থার্ড টার্মিনাল
থার্ড টার্মিনালের কাজ শেষ হবে অক্টোবরে, ২০২৫ সালে ফ্লাইট শুরুর আশা
হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনালের নির্মাণকাজ চলতি বছরের অক্টোবরেই শেষ হচ্ছে। আর আগামী বছরের শুরুতে থার্ড টার্মিনাল থেকে ফ্লাইট পরিচালনা শুরু হতে পারে বলে বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) কর্মকর্তারা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
বেবিচক জানায়, তৃতীয় টার্মিনালের নির্মাণকাজ শেষ পর্যায়ে। এ প্রকল্পের সময়সীমা অনুযায়ী আগামী অক্টোবরেই শেষ হবে। অক্টোবরে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে টার্মিনালের দায়িত্ব বুঝে নেবে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ।
জানা যায়, বেবিচক দায়িত্ব বুঝে নেওয়ার পর আগামী বছর থেকে ফ্লাইট শিডিউল ঠিক করা হবে।
গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পরপরই তৃতীয় টার্মিনালের কাজ যথাসময়ে শেষ করা নিয়ে তৈরি হয় এক ধরনের অনিশ্চয়তা। অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের কিছুদিন পর আবার থার্ড টার্মিনালের কাজ স্বাভাবিক গতিতে চলছে।
হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল নির্মাণ প্রকল্প এলাকায় থার্ড টার্মিনাল ভবনের ওপর দৃষ্টিনন্দন নকশার কাজ সবার নজর কাড়ছে। ভেতরে বাইরে ছোট-খাট বিভিন্ন ধরনের ফিনিশিংয়ের কাজ চলছে।
সম্প্রতি বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মো. মঞ্জুর কবীর ভূঁইয়া থার্ড টার্মিনাল পরিদর্শন করে টার্মিনালের কাজের অগ্রগতি, কাজের মান এবং সময়মতো কাজ সম্পন্ন করার বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের নির্দেশ দেন।
বেবিচক চেয়ারম্যান ইউএনবিকে বলেন, থার্ড টার্মিনালের কাজ ইতোমধ্যে ৯৮ শতাংশ সম্পন্ন হয়েছে। সার্বিক কাজের অগ্রগতি নিয়ে সন্তোষজনক। অবশিষ্ট কাজসমূহ দ্রুত সময়ের মধ্যে শেষ করতে সংশ্লিষ্টদের নির্দশনা দিয়েছি।
কবে নাগাদ কাজ শেষ হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, অক্টোবরেই সব কাজ শেষ হবে বলে আশা করছি। এ বিষয়ে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান, প্রকল্প পরিচালকের সঙ্গে একাধিকবার বৈঠক করেছি। টার্মিনাল ভবন বুঝে পাওয়ার পর আমরা ফ্লাইট চালুর প্রস্তুতি নেব।
কনসালটেন্সি ফার্ম নিপ্পন কোইয়ের প্রাথমিক অনুমান অনুযায়ী, টার্মিনালে অপারেশন, রক্ষণাবেক্ষণ এবং নিরাপত্তার জন্য ৬ হাজার দক্ষ কর্মীর প্রয়োজন হবে। নিরাপত্তা ব্যবস্থার জন্য প্রায় ৪ হাজার কর্মীর প্রয়োজন হবে।
আরও পড়ুন: হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের থার্ড টার্মিনাল: ৭ অক্টোবর উদ্বোধনের প্রস্তুতি প্রায় শেষ
