অনিয়ম
রংপুরে মহাসড়ক সংস্কারে অনিয়ম ধরল সেনাবাহিনী
রংপুর-সৈয়দপুর মহাসড়কের রংপুর চাকঘর থেকে তারাগঞ্জের চিকলী বাজার পর্যন্ত ১৭ কিলোমিটার সড়ক সংস্কারে বড় ধরনের অনিয়ম ধরা পড়েছে। ওই সড়কে প্রতি স্কয়ার মিটারে ৫ কেজি করে পাথর কম দেওয়া হয়েছে বলে সত্যতা পেয়েছে সেনাবাহিনীর একটি নিয়মিত টহল দল।
বুধবার (২৩ জুলাই) সন্ধ্যায় রংপুর সেনানিবাসের ৬৬ ডিভিশনের ৭২ পদাতিক ব্রিগেডের আওতাধীন ৩৪ বেঙ্গল রেজিমেন্ট পরিচালিত একটি নিয়মিত টহল দল লেফটেন্যান্ট নাজমুলের নেতৃত্বে সিটি মোড় এলাকায় কাজ পরিদর্শনে যায়। সেখানে সড়কের গঠন ও ব্যবহৃত উপকরণ পরিমাপে অনিয়মের প্রমাণ পায় সেনাবাহিনী।
এ সময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মনিরুজ্জামান। রাস্তাটিতে প্রতি স্কয়ার মিটারে ২৩ কেজি পাথর দেওয়ার কথা থাকলেও দেওয়া হয়েছে ১৮ কেজি। তবে রাস্তা নির্মাণে কেন এরকম অনিয়ম হচ্ছে, সেনাবাহিনীকে তার কোনো সঠিক উত্তর দিতে পারেননি প্রকৌশলী।
সড়ক ও জনপথ বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে রংপুর মেডিকেল মোড় থেকে পাগলাপীর বাজার, শলেয়াশাহ বাজার থেকে বরাতি সেতু, তারাগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে তারাগঞ্জ সেতু এবং তকনাগঞ্জ বাজার থেকে চিকলী বাজার পর্যন্ত মহাসড়কের ১৭ কিলোমিটার অংশে ডিবিএসটিসহ সংস্কারকাজে বরাদ্দ হয় ২৬ কোটি ৮৯ লাখ ৫৯ হাজার ৯৪৬ টাকা।
আরও পড়ুন: কেওয়াটখালী সেতু প্রকল্পে নকশা পরিবর্তন ও দুর্নীতির অভিযোগ
৪ ফেব্রুয়ারি এই সড়কের সংস্কারকাজ পায় ডন এন্টারপ্রাইজ। ইতোমধ্যে প্রতিষ্ঠানটি ১০ কিলোমিটার সড়কে ডিবিএসটি সম্পন্ন করেছে বলে জানিয়েছে সড়ক বিভাগ। অক্টোবরের মধ্যে পুরো প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।
সেনা কর্মকর্তা, প্রকৌশলী ও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রকল্প অনুযায়ী প্রতি স্কয়ার মিটারে ২৩ কেজি পাথর ব্যবহারের শর্ত থাকলেও সেখানে দেওয়া হয়েছে ১৮ কেজি করে। তার মানে প্রতি স্কয়ার মিটারে ৫ কেজি পাথর কম ব্যবহার করা হয়েছে।
এ বিষয়ে ডন এন্টারপ্রাইজের প্রকল্প ব্যবস্থাপক শাহিনুর রহমান বলেন, ‘আমাদের প্রজেক্ট অনুযায়ী প্রতি স্কয়ারে ২৩ কেজি পাথর দেওয়ার কথা ছিল। সেনাবাহিনীর টেস্ট করার পর আমরা ১৮ কেজি পেয়েছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা তো সড়ক ও জনপথের প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে কাজ করছি। বেশি জায়গা না, মাত্র ৮০০ মিটারে ৫ কেজি করে পাথর কম হয়েছে। আমরা এটা আবার রিপেয়ার (সংস্কার) করে দেব।’
তবে এলাকাবাসীর অভিযোগ, গুরুত্বপূর্ণ এই সড়কটি মেরামতের শুরু থেকেই অনিয়ম করে আসছিল ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। তারা প্রতিবাদ করলেও কেউ কর্ণপাত করেনি। সেনাবাহিনী যে পদক্ষেপ নিয়েছে তা ভালো কাজ করেছে বলে মনে করেন স্থানীয়রা। তাদের মতে, রাস্তাটি ভালোভাবে মেরামত হলে সবারই উপকার হবে।
আরও পড়ুন: জবির ১৫ বছরের নিয়োগ-দুর্নীতির তদন্তে কমিটি গঠন
লেফটেন্যান্ট নাজমুল জানান, রাস্তা মেরামতে অনিয়ম হচ্ছে—এমন খবর পেয়েই তারা অভিযান চালান। এটি তাদের নিয়মিত অভিযানের মধ্যেই পড়ে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সড়ক ও জনপথের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মনিরুজ্জামান বলেন, ‘ডিজাইনে ছিল ২৩ কেজি, সেখানে ১৮ কেজি পেয়েছে। আমাদের দেখভাল করার লোকজন রয়েছে। যেহেতু দীর্ঘ একটা এলাকা, কমবেশি হতে পারে। সেটা অবশ্যই আমরা ঠিক করে দেব।’
১৩৪ দিন আগে
সুনামগঞ্জে হাওরে দায়সারা প্রকল্প, অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ
সুনামগঞ্জে হাওরের কান্দা কাটা গর্ত ভরাটে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নেওয়া প্রকল্প দায়সারা প্রকল্পে রূপ নিয়েছে। কৃষিবান্ধব এ প্রকল্পে মোটেও রক্ষা হয়নি হাওরের স্বার্থ। এরই মধ্যে প্রকল্প বাস্তবায়নের সময়সীমাও শেষ পর্যায়ে। নির্ধারিত সময়ের প্রায় দেড় বছরে কাজ হয়েছে নামমাত্র।
পাউবো’র প্রকল্প কাজের অগ্রগতি প্রতিবেদনের সঙ্গে সরেজমিনে বাস্তবতার কোনো মিল নেই। কৃষকের চোখ ফাঁকি দিয়ে পাউবো ও ঠিকাদার উভয়ে বরাদ্দের কোটি কোটি টাকা লুটপাটে তৎপর রয়েছে - এমন অভিযোগ কৃষক ও হাওর আন্দোলনের নেতাদের।
একাধিক হাওরের গর্ত এলাকা পরিদর্শনে গিয়ে সেরকম বাস্তবতাই চোখে পড়েছে। তবে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ না জেনে, না বুঝে করা হচ্ছে বলে দাবি সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের(পাউবো)।
