ডাণ্ডাবেড়ি
আসামিদের গণহারে ডাণ্ডাবেড়ি পরানো যাবে না: হাইকোর্ট
শীর্ষ সন্ত্রাসী, জঙ্গি, দুর্ধর্ষ প্রকৃতির বন্দি ছাড়া গণহারে বন্দি আসামিদের ডাণ্ডাবেড়ি না পরাতে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে এ সংক্রান্ত স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পরিপত্র কঠোরভাবে অনুসরণ করতে বলা হয়েছে।
মঙ্গলবার (৩০ জানুয়ারি) ডাণ্ডাবেড়ি পরানো সংক্রান্ত এক রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানির পর বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি মো. আতাবুল্লাহর হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ এ আদেশ দেন।
আরও পড়ুন: সাধারণত জঘন্য অপরাধে আসামিদের ডান্ডাবেড়ি পরানো হয়: হাইকোর্ট
মন্ত্রণালয়ের ওই পরিপত্রে বলা হয়েছে, শীর্ষ সন্ত্রাসী, জঙ্গি, দুর্ধর্ষ প্রকৃতির বন্দিদের আদালতে হাজিরা বা অন্যত্র আনা-নেওয়ার ক্ষেত্রে ডান্ডাবেড়ি পরানো যাবে।
আইনজীবী বলেন, এই পরিপত্র অনুসরণ করতে বলেছেন আদালত। এর বাইরে কোনো বন্দি বা আসামিকে ডান্ডাবেড়ি পরানো যাবে না।
একইসঙ্গে বাবার জানাজায় ছাত্রদলের এক নেতাকে ডান্ডাবেড়ি পরিয়ে আনার বৈধতা নিয়েও রুল জারি করেছেন আদালত।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার কায়সার কামাল। সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী মাকসুদ উল্লাহ।
রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তুষার কান্তি রায় ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল সেলিম আজাদ।
আরও পড়ুন: যুবদল নেতাকে হাতকড়া ও ডান্ডাবেড়ি পরিয়ে চিকিৎসা কেন অবৈধ নয়: হাইকোর্ট
গত ১৬ জানুয়ারি দেশের ৬৪ কারাগারে গণহারে ডান্ডাবেড়ি পরানো বন্ধ চেয়ে রিট করা হয়। ওই রিটের উপর ২৯ জানুয়ারি শুনানি হয়।
এর আগে, গত ১৬ জানুয়ারি বাবার জানাজায় ছাত্রদলের এক নেতাকে ডান্ডাবেড়ি পরিয়ে আনার ঘটনা চ্যালেঞ্জ করে রিট করা হয়। রিটে দেশের সব কারাগারে গণহারে ডান্ডাবেড়ি পরানো বন্ধের নির্দেশনা চাওয়া হয়।
গণমাধ্যমে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়, প্যারোলে মুক্তি পেয়ে ডান্ডাবেড়ি পরা অবস্থায় বাবার জানাজায় অংশ নিয়েছেন ছাত্রদল নেতা মো. নাজমুল মৃধা।
সময় সংক্ষিপ্ত হওয়ায় নির্ধারিত জানাজার আগেই আয়োজন করা হয় বিশেষ জানাজার। জানাজার সময় নাজমুলের হাতকড়া খুলে দেওয়া হলেও পায়ের ডান্ডাবেড়ি পরানো ছিল।
মো. নাজমুল মৃধা পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জ উপজেলা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক। জানাজা শেষে তাকে আবার পটুয়াখালী জেলা কারাগারে পাঠায় পুলিশ।
আরও পড়ুন: যুবদল নেতাকে ডান্ডাবেড়ি পরানো নিয়ে রিটের আদেশ সোমবার
৯ মাস আগে
ডাণ্ডাবেড়ি-হাতকড়া পরানোর নীতিমালা করতে কমিটি গঠনে রুল
হাজতিদের ডাণ্ডাবেড়ি ও হাতকড়া পরানোর বিষয়ে যথাযথ নীতিমালা প্রণয়নে কমিটি গঠনের কেন নির্দেশ দেয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।
এছাড়া ডান্ডাবেড়ি পরিয়ে জানাজায় নিয়ে গাজীপুরের আলী আজম ও শরীয়তপুরের সেলিম রেজাকে কেন ক্ষতিপূরণ দেয়া হবে না, সেটাও জানতে চেয়েছেন আদালত।
সোমবার (৩০ জানুয়ারি)জনস্বার্থে করা এক রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের ও বিচারপতি মোহাম্মদ আলীর হাইকোর্ট বেঞ্চ এই রুল জারি করেন।
চার সপ্তাহের মধ্যে স্বরাষ্ট্র সচিব, আইন সচিব, পুলিশের আইজি, কারা মহাপরিদর্শক, ঢাকার জেলা প্রশাসক, গাজীপুরের জেলা প্রশাসক, গাজীপুরের পুলিশ সুপার, কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার, কালিয়াকৈর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এবং শরিয়তপুরের পালং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) এই রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