বেবিচক কর্মকর্তারা জানান, যেহেতু এত লোকবল অক্টোবরের মধ্যে পাওয়া যাবে না, তাই প্রথম কয়েক মাসে টার্মিনালটি পুরোপুরি চালু নাও হতে পারে। শুরুর কয়েক মাস বেবিচক ও বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স টার্মিনালটি পরিচালনা করবে। আগামী বছরের প্রথম দিকে প্রয়োজনীয় সংখ্যক দক্ষ কর্মী নিয়োগ দেওয়া হবে এবং আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে টার্মিনালটি পুরোপুরি চালু হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
তৃতীয় টার্মিনাল চালু হলে আরও ১ কোটি ২০ লাখ যাত্রীকে সেবা দেওয়া সম্ভব হবে। আর বর্তমানে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে প্রথম ও দ্বিতীয় টার্মিনালে দিনে ৩০টির বেশি উড়োজাহাজ সংস্থার ১২০ থেকে ১৩০টি বিমান উড্ডয়ন ও অবতরণ করে। প্রতিদিন এসব উড়োজাহাজের প্রায় ২০ হাজার যাত্রী বিমানবন্দরের দুটি টার্মিনাল ব্যবহার করেন। এই হিসাবে বছরে প্রায় ৮০ লাখ যাত্রীর সেবা দেওয়ার সুযোগ রয়েছে।
চলতি বছরের জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে উন্নয়নমূলক কাজের অংশ হিসেবে ২০২৩ সালে ৭ অক্টোবর তড়িঘড়ি করে টার্মিনালটির আংশিক উদ্বোধন করেছিলেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তখনই সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, চলতি বছরের অক্টোবরে তৃতীয় টার্মিনাল থেকে ফ্লাইট পরিচালনা করা যাবে।
শাহজালাল বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনালের প্রকল্প পরিচালক এ কে এম মাকসুদুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করলেও তিনি কোনো মন্তব্য করতে চাননি।
তবে প্রকল্প সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা বলেন, ‘আগামী অক্টোবরে তৃতীয় টার্মিনালের ফিজিক্যাল পার্ট শেষ হয়ে যাবে। আর ডিসেম্বর বা ২০২৫ সালের জানুয়ারিতে ফ্লাইট পরিচালনা করা যাবে। শাহজালালের প্রথম ও দ্বিতীয় টার্মিনালের অধিকাংশ কাজ ম্যনুয়ালি হয়। তৃতীয় টার্মিনালে সবকিছু অনলাইনভিত্তিক হবে। এজন্য বেবিচকের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে।’
আরও পড়ুন: ঢাকা বিমানবন্দরের থার্ড টার্মিনালের কাজ শেষ হবে ৫ এপ্রিলের মধ্যে
বেবিচক জানায়, ২০১৭ সালে শাহজালাল বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল নির্মাণ প্রকল্পটি হাতে নেয় সরকার। তবে নির্মাণকাজ শুরু হয় ২০১৯ সালের ২৮ ডিসেম্বর। এতে ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ২১ হাজার ৩৯৮ কোটি টাকা। এর মধ্যে জাপানি সহযোগিতা সংস্থা জাইকা ঋণ হিসেবে দিচ্ছে ১৬ হাজার ১৪১ কোটি টাকা। বাকি টাকা দিচ্ছে বাংলাদেশ সরকার। এই নির্মাণকাজ করছে জাপানের মিতসুবিশি ও ফুজিতা এবং দক্ষিণ কোরিয়ার স্যামসাং।
বেবিচক সূত্র জানায়, বর্তমানে শাহজালাল বিমানবন্দরে দুটি টার্মিনালে জায়গা রয়েছে ১ লাখ বর্গমিটারের কিছু বেশি। তৃতীয় টার্মিনাল চালু হলে এর সঙ্গে যুক্ত হবে আরও ২ লাখ ৩০ হাজার বর্গমিটার স্থান। তিনতলা টার্মিনাল ভবনে থাকছে ১১৫টি চেক-ইন কাউন্টার, ৬৪টি ডিপারচার ও ৬৪টি অ্যারাইভাল ইমিগ্রেশন ডেস্ক। নিরাপত্তা নিশ্চিতে থাকবে ২৭টি ব্যাগেজ স্ক্যানিং মেশিন, ৪০টি স্ক্যানিং মেশিন, ১২টি বোর্ডিং ব্রিজ, ১৬টি ক্যারোসেল ও ১১টি বডি স্ক্যানার।
