সন্ত্রাসী
খুলনায় ৪৮ ঘণ্টায় ৩ খুন, পুলিশের দাবি ‘টার্গেট কিলিং’
খুলনায় গত শুক্রবার রাত থেকে পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টায় তিনজন খুন এবং একজন গুলিবিদ্ধ হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। হত্যাকাণ্ড যারা ঘটিয়েছেন তারা চিহ্নিত সন্ত্রাসী বলে দাবি উঠলেও ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে যাচ্ছেন তারা।
এসব হত্যাকাণ্ডকে ‘টার্গেট কিলিং’ বলে অভিহিত করেছে পুলিশ। তবে এসব হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত কেউ গ্রেপ্তার না হওয়ায় এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। নিজেদের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত হয়ে পড়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
পুলিশসহ স্থানীয় একাধিক সূত্রে জানা গেছে, গত শুক্রবার (১ আগস্ট) রাতে নিজ বাড়িতে দুর্বৃত্তের ছুরিকাঘাতে খুন হন সোনাডাঙ্গা থানাধীন সবুজবাগ এলাকার মনোয়ার হোসেন টগর নামের এক যুবক। দুর্বৃত্তরা ওই রাতে টগরের বাড়ির দরজার কড়া নেড়ে তার সঙ্গে ৫ মিনিট ধরে কথোপকথনের একপর্যায়ে বুকে ছুরিকাঘাত করে তাকে হত্যা করে।
পরে বাড়ির আশপাশের সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে আসামিদের শনাক্ত করতে পারলেও তাদের গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। এ ঘটনায় টগরের বাবা জামাল হাওলাদার সাত আসামির নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরও চার-পাঁচজনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করেন।
পুলিশ ও সবুজবাগ এলাকার স্থানীয় কয়েকজন ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, টগর স্থানীয় কয়েকজন সন্ত্রাসী ও মাদক কারবারির সঙ্গে চলাফেরা করতেন। পরিবারের পক্ষ থেকে সন্ত্রাসী কার্যকালাপ থেকে দুরে থাকার জন্য তাকে বারবার বলা হলেও সে কর্ণপাত করেননি।
ঘটনার দিন রাতে তিনটি মোটরসাইকেলযোগে সাতজন ব্যক্তি তাদের বাড়িতে প্রবেশ করেন। তারা সবাই টগরের পরিচিত বলে জানা গেছে।
আরও পড়ুন: খুলনায় ঘের ব্যবসায়ীকে গলাকেটে হত্যা
স্থানীয় সূত্রে আরও জানা যায়, টগরের কাছে ওই সন্ত্রাসীরা টাকা পেত। সেই টাকা পরিশোধের জন্য সন্ত্রাসী একটি গ্রুপ তাকে প্রায়ই চাপ দিত। সেই টাকা পরিশোধ না করায় টগরকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়।
সোনাডাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম নিহত টগরের স্ত্রীর বরাত দিয়ে বলেন, টগর আগে খুলনার শীর্ষ সন্ত্রাসী গ্রেনেড বাবুর ‘বি’ কোম্পানির সদস্য ছিলেন। পরে তিনি পলাশ-কালা লাভলুর গ্রুপে যোগ দেন। মাদক কারবারের টাকা নিয়ে সন্ত্রাসীরা তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে। হত্যাকাণ্ডে অংশ নেওয়া দুর্বৃত্তরা নিজেদের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন বন্ধ রাখায় তাদের অবস্থান শনাক্ত এবং গ্রেপ্তার করা সম্ভব হচ্ছে না।
এদিকে সেদিনই শেষ রাতের দিকে দিঘলিয়া উপজেলার বারাকপুর গ্রামে খুন হন ভ্যানচালক আলামিন সিকদার।
ঘটনা প্রসঙ্গে থানার ওসি এইচ এম শাহীন বলেন, স্ত্রী রিপা বেগমের দ্বিতীয় স্বামী ছিলেন আলামিন সিকদার। প্রথম স্বামী আসাদুলের সঙ্গে ছাড়াছাড়ি হওয়ার কারণে আলামিন রিপাকে বিয়ে করেন। আর এর জেরে ভোরে ঘর থেকে ডেকে নিয়ে হত্যা করা হয় আলামিনকে।
নিহতের ভাই ফারুক সিকদার এ ঘটনায় আসাদুলের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতপরিচয় আরও দুই-তিনজনের বিরুদ্ধে থানায় হত্যা মামলা করেন। ওসি জানান, আসাদুলকে গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।
অন্যদিকে, রবিবার (৩ আগস্ট) রাত পৌনে ৮ টার দিকে নগরীর ২ নম্বর কাস্টমঘাট এলাকার একটি সেলুনের সামনে অবস্থান নেওয়া যুবক সোহেলকে লক্ষ্য করে গুলি করে সন্ত্রাসীরা। মোটরসাইকেলযোগে আসা সন্ত্রাসীদের মাথায় হেলমেট এবং মুখ ঢাকা ছিল। সন্ত্রাসীদের ছোড়া একটি গুলি সোহেলের পেটে বিদ্ধ হয়। তিনি বর্তমানে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
