কয়েকজন নারী ও শিশুসহ তারা সতেরোটি মরদেহ পেয়েছেন। তবে হামাস নেতার ও তার স্ত্রীর মরদেহ সেখানে ছিল না।
আরও পড়ুন: গাজায় ইসরায়েলি হামলায় নারী ও শিশুসহ ১২ ফিলিস্তিনি নিহত
দ্য ইউরোপীয় হাসপাতাল জানিয়েছে, এসব মরদেহের মধ্যে খান ইউনিসের পাঁচটি শিশু ও তাদের বাবা-মা রয়েছেন।
এছাড়া এক নারী ও শিশুর মরদেহ পাওয়ার কথা জানিয়েছে দ্য কুয়েত হাসপাতাল।
রাফাহে হামলার পর সেখানে অ্যাম্বুলেন্স যেতে দিচ্ছে না ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী বলে জানিয়েছে ফিলিস্তিনি রেড ক্রিসেন্ট। তাদের কয়েকজন চিকিৎসকও আহত হয়েছেন।
২৪ দিন আগে
ইসরায়েলি হামলায় দুই সাংবাদিকসহ ৯ ফিলিস্তিনি নিহত
ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকার উত্তরাঞ্চলের বেইত লাহিয়া শহরে ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ৯ জন নিহত হয়েছেন, যার মধ্যে দুইজন স্থানীয় সাংবাদিকও রয়েছেন।
স্থানীয় সময় শনিবার (১৫ মার্চ) একটি গাড়িতে ইসরায়েলের হামলায় এ ঘটনা ঘটেছে বলে এক বিবৃতিতে নিশ্চিত করেছে ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। মিসরে হামাসের সঙ্গে যুদ্ধবিরতির আলোচনা চলার মধ্যেই এই হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল।—খবর ডনের।
এ বিষয়ে প্রত্যক্ষদর্শী ও সহকর্মী সাংবাদিকরা জানান, গাড়িতে থাকা ব্যক্তিরা বেইত লাহিয়ার ‘আল-খায়ের ফাউন্ডেশন’ নামে একটি দাতব্য সংস্থার কাজে নিয়াজিত ছিলেন। হামলার সময় তাদের সঙ্গে সাংবাদিক ও ফটোগ্রাফাররাও ছিলেন।
ফিলিস্তিনি গণমাধ্যমের তথ্যমতে, নিহতদের মধ্যে কমপক্ষে তিনজন স্থানীয় সাংবাদিক রয়েছেন। এ হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে ফিলিস্তিনি সাংবাদিক সিন্ডিকেট। এতে সংঘাতের সময় সাংবাদিকদের সুরক্ষা নিশ্চিতকরণে প্রণীত জেনেভা কনভেনশনের লঙ্ঘন করা হয়েছে বলে সংগঠনটি অভিযোগ করে।
এ ঘটনায় ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে চলমান ভঙ্গুর যুদ্ধবিরতি চুক্তি আরও হুমকির মুখে পড়বে বলে আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা।
আরও পড়ুন: এক মার্কিন জিম্মিকে মুক্তি দেবে হামাস, ইসরায়েলের সন্দেহ
ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা বলছেন, ১৯ জানুয়ারি যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পরও ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ১৫০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। যুদ্ধবিরতি ভেস্তে দিতেই ইসরায়েল এসব কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ করে হামাস।
এ সময় চুক্তি মেনে ধাপে ধাপে যু্দ্ধবিরতির আলোচনায় অগ্রসর হতে ইসরায়েলকে বাধ্য করতে মধ্যস্থতাকারী দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানায় হামাস। এ সময় বর্তমানে আলোচনার স্থবিরতার জন্য ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে দায়ী করে হামাস।গত ১ মার্চ যুদ্ধবিরতির প্রথম ধাপের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর দ্বিতীয় ধাপ নিয়ে শঙ্কা দেখা দেয়। এ ধাপে ৩৩ জন ইসরায়েলি জিম্মিকে ফিরিয়ে দেওয়ার বিনিময়ে আটক কয়েকশ ফিলিস্তিনি বন্দি মুক্তি পেয়েছেন।
