পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী তাজুল ইসলাম
ডেঙ্গুর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলেছি: স্থানীয় সরকারমন্ত্রী
স্থানীয় সরকার,পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী তাজুল ইসলাম বলেছেন, ২০১৯ সাল থেকে ডেঙ্গুর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলেছি। ২০২০ সালে সফলতা দেখাতে সক্ষম হয়েছি তুলনামূলকভাবে। ২০২২ সালে পরিস্থিতির অবনতি লক্ষ করছি। যদিও পার্শ্ববর্তী দেশগুলোর পরিস্থিতি আরও খারাপ।
রবিবার সারা দেশে মশাবাহিত রোগ প্রতিরোধ ২০২২ সালের পঞ্চম আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা শেষে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি জানান, ডেঙ্গুতে বাংলাদেশে ১ জানুয়ারি ২০২২ থেকে ২৬ অক্টোবর ২০২২ পর্যন্ত ৩৩ হাজার ৯৩০ জন আক্রান্ত হয়েছে। অন্য দেশগুলোর তুলনায় তা কম হলেও আমরা আরও ভালো করতে চেয়েছি। আমরা চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে চাই।
স্থানীয় সরকারমন্ত্রী বলেন, প্রতিবেশি অন্যান্য দেশের তুলনায় দেশে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা কম হলেও অস্বস্তি আছে। আমরা তুলনাটা (আক্রান্ত) কেন দেই? কারণ আমাদের এখানেতো এডিস মশা ছিল না,ডেঙ্গু রোগ ছিল না। এটাতো বাহির থেকে এসেছে। ফ্লাইটে করে প্যাসেঞ্জার আসছিল, হয়তোবা এর মধ্যে দুটি মশা এসেছে। দুটি মশা এখানে এসে আরও মশা প্রজনন করেছে।
এখন যে ডেঙ্গু হচ্ছে এটা নির্মুল করার পথ কী আপনাদের কাছে নেই-এ প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, এটা নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করা হচ্ছে বলেইতো অবস্থাটা অন্য দেশের তুলনায় এরকম (ভালো)। তাদের (প্রতিবেশি দেশসমূহে) দেশেওতো এটা ছিল না। এটা ইউরোপে ছিল। ফ্রান্সে দেখা গেছে যে একদিনে ৭/৮ হাজার লোক মারা গেছে। এরকম তথ্য আছে আমাদের কাছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এটা আমি বলছি যে হয়তো কোন কারণে অর্থাৎ কোন কোন কারণে আসতে পারে। যেমন আমাদের হয়তো কোন প্যাসেঞ্জার আসছে হয়তো কোভিড যুক্ত তাকে আইডেন্টিফাই করা যায়নি, অথবা কেউ জানে না সে এসে নিজে সুস্থ ছিল কিন্তু রোগী সৃষ্টি করেছে; তেমনিভাবে ফ্লাইটে করে একটি মশা আসতে পারে।’
২০১৯ সালের আগে দেশে ডেঙ্গু রোগের তীব্রতা পরিলক্ষিত হয়নি উল্লেখ করে তিনি বলেন, যে কারণে এ বিষয়ে আমাদের অভিজ্ঞতা খুব বেশি ছিলো না। সে অভিজ্ঞতা আমরা সংগ্রহ করেছি ও কি কি খাতে আমাদের কি কি ইন্টারভেনশন দরকার বা কি কি আউটপুট দরকার সে বিষয়ে কাজ করতে গিয়ে ২০২০ সালে আমরা মোটামুটি সফলতার সঙ্গে নিয়ন্ত্রণে রাখতে পেরেছিলাম।
