ফ্যাশন ডিজাইন কাউন্সিল অব বাংলাদেশ
প্রখ্যাত ফ্যাশন ডিজাইনার এমদাদ হক আর নেই
প্রখ্যাত ফ্যাশন ডিজাইনার ও ফ্যাশন ডিজাইন কাউন্সিল অব বাংলাদেশের (এফডিসিবি) সহ-সভাপতি এমদাদ হক শুক্রবার মারা গেছেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৫৭ বছর।
হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে রাজধানীর শ্যামলীর বাংলাদেশ বিশেষায়িত হাসপাতালে চিকিৎসারত অবস্থায় তিনি মারা যান।
এফডিসিবির সাধারণ সম্পাদক শৈবাল সাহা জানিয়েছেন, প্রখ্যাত এই ফ্যাশন ডিজাইনার গত কয়েকদিন ধরে একাধিক স্বাস্থ্য জটিলতার কারণে লাইফ সাপোর্টে ছিলেন।
ইউএনবিকে খবরটি নিশ্চিত করে শৈবাল সাহা বলেন, এমদাদ হক কিডনির জটিলতা, হাঁপানি এবং অন্যান্য সমস্যায় ভুগছিলেন।
শৈবাল ইউএনবিকে বলেন, ‘এমদাদ হক হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে ২ নভেম্বর তাকে নিবিড় পরিচর্যা ইউনিটে (আইসিইউ) নেয়া হয়। তাকে গত কয়েকদিন ধরে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়েছিল এবং উন্নত চিকিৎসার জন্য ভারতের কলকাতায় যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত তিনি ফের অসুস্থ হয়ে পড়েন। দুই দিন আগে তার দ্বিতীয় হার্ট অ্যাটাক হয়, এরপর তাকে আবার লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়। তিনি আজ দুপুর ২টা ১৬ মিনিটে মারা যান।’
শৈবাল আরও জানান, তার মরদেহ নিয়ে যাওয়া হচ্ছে পুরান ঢাকার উর্দু রোডের পৈতৃক বাড়িতে। এশার নামাজের পর তার নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হবে এবং তাকে বনানী কবরস্থানে দাফন করা হবে।
আরও পড়ুন: সাবেক মন্ত্রী গোলাম মোস্তফা আর নেই
বাংলাদেশের স্থানীয় হস্তশিল্পভিত্তিক ফ্যাশনের প্রচারে আজীবন কাজ করা এমদাদ হক ফ্যাশন পাঠশালার প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন। এছাড়াও তিনি স্টুডিও এমদাদের ব্যবস্থাপনা পরিচালক, বাংলার মেলা লিমিটেডের পরিচালক এবং রাস্পবেরি টেক্সটাইলের পরামর্শক ছিলেন।
এছাড়াও তিনি অনেক ফ্যাশন প্রতিযোগিতায় জুরি বোর্ড সদস্য হিসেবে কাজ করেছেন এবং বাংলাদেশের ফ্যাশন শিল্পে অবদানের জন্য সম্মানে ভূষিত হয়েছেন।
১৯৮০ এর দশকে একজন ফ্যাশন কলামিস্ট হিসেবে তার কর্মজীবন শুরু করেন এমদাদ হক। তিনি বাংলাদেশের গ্রামীণ রেশম চাষ পর্যবেক্ষণ ও উন্নয়নের জন্য একটি উন্নয়ন কর্মসূচিতে ১৯৯২ সালে একটি প্রোগ্রাম অফিসার হিসেবে ব্র্যাকে যোগদান করেন। তিনি ১৯৯৩ সালে ব্র্যাকের টেক্সটাইল বিভাগের ব্যবস্থাপক হন এবং বিশেষ করে রেডিমেড গার্মেন্টস (আরএমজি) শিল্পের জন্য সুতির চেক কাপড় উৎপাদনের পাশাপাশি জনপ্রিয় ফ্যাশন ব্র্যান্ড আড়ং-এর জন্য সিল্ক কাপড়ের উন্নয়নে কাজ করেন।
এমদাদ হক পরে গ্রামীণ উদ্যোগে চিফ প্রোডাক্ট ডেভেলপমেন্ট অফিসার হিসেবে যোগদান করেন। তিনি ২০০১ সালে বাংলাদেশের একটি গ্রামীণ কারুশিল্পের দোকান বাংলার মেলা গঠন করেন। তিনি নিরলসভাবে বাংলাদেশের তাঁত শিল্প এবং সূক্ষ্ম পাটের সুতা তৈরি নিয়ে কাজ করেছেন। শিল্পের উন্নতির জন্য তিনি এফডিসিবি-র প্রেসিডেন্ট ও বিখ্যাত ফ্যাশন আইকন মাহিন খানের সঙ্গে সহসভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
আন্তর্জাতিক পর্যায়ে পশ্চিমা ঘরানার সঙ্গে ঐতিহ্যবাহী সংস্কৃতিকে তুলে আনার জন্য এবং বাংলাদেশের পরবর্তী প্রজন্মের ফ্যাশন উদ্যোক্তাদের সঙ্গে তার অভিজ্ঞতা ভাগ করে নেয়ার জন্য তার অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ চট্টগ্রামের ডিজাইনার ফোরাম থেকে আজীবন সম্মাননা পেয়েছেন এমদাদ হক।
এছাড়াও একজন বিশিষ্ট ডিজাইনার এবং ফ্যাশন উদ্যোক্তা হিসেবে কাজের জন্য তিনি বাংলাদেশ সিনে জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশন, আরটিভি এবং পারসোনা বাংলাদেশ থেকে পুরস্কারও পেয়েছেন।
আরও পড়ুন: সাবেক এমপি শাহজাহান খান আর নেই
লেখক ও গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব আলী ইমাম আর নেই
১ বছর আগে