১০ বছর
অর্থপাচার মামলায় জি কে শামীমে ১০ বছরের কারাদণ্ড
রাজধানীর গুলশান থানার অর্থপাচার আইনের মামলায় যুবলীগের বহিষ্কৃত নেতা এস এম গোলাম কিবরিয়া শামীম ওরফে জি কে শামীমের ১০ বছর কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
এছাড়া মামলার সাত আসামিকে চারবছর করে কারাদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়েছে।
সোমবার ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-১০ এর বিচারক মোহাম্মদ নজরুল ইসলামের আদালত এ রায় ঘোষণা করেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত অপর আসামিরা হলেন -মো. দেলোয়ার হোসেন, মো. মোরাদ হোসেন, মো. জাহিদুল ইসলাম, মো. শহীদুল ইসলাম, মো. কামাল হোসেন, মো. সামসাদ হোসেন ও মো. আনিছুল ইসলাম।
আরও পড়ুন: মাদক মামলায় হাইকোর্টে জি কে শামীমের জামিন আবেদন
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আজাদ রহমান এ তথ্য জানান।
রায়ের পর্যবেক্ষণে বিচারক বলেন, অস্ত্রবাজ, টেন্ডারবাজ ও অর্থপাচারকারীদে কোনো আদর্শ নেই। তারা কোনো আদর্শকে লালন করে না। তবে আদর্শকে ব্যবহার করে রাতারাতিভাবে অবৈধ সম্পদের পাহাড় গড়ে তুলে দেশের উন্নয়নের অগ্রযাত্রাকে বাধাগ্রস্ত করে এবং দেশের অর্থনীতিকে ধ্বংস করে দেয়। তারা দেশ ও জাতির শত্রু। দেশের চলমান উন্নয়ন ও জাতীয় স্বার্থে তাদেরকে সম্মিলিতভাবে প্রতিহত করতে হবে।
গত ২৫ জুন মামলাটি অধিকতর যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে রায়ে জন্য ধার্য ছিল। আসামিপক্ষের আইনজীবী অধিকতর যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেননি।
এদিকে রায়ও প্রস্তুত না হওয়ায় আদালত তারিখ পিছিয়ে ১৭ জুলাই ঠিক করেন।
আরও পড়ুন: জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ: জি কে শামীম ও তার মায়ের বিচার শুরু
উল্লেখ্য, গত ১৫ জুন রাষ্ট্রপক্ষ ও আসামিপক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে আদালত রায়ের এ তারিখ ধার্য করেন।
এরপর, গত ২৬ জানুয়ারি রাষ্ট্রপক্ষ যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শুরু করে। ৬ মার্চ শেষ করে।
এর আগে ১৭ জানুয়ারি আত্মপক্ষ শুনানিতে আসামিরা নিজেদের নির্দোষ দাবি করে ন্যায়বিচার প্রার্থনা করেন।
গত ২১ ডিসেম্বর মামলাটির সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়। মামলাটিতে অভিযোগপত্রভুক্ত ২৬ জন সাক্ষীর মধ্যে ২৩ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করেন আদালত।
২০১৯ সালের ২০ সেপ্টেম্বর দুপুরে নিকেতনের নিজ বাসা থেকে শামীমকে আটক করা হয়।
এসময় জিকে শামীমের কাছ থেকে প্রায় ২০০ কোটি টাকার এফডিআর চেকসহ বিপুল পরিমাণ দেশি-বিদেশি টাকা জব্দ করা হয়। এ সময় তার কাছ থেকে একটি অস্ত্রও পাওয়া যায়।
এ ঘটনার পর র্যাব-১ এর নায়েব সুবেদার মিজানুর রহমান ২১ সেপ্টেম্বর গুলশান থানায় মামলাটি দায়ের করেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডির সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার আবু সাঈদ তদন্ত শেষে ২০২০ সালের ৪ আগস্ট আদালতে জি কে শামীম ও তার সাত দেহ রক্ষীর বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
আরও পড়ুন: জি কে শামীমসহ ৮ জনের বিরুদ্ধে অস্ত্র মামলার রায় ২৫ সেপ্টেম্বর
