ভোগান্তি
ব্যাংকে তারল্য সংকট: টাকা উত্তোলনে ভোগান্তিতে ৬ ব্যাংকের গ্রাহক
সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক লিমিটেডের (এসআইবিএল) সাভার শাখা থেকে রেমিট্যান্সের অর্থ উত্তোলনের চেষ্টা করেছিলেন ৭৩ বছর বয়সি সাদেকুর রহমান।
গত ২৪ অক্টোবর বাবা-মায়ের চিকিৎসাসহ সংসারের খরচের এক লাখ টাকা পাঠান সাদেকুরের ছেলে রইসউদ্দিন।
১৩ নভেম্বর পর্যন্ত সাদেকুর তিন কিস্তিতে ৩৫ হাজার টাকা উত্তোলন করতে সক্ষম হন।
মুঠোফোনে এ প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপকালে সাদেকুর বলেন, সংসারের খরচ মেটাতে কমপক্ষে ৭০ হাজার টাকা তুলতে হবে। কিন্তু এসআইবিএল নগদ অর্থের তীব্র সংকটে থাকায় ব্যাংক কর্মকর্তারা কয়েক কিস্তিতে টাকা নেওয়ার জন্য অনুরোধ করেন।
আরও পড়ুন: সঞ্চয়পত্রের সঙ্গে সংযুক্ত ব্যাংক পরিবর্তন করে অন্য ব্যাংকে স্থানান্তরের উপায়
এমন অভিজ্ঞতা শুধু সাদেকুরের নয়, এস আলম গ্রুপের সঙ্গে যুক্ত সংকটাপন্ন ব্যাংকের বিপুল পরিমাণ খেলাপিঋণের কারণে তাদের অনেক গ্রাহক জমা অর্থে পেতে ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ঋণগ্রহীতারা আত্মগোপনে চলে গেছেন এবং তহবিলের অব্যবস্থাপনার কারণে তাদের ব্যবসা ‘দুর্বল’ হয়ে পড়েছে।
এসআইবিএলের সাভার শাখার কর্মকর্তা আবুল হোসেন (ছদ্মনাম) ইউএনবিকে বলেন, অনেক আমানতকারী তাদের পুরো ব্যালেন্স তুলে নিতে চাচ্ছেন। এ কারণে ব্যাপক সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছে এ ব্যাংক।
তিনি বলেন, এই শাখায় ৮৭ কোটি টাকার আমানত রয়েছে। যদি এক-তৃতীয়াংশ আমানতকারীও স্বল্প সময়ের নোটিশে অর্থ উত্তোলনের চেষ্টা করেন, তবে তা যেকোনো ব্যাংকের জন্য চ্যালেঞ্জিং হবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নিয়ম অনুযায়ী জমা করা অর্থ দীর্ঘমেয়াদি বিভিন্ন ঋণে বিনিয়োগ করা হয়।
আরও পড়ুন: বেক্সিমকো গ্রুপে রিসিভার হলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের ইডি
হোসেন আরও জানান, তারা আমানতকারীদের অল্প পরিমাণে নগদ অর্থ সরবরাহ করছেন এবং তাদের অর্থ কিস্তিতে ফেরত দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।
সম্প্রতি নগদ অর্থের প্রচলন কমলেও ঋণের কিস্তি নিয়মিত করে তা পুনরুদ্ধার করতে কাজ করছে ব্যাংকটির ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ।
আন্তঃব্যাংক মুদ্রাবাজার থেকে তারল্য সহায়তা পেতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গ্যারান্টির আওতায় ইসলামী ব্যাংক, সোস্যাল ইসলামী ব্যাংক, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক (এফএসআইবি), গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক, ন্যাশনাল ব্যাংক ও ইউনিয়ন ব্যাংক আর্থিকভাবে সচ্ছল ব্যাংকগুলোর কাছ থেকে কয়েক হাজার কোটি টাকার তারল্য সহায়তা পেয়েছে।
তা সত্ত্বেও আমানতকারীরা এসব ব্যাংকের শাখা, প্রধান কার্যালয় ও এটিএম বুথে ভিড় জমাচ্ছেন। কিন্তু অনেক সময় তারা প্রয়োজনীয় অর্থ উত্তোলন করতে পারেন না।
ন্যাশনাল ব্যাংক ছাড়াও তারল্য সংকটে থাকা অন্য ব্যাংকগুলোর পর্ষদে এস আলম গ্রুপের নিয়ন্ত্রণকারী অংশীদারত্ব রয়েছে।
আরও পড়ুন: মূল্যস্ফীতি রোধে নীতি সুদহার ১০ শতাংশ বাড়িয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক
ঋণের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ এস আলম গ্রুপের নিয়েছে এবং এসব অর্থ বিদেশে পাচার করা হয়েছে। ফলে ঋণগুলো খেলাপি হয়ে যায়। এতে করে এস আলম গ্রুপের সঙ্গে যুক্ত ব্যাংকগুলোতে গ্রাহকের চাহিদার তুলনায় যথেষ্ট পরিমাণ নগদ ঘাটতি রয়েছে।
এসআইবিএলের ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুহাম্মদ ফোরকানুল্লাহ ইউএনবিকে বলেন, নগদ অর্থের চাহিদা মেটাতে তাৎক্ষণিক তারল্য সমাধানের ব্যবস্থা করতে ব্যাংকটি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সহযোগিতা নিচ্ছে।