জামালগঞ্জের হালি, শনি ও মহালিয়া হাওরের প্রকল্প এলাকা পরিদর্শনের পাশাপাশি কৃষক ও হাওর আন্দোলনের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, হাওরের গর্ত (বাঁধে মাটি নেওয়ার ফলে সৃষ্ট গর্ত) ভরাটে এ উদ্যোগ ইতিবাচক। তবে পাউবো ও ঠিকাদারের অনিয়ম ও দুর্নীতির কারণে এখন পর্যন্ত এ প্রকল্পের কাজ ২০ শতাংশও হয়নি। হাওর অভ্যন্তরে অসংখ্য গর্ত থাকার পরও কোনো গর্তই পুরোদস্তুর ভরাট করেনি ঠিকাদার। কিছু কিছু গর্তে খুবই সামান্য বালু ফেলা হয়েছে। আবার বেশিরভাগ গর্ত আগে যেরকম ছিল এখনও সে রকমই আছে। প্রায় দেড় বছর মেয়াদের এ প্রকল্পে সময় ক্ষেপণ ছাড়া কাজের কাজ কিছুই হয়নি। হাওরপাড়ের মানুষ এ কাজের ব্যাপারে তেমন কিছু জানেও না। প্রাক্কলন তৈরির আগে ও পরে পাউবো এ নিয়ে কৃষকের সাথে কথা বলার প্রয়োজনও মনে করেনি। গর্তে বিটবালু ফেলে না ফেলে অনেকটা চুপিসারে এ কাজের ইতি টানতে চাইছে সংশ্লিষ্টরা।
আরও পড়ুন: নড়াইলে লবণাক্ততায় তিন ফসলি জমি এক ফসলিতে পরিণত
টেকসই বাঁধ, জীববৈচিত্র্য ও গোচারণ ভূমি রক্ষাসহ হাওরের নিরাপদ পরিবেশ বজায় রাখতে এ প্রকল্প গ্রহণ করা হলেও বাস্তব চিত্র সম্পূর্ণ বিপরীত। গর্ত এলাকা পরিদর্শনে গেলে এ প্রতিবেদকের কাছে হাওরের নিরাপত্তা ও কৃষকের ভাগ্য নিয়ে পরিহাস করা ছাড়া কিছুই মনে হয়নি।
সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, জরুরি বন্যা পুনঃনির্মাণ সহায়তা প্রকল্পের আওতায় জেলার দশটি হাওরে বরাদ্দ হয়েছে ১৪ কোটি ৫ লাখ ৩৭ হাজার টাকা। এর মধ্যে জামালগঞ্জে ৩ কোটি ২১ লাখ ৩৭ হাজার, তাহিরপুরে ৩ কোটি ৯২ লাখ ৭৮ হাজার, বিশ্বম্ভরপুরে ১ কোটি ৬৯ লাখ ৮১ হাজার, ধর্মপাশা ও মধ্যনগর মিলে ৫ কোটি ২১ লাখ ৪১ হাজার টাকা।
এ প্রকল্পের কাজ পায় নেত্রকোণার অসীম সিংহ ও টাঙ্গাইলের গুডম্যান এন্টারপ্রাইজ। প্রকল্পের সময়সীমা ২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২৫ সালের ৩০ মে পর্যন্ত রয়েছে। সময় ফুরিয়ে গেলেও কাজের কাজ কিছুই হয়নি। নদী থেকে ড্রেজিংয়ের মাধ্যমে ভিটবালু দিয়ে হাওরের পুরোনো গর্ত ভরাটের কথা উল্লেখ আছে অগ্রগতি প্রতিবেদনে।
এর মধ্যে পাউবো’র হিসাব অনুযায়ী জামালগঞ্জে ৫৫ ভাগ, তাহিরপুরে ৩৫ ভাগ, ধর্মপাশা-মধ্যনগরে ১৩ ভাগ এবং বিশ্বম্ভরপুরে ১৫ ভাগ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। এখন পর্যন্ত বিলের ১৫ ভাগ অর্থ ছাড় হয়েছে বলে জানিয়েছে পাউবো। সবকিছু মিলে কাগজপত্রে কাজের অগ্রগতি সবচেয়ে বেশি হয়েছে জামালগঞ্জে। কিন্তু জামালগঞ্জের হালি, শনি ও মহালিয়া হাওরের সরেজমিনের চিত্র বলছে সেখানে ২০ ভাগের বেশি কাজ হয়নি। স্থানীয় কৃষক ও হাওর সচেতন মানুষও পাউবো’র এমন কাণ্ডে ক্ষোভ জানিয়েছে।
মহালিয়া হাওরে মদনাকান্দি গ্রামের গরু চড়াতে আসা সুশীল দাস বলেন, ‘শুনছি গর্ত ভরাটের ডাক হইছে। যেডা ভরছে এইডা মনে করইন চার ভাগের এক ভাগ হইছে। যদি পুরাপুরি ভরাড হইত, তাহইলে হাওরে ঘাস হইলনে, গরু ঘাস খাইলনে, বান্ধের (বাঁধের) শক্তি থাকলনে, বাঁন ভাঙবার ভয় থাকলনানে, হাওর তল হইলনানে। এই ভরাডে হাওরের উপকার হওয়ার কথা। কিন্তু উপকার হইল কই? ’
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি আরও বলেন, ‘কার্তিক মাসে দেখছি কিছু কিছু জায়গা ভরাট করতাছে। পরে দেখছি তারা ড্রেজার লইয়া গেছে গা। এরপরে গর্ত ভরবার লাগি আর ড্রেজার আনা হইছে না।’
আরও পড়ুন: বরাদ্দ সংকটে হুমকিতে পবিপ্রবির ঐতিহ্যবাহী দুটি লেক
বেহেলী ইউনিয়নের আছানপুর গ্রামের কৃষক ও ইউপি সদস্য মো. ইউছুফ মিয়া বলেন, হালি হাওরের হেরাকান্দি অংশে সামান্য মাটি ফেলা হয়েছে। কোন গর্তই পুরোপুরি ভরাট করা হয়নি। এতে করে হাওরবাসীর কোনো উপকার হবে না। যারা কাজ করেছে তারাই লাভবান হবে।
মহালিয়া হাওর উন্নয়ন সংস্থার সভাপতি সিরাজুল হক তালুকদার বলেন, সর্ব সাকূল্যে মহালিয়া হাওরের গর্ত ২০ শতাংশ ভরাট হয়েছে। যে কাজ হয়েছে, তাতে হাওরের কোনো কাজে আসবে না। যে সময় ভরাটের কাজ শুরু হয়েছে, তখন জিজ্ঞেস করলে তারা জানিয়েছে হাওরের গর্ত সম্পূর্ণ ভরাট করা হবে। কিন্তু কাজ না করেই তারা সবকিছু নিয়ে চলে গেছে।
কাজের ভালো-মন্দ তদারকির জন্য কোনো টিমকে আসতে দেখেননি জানিয়ে বেহেলী ইউনিয়ন পরিষদের ইউপি সদস্য ও মদনাকান্দি গ্রামের কৃষক দেবাশীষ তালুকদার বলেন, ড্রেজিংয়ের পাইপ দিয়ে শুধু পানিই এসেছে বালু আসেনি। বালু না আসলে তো গর্ত ভরাট হবে না। শুধু লোকদেখানো কাজ হয়েছে। কোনো গর্তই ভরাট হয়নি। শুনেছি এ কাজ বাইরের এক কন্ট্রাক্টরের। তবে হরিপুরের ভজন তালুকদার এ কাজ তদারকি করছেন।
হাওর থেকে ফিরে জামালগঞ্জ উপজেলা হাওর বাঁচাও আন্দোলনের সাংগঠনিক সম্পাদক আলী আক্কাছ মুরাদ বলেন, গর্ত ভরাটে কোটি টাকার প্রকল্প হয়েছে। কিন্তু কাজ হয়েছে লাখ টাকার। অধিকাংশ গর্তে মাটিই পড়েনি। কিছু গর্তের দুই-এক জায়গায় সামান্য ভিটবালু ফেলা হয়েছে।
ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি আরও বলেন, দিনের পর দিন এভাবে আমাদের বোকা বানিয়ে ফায়দা লুটছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। কোটি কোটি টাকার সরকারি প্রকল্পের বিপরীতে হাওরের কোনো উপকারই হচ্ছে না।
