বাংলাদেশ ওশানোগ্রাফিক রিসার্চ ইনস্টিটিউট
স্মার্ট বাংলাদেশ গঠনে ২ ভাগ জিডিপি প্রবৃদ্ধি আসবে সুনীল অর্থনীতি থেকে: গবেষণা
স্মার্ট বাংলাদেশ গঠনে সুনীল অর্থনীতি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। উন্নত রাষ্ট্র গঠনের জন্য আরও ১০ ভাগ প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে হবে। এই ১০ ভাগ জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জনের মধ্যে দুই ভাগ জিডিপি প্রবৃদ্ধি আসবে সুনীল অর্থনীতি থেকে। এর লক্ষ্যে সমুদ্র ও সমুদ্র সম্পদের বিভিন্ন খাতের গবেষণা করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ওশানোগ্রাফিক রিসার্চ ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক সাঈদ মাহমুদ বেলাল হায়দর তার গবেষণা প্রতিবেদনে এসব তথ্য উপস্থাপন করেন।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইকো সিস্টেমের সঙ্গে ভারসাম্য বজায় রেখে সমুদ্র ও সমুদ্র সম্পদকে টেকসই ব্যবহারের মাধ্যমে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে সুনীল অর্থনীতি বিরাট ভূমিকা রাখবে। ২০১৪-১৫ সালে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে সুনীল অর্থনীতির অবদান ছিল ৬ দশমিক ২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা দেশের জিডিপির ৩ শতাংশ। দেশ যদি জিডিপি ১০ শতাংশ হারে হয়, তাহলে ২০৩৫ সালে ২৫ দশমিক ৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে দাঁড়াবে।
এতে আরও বলা হয়েছে, বাংলাদেশ ওশানোগ্রাফিক রিসার্চ ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক সাঈদ মাহমুদ বেলাল হায়দর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সেমিনারে গবেষণা রিপোর্টে বলা হয়, গ্লোবাল ওশান কমিশন ২০১৪ সালের প্রাক্কলন অনুযায়ী মেরিন ও উপকূলীয় উৎপাদিত সম্পদের মোট বাজারমূল্য ৩ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার। বিশ্ব অর্থনীতিতে সুনীল অর্থনীতি প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ কর্মসংস্থান বিশ্বের কর্মসংস্থানের ১০-১২ শতাংশ যার ৯০ ভাগ কর্মসংস্থান হয়েছে উন্নয়নশীল দেশগুলোতে।
আরও পড়ুন: কোরালের প্রজনন গবেষণা সুনীল অর্থনীতিতে অবদান রাখবে: শিক্ষামন্ত্রী
২০১২ সালে মিয়ারমারে সঙ্গে ও ২০১৪ সালে ভারতের সঙ্গে সমুদ্রসীমা বিরোধ নিষ্পত্তির মাধ্যমে বাংলাদেশের সমুদ্র এলাকা ১ লাখ ১৮ হাজার ৮১৩ বর্গকিলোমিটারেরও বেশি। এতো বড় সমুদ্র এলাকায় নিয়ে বাংলাদেশের ব্লু ইকোনমি বা সুনীল অর্থনীতির একটি বিশাল সম্ভাবনাময় ক্ষেত্র। মৎস্য সম্পদ, সামুদ্রিক জৈব সম্পদ, সামুদ্রিক নবায়নযোগ্য শক্তি, ব্লু টুরিজমসহ সুনীল অর্থনীতির সম্ভবনাময় ১১ টি ক্ষেত্র রয়েছে।
বাংলাদেশের সুনীল অর্থনীতির উন্নয়নে মেরিন অ্যাকুরিয়াম স্থাপন, প্লাস্টিক রিডিউস রিইউজ, সামুদ্রিক মৎস্যচাষ, সমুদ্রভ্রমণ পর্যটন, ডলফিন ও তিমি দর্শন, সেন্টমার্টিন দ্বীপের প্রবাল রক্ষা, সমুদ্র ভিত্তিক শিল্প স্থাপন, গবেষণার জন্য জাহাজ ক্রয়সহ স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে।
২১০০ সালের বাংলাদেশ ব-দ্বীপ পরিকল্পনায় সুনীল অর্থনীতির জন্য কৌশল হিসেবে সামুদ্রিক সম্পদের বহুমাত্রিক জরিপ, উপকূলীয় জাহাজের সংখ্যা বৃদ্ধি, আধুনিকায়ন, সক্ষমতা বৃদ্ধি, সমুদ্র ইকোটোরিজম, সমুদ্র উপকূল ও বন্দর দূষণমুক্ত রাখার ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়েছে।
২৯ ডিসেম্বর বিওআরআই এর বিজ্ঞানী কতৃর্ক সম্পাদিত গবেষণা ফলাফল উপস্থাপনা বিষয়ক সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রালয়ের সিনিয়র সচিব জিয়াউল হাসান, বিশেষ অতিথি ছিলেন পরিকল্পনা কমিশনের সচিব ড. মো. কাউসার আহাম্মদ ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ড. মো. রাশেদ-উন-নবী।
আরও পড়ুন: সুনীল অর্থনীতিকে প্রাণবন্ত করতে কাজ করছি: প্রধানমন্ত্রী
সুনীল অর্থনীতির লক্ষ্য বাস্তবায়নে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা চাইলো বাংলাদেশ
১ বছর আগে