ব্যাংকটি গত দুই মাসে গ্রাহকদের কাছ থেকে প্রায় দেড় হাজার কোটি টাকার ঋণের কিস্তি ও আমানত সংগ্রহ করেছে। এটি এসআইবিএলের নগদ প্রবাহকে ত্বরান্বিত করেছে।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এসআইবিএল বর্তমানে আমানতকারীদের প্রয়োজন অনুযায়ী নগদ চাহিদা পূরণ করছে। কিন্তু একাধিক গ্রাহক একসঙ্গে টাকা তোলার চেষ্টা করায় কিছু শাখায় সমস্যা হচ্ছে।
ফরানউল্লাহ আরও বলেন, 'এ সমস্যা সম্পর্কে সবাই সচেতন, তবে গ্রাহকরা যদি তাদের তাৎক্ষণিক প্রয়োজনের বাইরে নগদ উত্তোলন অব্যাহত রাখেন তবে এটি দীর্ঘায়িত হবে। স্বাভাবিক কার্যক্রমে ফিরলে আমানতকারীরা তাদের টাকা পাবেন ব্যাংক।’
আরও পড়ুন: মূল্যস্ফীতি কমাতে ৮ মাস লাগবে: বাংলাদেশ ব্যাংক গভর্নর
এফএসআইবির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবদুল মান্নান বলেন, আন্তঃব্যাংক মুদ্রাবাজার থেকে তারল্য সহায়তার পর স্বাভাবিক ব্যাংকিং কার্যক্রম পুনরায় চালু হয়েছে।
বোর্ড পুনর্গঠনের পর থেকে ব্যাংকটি সফলভাবে ঋণগ্রহীতাদের কাছ থেকে যথেষ্ট তহবিল পুনরুদ্ধার করেছে বলে জানান তিনি।
এফএসআইবির চেয়ারম্যান বলেন, এফএসআইবি গ্রাহকদের মৌলিক চাহিদা, জরুরি চিকিৎসা, জরুরি পরিস্থিতি এবং রেমিট্যান্স এনক্যাশমেন্ট পূরণের জন্য ঋণ পরিশোধকে অগ্রাধিকার দিচ্ছে।
পর্যায়ক্রমে বড় আমানতকারীদের ঋণ পরিশোধেও কাজ করছে ব্যাংকটি।
ন্যাশনাল ব্যাংকের চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু ইউএনবিকে বলেন, গ্রাহকদের অর্থ দিচ্ছে ব্যাংক, যদিও বড় অংকের উত্তোলন প্রক্রিয়া ধাপে ধাপে সম্পন্ন করা হবে।
আরও পড়ুন: ৭ ব্যাংককে ৬৫৮৫ কোটি টাকার তারল্য সহায়তা দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক
তিনি বলেন, এসব সমস্যা রাতারাতি তৈরি হয়নি, বেশ কয়েক বছর ধরে তৈরি হয়েছে।
আমানতকারীদের ধৈর্য ধরার আহ্বান জানিয়ে মিন্টু বলেন, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ব্যাংকের অবস্থার উন্নতি হবে।
৬ দিন আগে
২১ দিন ধরে বন্ধ ফেনী জেনারেল হাসপাতালের ডায়ালাইসিস সেবা
ফেনী ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল বন্যার পানিতে নিচতলা তলিয়ে যাওয়ায় কিছুদিন স্বাস্থ্যসেবা বন্ধ ছিল। পানি কমার পর অন্যান্য সেবা স্বাভাবিক হলেও এখনও বন্ধ রয়েছে হেমোডায়ালাইসিস সেবা। ফলে ভোগান্তিতে পড়েছেন নিয়মিত সেবা নিতে আসা রোগীরা।
দীর্ঘ ২১ দিন ধরে বন্ধ হাসপাতালের কিডনি ডায়ালাইসিস সেন্টার। শহরের মাত্র ৪টি বেসরকারি ক্লিনিকে সেবাটি চালু থাকলেও সেখানে ব্যয় প্রচুর। ফলে সেই ব্যয় মেটাতে না পেরে জীবন সংকটে অনেক হতদরিদ্র, মধ্য ও নিম্নবিত্ত রোগীরা এখানেই চিকিৎসা সেবা নেন।
ইতোমধ্যে সেবা না পেয়ে ২ জন রোগী মারা গেছেন বলে জানা গেছে।
আরও পড়ুন: চমেকে ডায়ালাইসিস ফি বৃদ্ধির প্রতিবাদ: গ্রেপ্তার মোস্তাকিম জামিন পেলেন
সোমবার (৯ সেপ্টেম্বর) সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, হাসপাতালের হেমোডায়ালাইসিস ইউনিট বন্ধ রয়েছে। ৫ থেকে ৬ জন রোগী ডায়ালাইসিস নিতে আসলেও বন্ধ থাকায় চলে যাচ্ছেন তারা। তবে কবে চালু হবে তার সঠিক উত্তর দিতে পারছেন না আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. আসিফ ইকবাল।
তিনি বলেন, হেমোডায়ালাইসিস ইউনিটের মোটর ও কিছু যন্ত্রপাতি নষ্ট হওয়ায় মেরামতের জন্য ঢাকা পাঠিয়েছি। আসলে সেবা পুনরায় চালু হবে।
তিনি আরও বলেন, বন্যার কারণে হাসপাতালের নিচতলা সম্পূর্ণ তলিয়ে গেছে। বাধ্য হয়ে হাসপাতালে দ্বিতীয় তলায় জরুরি সেবা চালু রেখেছি। স্ক্যান ও ডায়ালাইসিস বিভাগ নিচ তলায় হওয়ায় এখনও সেবা কার্যক্রম শুরু করা যায়নি। আশা করছি, কয়েক দিনের মধ্যে সব সেবা কার্যক্রম চালু করা যাবে।
জানা যায়, শুক্রবার ভোরে সুলতানা আক্তার মুন্নী নামে একাডেমি রোডের এক ডায়ালাইসিস রোগী মারা গেছেন। পরশুরামের আরেক রোগী বন্যার কারণে ডায়ালাইসিস করতে না পেরে মারা গেছেন।
মোস্তাফিজুর রহমান নামে এক রোগী বলেন, সরকারি খরচের তুলনায় বেসরকারি হাসপাতালে ডায়ালাইসিস খরচ ৫ থেকে ৬ গুণ বেশি।
তিনি বলেন, হাসপাতালের সেবা বন্ধ রাখায় বেসরকারি ক্লিনিকগুলো এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে প্রচুর টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। ভোগান্তি তো রয়েছেই।
