বিপর্যয়কারী
পাকিস্তানে লোডশেডিং: সরকারের পক্ষে অবস্থান পাক জ্বালানি মন্ত্রীর
পাকিস্তানে বিপর্যয়কারী দিনব্যাপী গ্রিড বিপর্যয়ের জেরে তীব্র গণঅসন্তোষের বিরুদ্ধে সরকারের পক্ষ নিয়েছেন দেশটির জ্বালানি মন্ত্রী খুররম দস্তগীর।
মঙ্গলবার রাজধানী ইসলামাবাদে দস্তগীর সাংবাদিকদের বলেন,‘আজ ভোর সোয়া পাঁচটায় বিদ্যুৎ পুরোপুরি পুনরুদ্ধার করা হয়েছে।’
তবে গ্রিড বিপর্যয়ের জন্য জ্বালানি মন্ত্রী কোন ক্ষমা প্রার্থনা করেননি কিংবা সরকারের জ্বালানি-সাশ্রয়ী পদক্ষেপের কারণে এই সংকট হয়েছে কিনা- এ বিষয়েও তিনি কোনও আলোকপাত করেননি।
অন্যদিকে তিনি সিস্টেম বুট আপ করার জন্য দেশের প্রকৌশলী ও প্রযুক্তিবিদদের প্রশংসা করেছেন।
আরও পড়ুন: তালেবানদের হাতে বন্দি কর্মকর্তাদের উদ্ধারে পাকিস্তানে অভিযান শুরু
মন্ত্রী জানান, সোমবার প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরীফের গঠিত তিন সদস্যের কমিটি এ বিষয়ে সঠিক তথ্য দেবে।
তিনি বলেন, কমিটিকে ‘আমরা সার্বিক সহযোগিতা করব’। তারা কিছুদিনের মধ্যে প্রাথমিক তদন্ত শেষ করবে বলে আশা করা হচ্ছে। তদন্তে দেখা যাবে ঠিক কী কারণে বিভ্রাট হয়েছে।
দস্তগীর আরও ‘আশঙ্কা করছেন’ যে হ্যাকাররা পাকিস্তানি গ্রিডের সিস্টেমগুলোকে হ্যাক করায় বিদ্যুত বিভ্রাট হতে পারে।
তিনি মূলত প্রযুক্তিগত ত্রুটিকে দায়ী করেছেন।
দস্তগীর আরও বলেন যে পাকিস্তানের দু’টি পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র ও কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্র এখনও বন্ধ থাকায় সম্পূর্ণ বিদ্যুত আসতে সময় লাগতে পারে এবং এই সপ্তাহে কোথাও কোথাও ‘নিয়মিত বিদ্যুত বিভ্রাট’ ঘটতে পারে।
সোমবার প্রায় ১২ ঘণ্টার লোডশেডিংয়ে সারাদেশের মানুষের জীবনযাত্রা ব্যাহত হয়েছে। ব্ল্যাকআউটে স্কুল,কারখানা ও দোকানগুলো অন্ধকারে নিমজ্জিত হয়। তীব্র শীতের মধ্যে গ্রিড বিপর্যয় হওয়ায় প্রায় ২২ কোটি মানুষের দেশটির অনেকেই খাবার পানির সংকটে ছিলেন।
শুধুমাত্র দেশটির বড় কয়েকটি হাসপাতাল,সামরিক ও সরকারি প্রতিষ্ঠান ও বিখ্যাত ব্যবসা প্রতিষ্ঠানসমূহে জেনারেটর চালু ছিল।
জানা যায়, বেশিরভাগ বিদ্যুত পুনরুদ্ধার করা হলেও মঙ্গলবার পর্যন্ত দেশের কিছু অংশে এখনও ব্ল্যাকআউট রয়েছে।
অভিযোগ উঠেছে, সরকারের জ্বালানি-সাশ্রয়ী পরিকল্পনার অংশ হিসেবে রবিবার রাতে কম ব্যবহারের সময় বিদ্যুত বন্ধ করে দিয়েছিল কর্তৃপক্ষ।
সোমবার ভোরে আবার বিদ্যুত চালু করার সময় সিস্টেমে বিপর্যয় দেখা দেয়।
এ বছরের ব্ল্যাকআউট ২০২১ সালের জানুয়ারির বিশাল ব্ল্যাকআউটের স্মৃতি মনে করিয়ে দেয়। পাকিস্তানের সেবারের ব্ল্যাকআউটকে বিদ্যুত উৎপাদন ও বিতরণ ব্যবস্থায় প্রযুক্তিগত ত্রুটিকে দায়ী করা হয়। পাকিস্তান তার বিদ্যুতের অন্তত ৬০ ভাগ পায় জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে এবং প্রায় ২৭ ভাগ উৎপন্ন হয় জলবিদ্যুৎ থেকে। দেশটির গ্রিডে পারমাণবিক ও সৌরশক্তির অবদান প্রায় ১০ ভাগ।
সোমবার বিরোধী দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ-এর অন্যতম জ্যেষ্ঠ নেতা ফাওয়াদ চৌধুরী দেশের অর্থনীতির অব্যবস্থাপনার জন্য সরকারের সমালোচনা করেছেন এবং বলেছেন যে এই ব্ল্যাকআউট সরকারের অযোগ্যতার প্রতিফলন।
আরও পড়ুন: পাকিস্তানে বোমা হামলায় যাত্রীবাহী ট্রেন লাইনচ্যুত, আহত ১৫
মুম্বাই হামলায় জড়িত পাকিস্তানিকে সন্ত্রাসী ঘোষণা জাতিসংঘের
১ বছর আগে