ব্রিকস
যেকোনো ফরম্যাটে ব্রিকসে যোগ দিতে ভারতের সমর্থন চায় বাংলাদেশ
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ব্রিকস গ্রুপের সদস্য বা অংশীদার দেশ হিসেবে যেকোনো ফরম্যাটে যোগ দিতে ভারতের সমর্থন চেয়েছে বাংলাদেশ।
শনিবার (২২ জুন) নয়া দিল্লিতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকসহ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিভিন্ন কর্মসূচির ফলাফল নিয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে তিনি এ কথা বলেন।
আরও পড়ুন: বেনজীরের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়নি : পররাষ্ট্রমন্ত্রী
তিনি বলেন, 'আমরা যেকোনো ফরম্যাটে ব্রিকসে যোগ দিতে ভারতের সমর্থন চেয়েছি।’
বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ভারত এ বিষয়ে ইতিবাচক সাড়া দিয়েছে (ব্রিকস-এ যোগদানে বাংলাদেশকে সহায়তা করার বিষয়ে)।
তিনি বলেন, ব্রিকস যদি নতুন সদস্য বা অংশীদার দেশ যুক্ত করার সিদ্ধান্ত নেয়, তাহলে বাংলাদেশ যেভাবেই হোক ব্রিকসের সঙ্গে যুক্ত হতে চায়।
ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত, চীন, দক্ষিণ আফ্রিকা, ইরান, মিশর, ইথিওপিয়া ও সংযুক্ত আরব আমিরাত- এই ৯টি দেশ নিয়ে ব্রিকস একটি আন্তঃসরকারি সংস্থা।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আমন্ত্রণে দুই দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে শুক্রবার ভারতে পৌঁছান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
শনিবার শুধু শেখ হাসিনা ও নরেন্দ্র মোদির (টেট-এ-টেট) মধ্যে বৈঠক হয়েছে। এছাড়া দ্বিপক্ষীয় প্রতিনিধি পর্যায়ের বৈঠকে বাংলাদেশ দলের নেতৃত্ব দেন এবং হায়দরাবাদ হাউসে ১০টি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) সইয়ের সময় উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
আরও পড়ুন: রেমিট্যান্স পাঠিয়ে অর্থনীতিতে অবদান রাখায় প্রবাসীদের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর অভিনন্দন
ক্ষমতার বাইরে থাকা বিএনপি নেতাদের আর সহ্য হচ্ছে না: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
৫ মাস আগে
ব্রিকস তহবিল পেতে নিউ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক বিল-২০২৩ সংসদে পাস
ব্রিকস-এর ঋণদানকারী শাখা থেকে তহবিল গ্রহণ করতে সংসদে নিউ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক বিল-২০২৩ পাস হয়েছে।
বুধবার (১ নভেম্বর) অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের অনুপস্থিতিতে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বিলটি উত্থাপন করেন। পরে তা কণ্ঠভোটে পাস হয়।
বিলের উদ্দেশ্য অনুযায়ী ২০১৪ সালে নিউ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (এনডিবি) নামে একটি বহুজাতিক ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করে ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত, চীন ও দক্ষিণ আফ্রিকার সমন্বয়ে গঠিত ব্রিকস জোট।
বর্তমানে পাঁচটি প্রতিষ্ঠাতা সদস্য এবং বাংলাদেশ, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও মিশরসহ মোট আটটি দেশ এর সদস্য।
আরও পড়ুন: ব্রিকসে অন্তর্ভুক্ত না হওয়া নিয়ে আশাহত হওয়ার কোনো কারণ নেই: পররাষ্ট্র সচিব
ব্যাংকের আর্টিকেল অব এগ্রিমেন্ট অনুসারে, নিউ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক সম্পর্কিত চুক্তিটি অনুমোদন করা প্রয়োজন।
নিউ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক প্রতিষ্ঠার মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে অবকাঠামো ও টেকসই উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে উন্নয়নশীল দেশগুলোকে আর্থিক সহায়তা দেওয়া।
ব্যাংকটির অনুমোদিত মূলধন ৫০ বিলিয়ন ডলার, যার মধ্যে পেইড-ইন-শেয়ার ১০ বিলিয়ন ডলার এবং কলযোগ্য শেয়ার ৪০ বিলিয়ন ডলার।
বাংলাদেশের মোট শেয়ার ৯ হাজার ৪২০ এবং সাবস্ক্রিপশনের পরিমাণ পরিশোধিত মূলধন হিসাবে ৯৪২ মিলিয়ন ডলার।
বাংলাদেশের পরিশোধযোগ্য অর্থের পরিমাণ ১৮৮ দশমিক ৪০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার (আনুমানিক ২ হাজার ৮১ কোটি ৮২ লাখ টাকা), যা সাতটি কিস্তিতে পরিশোধযোগ্য।
আরও পড়ুন: ব্রিকস সম্মেলনে অংশ নেওয়ায় বিশ্ব নেতারা বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের ভালো ধারণা পেয়েছেন: প্রধানমন্ত্রী
২০২১ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর 'ইনস্ট্রুমেন্ট অব অ্যাকসেশন' সইয়ের মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংকটির সদস্য পদ লাভ করে। এনডিবির আর্টিকেল অব এগ্রিমেন্টের (এওএ) ৪৮ নম্বর অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, নিউ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক সম্পর্কিত চুক্তিটি অনুমোদন করা প্রয়োজন।
উক্ত অনুমোদন অনুযায়ী এবং অন্যান্য বহুজাতিক ব্যাংকের মতো এনডিবিকে তার লক্ষ্য ও কার্যক্রম অর্জনের জন্য মর্যাদা, স্থিতি, সুবিধা ও কর/ভ্যাট থেকে অব্যাহতি প্রদানের জন্য নতুন আইন প্রণয়ন করতে হবে।
আইবিআরডি ও আইএমএফের জন্য আন্তর্জাতিক আর্থিক সংস্থা আদেশ-১৯৭২, এডিবির জন্য এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক আদেশ- ১৯৭৩, আইডিবির জন্য ইসলামিক ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক অ্যাক্ট-১৯৭৫ এবং ইন্টারন্যাশনাল ফাইন্যান্স কর্পোরেশন ফর ইন্টারন্যাশনাল ফাইন্যান্স কর্পোরেশন অ্যাক্ট-২০১৫ এবং সম্প্রতি এআইআইবির জন্য এশিয়ান ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংক অ্যাক্ট-২০১৬ প্রণয়ন করা হয়েছে।
এই প্রেক্ষাপটে নিউ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক আইন, ২০২৩ প্রণয়নের প্রস্তাব করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: জাতীয় সংসদে আনসার ব্যাটালিয়ন বিল, ২০২৩ উত্থাপন
১ বছর আগে
ব্রিকসে অন্তর্ভুক্ত না হওয়া নিয়ে আশাহত হওয়ার কোনো কারণ নেই: পররাষ্ট্র সচিব
পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন রবিবার (২৭ আগস্ট) বলেছেন, উন্নয়নশীল অর্থনীতির ব্রিকস ব্লকে বাংলাদেশ অন্তর্ভুক্ত না হওয়ায় আশাহত হওয়ার কোনো কারণ নেই। কারণ বাংলাদেশ আগে থেকেই ব্রিকসের নিউ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের (এনডিবি) অংশ।এক প্রশ্নের জবাবে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, রাজনৈতিক ও আঞ্চলিক অনেক বিষয় রয়েছে এবং ভারসাম্য রক্ষার বিষয় রয়েছে।