তাছাড়া প্রতি রোগী ২২ হাজার টাকা করে ৬ মাসের জন্য হাসপাতালে জমা দিলেও এখন সেবা পাচ্ছি না বলে জানান মোস্তাফিজুর রহমান।
পরশুরাম উপজেলার মির্জানগর ইউনিয়নের ফাহিমা আক্তার বিথি বলেন, দীর্ঘদিন ধরে কিডনি সমস্যায় ভুগছেন আমার স্বামী। প্রাইভেট হাসপাতালে ডায়ালাইসিসের খরচ বেশি হওয়ায় ফেনী হাসপাতালে ডায়ালাইসিস চলছিল।
তিনি আরও বলেন, বন্যার পরিস্থিতি খারাপ হয়ে যাওয়ায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ডায়ালাইসিস বিভাগের সব যন্ত্রাংশ ওপর তলায় তুলে রোগীদের ছুটি দিয়ে দেন। ২১ দিন পার হলেও এখনও সেবা শুরু হয়নি।
আরও পড়ুন: চমেকে কিডনি ডায়ালাইসিস সেবা ফের বন্ধ ঘোষণা
হাসপাতাল সূত্র জানায়, ফেনীর ৬টি উপজেলাসহ আশেপাশের খাগড়াছড়ি, মিরসরাই, সীতাকুণ্ড, নোয়াখালীর বসুরহাট, সেনবাগ, কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামসহ ৪ জেলার মানুষের একমাত্র ভরসা ফেনী জেনারেল হাসপাতাল। বর্তমানে ২১০ জন কিডনি রোগী ডায়ালাইসিস সেবা নিচ্ছেন। আর এখন প্রায় ৫০০ আবেদন জমা পড়ে আছে। একজন মারা গেলে সিরিয়াল পাবে অন্যজন।
ফেনী জেনারেল হাসপাতালের কিডনি ডায়ালাইসিস বিভাগের প্রধান কিডনি বিশেষজ্ঞ ডা. জয়দেব সাহা বলেন, কিডনি রোগীদের গড়ে সপ্তাহে দুইবার রক্ত ডায়ালাইসিস করতে হয়। এটি করা না গেলে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।
ফেনী জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক আবুল খায়ের মিয়াজীর সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেও তাকে পাওয়া যায়নি।
পরে বিষয়টি জেলা প্রশাসক মোসাম্মৎ শাহীনা আক্তারকে অবগত করা হলে তিনি বিষয়টি দেখবেন বলে জানান।
২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে প্রথমে ৬ শয্যা নিয়ে ডায়ালাইসিস ইউনিট চালু করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
পরে চাহিদা বাড়ায় ধীরে ধীরে উন্নিত করে ১০ শয্যা করে ৩ শিফটে প্রতিদিন ৩০ জন রোগীর নিয়মিত ডায়ালাইসিস করা হচ্ছিল।
পাশাপাশি একজন কনসালটেন্টসহ ২ জন মেডিকেল অফিসারের অধীনে ৯ জন নার্স শিফট অনুযায়ী কর্মরত।
আরও পড়ুন: চমেকে কিডনি ডায়ালাইসিসের ফি বৃদ্ধি: সড়ক অবরোধ করে রোগীদের বিক্ষোভ
২ মাস আগে
ভেঙে পড়েছে খুমেকের চিকিৎসা সেবা, রোগীরা ভোগান্তিতে
ভেঙে পড়েছে খুলনা মেডিকেল কলেজ (খুমেক) হাসপাতালে চিকিৎসা ব্যবস্থা। অজানা কারণে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন পরিচালক ডা. গৌতম কুমার পাল। এরইমধ্যে পদত্যাগ করেছেন হাসপাতালের উপপরিচালক ডা. মো. আকতারুজ্জামান। আর অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়েছে ৪১ চিকিৎসককে। ফলে একরকম বন্ধ হয়ে গেছে খুমেকের চিকিৎসা সেবা।
বুধবার (৪ সেপ্টেম্বর) খুমেকের বহির্বিভাগ ও আন্তঃবিভাগের অর্ধশত চিকিৎসক অনুপস্থিত। ফলে ভোগান্তিতে পড়েছেন রোগীরা।
আরও পড়ুন: খুমেক হাসপাতালে অপর্যাপ্ত শয্যা ও জনবল, চিকিৎসায় ভোগান্তি
দেখা যায়, বহির্বিভাগের ২০২ নম্বর রুমের প্রীতম চক্রবর্তী, ২০৯ নম্বর রুমের ডা. হিমেল সাহা, ২০৭ নম্বর রুমের ডা. অনিরুদ্ধ সরদার, ২০৫ নম্বর রুমের ডা. শেখ তাসনুভা আলম, ২০৪ নম্বর রুমের ডা. সুব্রত কুমার মন্ডল, ২০৩ নম্বর রুমের আরএমও ডা. সুহাস রঞ্জন হালদার, ২১১ নম্বর রুমের ডা. দীপ কুমার দাশ, ২১২ নম্বর রুমের আরএমও ডা. সুমন রায়, ১০৩ নম্বর রুমের ডা. তড়িৎ কান্তি ঘোষ, ৩০৮ নম্বর রুমের ডা. নিরুপম মন্ডল, ২০৪ নম্বর রুমের ডা. আবদুল্লাহ আল মামুন, ৪১১ নম্বর রুমের ডা. রনি দেবনাথ তালুকদার, ৪১০ নম্বর রুমের ডা. মিথুন কুমার পাল, ৪১২ নম্বর রুমের ডা. জিল্লুর রহমান তরুণ, ১০৫ নম্বর রুমের চিকিৎসক শিবেন্দু মিস্ত্রিসহ প্রায় ২০ জন চিকিৎসক অনুপস্থিত।
নিরাপত্তা ঝুঁকিতে তারা আসেননি বলে জানান হাসপাতাল সংশ্লিষ্টরা। এছাড়া আন্তঃবিভাগের সহকারী রেজিস্ট্রার কনসালট্যান্টসহ আরও ২১ জন চিকিৎসক অনুপস্থিত। এতে পুরো হাসপাতালের চিকিৎসা ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। দূর থেকে আসা রোগীরা সেবা না পেয়ে ফেরত যাচ্ছেন।
