অ্যাসিড
বাবা-মাসহ অ্যাসিড সন্ত্রাসের শিকার ১৮ মাসের শিশু
বরিশালে দুর্বৃত্তদের নিক্ষেপ করা অ্যাসিডে শরীরের বিভিন্ন অংশ ঝলসে গেছে ১৮ মাসের এক কন্যা শিশুর।
সেইসঙ্গে তার মা-বাবাও অ্যাসিড সন্ত্রাসের শিকার হয়েছেন। ধার নেওয়া টাকা ফেরত চাওয়ায় এ ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।
এই ঘটনায় দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
আরও পড়ুন: রাজশাহীতে দুর্বৃত্তের ছোড়া অ্যাসিডে মাদরাসার শিক্ষার্থী দগ্ধ
শুক্রবার (২৬ জানুয়ারি) রাতে সদর উপজেলার চর নেহালগঞ্জ এলাকার রশিদ হাওলাদারের বাড়িতে অ্যাসিড সন্ত্রাসের ঘটনাটি ঘটে।
অ্যাসিডে মুখমণ্ডল ঝলসে যাওয়া রশিদ হাওলাদারের ছেলে ও দিনমজুর রিয়াজ হাওলাদার জানান, প্রতিবেশী ও সম্পর্কে চাচাতো ভাই ফিরোজ ও মিরাজদের সঙ্গে তার জমিজমাসংক্রান্ত বিরোধ রয়েছে। কয়েক বছর আগে তার কাছ থেকে ফিরোজ ও মিরাজ ১ লাখ টাকা ধার নিয়েছিলেন। ওই টাকা চাইতে গেলে বিভিন্ন সময় নানা টালবাহানা ও হুমকি-ধমকি দিয়ে আসছিলেন চাচাতো ভাইয়েরা।
রিয়াজ বলেন, আমার স্ত্রী খাদিজা বেগম, ১৮ মাসের শিশু সন্তান জান্নাতী ও আমি বিছানায় শুয়ে ছিলাম। শুক্রবার রাত ৯টার পরে হঠাৎ করে বসতঘরের জানালা দিয়ে তরল অ্যাসিড নিক্ষেপ করে দুর্বৃত্তরা।
ওইসময় চাচা খালেক হাওলাদারের ছেলে ফিরোজ-মিরাজের সঙ্গে নিজাম ও নাসির ছিল বলে দাবি করছেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, তাদের ছোঁড়া অ্যাসিডে আমার স্ত্রীর শরীরের পেছনের অংশ এবং শিশু জান্নাতী ও আমার মুখসহ বেশ কিছু অংশ পুড়ে ফোসকা পড়ে গেছে। পরে স্থানীয়রা আমাদের রাতেই বরিশাল শের ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসে।
রিয়াজের স্ত্রী খাদিজা বেগম বলেন, টাকা-পয়সা ও জমিজমা নিয়ে বিরোধ থাকলে আমাদের সঙ্গে আছে কিন্তু অবুঝ শিশু সন্তানটি কী দোষ করেছে। ওর গায়ে অ্যাসিড নিক্ষেপ করার কি দরকার ছিল। আমি এর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।
আরও পড়ুন: ঘুমের মধ্যে ব্যাটারির অ্যাসিড পুশ করে স্বামীকে হত্যা
এদিকে স্থানীয় একটি সূত্রে জানা গেছে, এ ঘটনায় এখনও থানায় লিখিত অভিযোগ দেওয়া না হলেও পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে অ্যাসিড নিক্ষেপের সত্যতা পেয়েছে।
সেই সঙ্গে এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তারের অভিযান চালাচ্ছে। তবে ঘটনার পর থেকেই অভিযুক্তরা আত্মগোপনে রয়েছে।
বন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রহমান মুকুল জানান, পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে, যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার পাশাপাশি এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।
ওসি আরও জানান, এর আগে শুক্রবার রাতে বরিশাল সদর উপজেলার চর নেহালগঞ্জ এলাকার রশিদ হাওলাদারের বাড়িতে অ্যাসিড সন্ত্রাসের ওই ঘটনা ঘটে।
আরও পড়ুন: যশোরে সাবেক স্বামীর ছোড়া অ্যাসিডে স্ত্রী দগ্ধ
৯ মাস আগে
নারী ফুটবলারদের মারধর: মামলা তুলে নিতে অ্যাসিড নিক্ষেপের হুমকি
খুলনায় চার নারী ফুটবলারকে মারধরের পর এবার মামলা তুলে নিতে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে আসামিদের বিরুদ্ধে। মামলা তুলে না নিলে তাদের শরীরে অ্যাসিড নিক্ষেপের হুমকিও দেওয়া হয়েছে বল জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।