আরও পড়ুন: স্বাস্থ্যের ডিজিকে সেবা নিশ্চিত করতে বললেন হাইকোর্ট
গণমাধ্যমে প্রকাশিত এসংক্রান্ত কয়েকটি প্রতিবেদন যুক্ত করে এর আগে রিটটি করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ও বিএনপির আইন বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল। সঙ্গে ছিলেন অ্যাডভোকেট মাহমুদ হাসান এবং রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন, ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আবদুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার।
গত ২৪ জানুয়ারি কারাগারে থাকা বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের ব্যক্তিদের প্যারোলে মুক্তি দিয়ে ডান্ডাবেড়ি পরিয়ে জানাজা বা কোন সামাজিক অনুষ্ঠানে নিয়ে আসার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন বিএনপির আইন সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল। পত্রিকায় প্রকাশিত রিপোর্টের ভিত্তিতে তিনি এ রিট করেন।
গত ২০ ডিসেম্বর প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়, হাতকড়া আর ডাণ্ডাবেড়ি নিয়ে মায়ের জানাজা পড়লেন গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার বোয়ালী ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আলী আজম। মায়ের মৃত্যুসংবাদ পেয়ে জেলা কারাগার থেকে প্যারোলে মুক্তি পেয়ে নিজ বাড়ি কালিয়াকৈরের পাবরিয়াচালা এলাকায় জানাজায় উপস্থিত হন তিনি।
১৭ জানুয়ারি প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়, শরীয়তপুরে হাতে হাতকড়া আর পায়ে ডাণ্ডাবেড়ি পরা অবস্থায় মায়ের জানাজায় অংশ নিলেন সেলিম রেজা নামে ছাত্রদলের এক কেন্দ্রীয় নেতা। মায়ের মৃত্যুতে কারাগার থেকে প্যারোলে মুক্তি পেলেও জানাজার সময় তার হাতকড়া ও ডাণ্ডাবেড়ি খোলা হয়নি।
শরীয়তপুর সদর উপজেলার আনোয়ার হোসেন মুন্সির ছেলে সেলিম রেজা ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সাধারণ সম্পাদক।
গত ৭ ডিসেম্বর বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে পুলিশ তাকে আটক করে। এরপর ১০ ডিসেম্বর পল্টন থানার নাশকতার একটি মামলায় সেলিম রেজাকে কারাগারে পাঠানো হয়।
তিনি গাজীপুরের কাশিমপুরে কেন্দ্রীয় কারাগারের ছিলেন।
আইনজীবী কায়সার কামাল বলেন, এই দুটি ঘটনা উদ্দেশ্যে প্রণোদিত এবং সংবিধানের ৩৫ অনুচ্ছেদের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। আর প্রিজন অ্যাক্ট ১৮৯৪ সালের। এটার পরিবর্তন দরকার। এ কারণে জনস্বার্থে রিট করি। প্রাথমিক শুনানি শেষে আদালত রুল জারি করেছেন।
এদিকে গত ২২ জানুয়ারি গ্রেপ্তার হওয়া আসামিদের বেআইনিভাবে ডান্ডাবেড়ি ও হাতকড়া পরানো বন্ধ এবং এ সম্পর্কে একটি নীতিমালা করার জন্য সরকারকে আইনি নোটিশ পাঠানো হয়।
২২ জানুয়ারি সুপ্রিম কোর্টের ১০ জন আইনজীবীর পক্ষে অ্যাডভোকেট আসাদ উদ্দিন এ নোটিশ পাঠান।
আরও পড়ুন: বিচারকের সঙ্গে দুর্ব্যবহার: নীলফামারীর বার সভাপতিহ ৩ আইনজীবীকে হাইকোর্টে তলব
সন্তানের অভিভাবক হিসেবে মায়ের স্বীকৃতি দিলেন হাইকোর্ট
১ বছর আগে
জানাযার সময় ডাণ্ডাবেড়ি ও হাতকড়া খুলে দেয়া উচিৎ ছিল: তথ্যমন্ত্রী
তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, মায়ের জানাযার সময় কালিয়াকৈর উপজেলার বোয়ালী ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মো. আলী আজমের ডাণ্ডাবেড়ি ও হাতকড়া খুলে দিলে ভালো হতো।
বুধবার সচিবালয়ে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