বাগেরহাট থেকে চিকিৎসা নিতে আসা কুলসুম বেগম বলেন, ব্রেস্ট টিউমার নিয়ে খুমেকে এসেছি। কাউন্টারে টিকিট কেটে কক্ষে এসে দেখি ডাক্তার নেই। এখন ফেরত যেতে হবে। কবে এ অবস্থা ঠিক হবে জানি না।
এসব বিষয়ে খুমেকের পরিচালক, উপপরিচালক, সহকারী পরিচালক, আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) এবং আরএস কেউ কর্মস্থলে না থাকায় কারও বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। এছাড়া তাদের মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলেও কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।
আরও পড়ুন: খুমেকে ইন্টার্ন চিকিৎসকদের কর্মবিরতি
খুলনা বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. মনজুরুল মুর্শিদ বলেন, হাসপাতাল সরাসরি আমাদের অধীনে না। তারপরও আমি বিভাগীয় কমিশনারের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেছি। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে সব জানানো হয়েছে।
মঙ্গলবার খুলনা মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীদের একটি অংশের চাপে হাসপাতালের উপপরিচালক ডা. মো. আকতারুজ্জামান পদত্যাগ করেন।
মঙ্গলবার দুপুরে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সম্মেলন কক্ষে মেডিকেল কলেজের শতাধিক শিক্ষার্থীকে নিয়ে উপস্থিত হন কার্ডিওলোজি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ডা. মোস্তফা কামাল।
তিনি আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত এমন ৪১ জন চিকিৎসকের একটি তালিকা নিয়ে শিক্ষার্থীদের নিয়ে বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকে। এতে ভয়ে দুটি কাগজেই সই করেন ভারপ্রাপ্ত পরিচালক আক্তারুজ্জামান।
এই ৪১ জন চিকিৎসকের মধ্যে পরিচালক, উপপরিচালক, সহকারী পরিচালক, আরএস, আরএমও, রেজিস্ট্রারসহ গুরুত্বপূর্ণ সব পোস্টের চিকিৎসক রয়েছেন।
উপপরিচালক ডা. আক্তারুজ্জামান বলেন, জীবনে কেউ আমাকে আওয়ামী লীগ ও স্বাচিপ কোনো কিছুর প্রাথমিক সদস্য হয়েছি কোনো দিন দেখাতে পারলে আমি সব শাস্তি মাথা পেতে নেব। আমি কোনো দিন সরকারি চাকরি ছাড়া কোনো দিন কোনো আওয়ামী লীগ নেতার সঙ্গে ছবি তুলে ফেসবুকে দিয়েছি এমন কোনো রেকর্ড নেই। বরং আমাকে আওয়ামী লীগ সরকার বারবার শাস্তিমূলক বদলি করেছে। নিচের গ্রেডে নামিয়ে দিয়েছে। এতকিছুর পর গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর ভাবলাম এবার হাসপাতালের জন্য কিছু করতে সুযোগ পাব, কিন্তু আমাকে জোরপূর্বক পদত্যাগ করানো হলো।
আরও পড়ুন: খুমেক হাসপাতালে ডেঙ্গুতে ৩ জনের মৃত্যু
খুলনা মেডিকেল কলেজের ইন্টার্ন চিকিৎসক ফোরামের সদস্য সচিব ডা. তাহমিদ মাশরুর বলেছেন, স্যার ছাত্র আন্দোলনের বিপক্ষে ছিলেন এমন অভিযোগে তাকে সাধারণ শিক্ষার্থীরা পদত্যাগ করিয়েছেন এমন কোনো বিষয়ে ইন্টার্ন চিকিৎসকরা অবগত নন।
২ মাস আগে
চট্টগ্রামে সামান্য বৃষ্টিতেই জলাবদ্ধতা, ভোগান্তিতে কর্মজীবী মানুষ
জলাবদ্ধতার কবল থেকে রেহাই পাচ্ছে না চট্টগ্রামবাসী। কয়েক ঘণ্টার বৃষ্টিতে সৃষ্টি জলাবদ্ধতায় ভোগান্তিতে পড়ছেন কর্মজীবীসহ সাধারণ মানুষ।
রবিবার (১৯ আগস্ট) রাতের বৃষ্টিতেও ডুবে গেছে শহরের নিম্নাঞ্চল। কোনো কোনো এলাকায় হাঁটু থেকে কোমর পর্যন্ত উঠেছে পানি।
এদিকে জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পে ইতোমধ্যে ব্যয় করা হয়েছে হাজার হাজার কোটি টাকা। তবুও মিলছে না সুফল।
আরও পড়ুন: স্পঞ্জ সিটি: ঢাকা ও অন্যান্য শহরে বন্যা-জলাবদ্ধতা সমস্যার সমাধান
সোমবার (১৯ আগস্ট) চট্টগ্রামের আবহাওয়া অফিসের তথ্য অনুযায়ী, সকাল ৯টা থেকে পূর্ববর্তী ২৪ ঘণ্টায় ১১২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বৃষ্টিপাতের কারণে নগরীর মোহাম্মদপুর, মুরাদপুর, পাঁচলাইশ, কাতালগঞ্জ, চকবাজার, মুরাদপুর, শোলকবহর, ২ নম্বর গেট, বাকলিয়া ও আগ্রাবাদসহ বিভিন্ন এলাকার সড়ক পানিতে তলিয়ে গেছে।
এসব এলাকার কোনো কোনো সড়কে কোমর সমান পানি জমেছে।