চুক্তির মেয়াদ শেষ হলে ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে চলমান মতানৈক্য দূর করে যুদ্ধবিরতি চুক্তি নিয়ে আলোচনা করার জন্য ছয় সপ্তাহের জন্য প্রথম ধাপের মেয়াদ বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছিলেন উইটকফ।
আরও পড়ুন: বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ, সুপেয় পানির সংকটে পড়তে যাচ্ছেন গাজাবাসী
এরপর শনিবার (১ মার্চ) রাতে মুসলমানদের পবিত্র রমজান ও ইহুদিদের পাসওভার (বসন্ত) উৎসব উপলক্ষে আগামী ছয় সপ্তাহের জন্য ফিলিস্তিনের গাজায় যুদ্ধবিরতির মেয়াদ সাময়িকভাবে বাড়ানোর বিষয়টি অনুমোদন করে ইসরায়েল সরকার।
তবে এই প্রস্তাব মানতে অস্বীকৃতি জানায় হামাস। হামাদের মুখপাত্র জানায়, তারা চুক্তি অনুযায়ী দ্বিতীয় ধাপের আলোচনা এগিয়ে নিয়ে যেতে চায়।
বর্তমানে যুদ্ধবিরতির ভবিষ্যত নিয়ে কায়রোতে আলোচনা করছে ইসরায়েল ও হামাসের প্রতিনিধি দল। গাজায় পুনরায় হামলা বন্ধে ইসরায়েলের সঙ্গে আলোচনা করতে এগিয়ে এসেছিলেন হামাস প্রধান খলিল আল হায়া।এরপর শুক্রবার ( ১৪ মার্চ) স্থায়ী যুদ্ধবিরতির শর্তে ইসরাইলের বংশোদ্ভূত এক মার্কিন সেনা এদান আলেকজান্ডারকে মুক্তি দেওয়ার ঘোষণা দেয় হামাস।
আরও পড়ুন: গাজায় মানবিক সহায়তা বন্ধের নির্দেশ দিলেন নেতানিয়াহু
৩১ দিন আগে
এক মার্কিন জিম্মিকে মুক্তি দেবে হামাস, ইসরায়েলের সন্দেহ
ইসরাইলের বংশোদ্ভুত এক মার্কিন জিম্মিকে মুক্তি দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। এছাড়া আরও চার দ্বৈত নাগরিকের মৃতদেহ হস্তান্তর করতে মধ্যস্থতাকারীদের প্রস্তাব গ্রহণ করেছে সংগঠনাটি। তবে শুক্রবার (১৪ মার্চ) হামাসের এই ঘোষণাটিকে ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধবিরতির পরবর্তী পর্যায়ে কাতারে চলমান আলোচনাকে প্রভাবিত করার চেষ্টা হিসেবে দেখছে ইসরায়েল। একই সঙ্গে হামাসের বিরুদ্ধে এই প্রস্তাব নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়।
গাজা উপত্যকার নিয়ন্ত্রণকারী হামাস এখনো নিশ্চিত করেনি সৈন্য এদান আলেকজান্ডারকে কখন মুক্তি দেবে এবং মৃতদেহ চারটি কখন হস্তান্তর করবে—আর জিম্মি মুক্তি ও লাশ হস্তান্তরের বিনিময়ে তারা কী আশা করছে।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের অভিযানের সময় ১৯ বছর বয়সি সৈনিক আলেকজান্ডারকে দক্ষিণ ইসরায়েলের গাজা সীমান্তে তার ঘাঁটি থেকে জিম্মি করা হয়। ওই অভিযানটির পর ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে মারাত্মক এবং সবচেয়ে ধ্বংসাত্মক যুদ্ধের শুরু হয়।
তবে কোন মধ্যস্থতাকারী কী প্রস্তাব করেছে এবং হামাস কী নিয়ে আলোচনা করছে—তা যেমন স্পষ্ট নয়। মিশর, কাতার এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আলোচনার দিকনির্দেশনা দিচ্ছে এবং শুক্রবার রাত পর্যন্ত কেউই এই পরামর্শ দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেনি।