হাওর বাঁচাও আন্দোলন কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক বিজন সেন রায় বলেন, এসব প্রকল্প দেওয়া হয় মূলত লুটপাটের জন্য। এ ব্যাপারে হাওরপাড়ের মানুষের সঙ্গে কোনো কথাবার্তা নেই। হাওরে গর্ত ভরাটের যে প্রকল্প দেওয়া হয়েছে, স্থানীয় লোকজন তার কিছুই জানে না। কৃষকদের না জানিয়ে প্রকল্প নেওয়া মানে বরাদ্দ গিলে খাওয়ার পথ তৈরি করা। আর পাউবো তাই করে বেড়াচ্ছে।
আরও পড়ুন: ধানের ন্যায্যমূল্য পাওয়া নিয়ে শঙ্কায় সুনামগঞ্জের কৃষকরা
সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মামুন হাওলাদার বলেন, অনেক গর্তই ভরাট হয়েছে। বাকিগুলো করা হবে। হাওরে বিল-বাদাল আছে, বলা হচ্ছে মাছ মারা যাবে। কৃষকরা বলছেন জমির ফসল নষ্ট হবে। সে কারণে কাজ করা যাচ্ছে না। সময় যদিও শেষ পর্যায়ে, তবে সময় আরও বাড়ানো হবে।
তিনি আরও বলেন, অনিয়ম-দুর্নীতির যে অভিযোগ সে ব্যাপারে অনেকেই অনেক কিছু জানে না। যতটুকু কাজ হয়েছে তার চেয়েও অনেক কম বিল দেওয়া হয়েছে। এখন পর্যন্ত সব মিলিয়ে ১৫ শতাংশ বিল ছাড় হয়েছে। তাহলে অনিয়ম ও দুর্নীতি কোথায় হলো?
এ ব্যাপারে সাব-কন্ট্রাক্টর (সহ-ঠিকাদার) ভজন তালুকদারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তার মোবাইল ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।
২২০ দিন আগে
সাভারে এসএসসি পরীক্ষায় অনিয়মের দায়ে কেন্দ্র সচিবসহ ৭ শিক্ষক বহিষ্কার
সাভার উচ্চ বালিকা বিদ্যালয় কেন্দ্রে এসএসসি পরীক্ষায় অনিয়মের ঘটনায় কেন্দ্র সচিবসহ সাত শিক্ষককে বহিষ্কার করা হয়েছে। সোমবার (২১ এপ্রিল) গণিত বিষয়ের পরীক্ষার সময় পাবলিক পরীক্ষা পরিচালনা বিধি লঙ্ঘন করায় তাদের বহিষ্কার করা হয়।
জানা যায়, পরীক্ষার স্বচ্ছতা ও সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করতে দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষকদের আগেই সতর্ক করা হয়েছিল। তবে নির্দেশনা অমান্য করে সাভার উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের চুক্তিভিত্তিক শিক্ষক এনাম আহম্মেদ এবং আনিছ মোমোরিয়াল স্কুলের সহকারী শিক্ষক তমাল হোসেন অ্যান্ড্রোয়েড মোবাইল ফোনসহ পরীক্ষার হলে প্রবেশ করেন। পরবর্তীতে তাদের হাতেনাতে ধরা হলে সঙ্গে সঙ্গে বহিষ্কার করা হয়।
এছাড়াও পরীক্ষা চলাকালে দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে আরও পাঁচ শিক্ষককে বহিষ্কার করা হয়।
তারা হলেন, বেবগুনবাড়ী উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আল মাহমুদ, গোপালবাড়ী নবীন প্রগতি স্কুল অ্যান্ড কলেজ শিক্ষক কামরুন্নাহার রুমি, বাড্ডা উচ্চ বিদ্যালয় অ্যান্ড কলেজের সহকারী শিক্ষক ইমরান হোসেন, ভাকুর্তা ইউনিয়ন স্কুল অ্যান্ড কলেজের সহকারী শিক্ষক নুপুর মল্লিক এবং রাশিদা বেগম।
প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষকরা পরীক্ষা পরিচালনার নীতিমালা যথাযথভাবে অনুসরণ করেননি এবং পরীক্ষার হলে শৃঙ্খলা ভঙ্গের ঘটনায় তাদের ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ হয়।
আরও পড়ুন: সাময়িক বহিস্কার হলেন পুলিশের যুগ্ম কমিশনার মেহেদি
বিষয়টি কর্তৃপক্ষ দ্রুত নজরে এনে তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্ত নেয়। পাবলিক পরীক্ষা পরিচালনার নীতিমালা ভঙ্গ করায় তাদের বহিষ্কারের পাশাপাশি ঘটনার বিস্তারিত প্রতিবেদন সাভার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এবং বোর্ড কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়েছে।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আবু বকর সরকার বলেন, ‘পরীক্ষার পরিবেশ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ রাখাই আমাদের প্রথম দায়িত্ব। বিধিনিষেধ লঙ্ঘন করে কোনো শিক্ষক বা স্টাফ দায়িত্ব পালনে অবহেলা করলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ পরীক্ষার স্বচ্ছতা বজায় রাখতে প্রশাসনের কঠোর নজরদারি অব্যাহত থাকবে বলেও জানান তিনি।
এ ঘটনার জেরে কেন্দ্র সচিব এস.এম. রফিকুজ্জামানকেও বহিষ্কার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আবু বকর সরকার।
২২৭ দিন আগে
চান্দিনায় আশ্রয়ণের এক তৃতীয়াংশ ঘরে নেই ভূমিহীন, বরাদ্দে অনিয়মের অভিযোগ
ভূমিহীন ও গৃহহীন মানুষের আবাসন নিশ্চিত করতে আশ্রয়ণ প্রকল্প-২ এর আওতায় কুমিল্লার চান্দিনায় নিমার্ণ করা অনেক ঘরের বরাদ্দ নিয়ে কেউ থাকছেন না। অভিযোগ আছে, বরাদ্দের সময় বিভিন্ন মহলের তদবিরে কিছু সংখ্যক মানুষ ঘর বাগিয়ে নিয়েছেন। ফলে বঞ্চিত হয়েছেন প্রকৃত ভূমিহীনরা।
আশ্রয়ণ প্রকল্পের পরিত্যক্ত ওইসব ঘরে এখন মানুষের পরিবর্তে কোথাও লাকড়ির স্তুপ আবার কোথাও রয়েছে হাঁস-মুরগী! কেউ আবার ঘরের বৈদ্যুতিক তারসহ গুরুত্বপূর্ণ সরঞ্জাম নিয়ে হয়েছন উধাও। বরাদ্দকৃত ঘরের এক তৃতীয়াংশই এখন ফাঁকা পড়ে আছে। এমতাবস্থায় তাদের বরাদ্দ বাতিল করে প্রকৃত গৃহহীনদের নামে বরাদ্দ দিতে সরকারের কাছে দাবি জানাচ্ছেন স্থানীয়রা।
আরও পড়ুন: ড্যাপ ও ইমারত নির্মাণ বিধিমালায় সংশোধন চান আবাসন খাতের ব্যবসায়ীরা
