সমবায়
কৃষি উৎপাদন বাড়াতে কৃষকদের সমবায় গঠনের আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
দেশে খাদ্য উৎপাদন বাড়াতে কৃষি খাতে সমবায় পদ্ধতির প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, ‘আমাদের সমবায় পদ্ধতিতে এগোতে হবে। যদিও সমবায়ের মাধ্যমে উৎপাদন হচ্ছে, তবে এর প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে যে স্থায়ী উপলব্ধি এখনো গড়ে উঠেনি।’
শুক্রবার বাংলাদেশ কৃষক লীগের ৫২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্যদের সঙ্গে মত বিনিময় অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
এ সময় সমবায় গঠন করে জমি চাষাবাদে জনগণকে উৎসাহিত করতে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন বাংলাদেশ কৃষক লীগের নেতাদের আহ্বান জানান তিনি।
শেখ হাসিনা বলেন, 'আমরা যদি এটা করতে পারি তাহলে আমাদের আর খাদ্যের অভাব হবে না।’
সমবায় ব্যবস্থার ব্যাখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, সমবায় ব্যবস্থাপনায় জমি চাষ করা হবে এবং সমবায়ের অধীনে কৃষিযন্ত্র ক্রয় ও রক্ষণাবেক্ষণ করা হবে।
এই ব্যবস্থার আওতায় জমির মালিকরা লাভের একটি নির্দিষ্ট অংশ পাবেন, কৃষক বা শ্রমিকরা আরেকটি নির্দিষ্ট অংশ পাবেন এবং মার্জিনের অবশিষ্ট অংশ মেশিন, সার, বীজ, চাষাবাদ ও সেচসহ কৃষি উপকরণ ব্যবস্থাপনার জন্য সমবায়ের অধীনে থাকবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার সরকার সমবায়ের প্রচার করতে 'আমার বাড়ি আমার খামার' এবং পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করেছে।
কৃষি খাতে তার সরকারের সাফল্যের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, ২০০৬ সালে ১ কোটি ৮০ লাখ মেট্রিক টন থেকে খাদ্যশস্যের উৎপাদন বেড়ে বর্তমানে ৪ কোটি ৯২ লাখ মেট্রিক টনে দাঁড়িয়েছে। বর্তমানে ৭৯ লাখ হেক্টর জমিতে চাষ হচ্ছে, যা তখন মাত্র ২৮ লাখ হেক্টর জমি ছিল।
এ সময়ে মাছের উৎপাদন ২১ লাখ মেট্রিক টন থেকে বেড়ে ৫৩ দশমিক ১৪ লাখ মেট্রিক টনে দাঁড়িয়েছে। আর গৃহপালিত পশুর সংখ্যা এখন ৭ কোটি ৯৯ লাখ, যা ২০০৬ সালে ছিল ৪ কোটি ২৩ লাখ।
কৃষি গবেষণার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ সবচেয়ে বেশি সফল হয়েছে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, এক সময় মানুষ তাদের পরিবারের জন্য শুধু চাল-নুন বা চাল-ডালের ব্যবস্থা করতে উদ্বিগ্ন থাকলেও এখন তারা মাছ, মাংস, মুরগি ও ডিমের দাম নিয়ে উদ্বিগ্ন।
তিনি বলেন, মানুষ এখন মাছ, মাংস, ডিম ও মুরগির কথা বলে, অর্থাৎ উন্নয়ন হচ্ছে। সরকারের সমালোচকদের এটা স্বীকার করতে বলেন তিনি।
সরকার বর্তমানে কৃষি খাতে ২৬ হাজার কোটি টাকা ঋণ দিচ্ছে উল্লেখ করে তিনি এ খাতে তার সরকারের গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তুলে ধরেন।
প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বর্তমান বিশ্ব পরিস্থিতির মধ্যে এক ইঞ্চি জমিও অনাবাদি না রাখতে এবং সম্পদ ব্যবহারে কৃচ্ছ্রসাধন করতে সবার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