এ ঘটনায় মামলার বাদী ও ভুক্তভোগী নারী ফুটবলার সাদিয়া নাসরিন থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন।
খুলনার বটিয়াঘাটা উপজেলার তেঁতুলতলা সুপার কুইন ফুটবল একাডেমির খেলোয়াড় সাদিয়া নাসরিন বলেন, হামলাকারীরা আমাদের চারজনকে মারধর করেছে। হামলাকারী সালাউদ্দিন আমাদের হত্যার হুমকিও দিয়েছে। মামলা তুলে না নিলে অ্যাসিড মেরে মুখ ঝলসে দেওয়ারও ভয় দেখিয়েছে। এ ছাড়া তারা নিজেরা নিজেদের ক্ষতি করে আমার টিমের সদস্যদের পরিবারের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করবে বলেও হুমকি দিয়েছে। এরপর তারা গালিগালাজ করে চলে যায়। আমি থানায় জিডি করেছি। এ ঘটনায় আমরা সবাই উদ্বিগ্ন।
আরও পড়ুন: সাফজয়ী নারী ফুটবলার রূপনা চাকমার ঘর হস্তান্তর
সাদিয়া নাসরিনের অভিযোগে বলা হয়, গত ২৭ জুলাই বৃহস্পতিবার একাডেমিতে অনুশীলন করার সময় নূপুর খাতুন নামে প্রতিবেশী এক মেয়ে তার ছবি তুলেন। পরে বাড়িতে গিয়ে তার বাবা-মাকে সেই ছবি দেখিয়ে আজেবাজে মন্তব্য করে আসেন। সাদিয়া ২৯ জুলাই শনিবার বিষয়টি সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে নূপুর অকথ্য ভাষায় তাকে গালাগাল করেন। প্রতিবাদ করলে তাকে এলোপাতাড়ি কিল, চড়, ঘুষি মেরে মুখ ও বুকের বিভিন্ন স্থানে জখম করেন।
সাদিয়া বলেন, বাড়িতে গিয়ে আমি বাবা-মা, কোচ ও অন্য খেলোয়াড়দের ঘটনাটি জানাই। তারা আমাকে নিয়ে সন্ধ্যার দিকে নূপুর খাতুনের বাড়িতে যান। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে নূপুর, তার বাবা নূর আলম খাঁ, ভাই সালাউদ্দিন ও নূপুরের মা রঞ্জি বেগম আমাদের উপর হামলা করে। এতে মঙ্গলী, হাজেরা ও জুঁই আহত হয়। তারা লোহার রড দিয়ে আমাদের উপর হামলা চালায়, চায়নিজ কুড়াল নিয়ে এসে হত্যার হুমকি দেয়।
মারধরের শিকার ফুটবলার হাজেরা খাতুন, জুঁই মণ্ডল ও রিতু বৈরাগী জানান, আগে প্রতিদিন প্রায় ৩০ জন অনুশীলনে মাঠে আসত। এখন আসে ১০-১৫ জন।
বটিয়াঘাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন ফুটবলার মঙ্গলী বাগচী বলেন, নূপুর ও তার পরিবারের লোকজন আমাদের মারধর করেছে। রড দিয়ে পিটিয়ে আমার মাথা ফাটিয়ে দিয়েছে। তারা ওড়না দিয়ে প্রায় ২ ঘণ্টা আমাকে বেঁধে রাখে।
তিনি আরও বলেন, ওরা বলেছে, হাফ প্যান্ট-জার্সি পরে গ্রামের মাঠে ফুটবল খেলা যাবে না। শুধু তাই নয়, ওরা অ্যাসিড মেরে আমাদের মুখ ঝলসে দেওয়ার হুমকি দিয়েছে। ঘটনার পর থেকে রাতে ঘুম আসে না। শুধু মনে হয়, এই বোধ হয় আবার হামলা হলো, অ্যাসিড মারল।
তেঁতুলতলা সুপার কুইন ফুটবল একাডেমির সভাপতি ইসলাম হাওলাদার বলেন, হামলার ঘটনায় মেয়েদের মধ্যে আতঙ্কে বিরাজ করছে। অনুশীলনের জন্য ডেকে ডেকে আনতে হচ্ছে। আগে কোনো দিন গ্রামের কেউ ফুটবল খেলা নিয়ে মেয়েদের উত্ত্যক্ত বা কটূক্তি করেনি। কিন্তু নূর আলমের পরিবার এবার ঝামেলা বাধিয়েছে।
এদিকে হত্যার উদ্দেশ্যে হামলা ও মারধরের অভিযোগে গত ৩০ জুলাই রবিবার সাদিয়া নাসরিন বাদী হয়ে নূপুর, তার বাবা নূর আলম খাঁ, ভাই সালাউদ্দিন ও নূপুরের মা রঞ্জি বেগমকে আসামি করে বটিয়াঘাটা থানায় মামলা করেন। মামলার পর পরই পুলিশ নূর আলমকে গ্রেপ্তার করে।
