সাপ
তালায় সাপের কামড়ে নারীর মৃত্যু
সাতক্ষীরার তালা উপজেলায় সাপের কামড়ে আছিয়া বেগম (২৮) নামে এক নারীর মৃত্যু হয়েছে।
রবিবার (৩০ জুন) রাত ৮টার দিকে উপজেলার খলিলনগর ইউনিয়নের রায়পুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
আরও পড়ুন: দিনাজপুরে সাপের কামড়ে নারীর মৃত্যু
আছিয়া বেগম রায়পুর গ্রামের নান্টু গাজীর স্ত্রী।
স্থানীয় ইউপি সদস্য শিরিনা খাতুন বলেন, আছিয়া বেগম নামের ওই নারী গোয়ালঘর পরিষ্কার করছিলেন। এ সময় তাকে সাপ কামড় দেয়। তাৎক্ষণিকভাবে স্বজনরা তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়ার নিচ্ছিলেন, পথেই তার মৃত্যু হয়।
তালা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মমিনুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
আরও পড়ুন: বর্ষা-বন্যায় বসতবাড়িতে সাপের উপদ্রব মোকাবিলা করবেন যেভাবে
৫ মাস আগে
বর্ষা-বন্যায় বসতবাড়িতে সাপের উপদ্রব মোকাবিলা করবেন যেভাবে
ভারী বৃষ্টিপাতের মৌসুমে বিশেষ করে বন্যার সময় প্লাবিত এলাকায় জনসাধারণের সবচেয়ে বড় আতঙ্ক সাপের উপদ্রব। দেশের উষ্ণ ও আর্দ্র জলবায়ুর কারণে গ্রামাঞ্চলগুলোর ঘন গাছপালা ও জলাবদ্ধ এলাকাগুলো রীতিমতো সাপের আবাসস্থলে পরিণত হয়। প্রতিবছর বর্ষাকালে এই সমস্যার পুনরাবৃত্তির কারণে এখন বিভাগীয় শহরগুলোও এই আশঙ্কা থেকে মুক্ত নয়। অতিবৃষ্টির ফলে ক্রমশ বাড়তে থাকা পানির স্তর এই বিষাক্ত সরিসৃপগুলোকে অপেক্ষাকৃত উঁচু ভূমিতে আশ্রয় নিতে বাধ্য করে। এতে করে প্রায় সময় এরা ঢুকে পড়ে মানুষের বসতবাড়িতে। এই সমসাময়িক বিড়ম্বনা মোকাবিলায় অবিলম্বে সতর্ক হওয়া প্রয়োজন। চলুন, কীভাবে সাপকে ঘরবাড়ি থেকে দূরে রাখা যায় তা জেনে নেওয়া যাক।
বর্ষা ও বন্যার সময় সাপের উপদ্রব থেকে ঘরবাড়ি মুক্ত রাখতে করণীয়
গর্ত ও ফাটল বন্ধ করা
প্রথমেই বাড়ির ভেতরে ও চারপাশে ছোট-বড় যত ফাটল ও গর্ত আছে সব খুঁজে বের করে ভালোভাবে বন্ধ করতে হবে। বাড়ির কলাম, দেয়াল, দরজা ও জানালার চারপাশের ফাঁক বা ছিদ্রগুলোতে অনায়াসেই যে কোনো সাপের জায়গা সঙ্কুলনা হয়ে যায়। এই উন্মুক্ত জায়গাগুলো বন্ধের জন্য প্রয়োজনে পেশাদার সেবা নেয়া যেতে পারে। এতে করে গর্ত বন্ধের জন্য সঠিক উপকরণ ব্যবহারের নিশ্চয়তা পাওয়া যাবে। বাড়ির আনাচে-কানাচে লুকিয়ে থাকা এই গর্তগুলো বন্ধের মাধ্যমে একই সঙ্গে বাড়ির কাঠামোগত অখণ্ডতাও বাড়বে।
আরও পড়ুন: ট্রেকিং, হাইকিং, ক্যাম্পিং ও ভ্রমণের সময় সাপের কামড় থেকে নিরাপদে থাকার উপায়
আঙ্গিনা পরিষ্কার রাখা