পররাষ্ট্র সচিব বলেন, যদি তারা গত ১৫ বছরে ব্রিকসের বাস্তব ফলাফলের দিকে তাকান, শুধুমাত্র তাদের উল্লেখযোগ্য অর্জন হলো এনডিবি।
তিনি বলেন, ‘যেহেতু আমরা এনডিবির একটি অংশ রয়েছি, তাই হতাশ হওয়ার কোনো কারণ নেই।’
মাসুদ বিন মোমেন বলেন, এটি প্রথম পর্যায় এবং পরবর্তী পর্বে বাংলাদেশ অন্তর্ভুক্ত হবে বলে আশাবাদী। ‘সুতরাং আমাদের আরও সময় আছে।’
তিনি বলেন, ভৌগোলিক ভারসাম্য রক্ষার চেষ্টা ছিল এবং আমরা ছাড়াও আরও আগ্রহী দেশ ছিল। কিন্তু তারাও (ব্রিকস) সদস্যপদ পায়নি। ‘এটি একটি চলমান প্রক্রিয়া।’
ইরান, সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, আর্জেন্টিনা, মিশর ও ইথিওপিয়া ছিল সদ্য সমাপ্ত সম্মেলনে ব্রিকসে যোগদানের জন্য আমন্ত্রিত ছয়টি দেশ।
এই দেশগুলো ১১-জাতির ব্লক তৈরি করতে ২০২৪ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ব্রিকসে যোগ দিতে প্রস্তুত।
আরও পড়ুন: ব্রিকস সম্মেলনে বিদেশি নেতারা প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে বাংলাদেশের উন্নয়নের ভূয়সী প্রশংসা করেন: মোমেন
ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাসিও লুলা দা সিলভা, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং এবং দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসা জোহানেসবার্গে আয়োজিত শীর্ষ সম্মেলনে দুই দিনের আলোচনার পর এই ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ভার্চুয়ালি আলোচনায় অংশ নেন।
দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট মাতামেলা সিরিল রামাফোসার আমন্ত্রণে ব্রিকস সম্মেলনে যোগ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
ব্রিকস একটি ঐকমত্য-ভিত্তিক সংস্থা, যার সিদ্ধান্তে সকল সদস্যদের একমত হওয়া প্রয়োজন।
২০০৯ সালে ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত ও চীনকে নিয়ে এই ব্লকটি গঠিত হয়েছিল এবং ২০১০ সালে দক্ষিণ আফ্রিকা এতে যোগ দেয়।
এপি’র তথ্য অনুসারে, ব্রিকস বর্তমানে বিশ্বের জনসংখ্যার প্রায় ৪০ শতাংশ এবং বিশ্বের জিডিপির এক চতুর্থাংশেরও বেশি প্রতিনিধিত্ব করে। যা আরও বৃদ্ধি পেতে চলেছে।
গ্লোবাল সাউথের কণ্ঠস্বরকে ছড়িয়ে দেওয়া ব্রিকসের একটি লক্ষ্য।
সাম্প্রতিক শীর্ষ সম্মেলনে প্রতিনিধিত্বকারী পাঁচটি বর্তমান সদস্য এবং কয়েক ডজন উন্নয়নশীল দেশ বারবার একটি ন্যায্য বিশ্বব্যবস্থা এবং জাতিসংঘ, আইএমএফ ও বিশ্বব্যাংকের মতো আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর সংস্কারের আহ্বান জানিয়েছে।
আরও পড়ুন: ব্রিকসকে বিশ্বশান্তি ও স্থিতিশীলতার দায়িত্ব নিতে হবে: জোহানেসবার্গে প্রধানমন্ত্রী
গ্লোবাল সাউথে পরিবর্তনের প্রতিনিধি হতে হবে মেয়েদের: ব্রিকস মধ্যাহ্নভোজে প্রধানমন্ত্রী
১ বছর আগে
ব্রিকসকে বিশ্বশান্তি ও স্থিতিশীলতার দায়িত্ব নিতে হবে: জোহানেসবার্গে প্রধানমন্ত্রী
বিশ্বশান্তি, ন্যায়বিচার ও স্থিতিশীলতার দায়িত্ব নিতে ব্রিকসকে বিশ্বের বাতিঘর হিসেবে গড়ে তোলার উপর জোর দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, ‘বহু-মেরুর এ বিশ্বে ব্রিকসকে আমাদের বাতিঘর হিসেবে প্রয়োজন। আমরা আশা করি ব্রিকস বর্তমান সময়ের প্রয়োজনে একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক প্ল্যাটফর্ম হিসেবে আবির্ভূত হবে। অবশ্যই আমাদের শিশু ও তরুণদের কাছে প্রমাণ করতে হবে, আমরা কষ্ট ভোগ করতে পারি, কিন্তু আমরা পরাজিত হই না।’
বৃহস্পতিবার (২৪ আগস্ট) দক্ষিণ আফ্রিকার স্যান্ডটন কনভেনশন সেন্টারে ব্রিকস-আফ্রিকা আউটরিচ ও ব্রিকস প্লাস সংলাপে দেওয়া বক্তৃতায় এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
ব্রিকস হলো ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত, চীন ও দক্ষিণ আফ্রিকার সংক্ষিপ্ত রূপ।
দক্ষিণ আফ্রিকার আয়োজক প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসার আমন্ত্রণে জোহানেসবার্গে ১৫তম ব্রিকস সম্মেলনে যোগ দিয়েছেন শেখ হাসিনা।
গ্লোবাল সাউথের দেশগুলোতে পক্ষপাতদুষ্ট পছন্দ ও বিভাজন সৃষ্টির বিরুদ্ধে কথা বলেছেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের অবশ্যই সর্বজনীন নীতি ও মূল্যবোধকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করার প্রচেষ্টা প্রত্যাখ্যান করতে হবে। আমাদের নিষেধাজ্ঞা ও পাল্টা নিষেধাজ্ঞার চক্র বন্ধ করতে হবে। আমাদের অবশ্যই সব হুমকি, উসকানি ও যুদ্ধের বিরুদ্ধে কথা বলতে হবে।’
তিনি বিপজ্জনক অস্ত্র প্রতিযোগিতার বদলে বিশ্বব্যাপী জনসাধারণের প্রয়োজনীয় পণ্যগুলোতে সম্পদ বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়েছেন।
আরও পড়ুন: গ্লোবাল সাউথে পরিবর্তনের প্রতিনিধি হতে হবে মেয়েদের: ব্রিকস মধ্যাহ্নভোজে প্রধানমন্ত্রী
তিনি আরও বলেন, বিশ্বজুড়ে শান্তি, ন্যায়বিচার ও স্থিতিশীলতার জন্য আমাদের দায়িত্ব নিতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ ঐতিহ্যগতভাবে স্বল্পোন্নত দেশগুলোর পক্ষে কাজ করে আসছে, যাদের অধিকাংশই আফ্রিকার।
তিনি বলেন, ‘আমরা আফ্রিকার বিভিন্ন অংশে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে নিয়োজিত হতে পেরে গর্বিত। মিয়ানমার থেকে আসা ১ দশমিক ২ মিলিয়ন রোহিঙ্গা বাংলাদেশে বসবাস করছে। তাই আমরা বুঝি আফ্রিকায় শরণার্থীদের আতিথেয়তাকারী দেশগুলোর কাঁধের বোঝা কত ভারী।’
এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আফ্রিকা মহাদেশের সঙ্গে খাদ্য উৎপাদন, সাশ্রয়ী মূল্যের ওষুধ, আর্থিক অন্তর্ভুক্তি এবং দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাসে দক্ষতা শেয়ার করতে প্রস্তুত রয়েছে বাংলাদেশ।
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা সন্ত্রাসবাদ, মানব পাচার, সাইবার-অপরাধ ও অর্থপাচার মোকাবিলায় সহযোগিতা বাড়াতে পারি।’
প্রধানমন্ত্রী পারস্পরিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বাড়াতে আকাশ ও সামুদ্রিক যোগাযোগ বাড়ানোর উপর জোর দেন।
সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘একইসঙ্গে আমাদের অবশ্যই আন্তর্জাতিক অর্থায়ন ও প্রযুক্তির জন্য আমাদের পাওনা আদায়ের চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে। আমাদের জলবায়ু ন্যায়বিচার, অভিবাসীদের অধিকার, ডিজিটাল ইক্যুইটি এবং ঋণের স্থায়িত্বের বিষয়গুলোতে ঐক্যবদ্ধ হওয়া দরকার।’