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, পতিত আওয়ামী লীগ সরকার ২০১৮ সালে টানা তৃতীয়বার ক্ষমতায় আসার পর আশ্রয়ণ প্রকল্প-২ হাতে নেয়। ওই কর্মসূচির আওতায় সরকারি খাস জমিতে নির্মাণ করা হয় দৃষ্টিনন্দন পাকা ঘর। এসব ঘরে সংযুক্ত শৌচাগাড় সুবিধা এবং বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ করা হয়। জমির বন্দোবস্তসহ আশ্রয় দেওয়া হয় গৃহহীনদের।
ওই কর্মসূচির আওতায় কুমিল্লার চান্দিনায় পাঁচ ধাপে উপজেলার মাইজখার ইউনিয়নের ভোমরকান্দি, কেরণখাল ইউনিয়নের ছয়ঘড়িয়া, বাড়েরা ইউনিয়নের বাড়েরা, মহিচাইল ইউনিয়নের অম্বরপুর গ্রামসহ বিভিন্ন স্থানে ২১৬টি গৃহ নির্মাণের মধ্য দিয়ে প্রতিটি ঘরে গৃহহীনদের আবাসন নিশ্চিত করা হয়। কিন্ত পরবর্তীতে ওই ঘরগুলোর অকেগুলোতে থাকছেন না অনেক পরিবার। ঘর বরাদ্দপ্রাপ্ত সুবিধাভোগীরা কেউবা কর্মের তাগিদে পরিবার নিয়ে শহরে থাকেন, আবার কেউবা ঘর বরাদ্দ নিয়ে পূর্বের ঠিকানায় ফিরে গেছেন। এর আগে বরাদ্দ পেতে রাজনৈতিক বিবেচনায় তদবির, উপজেলা প্রশাসনের দপ্তরের চাকুরির সুবাদে প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের সুপারিশ, আবার কেউ কেউ টাকার বিনিময়ে বরাদ্দ নেন ওইসব ঘরের।
উপজেলার মাইজখার ইউনিয়নের ভোমরকান্দি গ্রামের খাস জমিতে একত্রে ৪০টি ঘর নির্মাণ করে সেখানে ৪০টি পরিবারকে আশ্রয় দেওয়া হয়। গত শনিবার (৮ মার্চ) দুপুরে সরজমিনে দেখা যায়, সেখানকার ৫, ৭, ১১, ১৪, ২৪, ২৯, ৩০, ৩৫, ৩৬ ও ৪০নম্বর ঘরগুলোর কোনোটিতে তালা ঝুলছে, আবার কোনটির দরজা খোলা ফেলেই চলে গেছে বরাদ্দপ্রাপ্তরা। তালাবদ্ধ ঘরগুলোর কোনটির সামনে রয়েছে পাশের ঘরের বাসিন্দাদের লাকড়ি ও পাতার স্তুপ। আর দরজা খোলা রেখে ফেলে যাওয়া ঘরগুলোর ভিতরে রয়েছে পাশের ঘরের বাসিন্দাদের লাকড়ি, খড়কুটো। আবার কোনোটিতে হাঁস মুরগি পালন করা হচ্ছে। সেখানকার ৪০ নম্বর ঘরটি যার নামে বরাদ্দ ওই ব্যক্তি ঘর বরাদ্দ পাওয়ার কয়েকদিন পর ঘরের বৈদ্যুতিক তারসহ মূল্যবান জিনিসপত্র খুলে নিয়ে গেছে। কোনো কোনো ঘরে দুই বছরেও কোন মানুষ বসবাস না করায় বকেয়া বিলের দায়ে বৈদ্যুতিক লাইন বিচ্ছিন্ন করেছে পল্লী বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ। আবার কোনো ঘরে একদিনও বৈদ্যুতিক আলো না জ্বলায় দুই বছরে মিটার রিডিং শুন্যের কোঠায়!
রবিবার (৯ মার্চ) উপজেলার কেরণখাল ইউনিয়নের ছয়ঘড়িয়া গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক সংলগ্ন অত্যন্ত সুন্দর পরিবেশে এক সঙ্গে ৩০টি গৃহ নির্মাণ করে সেগুলো বরাদ্দ দেওয়া হয়। বর্তমানে সেখানে ১৬টি পরিবার স্থায়ীভাবে বসবাস করলেও ১০টি পরিবারের কোনো খোঁজ নেই। ৪টি ঘরে প্রকৃত বরাদ্দপ্রাপ্তর না থাকলেও বাস করছেন অন্যরা।
আরও পড়ুন: সংশোধিত ড্যাপ বাতিলের দাবি আবাসন ব্যবসায়ীদের, আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত হবে মনে করছেন পরিকল্পনাবিদরা
অভিযোগ রয়েছে উপজেলা প্রশাসনে অস্থায়ী ভিত্তিতে চাকুরি করার সুবাদে লাইলি বেগম ঘর বরাদ্দ নিয়ে এ পর্যন্ত ওই ঘরে বসবাস করেননি। সুবিধাভোগী রিকশাচালক সুজন ঘর বরাদ্দ নিয়ে একদিনও থাকেনি।
লাইলি বেগম জানান, আমি মাঝে মধ্যে ওই ঘরে যাই। আর আমার মামার বাড়ি চান্দিনা উপজেলা সদরের মহারং গ্রামে, বেশির ভাগ সময় সেখানেই থাকি।
একই দিন শুহিলপুর ইউনিয়নের শুহিলপুর গ্রামে গিয়ে দেখা যায় ৮টি ঘরের মধ্যে ১টিতে বাসিন্দা নেই। ঘর বরাদ্দ পাওয়া বিমল শুরু থেকেই থাকছেন ওই ঘরে। অম্বরপুর গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে ২৫ ঘরের মধ্যে ৯টি ফাঁকা পড়ে আছে।
ভোমরকান্দি আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাসিন্দা ওসমান গণি জানান, সে সময়ে ঘরগুলো এলোমেলোভাবে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এক গ্রামের বা এক ইউনিয়নের বাসিন্দাকে অন্য গ্রামে অন্য ইউনিয়নে ঘর দেয়। যে কারণে অনেকেরই কোনো কাজ কর্ম নেই। এখানে অনেকে কর্ম না পেয়ে বাধ্য হয়ে অন্যত্র চলে গেছে।
আশ্রয়ণ প্রকল্পের একাধিক বাসিন্দা জানান, সে সময়ে (যখন ঘর বরাদ্দ দেওয়া হয়) চেয়ারম্যান মেম্বারসহ রাজনৈতিক নেতাদের সুপারিশে অনেক ঘর বরাদ্দ দেওয়া হয়। যাদের বাড়িতে জায়গা আছে, বা যারা চান্দিনাতে থাকেন না—এমন লোকদেরকেও ঘর বরাদ্দ দেওয়া হয়। ওইসময়ে প্রকৃত ভূমিহীন অনেকেই ঘর বরাদ্দ পায়নি। বর্তমানে সবগুলো ঘর যাচাই-বাছাই করে যারা ঘরে থাকছে না বা যাদের নিজস্ব জায়গা থাকার পরেও ঘর বরাদ্দ নিয়েছেন— তাদের বরাদ্দ বাতিল করে প্রকৃত ভূমিহীনদের তালিকা করে ঘরগুলো বরাদ্দ দেওয়ার অনুরোধ জানান তারা।
আরও পড়ুন: গণভবনে জাদুঘরের পাশাপাশি শহীদদের পরিবারের আবাসনের প্রস্তাব পার্থর
২৬৬ দিন আগে
অনিয়মের অভিযোগে এক প্রতিষ্ঠানের সদস্য পদ স্থগিত করলো বাজুস
সোনা বেচাকেনায় অনিয়মের অভিযোগে গোল্ড কিনেন টেকনোলজিসের সদস্য পদ স্থগিত করেছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স এসোসিয়েশন (বাজুস)।
