অনিয়ম
চান্দিনায় আশ্রয়ণের এক তৃতীয়াংশ ঘরে নেই ভূমিহীন, বরাদ্দে অনিয়মের অভিযোগ
ভূমিহীন ও গৃহহীন মানুষের আবাসন নিশ্চিত করতে আশ্রয়ণ প্রকল্প-২ এর আওতায় কুমিল্লার চান্দিনায় নিমার্ণ করা অনেক ঘরের বরাদ্দ নিয়ে কেউ থাকছেন না। অভিযোগ আছে, বরাদ্দের সময় বিভিন্ন মহলের তদবিরে কিছু সংখ্যক মানুষ ঘর বাগিয়ে নিয়েছেন। ফলে বঞ্চিত হয়েছেন প্রকৃত ভূমিহীনরা।
আশ্রয়ণ প্রকল্পের পরিত্যক্ত ওইসব ঘরে এখন মানুষের পরিবর্তে কোথাও লাকড়ির স্তুপ আবার কোথাও রয়েছে হাঁস-মুরগী! কেউ আবার ঘরের বৈদ্যুতিক তারসহ গুরুত্বপূর্ণ সরঞ্জাম নিয়ে হয়েছন উধাও। বরাদ্দকৃত ঘরের এক তৃতীয়াংশই এখন ফাঁকা পড়ে আছে। এমতাবস্থায় তাদের বরাদ্দ বাতিল করে প্রকৃত গৃহহীনদের নামে বরাদ্দ দিতে সরকারের কাছে দাবি জানাচ্ছেন স্থানীয়রা।
আরও পড়ুন: ড্যাপ ও ইমারত নির্মাণ বিধিমালায় সংশোধন চান আবাসন খাতের ব্যবসায়ীরা
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, পতিত আওয়ামী লীগ সরকার ২০১৮ সালে টানা তৃতীয়বার ক্ষমতায় আসার পর আশ্রয়ণ প্রকল্প-২ হাতে নেয়। ওই কর্মসূচির আওতায় সরকারি খাস জমিতে নির্মাণ করা হয় দৃষ্টিনন্দন পাকা ঘর। এসব ঘরে সংযুক্ত শৌচাগাড় সুবিধা এবং বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ করা হয়। জমির বন্দোবস্তসহ আশ্রয় দেওয়া হয় গৃহহীনদের।
ওই কর্মসূচির আওতায় কুমিল্লার চান্দিনায় পাঁচ ধাপে উপজেলার মাইজখার ইউনিয়নের ভোমরকান্দি, কেরণখাল ইউনিয়নের ছয়ঘড়িয়া, বাড়েরা ইউনিয়নের বাড়েরা, মহিচাইল ইউনিয়নের অম্বরপুর গ্রামসহ বিভিন্ন স্থানে ২১৬টি গৃহ নির্মাণের মধ্য দিয়ে প্রতিটি ঘরে গৃহহীনদের আবাসন নিশ্চিত করা হয়। কিন্ত পরবর্তীতে ওই ঘরগুলোর অকেগুলোতে থাকছেন না অনেক পরিবার। ঘর বরাদ্দপ্রাপ্ত সুবিধাভোগীরা কেউবা কর্মের তাগিদে পরিবার নিয়ে শহরে থাকেন, আবার কেউবা ঘর বরাদ্দ নিয়ে পূর্বের ঠিকানায় ফিরে গেছেন। এর আগে বরাদ্দ পেতে রাজনৈতিক বিবেচনায় তদবির, উপজেলা প্রশাসনের দপ্তরের চাকুরির সুবাদে প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের সুপারিশ, আবার কেউ কেউ টাকার বিনিময়ে বরাদ্দ নেন ওইসব ঘরের।
উপজেলার মাইজখার ইউনিয়নের ভোমরকান্দি গ্রামের খাস জমিতে একত্রে ৪০টি ঘর নির্মাণ করে সেখানে ৪০টি পরিবারকে আশ্রয় দেওয়া হয়। গত শনিবার (৮ মার্চ) দুপুরে সরজমিনে দেখা যায়, সেখানকার ৫, ৭, ১১, ১৪, ২৪, ২৯, ৩০, ৩৫, ৩৬ ও ৪০নম্বর ঘরগুলোর কোনোটিতে তালা ঝুলছে, আবার কোনটির দরজা খোলা ফেলেই চলে গেছে বরাদ্দপ্রাপ্তরা। তালাবদ্ধ ঘরগুলোর কোনটির সামনে রয়েছে পাশের ঘরের বাসিন্দাদের লাকড়ি ও পাতার স্তুপ। আর দরজা খোলা রেখে ফেলে যাওয়া ঘরগুলোর ভিতরে রয়েছে পাশের ঘরের বাসিন্দাদের লাকড়ি, খড়কুটো। আবার কোনোটিতে হাঁস মুরগি পালন করা হচ্ছে। সেখানকার ৪০ নম্বর ঘরটি যার নামে বরাদ্দ ওই ব্যক্তি ঘর বরাদ্দ পাওয়ার কয়েকদিন পর ঘরের বৈদ্যুতিক তারসহ মূল্যবান জিনিসপত্র খুলে নিয়ে গেছে। কোনো কোনো ঘরে দুই বছরেও কোন মানুষ বসবাস না করায় বকেয়া বিলের দায়ে বৈদ্যুতিক লাইন বিচ্ছিন্ন করেছে পল্লী বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ। আবার কোনো ঘরে একদিনও বৈদ্যুতিক আলো না জ্বলায় দুই বছরে মিটার রিডিং শুন্যের কোঠায়!