আরও পড়ুন: ১ মার্কিন জিম্মিকে মুক্তি দেবে হামাস, ইসরায়েলের সন্দেহ
রাষ্ট্রদূত স্টিভ উইটকফসহ মার্কিন কর্মকর্তারা শুক্রবার বলেছেন, তারা বুধবার যুদ্ধবিরতির মেয়াদ আরও কয়েক সপ্তাহ বাড়ানোর প্রস্তাব উপস্থাপন করেছেন। কর্মকর্তারা এক বিবৃতিতে বলেছেন, হামাস প্রকাশ্যে নমনীয়তা দাবি করছে। তবে এটি ব্যক্তিগতভাবে ‘সম্পূর্ণ অবাস্তব’ দাবি।
ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর কার্যালয় বলেছে, ইসরায়েল ‘উইটকফের রূপরেখা গ্রহণ করেছে এবং নমনীয়তা দেখিয়েছে’, কিন্তু হামাস তা করেনি।
জিম্মি পরিবারগুলোরে কাছে সরকারের পাঠানো একটি চিঠিতে বলা হয়েছে, ‘একই সময়ে, এটি কারসাজি এবং স্নায়ুযুদ্ধ অব্যাহত রেখেছে। আমেরিকান জিম্মিদের মুক্তি দিতে হামাসের ইচ্ছার প্রতিবেদনগুলো আলোচনাকে প্রভাবিত করার উদ্দেশ্যে করা হয়েছে।’
৩৩ দিন আগে
বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ, সুপেয় পানির সংকটে পড়তে যাচ্ছেন গাজাবাসী
খাদ্যপণ্যসহ সব ধরনের মানবিক সহায়তা বন্ধের পর এবার গাজায় বিদ্যুৎ সরবরাহও বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছে ইসরায়েল। এতে উপত্যকাটির অনুর্বর এলাকায় খাবার পানি পরিশোধনে একটি বিলবণীকরণ কেন্দ্র বন্ধ হয়ে গেছে। ফিলিস্তিনিদের অনাহারে মারতে ইসরায়েল এই নীতি গ্রহণ করেছে বলে দাবি করেছে ইসলামি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাস।
স্থানীয় সময় রবিবার (৯ মার্চ) এক বিবৃতিতে গাজায় বিদ্যুৎ বন্ধ করে দেওয়ার কথা জানিয়েছে ইসরায়েল। যুদ্ধবিরতির প্রথম ধাপের মেয়াদ বাড়াতে হামাসের ওপর চাপ সৃষ্টি করতেই এ ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।-খবর অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের (এপি)।
২০ লাখের বেশি বাসিন্দার গাজা উপত্যকায় গেল সপ্তাহে পণ্য সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছে ইসরায়েল। যুদ্ধের প্রথম দিকেও একই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছিল। বিলবণীকরণ কেন্দ্র বন্ধ হয়ে যাওয়ায় রমজানে উপত্যকাটির বাসিন্দারা নিরাপদ পানি থেকে বঞ্চিত হবেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
গাজায় গত ১৯ জানুয়ারি যুদ্ধবিরতির প্রথম ধাপ কার্যকর হয়। আর এ ধাপে ৩৩ ইসরায়েলি জিম্মিকে ফিরিয়ে দেওয়ার বিনিময়ে আটক কয়েকশ ফিলিস্তিনি বন্দি মুক্তি পেয়েছেন। গত ১ মার্চ প্রথম ধাপের যুদ্ধবিরতির মেয়াদ শেষ হয়েছে। কিন্তু যুদ্ধবিরতি চুক্তির প্রথম ধাপের মেয়াদ আরও বাড়াতে হামাসকে চাপ দিচ্ছে ইসরায়েল।
এদিকে স্থায়ী যুদ্ধবিরতির প্রতিশ্রুতির বিনিময়ে হামাসের হাতে থাকা ইসরায়েলি জিম্মিদের অর্ধেককে মুক্তি করে নিতে চাচ্ছে তারা। কিন্তু হামাস চাচ্ছে, যুদ্ধবিরতির দ্বিতীয় ধাপের আলোচনা শুরু করতে, যেটা আরও কঠিন হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এছাড়া স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠায় গাজা থেকে ইসরায়েলি সেনাও প্রত্যাহার চাচ্ছে ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলনটি।