এ প্রসঙ্গে খুলনা উপ-পুলিশ কমিশনার (দক্ষিণ) মো: আবু তারেক বলেন, ‘এ ঘটনায় থানায় এখন পর্যন্ত কোনো মামলা হয়নি। আমরা বিভিন্নস্থান থেকে বিভিন্ন ধরনের তথ্য পাচ্ছি। সেগুলো যাচাই-বাছাই করে আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চালানো হচ্ছে। রাতে শহরের নিরাপত্তার জন্য বিভিন্ন স্থানে টহল বাড়ানো হয়েছে। স্পর্শকাতর স্থানে চেকপোষ্ট বসানো হয়েছে। আমাদের অভিযানের নেতৃত্ব দিচ্ছেন কেএমপি পুলিশ কমিশনার জুলফিকার আলী হায়দার।’
একই রাতে নগরীর মহেশ্বরপাশা উত্তর বণিকপাড়া এলাকার খানাবাড়ির সামনে গলা কেটে হত্যা করা হয় ঘের ব্যবসায়ী আলামিনকে। ঘটনার ১২ ঘণ্টার বেশি সময় অতিবাহিত হলেও এ ঘটনায়ও পুলিশ এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি।
দৌলতপুর থানার ওসি মীর আতাহার আলী বলেন, সোমবার (৪ আগস্ট) সকালে নিহতের ভাই আওলাদ হোসেন বাদী হয়ে অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেছেন।
তিনি জানান, ঘটনাস্থলে আশপাশের সিসি ক্যামেরাগুলো নষ্ট থাকায় খুনিদের শনাক্ত করা সম্ভব হচ্ছে না। ঘটনার রাতেই আসামিদের গ্রেপ্তারের জন্য পুলিশ অভিযান চালিয়েছে।
আরও পড়ুন: খুলনায় ভ্যানচালককে কুপিয়ে হত্যা
এদিকে গত কয়েকমাস ধরে খুন, রাহাজানিসহ সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড বৃদ্ধি পাওয়ায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন খুলনা নাগরিক সমাজের সদস্য সচিব আ্যাডভোকেট বাবুল হাওলাদার।
তিনি বলেন, ‘গত বছর রাজনৈতিক পট পরিবর্তন হওয়ার পর অনেক চিহ্নিত সন্ত্রাসী জেল থেকে বেরিয়ে গেছে। লুট হওয়া অস্ত্রও উদ্ধার হয়নি। তাদের গ্রেপ্তার এবং অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার করতে হবে। এ ছাড়া রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর পুলিশ প্রশাসনের কাঠামো ভেঙে পড়েছে। বর্তমান অর্ন্তবর্তী সরকার তাদেরকে কাউন্সিলের মাধ্যমে মনোবল ফিরিয়ে আনতে ব্যর্থ হয়েছে। পুলিশের কার্যক্রম যেন দায়সারা। সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড রুখতে পুলিশকেই দায়িত্ব নিতে হবে।’
সার্বিক বিষয়ে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের (কেএমপি) সহকারী পুলিশ কমিশনার (মিডিয়া) খন্দকার হোসেন আহম্মদ বলেন, ‘এই হত্যাকাণ্ডগুলো টার্গেট কিলিং। পুলিশের একার পক্ষে এসব নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয়। বিভিন্ন সময় খুনিদের গ্রেপ্তার করা হয়, কিন্তু আদালতের মাধ্যমে তাদের আবারও জামিন হয়ে যায়।’
১২১ দিন আগে
মেক্সিকোয় ১০ ‘সন্ত্রাসী’র প্রত্যেককে ১৪১ বছরের কারাদণ্ড
মেক্সিকোর পশ্চিমাঞ্চলের জালিস্কো রাজ্যের একটি খামারে মাদকচক্রের সদস্য নিয়োগসহ হত্যা ও গুম করার সঙ্গে জড়িত থাকার দায়ে ১০ ব্যক্তিকে ১৪১ বছর ৩ মাস করে কারাদণ্ড দিয়েছে দেশটির একটি আদালত।
স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (৮ জুলাই) এ রায় ঘোষণা করে আদালত। তার আগের দিন (সোমবার) তিন ব্যক্তিকে গুম ও হত্যার অভিযোগে ওই ১০ জনকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়।
আসামিদের প্রত্যেককে ১৪১ বছর ৩ মাস করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারেগুলোকে ১৩ লাখ পেসো (প্রায় ৬৫ হাজার ডলার) ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় প্রসিকিউটরেরর কার্যালয়।
চলতি বছরের শুরুর দিকে ‘ইসাগুইর’ নামক ওই প্রতিষ্ঠানটির খোঁজ মেলে, যেখানে ২০২১ সাল থেকে সদস্য সংগ্রহ ও প্রশিক্ষণ চালিয়ে আসছিল জালিস্কো নিউ জেনারেশন কার্টেল (সিজেএনজি)। এ ঘটনায় পুরো অঞ্চলে ব্যাপক আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসে ওই স্থানে প্রথম অভিযান চালিয়ে ওই ১০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। শুরুতে সেটি যে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের জন্য সদস্য সংগ্রহ ও তাদের প্রশিক্ষণকেন্দ্র, তা অজানা ছিল। তবে গ্রেপ্তারদের জেরা ও আরও তদন্তের পর বেরিয়ে আসে থলের বেড়াল।
আরও পড়ুন: পোষা সিংহ দেওয়াল টপকে রাস্তায়, পাকিস্তানে আহত ৩
এ ঘটনায় আরও পাঁচ আসামির বিচার এখনও শেষ হয়নি। তাদের মধ্যে রয়েছেন তিন পৌর পুলিশ কর্মকর্তা এবং একজন সিজেএনজি সদস্য যিনি নতুন সদস্য সংগ্রহ করতেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এ ছাড়া রয়েছেন তেউচিতলান শহরের মেয়র হোসে মুরগিয়া সান্তিয়াগো। তার প্রসাশনিক অঞ্চলেই ওই প্রতিষ্ঠানটি অবস্থিত।
মেক্সিকোর অ্যাটর্নি জেনারেল আলেহান্দ্রো গের্তস মানেরোর এক ঘোষণার কয়েক দিনের মাথায় মুরগিয়া সান্তিয়াগোকে গ্রেপ্তার করা হয়। গের্তস মানেরো জানান, ২০২১ সাল থেকেই তেউচিতলান কর্তৃপক্ষকে খামারটির বিষয়ে সতর্ক করেছিল জালিস্কো রাজ্যের মানবাধিকার কমিশন। তবে সেই সতর্কতা দীর্ঘদিন ধরে উপেক্ষা করা হয়।
এ ঘটনা নিয়ে দেশজুড়ে তুমুল বিতর্ক শুরু হয়। এরই মধ্যে চলতি বছরের ৫ মার্চ ওই প্রতিষ্ঠানে প্রচুর মানুষের পোড়া হাড়, পোশাক ও জুতার খোঁজ পাওয়ার তথ্য জানায় গেরেরোস বুসকাদোরেস দে জালিস্কো। এই দলটি নিখোঁজ ব্যক্তিদের খোঁজ করে থাকে। তাদের দেওয়া তথ্য জানাজানি হলে বিতর্ক তুঙ্গে ওঠে।
এ ঘটনা মেক্সিকোর ভয়াবহ সহিংসতা, মাদকচক্রের দাপট এবং দেশটির ১ লাখ ৩০ হাজারের বেশি নিখোঁজ ব্যক্তির অনুসন্ধানে চলমান দুর্দশার চিত্রকে আরও একবার সামনে নিয়ে আসে।
আরও পড়ুন: জাপানি দ্বীপপুঞ্জে দুই সপ্তাহে ৯ শতাধিক ভূমিকম্প
ওই প্রতিবেদন প্রকাশের পর জানা যায়, প্রথম দফার অভিযানের পর খামারের তদন্ত কয়েক মাস স্থগিত রেখেছিলেন রাজ্য প্রসিকিউটররা। পরে জাতীয় নিরাপত্তা বাহিনীর হস্তক্ষেপে ওই ১০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। ওই অভিযানে খামার থেকে একটি লাশ এবং পরবর্তীতে দুজনকে উদ্ধার করা হয়।
এরপর রাজ্য কর্তৃপক্ষের গাফিলতি ও অবহেলার কারণে মামলার দায়িত্ব নেয় কেন্দ্রীয় অ্যাটর্নি জেনারেলের দপ্তর। তবে এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে শুরু হওয়া সমালোচনা থামেনি।
চলতি বছরের ওই জায়গাটিতে কোনো সমাধি স্থাপনা নেই বলে দাবি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল গের্তস মানেরো। তার এই বক্তব্যের পর আরও ক্ষোভ ছড়ায়। গেরেরোস বুসকাদোরেস দে জালিস্কো জানায়, তারা ওই খামার থেকে অন্তত ১৭টি মানুষের পোড়া হাড়ের অংশ উদ্ধার করেছে, যেগুলো এখন ফরেনসিক বিশেষজ্ঞদের হেফাজতে রয়েছে।
১৪৮ দিন আগে
কুষ্টিয়ায় ‘টর্চার সেলের’ সন্ধান, অস্ত্র-মাদকসহ ৫ ‘সন্ত্রাসী’ আটক
কুষ্টিয়ার একটি বাড়ি থেকে পাঁচ ব্যক্তিকে আটক করেছে সেনাবাহিনীর নেতৃত্বে যৌথ বাহিনীর একটি দল। তারা সবাই সংঘবদ্ধ সন্ত্রাসী চক্রের সদস্য বলে দাবি করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৪ জুন) দিবাগত গভীর রাতে সদর উপজেলার আইলচারা বাজার-সংলগ্ন একটি তিনতলা বাড়িতে অভিযান চালিয়ে একটি বিদেশি পিস্তল, দুই রাউন্ড গুলি, বিপুল পরিমাণ ইয়াবা ও ফেনসিডিল জব্দ করে দলটি।
স্থানীয়দের অভিযোগ, আটকরা দীর্ঘদিন ধরে ওই ভবনটি অপরাধের ঘাঁটি হিসেবে ব্যবহার করে আসছিলেন। তারা বাড়িটিকে একটি টর্চার সেল বা নির্যাতনকেন্দ্রে রূপান্তর করেছিল। সেখানে অপহরণ করে ধরে আনা ব্যক্তিদের ওপর নির্যাতন চালানো হতো। এরপর অপহৃতদের পরিবার থেকে আদায় করা হতো মোটা অঙ্কের মুক্তিপণ।
আটকরা হলেন কুষ্টিয়া সদর উপজেলার বাগডাঙ্গা এলাকার বাসিন্দা ইমরান খান মানিক, বড় আইলচারা এলাকার বাসিন্দা রনি, মিরপুর থানার পোড়াদহ ইউনিয়নের দক্ষিণ কাটদহ এলাকার বাসিন্দা সজীব এবং একই ইউনিয়নের চিথলিয়া গ্রামের রাব্বি ও শাকিল।
আরও পড়ুন: ফরিদপুরে যৌথ বাহিনীর অভিযানে ‘সন্ত্রাসী’ তূর্য গ্রেপ্তার
স্থানীয়দের দাবি, মানিকের নেতৃত্বে এই চক্রটি এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে ভয় ও ত্রাসের পরিবেশ তৈরি করে রেখেছিল। চাঁদাবাজি, মাদক ব্যবসা ও সন্ত্রাস ছিল তাদের নিত্যদিনের কাজ।
তবে যৌথ অভিযানের খবর ছড়িয়ে পড়লে এলাকাবাসীর মধ্যে স্বস্তি ফিরে আসে এবং অনেকে বাইরে এসে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করে কুষ্টিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘আটক ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে অস্ত্র, মাদক ও অপহরণ সংক্রান্ত ধারায় একাধিক মামলার প্রস্তুতি চলছে। এই চক্রের অন্যান্য সদস্যদেরও শনাক্ত করে দ্রুত গ্রেপ্তার করা হবে।’
