হাতকড়া
বগুড়ায় হাতকড়াসহ ২ আসামির পলায়ন, ৪ পুলিশ বরখাস্ত
বগুড়া সদর থানার উপশহর পুলিশ ফাঁড়ি থেকে চোর সন্দেহে আটক দুই ব্যক্তি হাতকড়াসহ পালানোর ঘটনায় ওই ফাঁড়ির ৪ পুলিশ সদস্যকে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইন্সে সংযুক্ত করা হয়েছে। এদিকে পলাতক দু’জনের মধ্যে একজনকে রবিবার(২৪ মার্চ) রাতেই পুনরায় গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
বরখাস্ত চার পুলিশ সদস্য হলেন, উপশহর পুলিশ ফাঁড়ির সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) সোহেল রানা, কনস্টেবল মাহবুব আলম, একরামুল হক ও মানিক রতন।
আরও পড়ুন: বরখাস্ত ডিআইজি মিজানের ১৪ বছরের সাজা বহাল
বগুড়া সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সাইহান ওলিউল্লাহ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এ ঘটনায় সোমবার গ্রেপ্তার হওয়া একজনসহ দু’জনের নামে পুলিশ বাদী হয়ে থানায় একটি মামলা দায়ের করেছে।
সদর থানার মামলা সূত্রে জানা গেছে, গত শনিবার ভোরে উপশহর পুলিশ ফাঁড়ির এএসআই সোহেল রানা, কনস্টেবল একরামুল হক ও মানিক রতন নিশিন্দারা এলজিইডি অফিসের সামনে জনগণের হাতে চোর সন্দেহে আটক মোহাম্মদ আলী ও মিঠু মিয়া ওরফে ফারুক নামে দুজনকে তাদের হেফাজতে নেন। পরে তাদের হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে উপশহর পুলিশ ফাঁড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে দুই আসামিকে হ্যান্ডকাফ লাগিয়ে দায়িত্বরত কনস্টেবল মাহবুব আলমের হেফাজতে রাখা হয়। শনিবার সকাল ১০টার দিকে পুলিশ ফাঁড়ি থেকে হ্যান্ডকাফসহ আটক ওই দুই আসামি পালিয়ে যান। পরে বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে রবিবার রাতে মোহাম্মদ আলীকে আদমদীঘি থেকে হাতকড়াসহ পুনরায় আটক করে পুলিশ।
সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইহান ওলিউল্লাহ বলেন, পলাতক মিঠু মিয়া ও পুনরায় গ্রেপ্তার হওয়া মোহাম্মদ আলীর নামে উপশহর পুলিশ ফাঁড়ির এসআই মাহমুদুর রশিদ বাদী হয়ে একটি মামলা করেছেন।
তিনি আরও বলেন, দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে পুলিশ সুপারের আদেশে রবিবার রাতে চার পুলিশকে সাময়িক বরখাস্ত করে পুলিশ লাইনসে সংযুক্ত করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রাম কারাগারে কয়েদির আত্মহত্যা, ৩ কারারক্ষী বরখাস্ত
হোয়াটসঅ্যাপে আরও সহজে অডিও বার্তা যেভাবে পাঠাবেন
৭ মাস আগে
চাঁপাইনবাবগঞ্জে হাতকড়া নিয়ে পালানোর ৩২ দিন পর আসামি গ্রেপ্তার
চাঁপাইনবাবগঞ্জে হাতকড়া নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার ৩২ দিন পর ওই আসামিকে ফের গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। এ সময় তার এক সহযোগীকেও গ্রেপ্তার করা হয়।
সোমবার ভোর ৫টার দিকে রাজশাহীর গোদাগাড়ি উপজেলার দুর্গম চর বাড়ীনগর এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
এসময় গ্রেপ্তারদের কাছ থেকে ১টি পিস্তল, ৩ রাউন্ড গুলি, ১টি ম্যাগজিন, ৮০০ গ্রাম হেরোইন ও ১টি হ্যান্ডকাপ জব্দ করার কথা জানায় র্যাব।
আরও পড়ুন: চাঁদপুরে যুবলীগকর্মীর মৃত্যু: গ্রেপ্তার ৫
