সিলেট নগরবাসীকে বন্যামুক্ত করার লক্ষ্যে এবং সুরমা নদীর নাব্যতা ফিরিয়ে আনতে খনন কাজ শুরু হয়েছে। শনিবার (২১ জানুয়ারি) সকালে সদর উপজেলার চাঁনপুর এলাকায় সুরমা নদীতে খনন কাজের উদ্বোধন করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন।
সিলেট পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) জানিয়েছে, প্রথম দফায় সিলেটে সুরমা নদীতে ১৮ কিলোমিটার খনন করা হবে।
আরও পড়ুন: সিলেটে সুরমা নদী থেকে যুবকের লাশ উদ্ধার
শীত মৌসুমে সুরমা নদী শুকিয়ে নালায় পরিণত হয়, আর বর্ষায় দেখা যায় ভয়াবহ রূপ। গভীরতা কমে যাওয়ায় নদীর তীর উপচে পানি ঢুকে সিলেট শহরে। এতে পানিতে তলিয়ে যায় শহর। পানি নিষ্কাশনের মাধ্যম ছড়া-খালগুলো দিয়ে উল্টো শহরে প্রবেশ করে সুরমার পানি। গত বছর দুই দফা বন্যায় নাকাল হতে হয়েছে সিলেট নগরবাসীকে। অবশেষে নগরবাসীকে এ সমস্যা থেকে মুক্ত করতে সুরমা খননের কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
পাউবো সিলেট অফিস সূত্রে জানা গেছে, গত বছর মে ও জুন মাসে সিলেট নগরীতে ভয়াবহ বন্যা হয়। ওই সময় সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে সুরমা নদী খনন, শহররক্ষা বাঁধ এবং নদী ও ছড়া-খালের উৎসমুখে স্লুইস গেট নির্মাণের দাবি তোলা হয়।
ওই সময় পররাষ্ট্রমন্ত্রীও এ নদী খননে জোর দেন। এর প্রেক্ষিতে পানি উন্নয়ন বোর্ড সুরমা নদী খননে একটি প্রকল্প গ্রহণ করে।
বোর্ড সূত্র জানায়, এর আগে কানাইঘাট থেকে ছাতক পর্যন্ত সুরমা নদী খননের জন্য একটি ডিপিপি জমা দেয়া হয়েছিল। কিন্তু সেটি আলোর মুখ দেখেনি। গেল বছর বন্যার পর কুশিঘাট থেকে ছাতকের লামাকাজি সেতু পর্যন্ত প্রায় ১৮ কিলোমিটার খননে আরও একটি প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। যার ব্যয় ধরা হয়েছে ৫০ কোটি টাকা। এছাড়া নদী খনন করছে দুটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।
সিলেট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আসিফ আহমদ জানান, প্রথম দফার খনন শেষ হওয়ার পর কুশিঘাট থেকে লামাকাজি সেতু পর্যন্ত খনন হলে সুরমার নাব্যতা বাড়বে। একই সঙ্গে বাড়বে পানি প্রবাহ। এতে বর্ষায় সিলেট মহানগরে বন্যার আশঙ্কা কমবে। এছাড়া আগামী জুন মাসের মধ্যেই খনন সম্পন্ন হওয়ার কথা।
সিলেট পানি উন্নয়ন বোর্ডের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের দায়িত্বে থাকা অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী এস এম শহীদুল ইসলাম জানান, লামাকাজি পর্যন্ত কোথাও ২০ ফুট আবার কোথাও ১৫ ফুট খননের ডিজাইনসহ কার্যাদেশ দেয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: সুরমা নদী থেকে নারীর লাশ উদ্ধার