কেবল সাপের অনুপ্রবেশ থেকে মুক্তি পেতেই নয়, বাড়ির চারপাশ পরিষ্কার করা বৃহৎ পরিসরে একটি স্বাস্থ্যকর পরিবেশ সৃষ্টির জন্যও জরুরি। বাড়ির আঙ্গিনা পরিষ্কারের সঙ্গে সঙ্গে সাপের আবাসস্থল এবং খাদ্য যোগানের জন্য উপযুক্ত পরিবেশ নষ্ট হয়। ভাঙা গাছের গুড়ি ও আসবাব, কাঠ এবং লম্বা ঘাসের স্তূপ পরিষ্কারের সময় সাবধান থাকতে হবে। ঝোপ-ঝাড় ছেঁটে দেওয়া এবং আঙ্গিনা ঝাড়ু দেওয়া সহ বাড়ির চারপাশের যাবতীয় বিশৃঙ্খলা দূর করার কাজগুলো অভ্যাসে পরিণত করা উচিৎ। ঘরগুলো নির্দিষ্ট দূরত্বে থাকলে ঘরগুলোর আবর্জনা এক করে একটি নির্দিষ্ট স্থানে রাখতে হবে। সেগুলো নিয়মিত অপসারণ করা হচ্ছে কিনা সেদিকেও খেয়াল রাখা দরকার। এই প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা ঘরবাড়িকে শুধু সাপ থেকে নয়, আরও নানা ধরণের ক্ষতিকর প্রাণী থেকে বাঁচাবে।
সঠিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা
বসতবাড়ির ভেতরে ও বাইরে ভালো করে পরিষ্কার করার পর খেয়াল রাখতে হবে যে, উদ্বৃত ময়লা-আবর্জনা সঠিক ভাবে অপসারণ হচ্ছে কিনা। অধিকাংশ ক্ষেত্রে এই বর্জ্যগুলোও বিভিন্ন ক্ষতিকর কীট-পতঙ্গ ও ইদুরের আবাসস্থল হয়ে ওঠে। আর এভাবেই বসতবাড়ির আঙ্গিনায় তৈরি হয় বিষাক্ত সাপের খাবারের উৎস। গ্রামাঞ্চলে ময়লা-আবর্জনা পুড়িয়ে দিতে হয় বা মাটিতে রেখে পুঁতে ফেলতে হয়। আর শহরে সিটি করপোরেশনের পরিচ্ছন্নতা কর্মী ময়লা নিয়ে যাওয়ার আগ পর্যন্ত নিদিষ্ট ড্রামে রেখে মুখ ঢাকনা দিয়ে বন্ধ রাখতে হয়।
এই ডাস্টবিনগুলো থেকে কুকুর, বিড়াল বা কাক খাবার খাওয়ার সময় তা আশেপাশে এলোমেলো ভাবে ফেলে রাখছে কিনা সেদিকেও কড়া নজর রাখা উচিৎ। এছাড়া বাড়িতে বিভিন্ন পোষা প্রাণী প্রায় ক্ষেত্রে খাবার খেয়ে উচ্ছিষ্টগুলো বাইরে বিশৃৎখল ভাবে ফেলে রাখে। এগুলোর ব্যাপারে উদাসীন থাকলে দীর্ঘ পরিসরে ময়লার স্তূপ বাড়তে থাকে,যার ফলশ্রুতিতে পরিবেশ নষ্ট হয়। অতিরিক্ত ময়লা জমে তা থেকে নির্গত হওয়া খারাপ গন্ধ ইদুরকে আকৃষ্ট করে। আর এই ইদুর ধরতে বাড়িতে হানা দিতে পারে বিষাক্ত সাপ। তাই চূড়ান্ত নিরাপত্তার স্বার্থে নির্দিষ্ট স্থানে রাখা ময়লা সঠিক ভাবে অপসারিত হচ্ছে কিনা সেদিকে যথাযথ খেয়াল রাখা জরুরি।
আরও পড়ুন: রাসেলস ভাইপারের অ্যান্টিভেনম বাংলাদেশের প্রত্যেক হাসপাতালে আছে: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
৫ মাস আগে
ট্রেকিং, হাইকিং, ক্যাম্পিং ও ভ্রমণের সময় সাপের কামড় থেকে নিরাপদে থাকার উপায়
ভ্রমণে ট্রেকিং, হাইকিং ও ক্যাম্পিংয়ের মতো রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতা নেওয়ার ক্ষেত্রে নিরাপত্তার বিষয়গুলো নিশ্চিত করা জরুরি। পাহাড়ের খাঁদ, ঝিরিপথ ও জঙ্গল ঘেরা আদিবাসীদের গ্রামগুলো বিচরণের সময় সবচেয়ে বেশি যে ঝুঁকি থাকে তা হচ্ছে বিষাক্ত সাপের উৎপাত। বিশেষ করে পাহাড়ি সাপের দংশনে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া না হলে তা গুরুতর স্বাস্থ্য জটিলতার কারণ হতে পারে। ভ্রমণের আনন্দকে শতভাগ আরামদায়ক ও নির্ঝঞ্ঝাট করতে হলে সর্বাত্মকভাবে এই ধরনের ঝুঁকি এড়িয়ে চলা আবশ্যক। তাই চলুন, ভ্রমণের সময় সাপের কামড় থেকে দূরে থাকার উপায়গুলো জেনে নেই।
