সামরিক সহায়তা
ইউক্রেনকে ৪২৫ মিলিয়ন ডলারের সামরিক সহায়তা দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র
যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনকে অতিরিক্ত ৪২৫ মিলিয়ন ডলার সামরিক সহায়তা পাঠাচ্ছে বলে জানিয়েছে পেন্টাগন। শুক্রবার(১ নভেম্বর) পেন্টাগন এই ঘোষণা দিয়ে কারণ হিসেবে জানায়, ১০ হাজারেরও বেশি উত্তর কোরিয়ার সেনা সদস্যের বর্ধিত রুশ বাহিনীর মুখোমুখি হওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে কিয়েভ।
মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিন গত সপ্তাহে কিয়েভ সফরের সময় বলেছিলেন যে আরও সহায়তা আসছে এবং তা শিগগিরই। এই সহায়তা প্যাকেজের মধ্যে রয়েছে ন্যাশনাল অ্যাডভান্সড সারফেস-টু-এয়ার মিসাইল সিস্টেমের জন্য এয়ার ডিফেন্স ইন্টারসেপ্টর, হাই মোবিলিটি আর্টিলারি রকেট সিস্টেম এবং ১৫৫ মিমি আর্টিলারি, এবং সাঁজোয়া যান এবং অ্যান্টি-ট্যাঙ্ক অস্ত্রসহ বিদ্যমান মার্কিন মজুদের অন্যান্য অস্ত্র।
ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয় শহরগুলো ক্রমাগতভাবে রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র হামলার সম্মুখীন হচ্ছে। এর মধ্যে খারকিভে ৫০০ কিলোগ্রাম (১১০০ পাউন্ড) ওজনের গ্লাইড বোমা হামলা চালানো হয়েছে। বৃহস্পতিবারের ওই হামলায় তিনজন নিহত ও অনেকে আহত হয়েছেন।
এছাড়াও, ইউক্রেন নতুন অনিশ্চয়তার মুখোমুখি হচ্ছে। রাশিয়ায় মোতায়েন উত্তর কোরিয়ার সৈন্যদল ইউক্রেনের সীমান্তের কাছাকাছি পৌঁছেছে। আগামী দিনগুলোতে ইউক্রেনীয় সেনাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে যোগ দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে।
রাশিয়া ক্রমবর্ধমান শক্তিশালী গ্লাইড বোমা ব্যবহার করে ১ হাজার কিলোমিটার (৬০০ মাইল) দূরের ইউক্রেনের অবস্থানগুলোতে সরাসরি আঘাত করেছে। যা কয়েক কিলোমিটার (মাইল) দূরের শহরগুলোতে আঘাত হেনেছে। সীমান্ত থেকে প্রায় ৩০ কিলোমিটার (২০ মাইলেরও কম) দূরত্বে অবস্থিত ১১ লাখ মানুষের শহর খারকিভ।
শুক্রবার পেন্টাগন সামরিক সহায়তা প্যাকেজ ঘোষণার মধ্য দিয়ে ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়া ইউক্রেনে আক্রমণ শুরু করার পর থেকে ইউক্রেনকে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক সহায়তার মোট পরিমাণ ৬০ দশমিক ৪ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে।
আরও পড়ুন: বন্যায় স্পেনে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১৫৮
১ মাস আগে
ইউক্রেনে ২০০ মিলিয়ন ডলারের সামরিক সহায়তা পাঠাবে যুক্তরাষ্ট্র
ইউক্রেনকে ২০০ মিলিয়ন ডলারের অস্ত্র ও গোলাবারুদ সহায়তা সরবরাহ করবে মার্কিন প্রতিরক্ষা বিভাগের সদর দপ্তর পেন্টাগন। যাতে পাল্টা আক্রমণে দেশটির রাজধানী কিয়েভ টিকে থাকতে পারে। দুই মার্কিন কর্মকর্তা জানান, সামনের সারির সৈন্যরা প্রশিক্ষিত রুশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার বড় ধরনের বাধার সম্মুখীন হচ্ছে।
মার্কিন কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এই গোলাবারুদের প্যাকেজে থাকছে হাই-মোবিলিটি আর্টিলারি রকেট সিস্টেম (এইচআইএমএআরএস) এবং প্যাট্রিয়ট এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম, ছোট কামান ও ট্যাংকের জন্য গোলাবারুদ, জ্যাভলিন রকেট, মাইন-ক্লিয়ারিং সরঞ্জাম, ১২ মিলিয়ন রাউন্ড ছোট অস্ত্রের গোলাবারুদ এবং ধ্বংসাত্মক গোলাবারুদ।
নাম প্রকাশের ওই দুই কর্মকর্তা জানিয়েছেন, এই সহায়তার বিষয় এখনও জনসমক্ষে ঘোষণা করা হয়নি।
ইউক্রেনের জন্য নির্ধারিত মার্কিন তহবিলের প্রায় পুরোটাই ব্যয় হয়ে গেছে এবং বাইডেন প্রশাসন এই সমর্থন অব্যাহত রাখতে কংগ্রেসের কাছ থেকে পরিপূরক সহায়তার একটি নতুন প্যাকেজের জন্য অনুরোধ করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: ইউক্রেন যুদ্ধের সমালোচনা করায় শিক্ষার্থীর ৮ বছরের কারাদণ্ড
গত বছর রাশিয়ার আক্রমণের পর থেকে ইউক্রেন ইতোমধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে ৪৩ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি সহায়তা পেয়েছে। এসব তহবিলের মাধ্যমে রুশ সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য ছোট কামান ও লাখ লাখ রাউন্ড গোলাবারুদসহ নানা অস্ত্র ব্যবস্থা সরবরাহ করা হয়েছে। রক্তক্ষয়ী তীব্র এই যুদ্ধে সহায়তার বেশিরভাগ গোলাবারুদ ও অস্ত্র ইতোমধ্যে ব্যবহার করা হয়েছে।
ইউক্রেনের উপপ্রতিরক্ষামন্ত্রী হান্না মালিয়ার বুধবার তার অফিসিয়াল টেলিগ্রাম চ্যানেলে বলেন, দেশটির পূর্বাঞ্চলে দুই পক্ষের মধ্যে তীব্র লড়াইয়ে সামনের সারিতে অবস্থান ও নিয়ন্ত্রণে একদিনের মধ্যে ‘একাধিক পরিবর্তন’ঘটে।
বাইডেন প্রশাসন দুটি কর্মসূচির মাধ্যমে যুদ্ধে ইউক্রেনকে অর্থায়ন করছে। যার একটি হলো প্রেসিডেন্সিয়াল ড্রডাউন অথরিটি বা পিডিএ, যা বিদ্যমান মার্কিন মজুদ থেকে অস্ত্র সরবরাহ করে। অন্যটি হচ্ছে ইউক্রেন সিকিউরিটি অ্যাসিসট্যান্স ইনিশিয়েটিভ বা ইউএসএআই, যা ট্যাংকের মতো বড় আকারের অস্ত্র ব্যবস্থার জন্য দীর্ঘমেয়াদি চুক্তিতে অর্থায়ন করে। উভয় তহবিল চলতি অর্থবছরের ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চলবে।
আরও পড়ুন: ইউক্রেনে যুদ্ধ ও দুর্যোগে ২০২২ সালে অভ্যন্তরীণ বাস্তুচ্যুত মানুষের সংখ্যা ৭১ মিলিয়ন: প্রতিবেদন
পেন্টাগন ইতোমধ্যেই এই তহবিল নিয়ে ভাবতে শুরু করেছে। কারণ, কংগ্রেস অতিরিক্ত তহবিল অনুমোদন না করা পর্যন্ত সহায়তা চালিয়ে যাওয়ার জন্য পিডিএ অর্থে প্রায় ৬ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলার অবশিষ্ট রয়েছে। এই অবশিষ্ট থেকেই ২০০ মিলিয়ন ডলারের সর্বশেষ সহায়তার প্যাকেজটি দেওয়া হচ্ছে।
পেন্টাগনের ডেপুটি প্রেস সেক্রেটারি সাবরিনা সিং মঙ্গলবার এক প্রেস ব্রিফিংয়ে বলেন, ‘আমরা আত্মবিশ্বাসী যে আমরা ইউক্রেনকে যুদ্ধক্ষেত্রে যা প্রয়োজন তা সরবরাহ করা চালিয়ে যেতে পারব। আমি কংগ্রেসের কাছে কোনো সম্পূরক বা অতিরিক্ত অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে কোনো কিছুতেই এগিয়ে যাচ্ছি না।’
এ ছাড়াও চলতি অর্থবছরে ইউএসএআই তহবিলে প্রায় ৬০০ মিলিয়ন ডলার অবশিষ্ট রয়েছে।
আরও পড়ুন: ইউক্রেনের কাখোভকা বাঁধ ধ্বংস, নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১৭
১ বছর আগে
বার্মা আইন: মিয়ানমারের সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোকে সামরিক সহায়তা 'ক্ষুন্ন করতে পারে' বাংলাদেশের নিরাপত্তা
ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম. সাখাওয়াত হুসেন বলেছেন যে অ-মারাত্মক সহায়তা ধারার একটি উদার ব্যাখ্যা ব্যবহার করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র মিয়ানমারের বিভিন্ন জাতিগত সশস্ত্র সংস্থাকে (ইএও) সামরিক সহায়তা প্রদানের অনুমতি দিতে পারে যা বাংলাদেশের নিরাপত্তাকে ‘ক্ষুণ্ণ’ করতে পারে। কারণ এই গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে দেশে সক্রিয় থাকা একই ধরনের বিচ্ছিন্নতাবাদী দলগুলোর কিছু সম্পর্ক রয়েছে।
বুধবার বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তবর্তী অঞ্চলে ‘বার্মা আইনের প্রভাব’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।
