হাজতিদের ডাণ্ডাবেড়ি ও হাতকড়া পরানোর বিষয়ে যথাযথ নীতিমালা প্রণয়নে কমিটি গঠনের কেন নির্দেশ দেয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।
এছাড়া ডান্ডাবেড়ি পরিয়ে জানাজায় নিয়ে গাজীপুরের আলী আজম ও শরীয়তপুরের সেলিম রেজাকে কেন ক্ষতিপূরণ দেয়া হবে না, সেটাও জানতে চেয়েছেন আদালত।
সোমবার (৩০ জানুয়ারি)জনস্বার্থে করা এক রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের ও বিচারপতি মোহাম্মদ আলীর হাইকোর্ট বেঞ্চ এই রুল জারি করেন।
চার সপ্তাহের মধ্যে স্বরাষ্ট্র সচিব, আইন সচিব, পুলিশের আইজি, কারা মহাপরিদর্শক, ঢাকার জেলা প্রশাসক, গাজীপুরের জেলা প্রশাসক, গাজীপুরের পুলিশ সুপার, কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার, কালিয়াকৈর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এবং শরিয়তপুরের পালং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) এই রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
আরও পড়ুন: স্বাস্থ্যের ডিজিকে সেবা নিশ্চিত করতে বললেন হাইকোর্ট
গণমাধ্যমে প্রকাশিত এসংক্রান্ত কয়েকটি প্রতিবেদন যুক্ত করে এর আগে রিটটি করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ও বিএনপির আইন বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল। সঙ্গে ছিলেন অ্যাডভোকেট মাহমুদ হাসান এবং রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন, ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আবদুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার।
গত ২৪ জানুয়ারি কারাগারে থাকা বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের ব্যক্তিদের প্যারোলে মুক্তি দিয়ে ডান্ডাবেড়ি পরিয়ে জানাজা বা কোন সামাজিক অনুষ্ঠানে নিয়ে আসার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন বিএনপির আইন সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল। পত্রিকায় প্রকাশিত রিপোর্টের ভিত্তিতে তিনি এ রিট করেন।
গত ২০ ডিসেম্বর প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়, হাতকড়া আর ডাণ্ডাবেড়ি নিয়ে মায়ের জানাজা পড়লেন গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার বোয়ালী ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আলী আজম। মায়ের মৃত্যুসংবাদ পেয়ে জেলা কারাগার থেকে প্যারোলে মুক্তি পেয়ে নিজ বাড়ি কালিয়াকৈরের পাবরিয়াচালা এলাকায় জানাজায় উপস্থিত হন তিনি।
১৭ জানুয়ারি প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়, শরীয়তপুরে হাতে হাতকড়া আর পায়ে ডাণ্ডাবেড়ি পরা অবস্থায় মায়ের জানাজায় অংশ নিলেন সেলিম রেজা নামে ছাত্রদলের এক কেন্দ্রীয় নেতা। মায়ের মৃত্যুতে কারাগার থেকে প্যারোলে মুক্তি পেলেও জানাজার সময় তার হাতকড়া ও ডাণ্ডাবেড়ি খোলা হয়নি।
শরীয়তপুর সদর উপজেলার আনোয়ার হোসেন মুন্সির ছেলে সেলিম রেজা ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সাধারণ সম্পাদক।
গত ৭ ডিসেম্বর বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে পুলিশ তাকে আটক করে। এরপর ১০ ডিসেম্বর পল্টন থানার নাশকতার একটি মামলায় সেলিম রেজাকে কারাগারে পাঠানো হয়।
তিনি গাজীপুরের কাশিমপুরে কেন্দ্রীয় কারাগারের ছিলেন।
আইনজীবী কায়সার কামাল বলেন, এই দুটি ঘটনা উদ্দেশ্যে প্রণোদিত এবং সংবিধানের ৩৫ অনুচ্ছেদের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। আর প্রিজন অ্যাক্ট ১৮৯৪ সালের। এটার পরিবর্তন দরকার। এ কারণে জনস্বার্থে রিট করি। প্রাথমিক শুনানি শেষে আদালত রুল জারি করেছেন।
এদিকে গত ২২ জানুয়ারি গ্রেপ্তার হওয়া আসামিদের বেআইনিভাবে ডান্ডাবেড়ি ও হাতকড়া পরানো বন্ধ এবং এ সম্পর্কে একটি নীতিমালা করার জন্য সরকারকে আইনি নোটিশ পাঠানো হয়।
২২ জানুয়ারি সুপ্রিম কোর্টের ১০ জন আইনজীবীর পক্ষে অ্যাডভোকেট আসাদ উদ্দিন এ নোটিশ পাঠান।
আরও পড়ুন: বিচারকের সঙ্গে দুর্ব্যবহার: নীলফামারীর বার সভাপতিহ ৩ আইনজীবীকে হাইকোর্টে তলব