গ্রেপ্তার মাসুম ওরফে মাসুদ রানা (২৫) চাঁপাইনবাবগঞ্জের কোদালকাটি জেলেপাড়া গ্রামের নাজিবুল ইসলামের ছেলে এবং তার সহযোগী ইলিয়াস (২৪) রাজশাহীর গোদাগাড়ি উপজেলার বাড়ীনগর গ্রামের মৃত নায়েব আলীর ছেলে।
সোমবার (২৫ জুন) দুপুরে র্যাব-৫ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল রিয়াজ শাহরিয়ার চাঁপাইনবাবগঞ্জ র্যাব ক্যাম্পে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিং এ তথ্য জানান।
তিনি জানান, গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে র্যাবের একটি দল নিয়ে সোমবার (২৬জুন) ভোর ৫টার দিকে রাজশাহীর গোদাগাড়ি উপজেলার দুর্গম চর বাড়ীনগর এলাকায় অভিযান চালিয়ে মাসুদ রানা ও তার সহযোগী ইলিয়াসকে গ্রেপ্তার করে।
আরও পড়ুন: ফেনীতে কিশোর গ্যাংয়ের হামলায় সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী আহত, গ্রেপ্তার ৩
তিনি আরও জানান, গত ২৪ মে রাতে মাদক মামলার গ্রেপ্তারি পরোয়ানাভুক্ত আসামি মাসুদ রানাকে বিজিবির সহায়তায় গ্রেপ্তার করে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর থানা পুলিশ। পরে মাসুদ রানাকে সঙ্গে নিয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার আলাতুলী ইউনিয়নের কোদালকাটি এলাকায় অভিযানে যায় পুলিশের একটি বিশেষ দল। অভিযানে ১ কেজি ৮২ গ্রাম হেরোইন জব্দ করা হয়।
১ বছর আগে
ডান্ডাবেড়ি-হাতকড়ার অপব্যবহার বন্ধে আইনি নোটিশ
গ্রেপ্তার হওয়া আসামিদের বেআইনিভাবে ডান্ডাবেড়ি ও হাতকড়া পরানো বন্ধ এবং এ সম্পর্কে একটি নীতিমালা করার জন্য সরকারকে আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছে।
রবিবার (২২ জানুয়ারি) সুপ্রিম কোর্টের ১০ জন আইনজীবীর পক্ষে অ্যাডভোকেট আসাদ উদ্দিন এ নোটিশ পাঠান।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব, আইন ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের দুই সচিব, আইজিপি এবং কারা মহাপরিদর্শক বরাবরে এ আইনি নোটিশটি পাঠানো হয়েছে।
নোটিশ প্রাপ্তির ১৫ কর্মদিবসের মধ্যে ডান্ডাবেড়ি ও হাতকড়ার অপব্যবহার বন্ধ এবং এ বিষয়ে একটি সুনির্দিষ্ট নীতিমালা করার অনুরোধ জানানো হয়েছে।
অন্যথায় নোটিশদাতারা উচ্চ আদালতের দারস্থ হবেন মর্মে এতে উল্লেখ করা হয়েছে।
লিগ্যাল নোটিশ পাঠানো আইনজীবীরা হলেন-আসাদ উদ্দিন, মীর এ কে এম নুরুন্নবী, মো. জোবায়দুর রহমান, মোহাম্মদ মিসবাহ উদ্দিন, আল রেজা মো. আমির, মো. রেজাউল ইসলাম, কে এম মামুনুর রশিদ, মো. আশরাফুল ইসলাম, শাহীনুর রহমান।
আরও পড়ুন: ১ ডিসেম্বর থেকে শারীরিক উপস্থিতিতে সুপ্রিম কোর্টের বিচারকাজ
আইনজীবী আসাদ উদ্দিন সাংবাদিকদের জানান, দৈনিক প্রথম আলো পত্রিকায় গত ২০ ডিসেম্বরে ছবিসহ একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়। যেখানে দেখা যায়, গাজীপুরে একজন আসামি ডান্ডাবেড়ি পরিহিত অবস্থায় মায়ের জানাজা পড়াচ্ছেন।
তার পরপরই গত ১৭ জানুয়ারি ছবিসহ আরেকটি সংবাদ প্রকাশিত হয়। সেখানেও দেখা যায়, শরীয়তপুরে আরেকজন আসামি একইভাবে ডান্ডাবেড়ি পরা অবস্থায় মায়ের জানাজা পড়াচ্ছেন। এ সময়ের মধ্যেই একজন আইনজীবীসহ কয়েকজনকে ডান্ডাবেড়ি পরিয়ে ঢাকা কোর্টে আনা হয়। এসব ঘটনা পত্র-পত্রিকা এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে।