রবিবার (৯ মার্চ) উপজেলার কেরণখাল ইউনিয়নের ছয়ঘড়িয়া গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক সংলগ্ন অত্যন্ত সুন্দর পরিবেশে এক সঙ্গে ৩০টি গৃহ নির্মাণ করে সেগুলো বরাদ্দ দেওয়া হয়। বর্তমানে সেখানে ১৬টি পরিবার স্থায়ীভাবে বসবাস করলেও ১০টি পরিবারের কোনো খোঁজ নেই। ৪টি ঘরে প্রকৃত বরাদ্দপ্রাপ্তর না থাকলেও বাস করছেন অন্যরা।
আরও পড়ুন: সংশোধিত ড্যাপ বাতিলের দাবি আবাসন ব্যবসায়ীদের, আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত হবে মনে করছেন পরিকল্পনাবিদরা
অভিযোগ রয়েছে উপজেলা প্রশাসনে অস্থায়ী ভিত্তিতে চাকুরি করার সুবাদে লাইলি বেগম ঘর বরাদ্দ নিয়ে এ পর্যন্ত ওই ঘরে বসবাস করেননি। সুবিধাভোগী রিকশাচালক সুজন ঘর বরাদ্দ নিয়ে একদিনও থাকেনি।
লাইলি বেগম জানান, আমি মাঝে মধ্যে ওই ঘরে যাই। আর আমার মামার বাড়ি চান্দিনা উপজেলা সদরের মহারং গ্রামে, বেশির ভাগ সময় সেখানেই থাকি।
একই দিন শুহিলপুর ইউনিয়নের শুহিলপুর গ্রামে গিয়ে দেখা যায় ৮টি ঘরের মধ্যে ১টিতে বাসিন্দা নেই। ঘর বরাদ্দ পাওয়া বিমল শুরু থেকেই থাকছেন ওই ঘরে। অম্বরপুর গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে ২৫ ঘরের মধ্যে ৯টি ফাঁকা পড়ে আছে।
ভোমরকান্দি আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাসিন্দা ওসমান গণি জানান, সে সময়ে ঘরগুলো এলোমেলোভাবে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এক গ্রামের বা এক ইউনিয়নের বাসিন্দাকে অন্য গ্রামে অন্য ইউনিয়নে ঘর দেয়। যে কারণে অনেকেরই কোনো কাজ কর্ম নেই। এখানে অনেকে কর্ম না পেয়ে বাধ্য হয়ে অন্যত্র চলে গেছে।
আশ্রয়ণ প্রকল্পের একাধিক বাসিন্দা জানান, সে সময়ে (যখন ঘর বরাদ্দ দেওয়া হয়) চেয়ারম্যান মেম্বারসহ রাজনৈতিক নেতাদের সুপারিশে অনেক ঘর বরাদ্দ দেওয়া হয়। যাদের বাড়িতে জায়গা আছে, বা যারা চান্দিনাতে থাকেন না—এমন লোকদেরকেও ঘর বরাদ্দ দেওয়া হয়। ওইসময়ে প্রকৃত ভূমিহীন অনেকেই ঘর বরাদ্দ পায়নি। বর্তমানে সবগুলো ঘর যাচাই-বাছাই করে যারা ঘরে থাকছে না বা যাদের নিজস্ব জায়গা থাকার পরেও ঘর বরাদ্দ নিয়েছেন— তাদের বরাদ্দ বাতিল করে প্রকৃত ভূমিহীনদের তালিকা করে ঘরগুলো বরাদ্দ দেওয়ার অনুরোধ জানান তারা।
আরও পড়ুন: গণভবনে জাদুঘরের পাশাপাশি শহীদদের পরিবারের আবাসনের প্রস্তাব পার্থর
৩০ দিন আগে
অনিয়মের অভিযোগে এক প্রতিষ্ঠানের সদস্য পদ স্থগিত করলো বাজুস
সোনা বেচাকেনায় অনিয়মের অভিযোগে গোল্ড কিনেন টেকনোলজিসের সদস্য পদ স্থগিত করেছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স এসোসিয়েশন (বাজুস)।
বৃহস্পতিবার (৯ জানুয়ারি) এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বাজুস জানায়, সদস্যপদ গ্রহণের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সকল শর্ত পূরণ করায় ২০২২ সালের ২৬ ডিসেম্বর প্রতিষ্ঠানটিকে বাজুসের প্রাথমিক সদস্যপদ প্রদান করা হয়। কিন্তু স্বর্ণ বেচাকেনায় অনিয়ম করার বাজুস এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
অনিয়ম প্রসঙ্গে বাজুস জানায়, প্রতিষ্ঠানটি নিয়ম বহির্ভূতভাবে সোনার অলঙ্কারের পরিবর্তে সোনার বার ও কয়েন বিক্রি করায় সদস্যপদ সাময়িকভাবে স্থগিত করা হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির এ ধরনের কার্যক্রম বাজুসের গঠনতন্ত্রের ৪(ক) ধারা যথাযথভাবে অনুসরণ না করে না সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করেছে সংগঠনটি।
৯৪ দিন আগে
ভূমি অধিগ্রহণ কার্যক্রমে প্রায়ই অনিয়মের তথ্য পাওয়া যায়: ভূমি উপদেষ্টা
ভূমি উপদেষ্টা এ এফ হাসান আরিফ বলেছেন, ভূমি মন্ত্রণালয়ের ব্যবস্থাপনায় জনস্বার্থে তাৎক্ষণিক প্রয়োজন এবং সরকারের উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডে ভূমি অধিগ্রহণ ও হুকুম দখল কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হয়।
তিনি বলেন, ভূমি অধিগ্রহণ কার্যক্রম নিয়ে প্রায়ই অনিয়মের তথ্য পাওয়া যায়। মালিকরা ক্ষতিগ্রস্ত ও হয়রানির শিকার হন। সতর্ক থাকতে হবে, যাতে কেউ ন্যায্যতা থেকে বঞ্চিত বা মাত্রাতিরিক্ত ক্ষতিপূরণ না পান।
আরও পড়ুন: অসঙ্গতি দূর করতে জেন্ডার বাজেট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ: উপদেষ্টা
সোমবার (২৮ অক্টোবর) ভূমি মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে কেন্দ্রীয় ভূমি বরাদ্দ কমিটির ১৪৪তম সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, বিভিন্ন প্রকল্পের অধীন সেতু নির্মাণে উচ্চতা সঠিকভাবে নির্ধারণ না হওয়ায় বর্ষায় পানির গভীরতা বেড়ে গেলে নৌযান চলাচল বিঘ্নিত হয়। জনদুর্ভোগ সৃষ্টি হয়। এজন্য সঠিক পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, ক্রমবর্ধমান বিভিন্ন প্রকল্প গ্রহণ, শিল্পায়ন ও বসতবাড়ি নির্মাণে দেশের কৃষি জমি হ্রাস পাচ্ছে। এজন্য নির্মাণ কাজে নতুন নতুন প্রযুক্তি গ্রহণ করে ভূমির সদ্ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে।
এছাড়া তিনি প্রকল্প গ্রহণে জলাশয় ভড়াট না করা ও পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
সভায় উপস্থিত ছিলেন ভূমি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব এ এস এম সালেহ আহমেদসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
আরও পড়ুন: পাট মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার সঙ্গে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রতিনিধিদলের সাক্ষাৎ
১৬৭ দিন আগে
অনিয়মে জর্জরিত কেরু অ্যান্ড কোম্পানি
চুয়াডাঙ্গার দর্শনার ঐতিহ্যবাহী ভারী শিল্পপ্রতিষ্ঠান কেরু অ্যান্ড কোম্পানি বিভিন্ন ব্রান্ডের ফরেন লিকারসহ (মদ) এ প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন মালামাল চুরি, গায়েব ও নানা অনিয়মই যেন এখন নিয়ম হয়ে দাঁড়িয়েছে। এসব অনিয়মের বিরুদ্ধে কর্তৃপক্ষ নামমাত্র তদন্ত কমিটি করে দোষীদের সাময়িক শাস্তি দিলেও কিছুদিন পর তারা আবার সেই কারবার করে বহাল তবিয়তে থেকে যাচ্ছে। ফলে তৈরি হয়েছে সিন্ডিকেট।