তিনি নিজস্ব মুদ্রা ব্যবহারের সুযোগসহ নিয়মভিত্তিক বহুপক্ষীয় বাণিজ্য ব্যবস্থা সংরক্ষণের দাবি জানান।
বাংলাদেশ সম্পর্কে বলতে গিয়ে তিনি বলেন, টেকসই উন্নয়নে দৃঢ় প্রতিশ্রুতি নিয়ে বাংলাদেশ এখন বিশ্বের ৩৫তম বৃহত্তম অর্থনীতি।
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ২০০৬ সালের দারিদ্র্যের হার ছিল ৪১ দশমিক ৫ শতাংশ। সেখান থেকে কমে ২০২২ সালে ১৮ দশমিক ৭ শতাংশে দাঁড়িয়েছে।
তিনি বলেন, একই সময়ে আমরা চরম দারিদ্র্য ২৫ দশমিক ১ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৫ দশমিক ৬ শতাংশে নিয়ে এসেছি।
তিনি বলেন, তার সরকার সব বাড়িতে বিদ্যুতের ব্যবস্থা করেছে।
আরও পড়ুন: ব্রিকসে যোগদানে বাংলাদেশকে সমর্থন করবে চীন: প্রেসিডেন্ট শি
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা বিনামূল্যের সামাজিক আবাসন প্রকল্প তথা আশ্রয়ণ প্রকল্পের অধীনে গৃহহীনতার অভিশাপ দূর করার পথে এগিয়ে যাচ্ছি।’
তিনি বলেন, মোট সংখ্যার প্রায় ১০৮ শতাংশের মুঠোফোনের সংযোগ রয়েছে, যা বিশ্বব্যাপী গড় সংখ্যার চেয়ে বেশি।
তিনি বলেন, গত অর্থবছরে মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সিস্টেমস ১১১ দশমিক ২৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের লেনদেন রেকর্ড করেছে। যা বিশেষত গ্রামীণ নারীদের ব্যাপকভাবে উপকৃত করেছে।
তিনি বলেন, ‘আমাদের প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে এখন ছেলেদের তুলনায় মেয়েরা বেশি অংশ নিচ্ছে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে গড় আয়ু প্রায় ৭৩ বছর।
তিনি বলেন, গত সপ্তাহে আমরা ১০০ মিলিয়ন মানুষের জন্য ইউনিভার্সাল পেনশন স্কিম চালু করেছি। যার সমস্ত লেনদেন অনলাইনে হচ্ছে। সরকারি কর্মচারীরা আগে থেকেই পেনশন সুবিধা পাচ্ছেন। আমাদের সরকারের পরবর্তী লক্ষ্য ২০৪১ সালের মধ্যে ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ গড়ে তোলা।
তিনি বলেন, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির সঙ্গে তাল মিলিয়ে সরকার নিউ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকে বাংলাদেশের অংশীদারিত্বের যথেষ্ট যোগ্যতা দেখে।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘অবকাঠামো, শিল্প ও ক্লিন এনার্জিতে আমাদের বিনিয়োগকে সমর্থন করার জন্য অর্থায়ন প্রয়োজন। আন্তর্জাতিক আর্থিক কাঠামোর সংস্কারের অপেক্ষা করার সময় আমাদের অবশ্যই কার্যকর বিকল্প থাকতে হবে।’
আরও পড়ুন: দক্ষিণ আফ্রিকায় ব্রিকস শীর্ষ সম্মেলনে মূল আলোচনা শুরু
১ বছর আগে
গ্লোবাল সাউথে পরিবর্তনের প্রতিনিধি হতে হবে মেয়েদের: ব্রিকস মধ্যাহ্নভোজে প্রধানমন্ত্রী
গেলাবাল সাউথে নারী ও মেয়েদের পরিবর্তনের প্রতিনিধি হওয়ার জন্য উপযুক্ত পরিবেশ সৃষ্টি এবং টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা এসডিজি-৫ অর্জনে সবাইকে একযোগে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, ‘গ্লোবাল সাউথে আমাদের নারী ও মেয়েদের পরিবর্তনের প্রতিনিধি হওয়ার জন্য অবশ্যই একটি উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি করতে হবে। এসডিজি-৫ অর্জনে আমাদের সবাইকে একযোগে কাজ করতে হবে।’
বৃহস্পতিবার (২৪ আগস্ট) দক্ষিণ আফ্রিকার জোহানেসবার্গের স্যান্ডটন কনভেনশন সেন্টারে মধ্যাহ্নভোজে প্রধান অতিথির ভাষণে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
১৫তম ব্রিকস শীর্ষ সম্মেলনে অংশগ্রহণকারী রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানদের সম্মানে মধ্যাহ্নভোজের আয়োজন করে জোটটির বর্তমান সভাপতি রাষ্ট্র দক্ষিণ আফ্রিকা।
ব্রিকস সদস্য দেশ এবং অন্যদের দৃষ্টি আকর্ষণ করার জন্য ৫টি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় তুলে ধরেন শেখ হাসিনা।
আরও পড়ুন: ব্রিকস সম্মেলনে যোগ দিতে মঙ্গলবার ঢাকা ছাড়বেন প্রধানমন্ত্রী
সেগুলো হলো-
প্রথমত, আমাদের নারী ও মেয়েদের পুষ্টি, স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তার উপর চলমান খাদ্য, জ্বালানি ও আর্থিক সংকটের বিরূপ প্রভাব প্রশমিত করতে হবে।
দ্বিতীয়ত, মেয়েদের স্কুলে রাখতে অতিরিক্ত প্রচেষ্টা করুন, সাইবার অপরাধ থেকে তাদের সুরক্ষিত রাখুন এবং তাদের মধ্যে সৃষ্ট ক্রমবর্ধমান ডিজিটাল বিভাজন হ্রাস করুন।
তৃতীয়ত, নারীদের লাভজনক কর্মসংস্থান, উপযুক্ত কাজ, মজুরি সমতা ও আর্থিক অন্তর্ভুক্তির সুযোগ প্রসারিত করুন।
চতুর্থত, ক্রমবর্ধমান জলবায়ু প্রভাবের কারণে নারীদের সুরক্ষা ও স্থিতিস্থাপকতার প্রয়োজনীয়তার দিকে গভীরভাবে নজর দিন।
পঞ্চমত, সক্রিয় ও দীর্ঘস্থায়ী রাজনৈতিক ক্যারিয়ার গড়তে নারীদের জন্য সুষম প্রতিযোগিতামূলক ক্ষেত্র গড়ে তুলুন।
আরও পড়ুন: ১৫তম ব্রিকস সম্মেলনে যোগ দিতে দ. আফ্রিকা যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের সংবিধানে নারীর সমান অধিকার নিশ্চিত করা হয়েছে।
তিনি সংবিধানের ২৮(২) অনুচ্ছেদের কথা উল্লেখ করে বলেন, রাষ্ট্র ও জনজীবনের সব ক্ষেত্রে পুরুষের সঙ্গে নারীর সমান অধিকার থাকবে।
তিনি বলেন, ‘আমাদের জাতীয় সংসদে একটি অনন্য ঘটনা রয়েছে। যেখানে আমাদের স্পিকার, সংসদ নেতা, বিরোধী দলীয় নেতা ও সংসদের উপনেতা সবাই নারী।’
শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার সর্বোচ্চ আদালতের বিচারক, বেসামরিক প্রশাসন, সশস্ত্র বাহিনী, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যসহ বিভিন্ন পদে নারীদের জন্য দ্বার উন্মুক্ত করে দিয়েছে।
তিনি বলেন, ‘জাতীয় সংসদ ও স্থানীয় সরকার ব্যবস্থায় নারীদের জন্য ৩০ শতাংশ আসন সংরক্ষিত থাকায় ক্রমবর্ধমান সংখ্যক নারী রাজনীতিতে যুক্ত হচ্ছেন।’
শেখ হাসিনা বলেন, তিনি মনে করেন শিক্ষা ও কর্মসংস্থান দুটি মূল উপাদান, যা নারীর ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করতে পারে।
তিনি বলেন, ‘তাই নারী শিক্ষার উপর বেশি জোর দেওয়া হয়েছে।’
আরও পড়ুন: ব্রিকস সম্মেলনে যোগ দিতে জোহানেসবার্গ পৌঁছেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত মেয়েদের শিক্ষা বিনামূল্যে করা হয়েছে। প্রাক-প্রাথমিক ও প্রাথমিক পর্যায়ে ভর্তির হার বেড়েছে দাঁড়িয়েছে ৯৯ শতাংশে। মেয়ে ও ছেলেদের স্কুলে ভর্তির অনুপাত বেড়ে হয়েছে ৫৩:৪৭।
তিনি আরও বলেন, প্রায় আড়াই কোটি শিক্ষার্থীকে বিভিন্ন উপবৃত্তি ও বৃত্তি কর্মসূচির আওতায় আনা হয়েছে এবং উপবৃত্তির টাকা সরাসরি তাদের মুঠোফোনের মাধ্যমে মা বা বৈধ অভিভাবকদের কাছে পৌঁছানো হয়েছে।