হামাসের কাছে বর্তমানে ২৪ জীবিত জিম্মি ও ৩৫টি ইসরায়েলি মরদেহ রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। আলোচনা এগিয়ে নিতে সোমবার একটি প্রতিনিধি দল কাতারে পাঠিয়েছে বলে জানিয়েছে ইসরায়েল।
আরও পড়ুন: গাজায় মানবিক সহায়তা বন্ধের নির্দেশ দিলেন নেতানিয়াহু
রবিবার হুঁশিয়ারি করে হামাস জানিয়েছে, খাদ্য ও বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়া হলে জিম্মিদের ওপর ক্ষতিকর প্রভাব পড়বে। বিপরীতে সব ধরনের পানি ও বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ করে দেওয়া হবে বলে হুমকি দিয়েছে ইসরায়েল।
পনেরো মাসের যুদ্ধে গাজা ও সেখানকার সব অবকাঠামো বিধ্বস্ত হয়ে পড়েছে। বিদ্যুতের জন্য হাসপাতালসহ বেশিরভাগ স্থাপনায় বর্তমানে জেনারেটর ব্যবহার করা হচ্ছে।
হামাসের মুখপাত্র হাজেম কাসেম বলেন, ‘যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকেই গাজায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছে ইসরায়েল। কিন্তু সর্বশেষ তারা যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, সেটা হচ্ছে ফিলিস্তিনিদের ক্ষুধায় মারার নীতি। এরমধ্য দিয়ে তারা আন্তর্জাতিক সব নিয়মকানুনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়েছে।’
ফিলিস্তিনিদের চলাচলের স্বাধীনতা সুরক্ষায় কাজ করা ইসরায়েলি সংস্থা গিসা জানিয়েছে, ‘ওই বিলবণীকরণ কেন্দ্র থেকে দৈনিক গড়ে ১৮ হাজার ঘনমিটার পানি পরিশোধন করা হতো। জেনারেটর ব্যবহার করে দুই হাজার ৫০০ ঘনমিটার পানি পরিশোধন করা সম্ভব, যা একটি অলিম্পিক সুইমিংপুলের সমপরিমাণ।’
৩৮ দিন আগে
গাজায় মানবিক সহায়তা বন্ধের নির্দেশ দিলেন নেতানিয়াহু
গাজায় যুদ্ধবিরতি চুক্তির প্রথম ধাপের মেয়াদ সাময়িকভাবে বাড়াতে ইসরায়েলের প্রস্তাবে সম্মত না হওয়ায় উপত্যকাটিতে সব ধরনের মানবিক সহায়তা প্রবেশ বন্ধ করে দিয়েছে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু।
স্থানীয় সময় রবিবার (২ মার্চ) তার কার্যালয় থেকে এক বিবৃতির মাধ্যমে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক দূত স্টিভ উইটকফের দেওয়া যুদ্ধবিরতির মেয়াদ সাময়িকভাবে বাড়ানোর প্রস্তাবটি মানতে হামাস অস্বীকৃতি জানানোর পরেই এই পদক্ষেপ নিয়েছে নেতানিয়াহু।
বিষয়টি নিশ্চিত করে ওই বিবৃতিতে বলা হয়, উইটকফের প্রস্তাব না মানায় ও স্থানীয় সময় শনিবার (১ মার্চ) যুদ্ধবিরতি চুক্তির প্রথম ধাপের মেয়াদ শেষ হওয়ায় এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী।
আরও পড়ুন: গাজায় যুদ্ধবিরতি: আরেক দফা বন্দি বিনিময়ে সম্মত ইসরায়েল-হামাস