ভ্রমণের সময় সাপের কামড় থেকে দূরে থাকতে করণীয়
গন্তব্যে সাপের আনাগোনা সম্বন্ধে জেনে নেওয়া
প্রতিটি সফল ভ্রমণের সঙ্গে জড়িয়ে থাকে তার সুষ্ঠ পরিকল্পনা। গন্তব্য ঠিক করার মুহূর্তে ভ্রমণের যানবাহন, সেখানকার আবাসন, খাওয়া-দাওয়া যাবতীয় বিষয়ে বিশদ ধারণা নেওয়া হয়। এগুলোর সঙ্গে সাপ থেকে নিরাপত্তার দিকটাও অন্তর্ভূক্ত করা উচিৎ। যে অঞ্চলে যাওয়া হচ্ছে সেখানকার স্থানীয় সাপের প্রজাতির ব্যাপারে সম্যক ধারণা থাকা প্রয়োজন। যেমন রাসেলস ভাইপার ও মনোক্লেড কোবরা সাধারণত গ্রামীণ অঞ্চলে বেশি থাকে।
পার্বত্য চট্টগ্রামের মতো পাহাড়ি অঞ্চলে দেখা যায় সবুজ পিট ভাইপারের মতো প্রজাতি। এই সাপগুলো অধিকাংশ ক্ষেত্রে রাতে সক্রিয় থাকে এবং ধানের খেত বা জলাবদ্ধ এলাকায় বসবাস করে। এ ধরনের তথ্য পাওয়া যাবে বাংলাদেশ বন বিভাগ, স্থানীয় বন্যপ্রাণী সংস্থাসহ বিভিন্ন জাতীয় পত্র-পত্রিকার ওয়েবসাইটগুলোতে।
আরও পড়ুন: বিষধর সাপ রাসেলস ভাইপার চেনার উপায় ও প্রয়োজনীয় সতর্কতা
সাপ প্রতিরোধী পরিধেয়
লম্বা প্যান্ট, মোটা মোজা ও উঁচু বুটের মতো পরিধেয়গুলো সাপের কামড়ের ঝুঁকি কমাতে পারে। দুর্গম অঞ্চল পেরিয়ে ঝর্ণা দেখার সময় বা ম্যানগ্রোভ বন ভ্রমণকালে সুরক্ষামূলক গিয়ার পরিধান করা অপরিহার্য। এছাড়া এখন স্নেক গেটারের মতো নানা ধরনের অত্যাধুনিক সেফটি গিয়ার পাওয়া যায়, যা বিভিন্ন বিষাক্ত কীট-পতঙ্গ ও সাপের আক্রমণের বিরুদ্ধে মজবুত ঢালের কাজ করে।
পাশাপাশি পরনে হালকা রঙের পোশাক থাকলে তা সাপ এড়িয়ে যাওয়ার জন্য সহায়ক হতে পারে। কেননা বৈশিষ্ট্যগতভাবে সাপ উজ্জল রঙিন বস্তুর প্রতি আকৃষ্ট হয়। বাংলাদেশে ট্রেকিং, ক্যাম্পিং ও হাইকিং জনপ্রিয় হয়ে ওঠায় বর্তমানে বিভাগীয় শহরগুলোতে অনেক ট্রাভেল শপ আছে। এই খুচরা বিক্রেতাদের কাছ থেকে ট্রাভেল সরঞ্জামের পাশাপাশি বেশ কিছু স্নেক-সেফটি গিয়ারও পাওয়া যায়।
প্রাথমিক চিকিৎসা প্রস্তুতি
সাপের কামড় থেকে বাঁচার জন্য প্রাথমিক চিকিৎসার জ্ঞান থাকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কীভাবে কামড়ের লক্ষণগুলো শনাক্ত করতে হয় এবং অবিলম্বে তাৎক্ষণিক চিকিৎসার জন্য করণীয়গুলো জানা থাকা জরুরি। দংশনের পর শরীরজুড়ে বিষের বিস্তার কমানোর চেষ্টা করতে হবে এবং আক্রান্ত অঙ্গটিকে যথাসম্ভব স্থির রাখতে হবে। ব্যান্ডেজ, অ্যান্টিসেপটিক এবং সম্ভব হলে সাকশন ডিভাইস ধারণকারী স্নেক বাইট কিট সঙ্গে রাখা উত্তম। রাঙ্গামাটি বা খাগড়াছড়ির পার্বত্য অঞ্চলের মতো এলাকায় পেশাদার চিকিৎসা সহায়তা পৌঁছতে কয়েক ঘণ্টা লেগে যায়। এ অবস্থায় তাৎক্ষণিক উপযুক্ত প্রাথমিক চিকিৎসা যথেষ্ট সাহায্যে আসতে পারে।