১৬৩ দিন আগে
মধ্যরাতে খুলনায় যৌথবাহিনী-সন্ত্রাসী গোলাগুলি, আটক ১১, অস্ত্র উদ্ধার
খুলনার সোনাডাঙ্গায় যৌথবাহিনীর সঙ্গে সন্ত্রাসীদের গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। প্রায় তিন ঘণ্টা ধরে চলা গোলাগুলির পর ১১ জনকে আটক করা হয়েছে। এছাড়া উদ্ধার করা হয়েছে অস্ত্র ও গুলি।
শনিবার (২৯ মার্চ) দিবাগত রাত ১২টার পর সোনাডাঙ্গা থানার আরামবাগ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছেন খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের সোনাডাঙ্গা জোনের সহকারী কমিশনার (এসি) আজম খান।
গোলাগুলিতে তিন পুলিশ সদস্য, নৌবাহিনীর একজন সদস্য এবং চার সন্ত্রাসী আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন তিনি।
এসি আজম খান জানান, আরামবাগ মসজিদের অপর পাশে একটি বিল্ডিংয়ে কালা লাভলু সন্ত্রাসী বাহিনীর সদস্যরা গোপন বৈঠক করছে—গোপন সূত্রের মাধ্যমে খবর পেয়ে সোনাডাঙ্গা থানা পুলিশের সদস্যরা সেখানে অভিযান চালান। এ সময় পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে তাদের লক্ষ্য করে কয়েক রাউন্ড গুলি ছোড়ে সন্ত্রাসীরা। সন্ত্রাসীদের গুলিতে এক পুলিশ সদস্য আহতও হন।
আরও পড়ুন: ঝুট ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে বিএনপির দুই পক্ষের গোলাগুলি, আহত ৮
পরবর্তীতে নৌবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছান। যৌথবাহিনীর সঙ্গে সন্ত্রাসীদের গোলাগুলি চলার একপর্যায়ে রাত সাড়ে তিনটার দিকে অভিযান শেষ হয়। এ সময় ১১ জন সন্ত্রাসীকে আটক করা হয়। এছাড়া তাদের কাছ থেকে তিনটি পিস্তল, একটি একনলা শটগান, একটি কাটা বন্দুক, একটি চাইনিজ কুড়াল, কয়েক রাউন্ড গুলি ও সাতটি মোটরসাইকেল জব্দ করা হয় বলে জানান তিনি।
পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, আটক সন্ত্রাসীদের মধ্যে চারজন গুলিবিদ্ধ ছিল। তাদের খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এছাড়া ৩ জন পুলিশ সদস্য ও নৌবাহিনীর একজন সদস্যও গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। আহত পুলিশ সদস্যদের পুলিশ হাসপাতালে এবং নৌবাহিনীর সদস্যকে নেভি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
আটক সন্ত্রাসীরা হলেন— শেখ পলাশ, কালা লাভলু, আরিফুল, ফজলে রাব্বি, শরীফ, ইমরানুজজান, রিপন, ইমরান, সৈকত রহমান, সহিদুল ইসলাম ও গোলাম রব্বানী।
২৪৯ দিন আগে
চট্টগ্রামে সন্ত্রাসী হামলায় আ.লীগ নেতা নিহত
চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ায় সন্ত্রাসী হামলায় নুরুল ইসলাম নামে এক আওয়ামী লীগ নেতা নিহত হওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। বুধবার (২৬ মার্চ) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন তিনি।
নুরুল ইসলাম তালুকদার উপজেলার সরফভাটা ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ড মীরেরখীল গ্রামের ইন্নাল আমিন তালুকদারের ছেলে ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি ছিলেন।
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান শেখ ফরিদ উদ্দিন চৌধুরী বলেন, ‘মঙ্গলবার বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে তিনি সরফভাটা মীরেরখীল বাজারের নিজ দোকানে ছিলেন। হঠাৎ একদল সন্ত্রাসী তার ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। তাকে দোকান থেকে বের করে প্রকাশ্যে বেধড়ক মারধর করে ও কুপিয়ে যখম করে চলে যায়। প্রায় আধাঘণ্টা সড়কে পড়ে থাকার পর স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও পরে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়েছে। এক সপ্তাহ আগে সন্ত্রাসীরা তার কাছ থেকে দুই লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেছিল বলে শুনেছি।’
আরও পড়ুন: মাদারীপুরে শ্রমিক দলের দুপক্ষের সংঘর্ষ, নিহত ১
দক্ষিণ রাঙ্গুনিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এটিএম শিফাতুল মাজদার বলেন, ‘ঘটনার খবর পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। এই ঘটনায় জড়িতদের আইনের আওতায় আনতে অভিযান চালানো হচ্ছে।’
২৫৩ দিন আগে
যায়যায়দিন দখলমুক্ত ও ডিক্লারেশন ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি
সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের দিয়ে দৈনিক যায়যায়দিন পত্রিকার তেজগাঁও শিল্পাঞ্চলের প্রধান কার্যালয় দখল ও ঠুনকো অজুহাতে পত্রিকার ডিক্লারেশন বাতিলের অভিযোগ তুলেছেন যায়যায়দিন কর্তৃপক্ষ।
বুধবার (১২ মার্চ) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক কাজী রুকুনউদ্দীন আহমেদ এ অভিযোগ তুলেন। তিনি অবিলম্বে যায়যায়দিন অবৈধ দখলমুক্ত এবং পত্রিকার ডিক্লারেশন ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি জানান।
তিনি বলেন, ‘প্রবীণ সাংবাদিক শফিক রেহমানকে সামনে রেখে একটি চক্র সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের দিয়ে গত ১৫ ডিসেম্বর দৈনিক যায়যায়দিনের প্রধান কার্যালয় দখল করে। তারা সেখান থেকে অবৈধভাবে দৈনিক যায়যায়দিনের মূল লোগোর সঙ্গে হুবহু মিল রেখে ‘দৈনিক যায়যায়দিন প্রতিদিন’ নামের একটি পত্রিকা প্রকাশ করছে; যা আইনগতভাবে অবৈধ।’
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ‘২০০৭ সালে আর্থিক সংকটে পড়ে শফিক রেহমান দৈনিক যায়যায়দিন পাবলিকেসন্স-এর শেয়ার এইচআরসি গ্রুপের চেয়ারম্যান সাঈদ হোসেন চৌধুরীর কাছে বিক্রি করেন। ২০০৭ সালের ২৩ মার্চ ফরম-১১৭ এর মাধ্যমে শফিক রেহমান, তার স্ত্রী তালেয়া রহমান এবং ছেলে সুমিত রহমান তাদের যায়যায়দিন পাবলিকেসন্সের সব শেয়ার সাঈদ হোসেন চৌধুরী ও আবুল হাসান মো. আল ফারুক বরবার হস্তান্তর করেন। এর দুইদিন পর অর্থাৎ ২৫ মার্চ ২০০৭ তারিখ শফিক রেহমান ও তালেয়া রেহমান ফরম-১১৭ এর মাধ্যমে তাদের যায়যায়দিন প্রিন্টার্সের শেয়ার এইচআরসি মিডিয়া লিমিটেড এবং এইচআরসি বাংলাদেশ লিমিটেডের নামে হস্তান্তর করেন।’
শেয়ার হস্তান্তরসহ সব প্রক্রিয়া শেষে শফিক রেহমান ২০০৭ সালের ১৭ জুলাই অতিরিক্ত ঢাকা জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে উপস্থিত হয়ে যায়যায়দিনের প্রকাশকের পদ থেকে পদত্যাগ করেন।
পরবর্তীতে ২০০৮ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি ঢাকার অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে উপস্থিত হয়ে আবুল হাসান মো. আল-ফারুক যায়যায়দিনের প্রকাশকের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। তিনি ২০১১ সালের ৯ জুন পত্রিকার প্রকাশকের পদত্যাগের ঘোষণাপত্রের মাধ্যমে প্রকাশকের দায়িত্ব থেকে পদত্যাগ করেন। ২০১২ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি সাঈদ হোসেন চৌধুরী যায়যায়দিনের প্রকাশক ও মুদ্রাকরের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। ওই সময় থেকে সাঈদ হোসেন চৌধুরী দৈনিক যায়যায়দিনের প্রকাশক ও মুদ্রাকর হিসেবে নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করে আসছেন।
সংবাদ সম্মেলনে আরও জানানো হয়, শফিক রেহমান ২০০৭ সালের ১৭ জুলাই দৈনিক ‘যায়যায়দিন’ পত্রিকার প্রকাশকের দায়িত্বভার থেকে পদত্যাগ করলেও ২০০৮ সালের ৬ মে পর্যন্ত বেতনভুক্ত সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০০৮ সালের ৫ মে তিনি স্বেচ্ছায় সম্পাদকের পদ থেকে পদত্যাগ করেন। ৬ মে যায়যায়দিন ও সমকালসহ একাধিক জাতীয় দৈনিকেও এ সংক্রান্ত খবর প্রকাশ পায়।
শফিক রেহমান পদত্যাগ করার পর শহীদুল হক খান এবং পরে বরুণ শংকর দৈনিক যায়যায়দিনের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহণ করেন।
পরবর্তীতে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের অনুমতিক্রমে ২০০৮ সালের ২৩ নভেম্বর কাজী রুকুনউদ্দীন আহমেদ যায়যায়দিনের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক হিসাবে দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। উল্লেখিত সময় থেকে তিনি নিষ্ঠার সঙ্গে ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন।