বিগত সরকারের আমলে যা মাত্রা ছাড়িয়েছে। তবে গণঅভুত্থানের পর অর্ন্তবর্তীকালীন সরকার ক্ষমতায় আসার পরও থেমে নেই সেই সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম। আসন্ন দুর্গাপূজা উপলক্ষে আবারও তারা সক্রিয়। এবার ডিস্টিলারি বিভাগের এক ইলেকট্রিসিয়ানের যন্ত্র রাখা বাক্সে (টুল বক্স) মিলেছে ৬ বোতল ফরেন লিকার ও দুটি খালি বোতল।
গত সোমবার (৩০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ডিস্টিলারি এরিয়ার পাম্প হাউজে নিকট থেকে এগুলো উদ্ধার হয়। বিষয়টি প্রথমে ধামাচাপা থাকলেও পরে জানাজানি হয়ে যায়। এরপর নড়েচড়ে বসে কর্তৃপক্ষ। গেল জুন মাসেও ১৩ হাজার লিটার ডিএস স্পিরিট গায়েব হবার অভিযোগও এই ডিস্টিলারি বিভাগে উঠেছিল। সেসময় তদন্ত কমিটি গঠন করে কর্তৃপক্ষ। এছাড়া সর্বশেষ গত মে মাসে ১০৪ জন শ্রমিক-কর্মচারীর স্থায়ী নিয়োগ নিয়েও অর্থ লেনদেনসহ নানা অভিযোগ উঠে। যা নিয়ে সাবেক এমডি মোশাররফ হোসেন ও শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়নে সভাপতি সবুজ, সাধারণ সম্পাদক মাসুদসহ সাতজনের নামে মামলাও করেছেন এক ব্যক্তি।
আরও পড়ুন: চুয়াডাঙ্গায় মোটরসাইকেল নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে প্রাণ গেল কেরুর কর্মচারীর
জানা যায়, রাষ্ট্রায়ত্ত্ব চিনিকলগুলোর মধ্যে একমাত্র লাভজনক প্রতিষ্ঠান কেরু অ্যান্ড কোম্পানি (বাংলাদেশ) লিমিটেড। এটি একটি সমন্বিত কারখানা। এখানে চিনি, ভিনেগার, হ্যান্ড স্যানিটাইজারসহ বিভিন্ন ধরনের স্পিরিট ও দেশি-বিদেশি মদ উৎপাদন করা হয়। কেরু অ্যান্ড কোম্পানি (বাংলাদেশ) লিমিটেড কারখানার মূল পণ্য চিনি হলেও কোম্পানিকে বাঁচিয়ে রেখেছে ডিস্টিলারি পণ্য মদ। সেই লাভের খাত কেটে মঝে মধ্যেই চুরির ঘটনা ঘটে কেরু অ্যান্ড কোম্পানিতে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অভিযানে চোরাই মদসহ একের পর এক গ্রেপ্তারের ঘটনা ঘটলেও কেরু প্রশাসন চুরি ঠেকাতে অনেকটাই নির্বিকার বলেও অভিযোগ রয়েছে।
সর্বশেষ গত ৩০ সেপ্টেম্বরও চুরির চেষ্টার সময় ধরা পড়ে ৬ বোতল ফরেন লিকার। তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেকেই বলছেন আসন্ন দুর্গাপূজা উপলক্ষেও বিপুল পরিমাণে মদ চুরির আশঙ্কা রয়েছে। কারণ হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় এই উৎসব ঘিরে কেরুর ফরেন লিকারের (মদ) চাহিদা থাকে তুঙ্গে।
সাম্প্রতিক সময়ে পুলিশ ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের অভিযানে এই কারাখানায় উৎপাদিত দেশি মদ ও বিলাতি মদসহ (ফরেন লিকার) একাধিক চালান ধরা পড়েছে। এমনকি বোতলভর্তি বিলাতি মদ, মদের বোতলের লেবেল ও খালি বোতল উদ্ধারের ঘটনাও ঘটেছে। গ্রেপ্তার হয়েছে কেরুর শ্রমিকও। শ্রমিক সংগঠনগুলোই মূলত বছরের পর বছর এ সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ করে বলেও অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া শেখ হাসিনার সরকারের সময় স্থানীয় এমপি আলী আজগর টগর ও তার সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আলী মুনছুর বাবুই এ সিন্ডিকেটগুলোকে আশ্রয়-প্রশ্রয় দিয়ে বেপরোয়া করে তোলে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শ্রমিক বলেন, কোম্পানি থেকে দেশের বিভিন্ন পণ্যাগারে দেশি মদ পরিবহনের সময় তা চুরি ও পাচারের অভিযোগে চালকসহ শ্রমিক গ্রেপ্তারের একাধিক ঘটনা যেমন আছে, তেমনি ডিস্টিলারি থেকে বিলাতি মদ চুরির ঘটনাও একেবারে কম নয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরও কয়েকজন বলেন, ডিস্টিলারি বিভাগের কর্মকর্তারা মিলে শ্রমিক ইউনিয়ন নেতাদের যোগসাজশে সুযোগ বুঝে শ্রমিকদের দিয়ে এই চুরির কাজটি সম্পন্ন করে। যেটা আওয়ামী লীগ সরকারের আমলেই বেশি হয়েছে।
তারা আরও বলেন, এসমস্ত ঘটনায় ফরেন লিকার বিভাগের হিসাব বিভাগের এক কর্মকর্তা এখনো এ সমস্ত সিন্ডিকেট চালিয়ে যাচ্ছেন। তবে তারা সেই কর্মকর্তার পুরো নাম বলতে রাজী হননি।
এ বিষয়ে ভারপ্রাপ্ত মহাব্যবস্থাপক (ডিস্টিলারি) রাজিবুল হাসান বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারি ডিস্টিলারি বিভাগের কারখানার ভিতরে মো. আব্বাস আলী নামের ইলেকট্রিক হেলপার তার টুল বক্সের ভিতর ৬টি ফরেন লিকারের বোতল নিয়ে চুরির চেষ্টা করছে। তৎক্ষণাত আমি ও আমাদের মহাব্যবস্থাপক (প্রশাসন) মোহাম্মদ ইউসুফ আলী স্যারসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ আমরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে সেই টুল বক্স ভেঙ্গে ৬টি ফরেন লিকার এবং দুটি খালি বোতল উদ্ধার করি। এরপর ওই কর্মীকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
আরও পড়ুন: রাষ্ট্রায়ত্ত চিনিকল বন্ধের পরিকল্পনার প্রতিবাদে কেরু চিনিকল শ্রমিক-কর্মচারীদের কর্মবিরতি ও বিক্ষোভ
তিনি আরও বলেন, পুরো ডিস্টিলারি বিভাগ সিসিটিভি ক্যামেরা দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। নিরাপত্তার বিষয়ে আমরা শতভাগ সতর্ক।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে এর আগে গত ৩১ আগস্ট কেরুর প্রধান ফটক থেকে ১০০ লিটার দেশি মদসহ ট্রাকচালক সাইফুল ইসলাম ও তার দুজন সহকারীকে দর্শনা থানার পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। এছাড়া গত ১৫ জুলাই দর্শনা থানা পুলিশ রামনগর থেকে ৪০ লিটার দেশি মদসহ বাদল শেখ নামের এক মাদক ব্যবসায়ীকে আটক করে। গত ১৬ ফেব্রুয়ারি দর্শনা পৌর এলাকার আনোয়ারপুরে অভিযান চালিয়ে কেরুর তৈরি ৭৫০ মিলিলিটার পরিমাপের সাত বোতল বিলাতি মদসহ দুজনকে আটক করে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর। এছাড়া ২০২৩ সালের ২৩ অক্টোবর রাতে চুয়াডাঙ্গার লোকনাথপুরে ডিবির তল্লাশির মুখে পড়ে কেরুর একটি কাভার্ড ভ্যানে ১০ লিটার দেশি মদ পায় ডিবি। এই মদ ব্যারেল থেকে চুরি করা হয়েছিল বলেও সেসময় জানায় পুলিশ।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন জানান, চলতি বছরের ৯ ফেব্রুয়ারি চার বোতল বিলাতি মদসহ কেরুর পরিবহন বিভাগের চুক্তিভিত্তিক শ্রমিক রকি হোসেন নিরাপত্তাকর্মীদের হাতে ধরা পড়েন। সেযাত্রায় কিছুই হয়নি তার। এরপর গত ১৩ আগস্ট রাতে ডিস্টিলারির গুদামের ভেন্টিলেটর দিয়ে ১৩ নম্বর ভ্যাটে (মদ রক্ষণাগার) পাইপ লাগিয়ে দেশি মদ চুরির চেষ্টা করে নামমাত্র থানা পুলিশ করে তিনি তারপরও অদৃশ্য শক্তিতে পার পেয়ে যায়।