নিরাপদ ট্রেইল অনুসরণ করা
জনপ্রিয় পর্যটন এলাকাগুলোতে যেখানে অধিক লোক সমাগম হয় সেখানে ভ্রমণের সুবিধার্তে ঝুঁকিমুক্ত পথের নির্দেশনা দেওয়া থাকে। এই পথগুলো সাধারণত নিয়মিত পরিষ্কার করা হয় এবং রক্ষণাবেক্ষণ করা হয়। এরকম নির্দেশনা উল্লেখ করা সাইনবোর্ডগুলো একই সঙ্গে নিরাপদ ও সহজ ভ্রমণের নিশ্চয়তা দান করে। কোথাও হয়ত ঝোপঝাড় এতটা ঘন হয়ে গেছে যে তা বিচরণের অযোগ্য।
কোথাও বা খাড়া পিচ্ছিল ঢাল কিংবা স্বাভাবিক রাস্তা হলেও পথের প্রান্তে হয়ত রাস্তা শেষ বা অন্য কোনো রাস্তার সঙ্গে যোগসাজশ নেই। এ ধরনের রাস্তাগুলোতে প্রায়ই সাবধানতামূলক সাইনবোর্ড দেওয়া থাকে। অতিরিক্ত রোমাঞ্চের আশায় এগুলো উপেক্ষা করা মানেই ভয়াবহ বিপদের মুখে পড়ার সম্ভাবনা বাড়ানো। এই উচ্চ-ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলোতে সাপগুলো অধিক সক্রিয় থাকে এবং এদেরকে শনাক্ত করাও বেশ কঠিন হতে পারে।
আরও পড়ুন: রাসেলস ভাইপার সাপ নিয়ে পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা
৫ মাস আগে
বিষধর সাপ রাসেলস ভাইপার চেনার উপায় ও প্রয়োজনীয় সতর্কতা
মাত্র এক দশক আগেও বিলুপ্তপ্রায় প্রজাতি হিসেবে গণ্য হয়েছিল বিষধর সাপ রাসেলস ভাইপার। কিন্তু বিগত কয়েক বছরে বাংলাদেশ ও ভারতসহ দক্ষিণ এশিয়ার বেশ কিছু দেশে আতঙ্কের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে এই সরিসৃপ। প্রথম দিকে বরেন্দ্র অঞ্চলে আনাগোণা থাকলেও বর্তমানে পদ্মা, মেঘনা ও যমুনা নদীর তীরবর্তী অঞ্চলগুলোতে ছড়িয়ে পড়েছে এই সাপের উৎপাত। বরিশাল, পটুয়াখালী, মানিকগঞ্জ, ফরিদপুর, শরীয়তপুর, চাঁদপুর এমনকি ঢাকার উপকণ্ঠের গ্রামগুলোও এখন ব্যাপকভাবে আতঙ্কগ্রস্ত। এমন পরিস্থিতিতে বিপদমুক্ত থাকতে পূর্বসতর্কতা অবলম্বন জরুরি। চলুন, রাসেলস ভাইপার থেকে নিরাপদে থাকার জন্য প্রয়োজনীয় বিষয়গুলো সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
রাসেলস ভাইপার কতটা ভয়ঙ্কর
বিশ্বের সবচেয়ে বিপজ্জনক সাপগুলোর মধ্যে অন্যতম এই রাসেলস ভাইপার। একটি পূর্ণাঙ্গ রাসেলস ভাইপারের কামড়ে প্রায় ১৩০ থেকে ২৫০ মিলিগ্রাম বিষ থাকে। ছোট সাপগুলোর মধ্যে থাকে প্রায় ৮ থেকে ৭৯ মিলিগ্রাম। এছাড়া অন্যান্য যে কোনো বিষাক্ত প্রাণীর তুলনায় এগুলো অনেক বেশি পরিমাণে বিষ নিঃসরণ করতে সক্ষম।
বিভিন্ন প্রজাতিতে এই বিষ মূলত ২ ধরনের হয়ে থাকে; নিউরোটক্সিন ও হেমোটক্সিন।