কাছাকাছি সময়ে সাংবাদিক শফিকুল ইসলাম কাজল, তানভীর হাসান তানু, প্রবীর শিকদার, শিল্পী জে কে মজলিস এবং কয়েকজন শিশুসহ অনেক আসামিকে হাতকড়া পরানোর ঘটনায় দেশব্যাপী সমালোচনার ঝড় বয়ে গেছে।
কিন্তু তারপরও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে হাতকড়া ও ডান্ডাবেড়ির যথেচ্ছ ব্যবহার বন্ধে কোনও উদ্যোগ নেয়া হয়নি।
আইনজীবী আসাদ উদ্দিন বলেন, বেঙ্গল পুলিশ রেগুলেশনের প্রবিধান ৩৩০-এ হাতকড়া সংক্রান্ত বিধান রয়েছে। সেখানে শুধুমাত্র পলায়ন রোধ করতে যতটুকু প্রয়োজন তার বেশি নিয়ন্ত্রণ আরোপে নিষেধ করা হয়েছে।
যদি কোনো শক্তিশালী বন্দি সহিংস অপরাধে অভিযুক্ত হয় বা কুখ্যাত হিসাবে পূর্ব পরিচিত হয় বা অসুবিধা সৃষ্টিতে উন্মুখ থাকে বা রাস্তা দীর্ঘ হয় বা বন্দি সংখ্যা অনেক বেশি হয় সেক্ষত্রে হাতকড়া ব্যবহার করা যেতে পারে।
হাতকড়া না থাকলে দড়ি বা কাপড় ব্যবহারের কথা বলা হয়েছে। এ প্রবিধানের কোথাও ডান্ডাবেড়ি ব্যবহারের কথা নেই।
অন্যদিকে জেলকোড এবং কারা আইনে ‘কারা অপরাধ’ এর বর্ণনার পাশাপাশি শাস্তি হিসাবে অন্যান্য পদ্ধতির মধ্যে হাতকড়া ও ডান্ডাবেড়ি ব্যবহারের বিষয়ে উল্লেখ রয়েছে।
আরও পড়ুন: নিষেধাজ্ঞার মধ্যে থাকা রুশ জাহাজ গ্রহণ করবে না বাংলাদেশ: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
অর্থাৎ কারা অভ্যন্তরে কয়েদিরা সংশ্লিষ্ট ‘কারা অপরাধ’করলে তার শাস্তি হিসাবে এর ব্যবহার করা যাবে।
এছাড়া যেসব কয়েদি পলায়ন করে বা পলায়নে উদ্যত হয় বা ষড়যন্ত্র করে তাদের হাতকড়া বা ডান্ডাবেড়ি পরানো যাবে। এর বাইরে এক কারাগার থেকে আরেক কারাগারে বন্দি স্থানান্তরের সময় ক্ষেত্র বিশেষে ব্যবহার করা যেতে পারে। মূলত ডান্ডাবেড়ির ব্যবহার কেবলমাত্র জেল কোড এবং কারা আইনের আওতাধীন।
আর বেঙ্গল পুলিশ রেগুলেশন অনুযায়ী প্রযোজ্য ক্ষেত্রে কেবলমাত্র হাতকড়া ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে। কোনভাবেই ডান্ডাবেড়ি নয়।
ভারতীয় সুপ্রিম কোর্ট ইতোমধ্যে হাতকড়া ও ডান্ডাবেড়ি ব্যবহার বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা দিয়েছে।
সিটিজেন ফর ডেমোক্রেসি বনাম স্টেট অব আসাম মামলায় সুপ্রিম কোর্ট বলেছে, পুলিশ বা কারা কর্তৃপক্ষ কোনও আসামিকে হাতকড়া বা ডান্ডাবেড়ি পরাতে পারবে না। কোনও মারত্মক এবং পলায়নের আশঙ্কা আছে এমন আসামিকে এগুলো পরানো অত্যন্ত প্রয়োজন হলে ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে আবেদন করতে হবে। ম্যাজিস্ট্রেটের বিশেষ অনুমতি ছাড়া কোনও আসামিকে হাতকড়া বা ডান্ডাবেড়ি পরানো যাবে না।
ওয়ারেন্ট ব্যতিত কোনও আসামিকে গ্রেপ্তার করা হলে এবং হাতকড়া পরানো আবশ্যক মনে হলে পুলিশ তাকে ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে নিয়ে আসা পর্যন্ত হাতকড়া পরাতে পারবে। পরবর্তী সময়ের জন্য অবশ্যই ম্যাজিস্ট্রেটের অনুমতি নিতে হবে।
আমাদের দেশে এমন সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা/নীতিমালা না থাকায় ডান্ডাবেড়ি ও হাতকড়ার অপব্যবহার হচ্ছে।
আরও পড়ুন: সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে ৩ বিচারপতির নিয়োগ
১ বছর আগে