মিয়ানমারের স্বাস্থ্য ও শিক্ষা মন্ত্রী, জাতীয় ঐক্য সরকারের (এনইউজি) অধ্যাপক জাও ওয়াই সোয়ে আজ বার্মা আইন পাস করার জন্য এবং মার্কিন সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন।
আরও পড়ুন: মিয়ানমারে স্কুলে হেলিকপ্টার হামলা, ৭ শিক্ষার্থীসহ নিহত ১৩
তিনি অবশ্য পুনর্ব্যক্ত করেছেন যে এটি কোনও একক পরাশক্তির ওপর নির্ভর করে না, বরং বর্তমান সংঘাত মোকাবিলার আদর্শ উপায় হিসাবে বহুপক্ষীয় প্রতিক্রিয়াতে বিশ্বাস করে।
এনইউজি আনুষ্ঠানিকভাবে রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারের একটি জাতিগত গোষ্ঠী হিসেবে স্বীকৃতি দেয় এবং বাংলাদেশ থেকে মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের শান্তিপূর্ণ ও পূর্ণ প্রত্যাবাসনের পক্ষে।
মিয়ানমারে সামরিক অভ্যুত্থানের পর দুই বছর পার হয়ে গেছে, তবুও শান্তি নেই।
গত ডিসেম্বরের শেষের দিকে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বার্মা আইন পাস করেছে, একই সঙ্গে মিয়ানমারের সামরিক জান্তাকে নিষেধাজ্ঞা দেয়ার পাশাপাশি দেশের অসংখ্য গণতান্ত্রিক শক্তিকে সমর্থন প্রদান করার জন্য পরিকল্পনা করা হয়েছে।
এই পরিবর্তনগুলোর পরিপ্রেক্ষিতে, নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির সাউথ এশিয়ান ইনস্টিটিউট অব পলিসি অ্যান্ড গভর্ন্যান্স (এসআইপিজি)-এর সেন্টার ফর পিস স্টাডিজ (সিপিএস) কলোকিয়ামের আয়োজন করে।
আরও পড়ুন: আশিয়ান: বৈঠকের সিদ্ধান্ত মানতে বাধ্য না থাকার ঘোষণা মিয়ানমারের
এসআইপিজির পরিচালক ডা. এসকে তৌফিক এম হকের সঞ্চালনায় সেমিনারে বক্তব্য দেন এসআইপিজির সিনিয়র ফেলো ও সাবেক নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম. সাখাওয়াত হুসাইন; সুইজারল্যান্ডে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত সুফিউর রহমান এবং জাতিসংঘে স্থায়ী প্রতিনিধি সাবেক পররাষ্ট্র সচিব শহীদুল হক এবং এনএসইউ-এর রাষ্ট্রবিজ্ঞান ও সমাজবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. রেমন্ড কুন-সান লু।
মোহাম্মদ সুফিউর রহমান সংঘাতের মূল ভূমিকা পালনকারী হিসেবে আরাকান সেনাবাহিনীর উত্থান তুলে ধরেন এবং জোর দেন যে কীভাবে আরাকান সেনাবাহিনীর স্বার্থ বিবেচনায় না নিয়ে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে রোহিঙ্গা ইস্যুতে একটি সমাধানে পৌঁছানো সম্ভব নয়।
শহীদুল হক সংঘাতে আসিয়ানের ভূমিকা নিয়ে আলোচনা করেন এবং মিয়ানমারের সংঘাত মোকাবিলায় এর বারবার ত্রুটির দিকে ইঙ্গিত করেন। দেশের অসংখ্য জাতিগত সংখ্যালঘুদের দুর্দশা বোঝার ক্ষেত্রে এর অবহেলার প্রতি বিশেষ দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
ডা. রেমন্ড কুন-সান লু, ভারত ও চীনের মতো আঞ্চলিক শক্তিগুলোর কাছে রাখাইন রাজ্যের ভূ-রাজনৈতিক এবং কৌশলগত গুরুত্বের ওপর জোর দেন। উভয়ই এর হাইড্রোকার্বনের বিশাল মজুদের জন্য এবং সেই সঙ্গে সংযোগ প্রকল্পগুলোর জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্র হিসাবে এর অবস্থান যা ভারতকে এর সঙ্গে সংযুক্ত করে। উত্তর-পূর্ব অঞ্চল এবং যথাক্রমে চীনের বেল্ট-এন্ড-রোড ইনিশিয়েটিভ (বিআরআই) শক্তিশালী করে।
অনুষ্ঠানে ভূ-রাজনীতির বিশেষজ্ঞ ও অনুশীলনকারীরা, আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধি, সরকারি কর্মকর্তা, গবেষক, সাংবাদিক, অনুষদ সদস্য এবং এনএসইউ-এর শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: ঘুমধুম সীমান্তে বিজিবি মহাপরিচালকের সঙ্গে মিয়ানমার বিজিপি’র সঙ্গে কুশালাদি বিনিময়
১ বছর আগে