নিউরোটক্সিন বিষ স্নায়ুতন্ত্রকে আক্রমণ করে এবং এর মাধ্যমে শরীরের প্রধান অঙ্গগুলোকে পর্যায়ক্রমে নিষ্ক্রিয় করে দিতে থাকে। একসঙ্গে অনেক অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের এই অবনতি বড়দের তুলনায় বাচ্চাদের ক্ষেত্রে দ্রুত ঘটে।
কামড়ের জায়গায় ব্যথার সঙ্গে নানা উপসর্গ দেখা দেয়। তারপর আক্রান্ত স্থান থেকে ধীরে ধীরে তা ছড়াতে থাকে সারা দেহে। কামড়ের ২০ মিনিটের মধ্যে মুখ থেকে থুথুর সঙ্গে রক্ত বের হওয়া শুরু করে। রক্তচাপের পাশাপাশি হৃদস্পন্দন কমে যেতে থাকে। চূড়ান্ত অবস্থায় বমি হতে পারে এবং মুখ ফুলে যেতে পারে। কামড়ের ক্ষত চিহ্নের চারপাশের জায়গা বিবর্ণ হয়ে যায় এবং ফুলে ওঠে। ১ থেকে ৩ ঘণ্টার মধ্যে বমির সঙ্গে ডায়রিয়া যুক্ত হয়ে সারা শরীর নিস্তেজ হয়ে যেতে থাকে। সর্বপরি, অবিলম্বে চিকিৎসা না করা হলে এই দংশন ২৪ ঘণ্টার মধ্যে মৃত্যু ঘটাতে পারে।
বিষ হেমোটক্সিক প্রকৃতির হলে রক্ত জমাট বা আভ্যন্তরীণ রক্তপাতের ঘটনা ঘটে। এতে শরীরের প্রধান অঙ্গগুলোতে রক্তের পরিবহন ব্যবস্থা ব্যাহত হওয়ার ফলে অঙ্গগুলো নিষ্ক্রিয় হয়ে যেতে থাকে।
এই সরিসৃপটির সবচেয়ে ভয়ানক বৈশিষ্ট্য হচ্ছে এর গায়ের রঙ ও রেখা, যেগুলো যে কোনো পরিবেশের সঙ্গে একদম মিশে যায়। এতে করে কাছাকাছি কোনো শিকার এর অবস্থান টেরই পায় না। এছাড়াও শিকারকে পরিপূর্ণভাবে ধরাশায়ী করার জন্য এটি দীর্ঘক্ষণ যাবৎ ঘাপটি মেরে পড়ে থাকতে পারে। অতঃপর ইঞ্চি ইঞ্চি করে এগিয়ে সুযোগ বুঝে ক্ষীপ্র গতিতে ঝাপিয়ে পড়ে শিকারের উপর।
শিকার ধরার জন্য এদের সেরা সময় হচ্ছে রাতের বেলা। কিন্তু শারীরিক বৈশিষ্ট্যের কারণে দিনের আলোতেও এদেরকে শনাক্ত করা মুশকিল।
আরও পড়ুন: প্রচণ্ড গরমে সাপের কামড়ের হার বৃদ্ধি পায়
রাসেলস ভাইপার সাপ চেনার উপায়
ভারতীয় উপমহাদেশে চন্দ্রবোড়া বা উলুবোরা নামে পরিচিত এই সাপ ৫ দশমিক ৫ ফুট পর্যন্ত লম্বা হয়। ত্রিভুজাকার আকৃতির চ্যাপ্টা মাথা ঘাড় থেকে বেশ আলাদা। মুখের সামনের অংশটি গোলাকার, ভোঁতা ও উপরের দিকে বাকানো।
নাকের ছিদ্র বড় এবং মাথার শীর্ষবিন্দু স্বতন্ত্রভাবে খণ্ডিত আবরণে আচ্ছাদিত। মাথা আকারে বেশ বড় এবং রঙ হলুদ বা সোনালি হলুদ। আর এর চারপাশে থাকে ১০ থেকে ১৫টি বৃত্তাকার আঁশের বেষ্টনী। দুই জোড়া চোয়ালের ঢালের মধ্যে সামনের জোড়াটি একটু বেশি প্রসারিত। মুখের ভেতর দুটি ম্যাক্সিলারি হাড়ের সঙ্গে এক জোড়া করে মোট ৬টি বিষদাঁত। তবে একদম সামনের জোড়া দাঁতগুলো বেশ প্রকাণ্ড এবং সক্রিয় থাকে। দেহের পেছনে ছোট লেজের দৈর্ঘ্য গোটা দেহের মাত্র ১৪ শতাংশ।
