উদ্ধারকাজ
ভূমিকম্প পরবর্তী উদ্ধারকাজের উপযোগী অবকাঠামো তৈরি করতে হবে: মন্ত্রী
স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম বলেছেন, ভূমিকম্প পরবর্তী উদ্ধারকাজ চালানোর উপযোগী করে অবকাঠামো তৈরি করতে হবে।
রাজধানী ঢাকার অনেক এলাকায় ভূমিকম্প পরবর্তী উদ্ধার কাজ চালানোর মতো অবকাঠামো ও সুযোগ নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, সময় থাকতে আমাদের এই বিষয়ে সচেতন হতে হবে।
সোমবার (১৫ মে) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) নসরুল হামিদ মিলনায়তনে আয়োজিত এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
আরও পড়ুন: তামাক ব্যাবহারের নিয়ন্ত্রণ জরুরি: স্থানীয় সরকারমন্ত্রী
তিনি বলেন, ভূমিকম্প প্রতিরোধে কোনো প্রযুক্তি না থাকায় অতীতেও ভূমিকম্প হয়েছে এবং ভবিষ্যতেও হবে। আমাদের করণীয় হচ্ছে যেকোনো বিল্ডিং বা অবকাঠামো তৈরি করার সময় ভূমিকম্প সহনীয় ও জাতীয় বিল্ডিং কোড অনুসরণ করে নির্মাণ করা।
স্থানীয় সরকারমন্ত্রী তুরস্কের সাম্প্রতিক ভূমিকম্পের কথা উল্লেখ করে বলেন, সেখানে প্রশস্ত রাস্তা ও উন্মুক্ত স্থান ছিল যেখানে মানুষ ভূমিকম্পের সময় নিরাপদ আশ্রয় পেয়েছিল, ফলে মানুষের প্রাণহানি কম হয়েছে।
ঢাকায় সে বাস্তবতা কতটুকু রয়েছে তা জনগণের সামনে প্রতিনিয়ত উপস্থাপনের মাধ্যমে গণমাধ্যম সচেতনতামূলক কার্যক্রম নিতে পারে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এক্ষেত্রে গণমাধ্যমের ভূমিকা ও গুরুত্ব অপরিসীম।
পরিকল্পনাহীন উন্নয়ন ও অবকাঠামো নির্মাণের দায় আমাদের সবার রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ভবিষ্যতে যাতে জাতীয় বিল্ডিং কোড অনুসরণ ব্যতীত কোন স্থাপনা তৈরি হতে না পারে সেজন্য যে প্রতিষ্ঠানসমূহ স্থাপনা তদারকির দায়িত্ব রয়েছে তাদের আরও শক্তিশালী ভূমিকা রাখতে হবে।
এক্ষেত্রে গণমাধ্যম অপরিকল্পিত নগরায়ন বা বিল্ডিং কোড না মানার ফলে ভূমিকম্পের মত প্রাকৃতিক দূর্যোগে যে ভয়াবহতা হতে পারে তা অনবরত মানুষের সামনে উপস্থাপনের মাধ্যমে এ বিষয়ে সচেতনতা তৈরি করতে পারে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
সেমিনারে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন-রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান আনিছুর রহমান মিঁঞা, মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বুয়েটের পুরাকৌশল বিভাগের ভূমিকম্প বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক মেহেদী আহমেদ আনসারী এবং সভাপতিত্ব করেন ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি মুরসালিন নোমানী।
আরও পড়ুন: বসবাসযোগ্য ঢাকার জন্য নাগরিকদের সচেতনতা জরুরি: স্থানীয় সরকারমন্ত্রী
সকল শ্রেণির মানুষের জন্য ঢাকাকে বাসযোগ্য ও টেকসই করতে হবে: স্থানীয় সরকারমন্ত্রী
১ বছর আগে
মেঘনায় তেলবাহী জাহাজডুবি: ৩ দিনেও শুরু হয়নি উদ্ধারকাজ, আরও তদন্ত কমিটি গঠন
তিন দিনেও শুরু হয়নি ভোলার মেঘনা নদীতে ১১ লাখ লিটার ডিজেল ও অকটেন বোঝাই ডুবে যাওয়া এমভি সাগর নন্দিনী-২ উদ্ধার কাজ। তবে ডুবে যাওয়া জাহাজটি উদ্ধারে একই মালিকানাধীন অপর তিনটি জাহাজ ঘটনাস্থলে এসে পৌঁছেছে।
এদিকে, এ ঘটনায় পদ্মা অয়েল কোম্পানির চার সদস্যের তদন্ত কমিটির পাশাপাশি ভোলা জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট রিপন কুমার সাহাকে আহ্বায়ক করে ৯ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
এ কমিটিকে সাত দিনের মধ্যে সুপারিশ সম্বলিত তদন্ত প্রতিবেদন জেলা প্রশাসক বরাবর দাখিল করতে বলা হয়েছে।
আরও পড়ুন: কর্ণফুলীতে জাহাজডুবি: ক্যাপ্টেনসহ ৪ জনের লাশ উদ্ধার