২০২০ সালের ১০ নভেম্বর আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন।
বাংলাদেশে আগামী ১০ বছরে বিমান ভ্রমণ দ্বিগুণ হবে
দেশের ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যা, প্রসারিত অর্থনীতি ও মধ্যবিত্ত শ্রেণির দ্বারা চালিত আগামী দশকে বাংলাদেশে বিমান ভ্রমণ দ্বিগুণ হওয়ার পূর্বাভাস দিয়েছে উড়োজাহাজ নির্মাণ প্রতিষ্ঠান বোয়িং (এনওয়াইএসই:বিএ)।
বুধবার (১০ মে) উড়োজাহাজ নির্মাণ প্রতিষ্ঠানটি বাংলাদেশে বিমান ভ্রমণের ক্রমবর্ধমান চাহিদা ও সক্ষমতাবিষয়ক তাদের কমার্শিয়াল মার্কেট আউটলুক (সিএমও) প্রকাশ করেছে।
এটি বৈশ্বিক ও আঞ্চলিক বিমানের চাহিদাবিষয়ক একটি বার্ষিক পূর্বাভাস।
আরও পড়ুন: অনলাইনে ভ্রমণের তারিখ পরিবর্তন সেবা চালু বিমানের
বোয়িংয়ের পূর্বাভাস অনুযায়ী-২০৩২ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশের বার্ষিক জিডিপি পাঁচ শতাধিক বেশি হারে বাড়বে, যা বৈশ্বিক জিডিপি প্রবিদ্ধির গড়ের দ্বিগুণেরও বেশি।
পাশাপাশি বিমান ভ্রমণের বার্ষিক বৃদ্ধির হার হবে প্রায় আট দশমিক পাঁচ শতাংশ।
এশিয়া প্যাসিফিক ও ভারতের বোয়িং কমার্শিয়াল মার্কেটিং ম্যানেজিং ডিরেক্টর ডেড শাল্টে বলেন, ‘গত বছর থেকে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা শিথিল করায় বাংলাদেশে সক্ষমতা বছরে ১১ শতাংশ বেড়েছে’।
তিনি আরও বলেন, ‘মধ্যপ্রাচ্য ও ভারতে আঞ্চলিক ট্র্যাফিক বিবেচনায় আগামী ১০ বছরে বাংলাদেশের বিমান ভ্রমণ দ্বিগুণ হবে বলে আমরা মনে করি’।
সিএমও’র পূর্বাভাস অনুযায়ী, যাত্রী ভ্রমণ ও এয়ার কার্গোর জোরালো চাহিদা মেটাতে দক্ষিণ এশিয়ার বাহক বা ক্যারিয়ারদের আগামী ২০ বছরে দুই হাজার ৩০০টির বেশি নতুন বাণিজ্যিক বিমানের প্রয়োজন হবে।
ফলে দক্ষিণ এশিয়ার বর্তমান ইন-সার্ভিস বিমান বহরের (৭০০টি) তিনগুণেরও বেশি বৃদ্ধি হবে বলে জানানো হচ্ছে।
শাস্টে আরও বলেন, দক্ষিণ এশিয়ায় আমরা দারুণ সুযোগ দেখতে পাচ্ছি। যেখানে ভবিষ্যতে বিমান বহরের ৮০ শতাংশের বেশি প্রয়োজন হবে।
বাকি ২০ শতাংশ ব্যবহৃত হবে পুরোনো অকার্যকর বিমান প্রতিস্থাপনের জন্য।
আরও পড়ুন: ১ জুলাই থেকে ডলারের পরিবর্তে টাকায় বিমান ভাড়া নির্ধারণ করতে হবে
৭৩৭-এর মতো সিঙ্গেল-আইল বিমানগুলো দক্ষিণ এশিয়ার ভবিষ্যৎ বিমান বহরের প্রায় ৯০ শতাংশ ব্যবস্থা করবে, যেখানে এ অঞ্চলের বিমান বহরের ১০ শতাংশ গঠিত হবে ৭৮৭-এর মতো প্রশস্ত বা ওয়াইড বডি বিমান দ্বারা।
এ দুইটি বিমানের মডেলই বর্তমানে বিমান বাংলাদেশ ও ইউএস বাংলা এয়ারলাইন্সে চালু রয়েছে।
শাল্টে আরও বলেন, ‘এ বাজারে বাণিজ্যিক বিমান চলাচলের দ্রুত বৃদ্ধিতে বোয়িং বিমানগুলো চমৎকার ভূমিকা পালন করেছে। প্রবৃদ্ধি বৃদ্ধিতে বিমান বহরের সাদৃশ্য প্রধান ভূমিকা পালন করবে, বিশেষ করে যেহেতু এটি আমাদের এয়ারলাইন্সে গ্রাহকদের প্রশিক্ষণ ও রক্ষণাবেক্ষণের সঙ্গে সম্পর্কিত পরিচালনার খরচ কমায়’।
বোয়িং
শীর্ষস্থানীয় অ্যারোস্পেস কোম্পানি বোয়িং বিশ্বের ১৫০টিরও বেশি দেশে তাদের গ্রাহকদের পণ্য এবং সেবা সরবরাহ করে থাকে। শীর্ষ মার্কিন রপ্তানিকারক হিসাবে কোম্পানিটি বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক সুবিধা, সক্ষমতা এবং কমিউনিটি প্রভাবকে এগিয়ে নিতে সাপ্লায়ার বেইজের দক্ষতাকে কাজে লাগায়।