তৃতীয় টার্মিনালে একসঙ্গে ৩৭টি উড়োজাহাজ পার্ক করা যাবে। রানওয়েতে উড়োজাহাজের অপেক্ষা কমাতে নির্মাণ করা হয়েছে দুটি হাইস্পিড ট্যাক্সিওয়ে। পণ্য আমদানি ও রপ্তানির জন্য নির্মাণ করা হয়েছে দুটি ভবন। একসঙ্গে ১ হাজার ৩৫০টি গাড়ি পার্কিংয়ের জন্য তিনতলা ভবনের নির্মাণকাজ প্রায় শেষ। তৃতীয় টার্মিনালের মোট ২৬টি বোর্ডিং ব্রিজের মধ্যে প্রথম ধাপে চালু হবে ১২টি। বহির্গমনের জন্য মোট ১১৫টি চেক-ইন কাউন্টারের মধ্যে ১৫টি থাকবে সেলফ সার্ভিস চেক-ইন কাউন্টার। ১০টি স্বয়ংক্রিয় পাসপোর্ট কন্ট্রোল কাউন্টারও থাকবে।
তৃতীয় টার্মিনালটি এমনভাবে নির্মাণ করা হয়েছে যাতে যাত্রীদের ভেতরে ঢুকতে ও বের হতে সুবিধা হয়। টার্মিনালটি এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, ভূগর্ভস্থ রেলপথ এবং বিমানবন্দর রেলওয়ে স্টেশনের সঙ্গে একটি টানেলের মাধ্যমে সংযুক্ত হবে। এছাড়া হজযাত্রীরা আশকোনা হজ ক্যাম্প থেকে আরেকটি টানেল দিয়ে তৃতীয় টার্মিনালে যেতে পারবেন।
আরও পড়ুন: থার্ড টার্মিনালের নির্মাণকাজের ৯৭ ভাগ সম্পন্ন: মন্ত্রী
২ মাস আগে
থার্ড টার্মিনালের নির্মাণকাজের ৯৭ ভাগ সম্পন্ন: মন্ত্রী
হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের থার্ড টার্মিনালের নির্মাণকাজের ৯৭ ভাগ সমাপ্ত হয়েছে বলে জানিয়েছেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী মুহাম্মদ ফারুক খান।
বৃহস্পতিবার (৩০ মে) থার্ড টার্মিনালের নির্মাণকাজ পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ কথা জানান তিনি।
ফারুক খান বলেন, ‘এ পর্যন্ত পরিদর্শনে যা দেখলাম সব মিলিয়ে আমি খুবই সন্তুষ্ট। এখন পর্যন্ত টার্মিনাল ভবনের ৯৭ ভাগ কাজ সম্পন্ন হয়েছে, ৩ ভাগ বাকি আছে। এই তিন ভাগের মধ্যে কো-অর্ডিনেশন ও টেস্টিংয়ের মতো গুরুত্বপূর্ণ কাজ রয়ে গেছে।’
মন্ত্রী আরও বলেন, ‘টার্মিনাল ভবনটির কাজ খুব সুন্দর ও দৃষ্টিনন্দন হয়েছে। সিভিল এভিয়েশন এই টার্মিনালকে ভালোভাবে পরিচালনার জন্য কর্মীদের প্রস্তুত করছে বলে আমি আশাবাদী।
এই বিমানবন্দর কবে চালু হতে পারে জানতে চাইলে বিমানমন্ত্রী বলেন, ‘এটা হাইলি টেকনিক্যাল একটা কাজ। এটা কোনোভাবেই পরিকল্পনা করে একদম টাইম মতো বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয় না। তবে আমি আশা করি কর্তৃপক্ষ যথাসময়েই এটি চালু করতে পারবে।’
নতুন টার্মিনালের সুযোগ সুবিধা নিয়ে তিনি বলেন, অন্যান্য বিমানবন্দর থেকে এখানে চেক-ইন কাউন্টার, ইমিগ্রেশন কাউন্টার অনেক বড় করা হয়েছে। এখানে ৫৪টা ইমিগ্রেশন করা হয়েছে। আশা করছি সব বয়সি ও শ্রেণি পেশার লোকজন ভালো সার্ভিস পাবেন।
টার্মিনালের প্রয়োজনীয়তা অনুযায়ী দ্বিতীয় রানওয়ে তৈরি হবে কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমাদের বর্তমান রানওয়েতে আইএলএস (ইন্সট্রুমেন্ট অব ল্যান্ডিং সিস্টেম) সিস্টেম উন্নত করা হচ্ছে। রাডারগুলো উন্নত করা হচ্ছে। তবে, দ্বিতীয় রানওয়ে নিয়ে আমাদের পরিকল্পনা আছে। যেহেতু আশেপাশে অনেক বিল্ডিং হয়ে গেছে, আমরা দেখছি, কীভাবে দ্বিতীয় রানওয়ে চালু করা যায়।’