ইসরায়েলের এই পদক্ষেপের তীব্র নিন্দা জানিয়েছে হামাস। নেতানিয়াহুর এই সিদ্ধান্তকে প্রস্তাব মানতে বাধ্য করার উদ্দেশ্যে ‘সস্তা ব্ল্যাকমেইল’ ও যুদ্ধাপরাধ বলে অভিহিত করেছেন হামাসের এক মুখপাত্র।এ সময় গাজায় সহায়তা সরবরাহ পুনরায় চালু করতে ইসরায়েলকে বাধ্য করার জন্য মধ্যস্থতাকারীদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।এর আগে ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে চলমান মতানৈক্য দূর করে যুদ্ধবিরতি চুক্তি নিয়ে আলোচনা করার জন্য ছয় সপ্তাহের জন্য প্রথম ধাপের মেয়াদ বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছিলেন উইটকফ।
শনিবার রাতে মুসলমানদের পবিত্র রমজান ও ইহুদিদের পাসওভার (বসন্ত) উৎসব উপলক্ষে আগামী ছয় সপ্তাহের জন্য ফিলিস্তিনের গাজায় যুদ্ধবিরতির মেয়াদ সাময়িকভাবে বাড়ানোর বিষয়টি অনুমোদন করে ইসরায়েল সরকার।
উইটকফের দেওয়া ওই প্রস্তাব অনুমোদন করে ইসরায়েল জানায় জিম্মিদের মুক্তির মাধ্যমে তা কার্যকর করা হবে। এরপরে হামাস জানায়, তারা ইসরায়েলের সব জিম্মিকে মুক্তি দিতে রাজি আছে। তবে অবশ্যই তা যুদ্ধবিরতি চুক্তির দ্বিতীয় ধাপে। যেখানে মুক্তি পাবেন ইসরায়েলের কারাগারে থাকা ফিলিস্তিনি বন্দিরা। এছাড়াও হামাসের দাবি একটি স্থায়ী যুদ্ধবিরতি ও গাজা থেকে ইসরায়েলের সেনাপ্রত্যাহার।
আরও পড়ুন: ফিলিস্তিনি বন্দীদের মুক্তি দিতে শুরু করেছে ইসরায়েল
চলতি সপ্তাহে মিসরে ইসরায়েল ও হামাসে মধ্যে যুদ্ধবিরতি চুক্তির দ্বিতীয় ধাপ নিয়ে আলোচনা শুরু করার থাকলেও বেঁকে বসে ইসরায়েল।
ইহুদি রাষ্ট্রটি চাইছে প্রথম ধাপের মেয়াদই সাময়িকভাবে বাড়াতে। অন্যদিকে হামাদের মুখপাত্র জানিয়েছেন, তারা চুক্তি অনুযায়ী দ্বিতীয় ধাপের আলোচনা এগিয়ে নিয়ে যেতে চায়।
যুদ্ধবিরতি চুক্তির নিয়ম অনুযায়ী, দ্বিতীয় ধাপে হামাসের হাতে বন্দি সব জীবিত জিম্মিদের মুক্তির কথা রয়েছে। এ ছাড়াও গাজায় যুদ্ধ বন্ধ করে সেনাপ্রত্যাহার করার শর্তও রয়েছে। এরপর তৃতীয় ধাপে হামাসের হাতে বন্দি অবস্থায় মৃত জিম্মিদের লাশ ফেরত আনার কথা।
তবে ইসরায়েল জানিয়েছে হামাসের হাতে জিম্মিদের মুক্তি দেওয়া না হলে যুদ্ধবিরতি চুক্তি নিয়ে আর কোনো আলোচনা করবে না তারা।
কিন্তু, মেয়াদ বাড়ানোর পরও যদি আলোচনা ফলপ্রসূ না হয় তাহলে ইসরায়েল পুনরায় হামলা চালাতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে হামাস।
এদিকে, প্রথম ধাপের মেয়াদ বাড়ানোর এই প্রস্তাব না মানলে ভয়াবহ পরিণতি ভোগ করতে হবে বলে হামাসকে হুমকি দিয়েছে ইসরায়েল প্রশাসন। ইতোমধ্যে গাজায় মানবিক সহায়তা বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছে ইসরায়েল।হামাসের মুখপাত্র বলেন, গাজায় মানবিক সহায়তা বন্ধের নির্দেশ দিয়ে ইসরায়েল আরেকবার তাদের নিকৃষ্ট মানসিকতার পরিচয় দিয়েছে। তিনি ইসরায়েলের এই নিষ্ঠুরতা বন্ধে আর্ন্তজাতিক সম্প্রদায়কে এগিয়ে আসার আহ্ববান জানিয়েছেন।
প্রসঙ্গত, গাজায় গত ১৯ জানুয়ারি যুদ্ধবিরতির প্রথম ধাপ কার্যকর হয়। আর এ ধাপে ৩৩ জন ইসরায়েলি জিম্মিকে ফিরিয়ে দেওয়ার বিনিময়ে আটক কয়েকশ ফিলিস্তিনি বন্দি মুক্তি পেয়েছে।
আরও পড়ুন: কেমন কাটছে যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজাবাসীর জীবন?