এছাড়া আগামীর জন্য উদ্ভাবন এবং কোম্পানির নিরাপত্তা, গুণগতমান ও মূল্যবোধের ওপর ভিত্তি করে একটি সংস্কৃতি গড়ে তুলতে বোয়িং-এর বৈচিত্র্যময় টিম দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।
আরও পড়ুন: ড্রিমলাইনারে বিদেশি পাইলটদের 'লাইন ট্রেনিং' দিচ্ছে বিমান
ফরিদপুরে শিক্ষক হত্যার ১০ বছর পর ৫ জনের যাবজ্জীবন
ফরিদপুরে ১০ বছর আগে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক কামরুল ইসলামকে (৩৮) হত্যার দায়ে পাঁচজনের যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে দণ্ডপ্রাপ্তদের দশ হাজার টাকা করে জরিমানা অনাদায়ে তিন মাস করে বিনাশ্রম কারাদণ্ডাদেশ দেয়া হয়েছে।
সোমবার (২০ ফেব্রুয়ারি) বিকাল ৩টার দিকে ফরিদপুরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালত-২ এর বিচারক শিহাবুল ইসলাম এ আদেশ দেন।
আরও পড়ুন: তহসিলদার হত্যার ২৫ বছর পর দুইজনের যাবজ্জীবন
দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- বোয়ালমারী উপজেলার চতুল ইউনিয়নের চতুল গ্রামের বকুল মোল্লা (৩২), সুজা মোল্লা (৩৩), নজরুল মোল্লা (৫৫) এবং দুই সহোদর ফিরোজ মোল্লা (৩৫) ও মঞ্জু মোল্লা (৩২)।
রায় ঘোষণার সময় আসামিরা আদালতে হাজির ছিলেন। পরে পুলিশ প্রহরায় তাদের জেলা কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, গত ২০১৩ সালের ২৫ নভেম্বর বিকেল ৩টার দিকে শিক্ষক কামরুল বাড়ি থেকে একটি বাইসাইকেলে করে বোয়ালমারী বাজারের দিকে যাচ্ছেলেন। তিনি চতুল চিতা ঘাটা এলাকায় মঞ্জু মোল্লার দোকানের সামনে পৌঁছালে পাঁচ আসামিসহ মোট ১২ জন স্থানীয় গ্রাম্য দলাদলিকে কেন্দ্র করে কাঠের লাঠি, বাঁশের লাঠি দিয়ে তাকে পিটিয়ে মারাত্মকভাবে আহত করে। এ সময় ওই শিক্ষকের কাছে থাকা নগদ সাড়ে সাত হাজার টাকা ও ১৮ হাজার টাকা দামের একটি মুঠোফোন নিয়ে যায়।
আহত শিক্ষক কামরুলকে উদ্ধার করে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে স্থানান্তর করেন। ঢাকা নেয়ার পথে ওইদিন (২৫ নভেম্বর) রাত সাড়ে ৯টার দিকে তিনি মারা যান।
এ ঘটনায় নিহতের ভাই এস এম খায়রুল ইসলাম বাদী হয়ে ১২ জনের নাম উল্লেখ করে বোয়ালমারী থানায় হত্যা মামলা করেন। ২০১৫ সালের ১৩ জানুয়ারি বোয়ালমারী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) নিপুণ মজুমদার এহাজারভুক্ত ১২ জন আসামিকে অভিযুক্ত আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালত-২ এর এপিপি সানোয়ার হোসেন জানান, আদালত এ হত্যা মামলার ১২ জন আসামির মধ্যে পাঁচজনকে দোষী সাব্যস্ত করে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড এবং ১০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও তিন মাস করে বিনাশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেন। বাকি সাত আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত না হওয়ায় তাদের বেকসুর খালাস দেয়া হয়েছে।
তিনি আরও জানান, হত্যার দায়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের পাশাপাশি আদালতকে বেআইনিভাবে বাধা দওয়ার দায়ে প্রত্যেক আসামিকে এক মাস করে সশ্রম কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: সোনাগাজীতে ১৬ বছর পর ধর্ষণ মামলার যাবজ্জীবনপ্রাপ্ত পলাতক আসামি গ্রেপ্তার
মানবতাবিরোধী অপরাধ ত্রিশালের ৫ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড