মার্টিন রাইজার
বাইরের চাপের মুখে বাংলাদেশের সতর্ক সামষ্টিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনা প্রয়োজন: বিশ্বব্যাংক
বিশ্বব্যাংকের দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক ভাইস প্রেসিডেন্ট মার্টিন রাইজার, বাংলাদেশকে টেকসই ও অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধি অর্জনে সহায়তা করার জন্য সংস্থাটির অব্যাহত সহায়তার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ ক্রমাগত বাহ্যিক চাপের মুখোমুখি হচ্ছে, যার জন্য সতর্ক সামষ্টিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনা প্রয়োজন। তবে আরও বেসরকারি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করার জন্য কাঠামোগত সংস্কারকে আরও গভীর করা, কর্মসংস্থান বৃদ্ধি এবং জলবায়ু বিপর্যয়গুলোর বিরুদ্ধে স্থিতিস্থাপকতা জোরদার করা প্রয়োজন।’
রাইসার মঙ্গলবার বাংলাদেশে তার দুই দিনের সফর শেষ করেছেন।
তিনি বলেন, বিশ্বব্যাংক তার দেশভিত্তিক নতুন কৌশল এবং বিদ্যমান বৃহৎ পোর্টফোলিও দ্রুত বাস্তবায়ন কৌশলের অধীনে সহায়তা দ্বিগুণ করতে প্রস্তুত রয়েছে।
বৈশ্বিক ঋণ সংস্থার তথ্যমতে, রাইসার তার বর্তমান দক্ষিণ এশিয়া সফরের অংশ হিসেবে বাংলাদেশ সফর করেছেন।
সফরকালে তিনি বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী, অর্থ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব, অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব এবং অন্যান্য ঊর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ বিশ্বব্যাংকের ৮৫৮ মিলিয়ন ডলার তহবিল পাচ্ছে
তারা ২০২৩-২৭ অর্থবছরের জন্য বাংলাদেশের জন্য বিশ্বব্যাংকের নতুন কান্ট্রি পার্টনারশিপ ফ্রেমওয়ার্ক এবং সেইসঙ্গে বিশ্বব্যাংকের সহায়তা কীভাবে বাংলাদেশকে বৈশ্বিক অনিশ্চয়তা এবং ক্রমবর্ধমান জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় সহায়তা করতে সর্বোত্তমভাবে ব্যবহার করা যেতে পারে সে বিষয়ে আলোচনা করেন।
রাইসার বিশ্বব্যাংক-সমর্থিত প্রকল্প বাস্তবায়নের গতি বাড়ানোর আহ্বান জানান।
মঙ্গলবার বিশ্বব্যাংক ও বাংলাদেশ উচ্চশিক্ষা খাতকে শক্তিশালী করতে এবং কোভিড-১৯ মহামারিতে আরও ভালোভাবে সাড়া দিতে ১৯১ মিলিয়ন ডলারের অর্থায়নে স্বাক্ষর করেছে।
উচ্চশিক্ষার দ্রুত রূপান্তর প্রকল্প উচ্চশিক্ষায় আঞ্চলিক এবং বৈশ্বিক সহযোগিতা, গবেষণা এবং উদ্ভাবনে সহায়তা করবে। এটি আরও বেশি নারীকে মানসম্মত শিক্ষা পেতে সহায়তা করবে।
রাইসারের উপস্থিতিতে বাংলাদেশ সরকারের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব শরিফা খান এবং বাংলাদেশ ও ভুটানের পক্ষে বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর আবদুলায়ে সেক যথাক্রমে বাংলাদেশ ও বিশ্বব্যাংকের পক্ষে স্বাক্ষর করেন।
আরও পড়ুন: বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্টকে পদ্মা সেতুর চিত্রকর্ম উপহার দিলেন প্রধানমন্ত্রী
বাংলাদেশ-বিশ্বব্যাংক ৫ প্রকল্পে সমন্বিত ২.২৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের ঋণ চুক্তি সই
১ বছর আগে
বিশ্বব্যাংকের ভাইস প্রেসিডেন্ট মার্টিন রাইজার ঢাকা আসছেন