এদের শরীরের রঙের প্যাটার্নে রয়েছে গভীর হলুদ এবং বাদামী মাটির রঙ। শরীরের দৈর্ঘ্য বরাবর ৩ সারি গাঢ় বাদামী দাগ। এই দাগগুলোর প্রত্যেকটির চারপাশে রয়েছে একটি করে কালো বলয়। এর বাইরের সীমানা সাদা বা হলুদ হয়ে প্রান্তের দিকে গাঢ় হয়ে গেছে। মাথায় রয়েছে এক জোড়া গাঢ় ছোপ, যার প্রত্যেকটি একটি করে গোলাপী বা বাদামী রঙের ‘ভি’ বা ‘এক্স’ আকৃতি হয়ে মাথার শীর্ষবিন্দুতে যেয়ে মিলেছে। চোখের পিছনে অন্ধকার স্তরটি সাদা বা গোলাপী প্রান্তরেখায় পরিবেষ্টিত। শরীরের সামনে ও পিছনে সর্বাঙ্গ জুড়ে সাদা, হলুদ বা গোলাপী রঙের সঙ্গে কালো দাগের অনিয়মিত ও বিক্ষিপ্ত নকশা।
রাসেলস ভাইপারের অন্যতম একটি বৈশিষ্ট্য হচ্ছে- এরা যে কোনো স্থানের সঙ্গে অবিকল ভাবে মিশে যেতে পারে। কোনো শত্রুর কাছ থেকে হুমকি পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই এরা একটি ‘এস’ আকৃতি গঠন করে। অতঃপর শরীরের উপরের এক-তৃতীয়াংশকে উত্থাপন করে উচ্চ শব্দে আক্রমণের ঘোষণা দিতে থাকে। এইভাবে শরীরের নির্দিষ্ট অংশকে উপরে তুলে ধরাটা প্রতিটি সাপেরই আক্রমণের একটি সাধারণ ভঙ্গিমা। তবে অন্যান্য সাপের তুলনায় রাসেলস ভাইপার তার শরীরের বেশির ভাগ অংশ মাটি থেকে তুলতে পারে।
আরও পড়ুন: সাপের কামড় খেয়ে সাপ নিয়ে হাসপাতালে কৃষক
৫ মাস আগে
মানিকগঞ্জে সাপের কামড়ে শিশুর মৃত্যু
মানিকগঞ্জের হরিরামপুরে বিষধর সাপের কামড়ে দেড় বছর বয়সী স্বপ্নময় নামে এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে।
সোমবার (১৭ জুন) সকালে উপজেলার গালা ইউনিয়নের কালই (মনিঋষি পাড়ায়) গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
আরও পড়ুন: অভয়নগরে সাপের কামড়ে প্রাণ গেল গৃহবধূর
নিহত স্বপ্নময় কালই গ্রামের ভবতোষের ছেলে।
পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, সে সোমবার বাড়ির পাশে খেলছিল। এ সময় একটি সাপ শিশুটিকে কামড় দেয়। তখন তার চিৎকারে পরিবারের লোকজন ছুটে আসে। পরে মানিকগঞ্জ কর্নেল মালেক মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. আলী হোসেন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
আরও পড়ুন: যশোরে সাপের কামড়ে গৃহবধূর মৃত্যু
৬ মাস আগে
সাপের কামড় খেয়ে সাপ নিয়ে হাসপাতালে কৃষক
রাজশাহীর চারঘাটে কৃষকদের সঙ্গে ধান কাটতে গিয়ে সাপের কামড়ের শিকার হন হেফজুল ইসলাম নামে এক কৃষক।
তবে তিনি ঘাবড়ে না গিয়ে উল্টো সাপটিকে মেরে বস্তাবন্দি করে চিকিৎসা নিতে ছুটে যান রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে।
আরও পড়ুন: প্রচণ্ড গরমে সাপের কামড়ের হার বৃদ্ধি পায়
শুক্রবার (৩১ মে) সকালে উপজেলার পিরোজপুরে এ ঘটনা ঘটে।