এই ব্যক্তি আরও বলেন, গত পনেরো বছরে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে এরকম চুরির ঘটনার শেষ নেই। কিছু ঘটনা সামনে এসেছে, তাই সবাই জেনেছে। কিন্তু অধিকাংশ চুরির ঘটনাই অধরা। আর এর পিছনে চুয়াডাঙ্গা-২ আসনের সাবেক সাংসদ সদস্য আলী আজগর টগর এবং তার ভাই সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আলী মুনছুর বাবুসহ আওয়ামী লীগের দলীয় লোকজনের মদদ থাকায় দিনের পর দিন রাষ্ট্রীয় সম্পদ তছরুপ করেছে এই সংঘবদ্ধ চোরচক্র।
অনুসন্ধানে আরও জানা গেছে, কোম্পানি থেকে পণ্যাগারগুলোতে দেশি মদ পাঠানোর সময় ব্যারেলের মুখে যে নিরাপত্তা সিল লাগানো হয়, গাড়িতে পরিবহনের সময় চালক ও সহকারীরা সেটি খুলে মদ বের করে নেন। এরপর আগে থেকে সংগ্রহ করা সিল লাগিয়ে দেন। মদ চুরি বন্ধে পণ্যাগার থেকে ফেরা পরিবহন কোম্পানির পক্ষ থেকে এর আগে তল্লাশি চালানো এবং চোরাই মদ উদ্ধার করা হলেও নানামুখী চাপে তা বন্ধ হয়ে গেছে।
এ বিষয়ে দর্শনা কেরু অ্যান্ড কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক রাব্বিক হাসানের সঙ্গে দেখা করতে তার কার্যালয়ে গেলে তিনি ছুটিতে থাকায় বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
দর্শনা কেরু অ্যান্ড কোম্পানির মহাব্যবস্থাপক (প্রশাসন) মোহাম্মদ ইউসুফ আলী বলেন, ৩০ সেপ্টেম্বর দুপুরে ডিস্টিলারি বিভাগের কারখানার ভিতরে মো. আব্বাস আলী নামের ইলেকট্রিক হেলপারের টুলবক্সে ৬ বোতল ফরেন লিকার পাওয়া গেছে। আমি খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যেয়ে দেখি তার টুল বক্স ভেঙে এগুলো উদ্ধার করি। আমরা তাৎক্ষনিকভাবে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করি। পরবর্তীতে অভিযোগ দায়ের করে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
তবে অন্যান্য কোনো বিষয়ে এ কর্মকর্তা বক্তব্য দেননি।
অভিযোগের বিষয় অভিযুক্ত আব্বাস আলীর সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। এমনকি মোবাইল ফোনেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। এছাড়া আব্বাস আলীকে অফিসেও পাওয়া যায়নি।
উল্লেখ্য, ১৯৩৮ সালে প্রতিষ্ঠিত কেরু অ্যান্ড কম্পানি চিনি উৎপাদন ছাড়াও রয়েছে ডিস্টিলারি, কৃষি খামার, পরীক্ষামূলক খামার ও জৈব সার। আর এখানে ৯টি ব্র্যান্ডের বিদেশি মদ উৎপাদন করা হয়। সেগুলো হলো ইয়েলো লেবেল মল্টেড হুইস্কি, গোল্ড রিবন জিন, ফাইন ব্র্যান্ডি, চেরি ব্র্যান্ডি, ইম্পেরিয়াল হুইস্কি, অরেঞ্জ কুরাকাও, জরিনা ভদকা, রোসা রাম ও ওল্ড রাম।
আরও পড়ুন: হ্যান্ড স্যানিটাইজারের পর বাজারে এলো কেরুর ভিনেগার
১৯১ দিন আগে
আর্থিক নিয়ম ভঙ্গের অভিযোগে ম্যানচেস্টার সিটির বিরুদ্ধে শুনানি শুরু সোমবার
ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের আর্থিক নিয়ম ভঙ্গের অভিযোগে ম্যানচেস্টার সিটির বিরুদ্ধে অবশেষে শুনানির দিন ধার্য হয়েছে। আগামী সোমবার থেকে শুনানি শুরু হবে বলে জানিয়েছে ক্রীড়াভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ইএসপিএন।
২০০৯-১০ মৌসুমে আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে ম্যানচেস্টার সিটির বিরুদ্ধে করা অভিযোগ একটি স্বাধীন কমিশনের কাছে পাঠানো হয়। সে সময় ক্লাবটির বিরুদ্ধে সঠিক আর্থিক তথ্য দেওয়ার নিয়ম ভাঙার অভিযোগ ওঠে।
ক্লাবটির বিরুদ্ধে আরও অভিযোগ, ২০১৩-১৪ থেকে ২০১৭-১৮ মৌসুম পর্যন্ত উয়েফার ফাইন্যান্সিয়াল ফেয়ার প্লের নিয়ম মানেনি তারা। এছাড়া ২০১৫-১৬ থেকে ২০১৭-১৮ মৌসুম পর্যন্ত প্রিমিয়ার লিগের মুনাফা ও স্থায়িত্বের (পিএসআর) নিয়ম অনুসরণ করতেও ব্যর্থ হয়েছে ক্লাবটি।
আরও পড়ুন: প্রিমিয়ার লিগের ইতিহাস নতুন করে লিখল ম্যানচেস্টার সিটি
তবে প্রিমিয়ার লিগের পক্ষ থেকে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করেছে সিটি কর্তৃপক্ষ। কমিশনের কাছে জবাবদিহিতার সময় তারা বলে, ‘ক্লাব একটি একটি স্বাধীন কমিশনের মাধ্যমে এই বিষয়টির পর্যালোচনাকে স্বাগত জানায়।’
এ বিষয়ে আগামী ১৬ সেপ্টেম্বর থেকে শুনানি শুরু হবে এবং আপিলসহ দুই মাস ধরে চলা শুনানির চূড়ান্ত রায় চলতি মৌসুম শেষে পাওয়া যাবে বলে আশা করা হচ্ছে।
তবে দোষী সাব্যস্ত হলে পয়েন্ট কর্তন, এমনকি লিগ থেকে অবনমনের মতো শাস্তির মুখেও পড়তে হতে পারে ক্লাবটির।
আরও পড়ুন: হালান্ডের টানা দ্বিতীয় হ্যাটট্রিকে সিটির তিনে তিন
পিএসআর আইন ভাঙার দায়ে গত মৌসুমে পয়েন্ট কাটা গিয়েছিল এভারটন ও নটিংহ্যাম ফরেস্টের।
এ বিষয়ে ম্যানচেস্টার সিটির কাছ থেকে সংবাদমাধ্যমটি তাৎক্ষণিকভাবে কোনো মন্তব্য নিতে পারেনি। এছাড়া প্রিমিয়ার লিগ মন্তব্য করতে রাজি হয়নি।
২১৩ দিন আগে
উপজেলা নির্বাচনে অনিয়ম হলে কঠোর হস্তে দমন করা হবে: ইসি
নির্বাচন কমিশনার (ইসি) আনিছুর রহমান বলেছেন, ‘জাতীয় সংসদের মতো উপজেলা পরিষদ নির্বাচনেও কোনো অনিয়ম হলে কঠোর হস্তে দমন করা হবে এবং এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে কোনো কুণ্ঠাবোধ করা হবে না।’
তিনি বলেন, ‘যেভাবে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সম্পন্ন করেছি, সেভাবে উপজেলাও হবে। কোনোভাবে জাতীয় নির্বাচনের চেয়ে নিচে নামার সুযোগ নেই।’