৯টার পর থেকে ৩১ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে জানিয়ে চট্টগ্রাম আবহাওয়া অফিসের পূর্বাভাস কর্মকর্তা জহিরুল ইসলাম বলেন, ‘সক্রিয় মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে বৃষ্টি হচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘বৃষ্টিপাতের এ ধারা আরও দুইদিন অব্যাহত থাকবে। ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে জলাবদ্ধতার পাশাপাশি পাহাড় ধসের আশঙ্কাও রয়েছে।’
বেসরকারি ব্যাংকের কর্মকর্তা শাহনুর সুলতানা বলেন, ‘আমার বাসা বহদ্দারহাট। বহদ্দারহাট থেকে একে খান হয়ে যেতে হয় অফিসে। বৃষ্টি হলেই বাসার আশপাশ এলাকার সড়ক ডুবে যায়। আজকেও একই অবস্থা। অতিরিক্ত ভাড়া দিয়ে অটোরিকশা নিয়ে অফিসে আসতে হয়েছে।’
চকবাজার এলাকার বাসিন্দা জসিম উদ্দিন বলেন, ‘জলাবদ্ধতার অভিশাপ থেকে কখন রেহাই পাবো আল্লাহ ভালো জানেন। শুনেছি হাজার কোটি টাকার কাজ হয়েছে। প্রত্যেক বছর বলা হয়, আগামী বছর পানি উঠবে না। কিন্তু যে লাউ, সে কদু।’
রাহাত্তারপুল এলাকার বাসিন্দা নাজমুল হুদা সিদ্দিকী বলেন, ‘ছেলেকে নিয়ে স্কুলে যেতে হয়েছে হাঁটু পানিতে। আমরা এই অবস্থার উন্নতি চাই।’
জলাবদ্ধতা নিরসনে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের একটি, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) দুটি ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) একটি প্রকল্পের আওতায় ১১ হাজার ৩৪৪ কোটি টাকার কাজ চলছে।
এই কাজ চলছে প্রায় ৫ বছর ধরে। তবুও মিলছে না সুফল।
আরও পড়ুন: ভারী বৃষ্টিপাতে জলাবদ্ধতা নিরসনে ডিএনসিসির ৫ হাজারের বেশি পরিচ্ছন্নতাকর্মী ও ১০ কিউআরটি
ভারী বৃষ্টিপাতে ঢাকায় জলাবদ্ধতা, ভোগান্তিতে যাত্রীরা
৩ মাস আগে
বেনাপোলে যাত্রীদের উপচে পড়া ভিড়, পেট্রাপোল ইমিগ্রেশনে ভোগান্তি
টানা পাঁচ দিনের ছুটি পেয়ে অনেকেই ছুটছে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে।
তাই শনিবার বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে ভারত ভ্রমণে পাসপোর্ট যাত্রীদের উপচে পড়া ভিড় লক্ষ করা যাচ্ছে।
এদিকে ঈদের ছুটিতে ভারতে যাত্রী যাতায়াত বাড়লেও পেট্রাপোল ইমিগ্রেশনে দুর্ভোগের শিকার হচ্ছে তারা।
আরও পড়ুন: হজযাত্রীদের ইমিগ্রেশন বাংলাদেশে সম্পন্ন করায় সৌদি সরকারকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন রাষ্ট্রদূত জাবেদ পাটোয়ারী
বেনাপোল স্থলবন্দরে সরেজমিনে দেখা যায়, ইমিগ্রেশন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে অপেক্ষা করছেন কয়েক হাজার মানুষ। তাদের সেই লাইন ডেস্ক থেকে বারান্দা পেরিয়ে পৌঁছেছে ইমিগ্রেশন ভবনের বাইরের প্রধান সড়কে। গরম আর রোদের মধ্যে দাঁড়িয়ে আছেন তারা। অন্যদিকে যাত্রীদের চাপে রীতিমত হিমশিম খেতে হচ্ছে ইমিগ্রেশন কর্মকর্তাদের।
বেনাপোল আন্তর্জাতিক ইমিগ্রেশন সূত্রে জানা যায়, ঈদে টানা পাঁচ দিনের সরকারি ছুটি পাওয়ায় ভারতে ভ্রমণকারী ও চিকিৎসা সেবা নিতে যাওয়া যাত্রীদের চাপ বেড়েছে বেনাপোল বন্দরে। তবে এখানে দীর্ঘক্ষণ লাইনে দাঁড়িয়ে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে যাত্রীদের। ঈদের ছুটি উপলক্ষে দুই দিনে বৃহস্পতিবার থেকে শনিবার দুপুর পর্যন্ত দুই দেশের মধ্যে যাতায়াত করেছেন প্রায় ২২ হাজার ১১৩ মানুষ। এর মধ্যে ভারতে গিয়েছেন ১৫ হাজার ৩৬৩ জন এবং ভারত থেকে বাংলাদেশে এসেছেন ৬ হাজার ৭৫০ জন মানুষ।
ভারতগামী যাত্রী নাসিম রানা বলেন, ‘ঈদের ছুটিতে ভারতে ঘুরতে যাচ্ছি। কিন্তু এখানে দীর্ঘ তিন ঘণ্টা তীব্র গরম আর রোদের মধ্যে লাইনে দাঁড়িয়ে আছি। ইমিগ্রেশন কর্মকর্তারা ধীরগতিতে কাজ করায় দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। তবে কখন ইমিগ্রেশন পার হব বলতে পারছি না।’
যাত্রীদের দুর্ভোগ নিরসনে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে কার্যকরী পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানান তিনি।
আরও পড়ুন: পূজায় ৭ দিন বন্ধ হিলি স্থলবন্দরে পণ্য আমদানি-রপ্তানি, খোলা ইমিগ্রেশন