শেখ হাসিনা বলেন, ২০১০ সাল থেকে মাধ্যমিক পর্যায় পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের মাঝে বিনামূল্যে বই বিতরণ করা হচ্ছে। নারী শিক্ষার ক্রমবর্ধমান হার বাল্যবিবাহের হার উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস করেছে।
তিনি বলেন, প্রাথমিক শিক্ষায় ৬০ শতাংশ শিক্ষকের পদ নারীদের জন্য নির্ধারণ করা হয়েছে। কিছুদিন আগে পর্যন্ত সরকারি চাকরিতে নারীদের জন্য ১০ শতাংশ কোটা সংরক্ষিত ছিল।
আরও পড়ুন: ট্রিলিয়ন ডলারের অর্থনীতিতে পরিণত হওয়ার যাত্রায় যোগ দিন: দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যবসায়ীদের প্রধানমন্ত্রী
তিনি আরও বলেন, নারীরা আমাদের রপ্তানিমুখী তৈরি পোশাক শিল্পের মেরুদণ্ড, যেখানে ২৫ লাখ নারী সরাসরি এই খাতে কাজ করছেন। নারীরা ব্যবসায়ও ভালো করছেন এবং সরকার ক্ষুদ্র, ছোট ও মাঝারি উদ্যোগগুলোতে তাদের জন্য ঋণ, প্রশিক্ষণ ও বাজারে প্রবেশাধিকারের ব্যবস্থা করা হয়।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের গ্রামের নারীদের অনেকেই এখন আইটি ফ্রিল্যান্সার বা স্থানীয় ডিজিটাল সেন্টারে অংশীদার হিসেবে কাজ করেন।’
তিনি বলেন, ‘সরকারের সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী কর্মসূচির আওতায় প্রতিবন্ধীসহ সবচেয়ে ঝুঁকিতে থাকা নারীরাও রয়েছেন। আমি আমার বিনামূল্যে আবাসন প্রকল্প আশ্রয়ণের আওতায় স্বামী ও স্ত্রীর যৌথ মালিকানার ব্যবস্থা করেছি।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন এবং প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগবিষয়ক উপদেষ্টা সালমান ফজলুর রহমান অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: গণতন্ত্রের ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশের অগ্রগতি হয়েছে : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
১ বছর আগে
ব্রিকস জোটে যোগ দিতে যাচ্ছে ইরান, সৌদি আরব ও মিশরসহ ৬ দেশ
উন্নয়নশীল অর্থনীতির দেশগুলোর জোট ব্রিকস বৃহস্পতিবার (২৪ আগস্ট) ৬টি দেশকে সদস্য হওয়ার আমন্ত্রণ জানিয়েছে। এর মধ্যে ইরান ও সৌদি আরব রয়েছে।
বাকি দেশগুলোর মধ্যে সংযুক্ত আরব আমিরাত, আর্জেন্টিনা, মিশর ও ইথিওপিয়া ২০২৪ সাল থেকে এই জোটে যোগ দেবে।
দক্ষিণ আফ্রিকার জোহানেসবার্গে ব্রিকস শীর্ষ সম্মেলনে দেশটির প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসা এই ঘোষণা দেন। জোটটির বর্তমান সভাপতি দেশ দক্ষিণ আফ্রিকা।
ব্রিকস বর্তমানে ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত, চীন ও দক্ষিণ আফ্রিকার উদীয়মান অর্থনীতির দেশের সমন্বয়ে গঠিত। এই সদস্য দেশগুলো জোট সম্প্রসারণে এবারের শীর্ষ সম্মেলনে সম্মত হয়েছে।
আরও পড়ুন: ব্রিকসে যোগদানে বাংলাদেশকে সমর্থন করবে চীন: প্রেসিডেন্ট শি
এ নিয়ে দ্বিতীয়বার ব্রিকস সম্প্রসারণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হলো। ২০০৯ সালে ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত ও চীনের সমন্বয়ে জোটটি গঠিত হয়। ২০১০ সালে যুক্ত হয় দক্ষিণ আফ্রিকা। ব্রিকস বিশ্বের জনসংখ্যার প্রায় ৪০ শতাংশকে প্রতিনিধিত্ব করে এবং বৈশ্বিক জিডিপিতে এক চতুর্থাংশেরও বেশি অবদান রাখে।
ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাসিও লুলা দা সিলভা, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংসহ রামাফোসার পাশাপাশি এই শীর্ষ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন জোটের আরও তিন নেতা।
ইউক্রেন থেকে শিশু অপহরণের অভিযোগে গত মার্চে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করায় তিনি সম্মেলনে সশরীরে যোগ দেননি। তিনি সম্মেলনে ভার্চুয়াল মাধ্যমে যোগ দেন। তবে, সম্মেলনে নতুন সদস্য ঘোষণার সময় রাশিয়ার হয়ে প্রতিনিধিত্ব করেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ।
আরও পড়ুন: দক্ষিণ আফ্রিকায় ব্রিকস শীর্ষ সম্মেলনে মূল আলোচনা শুরু
ব্রিকস সম্মেলনে যোগ দিতে জোহানেসবার্গ পৌঁছেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
১ বছর আগে
ব্রিকসে যোগদানে বাংলাদেশকে সমর্থন করবে চীন: প্রেসিডেন্ট শি
ব্রিকসে যোগদান এবং রোহিঙ্গা সংকটের স্থায়ী সমাধান নিশ্চিত করতে চীন সবসময় বাংলাদেশের পাশে থাকবে বলে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আশ্বাস দিয়েছেন চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং।
বুধবার (২৩ আগস্ট) সন্ধ্যায় দক্ষিণ আফ্রিকার জোহানেসবার্গে চলমান ১৫তম ব্রিকস শীর্ষ সম্মেলনের ফাঁকে হোটেল হিলটন স্যান্ডটনে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে এই আশ্বাস দেন তিনি।
চীনের প্রেসিডেন্ট বাংলাদেশকে একটি উন্নত, সমৃদ্ধ সোনার বাংলা হিসেবে গড়ে তুলতে এবং বাংলাদেশের সঙ্গে অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য চুক্তি দ্রুত সই এবং চীন-বাংলাদেশের বাণিজ্যে ভারসাম্যহীনতা কমাতে সহযোগিতার আশ্বাস দেন।
দুই নেতার দ্বিপক্ষীয় আলোচনা শেষে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
বৈঠকে তিনি বলেন, উভয় নেতা একে অপরকে তাদের সুবিধাজনক সময়ে নিজ নিজ দেশে সফরের আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন এবং তারা এতে সম্মত হয়েছেন।
চীনের প্রেসিডেন্টকে উদ্ধৃত করে মোমেন বলেন, ‘আমি আপনাকে (শেখ হাসিনাকে) সবসময় সমর্থন করব, কারণ আপনি ব্রিকসে যোগ দিতে পারেন।
রোহিঙ্গা ইস্যু চীন, বাংলাদেশ এবং মিয়ানমারের ত্রিপক্ষীয় সম্পৃক্ততার মাধ্যমে রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধান করতে চান শি। তিনি আশ্বাস দিয়েছেন যে তারা সর্বদা বাংলাদেশকে এ লক্ষ্যে সমর্থন করবে।
তার উদ্ধৃতি দিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, ‘রোহিঙ্গা সমস্যার স্থায়ী সমাধানে বাংলাদেশকে সহায়তা করবে চীন। ---আমরা এই অঞ্চলে অস্থিতিশীলতা চাই না।’
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বলেছেন,তার সরকার রোহিঙ্গাদের তাদের মাতৃভূমিতে প্রত্যাবাসন করতে চায়। কারণ তারা এই অঞ্চলের শান্তির জন্য হুমকি হয়ে উঠছে, কারণ তাদের মধ্যে অনেকেই অবৈধ মাদক ও অস্ত্র ব্যবসায় জড়িত।
তিনি বলেন, উন্নয়নের জন্য শান্তি অপরিহার্য।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে সৌদির সমর্থন থাকবে: সৌদি মন্ত্রী