আরও পড়ুন: ষষ্ঠ ধাপের উপজেলা নির্বাচনে অনলাইনে মনোনয়ন দাখিল পদ্ধতি চালু করেছে ইসি
বুধবার (২৪ এপ্রিল) সকালে চট্টগ্রাম মহানগরীর পিটিআই ভবনে ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন নিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ মাঠ প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
নির্বাচন কমিশনার বলেন, ‘বর্তমান সরকারের আওতায় কীভাবে নির্বাচন হচ্ছে সেটি সবাই দেখবে। উপজেলা নির্বাচনে জাতীয় নির্বাচনের মতো দলীয় প্রার্থী থাকছে না এবং দলীয় প্রতীকও নেই। আশা করছি ভোটারের সংখ্যা বাড়বে। এবং নির্বাচন যে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হবে তাতে কোনো সন্দেহ নেই।’
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চট্টগ্রাম-১৬ (বাঁশখালী) আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মোস্তাফিজুর রহমানের শেষ মুহূর্তে প্রার্থিতা বাতিলের বিষয়টি উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের ৫৩ বছরের ইতিহাসে এভাবে কখনো প্রার্থিতা বাতিল হয়নি। ওইদিন ভোটগ্রহণ শেষ হওয়ার ১৫ মিনিট আগে তার প্রার্থিতা বাতিল হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘বাতিল করার মতো যথেষ্ট উপাদান ছিল। আওয়ামী লীগের প্রার্থী মুস্তাফিজুর রহমানকে সপ্তাহখানেক আগে থেকে নজরদারি করা হচ্ছিল। যখন তিনি থানায় ঢুকে পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে মারধর করছেন, সার্কেল এসপিও তাকে নিবৃত্ত করতে পারছেন না, এরপর আর বসে থাকা যায়নি। তখনই আমরা প্রার্থিতা বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’
আনিছুর রহমান বলেন, ‘আমরা এবারও ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন চলাকালীন সময়ে কোনো রকমের সিদ্ধান্ত নিতে কুণ্ঠাবোধ করব না। আমাদের একটাই চাওয়া- নির্বাচনকে সুন্দর করতে হবে। যেখানেই কোনো অনিয়ম হবে, কারচুপি বা অন্যায় কার্যক্রম হবে সেখানে প্রিজাইডিং অফিসার ব্যবস্থা নিতে পারবেন। আপনারা ভোটের দিন যে যেখানে থাকবেন, আইনের স্বপক্ষে সর্বময় ক্ষমতা প্রয়োগ করবেন। এতে যদি কোনো রকমের বিপদগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে, আমরা আপনাদের পাশে আছি।’
নির্বাচন কমিশনার বলেন, ‘সরকারপ্রধান থেকে শুরু করে কেউ চায় না নির্বাচন খারাপ হোক। তিনি (প্রধানমন্ত্রী) বিভিন্ন বক্তব্যে বিষয়টি উল্লেখও করেছেন। ভোট সুন্দর ও সুষ্ঠু করার জন্য যা যা দরকার সব করবেন।’
বিভাগীয় কমিশনার মো. তোফায়েল আহমেদের সভাপতিত্বে মত বিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন- সিএমপি কমিশনার কৃষ্ণ পদ রায়, চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি নুরে আলম মিনা, বিজিবির রিজিওনাল কমান্ডার মো. আজিজুর রহমান, ডিজিএফআই চট্টগ্রাম শাখার অধিনায়ক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল তোফায়েল মোস্তফা সরওয়ার ও জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান।
আরও পড়ুন: নারীদের আইসিটিতে দক্ষ করে তুলতে হবে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী
আইসিএমএবির প্রাক-বাজেট গোলটেবিল আলোচনা অনুষ্ঠিত
৩৫৪ দিন আগে
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরে গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রিতে অনিয়ম, জরিমানা
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরের বিভিন্ন জায়গায় গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রিতে অনিয়মের অভিযোগ পাওয়ার পর গতকাল শনিবার (২৩ মার্চ) মোবাইল কোর্টের অভিযান পরিচালনা করা হয়।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তানভীর ফরহাদ শামীম অভিযান পরিচালনা করেন।
এ সময় পৌরসভার নারায়ণপুরে গ্যাস সিলিন্ডারের ডিলার মেসার্স আনোয়ার ট্রেডার্সকে ক্রেতাদের কাছে রশিদ সরবরাহ না করায় ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
আরও পড়ুন: চাঁপাইনবাবগঞ্জে অনিয়মের অভিযোগে ২ ক্লিনিককে আড়াই লাখ টাকা জরিমানা
বসুন্ধরা গ্যাসের ডিলার মেসার্স মাহাদী এন্টারপ্রাইজ বিস্ফোরক পরিদপ্তরের লাইসেন্স দেখাতে না পারায় সাময়িক বন্ধ রাখা হয়েছে।
এছাড়া, অধিক মূল্যে সিলিন্ডার বিক্রির দায়ে আরেক খুচরা বিক্রেতাকে ১ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
পাশাপাশি বিস্ফোরক পরিদপ্তরের লাইসেন্স ছাড়া খোলা দোকানে ঝুঁকিপূর্ণ পরিবেশে গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রি না করার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়।
আরও পড়ুন: শিশু খাদ্যে কেমিক্যাল পাওয়ায় চাঁদপুরে ব্যবসায়ীর জরিমানা
যশোরে জেলি ভরা ৩৪০ কেজি চিংড়ি জব্দ, দুই বাস মালিককে জরিমানা
৩৮৫ দিন আগে
কাজে অনিয়ম হলে কঠোর ব্যবস্থা: বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী
ভাঙন ঠেকাতে যমুনা নদীর বাম তীর বরাবর ৬ কিলোমিটার পর্যন্ত জিও ব্যাগ দিয়ে নদী তীর প্রতিরক্ষামূলক কাজের উদ্বোধন করেছেন বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু।
দীর্ঘদিন টাঙ্গাইল জেলার নাগরপুর উপজেলার সলিমাবাদ, বলরামপুর ও নিশ্চিন্তপুর এলাকা এবং মানিকগঞ্জের দৌলতপুর উপজেলার চরকাটারি এলাকা ভাঙন ঝুঁকিতে ছিল।
বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু বলেন, এই এলাকার মানুষ দীর্ঘদিন অনেক কষ্ট করেছেন। নিশ্চিন্তপুর একটি গ্রাম ছিল সেই গ্রাম এখন নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। অনেক মানুষ নিজের বাড়ি-ঘর, জমি হারিয়েছে। প্রকৃতির সঙ্গে যুদ্ধ করে বেঁচে আছেন। আজ তাদের খুশির দিন।
এসময় বঙ্গবন্ধু সেতু থেকে শুরু করে আরিচা ঘাট পর্যন্ত একটি রিংরোড করার পরিকল্পনা রয়েছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