আহত হেফজুল ইসলাম বলেন, অন্য কৃষকের সঙ্গে সকালে জমিতে ধান কাটছিলাম আমি। একপর্যায়ে কৃষকেরা জমিতে সাপ দেখতে পেয়ে চিৎকার শুরু করে। এসময় আমি সাপটিকে ধরতে গেলে আমার মুখে কামড় দেয়। পরে আমি সাপটিকে মেরে বস্তাবন্দি করে হাসপাতালে চিকিৎসকের সামনে হাজির হই। এরপর তারা আমার চিকিৎসা শুরু করেন।
অন্যদিকে সাপের কামড়ে আহত হেফজুলকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। তার অবস্থা শঙ্কামুক্ত নয় বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক।
রামেক হাসপাতালের ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের সহকারী রেজিস্ট্রার ডা. ফাহিমা সুলতানা বলেন, সাপের কামড়ে আহত হেফজুল বিপদমুক্ত নয়। তাকে গভীর পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।
আরও পড়ুন: বিরামপুর থেকে তিন কোটি টাকার সাপের বিষ জব্দ
যশোরে সাপের কামড়ে গৃহবধূর মৃত্যু
৬ মাস আগে
নবীনগরে সাপের কামড়ে স্কুলছাত্রীর মৃত্যু
মৃত সোনিয়া ওই এলাকার মজনু খানের মেয়ে। সোনিয়া বিটঘর উচ্চ বিদ্যালয় দশম শ্রেণির ছাত্রী।
আরও পড়ুন: কেশবপুরে সাপের কামড়ে যুবকের মৃত্যু
সোনিয়ার বাবা মজনু মিয়া জানান, তার মেয়ে সোনিয়া রাতে হাতে মেহেদী দিচ্ছিল। এসময় সোফায় বসা অবস্থায় একটি বিষধর সাপ তার বাম পায়ে কামড় দেয়। এরপর সোনিয়া অজ্ঞান হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। পরে তারা সোনিয়াকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে এলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত্যু ঘোষণা করেন।
হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. আরিফুজ্জামান হিমেল মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, সোনিয়াকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে আসেন তার পরিবারের লোকেরা। সোনিয়ার পায়ে সাপের কামড়ের চিহ্ন ছিল। বিষধর সাপের কামড়েই সোনিয়ার মৃত্যু হয়েছে।
আরও পড়ুন: চুয়াডাঙ্গায় সাপের কামড়ে স্কুলছাত্রীর মৃত্যু
কুষ্টিয়ায় সাপের কামড়ে ঘুমন্ত মা-মেয়ের মৃত্যু
১ বছর আগে
কুষ্টিয়ায় সাপের কামড়ে ঘুমন্ত মা-মেয়ের মৃত্যু
কুষ্টিয়ায় ঘুমন্ত অবস্থায় বিষাক্ত সাপের কামড়ে এক নারী ও তার শিশুকন্যার মৃত্যু হয়েছে।
নিহতেরা হলেন- সদর উপজেলার কাঞ্চনপুর ইউনিয়নের ভবানীপুর গ্রামের ইব্রাহীমের স্ত্রী আয়েশা খাতুন (২৫) এবং তার সাত মাস বয়সী মেয়ে নুসরাত জাহান।
কাঞ্চনপুরের ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আনিসুজ্জামান ঝন্টু জানান, বুধবার রাতে প্রতিদিনের মতো নিজেদের শোবার ঘরে আয়েশা তার মেয়েকে নিয়ে ঘুমিয়েছিলেন। এ সময় তাদের দুজনকে বিষাক্ত সাপ কামড় দেয়। কিছু বুঝে ওঠার আগেই শিশুটির মৃত্যু হয়।