বৃহস্পতিবার (৯ জানুয়ারি) এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বাজুস জানায়, সদস্যপদ গ্রহণের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সকল শর্ত পূরণ করায় ২০২২ সালের ২৬ ডিসেম্বর প্রতিষ্ঠানটিকে বাজুসের প্রাথমিক সদস্যপদ প্রদান করা হয়। কিন্তু স্বর্ণ বেচাকেনায় অনিয়ম করার বাজুস এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
অনিয়ম প্রসঙ্গে বাজুস জানায়, প্রতিষ্ঠানটি নিয়ম বহির্ভূতভাবে সোনার অলঙ্কারের পরিবর্তে সোনার বার ও কয়েন বিক্রি করায় সদস্যপদ সাময়িকভাবে স্থগিত করা হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির এ ধরনের কার্যক্রম বাজুসের গঠনতন্ত্রের ৪(ক) ধারা যথাযথভাবে অনুসরণ না করে না সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করেছে সংগঠনটি।
৩২৯ দিন আগে
ভূমি অধিগ্রহণ কার্যক্রমে প্রায়ই অনিয়মের তথ্য পাওয়া যায়: ভূমি উপদেষ্টা
ভূমি উপদেষ্টা এ এফ হাসান আরিফ বলেছেন, ভূমি মন্ত্রণালয়ের ব্যবস্থাপনায় জনস্বার্থে তাৎক্ষণিক প্রয়োজন এবং সরকারের উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডে ভূমি অধিগ্রহণ ও হুকুম দখল কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হয়।
তিনি বলেন, ভূমি অধিগ্রহণ কার্যক্রম নিয়ে প্রায়ই অনিয়মের তথ্য পাওয়া যায়। মালিকরা ক্ষতিগ্রস্ত ও হয়রানির শিকার হন। সতর্ক থাকতে হবে, যাতে কেউ ন্যায্যতা থেকে বঞ্চিত বা মাত্রাতিরিক্ত ক্ষতিপূরণ না পান।
আরও পড়ুন: অসঙ্গতি দূর করতে জেন্ডার বাজেট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ: উপদেষ্টা
সোমবার (২৮ অক্টোবর) ভূমি মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে কেন্দ্রীয় ভূমি বরাদ্দ কমিটির ১৪৪তম সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, বিভিন্ন প্রকল্পের অধীন সেতু নির্মাণে উচ্চতা সঠিকভাবে নির্ধারণ না হওয়ায় বর্ষায় পানির গভীরতা বেড়ে গেলে নৌযান চলাচল বিঘ্নিত হয়। জনদুর্ভোগ সৃষ্টি হয়। এজন্য সঠিক পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, ক্রমবর্ধমান বিভিন্ন প্রকল্প গ্রহণ, শিল্পায়ন ও বসতবাড়ি নির্মাণে দেশের কৃষি জমি হ্রাস পাচ্ছে। এজন্য নির্মাণ কাজে নতুন নতুন প্রযুক্তি গ্রহণ করে ভূমির সদ্ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে।
এছাড়া তিনি প্রকল্প গ্রহণে জলাশয় ভড়াট না করা ও পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
সভায় উপস্থিত ছিলেন ভূমি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব এ এস এম সালেহ আহমেদসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
আরও পড়ুন: পাট মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার সঙ্গে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রতিনিধিদলের সাক্ষাৎ
৪০২ দিন আগে
অনিয়মে জর্জরিত কেরু অ্যান্ড কোম্পানি
চুয়াডাঙ্গার দর্শনার ঐতিহ্যবাহী ভারী শিল্পপ্রতিষ্ঠান কেরু অ্যান্ড কোম্পানি বিভিন্ন ব্রান্ডের ফরেন লিকারসহ (মদ) এ প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন মালামাল চুরি, গায়েব ও নানা অনিয়মই যেন এখন নিয়ম হয়ে দাঁড়িয়েছে। এসব অনিয়মের বিরুদ্ধে কর্তৃপক্ষ নামমাত্র তদন্ত কমিটি করে দোষীদের সাময়িক শাস্তি দিলেও কিছুদিন পর তারা আবার সেই কারবার করে বহাল তবিয়তে থেকে যাচ্ছে। ফলে তৈরি হয়েছে সিন্ডিকেট।
বিগত সরকারের আমলে যা মাত্রা ছাড়িয়েছে। তবে গণঅভুত্থানের পর অর্ন্তবর্তীকালীন সরকার ক্ষমতায় আসার পরও থেমে নেই সেই সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম। আসন্ন দুর্গাপূজা উপলক্ষে আবারও তারা সক্রিয়। এবার ডিস্টিলারি বিভাগের এক ইলেকট্রিসিয়ানের যন্ত্র রাখা বাক্সে (টুল বক্স) মিলেছে ৬ বোতল ফরেন লিকার ও দুটি খালি বোতল।
গত সোমবার (৩০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ডিস্টিলারি এরিয়ার পাম্প হাউজে নিকট থেকে এগুলো উদ্ধার হয়। বিষয়টি প্রথমে ধামাচাপা থাকলেও পরে জানাজানি হয়ে যায়। এরপর নড়েচড়ে বসে কর্তৃপক্ষ। গেল জুন মাসেও ১৩ হাজার লিটার ডিএস স্পিরিট গায়েব হবার অভিযোগও এই ডিস্টিলারি বিভাগে উঠেছিল। সেসময় তদন্ত কমিটি গঠন করে কর্তৃপক্ষ। এছাড়া সর্বশেষ গত মে মাসে ১০৪ জন শ্রমিক-কর্মচারীর স্থায়ী নিয়োগ নিয়েও অর্থ লেনদেনসহ নানা অভিযোগ উঠে। যা নিয়ে সাবেক এমডি মোশাররফ হোসেন ও শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়নে সভাপতি সবুজ, সাধারণ সম্পাদক মাসুদসহ সাতজনের নামে মামলাও করেছেন এক ব্যক্তি।
আরও পড়ুন: চুয়াডাঙ্গায় মোটরসাইকেল নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে প্রাণ গেল কেরুর কর্মচারীর