এ সময় বাংলাদেশ কৃষক লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে নেতা-কর্মীদের শুভেচ্ছা জানান তিনি।
অনুষ্ঠানে কৃষক লীগের সভাপতি সমীর চন্দ্র গান্ধীর নেতৃত্বে নেতারা প্রধানমন্ত্রীকে ফুলের তোড়া দিয়ে শুভেচ্ছা জানান।
আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা কৃষক লীগ নেতাদের গণভবন কমপ্লেক্সের অভ্যন্তরে উৎপাদিত বিভিন্ন ধরনের সবজি উপহার দেন।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন বাংলাদেশ কৃষক লীগ ১৯৭২ সালের ১৯ এপ্রিল প্রতিষ্ঠিত হয়।
৬ মাস আগে
বহুমুখী সমবায়ের মাধ্যমে কৃষি যান্ত্রিকীকরণ করা হবে: প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, খাদ্য ও অন্যান্য ফসলের উৎপাদন বাড়াতে সরকার বহুমুখী পল্লী সমবায়ের মাধ্যমে কৃষি যান্ত্রিকীকরণ করবে।
বুধবার ভূমি মন্ত্রণালয়ের সাতটি উদ্যোগের উদ্বোধনের পাশাপাশি তিন দিনব্যাপী প্রথম জাতীয় ভূমি সম্মেলন-২০২৩ এ প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন। ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরীর সভাপতিত্বে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
তিনি বলেন, ‘আমরা বহুমুখী পল্লী সমবায় ব্যবস্থার মাধ্যমে কৃষি যান্ত্রিকীকরণের উদ্যোগ নিচ্ছি, যা প্রাথমিকভাবে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব গ্রহণ করেছিলেন।’
আরও পড়ুন: বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে প্রধানমন্ত্রীর প্রতি ব্রিটিশ-বাংলাদেশিদের সমর্থন অব্যাহত রাখার আহ্বান
স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে ভূমি মন্ত্রণালয়ের ভূমিকা এবং ভূমি সেবার ডিজিটাইজেশনের ভবিষ্যত চ্যালেঞ্জ খুঁজে বের করার ওপর গুরুত্বারোপ করা হবে ২৯ থেকে ৩১ মার্চ পর্যন্ত চলমান এই সম্মেলনে।
সম্মেলনের অন্যান্য উদ্দেশ্যের মধ্যে রয়েছে নাগরিক, সরকারি সংস্থা ও স্টেকহোল্ডারদের ভূমি মন্ত্রণালয় কর্তৃক গৃহীত পদক্ষেপ সম্পর্কে অবহিত করা, ভূমি ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে তাদের মধ্যে সচেতনতা তৈরি করা এবং ভূমি সম্পর্কিত বিদ্যমান আইন ও প্রবিধান সম্পর্কে ধারণা দেওয়া।
প্রধানমন্ত্রী যে সাত উদ্যোগের উদ্বোধন করবেন তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব স্মৃতিস্তম্ভ এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব গুচ্ছগ্রাম কমপ্লেক্স।
অবশিষ্ট ছয় উদ্যোগের মধ্যে রয়েছে রেজিস্ট্রেশন-মিউটেশন আন্তঃসংযোগ, স্মার্ট ল্যান্ড ম্যাপ, স্মার্ট ল্যান্ড রেকর্ডস, স্মার্ট ল্যান্ড পিডিয়া, স্মার্ট ল্যান্ড সার্ভিস সেন্টার ও ইউনিয়ন ভূমি অফিস।
শেখ হাসিনা বলেন, পরিকল্পিত সমবায় ব্যবস্থার আওতায় ফসলের একটি অংশ জমির মালিকদের কাছে, এক অংশ নিয়োজিত শ্রমিকদের কাছে এবং এক অংশ সরকারের কাছে যাবে।
তিনি উল্লেখ করেন যে সরকার জমি সংরক্ষণ ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য এর অংশটি ব্যবহার করবে।
তিনি আরও বলেন, ‘ইতোমধ্যে সমবায় মন্ত্রণালয়কে এ বিষয়ে নীতিমালা প্রণয়নের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আমরা এটাই চাই।’