আয়েশাকে চিকিৎসার জন্য কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে তারও মৃত্যু হয়।
তিনি আরও বলেন, পরে গ্রামবাসী ইব্রাহিমের ঘরের খাটের নিচ থেকে বিষধর সাপটি উদ্ধার করে।
আরও পড়ুন: ধানখেতে কাজ করার সময় সাপের ছোবলে কিশোরের মৃত্যু
কেশবপুরে সাপের কামড়ে যুবকের মৃত্যু
মাগুরায় সাপের কামড়ে ঘুমন্ত শিশুর মৃত্যু
১ বছর আগে
ধানখেতে কাজ করার সময় সাপের ছোবলে কিশোরের মৃত্যু
মাগুরার মহম্মদপুরে ধানখেতে কাজ করার সময় সাপের ছোবলে মো. আজিম (১৮) নামে এক কিশোরের মৃত্যু হয়েছে। মঙ্গলবার (২২ আগস্ট) দুপুরে মাগুরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।
আজিম উপজেলার নহাটা ইউনিয়নের পানিঘাটা গ্রামের চাঁন মিয়ার ছেলে এবং স্থানীয় গঙ্গারামপুর পি কে মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে এ বছর এসএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন।
আরও পড়ুন: সাপের কামড়ে স্কুলছাত্রীসহ নিহত ২, আহত ১
স্থানীয়রা জানায়, আজিম তার বাবাকে কৃষিকাজে সহযোগিতা করতে মাঠে গিয়েছিলেন। সেখানে কাজ করার সময় সাপ ছোবল দিলে বাড়িতে এসে স্বজনদের বিষয়টি জানান। স্বজনরা তাকে দ্রুত স্থানীয় ওঝার বাড়িতে নিয়ে যান। বাড়িতে এসে ক্রমেই তার অবস্থার অবনতি হলে মাগুরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।
মহম্মদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বোরহানুল ইসলাম জানান, এ ব্যাপারে মহম্মদপুর থানায় অপমৃত্যু মামলা হয়েছে।
আরও পড়ুন: মাগুরায় সাপের কামড়ে ঘুমন্ত শিশুর মৃত্যু
কেশবপুরে সাপের কামড়ে যুবকের মৃত্যু
১ বছর আগে
কেশবপুরে সাপের কামড়ে যুবকের মৃত্যু
যশোরের কেশবপুর উপজেলায় সাপের কামড়ে বাবলু সরদার (৩৪) নামের এক চপ বিক্রেতার মৃত্যু হয়েছে।
শনিবার (১২ আগস্ট) দুপুরে উপজেলার কোমরপোল ঋষিপাড়ার মাঠে কলার মোচা কাটতে গেলে তাকে সাপ কামড় দেয়।
নিহত বাবলু সরদার উপজেলার কোমরপোল গ্রামের মৃত শাহাদাৎ হোসেনের ছেলে। তিনি স্থানীয় বকুলতলা বাজারে কলার মোচার তৈরি চপ বিক্রি করতেন।
এলাকাবাসী জানায়, শনিবার দুপুরের দিকে উপজেলার কোমরপোল ঋষিপাড়ার মাঠের একটি ঘের পার থেকে বাবলু সরদার কলার মোচা কাটতে গিয়েছিলেন। এ সময় তার পায়ে বিষধর সাপ কামড় দিলে শরীরে যন্ত্রণা শুরু হয়। মাঠের পাশের রাস্তায় এসে স্থানীয়দের বিষয়টি বললে তারা তাকে বাড়ি নিয়ে আসেন। পরে পরিবারের লোকজন সাপের বিষ নামাতে তাকে ওঝার কাছে নিয়ে যান। ওঝা দীর্ঘ সময় ঝাঁড়ফুক দিয়ে বিষ নামাতে ব্যর্থ হয়ে হাসপাতালে নেয়ার পরামর্শ দেন।
কেশবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নেওয়ার পর সেখানে তার অবস্থার আরও অবনতি হলে খুলনা নেয়ার পথে তিনি মারা যান।
১ বছর আগে