অমুসলিম
জুলুমের শিকার হলে প্রতিবাদ করবেন, আমাদের সাথে রাখবেন: অমুসলিমদের উদ্দেশে জামায়াত আমির
অমুসলিমদের ওপর কোনো জালেম জুলুম করলে তা প্রতিরোধ ও প্রতিবাদ করতে জামায়াতকে সঙ্গে রাখার আহ্বান জানিয়েছেন দলটির আমির ডা. শফিকুর রহমান।
তিনি বলেন, ‘আগামীতে কোনো জালেম যদি আপনাদের(অমুসলিম) উপর জুলুম করে আপনারা প্রতিবাদ করবেন, প্রতিরোধ করবেন, আমাদেরকে সাথে রাখবেন। আমরা চাইনা জুলুমের শিকার হয়ে কেউ ধুকে ধুকে কষ্ট পাক; তার প্রিয় জন্মস্থান ছেড়ে অন্যত্র চলে যাক।’
আরও পড়ুন: জামায়াত আমিরের সাথে ইইউ রাষ্ট্রদূতের সাক্ষাৎ
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ‘আমি আমার জন্মস্থানে থাকবো এবং সম্মানের সাথে থাকব। যারা অতীতে এই অপরাধ করেছেন তাদের চিহ্নিত করে যার হক তাকে ফিরিয়ে দেওয়া হোক। সে তার হক বুঝে পাক।’
মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) দুপুরে কুলাউড়া উপজেলা জামায়াতের আয়োজনে কেন্দ্র ঘোষিত দেশব্যাপী গণসংযোগ পক্ষ পালন উপলক্ষে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের নিয়ে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, দেশ আমাদের সবার সুতরাং এদেশে আমরা মর্যাদা ও শান্তির সঙ্গে নিরাপদে বসবাস করতে চাই। বিগত ১৫ বছর আমাদের উপর বিভিন্নভাবে জুলুম নির্যাতন গিয়েছে। এর অবসান হয়েছে গত ৫ আগস্ট। ঐ রাতেই আমি আমার দলের সকল সহকর্মীকে আহ্বান জানিয়েছি আল্লাহর ওয়াস্তে কারও উপর কোনো প্রতিশোধ নেবেন না। জাতিকেও একই কথা বলেছি।
তিনি বলেন, আপনাদের স্মরণ থাকার কথা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছিলেন তাদের সরকারের পতন হলে কমপক্ষে ৫ লাখ লোককে হত্যা করা হবে। এরকম হলে প্রত্যেক গ্রামে এক দুইজন লোক মারা যেত। এরকম হয় নাই। প্রতিহিংসা এবং প্রতিশোধ কখনো শান্তি বয়ে আনতে পারে না।
জামায়াতপ্রধান বলেন, আমরা রাষ্ট্রের দায়িত্বে আমরা যাই আর নাই যাই, আপনাদের সাথে আছি। আমরা আপনাদের সঙ্গে থাকব। রাষ্ট্রের দায়িত্বে কে যাবে না যাবে, সেটা আল্লাহ ফায়সালা করবেন। যারা জোর করে ক্ষমতা নেয়, তারা অপদস্থ এবং অপমানিত হয়। তারা যেমন রাষ্ট্রের সেবাও ভালোভাবে করতে পারে না, তেমনিভাবে তারা পদে পদে অপমানিত ও অপদস্থ হয়। ৫ আগস্ট পরবর্তী সময়ে জামায়াতের নেতাকর্মীরা সংখ্যালঘুদের বাড়িঘর পাহারা দিয়েছে। আমাদের নেতাকর্মী কোনো ধ্বংসাত্মক কাজে জড়িত ছিলেন না।
শফিকুর রহমান বলেন, অন্যায় অপরাধ করে থাকলে তার বিরুদ্ধে মামলা হবে। যিনি মামলা দায়ের করবেন অপরাধ প্রমাণ করার দায়িত্ব তার। যদি তিনি অপরাধ প্রমাণ করতে পারেন তাহলে সেই অপরাধী সংবিধান অনুযায়ী শাস্তি পাবে। আমি কে আইন হাতে তুলে নেবার? আইন হাতে তুলে নিয়ে আরেকজনকে খুন করা, আঘাত করা, বাড়ি লুট করার ও বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার আমি কে? রাষ্ট্র কী আমাকে এই অধিকার দিয়েছে? না, কাউকে দেয়নি।
আরও পড়ুন: আগে স্থানীয় নির্বাচন দিয়ে সক্ষমতা যাচাই করুন: সরকারকে জামায়াত আমির
কুলাউড়া উপজেলা আমির অধ্যাপক আব্দুল মুন্তাজিমের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি বেলাল আহমদ চৌধুরীর পরিচালনায় মতবিনিময় সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন সিলেট মহানগর জামায়াতের আমির মো. ফখরুল ইসলাম, সিলেট জেলা আমির মাওলানা হাবিবুর রহমান, মৌলভীবাজার জেলা জামায়াতের আমির ইঞ্জিনিয়ার শাহেদ আলী, সেক্রেটারি ইয়ামীর আলী প্রমুখ।
