শর্ত মেনে কাজ করছে
ঋণ পেতে আইএমএফের শর্ত মেনে কাজ করছে সরকার
আইএমএফ থেকে বাংলাদেশ সাড়ে ৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ঋণ সহায়তা পেতে সংস্থাটির দেয়া শর্ত মেনে কাজ করছে সরকার।
অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, বৈশ্বিক ঋণদাতার বোর্ড সভার আগে আর্থিক ও জ্বালানি খাতে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) কর্তৃক নির্ধারিত কিছু শর্ত বাস্তবায়ন শুরু করেছে সরকার।
এর অংশ হিসেবে ঋণের সুদের সীমা শিগগিরই প্রত্যাহার করা হবে এবং রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ব্যাংকগুলোকে ২০২৩ সালের জুনের মধ্যে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ১২ শতাংশ কমিয়ে আনতে বলা হয়েছে। যা বর্তমান গড় ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ রয়েছে।
রবিবার আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের একজন সিনিয়র কর্মকর্তা ইউএনবিকে এ তথ্য জানান।
আরও পড়ুন: জিডিপি প্রতিবেদন প্রতি ৩ মাসে হালনাগাদ করার পরামর্শ আইএমএফের
পরিচয় গোপন রাখার শর্তে তিনি এবং অন্যান্য সূত্র এসব কথা বলেছেন, কারণ গণমাধ্যমের সঙ্গে তাদের কথা বলার অনুমতি নেই।
সরকার রপ্তানি উন্নয়ন তহবিল এবং শ্রীলঙ্কার ঋণ বাদ দিয়ে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের হিসাব সংশোধন করেছে। বেশ কয়েকজন মন্ত্রী এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের (বিবি) গভর্নর বলেছেন যে মোট রিজার্ভ এখন ২৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।
সূত্র জানায়, বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধি আইএমএফের অন্যতম শর্ত। তাই বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি) সম্প্রতি বিদ্যুতের পাইকারি মূল্য ১৯ দশমিক ৯২ শতাংশ বাড়িয়েছে। এটি বিতরণ কোম্পানিগুলোকে ভোক্তা পর্যায়ে ২০ শতাংশ বৃদ্ধির জন্য অনুরোধ করেছে।
ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে আইএমএফের প্রধান কার্যালয়ে অনুষ্ঠেয় বোর্ড সভায় বাংলাদেশের জন্য আইএমএফের ঋণ অনুমোদনের কথা রয়েছে।
এর আগে সাড়ে চার বিলিয়ন ডলারের ঋণ নিয়ে বাংলাদেশের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করতে আইএমএফের একটি দল চলতি বছরের ২৬ অক্টোবর থেকে ৯ নভেম্বর ঢাকা সফর করেছেন।
দলটি অর্থ মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ব্যাংক, ন্যাশনাল বোর্ড অব রেভিনিউ(এনবিআর), বাংলাদেশ সিকিউরিটি অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন(বিএসইসি), বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়, পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় এবং আরও কিছু সংস্থার সঙ্গে ধারাবাহিক বৈঠক করেছে।
ফলে ঋণের চূড়ান্ত অনুমোদনের আগেই এ নিয়ে কাজ শুরু করেছে বাংলাদেশ। বিশদভাবে বলতে গেলে, আইএমএফের দাবির মধ্যে ব্যাংকিং খাতে সংস্কার অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। যার মধ্যে খেলাপি ঋণ হ্রাস করা, সরকারি ভর্তুকি ব্যয় হ্রাস এবং রাজস্ব খাতের সংস্কার অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
আইএমএফের সাবেক কর্মকর্তা ও গবেষণা সংস্থা পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর এ প্রসঙ্গে ইউএনবিকে বলেন, ‘আইএমএফের শর্ত মেনে নেয়া উচিত। এগুলোর সঙ্গে কারো দ্বিমত করা ঠিক নয়।’
তিনি বলেন, ‘এবারের শর্তগুলো খুবই নমনীয়। আমরা যদি এগুলো মেনে নিতে না পারি, তাহলে বুঝতে হবে আমরা সমস্যার সমাধান করতে চাই না।’
আরও পড়ুন: আইএমএফ’র সঙ্গে বাংলাদেশের সাড়ে ৪ বিলিয়ন ডলারের প্রাথমিক ঋণচুক্তি
বাংলাদেশের পুঁজিবাজারের সক্ষমতা বৃদ্ধির পরামর্শ দিলো আইএমএফ
২ বছর আগে