বটিয়াঘাটা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শওকত কবির জানান, অ্যা্সিড নিক্ষেপের হুমকির অভিযোগে সাদিয়া গত ৩১ জুলাই একটি জিডি করেন। মামলা ও জিডির তদন্ত চলছে। জিডির বিষয়ে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নিতে বটিয়াঘাটা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) কৌশিক কুমার সাহাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, নূর আলম বর্তমানে কারাগারে। তবে অন্য তিন আসামি মঙ্গলবার আদালত থেকে জামিন পেয়েছে। প্রতিদিন পুলিশ ওই গ্রামে টহল দিচ্ছে। মেয়ে ও তাদের অভিভাবকদের বলেছি, কোনো সমস্যা মনে করলে সঙ্গে সঙ্গে জানাতে, আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।
এদিকে ফুটবলারদের মারধরের প্রতিবাদে ও দোষীদের শাস্তির দাবিতে বেলা সাড়ে ১১টায় খুলনা প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধন করেছে বাংলাদেশ দলিত ও বঞ্চিত জনগোষ্ঠির অধিকার আন্দোলন, খুলনা ।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, ফুটবল খেলার জন্য সাদিয়া নাসরিন, মঙ্গলী বাগচীসহ চারজনকে মারধর করা হয়েছে।এদিকে আসামিদের ৩ জন জামিন পেয়ে এসিড নিক্ষেপের হুমকি দিচ্ছে। হামলাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন তারা।
সংগঠনের খুলনা জেলা কমিটির সভাপতি সুব্রত কুমার মিস্ত্রীর সভাপতিত্বে সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি বিভুতোশ রায়, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক নিশিত রঞ্জন মিস্ত্রী, গীতা ফাউন্ডেশনের সভাপতি প্রসেনজিৎ দত্তসহ আরও অনেকে ছিলেন।
আরও পড়ুন: আইফোন ও টাকা পেলেন সাফ নারী চ্যাম্পিয়ন দলের তিন ফুটবলার
রাঙামাটিতে সাফজয়ী ৫ নারী ফুটবলারকে উষ্ণ সংবর্ধনা
১ বছর আগে
ঘুমের মধ্যে ব্যাটারির অ্যাসিড পুশ করে স্বামীকে হত্যা
পরকীয়ার জেরে ঝগড়ার পর স্বামীকে খাবারের সঙ্গে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে খাওয়ান স্ত্রী। এরপর স্বামী ঘুমিয়ে গেলে সন্ধ্যায় মোবাইল ফোনের ব্যাটারি থেকে নিসৃত অ্যাসিড সিরিঞ্জের মাধ্যমে শিরায় পুশ করেন। আর এতেই তার মৃত্যু হয়।
অভিযুক্ত শেফালি বেগম (২৬) মঙ্গলবার দুপুরে এভাবেই স্বামীকে হত্যার মিশন চালান বলে পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছেন।
আরও পড়ুন: সিরাজগঞ্জে স্বামীকে হত্যায় জড়িত থাকার অভিযোগে স্ত্রী গ্রেপ্তার
শেফালি যশোর শহরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে আয়া হিসেবে কাজ করেন। শেফালি বেগমের স্বামী নিহত জহির হাসান (৩৮) যশোর শহরের হুশতলার মৃত হোসেন আলীর ছেলে।
যশোর কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তাজুল ইসলাম জানান, শেফালির সঙ্গে শহরের শংকরপুর এলাকার রবিউল সরদার নামের এক যুবকের পরকীয়ার সম্পর্ক রয়েছে।
এ নিয়ে গত সোমবার (৮ মে) শেফালির সঙ্গে জহিরের কথা কাটাকাটি হয়। এরপরই মঙ্গলবার মৃত্যু হয় জহিরের। এ ঘটনায় শেফালি বেগমকে আটক করেছে পুলিশ।
কিন্তু রাতে শেফালি জহির হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েছে বলে পরিবারের কাছে জানান।
ওসি আরও জানান, পরিবারের সদস্যদের কাছ থেকে জহিরের স্ত্রীর পরকীয়া ও এ নিয়ে দাম্পত্য কলহের কথা জেনে শেফালিকে হেফাজতে নেয় পুলিশ।
জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে তিনি স্বামীকে হত্যার কথা স্বীকার করেন এবং ঘটনার বর্ণনা দেন।
আরও পড়ুন: গাজীপুরে স্বামীকে হত্যার অভিযোগে স্ত্রী গ্রেপ্তার
চাঁদপুরে স্বামীকে হত্যার দায়ে স্ত্রীর যাবজ্জীবন
১ বছর আগে