তারেক-জোবায়দা
বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের নিরাশ করতে তারেক-জোবায়দার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন: বিএনপি
জাতীয় নির্বাচনের আগে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও তার স্ত্রী জোবায়দা রহমানের বিরুদ্ধে ‘মিথ্যা’ মামলায় অভিযোগ গঠনের তীব্র নিন্দা জানিয়ে সরকারকে সুস্থ রাজনীতিতে ফিরে আসার আহ্বান জানিয়েছে বিএনপি।
শনিবার বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এই অভিযোগ করেন।
তিনি বলেন, জনগণকে বিভ্রান্ত করতে এবং বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের হতাশাগ্রস্ত করতে সরকারের নির্দেশে অভিযোগ গঠন করা হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘খালেদা জিয়া এবং তারেক রহমান এবং জিয়া পরিবারকে রাজনীতি থেকে সরানোর জন্য ১/১১ থেকে একটি পরিকল্পনা কাজ করছে, যা এখনও চলছে। সেই পদক্ষেপের অংশ হিসাবে, গত সংসদ নির্বাচনের ঠিক আগে ২০১৮ সালে বেগম খালেদা জিয়াকে অন্যায়ভাবে সাজা দেওয়া হয়েছিল। একইভাবে আগামী জাতীয় নির্বাচনের আগে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ও তার স্ত্রীকে একতরফাভাবে শাস্তি দিতে সরকার সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে।
বিএনপি নেতা বলেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে এমন সময়ে অভিযোগ গঠন করা হয়েছে, যখন সরকার বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের ওপর নির্মম দমন-পীড়ন, হত্যা ও গ্রেপ্তার করেও শক্তিশালী আন্দোলন বানচাল করতে ব্যর্থ হচ্ছে।তিনি বলেন, ‘সুতরাং নেতা-কর্মী ও জনগণের মনোবল নষ্ট করতে সরকারের নির্দেশে ষড়যন্ত্রমূলক মিথ্যা মামলায় তারেক ও জুবায়দার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়েছে।’
ফখরুল আরও দাবি করেন, ১/১১ শাসনামলে যেসব অভিযোগের ভিত্তিতে মিথ্যা মামলা করা হয়েছিল তা ‘ভিত্তিহীন ও বানোয়াট’।রাজনৈতিক প্রতিহিংসা থেকে সরকারের নির্দেশে মামলার একতরফা রায় দেওয়া হবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি।
বিএনপি নেতা অবশ্য বলেন, সরকার তারেকের নেতৃত্বকে কোনো প্রশ্নের মুখে ফেলতে পারবে না, জুবায়দা রহমানকে ছোট করতে পারবে না এবং গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার, জনগণের ভোটাধিকার এবং আইনের শাসনের জন্য চলমান আন্দোলনকে বানচাল করতে পারবে না ‘রায়’।
তিনি বলেন, ‘বিএনপি সরকারের এ ধরনের ঘৃণ্য কর্মকাণ্ডের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানায়। আমরা সরকারকে এই ঘৃণ্য ষড়যন্ত্র পরিহার করে সুস্থ ও সুষ্ঠু রাজনীতিতে ফিরে আসার আহ্বান জানাই।’
২০০৭ সালে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) দায়ের করা একটি দুর্নীতির মামলায় ১৩ এপ্রিল ঢাকার একটি আদালত তারেক রহমান ও তার স্ত্রী জুবায়দা রহমানের অনুপস্থিতিতে অভিযোগ গঠন করে।
আরও পড়ুন : ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন দিয়ে ভীতির পরিবেশ সৃষ্টি করে আবারও ক্ষমতা দখল করতে চায় সরকার: বিএনপিদুদক এখন বিএনপি দমন কমিশন
ফখরুল অভিযোগ করেন, বিএনপি নেতা ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে ১৬ বছর আগে ‘মিথ্যা, বানোয়াট ও কাল্পনিক অভিযোগে মামলাটি করে দুদক।