প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংও বাংলাদেশকে জ্বালানি, নবায়নযোগ্য জ্বালানি ও অবকাঠামোর উন্নয়নে সাহায্য করার জন্য তার দেশের আগ্রহ প্রকাশ করেন।
দ্রুততম সময়ে একটি উন্নত ও সমৃদ্ধ ‘সোনার বাংলা’ গড়তে আপনার স্বপ্ন বাস্তবায়নে সহায়তা করবে চীন।
হাসিনা চীনের অর্থায়নে পরিচালিত কিছু প্রকল্পের দ্রুত বাস্তবায়নে চীনা প্রেসিডেন্টের সহায়তাও চেয়েছেন। যে প্রকল্পগুলো এখন তহবিল সংকটের জন্য আটকে রয়েছে। এর প্রেক্ষিতে চীনা নেতা বিষয়টি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন।
আলোচনা চলাকালীন প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে বাণিজ্য ব্যবধান কমানোর প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন। তিনি উল্লেখ করেন যে বাংলাদেশ বর্তমানে প্রতি বছর প্রায় ২০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের চীনা পণ্য আমদানি করেছে। অন্যদিকে মাত্র ৭০ কোটি মার্কিন ডলারের বাংলাদেশি পণ্য আমদানি করেছে চীন।
উত্তরে চীনের প্রেসিডেন্ট বলেন, তাদের অবশ্যই এই সমস্যাটি সমাধান করতে হবে। তার দেশ চীনের বাজারে ৯৮ শতাংশ বাংলাদেশি পণ্যে শুল্ক ও কোটামুক্ত প্রবেশাধিকার দিয়েছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
শেখ হাসিনা বলেন, কিছু চীনা বিনিয়োগ বাংলাদেশে এলে বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে বাণিজ্য ব্যবধান কমবে।
তিনি দুই দেশের মধ্যে অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য চুক্তি (পিটিএ) সইয়ের প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দেন।
উত্তরে শি বলেন, ‘আমরা দেশগুলোর মধ্যে অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য চুক্তি সইয়ের জন্য দ্রুত ব্যবস্থা নেব।’
মোমেন বলেন, বাংলাদেশ চীনে তাজা ফল যেমন আম, কাঁঠাল, পেয়ারা, তাজা শাকসবজি এবং গবাদিপশু ও পোল্ট্রি ফিড রপ্তানির আগ্রহ প্রকাশ করেছে।
মোমেন বলেন, চীনা নেতা তাদের বিষয়টি বিবেচনা করার আশ্বাস দিয়েছেন।
আরও পড়ুন: জোহানেসবার্গে বৈঠক করলেন শেখ হাসিনা-শি
আগামী অক্টোবরে অনুষ্ঠিতব্য পদ্মা রেল সেতুর উদ্বোধন দেখতে চীনের প্রেসিডেন্টকে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী।
জবাবে চীনা প্রেসিডেন্ট বলেন, তিনি অবশ্যই বাংলাদেশে আসবেন। তবে দুই দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের মধ্যে আলোচনার মাধ্যমে সফরের সময় নির্ধারণ করা হবে।
শি জিংপিং বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে চীন সফরের আমন্ত্রণ জানান এবং জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, তিনি চীন সফর করবেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, ‘তবে সময় লাগতে পারে কারণ তিনি নির্বাচনী প্রচারে ব্যস্ত থাকবেন কারণ জাতীয় নির্বাচন দরজায় কড়া নাড়ছে।
শেখ হাসিনা চীনের প্রেসিডেন্টকে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের চীনে পড়াশোনার সুযোগ বাড়ানোর আহ্বান জানান এবং শি বিষয়টি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন, প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান ফজলুর রহমান, প্রধানমন্ত্রীর কন্যা এবং ক্লাইমেট ভালনারেবল ফোরামের বিষয়ভিত্তিক রাষ্ট্রদূত এবং অটিজম ও নিউরোডেভেলপমেন্টাল ডিসঅর্ডার জাতীয় উপদেষ্টা কমিটির চেয়ারপারসন সায়মা ওয়াজেদ, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া ও পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: আলজেরিয়ার কাছ থেকে এলএনজি কিনতে চায় বাংলাদেশ: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
১ বছর আগে
সদস্য হতে ইচ্ছুক দ. এশীয় দেশগুলোর অন্তর্ভুক্তির বিষয়ে আলোচনা করবে ব্রিকস নেতারা
আসন্ন ব্রিকস শীর্ষ সম্মেলন- ২০২৩ এর লোগোতে একটি সূর্য রয়েছে। যা পাঁচটি রঙে আলো ছড়ায়: সবুজ, নীল, কমলা, লাল ও হলুদ। যা গ্রুপের বর্তমান পাঁচ সদস্যের প্রতিনিধিত্ব করে।
এই বছরের শীর্ষ সম্মেলন ২২ থেকে ২৪ অগাস্ট দক্ষিণ আফ্রিকায় অনুষ্ঠিত হবে। এবারের থিম ‘পার্টনারশিপ ফর মিউচুয়ালি অ্যাসিলেরেটেড গ্রোথ, সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট এন্ড ইনক্লুসিভ মাল্টিল্যাটারিজম।’
ব্রিকস কর্মকর্তারা বলেছেন, এই চেতনার ফলে গ্লোবাল সাউথের প্রায় ৪০টি দেশ গ্রুপে যোগদানে আগ্রহী হয়েছে।
আগ্রহ ক্রমে বাড়ছে
দক্ষিণ কেন্দ্রের নির্বাহী পরিচালক কার্লোস মারিয়া কোরেয়া সাম্প্রতিক এক সাক্ষাৎকারে সিনহুয়াকে বলেছেন, আসন্ন শীর্ষ সম্মেলনে নেতারা ব্রিকস গ্রুপের সম্প্রসারণ, অন্তর্ভুক্তির মানদণ্ড এবং নির্দেশনাসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
দক্ষিণ আফ্রিকার ব্রিকস রাষ্ট্রদূত অনিল সুকলল বলেন, ‘২২টি দেশ আনুষ্ঠানিকভাবে পূর্ণ সদস্য হওয়ার জন্য ব্রিকস দেশগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। এছাড়া একই সংখ্যক দেশ অনানুষ্ঠানিকভাবে ব্রিকস সদস্য হওয়ার বিষয়ে প্রস্তাব দিয়েছে।’
আগ্রহ দেখানো সর্বশেষ দেশগুলোর মধ্যে আলজেরিয়া একটি।
আরবি সম্প্রচারকারী এননাহার টিভি ২২ জুলাই আলজেরিয়ার প্রেসিডেন্ট আবদেলমাদজিদ টেবুউনকে উদ্ধৃত করে বলেছে, ‘আমরা আনুষ্ঠানিকভাবে ব্রিকস গ্রুপে যোগদানের জন্য আবেদন করেছি এবং আমরা ব্যাংকে (নিউ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক) শেয়ারহোল্ডার সদস্য হওয়ার জন্য একটি চিঠি পাঠিয়েছি।’
একটি জাপানি দৈনিক মাইনিচি শিম্বুনের জানায়, সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, নাইজেরিয়া এবং অন্যান্য তেল উৎপাদনকারী দেশগুলোও আবেদন করেছে। একবার অনুমোদিত হলে, ব্রিকস সদস্যরা বিশ্বের তেল ও গ্যাস সম্পদের অর্ধেকেরও বেশি নিয়ন্ত্রণ করবে।
আরও পড়ুন: ১৫তম ব্রিকস সম্মেলনে যোগ দিতে দ. আফ্রিকা যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী
উইটওয়াটারসরান্ড ইউনিভার্সিটির একজন সিনিয়র লেকচারার কেনেথ ক্রিমার একটি সাম্প্রতিক সাক্ষাত্কারে সিনহুয়াকে বলেন, ‘গ্লোবাল সাউথের অনেক দেশ আরও ন্যায্য ও অন্তর্ভুক্তিমূলক বিশ্ব ব্যবস্থা নির্মাণে কাজ করার জন্য একত্র হওয়ার চেষ্টা করেছে... ব্রিকস অনেক দেশকে এই দৃষ্টিভঙ্গিকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য আবার এক হতে অনুপ্রাণিত করে।’
ব্রিকসের আকর্ষণ
