জাতীয় অভিযোজন পরিকল্পনা
জাতীয় অভিযোজন পরিকল্পনা: বাস্তবায়নে আন্তর্জাতিক অংশীদারদের সহায়তা চান প্রধানমন্ত্রী, প্রয়োজন ২৩০ বিলিয়ন ডলার
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০২৩ থেকে ২০৫০ সালে জাতীয় অভিযোজন পরিকল্পনা বাস্তবায়নে বাংলাদেশের প্রচেষ্টাকে সমর্থন করতে আন্তর্জাতিক অংশীদারদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, এজন্য মোট ২৩০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার প্রয়োজন।
রবিবার তিনি বলেন, ‘অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক উভয় সংস্থান থেকে আমাদের জাতীয় অভিযোজন পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য আমাদের ২৩০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার প্রয়োজন। বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক জলবায়ু অর্থায়ন থেকে অভিযোজন ও প্রশমনের মধ্যে ৫০-৫০ বন্টনের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।’
প্রধানমন্ত্রী তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে ‘গ্লোবাল হাব অন লোকাললি লেড অ্যাডাপটেশন’ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন।
আরও পড়ুন: অভিযোজন গ্লোবাল হাব উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী
শেখ হাসিনা বলেন, ‘জাতীয় অভিযোজন পরিকল্পনা আমাদের বাংলাদেশ ডেল্টা প্ল্যান ২১০০ ও মুজিব জলবায়ু সমৃদ্ধি পরিকল্পনার অধীনে করা কাজের পরিপূরক হবে। আমি প্যারিস চুক্তির চেতনায় এই প্রচেষ্টায় আমাদের সঙ্গে যোগ দেয়ার জন্য আন্তর্জাতিক সরকারি ও বেসরকারি খাত থেকে আমাদের অংশীদারদের আমন্ত্রণ জানাচ্ছি।’
তিনি বলেন, বাংলাদেশ এখন জলবায়ু অভিযোজনে জিডিপির ৬-৭ শতাংশ ব্যয় করে। বাংলাদেশ এ পর্যন্ত ২০০৯ সালে নিজস্ব সম্পদে প্রতিষ্ঠিত একটি জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট ফান্ডের অধীনে জলবায়ু অভিযোজন ও প্রশমন উভয়ের জন্য ৮০০টি প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে।
তিনি সমস্ত প্রধান কার্বন নির্গমনকারী দেশগুলোকে তাদের জাতীয়ভাবে নির্ধারিত অবদানের সুযোগ আরও বাড়ানোর আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ‘আমাদের সকলকে অবশ্যই বৈশ্বিক উষ্ণতা ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখার জন্য প্রচেষ্টাকে দ্বিগুণ করতে হবে।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষ দীর্ঘদিন ধরে অভিবাসনকে জলবায়ু প্রভাবের অভিযোজিত প্রতিক্রিয়া হিসেবে ব্যবহার করে আসছে। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে মানুষের গতিশীলতা বৃদ্ধি প্রতিরোধ ও ব্যবস্থাপনা উভয়কেই আমাদের অগ্রাধিকার দিতে হবে।’
ফ্ল্যাগশিপ আশ্রয়ণ কর্মসূচির অধীনে তার সরকার গৃহহীন ও ভূমিহীন মানুষের জন্য প্রায় এক মিলিয়ন আধা পাকা দুর্যোগ সহনশীল বাড়ি নির্মাণ করেছে। কক্সবাজারের খুরুশকুলে জলবায়ু অভিবাসীদের জন্য বিশ্বের সবচেয়ে বড় বহুতল আবাসন প্রকল্প নির্মিত হচ্ছে। প্রায় পাঁচ হাজার জলবায়ু শরণার্থী পরিবার যারা বিভিন্ন দ্বীপ থেকে স্থানান্তরিত হয়েছে, তাদের ইতোমধ্যে সেখানে ১৩৯টি বহুতল ভবনে পুনর্বাসন করা হয়েছে।
স্থানীয় জলবায়ু স্থিতিস্থাপকতা সম্পর্কে শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশের মানুষ যুগ যুগ ধরে প্রাকৃতিক দুর্যোগ সহ্য করে আসছে। তারা বন্যা, জলোচ্ছ্বাস, ঘূর্ণিঝড় ও অন্যান্য বিপদের বিরুদ্ধে একধরনের স্থিতিস্থাপকতা অর্জন করেছে। তারা প্রকৃতির পরিবর্তনের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে শিখেছে। তাদের সম্মিলিত প্রচেষ্টা বাংলাদেশকে জলবায়ু অভিযোজন হাবে পরিণত করেছে।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশে স্থানীয় সম্প্রদায়ের কাছে তাদের ঐতিহ্যগত জ্ঞান ও জলবায়ু অভিযোজনের সমাধান রয়েছে। সরকার সংস্থান ও উদ্ভাবনের সঙ্গে উক্ত সমাধানগুলোকে সমর্থন করে। এই সংমিশ্রণটি স্থানীয়ভাবে পরিচালিত অভিযোজন ব্যবস্থাগুলোর একটি ক্ষেত্র বিকাশে আমাদের ভালভাবে পরিবেশন করেছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাসে বাংলাদেশ এখন রোল মডেল হিসেবে বিবেচিত।’
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে নারীর ক্ষমতায়নে বেগম রোকেয়ার স্বপ্ন পূরণ হয়েছে: প্রধানমন্ত্রী
অগ্নিসন্ত্রাসী, স্বাধীনতা বিরোধী শক্তিকে ক্ষমতায় যেতে দেবেন না: প্রধানমন্ত্রী
২ বছর আগে