তিনি বলেন, ‘দুর্নীতি দমন কমিশন এখন বিএনপি দমন কমিশনে পরিণত হয়েছে। এটা দুঃখজনক যে তারেক রহমান যে সম্পত্তির মালিক নন বা এর সঙ্গে তার কোনো সম্পর্ক নেই, তারেক রহমানকে কাল্পনিক মালিক বানিয়ে মিথ্যা মামলা করা হয়েছে।’
তারেক রহমান ও জুবায়দা রহমানের বিরুদ্ধে কর পরিশোধিত সম্পদ নিয়ে কাল্পনিক অভিযোগ আনা হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন এই বিএনপি নেতা।
‘তিনি অভিযোগ করেন, ‘দুর্নীতি দমন কমিশন দেশে ব্যাপক দুর্নীতি দেখতে পাচ্ছে না। সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় ক্ষমতাসীন দলের নেতা-কর্মী ও দলীয় মদদপুষ্ট ব্যবসায়ী ও আমলারা দুর্নীতির স্বর্গরাজ্য গড়ে তুলেছেন। দুদক তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয় না।’ফখরুল বলেন, জনগণের চলমান আন্দোলনকে দমন করতে দুদককে এখন বর্তমান ‘ফ্যাসিবাদী’ শাসনের অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন, মানবাধিকার ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতার জন্য সমগ্র বিশ্ব বাংলাদেশের পাশে: বিএনপি
১ বছর আগে
দুদকের মামলায় তারেক-জোবায়দার সম্পত্তি ক্রোকের নির্দেশ দিল আদালত
জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দায়ের করা মামলায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও তার স্ত্রী ডা. জোবায়দা রহমানের সম্পত্তি ক্রোকের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
বৃহস্পতিবার ঢাকা মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ মো. আছাদুজ্জামান তাদের বিরুদ্ধে জারি করা গ্রেপ্তারি পরোয়ানা কার্যকরের প্রতিবেদন পাওয়ার পর এ আদেশ দেন।
একই সঙ্গে ক্যান্টনমেন্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) ১৯ জানুয়ারির মধ্যে সম্পত্তি বাজেয়াপ্তের অগ্রগতি প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: তারেক-জোবায়দার রিট খারিজ; মামলা চলবে
মামলার বিবরণে জানা যায়, ঘোষিত আয়ের বাইরে চার কোটি ৮১ লাখ ৫৩ হাজার ৫৬১ টাকার মালিক হওয়া এবং সম্পদের তথ্য গোপন ও জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে ২০০৭ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর রাজধানীর কাফরুল থানায় মামলা করে দুদক।
মামলায় তারেক রহমান, জোবায়দা রহমান ও তারেক রহমানের শাশুড়ি ইকবাল মান্দ বানুকে আসামি করা হয়।
এরপর ২০০৮ সালে এই তিনজনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়।
এদিকে মামলা বাতিল চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করেন জোবায়দা। ওই বছরই এ আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে মামলার কার্যক্রম স্থগিত করে রুল জারি করেন হাইকোর্ট।
এর বিরুদ্ধে আপিল করলে আপিল বিভাগ হাইকোর্টের আদেশ বহাল রাখেন।
তবে এ সংক্রান্ত চূড়ান্ত শুনানি শেষে ২০১৭ সালের ১২ এপ্রিল মামলা বাতিলের আবেদন খারিজ (রুল ডিসচার্জ) করে রায় দেন হাইকোর্ট।
একই সঙ্গে ওই মামলায় আট সপ্তাহের মধ্যে জোবায়দাকে বিচারিক আদালতে উপস্থিত হতে নির্দেশ দেয়া হয়।
উচ্চ আদালতের এ খারিজ আদেশের বিরুদ্ধে ওই বছরই লিভ-টু-আপিল করেন জোবায়দা।
এরপর প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধীন চার সদস্যের আপিল বেঞ্চ লিভ-টু-আপিল খারিজ করে হাইকোর্টের দেয়া রায় বহাল রাখেন।
আরও পড়ুন: তারেক-জোবায়দার দুর্নীতি মামলার রুল শুনানি ৫ জুন
১৫ বছর পর তারেক-জোবায়দার রিট মামলা চূড়ান্ত শুনানির দিন ধার্য
১ বছর আগে