তারেক ও জুবাইদা
আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে তারেক ও জুবাইদার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা: মির্জা ফখরুল
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অভিযোগ করে বলেছেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও তার স্ত্রী ডা. জুবাইদা রহমানের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা সরকারের রাজনৈতিক প্রতিহিংসার অংশ।
মঙ্গলবার বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরও বলেন, বিরোধী দলকে দমন ও দেশে রাজনৈতিককরণের ক্ষেত্র তৈরি করতে সরকার ‘মিথ্যা’ মামলাকে রাজনৈতিক অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে।
ফখরুল বলেন, ‘আমাদের নেতা তারেক রহমান ও ডা. জুবাইদা রহমানের বিরুদ্ধে যে মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়েছে, তার কোনো ভিত্তি নেই। আওয়ামী লীগ সরকার রাজনৈতিক প্রতিহিংসা থেকে তাদের বাংলাদেশ ও রাজনীতি থেকে দূরে রাখার প্রয়াস হিসেবে এই মামলা করেছে।’
তিনি গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির নিন্দা জানিয়ে অবিলম্বে পরোয়ানা ও মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানান।
এর আগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দায়ের করা একটি মামলায় তারেক ও জুবাইদার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন ঢাকার একটি আদালত।
আরও পড়ুন: বিএনপির এমপিরা পদত্যাগ করতে প্রস্তুত; বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচনের জন্য সরকারকে ক্ষমতা ছাড়তে হবে: ফখরুল
তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র আমলে নিয়ে ঢাকা মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ মো. আসাদুজ্জামানের আদালত এ আদেশ দেন।
শুধু রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে বিএনপি চেয়ারপারসনকে মিথ্যা মামলায় সাজা দিয়ে সরকার ইতোমধ্যে গৃহবন্দি করে রেখেছে বলে মন্তব্য করে ফখরুল বলেন, আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে মিথ্যা মামলা দিয়ে বিদেশে থাকতে বাধ্য করা হচ্ছে। একই সঙ্গে তার সহধর্মীনি যিনি রাজনীতির সঙ্গে একেবারে জড়িত নন, তিনি একজন পেশাজীবী মেধাবী চিকিৎসক। শুধু এই পরিবারের পুত্রবধূ হওয়ার কারণে তার বিরুদ্ধে রাজনৈতিক মামলা নিয়ে আসা হয়েছে এবং গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে।’
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, জুবাইদা একজন অরাজনৈতিক পেশাজীবী হলেও, জিয়া পরিবারকে সরকার ভয় পাওয়ায় তার (জুবাইদা) বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে।
বিএনপি নেতা অভিযোগ করেন, সরকার ১৪ বছর ধরে বিভিন্ন দমন-পীড়নমূলক কর্মকাণ্ড, আইন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে ব্যবহার করে বিএনপি ও জিয়া পরিবারকে রাজনীতি থেকে মুছে ফেলার চেষ্টা করছে।
তিনি সরকারকে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, দেশের জনগণ দলের সঙ্গে থাকায় বিএনপিকে দুর্বল করার সব প্রচেষ্টাই বৃথা যাবে। এত নির্যাতনের পরও বিএনপি ফিনিক্সের মতো জেগে উঠেছে। জনগণের দল হওয়ায় বিএনপির উত্থান ঠেকানোর কোনো উপায় নেই।
জরুরি অবস্থা মোকাবিলার জন্য কোন খাদ্য মজুদ নেই
ফখরুল বলেন, সোমবার তাদের স্থায়ী কমিটির বৈঠকে আগামী বছরের সম্ভাব্য দুর্ভিক্ষ নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সাম্প্রতিক বক্তব্য নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। ‘আমাদের বৈঠকে মনে হয়েছে যে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য স্পষ্টভাবে প্রকাশ করেছে যে সরকার জরুরি পরিস্থিতি মোকাবিলা করার জন্য খাদ্য মজুদ করতে ব্যর্থ হয়েছে।’
তিনি বলেন, গত চার মাসে খাদ্যশস্য আমদানি প্রায় ৩৭ শতাংশ কমে যাওয়ায় বিএনপির নীতিনির্ধারকরা গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
এই বিএনপি নেতা বলেন, ‘খাদ্য মন্ত্রণালয় ও সরকারের খাদ্য অধিদপ্তরের নজিরবিহীন দুর্নীতি, উদাসীনতা ও অযোগ্যতার কারণে দেশের খাদ্য নিরাপত্তা এখন চরম হুমকির মুখে। একইসঙ্গে দুর্নীতি, বিভিন্ন প্রকল্পে অপ্রয়োজনীয় ব্যয় এবং ডলারের ঘাটতির কারণে আমদানি ব্যাহত হচ্ছে।’
রিজার্ভ থেকে অনৈতিকভাবে ডলার প্রত্যাহার এবং হুন্ডির মতো অবৈধ চ্যানেলের মাধ্যমে প্রতি বছর ৭/৮ বিলিয়ন ডলার পাচারের কারণে দেশের অর্থনৈতিক সংকট আরও গভীর হচ্ছে বলেও তিনি দুঃখ প্রকাশ করেন।
সারাদেশে সার, বীজের মূল্যবৃদ্ধি ও সেচ কার্যক্রম ব্যাহত হওয়া এবং বিদ্যুৎ ও ডিজেলের অভাবে খাদ্যশস্যের উৎপাদন ব্যয় বৃদ্ধির বিষয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেন ফখরুল।
আরও পড়ুন: বিএনপির সমাবেশে বিপুল জনসমাগম মানেই তারা গণতন্ত্র ফিরে চায়: ফখরুল
আ.লীগ নেতারা ছিন্নমূল থেকে বিত্তশালী হয়েছে: ফখরুল
২ বছর আগে