জানা যায়, রাষ্ট্রায়ত্ত্ব চিনিকলগুলোর মধ্যে একমাত্র লাভজনক প্রতিষ্ঠান কেরু অ্যান্ড কোম্পানি (বাংলাদেশ) লিমিটেড। এটি একটি সমন্বিত কারখানা। এখানে চিনি, ভিনেগার, হ্যান্ড স্যানিটাইজারসহ বিভিন্ন ধরনের স্পিরিট ও দেশি-বিদেশি মদ উৎপাদন করা হয়। কেরু অ্যান্ড কোম্পানি (বাংলাদেশ) লিমিটেড কারখানার মূল পণ্য চিনি হলেও কোম্পানিকে বাঁচিয়ে রেখেছে ডিস্টিলারি পণ্য মদ। সেই লাভের খাত কেটে মঝে মধ্যেই চুরির ঘটনা ঘটে কেরু অ্যান্ড কোম্পানিতে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অভিযানে চোরাই মদসহ একের পর এক গ্রেপ্তারের ঘটনা ঘটলেও কেরু প্রশাসন চুরি ঠেকাতে অনেকটাই নির্বিকার বলেও অভিযোগ রয়েছে।
সর্বশেষ গত ৩০ সেপ্টেম্বরও চুরির চেষ্টার সময় ধরা পড়ে ৬ বোতল ফরেন লিকার। তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেকেই বলছেন আসন্ন দুর্গাপূজা উপলক্ষেও বিপুল পরিমাণে মদ চুরির আশঙ্কা রয়েছে। কারণ হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় এই উৎসব ঘিরে কেরুর ফরেন লিকারের (মদ) চাহিদা থাকে তুঙ্গে।
সাম্প্রতিক সময়ে পুলিশ ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের অভিযানে এই কারাখানায় উৎপাদিত দেশি মদ ও বিলাতি মদসহ (ফরেন লিকার) একাধিক চালান ধরা পড়েছে। এমনকি বোতলভর্তি বিলাতি মদ, মদের বোতলের লেবেল ও খালি বোতল উদ্ধারের ঘটনাও ঘটেছে। গ্রেপ্তার হয়েছে কেরুর শ্রমিকও। শ্রমিক সংগঠনগুলোই মূলত বছরের পর বছর এ সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ করে বলেও অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া শেখ হাসিনার সরকারের সময় স্থানীয় এমপি আলী আজগর টগর ও তার সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আলী মুনছুর বাবুই এ সিন্ডিকেটগুলোকে আশ্রয়-প্রশ্রয় দিয়ে বেপরোয়া করে তোলে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শ্রমিক বলেন, কোম্পানি থেকে দেশের বিভিন্ন পণ্যাগারে দেশি মদ পরিবহনের সময় তা চুরি ও পাচারের অভিযোগে চালকসহ শ্রমিক গ্রেপ্তারের একাধিক ঘটনা যেমন আছে, তেমনি ডিস্টিলারি থেকে বিলাতি মদ চুরির ঘটনাও একেবারে কম নয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরও কয়েকজন বলেন, ডিস্টিলারি বিভাগের কর্মকর্তারা মিলে শ্রমিক ইউনিয়ন নেতাদের যোগসাজশে সুযোগ বুঝে শ্রমিকদের দিয়ে এই চুরির কাজটি সম্পন্ন করে। যেটা আওয়ামী লীগ সরকারের আমলেই বেশি হয়েছে।
তারা আরও বলেন, এসমস্ত ঘটনায় ফরেন লিকার বিভাগের হিসাব বিভাগের এক কর্মকর্তা এখনো এ সমস্ত সিন্ডিকেট চালিয়ে যাচ্ছেন। তবে তারা সেই কর্মকর্তার পুরো নাম বলতে রাজী হননি।
এ বিষয়ে ভারপ্রাপ্ত মহাব্যবস্থাপক (ডিস্টিলারি) রাজিবুল হাসান বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারি ডিস্টিলারি বিভাগের কারখানার ভিতরে মো. আব্বাস আলী নামের ইলেকট্রিক হেলপার তার টুল বক্সের ভিতর ৬টি ফরেন লিকারের বোতল নিয়ে চুরির চেষ্টা করছে। তৎক্ষণাত আমি ও আমাদের মহাব্যবস্থাপক (প্রশাসন) মোহাম্মদ ইউসুফ আলী স্যারসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ আমরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে সেই টুল বক্স ভেঙ্গে ৬টি ফরেন লিকার এবং দুটি খালি বোতল উদ্ধার করি। এরপর ওই কর্মীকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
আরও পড়ুন: রাষ্ট্রায়ত্ত চিনিকল বন্ধের পরিকল্পনার প্রতিবাদে কেরু চিনিকল শ্রমিক-কর্মচারীদের কর্মবিরতি ও বিক্ষোভ
তিনি আরও বলেন, পুরো ডিস্টিলারি বিভাগ সিসিটিভি ক্যামেরা দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। নিরাপত্তার বিষয়ে আমরা শতভাগ সতর্ক।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে এর আগে গত ৩১ আগস্ট কেরুর প্রধান ফটক থেকে ১০০ লিটার দেশি মদসহ ট্রাকচালক সাইফুল ইসলাম ও তার দুজন সহকারীকে দর্শনা থানার পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। এছাড়া গত ১৫ জুলাই দর্শনা থানা পুলিশ রামনগর থেকে ৪০ লিটার দেশি মদসহ বাদল শেখ নামের এক মাদক ব্যবসায়ীকে আটক করে। গত ১৬ ফেব্রুয়ারি দর্শনা পৌর এলাকার আনোয়ারপুরে অভিযান চালিয়ে কেরুর তৈরি ৭৫০ মিলিলিটার পরিমাপের সাত বোতল বিলাতি মদসহ দুজনকে আটক করে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর। এছাড়া ২০২৩ সালের ২৩ অক্টোবর রাতে চুয়াডাঙ্গার লোকনাথপুরে ডিবির তল্লাশির মুখে পড়ে কেরুর একটি কাভার্ড ভ্যানে ১০ লিটার দেশি মদ পায় ডিবি। এই মদ ব্যারেল থেকে চুরি করা হয়েছিল বলেও সেসময় জানায় পুলিশ।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন জানান, চলতি বছরের ৯ ফেব্রুয়ারি চার বোতল বিলাতি মদসহ কেরুর পরিবহন বিভাগের চুক্তিভিত্তিক শ্রমিক রকি হোসেন নিরাপত্তাকর্মীদের হাতে ধরা পড়েন। সেযাত্রায় কিছুই হয়নি তার। এরপর গত ১৩ আগস্ট রাতে ডিস্টিলারির গুদামের ভেন্টিলেটর দিয়ে ১৩ নম্বর ভ্যাটে (মদ রক্ষণাগার) পাইপ লাগিয়ে দেশি মদ চুরির চেষ্টা করে নামমাত্র থানা পুলিশ করে তিনি তারপরও অদৃশ্য শক্তিতে পার পেয়ে যায়।