বেনাপোল ইমিগ্রেশন চেকপোস্টের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আজহারুল ইসলাম বলেন, ঈদের ছুটি উপলক্ষে বৃহস্পতিবার (১৩ জুন) থেকে শনিবার দুপুর পর্যন্ত ২২ হাজারের বেশি যাত্রী দুই দেশের মধ্যে যাতায়াত করেছেন।
তিনি আরও বলেন, স্বাভাবিক সময়ে এ সংখ্যা পাঁচ থেকে ছয় হাজারের মধ্যে থাকে। তবে এবার রেকর্ডসংখ্যক যাত্রী যাতায়াত করেছেন। যাদের অধিকাংশই ঈদ ভ্রমণ ও চিকিৎসার জন্য ভারতে গমন করেন।
তিনি বলেন, ঈদের সময়ে যাত্রীদের চাপ বৃদ্ধির বিষয়টি মাথায় নিয়ে বাড়তি প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। তবে দ্রুত যাতে তারা পাসপোর্টের কার্যক্রম শেষ করতে পারেন সেজন্য সহযোগিতা করা হচ্ছে।
এ ছাড়া পেট্রাপোলে দুর্ভোগের বিষয়ে তিনি বলেন, পেট্রাপোল ইমিগ্রেশন ওসির সঙ্গে সবসময় যোগাযোগ হচ্ছে। যাত্রীদের ভোগান্তি কমাতে তাদের তাগিদ দেওয়া হয়েছে।
আজহারুল ইসলাম বলেন, ওসি জানিয়েছেন, ইমিগ্রেশনে দেরি হচ্ছে না। দেরি হওয়ার মূল কারণ বিএসএফের তল্লাশি। এরপরও যাত্রীসেবার মান বাড়াতে কর্মকর্তাদের তাগিদ দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: মালয়েশিয়ার ইমিগ্রেশনের মহাপরিচালকের সঙ্গে বাংলাদেশের হাইকমিশনারের বিদায়ী সাক্ষাৎ
৫ মাস আগে
এবারের ঈদে সবচেয়ে বেশি ভোগান্তির শিকার হয়েছে সাধারণ মানুষ: ফখরুল
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, সব পণ্যের চড়া দামের কারণে এবারের ঈদুল ফিতর দেশের সাধারণ মানুষের জন্য আনন্দের হয়নি।
বৃহস্পতিবার বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের সমাধিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে তিনি এ কথা বলেন।
ফখরুল বলেন, এবারের ঈদ বাংলাদেশের মানুষের জন্য দুঃখ বয়ে এনেছে।
তিনি বলেন, 'ঈদে সাধারণত পরিবারের সদস্যদের জন্য নতুন জামাকাপড় কেনার চেষ্টা করে এবং ভালো খাবারের ব্যবস্থা করে। কিন্তু এ বছর নিত্যপ্রয়োজনীয় প্রায় সব পণ্যের (বস্ত্র, খাবার) দাম তাদের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে যাওয়ায় এক শ্রেণির মানুষ তাদের ঈদের চাহিদা মেটাতে ব্যর্থ হয়েছে।
এ অবস্থার জন্য সরকারই দায়ী বলেও মন্তব্য করেন বিএনপি মহাসচিব।
বর্তমান সরকার তাদের গভীর পরিকল্পনার অংশ হিসেবে বাংলাদেশের অর্থনীতি ধ্বংস করছে।
গত ১৫ বছরে বাংলাদেশের অর্থনীতি পরনির্ভরশীল হয়ে পড়েছে বলে দাবি তার।
বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষে দেশবাসীকে ঈদের শুভেচ্ছা জানান ফখরুল।
তিনি বলেন, দেশ কঠিন সময় পার করছে। শুধু বিএনপির নেতা-কর্মীরাই নয়, অন্যান্য রাজনৈতিক দলের সমর্থক-কর্মীরাও কারাগারে বন্দি রয়েছেন।
তিনি বরেন, ক্ষমতাসীন মহল বিএনপির উল্লেখযোগ্যসংখ্যক নেতা-কর্মীকে হত্যা করেছে, গুম করেছে। এছাড়া বিএনপি নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে প্রায় দেড় লাখ মামলা দিয়ে ৫০ লাখ নেতা-কর্মীকে আসামি করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, অমানবিক নির্যাতনের মধ্যেও দেশের মানুষ গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার, ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য এই জালিম সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন অব্যাহত রেখেছে।
এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণের আশাবাদ ব্যক্ত করে ফখরুল বলেন, 'আমরা বিশ্বাস করি, দেশের জনগণের সহযোগিতায় এই ভয়াবহ পরিবেশ বদলে যাবে।’
তিনি বলেন, বিএনপি গণতন্ত্র, মানুষের অর্থনৈতিক মুক্তি ও ভোটের অধিকার ফিরিয়ে আনবে।
৭ মাস আগে
লালমনিরহাটে সেতুর অভাবে ভোগান্তিতে ২০ হাজার মানুষ
লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার ভেলাবাড়ী ইউনিয়নের মহিষতুলি মালদাহা নদীতে সেতু না থাকায় সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে এলাকাবাসীদের।
নদীটি পারাপারে নৌকা ব্যবহার করতে হয় স্থানীয়দের। সেতু না থাকায় শিক্ষার্থীসহ ৩ ইউনিয়নের প্রায় ২০ হাজার মানুষের একমাত্র ভরসা নৌকা। স্থানীয়দের দাবির প্রেক্ষিতে মালদাহা নদীতে সেতু নির্মাণের দাবি দীর্ঘদিনের।
প্রতিয়িত ঝুঁকি নিয়ে নৌকায় পারাপার হচ্ছেন স্কুল-কলেজ, মাদরাসার কয়েক শত শিক্ষার্থী, ঘটছে ছোট-বড় দুর্ঘটনাও।