শনিবার (২৭ জানুয়ারি) যমুনা পাড়ে জিও ব্যাগ দ্বারা নদী তীর প্রতিরক্ষামূলক কাজের উদ্বোধনকালে এ কথা বলেন তিনি।
আরও পড়ুন: পাট ও চামড়া খাতে বিনিয়োগে ইইউ ও যুক্তরাজ্যের প্রতি বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রীর আহ্বান
পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন বাস্তবায়িত এই প্রকল্প সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে সংশ্লিষ্টদের নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করার আহ্বান জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, এই কাজে কোনো অনিয়ম সহ্য করা হবে না। কেউ অনিয়ময়ে জড়িত থাকলে যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আহসানুল ইসলাম টিটু জানান, আজকে স্থায়ী বাঁধের কার্যক্রম শুরু হলো নদীতে জিও ব্যাগ ফেলার মাধ্যমে। এরপর সিসি ব্লক দেওয়া হবে। এই প্রকল্পের শুরু হতে সম্পৃক্ত থেকে কাজ করার জন্য পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক এবং সাবেক পানিসম্পদ উপমন্ত্রী একেএম এনামুল হক শামীমকে বিশেষ ধন্যবাদ জানান।
দেলদুয়ার ও নাগরপুর উপজেলায় রাস্তা-ঘাট, ব্রিজ-কালভার্ট নির্মাণসহ অনেক উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড চলমান উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, এই বাঁধের কাজ শুরু করতে না পারা আমার একটা অপূর্ণতা ছিল। আজ আমি অত্যন্ত আনন্দিত যে স্থায়ী বাঁধের কাজটা শুরু করতে পারলাম। এলাকাবাসীর দীর্ঘদিনের দুঃখ মোচন হতে চলেছে।
এ প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, নদীর পাশে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ করতে গিয়ে হয়তো অনেকের জমি লাগতে পারে। যাদের জমি সরকারি কাজে লাগবে ইউএনও'র মাধ্যমে তাদের তালিকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। কাউকে বাধা না দেওয়ার অনুরোধ করে সবাইকে সহযোগিতা করার আহ্বান জানান।
এর আগে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী বলেন, দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়েছেন। তার নির্দেশনা অনুযায়ী বাণিজ্য মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বিভাগ সমন্বয় করে কাজ করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে ভারতের হাইকমিশনার ও রাশিয়ার রাষ্ট্রদূতের সৌজন্য সাক্ষাৎ
তিনি জানান, করোনা মহাসংকটের পর ইউক্রেন-রাশিয়া এবং ইসরাইল-ফিলিস্তিন যুদ্ধের কারণে পণ্য পরিবহনে জাহাজ চলাচল বিঘ্নিত হওয়ায় সারাবিশ্বে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে।
তিনি আরও জানান, যার প্রভাব আমাদের দেশেও পড়েছে। সরকার সাধারণ মানুষের কষ্টের কথা বিবেচনা করে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম নাগালে রাখার চেষ্টা করছে।
আহসানুল ইসলাম বলেন, সরকার ব্যবসায়ীদের সবধরনের সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করবে কিন্তু কেউ অন্যায়ভাবে অতি মুনাফার লোভে দাম বাড়ানোর চেষ্টা করলে সরকার তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেবে।
আসন্ন রমজান মাসে চিনি-তেল এবং খেজুরসহ অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম স্বাভাবিক রাখার জন্য ব্যবসায়ীদের আহ্বান জানিয়ে বলেন, পবিত্র এই মাসে বিশ্বের সব মুসলিম দেশ পণ্যের দাম কমিয়ে দেয় আর আমরা বাড়িয়ে দেই।
এই প্রবণতা থেকে বের হয়ে আসার জন্য ব্যবসায়ীদের অনুরোধ জানান।
টিটু বলেন, চক্রান্ত এখনো শেষ হয়নি। দেশি-বিদেশি চক্রান্ত চলমান রয়েছে। আমাদের সবাইকে সচেতন থাকতে হবে। সরকার বিরোধী ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে সতর্ক থাকতে নেতা-কর্মীদের আহ্বান জানান।
আরও পড়ুন: বাজার স্থিতিশীল রাখতে ব্যবসায়ীদের সহযোগিতা চাইলেন বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী
৪৪২ দিন আগে
অনিয়ম-কম ভোটার উপস্থিতির মধ্যেই ভোট গ্রহণ শেষ, নিহত ২
দেশের বিভিন্ন স্থানে ব্যালট বাক্স ভর্তি,নানা অনিয়ম ও বিক্ষিপ্ত সহিংসতার মধ্যে দিয়েই রবিবার বিকালে শেষ হয়েছে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোট গ্রহণ। মুন্সীগঞ্জ ও কুমিল্লায় দুইজন নিহত এবং বেশ কয়েকজন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
দেশের ৩০০টি আসনের মধ্যে ২৯৯টি আসনে কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে সকাল ৮টা ভোট গ্রহণ শুরু হয়ে বিকাল ৪টায় ভোট গ্রহণ শেষ হয়। ভোট শেষ হওয়ার পরপরই ভোট গণনা শুরু হয়েছে।
আরও পড়ুন: নির্বাচনে জয়ের ব্যাপারে শতভাগ আশাবাদী: ভোট দেওয়ার পর সাকিব
সহিংসতা, ভোটকেন্দ্র দখল ও ব্যালট বাক্স ভর্তি করার অভিযোগে তিনটি কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ স্থগিত করা হয়।
সিলেটের দুই ভোটকেন্দ্রের সামনে 'নির্বাচনবিরোধী স্লোগান' দিয়ে ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনাও ঘটেছে।
আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ সকালে ঢাকা সিটি কলেজে ভোট দিয়েছেন।
নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিব জাহাংগীর আলম জানান, রবিবার বিকাল ৩টা পর্যন্ত ২৭ দশমিক ১৫ শতাংশ ভোট পড়েছে।
আরও পড়ুন: সিলেটে ভোটকেন্দ্রের সামনে ককটেল বিস্ফোরণ, আগুন
আগারগাঁও নির্বাচন কমিশন (ইসি) ভবনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ তথ্য জানান।
এর মধ্যে ঢাকায় ২৫ শতাংশ, চট্টগ্রামে ২৭ শতাংশ, খুলনায় ৩২ শতাংশ, সিলেটে ২২ শতাংশ, ময়মনসিংহে ২৯ শতাংশ, রাজশাহীতে ২৬ শতাংশ, রংপুরে ২৬ শতাংশ এবং বরিশালে ৩১ শতাংশ ভোট পড়েছে।
এদিকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছেন, তিনি ভোটার উপস্থিতি নিয়ে ভাবছেন না। তার দায়িত্ব হচ্ছে নির্বাচনের ব্যবস্থা করা।
ইউএনবির ঢাকা, দিনাজপুর, চট্টগ্রাম, ভোলা, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, খুলনাসহ সারা দেশের সংবাদদাতারা জানিয়েছেন, প্রত্যাশার চেয়ে কম ভোটার উপস্থিতি দেখা গেছে ভোটকেন্দ্রগুলোতে।
