নাব্যতা
উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহণের সময় পরিবেশের বিষয় মাথায় রাখতে হবে: প্রধানমন্ত্রী
যেকোনো উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহণের সময় পরিবেশ সংরক্ষণের বিষয়টি মাথায় নিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, ‘আমি ক্ষমতায় আসার পর থেকে সবাইকে শহরগুলোর জন্য পরিকল্পনা তৈরি করতে বলেছি। আমরা যে পরিকল্পনাই গ্রহণ করি না কেন, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও পানির প্রবাহের যথাযথ রক্ষণাবেক্ষণের ওপর জোর দিতে হবে।’
সোমবার (৪ ডিসেম্বর) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার কার্যালয়ের মন্ত্রিপরিষদ কক্ষে ঢাকার চারপাশের নদীগুলোর দূষণ রোধ ও নাব্য রক্ষায় প্রণীত মাস্টার প্ল্যানের আলোকে জরিপ প্রতিবেদন উপস্থাপন এবং সংশ্লিষ্ট প্রকল্প গ্রহণের নীতিগত সিদ্ধান্তসংক্রান্ত সভায় প্রধান অতিথির ভাষণে এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, অত্যন্ত দুঃখজনক যে অতীতে দেশের উন্নয়ন কর্মসূচি পরিকল্পিতভাবে গ্রহণ করা হয়নি। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট যারা অস্ত্র হাতে সংবিধান লঙ্ঘন করে অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করেছিল তারা দেশের সার্বিকভাবে সমন্বিত ও পরিকল্পিত উন্নয়নে মনোযোগ দেয়নি।
আরও পড়ুন: প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন খেলাফত রাব্বানী ও নেজামে ইসলামের নেতারা
শেখ হাসিনা বলেন, ‘ফলে, পরিবেশগত বিষয়গুলোয় অবহেলা করা হয়েছে এবং নদীগুলো দখল হয়ে যায়।’
তিনি উল্লেখ করেন, ক্ষমতায় আসার পর তার সরকারের লক্ষ্য ছিল নদীরক্ষা, নাব্য ফিরিয়ে আনা এবং সেগুলোকে দূষণের হাত থেকে রক্ষা করা।
তিনি বলেন, ‘নদী শাসনের নামে বাঁধ নির্মাণ একটি স্বাভাবিক বিষয় ছিল, যা উর্বর ফসলি জমির ব্যাপক ক্ষতি করেছে।’
শেখ হাসিনা স্মরণ করেন, প্রথম মেয়াদে তার সরকার নদী খনন শুরু করে এবং জমির উর্বরতা পুনরুদ্ধারে পলি ব্যবহার করে।
তিনি বলেন, ‘আমাদের নাব্য বজায় রাখতে এবং ভাঙন রোধে নদী খনন করতে হবে।’
আরও পড়ুন: জলবায়ু বাস্তুচ্যুতি মানবিক সংকটে পরিণত হওয়ার আগে বিশ্বকে পদক্ষেপ নিতে হবে: প্রধানমন্ত্রী
নদীর তীরে নির্মিত শিল্প কারখানাগুলোর বর্জ্য নদীতে ফেলা হয় বলে উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘নালার সমস্ত বর্জ্যও নদীতে ফেলা হয়। বর্জ্য পরিশোধনের কোনো পরিকল্পনা নেই। ফলে, দূষণ বৃদ্ধি পেয়েছে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, দূষণের কারণে বুড়িগঙ্গা নদীতে দুর্গন্ধ পাওয়া যায়, যা খুবই বেদনাদায়ক।
তিনি বলেন, ‘আমরা যাই করি না কেন, আমাদের প্রথমে বর্জ্য ব্যবস্থাপনার কথা মাথায় রাখতে হবে।’
তিনি রাজধানীর চারপাশের নদীগুলো রক্ষায় শহরের বিভিন্ন স্থানে ছোট ছোট ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট (শোধনাগার) স্থাপনের পরামর্শ দেন।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশকে বাঁচাতে হলে আমাদের নদীগুলোকে বাঁচাতে হবে। বন্যার সঙ্গেই আমাদের বাঁচতে হবে। এটা আমাদের সবসময় মাথায় রাখতে হবে। বন্যার পানির সঙ্গে আসা পলি আমাদের দরকার।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, নদী শাসনের ক্ষেত্রে এর গভীরতা বিবেচনা করতে হবে।