এ ঘটনা তুলে ধরে একজন সাংবাদিক তথ্যমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে বলেন, জানাযার সময় ডাণ্ডাবেড়ি ও হাতকড়া থাকার ঘটনায় স্থানীয়রা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
আরও পড়ুন: ব্যস্ত রাস্তায় সমাবেশ দূরভিসন্ধিমূলক: তথ্যমন্ত্রী
তাদের বক্তব্য, সরকার এতটা 'অমানবিক' না হলেও পারতো। জবাবে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, আমি বিষয়টি নিয়ে পর্যবেক্ষণ করেছি।
আমি গাজীপুরের পুলিশ প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলেছি। ডাণ্ডাবেড়ি ও হাতকড়া পড়ানো বা না পড়ানো হচ্ছে জেল প্রশাসনের কাজ। সেটি আবার পুলিশের অধীনে নয় এবং একজন আইজি প্রিজন আছেন সেই প্রশাসনের অধীনে। আমাদের পুলিশের যে মহাপরিদর্শক, তাদের অধীনে নয়।
তিনি বলেন, ডাণ্ডাবেড়ি ও হাতকড়া জেল প্রশাসনই পড়ায়। আমি বিষয়টি চেক করেছি, তাকে প্যারোলে কয়েক ঘন্টার জন্য মুক্তি দেয়া হয়েছিল।
এছাড়া কয়েকদিন আগে কয়েকজন জঙ্গি পালিয়ে গেছে। তাদের বিষয়ে যেভাবে সতর্কতা অবলম্বন করা দরকার ছিল সেটি করা হয়নি বিধায় তদন্তে উঠে এসেছে এবং তারা পালিয়ে যাওয়ার সুযোগ পেয়েছে। এজন্য তারা (গাজীপুরে) অতিরিক্ত সতর্কতা অবলম্বন করেছেন।
মন্ত্রী বলেন, আমি এসপি পর্যায়েও কথা বলেছি তারা বিষয়টি জানতেন না। যারা বিএনপি নেতাকে কেরি (বহন) করে এনেছিল, শুধু তারাই জানতেন; অন্যরা কেউ জানতেন না। তবে আমি মনে করি যে জানাযার সময় তার ডাণ্ডাবেড়ি ও হাতকড়া খুলে দিলে ভালো হতো।
রবিবার বিকালে বার্ধক্যজনিত কারণে আলী আজমের মা সাহেরা বেগমের মৃত্যু হয়। মায়ের মৃত্যুর সংবাদ পেয়ে মঙ্গলবার সকালে গাজীপুর জেলা কারাগার থেকে প্যারোলে মুক্তি পেয়ে নিজ বাড়ি কালিয়াকৈরের পাবুরিয়াচালা এলাকায় জানাযায় উপস্থিত হন মো. আলী আজম।
স্বজনরা জানান, শেষবার মাকে দেখতে ও মায়ের জানাযা নিজে পড়াতে আইনজীবীর মাধ্যমে সোমবার বিকালে গাজীপুর জেলা প্রশাসক বরাবর প্যারোলে মুক্তির আবেদন করেন আলী আজম। কিন্তু ওই দিন দাপ্তরিক কাজ শেষ না হওয়ায় মঙ্গলবার তিন ঘণ্টার জন্য প্যারোলে মুক্তি মেলে তার। বেলা ১১টায় জানাযা অনুষ্ঠিত হয়। মায়ের দাফন শেষে আবার কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয় তাকে। পুরোটা সময় হাতকড়া ও ডাণ্ডাবেড়ি পরা অবস্থায় ছিলেন তিনি।
সাংবাদিকদের আরেক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, অবশ্যই নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব হচ্ছে সব দলকে নির্বাচনমুখী করা। এটা নির্বাচন কমিশনের অন্যতম প্রধান দায়িত্ব। আমরাও চাই সমস্ত রাজনৈতিক দল নির্বাচনে অংশগ্রহণ করুক। বিএনপিসহ সবাই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে একটি প্রতিযোগিতামূলক, সুষ্ঠু, স্বচ্ছ এবং অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হোক-সেটি আমরাও চাই।
তিনি আরও বলেন, বিএনপি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে কি করবে না, সেটি একান্তই তাদের নিজস্ব ব্যাপার। সমস্ত কিছু নির্বাচন কমিশন নিশ্চিত করার পরও তারা যদি অংশগ্রহণ না করে তাহলে সেটি একান্তই বিএনপির নিজস্ব ব্যাপার।
তবে একটি কথা আছে, গাধা জল ঘোলা করে খায়। বিএনপি যেমন ১০ তারিখ গাধা জল ঘোলা করে খাওয়ার মতো করে খেয়েছিলেন, নয়াপল্টন অফিসের সামনে থেকে নড়বেন না (সমাবেশ ইস্যুতে), পরে গরুর হাটের ময়দানে গিয়েছেন।
এক্ষেত্রেও আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, বিএনপি নির্বাচনে আসবে তাদের দল টিকিয়ে রাখার স্বার্থে।
আরও পড়ুন: বিএনপি নেতাদের মুখে রাষ্ট্র সংস্কারের কথা হাস্যকর: তথ্যমন্ত্রী
বুদ্ধিজীবী দিবসে মার্কিন রাষ্ট্রদূতকে বিতর্কিত করা হয়েছে: তথ্যমন্ত্রী
১ বছর আগে