মঙ্গলবার (২৭ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় এ তদন্ত কমিটির সদস্য সচিব সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. তৌহিদুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান, তিনি এখন পর্যন্ত আদেশের চিঠি পাননি। চিঠি পেলে নির্দেশনা অনুযায়ী তদন্ত কার্যক্রম শুরু করবেন।
মঙ্গলবার সকালে দুর্ঘটনা কবলিত জাহাজ পরিদর্শনে আসেন বাংলাদেশ অভ্যান্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ’র) নৌ-সংরক্ষণ ও পরিচালনা বিভাগের পরিচালক মো. শাহজাহান।
তিনি সাংবাদিকদের জানান, সময় বেশি লাগলেও জাহজটিতে থাকা জ্বালানি তেল রক্ষা করে উদ্ধারের চেষ্টা করা হচ্ছে। ডুবে যাওয়া জাহাজটি দুই সিস্টেমে করা যায়। একটি হলো বার্জ সিস্টেম, অপরটি উইল বার্জ সিস্টেম। তবে এর মধ্যে উইল বার্জ সিস্টেমটি বেশি কার্যকর। তাই সে অনুযায়ী ডুবুরীদের সঙ্গে কথা হয়েছে। তারা ইতোমধ্যে পথে রয়েছেন। ডুবুরী দলটি এসে পৌঁছালে উদ্ধার অভিযান শুরু হবে।
তিনি আরও জানান, নদী থেকে ডুবে যাওয়া জাহাজ উদ্ধারকাজ একটি সময় সাপেক্ষ বিষয়। যেহেতু জাহাজটিতে স্পর্শকাতর বিষ্ফোরকদ্রব্য আছে। এটি বাংলাদেশের নিজস্ব পণ্য নয়। তাই সময় একটু বেশি লাগলেও তেলটা রক্ষা করে যাতে উদ্ধার কাজ করা সেটিই এখন মূল লক্ষ্য।
এছাড়াও জাহাজের মাস্টারের সঙ্গে কথা হয়েছে। তার সঙ্গে কথা বলে যেটি জানা গেছে নদীতে কুয়াশা ছিল। আর সে মেরিন আইনের গাফলতি করে পাইলট ছাড়াই জাহাজ নিয়ে এসেছে। তদন্তে মাস্টারের গাফলতি প্রমাণ হলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
সরেজমিনে দেখা যায়, বিআইডব্লিউটিএ, পদ্মা অয়েল কোম্পানি ও জাহাজ মালিক পক্ষের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তরা জাহাজ উদ্ধারে ডুবুরী দল ও বার্জের অপেক্ষায় রয়েছেন।
এছাড়াও ডুবে যাওয়া জাহাজটির সার্বিক নিরাপত্তার জন্য কোস্ট গার্ড সদস্যরা সেখানে টহল দিচ্ছেন।
তবে সেখানে থাকা কর্মকর্তরা জানিয়েছেন, ডুবুরী দল আসলে মঙ্গলবার সন্ধ্যা নাগাদ উদ্ধার অভিযান শুরু হওয়ার কথা।
জাহাজের মালিক এস এইচ আর নেভিগেশন কোম্পানি লিমিটেডের এক্সিকিউটিভ অফিসার মো. মেহেদী হাসান জানান, সোমবার বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃপক্ষ ডুবে যাওয়া জাহাজটি উদ্ধারে অক্ষমতা প্রকাশ করলে তাৎক্ষণিক মালিক পক্ষের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী একই মালিকের সাগর বধূ-৩, সাগর বধূ-৪ ও সাগর নন্দিনী-৩ নামের তিনটি জাহাজ দুর্ঘটনা কবলিত জাহাজটি উদ্ধারের জন্য ডুবুরি দলসহ ঘটনাস্থলে পঠানো হয়েছে।
মঙ্গলবার সন্ধ্যা নাগাদ তারা উদ্ধার অভিযান শুরু করার কথা এবং আগামীকাল বুধবারের মধ্যে উদ্ধার অভিযান শেষ করতে পারবেন বলে আশা করছেন এ কর্মকর্তা।
অপরদিকে তিন দিন ধরে মেঘনা নদীতে ডুবে যাওয়া জাহাজের তেল ছড়িয়ে পড়ছে।
দ্রুত জাহাজটি উদ্ধার করা না হলে পরিবেশ বিপর্যয়ের আশঙ্কা রয়েছে বলে জানিয়েছেন মৎস্য বিভাগ
কোস্ট গার্ড দক্ষিণ জোনের স্টাফ অফিসার লেফটেন্যান্ট এম হাসান মেহেদী জানান, তেলবাহী কার্গো জাহাজ সাগর নন্দিনী-২ দুর্ঘটনা কবলিত হওয়ার পর থেকেই কোস্ট গার্ড সদস্যরা ২৪ ঘণ্টা জাহাজটির নিরাপত্তা দিয়ে যাচ্ছে। জাহাজটি উদ্ধারে চাঁদপুর থেকে ‘হুমায়রা’নামের একটি উদ্ধারকারী বার্জ আসতেছে। সেটি আসার পর বলা যাবে ডুবে যাওয়া জাহাজটি উদ্ধারে কত সময় লাগবে।
এছাড়াও কোস্ট গার্ডের ডুবুরী দলকে নদীতে নামিয়ে জাহাজে তেল রাখার চেম্বারগুলো পরীক্ষা করা হয়েছে।
চেম্বারগুলো সীল করা রয়েছে। সেখান থেকে বাহিরে তেল বের হওয়ার সম্ভাবনা নেই। ওপরের অংশ থেকে যে তেল নদীতে ছড়িয়ে পড়েছে সেগুলো অত্যাধুনিক মেশিনের সাহায্যে তুলে ফেলা হয়েছে।
আপাতত তেল বের হয়ে নদীতে ছড়িয়ে পড়ে পরিবেশ বিপর্যয়ের আশঙ্কা নেই বলেও জানান এ কর্মকর্তা।
আরও পড়ুন: কর্ণফুলীতে জাহাজডুবি: আরও ২ জনের লাশ উদ্ধার
কর্ণফুলীতে জাহাজডুবি: সীতাকুণ্ডে আরও একজনের লাশ উদ্ধার
১ বছর আগে