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলীয় সীমান্তে হঠাৎ হামলা চালায় হামাস। সে সময় প্রায় ১ হাজার ২০০ জন ইসরায়েলি নিহত হন। পাশাপাশি আরও প্রায় ২৫০ জনকে জিম্মি করে নিয়ে যান হামাস যোদ্ধারা।
এ ঘটনার প্রতিশোধ নিতে পরের দিন থেকে গাজাজুড়ে ব্যাপক সামরিক অভিযান শুরু করে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী। আকাশ ও স্থলপথে গত প্রায় ১৫ মাস ধরে ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় ৪৮ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে।
অন্যদিকে, এই সময়ে হামাসের ১৭ হাজারের বেশি যোদ্ধাকে হত্যার দাবি করেছে ইসরায়েল। তবে এই তথ্যের পক্ষে তারা কোনো প্রমাণ উপস্থাপন করেনি।
ইসরায়েলের হামলায় ধ্বংসনগরীতে পরিণত হয়েছে গাজা। সেখানকার ৯০ শতাংশ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে; ধ্বংস হয়েছে অবকাঠামো, ভেঙে পড়েছে গাজার স্বাস্থ্যব্যবস্থা। পাশাপাশি লড়াই চলাকালে প্রয়োজনীয় ত্রাণবাহী ট্রাকগুলোকে গাজায় প্রবেশ করতে না দেওয়ায় মানবেতর জীবনযাপন করতে হয়েছে গাজাবাসীর।
সূত্র: এপি/বিবিসি
৪৫ দিন আগে
মিসরে দ্বিতীয় ধাপের যুদ্ধবিরতি আলোচনা শুরু, কার্যকারিতা নিয়ে শঙ্কা
ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের মধ্যে চলমান যুদ্ধবিরতির দ্বিতীয় ধাপ নিয়ে প্রতিবেশী দেশ মিসরে আলোচনা শুরু হয়েছে। শনিবারে (১ মার্চ) শেষ হতে যাচ্ছে যুদ্ধবিরতির চুক্তির প্রথম ধাপের ছয় সপ্তাহের মেয়াদ। তবে দ্বিতীয় ধাপের আলোচনার অগ্রগতি নিয়ে রয়েছে আশঙ্কা।
স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) মিসরের রাজধানী কায়রোতে শুরু হয়েছে এই আলোচনা। দেশটির সরকারি তথ্য সেবা দপ্তর এক বিবৃতির মাধ্যমে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, প্রথম দিন চুক্তির দ্বিতীয় ধাপ নিয়ে ইসরায়েল, কাতার ও যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তাদের মধ্যে ব্যাপক আলোচনা হয়েছে।
মধ্যস্থতাকারী দেশগুলো গাজাবাসীর জন্য মানবিক সহায়তা বাড়ানোর উপায় নিয়েও আলোচনা করেছে বলে বিবৃতিতে জানানো হয়েছে।
আরও পড়ুন: ফিলিস্তিনি বন্দীদের মুক্তি দিতে শুরু করেছে ইসরায়েল
চুক্তির প্রথম ধাপে সর্বশেষ বৃহস্পতিবার ভোরে ৪ ইসরায়েলি জিম্মির লাশ হস্তান্তর করেছে হামাস। বিনিময়ে গত শনিবারের স্থগিত হওয়া বন্দিসহ ছয় শতাধিক ফিলিস্তিনিকে মুক্তি দিয়েছে ইসরায়েল।