এই বছরের জুনে ফরাসি প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোঁ একবার দক্ষিণ আফ্রিকার আন্তর্জাতিক সম্পর্ক ও সহযোগিতা মন্ত্রী নালেদি পান্ডোরের সঙ্গে বৈঠকের পর আসন্ন শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন।
ব্রিকসের আকর্ষণ (বিশেষত্ব) এখানেই। ব্রিকস ব্লক আন্তর্জাতিক বিষয়ে একটি ইতিবাচক, স্থিতিশীল ও গঠনমূলক শক্তিতে পরিণত হয়েছে।
উদাহরণস্বরূপ, জার্মানির রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন সম্প্রচারকারী ডয়চে ভেলে বলেছে, বেশ কয়েকটি উদীয়মান অর্থনীতি আইএমএফ-এর কঠোর অর্থনৈতিক নীতির কারণে আর্থিকভাবে বিপর্যস্ত।
ডয়চে ভেলে বলেছে, নিউ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক এবং ব্রিকস কন্টিনজেন্ট রিজার্ভ অ্যারেঞ্জমেন্ট অর্থপ্রদানের সমস্যায় অর্থনীতিকে সহায়তা করতে পারে।
ব্রিকস নিয়ে গবেষণা করা প্রিটোরিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন অধ্যাপক ড্যানিয়েল ব্র্যাডলো বলেছেন, ‘নিউ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক হলো সবচেয়ে বড় অর্জন। এটি দেশগুলোর মধ্যে বাণিজ্য বৃদ্ধির পথ দেখাচ্ছে এবং আন্তর্জাতিক মনোযোগও অর্জন করেছে।’
কিউবার প্রেসিডেন্ট মিগুয়েল দিয়াজ-ক্যানেল বলেছেন, সর্বোপরি ব্রিকস বহুমুখীতা ও বহুপাক্ষিকতাকে রক্ষা করে। এটি করার মাধ্যমে, ‘ব্রিকস দেশগুলো স্নায়ু যুদ্ধের ধারণাকে মোকাবিলা করছে এবং আরও ন্যায্য ও ন্যায়সঙ্গত আন্তর্জাতিক ব্যবস্থার সম্ভাবনা উন্মুক্ত করছে; যা বিশ্বকে উপকৃত করবে।’
কেনিয়ার আন্তর্জাতিক সম্পর্কের পণ্ডিত ক্যাভিন্স আধেরে বলেছেন, ‘ক্রমবর্ধমান মেরুকৃত বিশ্বে ব্রিকস দেশগুলোর জন্য একটি আরও অন্তর্ভুক্তিমূলক রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক শৃঙ্খলা তৈরি করার জন্য একটি কার্যকর উপায় তৈরি করছে।’
স্প্যানিশ ওয়েবসাইট রেবেলিয়ন জানিয়েছে, বহু দেশ কয়েক দশক ধরে বিশ্ব অর্থনীতিতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আধিপত্যে ক্লান্ত। ওয়াশিংটনের নির্দেশনা মেনে চলতে ব্যর্থতার ফলে নিষেধাজ্ঞা ও আর্থিক ব্ল্যাকমেলের শিকার হতে হয় তাদের।
বিপুল সম্ভাবনা
সম্ভাবনাময় সদস্যদের গ্রুপে অন্তর্ভুক্তি করার মাধ্যমে আন্তঃসীমান্ত বাণিজ্য আরও চাঙ্গা হয়ে উঠবে এবং আরও বিনিয়োগকারীদের নজর কাড়বে। ব্রিকসের একটি মুদ্রা ইস্যু করারও সম্ভাবনা রয়েছে।
আমেরিকান সংবাদ প্রকাশনা ‘ফরেন পলিসি’ ব্রিকসের সম্ভাব্য মুদ্রা সম্পর্কে বলেছেন, ‘এর সদস্যরা সম্ভবত বিদ্যমান যে কোনো আর্থিক ইউনিয়নের তুলনায় বিস্তৃত পরিসরে পণ্য উৎপাদন করতে সক্ষম হবে।’
আরও পড়ুন: ব্রিকস শীর্ষ সম্মেলনে এজেন্ডাগুলোর অগ্রগতির আশা করছে রাশিয়া ও চীন
তারা তাদের প্রতিবেদনে জানায়,‘যেহেতু ব্রিকস গোষ্ঠীর প্রতিটি সদস্যই তাদের নিজস্ব অঞ্চলে একটি অর্থনৈতিক হেভিওয়েট, বিশ্বের দেশগুলো সম্ভবত তাদের প্রচলন করা মুদ্রায় ব্যবসা করতে ইচ্ছুক হবে।’
যেহেতু বাংলাদেশ, মিশর, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও উরুগুয়ে ব্রিকস নিউ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের নতুন সদস্য হিসেবে যুক্ত হয়েছে। এই চারটি দেশ তিনটি মহাদেশে অবস্থিত হওয়ায় সেখানে আরও ন্যায্য ও আরও অবারিত আন্তর্জাতিক বাণিজ্য হতে বাধ্য।
ওয়াশিংটন পোস্ট সাম্প্রতিক একটি নিবন্ধে বলেছে, ‘নতুন প্রবেশকারীরা ব্রিকসের অংশ হওয়ার ফলে তাদের কূটনৈতিক প্রভাব বিস্তার করতে পারে এবং লাভজনক বাণিজ্য ও বিনিয়োগের সুযোগ লাভ করতে পারে।’
তাস নিউজ এজেন্সির সঙ্গে এক সাক্ষাত্কারে জেনেভায় জাতিসংঘে দক্ষিণ আফ্রিকার স্থায়ী প্রতিনিধি নোজিফো ম্যাক্সাকাতো-ডিসেকো বলেছেন, যোগদানের আগ্রহ প্রকাশকারী নতুন সদস্যদের গ্রহণ করতে পেরে ব্রিকস খুশি।
আফ্রিকা-চীন সহযোগিতা বিশেষজ্ঞ জেরাল্ড এমবান্ডা সিনহুয়াকে বলেছেন, ‘ব্রিকস বহুপাক্ষিকতাকে সমুন্নত রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এটি বারবার বৈশ্বিক শাসন ব্যবস্থার সংস্কার এবং উন্নয়নশীল দেশগুলোর সঙ্গে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে ন্যায্য আচরণ করার পরামর্শ দিয়েছে।’
এমবান্ডা বলেন, ‘এই কারণেই আমি বিশ্বাস করি, ব্রিকস নিঃসন্দেহে বর্ধিত বাণিজ্য ও বিনিয়োগের সুযোগের সঙ্গে দ্রুত প্রবৃদ্ধি অর্জনের একটি উপায়।’
আরও পড়ুন: ব্রিকস শীর্ষ সম্মেলন: সাইডলাইন বৈঠকে বসতে পারেন শেখ হাসিনা-মোদি
১ বছর আগে
ব্রিকস শীর্ষ সম্মেলনে এজেন্ডাগুলোর অগ্রগতির আশা করছে রাশিয়া ও চীন
চলতি সপ্তাহে দক্ষিণ আফ্রিকায় অনুষ্ঠেয় ব্রিকস শীর্ষ সম্মেলনে উন্নয়নশীল বিশ্বে আরও রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ক্ষেত্র লাভের দিকে নজর দেবে রাশিয়া ও চীন। এ সময় পশ্চিম-বিরোধী যৌথ প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে সৌদি আরবকে কাছে টানতে আনুষ্ঠানিকভাবে চূড়ান্ত পদক্ষেপ নিতে পারে তারা।
ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত, চীন ও দক্ষিণ আফ্রিকার ব্রিকস অর্থনৈতিক ব্লকের নেতারা জোহানেসবার্গের স্যান্ডটনে তিন দিনের বৈঠক করবেন। গত দেড় দশকে চীন এই ব্লকে কূটনৈতিক মূলধন বিনিয়োগ করেছে এবং এটা নিয়ে তাদের উচ্চাকাক্ষা রয়েছে তার প্রমাণ ওই বৈঠকে চীনের প্রধানমন্ত্রী শি জিনপিংয়ের উপস্থিতি।
ইউক্রেনের যুদ্ধের জন্য রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি রয়েছে। একারণে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরের ক্ষেত্রে জটিলতা থাকায় ভার্চুয়ালি যুক্ত হবেন তিনি। এ ছাড়া ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাসিও লুলা দা সিলভা, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসা উপস্থিত থাকবেন।
বুধবার প্রধান শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। এ ছাড়া মঙ্গলবার ও বৃহস্পতিবার সাইডলাইন বৈঠকগুলো অনুষ্ঠিত হবে। বৈশ্বিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে পশ্চিমা আধিপত্য নিয়ে ক্রমবর্ধমান অসন্তোষের মধ্যেই দক্ষিণাঞ্চলীয় দেশগুলোর পারস্পরিক সহযোগিতা আরও বাড়াতে সাধারণ আহ্বান জানানো হবে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে।
এ বিষয়ে রাশিয়া ও চীন সবেচেয়ে বেশি আগ্রহী। দক্ষিণ আফ্রিকায় পুতিনের প্রতিনিধিত্ব করবেন রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ। এ ছাড়া আরও কয়েক ডজন উন্নয়নশীল দেশের নেতা বা প্রতিনিধিরা সাইডলাই বৈঠকে যোগ দেবেন।