রাজধানীর গুলশান-২ এর গুলশান মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজ কেন্দ্র পরিদর্শন করে ইউএনবির প্রতিবদেক জানান, বেলা ১১টা পর্যন্ত প্রথম তিন ঘণ্টায় ১৩ হাজার নিবন্ধিত ভোটারের মধ্যে মাত্র ৩৫ জন ভোট দিয়েছেন।
আরও পড়ুন: কুড়িগ্রাম-৩ আসন: জালভোট দেওয়ায় যুবকের ৫ বছর কারাদণ্ড, প্রিসাইডিং কর্মকর্তাকে অব্যাহতি
তবে সকাল ১০টার পর হঠাৎ ৫ থেকে ১০ মিনিটের জন্য ভোটারের লাইন দেখা যায়।
ঢাকা-৮ (রমনা-মতিঝিল) আসনের উদয়ন স্কুল কেন্দ্রে ভোট গ্রহণের প্রথম দুই ঘণ্টায় মাত্র ৫০টি ভোট পড়েছে বলে জানিয়েছেন প্রিসাইডিং অফিসার লিটন দাস।
তিনি বলেন, 'সুষ্ঠুভাবে ভোট গ্রহণ চলছে।’
ইলেকশন ম্যানেজমেন্ট অ্যাপসের তথ্য অনুযায়ী, ঢাকা-৮ আসনের তিনটি কেন্দ্রে ভোট গ্রহণের প্রথম চার ঘণ্টায় মাত্র ৮ শতাংশ ভোট পড়েছে।
এদিকে ঢাকা-১২ আসনের তেজগাঁও আদর্শ স্কুল অ্যান্ড কলেজের দুটি বুথে সাড়ে চার ঘণ্টার মধ্যে ৮৯৮ জন ভোটারের মধ্যে ৫০ জন ভোট দিয়েছেন।
আরও পড়ুন: সিরাজগঞ্জে জাল ভোট দেওয়ার চেষ্টা, ২ জনের কারাদণ্ড
ঢাকা-১৮ আসনের উত্তরা হাই স্কুল ও কলেজ এলাকায়ও একই অবস্থা।
ভোট কেন্দ্রের প্রিসাইডিং অফিসার তোফাজ্জল হোসেন জানান, পুরুষ ভোটারদের জন্য নির্ধারিত কেন্দ্র-৩-এ মোট নিবন্ধিত ভোটারের সংখ্যা ২ হাজার ১৫৮ জন হলেও দুপুর ১২টার দিকে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত মাত্র ১২০টি ভোট পড়েছে।
তবে ঢাকা-১৬ আসনের কেন্দ্রগুলোতে ভোটার উপস্থিতি বাড়তে শুরু করেছে।
ভোটের প্রথম চার ঘণ্টায় রাজধানীর বাইরেও কম ভোটার উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে।
সকাল ১০টা পর্যন্ত দিনাজপুরের ভোটকেন্দ্রগুলোতে ভোটার উপস্থিতি ছিল খুবই কম। তবে নির্বাচন কর্মকর্তারা আশ করছেন কুয়াশা ও ঠান্ডা আবহাওয়ার প্রভাব কমে গেলে ভোটার উপস্থিতি বাড়বে।
এদিকে প্রার্থীদের সমর্থকরা কেন্দ্রের সামনে জড়ো হয়ে স্লোগান দিচ্ছেন।
নির্বাচনের প্রথমার্ধে কুমিল্লা, বাগেরহাট, বরিশাল ও হবিগঞ্জে প্রত্যাশার চেয়ে কম ভোটার উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে।
সারা দেশে বিক্ষিপ্ত সহিংসতায় একজন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
আরও পড়ুন: সিলেট-৪ আসনে তৃণমূল বিএনপি প্রার্থীর ভোট বর্জন
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সারাদেশে বিক্ষিপ্ত সহিংসতার খবর পাওয়া গেছে।
মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলার মীরকাদিমের টেঙ্গরে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর এক সমর্থককে ছুরিকাঘাতে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এছাড়া চট্টগ্রামের একাধিক স্থানে সহিংসতার খবর পাওয়া গেছে।
চট্টগ্রাম-১০ আসনের কালশী-পাহাড়তলী এলাকায় আওয়ামী লীগ প্রার্থী ও স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে দুইজন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন।
এদিকে, চট্টগ্রাম নগরীর চান্দগাঁও এলাকায় ভোটারদের ভোট দিতে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করায় পুলিশ ও বিএনপির নেতা-কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।
যশোরে ভোট গ্রহণ শুরুর এক ঘণ্টা আগে একটি ভোটকেন্দ্রে ককটেল বিস্ফোরণে বাংলাদেশ আনসারের এক সদস্য আহত হয়েছেন।
বরিশাল-৫ আসনেও সংঘর্ষের খবর পাওয়া গেছে।
আরও পড়ুন: আড়াইহাজারের ভোটকেন্দ্রে সংঘর্ষ, ভোট গ্রহণ স্থগিত
বরিশাল-৫ (সদর) আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী সালাহউদ্দিন রিপন অভিযোগ করেছেন, আওয়ামী লীগ প্রার্থীর সমর্থকরা তার সমর্থকদের ওপর হামলা করেছে, এজেন্টদের কেন্দ্র থেকে বের করে দিয়েছে এবং ভোট গ্রহণে বাধা দিচ্ছে।
অনিয়মের অভিযোগ
অনিয়মের অভিযোগে নরসিংদী-৪ (মনোহরদী-বেলাবো) আসনের একটি কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ বাতিল করা হয়েছে।
জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা ড. বদিউল আলম জানান, ব্যালট জালিয়াতির অভিযোগে ভোট গ্রহণ বাতিল করা হয়েছে।
কুমিল্লা-৪ (দেবিদ্বার) আসনে আওয়ামী লীগের সমর্থকদের বিরুদ্ধে ব্যালট পেপারে নৌকা প্রতীকে সিল দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া একটি ভিডিওতে ব্যালট বইয়ের অসংখ্য পাতায় নৌকা প্রতীক দেখানো হয়েছে।
এ সময় উপস্থিত সহকারী প্রিসাইডিং কর্মকর্তাসহ অন্য কর্মকর্তারা জানান, কিছু লোক এসে জোরপূর্বক নৌকা প্রতীকে সিল দিয়ে চলে যায়।
এদিকে ময়মনসিংহের গফরগাঁও আসনে দুইজন স্বতন্ত্র প্রার্থী এবং নরসিংদী-২ আসনে জাতীয় পার্টির এক প্রার্থী অনিয়ম ও ভোট কারচুপির অভিযোগ এনে নির্বাচন বর্জন করেছেন।
আরও পড়ুন: নির্বাচন 'অবাধ ও সুষ্ঠু', 'কম ভোটদান' আসলে 'ভুল ধারণা': মার্কিন পর্যবেক্ষক
ঈগল প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী আবুল হোসেন দিপু ও ট্রাক প্রতীকের প্রার্থী কায়সার আহমেদ জানান, উপজেলার ১৫টি ইউনিয়ন ও পৌর এলাকার অধিকাংশ ভোটকেন্দ্রের পোলিং এজেন্টদের জোর করে ভোটকেন্দ্র থেকে বের করে দেওয়ায় তারা ভোট বর্জন করেছেন।
এদিকে অনিয়মের অভিযোগ তুলে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন নরসিংদী-২ আসনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী রাকিকুল আলম সেলিম।
বিরোধী দলের বর্জনের মধ্য দিয়ে টানা চতুর্থবারের মতো দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোট গ্রহণ শুরু হয়েছে।
দেশের ৩০০টি আসনের মধ্যে ২৯৯টি আসনে কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত ভোট গ্রহণ করা হয়।
আরও পড়ুন: নরসিংদী-৪ আসনে ভোট কারচুপির অভিযোগে আ.লীগ প্রার্থীর ছেলেকে গ্রেপ্তারের নির্দেশ ইসির
৪৬২ দিন আগে