দেশকে স্থিতিস্থাপক ও অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধির পথে এগিয়ে নিতে যে সকল গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার সাহায্য করতে পারে সেসব বিষয়ে সরকারের সঙ্গে আলোচনা করতে বিশ্বব্যাংকের দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের ভাইস প্রেসিডেন্ট মার্টিন রাইজার শনিবার ঢাকায় আসছেন।
এ সফরের ব্যাপারে রাইজার বলেছেন, ‘আমি আবারও বাংলাদেশে আসতে পেরে এবং সরকারের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ সংস্কারমূলক কিছু বিসয় আলোচনা করার সুযোগ পেয়ে আনন্দিত। যা দেশটিকে স্থিতিস্থাপক ও অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধির পথে এগিয়ে নিতে এবং জনগণের জন্য সুযোগ তৈরিতে সাহায্য করতে পারে।’
শুক্রবার বিশ্বব্যাপী ঋণ দানকারী সংস্থাটি জানিয়েছে, তার সঙ্গে বাংলাদেশ ও ভুটানের কান্ট্রি ডিরেক্টর আব্দুলায়ে সেকও থাকবেন।
আরও পড়ুন: বিশ্বব্যাংককে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রকল্পে অর্থায়ন ত্বরান্বিত করার আহ্বান নসরুল হামিদের
তিন দিনের সফরে রাইজার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালসহ অন্যান্য ঊর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন। এসময় রাইজার সেকের সঙ্গে তাদের পরিচয় করিয়ে দেবেন, যিনি ২০২৩ সালের ১ জানুয়ারি বাংলাদেশ ও ভুটানের জন্য বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টরের পদে নিযুক্ত হবেন। তারা বিশ্বব্যাংকের-সহায়তায় চলমান একটি প্রকল্পও পরিদর্শন করবেন।
সেক বলেন, ‘দারিদ্র্য হ্রাস, জলবায়ু পরিবর্তনের অভিযোজন ও দুর্যোগ-ঝুঁকির প্রস্তুতি এবং স্কুলে অংশগ্রহণের ক্ষেত্রে লিঙ্গ সমতাসহ উন্নয়নের অনেক ক্ষেত্রেই বাংলাদেশের একটি অভাবনীয় রেকর্ড রয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘আমি বাংলাদেশের সরকার ও জনগণের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করতে উন্মুখ। কারণ দেশটি ২০৩১ সালের মধ্যে উচ্চ-মধ্যম আয়ের মর্যাদা অর্জনের লক্ষ্যে কাজ করছে।’
সেনেগালের নাগরিক সেক ১৯৫৫ সালে একজন অর্থনীতিবিদ হিসেবে বিশ্বব্যাংকে যোগ দেন। তারপর থেকে বিভিন্ন দেশে গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেছেন।
এই দায়িত্ব নেয়ার আগে সেক ক্যামেরুন, মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্র, নিরক্ষীয় গিনি, গ্যাবন ও কঙ্গো প্রজাতন্ত্রের কান্ট্রি ডিরেক্টর হিসেবে কাজ করেছেন।
তিনি আফগানিস্তান, মিয়ানমার ও মলদোভার জন্য বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ম্যানেজার হিসেবেও কাজ করেছেন।
স্বাধীনতার পর বাংলাদেশের উন্নয়ন সহযোগীদের মধ্যে বিশ্বব্যাংক প্রথম সহায়তাকারী।
সেই তখন থেকে বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশকে ৩৭ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি অনুদান, সুদ-মুক্ত ও রেয়াতি ঋণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। বাংলাদেশে বর্তমানে সবচেয়ে বড় চলমান ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট অ্যাসোসিয়েশন (আইডিএ) প্রোগ্রাম চালু রয়েছে এবং দেশে বর্তমানে ১৫ দশমিক সাত বিলিয়ন ডলারের মোট ৫৫টি প্রকল্প চলমান।
আরও পড়ুন: মন্দার ‘খুব কাছাকাছি’ বিশ্ব অর্থনীতি: বিশ্বব্যাংক প্রধান
২০৩৫ সালের মধ্যে বাংলাদেশের জিডিপি ৪% কমতে পারে: বিশ্বব্যাংকের সমীক্ষা
২ বছর আগে