এই ব্যক্তি আরও বলেন, গত পনেরো বছরে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে এরকম চুরির ঘটনার শেষ নেই। কিছু ঘটনা সামনে এসেছে, তাই সবাই জেনেছে। কিন্তু অধিকাংশ চুরির ঘটনাই অধরা। আর এর পিছনে চুয়াডাঙ্গা-২ আসনের সাবেক সাংসদ সদস্য আলী আজগর টগর এবং তার ভাই সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আলী মুনছুর বাবুসহ আওয়ামী লীগের দলীয় লোকজনের মদদ থাকায় দিনের পর দিন রাষ্ট্রীয় সম্পদ তছরুপ করেছে এই সংঘবদ্ধ চোরচক্র।
অনুসন্ধানে আরও জানা গেছে, কোম্পানি থেকে পণ্যাগারগুলোতে দেশি মদ পাঠানোর সময় ব্যারেলের মুখে যে নিরাপত্তা সিল লাগানো হয়, গাড়িতে পরিবহনের সময় চালক ও সহকারীরা সেটি খুলে মদ বের করে নেন। এরপর আগে থেকে সংগ্রহ করা সিল লাগিয়ে দেন। মদ চুরি বন্ধে পণ্যাগার থেকে ফেরা পরিবহন কোম্পানির পক্ষ থেকে এর আগে তল্লাশি চালানো এবং চোরাই মদ উদ্ধার করা হলেও নানামুখী চাপে তা বন্ধ হয়ে গেছে।
এ বিষয়ে দর্শনা কেরু অ্যান্ড কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক রাব্বিক হাসানের সঙ্গে দেখা করতে তার কার্যালয়ে গেলে তিনি ছুটিতে থাকায় বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
দর্শনা কেরু অ্যান্ড কোম্পানির মহাব্যবস্থাপক (প্রশাসন) মোহাম্মদ ইউসুফ আলী বলেন, ৩০ সেপ্টেম্বর দুপুরে ডিস্টিলারি বিভাগের কারখানার ভিতরে মো. আব্বাস আলী নামের ইলেকট্রিক হেলপারের টুলবক্সে ৬ বোতল ফরেন লিকার পাওয়া গেছে। আমি খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যেয়ে দেখি তার টুল বক্স ভেঙে এগুলো উদ্ধার করি। আমরা তাৎক্ষনিকভাবে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করি। পরবর্তীতে অভিযোগ দায়ের করে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
তবে অন্যান্য কোনো বিষয়ে এ কর্মকর্তা বক্তব্য দেননি।
অভিযোগের বিষয় অভিযুক্ত আব্বাস আলীর সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। এমনকি মোবাইল ফোনেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। এছাড়া আব্বাস আলীকে অফিসেও পাওয়া যায়নি।
উল্লেখ্য, ১৯৩৮ সালে প্রতিষ্ঠিত কেরু অ্যান্ড কম্পানি চিনি উৎপাদন ছাড়াও রয়েছে ডিস্টিলারি, কৃষি খামার, পরীক্ষামূলক খামার ও জৈব সার। আর এখানে ৯টি ব্র্যান্ডের বিদেশি মদ উৎপাদন করা হয়। সেগুলো হলো ইয়েলো লেবেল মল্টেড হুইস্কি, গোল্ড রিবন জিন, ফাইন ব্র্যান্ডি, চেরি ব্র্যান্ডি, ইম্পেরিয়াল হুইস্কি, অরেঞ্জ কুরাকাও, জরিনা ভদকা, রোসা রাম ও ওল্ড রাম।
আরও পড়ুন: হ্যান্ড স্যানিটাইজারের পর বাজারে এলো কেরুর ভিনেগার
৪২৬ দিন আগে
আর্থিক নিয়ম ভঙ্গের অভিযোগে ম্যানচেস্টার সিটির বিরুদ্ধে শুনানি শুরু সোমবার
ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের আর্থিক নিয়ম ভঙ্গের অভিযোগে ম্যানচেস্টার সিটির বিরুদ্ধে অবশেষে শুনানির দিন ধার্য হয়েছে। আগামী সোমবার থেকে শুনানি শুরু হবে বলে জানিয়েছে ক্রীড়াভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ইএসপিএন।
২০০৯-১০ মৌসুমে আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে ম্যানচেস্টার সিটির বিরুদ্ধে করা অভিযোগ একটি স্বাধীন কমিশনের কাছে পাঠানো হয়। সে সময় ক্লাবটির বিরুদ্ধে সঠিক আর্থিক তথ্য দেওয়ার নিয়ম ভাঙার অভিযোগ ওঠে।
ক্লাবটির বিরুদ্ধে আরও অভিযোগ, ২০১৩-১৪ থেকে ২০১৭-১৮ মৌসুম পর্যন্ত উয়েফার ফাইন্যান্সিয়াল ফেয়ার প্লের নিয়ম মানেনি তারা। এছাড়া ২০১৫-১৬ থেকে ২০১৭-১৮ মৌসুম পর্যন্ত প্রিমিয়ার লিগের মুনাফা ও স্থায়িত্বের (পিএসআর) নিয়ম অনুসরণ করতেও ব্যর্থ হয়েছে ক্লাবটি।
আরও পড়ুন: প্রিমিয়ার লিগের ইতিহাস নতুন করে লিখল ম্যানচেস্টার সিটি
তবে প্রিমিয়ার লিগের পক্ষ থেকে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করেছে সিটি কর্তৃপক্ষ। কমিশনের কাছে জবাবদিহিতার সময় তারা বলে, ‘ক্লাব একটি একটি স্বাধীন কমিশনের মাধ্যমে এই বিষয়টির পর্যালোচনাকে স্বাগত জানায়।’
এ বিষয়ে আগামী ১৬ সেপ্টেম্বর থেকে শুনানি শুরু হবে এবং আপিলসহ দুই মাস ধরে চলা শুনানির চূড়ান্ত রায় চলতি মৌসুম শেষে পাওয়া যাবে বলে আশা করা হচ্ছে।
তবে দোষী সাব্যস্ত হলে পয়েন্ট কর্তন, এমনকি লিগ থেকে অবনমনের মতো শাস্তির মুখেও পড়তে হতে পারে ক্লাবটির।
আরও পড়ুন: হালান্ডের টানা দ্বিতীয় হ্যাটট্রিকে সিটির তিনে তিন
পিএসআর আইন ভাঙার দায়ে গত মৌসুমে পয়েন্ট কাটা গিয়েছিল এভারটন ও নটিংহ্যাম ফরেস্টের।
এ বিষয়ে ম্যানচেস্টার সিটির কাছ থেকে সংবাদমাধ্যমটি তাৎক্ষণিকভাবে কোনো মন্তব্য নিতে পারেনি। এছাড়া প্রিমিয়ার লিগ মন্তব্য করতে রাজি হয়নি।
৪৪৮ দিন আগে
উপজেলা নির্বাচনে অনিয়ম হলে কঠোর হস্তে দমন করা হবে: ইসি
নির্বাচন কমিশনার (ইসি) আনিছুর রহমান বলেছেন, ‘জাতীয় সংসদের মতো উপজেলা পরিষদ নির্বাচনেও কোনো অনিয়ম হলে কঠোর হস্তে দমন করা হবে এবং এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে কোনো কুণ্ঠাবোধ করা হবে না।’