তিনি বলেন, ‘বর্ষাকালে আসা পানি সংরক্ষণের জন্য আমাদের অবশ্যই নদীর তীরে একটি বাফার জোন তৈরি করতে হবে।’
আরও পড়ুন: অগ্নিসংযোগকারীদের ছাড় দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই: প্রধানমন্ত্রী
১ বছর আগে
নাব্যতা ফিরিয়ে আনতে সিলেটের সুরমা নদীর খনন কাজ শুরু
সিলেট নগরবাসীকে বন্যামুক্ত করার লক্ষ্যে এবং সুরমা নদীর নাব্যতা ফিরিয়ে আনতে খনন কাজ শুরু হয়েছে। শনিবার (২১ জানুয়ারি) সকালে সদর উপজেলার চাঁনপুর এলাকায় সুরমা নদীতে খনন কাজের উদ্বোধন করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন।
সিলেট পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) জানিয়েছে, প্রথম দফায় সিলেটে সুরমা নদীতে ১৮ কিলোমিটার খনন করা হবে।
আরও পড়ুন: সিলেটে সুরমা নদী থেকে যুবকের লাশ উদ্ধার
শীত মৌসুমে সুরমা নদী শুকিয়ে নালায় পরিণত হয়, আর বর্ষায় দেখা যায় ভয়াবহ রূপ। গভীরতা কমে যাওয়ায় নদীর তীর উপচে পানি ঢুকে সিলেট শহরে। এতে পানিতে তলিয়ে যায় শহর। পানি নিষ্কাশনের মাধ্যম ছড়া-খালগুলো দিয়ে উল্টো শহরে প্রবেশ করে সুরমার পানি। গত বছর দুই দফা বন্যায় নাকাল হতে হয়েছে সিলেট নগরবাসীকে। অবশেষে নগরবাসীকে এ সমস্যা থেকে মুক্ত করতে সুরমা খননের কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
পাউবো সিলেট অফিস সূত্রে জানা গেছে, গত বছর মে ও জুন মাসে সিলেট নগরীতে ভয়াবহ বন্যা হয়। ওই সময় সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে সুরমা নদী খনন, শহররক্ষা বাঁধ এবং নদী ও ছড়া-খালের উৎসমুখে স্লুইস গেট নির্মাণের দাবি তোলা হয়।
ওই সময় পররাষ্ট্রমন্ত্রীও এ নদী খননে জোর দেন। এর প্রেক্ষিতে পানি উন্নয়ন বোর্ড সুরমা নদী খননে একটি প্রকল্প গ্রহণ করে।
বোর্ড সূত্র জানায়, এর আগে কানাইঘাট থেকে ছাতক পর্যন্ত সুরমা নদী খননের জন্য একটি ডিপিপি জমা দেয়া হয়েছিল। কিন্তু সেটি আলোর মুখ দেখেনি। গেল বছর বন্যার পর কুশিঘাট থেকে ছাতকের লামাকাজি সেতু পর্যন্ত প্রায় ১৮ কিলোমিটার খননে আরও একটি প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। যার ব্যয় ধরা হয়েছে ৫০ কোটি টাকা। এছাড়া নদী খনন করছে দুটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।
সিলেট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আসিফ আহমদ জানান, প্রথম দফার খনন শেষ হওয়ার পর কুশিঘাট থেকে লামাকাজি সেতু পর্যন্ত খনন হলে সুরমার নাব্যতা বাড়বে। একই সঙ্গে বাড়বে পানি প্রবাহ। এতে বর্ষায় সিলেট মহানগরে বন্যার আশঙ্কা কমবে। এছাড়া আগামী জুন মাসের মধ্যেই খনন সম্পন্ন হওয়ার কথা।
সিলেট পানি উন্নয়ন বোর্ডের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের দায়িত্বে থাকা অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী এস এম শহীদুল ইসলাম জানান, লামাকাজি পর্যন্ত কোথাও ২০ ফুট আবার কোথাও ১৫ ফুট খননের ডিজাইনসহ কার্যাদেশ দেয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: সুরমা নদী থেকে নারীর লাশ উদ্ধার
সুরমা নদী থেকে ব্যক্তির লাশ উদ্ধার
১ বছর আগে