থার্ড টার্মিনালে লাগেজ হ্যান্ডেলিংয়ের বিষয়ে ফারুক খান বলেন, ‘পৃথিবীর যেকোনো দেশে এটা একটা বড় চ্যালেঞ্জ। আমরা উন্নতি করার চেষ্টা করছি। আমাদের এখানে বর্তমানে প্রথম লাগেজ পেতে এখন ১৫ মিনিট লাগে, শেষেরটি পেতে প্রায় ৪০ মিনিট লাগে। এর উন্নতির জন্য আমরা ইক্যুইপমেন্ট কিনেছি। চেষ্টা করছি আরও দ্রুত দেওয়া যায় কি না।’
গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিংয়ের দায়িত্ব প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, ‘জাপানের সঙ্গে গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিংয়ের জন্য জয়েন্ট ভেঞ্চারের কথা বলা হয়েছে। এখন পর্যন্ত তারা নির্দিষ্টভাবে জানায়নি তাদের কোন প্রতিষ্ঠান যুক্ত হবে। আশা করছি তারা দ্রুতই এটি জানাবে।’
মালয়েশিয়া যাত্রীদের বিমান ভাড়া প্রসঙ্গে ফারুক খান বলেন, ‘যারা মালয়েশিয়ায় শ্রমিক পাঠানোর সঙ্গে জড়িত, তারা এক মাস আগেই জানত যে ৩১ মে শ্রমিক পাঠানোর শেষ তারিখ। এখন বিমান প্রতিদিন মালয়েশিয়ায় তিন থেকে ৪টা করে ফ্লাইট পরিচালনা করছে। আর, গতকাল মালয়েশিয়ার কিছু লোক ঢাকা থেকে মালয়েশিয়ায় এয়ার কম্বোডিয়ার একটা এয়ারক্রাফট দিয়ে একটি চার্টাড ফ্লাইট পরিচালনার পারমিশন চেয়েছে, গতকালকেই আমরা তাদের পারমিশন দিয়ে দিয়েছি। বর্তমানে বিমানের হজ ফ্লাইট চলছে, তবুও আমরা চেষ্টা করেছি সুযোগ দিতে।’
ঢাকা-নিউইয়র্ক ফ্লাইট কবে চালু হতে পারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ঢাকা-নিউইয়র্ক ফ্লাইটের ব্যাপারে এফএএর সঙ্গে আলোচনা চলছে। তারা কী চায়, সেটি এখনো আমাদের কাছে পরিষ্কার নয়।
এ বিষয়ে বিমানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘আমি আগেও মন্ত্রী থাকাকালীন যখন বোয়িংয়ের বিমান কিনেছি, তখনও আমরা বলেছিলাম নিউইয়র্কে আমাদের স্লট দিতে হবে। কিন্তু এটি বাস্তবায়িত হয়নি। আমরা চেষ্টা অব্যাহত রাখছি।’
বিমানবন্দরে পার্কিং চার্জের প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, ‘সিভিল এভিয়েশন নিজেদের টাকা দিয়েই তাদের পরিচালন ব্যয় ও উন্নয়ন কাজ সম্পন্ন করে থাকে। বাংলাদেশের মতো দেশে ৭টি বিমানবন্দর চালু আছে। এর মধ্যে ৩টি আন্তর্জাতিক। এমন না যে অন্যান্য দেশের তুলনায় পার্কিং চার্জ অনেক বেশি। তবুও, আমরা চেষ্টা করব যদি এটি কমানো যায়।
এর আগে মন্ত্রী নতুন এই টার্মিনালের ভবন ঘুরে দেখেন।
এ সময় তার সঙ্গে আরও ছিলেন- বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন সচিব মো. মোকাম্মেল হোসেন, বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মো. মফিদুর রহমানসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
৫ মাস আগে
ঢাকা বিমানবন্দরের থার্ড টার্মিনালের কাজ শেষ হবে ৫ এপ্রিলের মধ্যে
বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ উন্নয়ন প্রকল্প হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের থার্ড টার্মিনালের কাজ চলতি বছরের ৫ এপ্রিলের মধ্যে শতভাগ সম্পন্ন হবে। আশা করা হচ্ছে আগামী অক্টোবর থেকে পুরোদমে এই টার্মিনালের কার্যক্রম শুরু হবে। এটি দেশের বিমান অবকাঠামোর সম্প্রসারণ ও আধুনিকীকরণের একটি গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত।
তৃতীয় টার্মিনালের কাজ শেষ হলে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের কাছে থেকে টার্মিনালের দায়িত্ব বুঝে নেবে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক)। এরপর শুরু হবে পুরোনো টার্মিনাল থেকে নতুন টার্মিনালে স্থানান্তরে অপারেশন রেডিনেন্স অ্যান্ড এয়ারপোর্ট ট্রান্সফার (ওআরএটি) প্রকল্পের কাজ।
আরও পড়ুন: থার্ড টার্মিনালের ৬০ শতাংশ কাজ সম্পন্ন: বিমান প্রতিমন্ত্রী
হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনালের প্রকল্প পরিচালক এ কে এম মাকসুদুল ইসলাম ইউএনবিকে বলেন, তৃতীয় টার্মিনালের সিভিলসহ সব ধরনের কাজ প্রায় শেষ। অল্প কিছু যা বাকী রয়েছে তা নির্ধারিত সময় অর্থাৎ আগামী এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহেই শেষ হবে। এরপর টার্মিনালটি বুঝে নিবে বেবিচক।
তিনি বলেন, সিডিউল অনুযায়ী আগামী ৫ এপ্রিল তৃতীয় টার্মিনালের সব কাজ শেষ হওয়ার সময় নির্ধারিত। ৬ এপ্রিল থেকে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান থেকে টার্মিনালটি বুঝে নেবে বেবিচক। বেবিচকের ব্যবস্থাপনায় আগামী অক্টোবর থেকে টার্মিনালটি পুরোদমে চালু করতে কাজ চলছে। এজন্য অপারেশন রেডিনেন্স অ্যান্ড এয়ারপোর্ট ট্রান্সপার (ওআরএটি) বিষয়ক একটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে। এরই মধ্যে সিস্টেম ইন্টিগ্রেশন ও ক্যালিবেরেশনের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। যা একাধিক যাচাই বাছাইয়ে উত্তীর্ণ হয়েছে।
আরও পড়ুন: হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের থার্ড টার্মিনাল: ৭ অক্টোবর উদ্বোধনের প্রস্তুতি প্রায় শেষ
৮ মাস আগে
থার্ড টার্মিনালের ৬০ শতাংশ কাজ সম্পন্ন: বিমান প্রতিমন্ত্রী
বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী বলেছেন, হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের থার্ড টার্মিনালের কাজ ইতোমধ্যে ৬০ শতাংশ সম্পন্ন হয়েছে।
তিনি বলেন, দৃষ্টিনন্দন টার্মিনাল ভবন এখন দৃশ্যমান। এছাড়া বর্তমানে টার্মিনাল ভবনের অভ্যন্তরীণ সাজসজ্জা এবং বিভিন্ন ধরনের যন্ত্রপাতি ইন্সটলের কাজ চলছে। এ বছরের অক্টোবরেই থার্ড টার্মিনাল উদ্বোধন করা হবে।
মঙ্গলবার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের বর্তমান ১ ও ২ নং টার্মিনালের যাত্রীসেবা ও বিভিন্ন কার্যক্রম এবং থার্ড টার্মিনালের নির্মাণ কাজের অগ্রগতি পরিদর্শন শেষে এক সাংবাদিক সম্মেলনে প্রতিমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
আরও পড়ুন: শিগগিরই নিউইয়র্কে বিমানের ফ্লাইট চালু করা হবে: বিমান প্রতিমন্ত্রী