যুদ্ধবিরতি চুক্তির নিয়ম অনুযায়ী, দ্বিতীয় ধাপে হামাসের হাতে বন্দি সব জীবিত জিম্মিদের মুক্তির কথা রয়েছে। এ ছাড়াও গাজায় যুদ্ধ বন্ধ করে সেনা প্রত্যাহার করার শর্তও রয়েছে। এরপর তৃতীয় ধাপে হামাসের হাতে বন্দি অবস্থায় মৃত জিম্মিদের লাশ ফেরত আনার কথা।
ইসরায়েলের সরকারি হিসাব অনুযায়ী, বর্তমানে হামসের হাতে ৫৯ ইসরায়েলি জিম্মি রয়েছেন, যাদের মধ্যে ২৪ জন জীবিত রয়েছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
তবে দ্বিতীয় ধাপের আলোচনা কতটা সফল হবে, তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন বিশেষজ্ঞরা।
গত ৮ ফেব্রুয়ারি গাজায় যুদ্ধবিরতি ও বন্দিবিনিময় চুক্তির আওতার পঞ্চম পর্যায়ে তিন ইসরায়েলি জিম্মির মুক্তির পর হামাসকে নির্মূল করার ঘোষণা দেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। পরবর্তীকে তাকে সমর্থন করেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও।
আরও পড়ুন: গাজায় যুদ্ধবিরতি: আরেক দফা বন্দি বিনিময়ে সম্মত ইসরায়েল-হামাস
অন্যদিকে, প্রায় ১৫ মাস ধরে চলা ইসরায়েলের বর্বর হামলা সত্ত্বেও নতজানু হয়নি হামাস। যুদ্ধে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছের হামাসের। এছাড়া নিজেদের অনেক সেনা প্রাণ হারালেও অস্ত্র ত্যাগ করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে তারা। ফিলিস্তিনের মুক্তির জন্য লড়াই চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্তে অটল হামাস যোদ্ধারা। এ পরিস্থিতিতে আলোচনার অগ্রগতি নিয়ে আশঙ্কা রয়েই যায়।
অবশ্য চুক্তি অনুযায়ী দ্বিতীয় ধাপের যুদ্ধবিরতি নিয়ে সমঝোতা না হওয়া পর্যন্ত প্রথম ধাপের যুদ্ধবিরতি চলতে থাকবে।
এদিকে, আলোচনা শুরুর কয়েক ঘণ্টা আগে এক ইসরায়েলি কর্মকর্তা জানান, যুদ্ধবিরতির শর্তানুযায়ী গাজার ফিলাডেলফি করিডোর থেকে সৈন্য প্রত্যাহার করা হবে না।
ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাৎস জানান, সম্প্রতি করিডোরটি পরিদর্শনকালে তিনি সেখানে একটি সুড়ঙ্গ দেখতে পেয়েছেন। তবে নিজের বক্তব্যের স্বপক্ষে কোনো প্রমাণ উত্থাপন করেননি।
অবশ্য মিসর ওই সুড়ঙ্গ ধ্বংস করছে বলে জানিয়েছে। পরে দেশটি সেখানে সামরিক বাফার জোন স্থাপন করেছে বলে নিশ্চিত করেছে।
ইসরায়েলের এই ঘোষণাকে যুদ্ধবিরতি চুক্তির সুস্পষ্ট লঙ্ঘন বলে বিবৃতি দিয়েছে হামাস। সংগঠনটি জানিয়েছে, চুক্তি মেনে না চললে বাকি ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্তি দেওয়া হবে না।
হামাস ও ইসরায়েলের এই কঠোর অবস্থান যুদ্ধবিরতি আলোচনাকে আরও জটিল করে তুলবে বলে আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা।
৪৭ দিন আগে