টেলিযোগাযোগ খাত
বার্সেলোনায় এবারের মতো পর্দা নামল মোবাইল ওয়ার্ল্ড কংগ্রেসের
‘ফাইভজি ও ডাটা পরিচালিত অর্থনীতির অগ্রযাত্রায় যুক্ত হোন’-এই আহ্বানের মধ্য দিয়ে বৃহস্পতিবার স্পেনের বার্সেলোনায় শেষ হয়েছে এ বছরের মোবাইল ওয়ার্ল্ড কংগ্রেস।
শেষ দিনেও মোবাইল ওয়ার্ল্ড কংগ্রেস সেন্টারে বিপুল ভিড় ছিল বিভিন্ন দেশ থেকে আসা টেলিযোগাযোগ খাতের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা ও প্রযুক্তিপ্রেমীদের।
শেষ দিনে বিশ্বের টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি খাতের সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর বৈশ্বিক সংগঠন এবং মোবাইল ওয়ার্ল্ড কংগ্রেসের আয়োজক জিএসএমএ’র রিপোর্টে বলা হয়েছে, ফাইভজি ও ডাটা পরিচালিত অর্থনীতির যাত্রায় বিশ্ব অর্থনীতিতে ২০৩০ সালের মধ্যে মোবাইল টেলিযোগাযোগ খাতের অবদান ছয় ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার ছাড়িয়ে যাবে।
সমাপনী বক্তব্যে জিএসএমএ-এর চেয়ারম্যান হোসে মারিয়া আলভারেজ প্যালেট লোপেজ বলেন, বিশ্বের প্রতিটি দেশেরই উচিত এখন ফাইভজি ও ডাটা নির্ভর সমাজ ও অর্থনীতির উপযোগী হিসেবে নিজেদের প্রস্তুত করা। কারণ, এ যাত্রায় কারও পিছিয়ে পড়ার অর্থ হবে নিজেদের অর্থনীতির অগ্রগতির উজ্জ্বল সম্ভাবনাকে আটকে রাখা।
আরও পড়ুন: বার্সেলোনা মোবাইল ওয়ার্ল্ড কংগ্রেস: ফাইভজি বিপ্লবের ভবিষ্যত সম্ভাবনা প্রদর্শন টেলিকম জায়ান্টদের
তিনি আরও বলেন, এবারের আয়োজন বিশেষভাবে স্মরণীয় হয়ে থাকবে। কারণ, এই কংগ্রেস থেকেই ফাইভজি ও ডাটা নির্ভর আগামী অর্থনীতির গতিময় যাত্রা শুরু হল। আগামী এক বছরের মধ্যেই সমাজ ও রাষ্ট্র ব্যবস্থাপনা থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রায় লক্ষণীয় পরিবর্তন আনবে ফাইভজি ও ডাটা প্রযুক্তি।
চলতি বছরের শেষেই কমপক্ষে ১০০ কোটি মানুষ ফাইভজিতে যুক্ত হবে। হয়তো এখন যা প্রত্যাশা করা হচ্ছে বছর শেষে সেই সংখ্যা আরও বেশি কিংবা দিগুনও হতে পারে। ফাইভজি ও ডাটা প্রযুক্তির অগ্রগতির গতি আগের প্রযুক্তির চেয়ে অকল্পনীয় বেশি হবে।
তিনি বলেন, জিএএসএমএ’র রিপোর্ট অনুযায়ী ফাইভজি ২০২৯ সালের মধ্যেই বিশ্বের প্রভাবশালী প্রযুক্তিতে পরিণত হবে। ২০৩০ সালের মধ্যে বিশ্বের ৮৫ শতাংশ মানুষ ফাইভজিতে যুক্ত হয়ে যাবে। ২০২৩ সালের মধ্যেই বিশ্বব্যাপী ফাইভজি সংযোগ ১৫০ কোটিতে পৌঁছাবে এবং ২০৩০ সালের মধ্যে এই সংযোগের পরিমাণ কমপক্ষে ৫০০ কোটি হবে।
আলভারেজ বলেন, ফাইভজি ২০৩০ সালের মধ্যে বিশ্ব অর্থনীতিতে আরও ১ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার (এক হাজার বিলিয়ন) যোগ করবে এবং প্রতিটি সেক্টরকে যুক্ত করবে। বিশেষ করে নাগরিক পরিষেবা ও শিল্প উৎপাদন খাতে সবচেয়ে বেশি অবদান রাখবে ফাইভজি। সার্বিকভাবে ২০৩০ সালের মধ্যে বিশ্ব অর্থনীতিতে টেলিযোগাযোগ খাতের অবদান ছয় ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার ছাড়িয়ে যাবে।
আরও পড়ুন: মোবাইল ওয়ার্ল্ড কংগ্রেসে হুয়াওয়ের পাঁচটি অ্যাওয়ার্ড অর্জন
জিএসএমএ চেয়ারম্যান বলেন, ফাইভজি ও ডাটা নির্ভর প্রযুক্তির অর্থনীতিতে যুক্ত হতে ছোট-বড় সব দেশকেই এ বছরের মধ্যেই প্রস্তুতি নিতে হবে। কারণ, ফাইভজি প্রযুক্তির বিকাশের গতির সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলার জন্য প্রস্তুতি না থাকলে ডাটানির্ভর স্মার্ট অর্থনীতির বিপুল সম্ভাবনা থেকে বঞ্চিত হতে হবে। আর সেটা কোনো দেশের ক্ষেত্রে ঘটলে তা পুরো বৈশ্বিক অর্থনীতির অগ্রযাত্রার উপরই নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। এ কারণে ডাটা নির্ভর সমাজ ও অর্থনীতিতে কারও পিছিয়ে পড়ার কিংবা রাখার সুযোগ নেই।
জিএমএমএ চেয়ারম্যান ছোট অর্থনীতির দেশগুলোকে ফাইভজি ও ডাটানির্ভর সমাজ এবং অর্থনীতির জন্য প্রস্তুত করে তুলতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনের আহ্বান জানান।
২০২৪ সালে বার্সেলোনায় মোবাইল ওয়ার্ল্ড কংগ্রেস অনুষ্ঠিত হবে ২৬ থেকে ২৯ ফেব্রুয়ারি।
আরও পড়ুন: বিশ্বের সবচেয়ে দ্রুতগতির ইন্টারনেট কোন দেশে?
১ বছর আগে