অথচ আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর সাঈদ হোসেন চৌধুরীর মালিকানাধীন দৈনিক যায়যায়দিন পত্রিকাটি দখল করে নিতে বেশকিছু দুস্কৃতকারী পত্রিকার প্রধান কার্যালয় তেজগাঁও শিল্পাঞ্চলের এইচআরসি মিডিয়া ভবনে কয়েক দফা হামলা চালায়। এ ব্যাপারে গত ২৪ অক্টোবর তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করা হয়। গত ১৫ ডিসেম্বর সাংবাদিক শফিক রেহমানকে সামনে রেখে ওই চক্র সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের দিয়ে তেজগাঁও শিল্পাঞ্চলের দৈনিক যায়যায়দিনের প্রধান কার্যালয় দখল করে নেয়।
এদিকে তেজগাঁও শিল্পাঞ্চলে যায়যায়দিন কার্যালয় ও প্রেস বেদখল হওয়ার পর বিধি মোতাবেক ডিসি অফিসকে অবহিত করে অন্য প্রেস থেকে যায়যায়দিন পত্রিকা ছাপানোর ব্যবস্থা করা হয়। পর পর দুটি প্রেস পরিবর্তনের বিষয়টিও যথারীতি ডিসি অফিসকে জানানো হয়। কিন্তু ডিসি অফিস শফিক রহমানের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঠুনকো অজুহাতে ১০ ফেব্রুয়ারি যায়যায়দিন পত্রিকার ডিক্লারেশন বাতিল করে।
২৬৭ দিন আগে
পাহাড়ে সন্ত্রাসী ও চাঁদাবাজি বন্ধ করা হবে: পার্বত্য উপদেষ্টা
শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষায় পাহাড়ে সন্ত্রাসী ও চাঁদাবাজি বন্ধ করা হবে বলে জানিয়েছেন পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা।
তিনি বলেন, ‘চাঁদাবাজি করে কেউ যাতে সাধারণ মানুষের জীবন দুর্বিষহ করতে না পারে সেজন্য সন্ত্রাসী ও চাঁদাবাজি বন্ধ করা হবে। পার্বত্য চট্টগ্রামের পাশাপাশি পুরো দেশের শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষায় চাঁদাবাজি বন্ধ করা হবে।’
সোমবার (২৬ আগস্ট) বান্দরবান সার্কিট হাউসের সভাকক্ষে বান্দরবান জেলার কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় উপদেষ্টা এ কথা বলেন।
আরও পড়ুন: প্রতিটি নাগরিকের অধিকার রক্ষা করবে সরকার: প্রধান উপদেষ্টা
উপদেষ্টা বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকার প্রতিটি ক্ষেত্রে নিরপেক্ষতা বজায় রেখে কাজ করে যাচ্ছে। অর্ন্তবর্তী সরকারের রূপরেখা অনুযায়ী পার্বত্য জেলা পরিষদ গঠন করা হবে। আমাদের ইচ্ছামতো সদস্য সংখ্যা বাড়াতে বা কমাতে পারব না। তবে সদস্যদের মধ্যে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সঙ্গে সম্পৃক্ত দুইজন ছাত্র প্রতিনিধিকে রাখা গেলে ভালো হবে।’
সুপ্রদীপ চাকমা বলেন, ‘খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে অত্যন্ত নিরপেক্ষভাবে বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদসহ তিন পার্বত্য জেলা পরিষদে চেয়ারম্যান ও সদস্য নিয়োগ করা হবে। তারা এলাকার মঙ্গলের জন্য কাজ করবেন।’
তিনি বলেন, ‘কুকি চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ) সন্দেহে সাধারণ বমদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদেরকে মুক্তির বিষয়ে কোনো আইনি জটিলতা আছে কিনা সে বিষয়ে খতিয়ে দেখা হবে।’
পার্বত্য উপদেষ্টা আরও বলেন, পাহাড়ের শিক্ষা ব্যবস্থা অনেক পিছিয়ে থাকায় এ অঞ্চলের ছেলে-মেয়েরা প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় টিকতে পারে না। তাই দারিদ্র্য বিমোচন তথা মানুষের জীবনযাত্রার মানোন্নয়নের পাশাপাশি এই এলাকার মানসম্পন্ন সুশিক্ষা এবং পরিবেশের সুরক্ষা ও উন্নয়নকে প্রাধান্য দিয়ে কাজ করে যাব।
এছাড়াও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সমন্বয়ে পর্যটন শিল্প বিকাশে কাজ করা হবে বলে জানান সুপ্রদীপ চাকমা।
জেলা প্রশাসক শাহ্ মোজাহিদ উদ্দিনের সভাপতিত্বে এসময় উপস্থিত ছিলেন- পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব কংকন চাকমা, বান্দরবান জেলা পুলিশ সুপার সৈকত শাহীন, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উম্মে হাবীবা মীরা, পার্বত্য জেলা পরিষদের মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মাসুম বিল্লাহসহ বিভিন্ন দপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
সভা শেষে বান্দরবান জেলার সুশীল সমাজ, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র সংগঠন এবং বিভিন্ন দল ও সংগঠনের সঙ্গে মতবিনিময় করেন পার্বত্য উপদেষ্টা।
আরও পড়ুন: আহত শিক্ষার্থীদের দেখতে ঢামেকে উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান
প্রধান উপদেষ্টার ভাষণে গণতন্ত্রে উত্তরণের রোডম্যাপ নেই: ফখরুল
৪৬৫ দিন আগে
শিক্ষার্থী নয় শুধু সন্ত্রাসীদের ওপর আইনের প্রয়োগ হবে: সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী
নিরাপরাধ শিক্ষার্থী নয়, শুধু সন্ত্রাসীদের ওপর আইনের প্রয়োগ করা হবে বলে মন্তব্য করেছেন তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত।
বৃহস্পতিবার (১ আগস্ট) সচিবালয়ে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সমসাময়িক বিষয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে প্রতিমন্ত্রী এ মন্তব্য করেন।
এ সময় প্রতিমন্ত্রী বলেন, সরকার দ্ব্যর্থহীনভাবে বলতে চায় আইনের প্রয়োগ ঘটবে শুধু সন্ত্রাসীদের ওপরে। সুনির্দিষ্ট প্রমাণসাপেক্ষে ফৌজদারি অপরাধের সঙ্গে যাদের সম্পৃক্ততা পাওয়া যাবে তাদের ওপরে আইনের প্রয়োগ ঘটবে। তাদের গ্রেপ্তার করা হবে।
তিনি বলেন, পুলিশ প্রশাসনের সঙ্গে আলাপ হয়েছে, যেসব শিক্ষার্থী আন্দোলনে স্লোগান দিয়েছে, পানি বিতরণ করেছে তাদেরও যেন কোনোভাবে হয়রানি করা না হয়। তাদের পরিবারের কোনো সদস্য যাতে কোনোভাবে নাজেহাল না হয়। তিনি বলেন, স্বাধীন বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিশনের মাধ্যমে প্রতিটি হতাহতের ঘটনা তদন্ত করে দায়ী ব্যক্তিদের আইনের আওতায় আনা হবে। এক্ষেত্রে প্রয়োজনে আমরা বিদেশি কোনো এক্সপার্টেরও সহায়তা নেব। এখানে আমরা পুরোপুরি স্বচ্ছ ও জবাবদিহির মধ্যে থাকতে চাই।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, মৃত্যুগুলো, ঘটনাগুলোকে ঘিরে আজ বাংলাদেশের বিরুদ্ধে অপপ্রচার এবং বদনাম করার এক ধরনের অপপ্রয়াস চালানো হচ্ছে। এসব ঘটনার ক্ষতিগ্রস্তরা যেমন বিচার চান, সরকারও একইভাবে বিচার চায়। আমরা এটার গভীরে যেতে চাই এবং প্রতিটি দায়ী ব্যক্তিকে আমরা বিচারের মুখোমুখি করতে চাই। এ মৃত্যু ও হতাহতের ঘটনার জন্য সরকার দুঃখিত।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে এ সময় তথ্য প্রতিমন্ত্রী বলেন, যারা আবেগ নিয়ে রাস্তায় যাচ্ছেন, তাদের খেয়াল করতে হবে, আবার সন্ত্রাসীরা যদি এটাকে সুযোগ হিসেবে নেয়, আবার তারা যদি হতাহতের, সংঘাতের অবস্থা তৈরি করে, তার দায় কে নেবে? এখানে শিক্ষার্থীদের একটা দায়িত্বশীল ভূমিকা নিতে হবে। কারণ তৃতীয়পক্ষ বসে আছে দেশকে অরাজক পরিস্থিতিতে নিয়ে যাওয়ার জন্য।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তথা পুলিশ, র্যাব, বিজিবি ও অন্যান্য যারা আছে, কাউকেই গুলি করার কোনো অনুমতি ছিল না। সংবিধান ও আইনের অধীনে তাদের কাজ করতে হয়েছে। তাই বলে আমি এটাও অস্বীকার করছি না, ক্ষেত্রবিশেষে কেউ কেউ, মাঠে আইন ভাঙেননি। আমরা এটা তদন্ত করে তাদেরও বিচারের আওতায় আনব। পুরো পৃথিবীতে এ ধরনের ঘটনা ঘটে। সরকারের দায়িত্ব হলো যারা আইন ভেঙেছে, যারা অন্যায় করেছে, সে যেই হোক তাদের আমরা তদন্ত করে বিচারের মুখোমুখি করব।’
৪৯০ দিন আগে
রোহিঙ্গা ক্যাম্পে সন্ত্রাসীদের গুলিতে নিহত ৩
কক্সবাজারের উখিয়ায় রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে সন্ত্রাসীদের গুলিতে তিনজন রোহিঙ্গা নিহত হয়েছেন।
এ সময় আহত হয়েছেন আরও তিনজন।
সোমবার (১০ জুন) উখিয়ার ৪ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পে এ ঘটনা ঘটে।
আরও পড়ুন: গাজীপুরে পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ২
আহতদের মধ্যে দুইজন আশঙ্কাজনক অবস্থায় কক্সবাজার সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। আর নিহত তিনজনই ওই ক্যাম্পের বাসিন্দা। ঘটনার পর থেকে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে ক্যাম্পে।
আহত রোহিঙ্গারা জানান, সম্প্রতি রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে রাতে যুবকদের তুলে নিয়ে যাচ্ছে একটি সশস্ত্র সন্ত্রাসী সংগঠন। তাদেরকে জিম্মি করে দেশের বাইরে পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে। সেটি ঠেকানোর জন্য সিআইসির পরামর্শে তারা প্রতিরাতে ক্যাম্পের ব্লকে ব্লকে পাহারা বসায়। প্রতিদিনের মতো রবিবার রাতেও বিভিন্ন গ্রুপে পাহারা দিচ্ছিলেন তারা। ওই সময় একটি সশস্ত্র সন্ত্রাসী গ্রুপের ৩০ থেকে ৪০ জন সন্ত্রাসী এসে তাদেরকে এলোপাতাড়ি গুলি করতে থাকে। এসময় গুলি চালিয়ে ও কুপিয়ে সাতজনকে জখম করে। এরমধ্যে দুইজন ঘটনাস্থলে মারা যায়। পরে হাসপাতালে নেওয়ার পথে আরও একজনের মৃত্যু হয়।
কক্সবাজার সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের ডা. আশিকুর রহমান বলেন, সকালে গুলিবিদ্ধ সাতজন রোহিঙ্গাকে নিয়ে আসা হয়েছে। এরমধ্যে তিনজন মৃত। গুলি ও ছুরিকাঘাতে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের কারণে তাদের মৃত্যু হয়েছে।
উখিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বলেন, আধিপত্য বিস্তারের জেরে এই ঘটনা ঘটে। রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বিচ্ছিন্নভাবে প্রতিনিয়ত হতাহতের ঘটনা ঘটছে। কিন্তু সোমবারের ঘটনার পর ক্যাম্পের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে বড় ধরণের প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
আরও পড়ুন: ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পিকআপের চাপায় পথচারী নিহত
যশোরে ট্রাকের ধাক্কায় পথচারীসহ নিহত ২
৫৪২ দিন আগে
সন্ত্রাসীদের ছাড় দেওয়া হবে না: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
কোনো অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী ও চাঁদাবাজকে পার্বত্য অঞ্চলের ভূখণ্ডে থাকতে দেওয়া হবে না বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান।
তিনি বলেন, সম্প্রতি রুমা উপজেলায় ব্যাংক ডাকাতি, অস্ত্র লুট ও থানছি উপজেলায় প্রকাশ্যে গুলির ভয় দেখিয়ে দুটি ব্যাংকে ডাকাতির মতো ঘটনা যারাই ঘটিয়েছে তারা জঘন্য অপরাধ করেছে। রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে তারা অবস্থান নিয়েছে। কাজেই রাষ্ট্র এখানে চুপ থাকতে পারে না।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এলাকার জনগণের অধিকতর নিরাপত্তার স্বার্থে তিন পার্বত্য জেলায় পুলিশ, র্যাব ও আনসারের সংখ্যা বৃদ্ধিসহ আইনশৃঙ্খলার উন্নয়নে যা যা প্রয়োজন তাই করা হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এরই মধ্যে সেনাপ্রধানকে এ ব্যাপারে নির্দেশনা দিয়েছেন। এখানে একটি সাড়াশী অভিযান চালানো হবে। কোনো অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী-চাঁদাবাজকে পার্বত্য অঞ্চলের ভূখণ্ডে থাকতে দেওয়া হবে না।
শনিবার দুপুরে বান্দরবান সার্কিট হাউজে আইনশৃঙ্খলাবিষয়ক একটি রুদ্ধ দ্বার বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন মন্ত্রী।
আরও পড়ুন: রুমা ও থানচিতে ব্যাংক ডাকাতি: প্রয়োজনে পুলিশ-বিজিবির সঙ্গে যোগ দেবে সেনাবাহিনী, জানালেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
তিনি বলেন, অনেক ধৈর্য নিয়ে আমরা ওই সংগঠনের সঙ্গে আলোচনা করেছি। শান্তিপূর্ণ পরিবেশে আলাপ এগিয়েছে যাচ্ছিল। জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ক্যশৈহ্লার নেতৃত্বে শান্তি রক্ষা কমিটি তাদের সঙ্গে আলোচনা করে দুই দফা আলোচনার পর উভয় পক্ষ কিছু শর্তে সমঝোতায় পৌঁছায়। কিন্তু তারা আলোচনার পথে না থেকে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডকে পুনরায় বেছে নেয়। তাদের সন্ত্রাসী কার্যক্রম প্রতিহত করতে সরকারের সর্বোচ্চ মহল থেকে অভিযান পরিচালনা করার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে তিনি জানান।
তিনি বলেন, সন্ত্রাসী কাজে জড়িত কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। ভারত ও মায়ানমারের সঙ্গে বাংলাদেশের ভালো সম্পর্ক রয়েছে। সন্ত্রাসীরা ভারতে কিংবা মিয়ানমারে পালিয়ে থাকলেও ইন্টারপোলের মাধ্যমে তাদের ধরে এনে দেশের মাটিতে বিচার করা হবে।
বৈঠকে পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রী কুজেন্দ্রলাল ত্রিপুরা, বান্দরবানের সংসদ সদস্য বীর বাহাদুর উশৈসিং উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে মন্ত্রী রুমা উপজেলা সোনালী ব্যাংক, মসজিদসহ যেসব এলাকায় সন্ত্রাসী হামলা হয়েছে সেসব স্থান পরিদর্শন করেন।
আরও পড়ুন: সাইবার অপরাধ দমনে প্রযুক্তিনির্ভর পুলিশ বাহিনী গড়তে কাজ করছে সরকার: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
৬০৭ দিন আগে