এছাড়াও বক্তব্য দেন কুলাউড়া পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি ডা. অরুনাব দে, সাধারণ সম্পাদক অজয় দাশ, সদস্য অশোক ধর, কুলাউড়া ডিগ্রি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ সৌম্য প্রদীপ ভট্টাচার্য্য ও পূজা উদযাপন পরিষদ কুলাউড়া পৌরসভার আহবায়ক বিচিত্র দে।
২১৯ দিন আগে
সরকারিভাবে আহমদিয়াদের ‘অমুসলিম’ ঘোষণার দাবি জামায়াতের
সরকারের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে আহমদিয়া(কাদিয়ানি) সম্প্রদায়কে ‘অমুসলিম’ ঘোষণা করার দাবি জানিয়ে ৫ মার্চ একটি বিবৃতি দিয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা এটিএম মাসুম।
জামায়াতের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত বিবৃতিতে বলা হয়েছে: ‘বাংলাদেশ একটি মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ যেখানে ৯০ শতাংশ মানুষ মুসলিম। এদেশে কাদিয়ানী (আহমাদিয়া) সম্প্রদায় ইসলামের বিরুদ্ধে বেপরোয়া কর্মকাণ্ড চালাচ্ছে। ইসলামপ্রেমী জনগণ এটা কখনোই মেনে নেবে না। এক্ষেত্রে সরকারের ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ।’
বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, ‘সরকারের উচিত জনগণের মতামতের প্রতি পূর্ণ মনোযোগ দিয়ে কাদিয়ানি সংকট স্থায়ীভাবে সমাধান করা এবং কাদিয়ানিকে আনুষ্ঠানিকভাবে অমুসলিম ঘোষণা করা।’
শুক্রবার, একটি আহমদিয়া ধর্মীয় অনুষ্ঠানের বিরুদ্ধে একটি প্রতিবাদ মিছিল পঞ্চগড়ের আহমদনগর এলাকার দিকে অগ্রসর হয়। খবরে বলা হয়, পুলিশ চৌরঙ্গী মোড়ে মিছিলটি থামানোর সঙ্গে সঙ্গে লোকজন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু করে।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে মিছিল বের করার সময় জামায়াত-শিবিরের ৭ নেতাকর্মী আটক
পুলিশ তাদের ছত্রভঙ্গ করতে রাবার বুলেট ও কাঁদানে গ্যাসের শেল নিক্ষেপ করেছে বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন।
সংঘর্ষে দুইজন নিহত এবং পুলিশ সদস্যসহ বহু লোক আহত হয়। আহতদের মধ্যে সহিংসতা কভার করা কয়েকজন সাংবাদিকও রয়েছেন। পঞ্চগড় শহরের দোকানপাট বন্ধ করে দেয়া হয়েছে সহিংসতার কারণে মানুষের মধ্যে আতঙ্ক।
বিক্ষুব্ধ জনতা আহমেদনগরে অবস্থিত আহমদিয়া সম্প্রদায়ের প্রায় ২০টি বাড়িও লুট করে।
দ্য ডেইলি স্টারে আজ প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পঞ্চগড় জেলার আহমদিয়া সম্প্রদায় আরও হামলার আশঙ্কায় দিনযাপন করছে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, সম্প্রদায়ের অনেক সদস্য, বিশেষ করে বৃদ্ধ, নারী ও শিশুরা তাদের ঘরবাড়ি ছেড়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বা আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে আশ্রয় নিচ্ছেন।
এদিকে, শুক্রবারের সহিংসতার পর থেকে, বাশেরকেল্লার যাচাইকৃত অ্যাকাউন্ট থেকে - ‘জামায়াতের মুখপত্র’ হিসাবে পরিচিত - হ্যাশট্যাগে ‘পুলিশের বর্বরতা’ এবং ‘কাদিয়ানি (আহমাদিয়া) বয়কট করুন’ সহ একাধিক টুইট পোস্ট করা হয়েছে।
সম্প্রদায়ের সদস্যরা এটিকে আহমদিয়াদের বিরুদ্ধে একটি ‘ঘৃণাত্মক প্রচারণা’ বলে অভিহিত করছেন।
আরও পড়ুন: দিনাজপুরে জামায়াত শিবিরের ৭ নেতাকর্মী আটক
১০০৪ দিন আগে