এলাকাবাসীরা জানান, গত কয়েক বছরে একাধিকবার স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) প্রকৌশলীরা এসে মাপযোগ ও মাটি পরীক্ষার কাজ করলেও বাস্তবে কোনো ফল পাচ্ছেন না গ্রামবাসীরা।
তারা দাবি জানান, মহিষতুলির মালদাহা নদীর উপর সেতু নির্মাণ হলে চলাচলে সুবিধার পাশাপাশি এলাকার অর্থনৈতিক উন্নয়ন ঘটবে।
আরও পড়ুন: দেশের উত্তরাঞ্চলে চাহিদা বাড়ছে নোনা ইলিশের
স্থানীয় বাসিন্দা মুরাদ মিয়া বলেন, ‘সেতু না থাকায় আমরা ব্যাপক ভোগান্তিতে আছি। আদিতমারী উপজেলার ভেলাবাড়ী ইউনিয়নের মহিষতুলি, ফলিমারী, দুলালী ও দুর্গাপুর ইউনিয়নের দুর্গাপুর, উত্তর গোবধা, শঠিবাড়ী এবং পার্শ্ববর্তী কালীগঞ্জ উপজেলার গোড়ল ইউনিয়নের লোহাকুচি এলাকার প্রায় ২০ হাজার মানুষ নিয়মিত চলাচল করেন।’
তিনি আরও বলেন, সেতু না থাকায় ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। কৃষকের উৎপাদিত ফসল বাজারে নিয়ে যাওয়ার সমস্যা হয়, তাই তারা ন্যায্য মূল্য পান না। শিক্ষার্থীসহ এই পথে প্রতিদিন কয়েক হাজার মানুষ যাতায়াত করেন। সেতু নির্মাণ হলে চলাচলে দুর্ভোগ কমার পাশাপাশি এলাকার অর্থনৈতিক উন্নয়ন ঘটবে।
আরও পড়ুন: ফরিদপুরে লক্ষাধিক মেট্রিক টন মুড়িকাটা পেঁয়াজ উৎপাদনের প্রত্যাশা
১ বছর আগে
নওগাঁ থেকে সব রুটে বাস চলাচল বন্ধ, ভোগান্তিতে যাত্রীরা
মহাসড়কে সিএনজিচালিত অটোরিকশা চলতে বাধা দেওয়াকে কেন্দ্র করে নওগাঁয় বাস-অটোরিকশা শ্রমিক-মালিকদের দ্বন্দ্বের জেরে ধর্মঘটের ঘোষণা দিয়েছে বাস ও অটোরিকশা মালিক-শ্রমিকরা। এতে নওগাঁ ঢাকা-রাজশাহীসহ আন্তঃজেলা ও জেলার অভ্যন্তরীণ সব রুটে বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে।
মঙ্গলবার (১৭ অক্টোবর) সকাল ৬টা থেকে এই ধর্মঘট শুরু হয়েছে। এতে সাধারণ মানুষ চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন।
আরও পড়ুন: মালিক সমিতির দ্বন্দ্ব: ১৩ দিন সিলেট-ময়মনসিংহ রুটে বাস চলাচল বন্ধ
নওগাঁ জেলা বাসমালিক সমিতির সভাপতি শহিদুল ইসলাম বলেন, সরকারি আইন অনুযায়ী মহাসড়কে তিন চাকার যান চলাচল নিষিদ্ধ। প্রশাসন, বাসমালিক ও মোটরশ্রমিক ইউনিয়নের পক্ষ থেকে বারবার নিষেধ করা সত্ত্বেও অটোরিকশা চালকেরা নওগাঁ-রাজশাহী মহাসড়কে জোর করে গাড়ি চালিয়ে আসছে।
তিনি বলেন, এ নিয়ে ২২ সেপ্টেম্বর দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। ওই সংঘর্ষের পর প্রশাসনের মধ্যস্ততায় দুই পক্ষের মধ্যে সিদ্ধান্ত হয় সকাল সাড়ে ৯টা থেকে বিকাল সাড়ে ৩টা পর্যন্ত মহাসড়কে তিন চাকার যান চলাচল করবে না। কিন্তু সিএনজি চালকেরা এই সিদ্ধান্ত অমান্য করে চলছে।
তিনি আরও বলেন, সোমবার নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে সিএনজি চালানোয় বাসশ্রমিকেরা বাধা দিলে নওগাঁ-রাজশাহী মহাসড়কে মান্দার ফেরিঘাট এলাকায় সিএনজি শ্রমিকেরা বাস শ্রমিকদের মারধর করেন।
তিনি বলেন, ওই ঘটনার জেরে গতকাল সন্ধ্যায় নওগাঁ শহরের বালুডাঙ্গা বাসস্টান্ডে আরেক দফা উভয়পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে মোটরশ্রমিক ইউনিয়নের সদস্য শান্ত নামে এক শ্রমিক আহত হয়েছেন। এই ঘটনার বিচার দাবিতে বাসের চালক ও সহকারীরা আজ মঙ্গলবার সকাল থেকে ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে।
এ ব্যাপারে নওগাঁ সিএনজি শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আশিক হোসেন বলেন, বাচ্চু সরদার নামে আমাদের একজন সিএনজি চালককে সোমবার বিকেল ৩টার দিকে মান্দার ফেরিঘাটে বাস মালিক সমিতির লাঠিয়াল বাহিনীর লোকজন মারধর করেছে। বাস শ্রমিকেরা তিনটি সিএনজিও ভাঙচুর করেছে। এ রকম ঘটনা প্রতিনিয়িতই ঘটছে।
তিনি আরও বলেন, বাসের লোকজন প্রতিদিনই আমাদের রাস্তায় সিএনজি চলাচলে বাঁধা সৃষ্টি করছে, যা অন্যায়। প্রশাসনের পক্ষ থেকে আমরা আশানুরূপ সহযোগিতা পাচ্ছি না। যার কারণে আমরা রাস্তায় নামতে বাধ্য হয়েছি। এর সুষ্ঠু সমাধান না হওয়া পর্যন্ত আমরা সিএনজি চালবো না এবং বাসও চলাচল করতে দিবো না।