ব্রিকস ব্লকের সম্ভাব্য সম্প্রসারণসহ একটি সুনির্দিষ্ট নীতির বিষয়ে আলোচনা করা হবে। ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত ও চীনের উদীয়মান বাজারভিত্তিক দেশগুলোর সমন্বয়ে ২০০৯ সালে গঠিত হয়েছিল ব্রিকস। পরের বছর সংস্থাটিতে দক্ষিণ আফ্রিকাকে যুক্ত করেছিল।
দক্ষিণ আফ্রিকার কর্মকর্তারা বলছেন, আরেকটি সম্ভাব্য সম্প্রসারণে ব্রিকসে যোগদানের জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে আবেদনকারী ২০টিরও বেশি দেশের মধ্যে একটি হলো সৌদি আরব। রাশিয়া ও চীনের সঙ্গে একটি অর্থনৈতিক ব্লকে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম তেল উত্পাদককে অন্তর্ভুক্ত করার যে কোনো পদক্ষেপ স্পষ্টতই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং তার মিত্রদের মনোযোগ আকর্ষণ করবে। অতিরিক্ত শীতল ভূ-রাজনৈতিক পরিবেশ এবং পারস্য উপসাগরে কিছুটা প্রভাব বিস্তারের জন্য বেইজিংয়ের সাম্প্রতিক পদক্ষেপ এরই মধ্যে অনেকে দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে।
আরও পড়ুন: দ. আফ্রিকায় ব্রিকস সম্মেলনে যোগ দিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আনুষ্ঠানিক আমন্ত্রণ
সৌদি আরবে ভারতের সাবেক রাষ্ট্রদূত তালমিজ আহমেদ বলেছেন, ‘যদি সৌদি আরব ব্রিকসে প্রবেশ করে তবে এটি এই গ্রুপিংকে অসাধারণ গুরুত্ব দেবে।’
বিশ্লেষকরা বলছেন, ইতোমধ্যেই উন্নয়নশীল বিশ্বের বৃহত্তম অর্থনীতির একটি বড় অংশ নিয়ে গঠিত ব্রিকস সম্প্রসারণের নীতিতে একটি চুক্তিও জি-৭ এর ভারসাম্য বজায় রাখতে ব্লকের জন্য রাশিয়ান ও চীনা দৃষ্টিভঙ্গির জন্য একটি নৈতিক বিজয়।
ইউক্রেনের যুদ্ধের কারণে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চীনের অর্থনৈতিক দ্বন্দ্ব এবং পশ্চিমের সঙ্গে রাশিয়ার স্নায়ুযুদ্ধের মতো স্থবিরতার মধ্যে উভয়ই এক ধরনের জোটকে শক্তিশালী করার জন্য আরও দেশকে যুক্ত করার পক্ষে -- এমনকি এটি শুধুমাত্র প্রতীকী হলেও৷
আর্জেন্টিনা থেকে শুরু করে আলজেরিয়া, মিশর, ইরান, ইন্দোনেশিয়া ও সংযুক্ত আরব আমিরাত পর্যন্ত সব দেশই আনুষ্ঠানিকভাবে সৌদির সঙ্গে যোগদানের জন্য আবেদন করেছে এবং সম্ভাব্য নতুন সদস্যও হতে পারে।
জোহানেসবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের কলেজ অব বিজনেস অ্যান্ড ইকোনমিকসের অধ্যাপক অ্যালেক্সিস হাবিয়ারেমি বলেছেন, ‘যদি তাদের মধ্যে কয়েকটি দেশকে নেওয়া হয়, তাহলে এটি একটি বৃহত্তর অর্থনৈতিক ব্লকে পরিণত হবে এবং সেখান থেকে শক্তির উৎস তৈরি হবে।’
যদিও ব্রাজিল, ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকা সম্প্রসারণে কম আগ্রহী এবং বর্তমানে একটি একচেটিয়া উন্নয়নশীল বিশ্ব সংগঠনে তাদের প্রভাব হ্রাস পেয়েছে। যদিও কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি এবং পাঁচটি দেশকে প্রথমে নতুন সদস্য হওয়ার যে মানদণ্ড পূরণ করতে হবে তাতে একমত হতে হবে। বেইজিংয়ের চাপের মধ্যে এটি জোহানেসবার্গের এজেন্ডায় রয়েছে।
দক্ষিণ আফ্রিকায় চীনের রাষ্ট্রদূত চেন জিয়াওডং বলেছেন, ‘ব্রিকস সম্প্রসারণ এই মুহূর্তে শীর্ষ আলোচিত বিষয়ে হয়ে দাঁড়িয়েছে৷’ সম্প্রসারণই ব্রিকসের মূল কার্যক্রম বাড়ানোর চাবিকাঠি। আমি বিশ্বাস করি আসন্ন এই বছরের শীর্ষ সম্মেলন একটি নতুন ও দৃঢ় পদক্ষেপের সাক্ষী হবে।’
ব্রিকস থেকে উদ্ভূত যে কোনো রুশ ও চীনা প্রভাবকে বন্ধ করার প্রয়াসে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র দক্ষিণ আফ্রিকা, ব্রাজিল ও ভারতের সঙ্গে তার দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের উপর জোর দিয়েছে। শীর্ষ সম্মেলনের আগেই স্টেট ডিপার্টমেন্ট বলেছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ‘ব্রিকস অ্যাসোসিয়েশনের অনেক নেতৃস্থানীয় সদস্যদের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িত আছে।’
আরও পড়ুন: বাংলাদেশকে ব্রিকস জোটে স্বাগত জানাতে প্রস্তুত চীন: মুখপাত্র
ইউরোপীয় ইউনিয়নও জোহানেসবার্গের ঘটনাগুলো ঘনিষ্ঠভাবে অনুসরণ করবে, তবে ইউক্রেনের যুদ্ধের উপর প্রায় একমাত্র মনোযোগ এবং উন্নয়নশীল বিশ্ব থেকে রাশিয়ার আগ্রাসনের জন্য ঐক্যবদ্ধ নিন্দা জানাতে ব্লকের অব্যাহত প্রচেষ্টা এখনও পর্যন্ত অনেকাংশে ব্যর্থ হয়েছে।
শি, লুলা, মোদি ও রামাফোসা একত্রিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ইউরোপীয় কমিশনের মুখপাত্র পিটার স্ট্যানো বলেছেন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন তাদের এই মুহূর্তটি আন্তর্জাতিক আইন বজায় রাখার জন্য ব্যবহার করার আহ্বান জানিয়েছে।
স্ট্যানো বলেছেন, ‘আমরা পুতিনকে তার অবৈধ, অস্থিতিশীল আচরণ বন্ধ করতে তাদের ভূমিকার জন্য অপেক্ষা করছি।’
মূল শীর্ষ সম্মেলনের আগে জুন মাসে কেপটাউনে ব্রিকস পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠকে যদি কোনো সমাধান হয়ে থাকে, তাহলে যুদ্ধ নিয়ে রাশিয়া বা পুতিনের প্রকাশ্য সমালোচনা হবে না। স্যান্ডটন কনভেনশন সেন্টারের বাইরে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল রাইটস গ্রুপ এবং ইউক্রেনীয় অ্যাসোসিয়েশন অব সাউথ আফ্রিকার ঘোষিত প্রতিবাদ সম্ভবত একমাত্র নিন্দা জানাবে।
যদ আগের বৈঠকে কোনো সমাধান হয়, এই শীর্ষ সম্মেলন থেকে কিছু সুবিধা পেতে পারে রাশিয়া।
ইউরোপ, রাশিয়া ও ইউরেশিয়া প্রোগ্রামে ওয়াশিংটনভিত্তিক সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজিক অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজের সিনিয়র ফেলো মারিয়া স্নেগোভায়া বলেছেন, গত মাসে ইউক্রেনের বাইরে শস্য পাঠানোর অনুমতি দেওয়ার একটি চুক্তি স্থগিত করার পরে পুতিন উন্নয়নশীল দেশগুলোতে আরও বিনামূল্যে রাশিয়ান শস্যের চালান ঘোষণা করতে ব্রিকস সমাবেশ ব্যবহার করতে পারেন। তিনি ইতোমধ্যে বেশ কয়েকটি আফ্রিকান দেশের জন্য করেছেন।
স্নেগোভায়া বলেন, ইউক্রেনকে প্রক্রিয়া থেকে বাদ দেওয়ার সময় এটি পুতিনকে উন্নয়নশীল বিশ্বের কাছে ‘সদিচ্ছা’ প্রদর্শনের অনুমতি দেবে।
ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেছেন,পুতিন একটি ভিডিও লিঙ্কে উপস্থিত হওয়া সত্ত্বেও শীর্ষ সম্মেলনে ‘সম্পূর্ণ অংশগ্রহণ’ করবেন এবং একটি বক্তব্য দেবেন।
আরও পড়ুন: ব্রিকসে বাংলাদেশের অন্তর্ভুক্তি নির্ভর করছে সদস্যদের উপর: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