মন্ত্রী বলেন, ২০২১ সালে ২০ হাজারের মতো আক্রান্ত হয় ও কিছু মৃত্যু হয়। সেটা আমাদের জন্য অস্বস্তিদায়ক ছিলো। এখন ২০২২ সাল এই ২০২২ সালে এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গু রোগের তীব্রতা আমাদের সমসাময়িক দেশগুলোতে মারাত্মকভাবে পরিলক্ষিত হচ্ছে। বাংলাদেশও তার মধ্যে অন্তর্ভুক্ত। সাধারণত আমরা সেপ্টেম্বরের পর থেকে এর নিম্নগামী লক্ষ্য করেছি। প্রতিটি দেশে ক্লাইমেট চেঞ্জের কারণে এই রোগের একটা সম্পৃক্ততা আমরা লক্ষ্য করেছি। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত এ বছর অক্টোবর মাস শেষ হয়ে যাচ্ছে, কিন্তু এখনো এটা নিম্নগামী অবস্থা আসছে না আমাদের দেশে।
তিনি বলেন, মশার জন্য কোনো বর্ডার নেই। বাংলাদেশের অবস্থার থেকে আমাদের পাশ্ববর্তী দেশগুলো অনেকের অবস্থা এর থেকে অনেক ভয়াবহ। ভারতে গতকাল পর্যন্ত প্রায় দুই লাখের মতো আক্রান্ত। বিশেষ করে কোলকাতায় অসংখ্য ও মৃত্যুর হার সেখানে বেশি। ১ অক্টোবর পর্যন্ত সিঙ্গাপুরে ২৮ হাজার ১৯৬ জন আক্রান্ত। আমার মনে হয় এই সংখ্যাটা এখন অনেক বেড়েছে, মালয়েশিয়াতে ৩৭ হাজার ৯৫০ জন, ইন্দোনেশিয়াতে ৯৪ হাজার ৩৫৫ জন, ফিলিপাইনে ১ লাখ ৪৫ হাজার ৬৫০ জন, বাংলাদেশে এখনো পর্যন্ত (২৬ অক্টোবর) ৩৩ হাজার ৯২৩ জন।
মন্ত্রী বলেন, অন্যান্য দেশের সঙ্গে তুলনা করলে যেমন সিঙ্গাপুরে মানুষের সংখ্যা ৫০ লাখের মতো। সেই প্রেক্ষিতে এবং মালয়শিয়া, ইন্দোনেশিয়া,ফিলিপাইনের থেকে আমাদের দেশে জনসংখ্যার পরিমাণ বেশি। তা সত্ত্বেও আমাদের জনসংখ্যার ঘনত্ব ভাইরাস ছড়ানোর জন্য বড় কারণ। এটা তো মশাবাহিত ভাইরাস, সে কারণে যদি ওই ফিগার দেখি তাহলে আমাদেরকে সফল বলতে হবে। কিন্তু আমি এটাকে সফল বলবো না, আমাদের টার্গেট ছিল ২০২০ সালে যে দুই হাজার হয়েছিল,তার থেকে আরও নিচে নামিয়ে আনার।
মন্ত্রী জানান, মশা নিধনের জন্য যেসব উপকরণ প্রয়োজন সেগুলো এবং মশা মারার ওষুধ বছরের শুরুতেই সংগ্রহ করা হয়।তিনি বলেন, এ খাতে তিন হাজার লোকবল দেয়া হয়েছে এবং এ জন্য অর্থ বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। দুই -পাঁচ কোটি টাকা।তিনি আরও বলেন, মশার ওষুধ আমদানির ক্ষেত্রে এক ধরনের মনোপলি ছিলো। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে আমরা মনোপলি ভেঙেছি। আমাদের যে সমস্ত প্রক্রিয়া হাতে আছে, আমরা সেগুলো করছি বলেও জানান তিনি।
আরও পড়ুন: পানির ভবিষ্যৎ চাহিদা পূরণে ওয়াটার গ্রিড লাইন চালু করবে সরকার: স্থানীয় সরকারমন্ত্রী
সৃজনশীল সমাজ প্রতিষ্ঠায় কাজ করতে হবে: স্থানীয় সরকারমন্ত্রী
রাস্তা না রেখে উঁচু উঁচু বিল্ডিং করা কি সমীচিন: স্থানীয় সরকারমন্ত্রীর প্রশ্ন
২ বছর আগে