বিডি বাবু
টিপু-প্রীতি হত্যা: বিডি বাবুকে জামিন দেননি হাইকোর্ট
রাজধানীর শাজাহানপুরে এলোপাতাড়ি গুলিতে মতিঝিল থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম টিপু ও কলেজছাত্রী সামিয়া আফরান প্রীতি হত্যা মামলায় আসামি তৌফিক হাসান বাবু ওরফে বিডি বাবুকে জামিন দেননি হাইকোর্ট।
মঙ্গলবার (৭ ফেব্রুয়ারি) বিচারপতি মো. কামরুল হোসেন মোল্লা ও বিচারপতি খোন্দকার দিলীরুজ্জামানের হাইকোর্ট বেঞ্চ বাবুর জামিন আবেদন কার্যতালিকা থেকে বাদ দেন।
আরও পড়ুন: স্বাস্থ্যের ডিজিকে সেবা নিশ্চিত করতে বললেন হাইকোর্ট
শুনানিতে আসামি পক্ষে আইনজীবী ছিলেন রুহুল কুদ্দুস কাজল। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এমরান আহমদ ভূঁইয়া।
ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এমরান আহমদ ভূঁইয়া বলেন, আসামি তৌফিক হাসান ওরফে বাবু ওরফে বিডি বাবুর দেখানো মতে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়।
সুতরাং সে জামিন পেতে পারে না। আর মামলাটি এখনও তদন্তাধীন। আদালত তাকে জামিন না দিয়ে আবেদন কার্যতালিকা থেকে বাদ দিয়ে দেন।
গত বছরের ২৪ মার্চ রাত পৌনে ১০টার দিকে মতিঝিল এজিবি কলোনি কাঁচাবাজার সংলগ্ন রেস্টুরেন্ট থেকে সঙ্গীদের নিয়ে মাইক্রোবাসে বাসায় ফেরার পথে শাজাহানপুর আমতলা ইসলামী ব্যাংক হাসপাতালের সামনে দুর্বৃত্তদের গুলিতে নিহত হন জাহিদুল ইসলাম টিপু।
এসময় গাড়ির পাশে রিকশায় থাকা কলেজছাত্রী সামিয়া আফরান প্রীতি গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান।
গুলিবিদ্ধ হন টিপুর গাড়িচালক মুন্নাও।
এ ঘটনায় টিপুর স্ত্রী ফারজানা ইসলাম ডলি মামলা দায়ের করেন। মামলায় অজ্ঞাতনামাদের আসামি করা হয়। পরে বিভিন্ন সময় আসামিদের গ্রেপ্তার করা হয়।
টিপু ও প্রীতি হত্যার ঘটনায় গ্রেপ্তার শুটার মাসুম মোহাম্মদ ওরফে আকাশের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে মূল পরিকল্পনাকারী ও সমন্বয়কারী হিসেবে মুসার নাম আসে।
পরে জানা যায়, মুসা ঘটনার আগেই গত বছরের ১২ মার্চ দেশ ছেড়ে সংযুক্ত আরব আমিরাত চলে যান।
পুলিশ সদর দপ্তর ৮ এপ্রিল মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে ইন্টারপোলের মাধ্যমে যোগাযোগ শুরু করে।
আরও পড়ুন: রাজধানীর ফ্লাইওভারগুলো থেকে ২ সপ্তাহের মধ্যে দেয়াল লিখন ও পোস্টার অপসারণের নির্দেশ হাইকোর্টের
৮ মে জানা যায়, মুসা দুবাই থেকে ওমানে প্রবেশ করেছেন। এরপর ইন্টারপোলের ওমান পুলিশ এনসিবির সহযোগিতায় গত ১২ মে মুসাকে গ্রেপ্তার করে।
পরে গত ৯ জুন বাংলাদেশ পুলিশের একটি টিম ওমানে গিয়ে মুসাকে দেশে ফিরিয়ে আনে।
১০ জুন মুসার ছয়দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।
ইন্টারপোলের মাধ্যমে মুসাকে দেশে ফেরানোর পর একাধিক দফায় হেফাজতে নিয়ে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। এরপর আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও দেন মুসা। কিলিং মিশনে কার কী ভূমিকা ছিল সেটি তার বক্তব্যে উঠে আসে।
মুসার তথ্য যাচাই করতে বিভিন্ন সময় আরও কয়েকজনকে ডেকে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে ডিবি। এর মধ্যে টিপু হত্যা পরিকল্পনায় টিটু, রবিন ও সোহেল সম্পৃক্ততার প্রমাণ মিলে।
চারজনের মধ্যে টিটু সবচেয়ে দুর্ধর্ষ। আসামিদের সঙ্গে অপরাধ জগতের যোগসূত্র দীর্ঘদিনের। যুবলীগ নেতা রিয়াজুল হক খান মিল্কির সঙ্গে এক সময় তার ঘনিষ্ঠতা ছিল।
নিহত টিপু সরকারি নানা দপ্তরের ঠিকাদারি করতেন। মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল ও কলেজের পরিচালনা পর্ষদের সদস্য ছিলেন।
ওমর ফারুক যে ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন, সেই এলাকায় একটি রেস্তোরাঁর মালিক ছিলেন টিপু, যেখানে তিনি নিয়মিত বসতেন।
গত বছরের ১৬ আগস্ট দুপুরে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) ডিবি প্রধান হারুন অর রশীদ সংবাদ সম্মেলনে মোটরসাইকেল চালক শামীম হোসাইন ওরফে মোল্লা শামীম (৩৫), তৌফিক হাসান ওরফে বাবু (৩৪), সুমন হোসেন (৩৫), এহতেশাম উদ্দিন চৌধুরী অপু (৩৭) ও শরিফুল ইসলাম হৃদয়কে (২৭) গ্রেপ্তারের কথা জানান।
এরপর গত বছরের ২৮ নভেম্বর মহানগর দায়রা জজ আদালত বাবুর জামিন নামঞ্জুর করেন। পরে তিনি হাইকোর্টে জামিন চেয়ে আবেদন করেন।
আরও পড়ুন: বায়ু দূষণ থেকে মানুষকে বাঁচান: পরিবেশ অধিদপ্তরকে হাইকোর্ট
১ বছর আগে