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা অনুযায়ী যাত্রীসেবা বৃদ্ধি ও নিরাপদ বিমান পরিচালনা নিশ্চিতে বাংলাদেশের সকল বিমানবন্দরে রানওয়ের শক্তি বৃদ্ধিকরণ, নতুন টার্মিনাল ভবন নির্মাণ ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা আধুনিকায়নসহ বিভিন্ন ধরনের উন্নয়ন কাজ চলমান রয়েছে। সত্যিকার অর্থে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের এভিয়েশন সেক্টরে উন্নয়নের নীরব বিপ্লব সাধিত হয়েছে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, বর্তমান টার্মিনালের অবকাঠামগত সীমাবদ্ধতার জন্য যাত্রীদের কাঙ্ক্ষিত মানে সেবা দিতে না পারলেও সেবার মান উন্নয়নে আমাদের সার্বক্ষণিক প্রচেষ্টা রয়েছে। বিমানবন্দরের কোথাও যেন কোন যাত্রীর হয়রানির শিকার হতে না হয় সেজন্য মন্ত্রণালয় এবং বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ প্রতিনিয়ত টার্মিনালের কার্যক্রম মনিটরিং করছে। এছাড়া, থার্ড টার্মিনাল উদ্বোধনের পর অবকাঠামোগত সীমাবদ্ধতা দূর হওয়ায় যাত্রীরা আন্তর্জাতিক মানের সেবা পাবেন।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী বলেন, হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে রানওয়ের ইন্সট্রুমেন্টাল ল্যান্ডিং সিস্টেমকে (আইএলএস) ক্যাটাগরি-১ থেকে ক্যাটাগরি-২ এ উন্নীত করণের কাজ চলমান থাকায়, বর্তমানে রাতে পাঁচ ঘন্টা এই বিমানবন্দরে বিমান চলাচল বন্ধ থাকছে। তবে এই কারণে যাতে যাত্রীদের সমস্যা না হয় সেজন্য আমরা সচেষ্ট রয়েছি।
আইএলএস সিস্টেম আপডেটের কাজ সম্পন্ন হওয়ার পর ঘন কুয়াশার মধ্যে বিমানবন্দরে উড়োজাহাজ অবতরণে বর্তমানে যে সীমাবদ্ধতা রয়েছে তা অনেকাংশেই দূর হবে বলেও জানান তিনি।
তিনি বলেন, বিমানবন্দরের ই-গেইটগুলো চালু আছে। তবে এর সঙ্গে বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কিত থাকায়, এগুলো শতভাগ চালু করতে আরও কিছুটা সময় লাগবে। অন-অ্যারাইভাল ভিসার বিষয়ে আমরা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে কথা বলেছি। ইতোমধ্যেই তারা এ বিষয়ে কিছু ইতিবাচক পদক্ষেপ নিয়েছেন।
উল্লেখ্য, এর আগে সকালে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ১ ও ২ নম্বর টার্মিনাল পরিদর্শন করেন প্রতিমন্ত্রী।
এ সময় তিনি বিমানবন্দরে ইমিগ্রেশন, কাস্টমস হল, চেক-ইন কাউন্টার, ব্যাগেজ এরিয়া, প্রবাসী কল্যাণ ডেস্ক ও গ্রিনচ্যানেল পরিদর্শন করেন।
বিমানবন্দর পরিদর্শনকালে বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মোকাম্মেল হোসেন, বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল এম মুফিদুর রহমান, হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন কামরুল ইসলাম সহ মন্ত্রণালয়, বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ ও বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: ৩১ মে হজ ফ্লাইট শুরুর প্রস্তুতি আছে: বিমান প্রতিমন্ত্রী
অসুস্থ সেই পাইলটের চিকিৎসায় সর্বাত্মক সহযোগিতার আশ্বাস বিমান প্রতিমন্ত্রীর
১ বছর আগে