আরও পড়ুন: রমজানে আন্দোলনের ডাক দেয়ায় বিএনপিকে কটাক্ষ প্রধানমন্ত্রীর
১ বছর আগে
কৃষি উৎপাদন ও জীবিকা নির্বাহের জন্য সমবায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ: যুবকদের প্রতি প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের যুব সমাজকে সমবায়ের মাধ্যমে কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধি এবং গ্রামে বসবাসকারী মানুষের জীবনযাত্রার উন্নয়নে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘সমবায় আমাদের কৃষি উৎপাদন, জীবন ও জীবিকার জন্য একেবারে অপরিহার্য। সমবায় আমাদের মতো ঘনবসতিপূর্ণ দেশের জন্য বিশাল সুযোগ তৈরি করে।’
শনিবার প্রধানমন্ত্রী তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে একটি ভার্চুয়াল প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে (বিআইসিসি) ৫১তম জাতীয় সমবায় দিবস-২০২২ উপলক্ষে এবং জাতীয় সমবায় পুরস্কার-২০২১ প্রদানের আয়োজনে একটি অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করছিলেন।
এসময় শেখ হাসিনা দেশের উন্নয়নে সমবায়কে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয়ার ওপরও জোর দেন।
তিনি বলেন, ‘আমাদের যুব সমাজকে এগিয়ে আসতে হবে। যদি যুব সমাজ এগিয়ে এসে সমগ্র গ্রাম ও মানুষকে এক করে সমবায়ের মাধ্যমে কার্যক্রম চালাতে পারে তাহলে আমরা অনেক দূর এগিয়ে যেতে পারবো।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার সরকার জনগণের জন্য কাজ করছে এবং সুযোগ তৈরি করতে চায়, যাতে প্রত্যেক ব্যক্তি তাদের জীবন ও জীবিকা উন্নত করতে পারে।
তিনি বলেন, তার সরকার বেসরকারি উদ্যোক্তাদের জন্য প্রতিটি খাত খুলে দিয়েছে, যাতে কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়।
মুদ্রাস্ফীতির বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এবং কোভিড-১৯ মহামারির কারণে সারা বিশ্বে পণ্যের দাম বেড়েছে, যার প্রভাব বাংলাদেশেও পড়েছে। এখন প্রায় সব দেশই উচ্চ মূল্যস্ফীতিতে ভুগছে।
তিনি বলেন, ‘প্রত্যেকেরই (প্রত্যেক দেশের) রিজার্ভ ব্যবহার করেই চলতে হচ্ছে। আমাদেরও করতে হচ্ছে এবং সেটা দেশের মানুষের জন্য।’
তিনি বলেন, বাংলাদেশের জনগণ ও কৃষি উৎপাদনের স্বার্থে উচ্চ পরিবহন ব্যয় সত্বেও খুব উচ্চ মূল্যে সার, জ্বালানি ও ভোজ্যতেল কিনতে হবে।
‘বঙ্গবন্ধুর দর্শনই সমবায়ের মাধ্যমে উন্নয়ন’ এই প্রতিপাদ্য নিয়ে এ বছর সারাদেশে দিবসটি পালিত হচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে এলজিআরডি ও সমবায় মন্ত্রী তাজুল ইসলাম এ খাতে অবদানের জন্য ৯টি সমবায় সমিতি এবং একজন ব্যক্তিকে জাতীয় সমবায় পুরস্কার-২০২১ তুলে দেন। প্রত্যেক পুরস্কারপ্রাপ্তকে স্বর্ণপদক ও সনদপত্র দেয়া হয়।
এলজিআরডি ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্যের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় সচিব মশিউর রহমান এবং সমবায় অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. তরুণ কান্তি সিকদার।
১ বছর আগে