তিনি বলেন, ‘যেভাবে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সম্পন্ন করেছি, সেভাবে উপজেলাও হবে। কোনোভাবে জাতীয় নির্বাচনের চেয়ে নিচে নামার সুযোগ নেই।’
আরও পড়ুন: ষষ্ঠ ধাপের উপজেলা নির্বাচনে অনলাইনে মনোনয়ন দাখিল পদ্ধতি চালু করেছে ইসি
বুধবার (২৪ এপ্রিল) সকালে চট্টগ্রাম মহানগরীর পিটিআই ভবনে ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন নিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ মাঠ প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
নির্বাচন কমিশনার বলেন, ‘বর্তমান সরকারের আওতায় কীভাবে নির্বাচন হচ্ছে সেটি সবাই দেখবে। উপজেলা নির্বাচনে জাতীয় নির্বাচনের মতো দলীয় প্রার্থী থাকছে না এবং দলীয় প্রতীকও নেই। আশা করছি ভোটারের সংখ্যা বাড়বে। এবং নির্বাচন যে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হবে তাতে কোনো সন্দেহ নেই।’
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চট্টগ্রাম-১৬ (বাঁশখালী) আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মোস্তাফিজুর রহমানের শেষ মুহূর্তে প্রার্থিতা বাতিলের বিষয়টি উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের ৫৩ বছরের ইতিহাসে এভাবে কখনো প্রার্থিতা বাতিল হয়নি। ওইদিন ভোটগ্রহণ শেষ হওয়ার ১৫ মিনিট আগে তার প্রার্থিতা বাতিল হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘বাতিল করার মতো যথেষ্ট উপাদান ছিল। আওয়ামী লীগের প্রার্থী মুস্তাফিজুর রহমানকে সপ্তাহখানেক আগে থেকে নজরদারি করা হচ্ছিল। যখন তিনি থানায় ঢুকে পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে মারধর করছেন, সার্কেল এসপিও তাকে নিবৃত্ত করতে পারছেন না, এরপর আর বসে থাকা যায়নি। তখনই আমরা প্রার্থিতা বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’
আনিছুর রহমান বলেন, ‘আমরা এবারও ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন চলাকালীন সময়ে কোনো রকমের সিদ্ধান্ত নিতে কুণ্ঠাবোধ করব না। আমাদের একটাই চাওয়া- নির্বাচনকে সুন্দর করতে হবে। যেখানেই কোনো অনিয়ম হবে, কারচুপি বা অন্যায় কার্যক্রম হবে সেখানে প্রিজাইডিং অফিসার ব্যবস্থা নিতে পারবেন। আপনারা ভোটের দিন যে যেখানে থাকবেন, আইনের স্বপক্ষে সর্বময় ক্ষমতা প্রয়োগ করবেন। এতে যদি কোনো রকমের বিপদগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে, আমরা আপনাদের পাশে আছি।’
নির্বাচন কমিশনার বলেন, ‘সরকারপ্রধান থেকে শুরু করে কেউ চায় না নির্বাচন খারাপ হোক। তিনি (প্রধানমন্ত্রী) বিভিন্ন বক্তব্যে বিষয়টি উল্লেখও করেছেন। ভোট সুন্দর ও সুষ্ঠু করার জন্য যা যা দরকার সব করবেন।’
বিভাগীয় কমিশনার মো. তোফায়েল আহমেদের সভাপতিত্বে মত বিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন- সিএমপি কমিশনার কৃষ্ণ পদ রায়, চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি নুরে আলম মিনা, বিজিবির রিজিওনাল কমান্ডার মো. আজিজুর রহমান, ডিজিএফআই চট্টগ্রাম শাখার অধিনায়ক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল তোফায়েল মোস্তফা সরওয়ার ও জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান।
আরও পড়ুন: নারীদের আইসিটিতে দক্ষ করে তুলতে হবে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী
আইসিএমএবির প্রাক-বাজেট গোলটেবিল আলোচনা অনুষ্ঠিত
৫৮৯ দিন আগে
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরে গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রিতে অনিয়ম, জরিমানা
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরের বিভিন্ন জায়গায় গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রিতে অনিয়মের অভিযোগ পাওয়ার পর গতকাল শনিবার (২৩ মার্চ) মোবাইল কোর্টের অভিযান পরিচালনা করা হয়।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তানভীর ফরহাদ শামীম অভিযান পরিচালনা করেন।
এ সময় পৌরসভার নারায়ণপুরে গ্যাস সিলিন্ডারের ডিলার মেসার্স আনোয়ার ট্রেডার্সকে ক্রেতাদের কাছে রশিদ সরবরাহ না করায় ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
আরও পড়ুন: চাঁপাইনবাবগঞ্জে অনিয়মের অভিযোগে ২ ক্লিনিককে আড়াই লাখ টাকা জরিমানা
বসুন্ধরা গ্যাসের ডিলার মেসার্স মাহাদী এন্টারপ্রাইজ বিস্ফোরক পরিদপ্তরের লাইসেন্স দেখাতে না পারায় সাময়িক বন্ধ রাখা হয়েছে।
এছাড়া, অধিক মূল্যে সিলিন্ডার বিক্রির দায়ে আরেক খুচরা বিক্রেতাকে ১ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
পাশাপাশি বিস্ফোরক পরিদপ্তরের লাইসেন্স ছাড়া খোলা দোকানে ঝুঁকিপূর্ণ পরিবেশে গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রি না করার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়।
আরও পড়ুন: শিশু খাদ্যে কেমিক্যাল পাওয়ায় চাঁদপুরে ব্যবসায়ীর জরিমানা
যশোরে জেলি ভরা ৩৪০ কেজি চিংড়ি জব্দ, দুই বাস মালিককে জরিমানা
৬২১ দিন আগে