বিমানে পাইলট নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগ তদন্তের নির্দেশ
পাইলট নিয়োগে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের নিয়ম-নীতি লঙ্ঘনের অভিযোগে তদন্ত কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। এই অনিয়ম তদন্তে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করতে বলেছেন আদালত।
এই তিন সদস্যের তদন্ত কমিটিতে বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব, বাংলাদেশ বিমানের একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা ও সিভিল এভিয়েশনের একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাকে যুক্ত করতে বলেছেন আদালত।
রবিবার (১৩ আগস্ট) বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। এর আগে পাইলট নিয়োগে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের আন্তর্জাতিক ও নিজস্ব নিয়মনীতির লঙ্ঘনের অভিযোগ তদন্তের নির্দেশনা চেয়ে রিট করা হয়।
আরও পড়ুন: সুজনের হাফিজ-বদিউলের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননা মামলার আবেদন
একই সঙ্গে কর্তৃপক্ষের নিষ্ক্রিয়তা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না- জানতে চেয়ে রুল জারি করা হয়েছে। এক মাসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। আদালতে রবিবার রিটের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. তানভীর আহমেদ।
এর আগে পাইলট নিয়োগে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস আন্তর্জাতিক ও নিজস্ব নিয়ম-নীতি লঙ্ঘন করেছে, এমন অভিযোগ তদন্তে স্বাধীন কমিটি গঠন করতে লিগ্যাল নোটিশ পাঠানো হয়েছিল।
জনস্বার্থে গত ২৭ মার্চ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. তানভীর আহমেদ রেজিস্ট্রি ডাকযোগে এ নোটিশ পাঠান। নোটিশ পাওয়ার দুই দিনের মধ্যে স্বাধীন তদন্ত কমিটি গঠনে পদক্ষেপ নিতে বলা হয়েছিল। নোটিশ পাওয়ার পরও কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ না করায় রিটটি করা হয়।
রিটে বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব, বেসামরিক বিমান কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ সংশ্লিষ্টদের বিবাদী করা হয়। ওই রিটের শুনানি নিয়ে এই আদেশ দেন আদালত।
রিটে পাইলটদের সংগঠন বাংলাদেশ এয়ারলাইনস পাইলট অ্যাসোসিয়েশন (বাপা) পাইলট নিয়োগে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস আন্তর্জাতিক ও নিজস্ব নিয়মনীতি চরম লঙ্ঘন করেছে বলে অভিযোগ করে।
পাইলট হিসেবে নির্বাচন করা হয়েছে বিমানের অনেক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার পরিবারের সদস্যকে। বিমানের কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার স্বার্থে এই নিয়োগের তদন্ত চায় বাপা।
এর আগে বিষয়টি তদন্তের দাবি করে বিমানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) বরাবর একটি চিঠি জমা দেয় বাপার নির্বাহী কমিটি। একইভাবে এর প্রতিলিপি পাঠানো হয়েছে বিমানের প্রশাসন ও ফ্লাইট অপারেশন বিভাগের পরিচালকদের কাছে।
পাইলট নিয়োগে অনিয়ম তুলে ধরে ওই চিঠিতে বলা হয়েছে, বিভিন্ন পত্রিকায় বিমানের পাইলট নিয়োগের অনিয়ম নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ পেয়েছে।
বাপার পর্যবেক্ষণেও দেখা গেছে, নিয়ম ভেঙে পাইলট নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া নিয়োগের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বিমানের ট্রেনিং বিভাগের প্রধানকে। যার নিজের স্ত্রী পাইলট হওয়ার জন্য আবেদন করেছেন। এটি নিয়মের চরম লঙ্ঘন।
আরও পড়ুন: আদালত পরিবর্তন চেয়ে জাপানি দুই শিশুর বাবার আবেদন খারিজ
এদিকে বাপা বলেছে, পাইলট নিয়োগে বিমান ও বাপার মধ্যে একটি চুক্তি রয়েছে। তবে নিয়োগের সময় এই চুক্তি লঙ্ঘন করা হয়েছে। নিয়োগের সময় বাপার মতামতকে পাত্তা দেওয়া হয়নি।
বিমানের বোয়িং-৭৭৭ উড়োজাহাজ চালনার জন্য নতুন করে কোনো পাইলট নিয়োগ দেওয়া হয়নি। তবে বিমানের পক্ষ থেকে এই উড়োজাহাজের জন্য ক্রু নিয়োগের সার্কুলার দেওয়া হয়। ক্রুদের বাছাই করে ট্রেনিং দেওয়ার মেইল পাঠানো হয়েছে।
একজন ব্যক্তি ভুয়া কাগজপত্র জমা দিয়ে বিমানের ফার্স্ট অফিসার পদে নিয়োগ পেয়েছেন। তিনি সিম্যুলেটর ট্রেইনিং করেননি। পরবর্তী সময়ে বিমানের খরচে তাকে ট্রেনিং করতে পাঠানো হয়েছে যা সম্পূর্ণ অপচয়।
চিঠিতে আরও বলা হয়, বিমানের চরম গাফিলতির কারণে বোয়িং-৭৮৭ ফ্লাইটের ক্রুদের বিদেশে গিয়ে জেডএফটিটি এবং পিপিসি নামের দুইটি ট্রেনিং রিটেক করতে হচ্ছে, যা বিমানের অর্জিত বৈদেশিক মুদ্রার অপচয়ের অন্যতম কারণ। বোয়িং-৭৭৭ এর জুনিয়র পাইলটকে পাইলটদের প্রশিক্ষক বানানো হয়েছে যা অনৈতিক। এটি সিনিয়র পাইলটদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে।
অনিয়মের কারণে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) কাছ থেকে বিমান বাংলাদেশ সতর্কতা চিঠি (ওয়ার্নিং লেটার) পেয়েছে। এটি একটি এয়ারলাইনসের জন্য বিব্রতকর বিষয়।
বিমানের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার মেয়েকে পাইলট হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। ট্রেনিংয়ের সময় ওই নারী পাইলটের সাধারণ জ্ঞান কম থাকায় তাকে বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স ট্রেনিং সেন্টারে পাঠানো হয়েছিল। বর্তমানে ওই পাইলটের পক্ষে বোয়িং-৭৭৭ এর ট্রেনিং নেওয়াও কষ্টকর হয়ে যাচ্ছে।
বাপা জানায়, বাপা চায় বিমানে দক্ষ পাইলট নিয়োগ দেওয়া হোক। পাইলট নিয়োগে সব নিয়মনীতি মানা হোক, যা বিমানকে উচ্চমানের একটি এয়ারলাইনসে পরিণত হতে সাহায্য করবে। এ জন্য বাপা পুরো নিয়োগ প্রক্রিয়ার বিরুদ্ধে তদন্ত করার দাবি করছে।
আরও পড়ুন: মেয়র তাপসের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার মামলা
৬০৯ দিন আগে