জোহানেসবার্গে তিন দিন ধরে নিয়মিতভাবে যা সম্প্রচারিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে তা হলো বর্তমান বৈশ্বিক আর্থিক ব্যবস্থার উপর উন্নয়নশীল বিশ্ব আঁকড়ে ধরা। শীর্ষ সম্মেলনের আগের কয়েক মাস ও সপ্তাহ ধরেই আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের জন্য বিশ্বের মুদ্রা হিসেবে মার্কিন ডলারের আধিপত্যের সমালোচনা চলছে।
পাঁচটি দেশের ভিন্ন ভিন্ন অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক অগ্রাধিকারের কারণে এবং চীন ও ভারতের মধ্যে উত্তেজনা ও প্রতিদ্বন্দ্বিতার কারণে নীতি বাস্তবায়নে ব্লকের যে অসুবিধা রয়েছে তা নির্দেশ করতে ব্রিকস বিশেষজ্ঞরা সাধারণত ঐক্যবদ্ধ।
চায়না গ্লোবাল সাউথ প্রজেক্টের বিশ্লেষক কোবাস ভ্যান স্টাডেন বলেন, স্থানীয় মুদ্রায় আরও বেশি বাণিজ্যের দিকে মনোনিবেশ করা এমন একটি বিষয় যা তারা সকলেই পিছনে ফেলতে পারে।
তিনি দেখেছেন যে ব্রিকস বিশ্বের কিছু অংশে আঞ্চলিক বাণিজ্যে ডলারের থেকে দূরে সরে যাচ্ছে, ঠিক যেভাবে তিনি এই শীর্ষ সম্মেলনকে সামগ্রিকভাবে দেখেন।
ভ্যান স্ট্যাডেন বলেন, ‘এগুলোর কোনোটিই বড় অস্ত্র নয় যা ডলারকে মোকাবিলা করতে চলেছে। এটা নাটক নয়।’ ‘এটি একটি বড় তরবারির ক্ষত নয়, এটি অনেকগুলো কাগজ কাটার মতো। এটি ডলারকে দমাবে না, তবে এটি অবশ্যই বিশ্বকে আরও জটিল করে তুলছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘তাদের ডলারকে হারানোর দরকার নেই এবং তাদের জি-৭ কে পরাজিত করার দরকার নেই। তারা বিশেষভাবে যা করতে চায় তা হলো এর একটি বিকল্প উত্থাপন। এটা অনেক দীর্ঘ কাজ।’
আরও পড়ুন: ব্রিকস শীর্ষ সম্মেলন: সাইডলাইন বৈঠকে বসতে পারেন শেখ হাসিনা-মোদি
১ বছর আগে
ব্রিকস সম্মেলনে যোগ দিতে মঙ্গলবার ঢাকা ছাড়বেন প্রধানমন্ত্রী
জোহানেসবার্গে ১৫তম ব্রিকস শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে মঙ্গলবার সকালে দক্ষিণ আফ্রিকার জোহানেসবার্গের উদ্দেশে ঢাকা থেকে রওনা দেবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট মাতামেলা সিরিল রামাফোসার আমন্ত্রণে প্রধানমন্ত্রী এই সম্মেলনে যোগ দিচ্ছেন।
ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত, চীন ও দক্ষিণ আফ্রিকার সংগঠন ব্রিকসের ঐতিহাসিক শীর্ষ সম্মেলন আয়োজন করছে দক্ষিণ আফ্রিকা।
কোভিড-১৯ মহামারির কারণে বিশ্বব্যাপী বিধিনিষেধ আরোপের পর এটিই হবে সশরীরে আয়োজিত প্রথম ব্রিকস শীর্ষ সম্মেলন।
আফ্রিকার দেশটিতে ভ্রমণকারী বিশ্ব নেতাদের মধ্যে রয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং।
স্বাগতিক দেশের প্রেসিডেন্ট মাতামেলা সিরিল রামাফোসার আমন্ত্রণে শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে তারা ২২ থেকে ২৪ আগস্ট দক্ষিণ আফ্রিকা সফর করবেন।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় (পিএমও) থেকে পাওয়া সূচি অনুযায়ী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার সফরসঙ্গীদের বহনকারী এমিরেটসের একটি নিয়মিত ফ্লাইট সকাল ১০টা ১৫ মিনিটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর (এইচএসআইএ) থেকে যাত্রা করবে।
আরও পড়ুন: ব্রিকস সম্মেলন ২০২৩: নতুন সদস্য হচ্ছে কোন কোন দেশ সেদিকেই সবার নজর
সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এক ঘণ্টার বেশি যাত্রাবিরতির পর ফ্লাইটটি স্থানীয় সময় ৮টা ৫০ মিনিটে জোহানেসবার্গের ওআর তাম্বো আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করবে।
বিমানবন্দর থেকে শেখ হাসিনাকে রেডিসন ব্লু হোটেল স্যান্ডটনে নিয়ে যাওয়া হবে।
এরপর ২৩ আগস্ট বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী রেডিসন ব্লু হোটেলের কনভেনশন সেন্টারে সকাল ১০টায় বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) এবং বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) যৌথভাবে আয়োজিত ‘বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড বিজনেস সামিট’-এ প্রধান অতিথির ভাষণ দেবেন।
একই দিনে প্রধানমন্ত্রী দুপুর সাড়ে ১২টায় রেসিডেন্স প্রাসাদ রিভোনিয়ার সপ্তম তলায় অনুষ্ঠিতব্য আফ্রিকান দেশগুলোতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতদের নিয়ে আয়োজিত ‘বাংলাদেশ দূত সম্মেলনে’ বক্তব্য দেবেন।
পরে বিকালে হোটেল হিলটন স্যান্ডটনে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে তার দ্বিপক্ষীয় বৈঠক হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
সন্ধ্যায় জোহানেসবার্গের গ্যালাঘের এস্টেটে ব্রিকসের বর্তমান চেয়ার এবং দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট আয়োজিত একটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং একটি ‘রাষ্ট্রীয় ভোজসভায়’ যোগ দেবেন প্রধানমন্ত্রী।
আরও পড়ুন: ভূ-রাজনৈতিক পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিচ্ছে ব্রিকস সম্মেলন-২০২৩: মডার্ন ডিপ্লোমেসি
২৪ আগস্ট দেশগুলোর ৭০ জন প্রতিনিধিকে নিয়ে স্যান্ডটন কনভেনশন সেন্টারে সকাল ৯টায় শুরু হওয়া 'ব্রিকস-ফ্রেন্ডস অব ব্রিকস লিডারস ডায়ালগ' (ব্রিকস-আফ্রিকা আউটরিচ এবং ব্রিকস প্লাস ডায়ালগ) ‘ব্রিক্সের নিউ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক’-এর সদস্য হিসেবে বাংলাদেশের পক্ষে ভাষণ দেবেন প্রধানমন্ত্রী।
একই দিনে শেখ হাসিনা স্যান্ডটন কনভেনশন সেন্টারে দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসা, ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাসিও লুলা দা সিলভা, মোজাম্বিকের প্রেসিডেন্ট ফিলিপে জ্যাকিন্টো নিউসি এবং নিউ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের প্রেসিডেন্ট দিলমা ভানা রুসেফের সঙ্গে একাধিক দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২৪ আগস্ট কমিউনিটি নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে করবেন।
আগামী ২৬ আগস্ট দুপুর স্থানীয় সময় দুপুর ১টা ৪০ মিনিটে জোহানেসবার্গের ওআর তাম্বো আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে এমিরেটস এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে দেশের উদ্দেশে রওনা দেবেন।
দুবাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সংক্ষিপ্ত যাত্রাবিরতির পর তিনি ২৭ আগস্ট সকাল ৮টা ৪০ মিনিটে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে (এইসএসআইএ) পৌঁছাবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: ব্রিকস শীর্ষ সম্মেলন: সাইডলাইন বৈঠকে বসতে পারেন শেখ হাসিনা-মোদি
১ বছর আগে