এ ব্যাপারে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার গাজিউর রহমান বলেন, নওগাঁয় বাস ও সিএনজিচালিত অটোরিকশা শ্রমিকদের মধ্যকার দ্বন্দ্ব দীর্ঘদিনের। দ্বন্দ্বের জেরে প্রায় প্রায় ধর্মঘটের ডাক দেন বাস-মালিক-শ্রমিকেরা। গতকাল বাস ও সিএনজি শ্রমিকদের মধ্যে পাল্টাপাল্টি হামলার ঘটনার জেরে আজ সকাল থেকে উভয়পক্ষ যান চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে।
তিনি আরও বলেন, যান চলাচল স্বাভাবিক করতে জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন বিবদমান উভয়পক্ষের মধ্যে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে। আশা করছি, খুব তাড়াতাড়ি এই সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।
আরও পড়ুন: পরিবহন শ্রমিকদের বিরোধের জেরে নাটোর-রাজশাহী রুটে উভয় জেলার বাস চলাচল বন্ধ
বিএনপির মহাসমাবেশ সামনে রেখে খুলনায় ২ দিন বাস চলাচল বন্ধের ঘোষণা
১ বছর আগে
লালমনিরহাটে সেতু থাকলেও নেই সংযোগ সড়ক, ভোগান্তিতে হাজারো মানুষ
লালমনিরহাট সদর উপজেলায় ৬৯ লাখ টাকার সেতু আছে, কিন্তু নেই সংযোগ সড়ক। সেতুতে উঠতে হয় বাঁশের সাঁকো বেয়ে।
সেতুতে সংযোগ সড়ক না থাকায় চলাচলের ভোগান্তিতে পড়েছেন ৫ গ্রামের হাজারও মানুষ। সেতুর নির্মাণ মেয়াদ শেষ হওয়ার ১৫ মাস পেরিয়ে গেলেও হয়নি সড়ক।
লালমনিরহাটের সদর উপজেলার মোগলহাট ইউনিয়নের ইটাপোতা ছড়ার উপর নির্মিত ওই সেতুটি যেন এখন মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে। সেতুটি নির্মাণের বছর পার হয়ে গেলেও দু’পাশে মাটি ভরাটসহ সংযোগ সড়কের কাজ শেষ করেনি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।
আরও পড়ুন: ফরিদপুরে নির্মাণাধীন সেতুর মাটি ধসে ৩ জনের মৃত্যু, আহত ৪
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন সূত্রে জানা গেছে, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর ২০২১-২০২২ অর্থবছরে ৬৮ লাখ ৬৮ হাজার ৭০৩ টাকা ব্যয়ে সদর উপজেলার মোগলহাট ইউনিয়নের ইটাপোতা ছড়ার (বিল) উপর ৫০ ফুট দৈর্ঘ্য ও ১৪ ফুট প্রস্থ একটি ব্রিজ নির্মাণের বরাদ্দ দেয়।
সেতুটির নির্মাণকাজ ২০২২ সালের মে মাসে শেষ হয়। ওই মাসেই সেতুটি হস্তান্তর করার চুক্তি ছিল ঠিকাদারের সঙ্গে। কিন্তু সংযোগ সড়ক নির্মাণ না করায় সেতুটি এখনো হস্তান্তর করেননি ঠিকাদার লিটন ইসলাম। কিন্তু ঠিকাদারকে ৮০ শতাংশ বিল দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: ৩ মাসের জন্য বন্ধ হয়ে গেল কালুরঘাট সেতু
১ বছর আগে
নাটোর শহরে অব্যাহত ভারী বর্ষণে অধিকাংশ এলাকায় জলাবদ্ধতা, ভোগান্তিতে সাধারণ মানুষ
অব্যাহত ভারী বর্ষণে নাটোর শহরের অধিকাংশ এলাকায় দেখা দিয়েছে জলাবদ্ধতা।
পানিতে তলিয়ে গেছে শহরের ব্যস্ততম কানাইখালী, নিচাবাজার, চৌকিরপাড়, কালুর মোড়, আলাইপুরসহ বিভিন্ন এলাকা। বিপণিবিতান,বাজার, আবাসিক এলাকাসহ সব স্থানে থৈ থৈ করছে পানি।
বাড়ি-ঘর ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে পানি ঢুকে পড়ায় চরম দুর্ভোগে পড়েছে সব শ্রেণি পেশার মানুষ। এক পর্যায়ে ক্ষুদ্ধ এলাকাবাসী শহরের কালুর মোড় এলাকায় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করে। সন্ধ্যায় পুলিশ ও স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর মলয় কুমার পানি নিষ্কাশনের আশ্বাস দিলে পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত হয়।
আরও পড়ুন: বর্ষা এলেই জলাবদ্ধতায় নাজেহাল রাজধানীবাসী
পরে এলাকাবাসী নিজেরাই ভরাট হয়ে যাওয়া খাল সংস্কার করে পানি নিষ্কাশনের চেষ্টা করেন। পৌর এলাকার ড্রেনেজ অব্যবস্থাপনা ও খালগুলো দখল করে স্থাপনা তৈরি করায় এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে বলে অভিযোগ তাদের।
পৌর মেয়র উমা চৌধুরী জলি বলেন, পরিস্থিতি মোকাবিলায় কাজ শুরু করেছে পৌর কর্তৃপক্ষ। আজকের (বৃহস্পতিবার) মতো ভারী বৃষ্টিপাত না হলে আগামীকাল স্কেভেটর দিয়ে দখল ও ভরাট হয়ে যাওয়া খাল ও ড্রেনগুলো সংস্কার করে পানি অপসারণের ব্যবস্থা করা হবে।
আরও পড়ুন: বৃষ্টি হলেই শান্তিগঞ্জের বাজারে জলাবদ্ধতা
১ বছর আগে