সরকার দমন
পতনের আশঙ্কায় সরকার দমন-পীড়নের মাত্রা বাড়িয়ে দিয়েছে: মির্জা আব্বাস
পতনের আশঙ্কায় সরকার দমন-পীড়নের মাত্রা বাড়িয়ে দিয়েছে বলে অভিযোগ করে্ছেন মির্জা আব্বাস।
বৃহস্পতিবার (২৯ জুন) ঈদের দিন সকালে জিয়াউর রহমানের কবরে পুস্পমাল্য অর্পণের পরে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য এই মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, ‘এই সরকার যে চলে যাবে, এই সরকারের যে পতন ঘটবে এটা আশঙ্কা করে তারা তাদের কার্য্ক্রম চালিয়ে যাচ্ছে, অত্যাচার-জুলুম বাড়িয়ে দিয়েছে। ’
তিনি আরও বলেন, ‘একইসঙ্গে বলতে চাই, তারা যতই জুলুম করুক, যতই অত্যাচার করুক, এই সরকারের টিকে থাকার আর কোনো সম্ভাবনা নাই।’
আরও পড়ুন: ছয় জেলায় সমাবেশ করবে বিএনপির ৪ সহযোগী সংগঠন
‘সেই ঈদ নেই’
জনগণ ঈদ কেমন কাটাচ্ছে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে মির্জা আব্বাস বলেন, ‘আপনারা আজকে বলতে পারেন গত ১৫ বছর আগে যেভাবে ঈদ করেছিলেন, দ্রব্যমূল্য যে অবস্থায় ছিলো আজকে কি সেই অবস্থায় আছে? আজকে সেই অবস্থায় নাই।’
বিএনপির জ্যেস।ঠ এই নেতা বলেন,‘তবে হ্যাঁ যদি আগের অবস্থানে ফিরে যেতে হয়, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে হবে, আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনতে হবে এবং দেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে হবে। দেশের মালিকানা মালিকের কাছে ফিরিয়ে দিতে হবে। মালিক কারা? এদেশের জনগণ।’
দলের চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষ থেকে দেশবাসীকে ঈদ মোবারক জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আজকে আমরা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের জিয়ারত করতে এসেছি। তার আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি।’
‘গণতন্ত্র ফেরানোর আন্দোলন ফের শুরু হবে’
মির্জা আব্বাস বলেন, ‘বিএনপির আন্দোলন, বিএনপির সংগ্রাম থেমে নেই, ঈদের জন্য কিছুটা স্তিমিত হতে পারে ঈদের পরে আমাদের জাতীয় যে দাবি, জনগণের যে দাবি তা আদায়ের জন্য আমাদের কার্য্ক্রম চালিয়ে যাবো।’
তিনি আরও বলেন, ‘যে গণতন্ত্র হাইজ্যাক হয়ে গেছে, যে গণতন্ত্র ডাকাতি হয়ে গেছে সেই গণতন্ত্রকে ইনশাল্লাহ আমরা আন্দোলনের মাধ্যমে পুনরুদ্ধার করব। জনগণ ইতোমধ্যে আমাদেরকে সমর্থন দিয়েছে। আমাদের আন্দোলনে-মিছিল-মিটিংয়ে জনগণ সমর্থন দিচ্ছে।’
কারাবন্দি হাজার হাজার নেতা-কর্মীর কথা স্মরণ করে তাদের পরিবার-পরিজনকে ঈদ শুভেচ্ছাও জানান তিনি।
আরও পড়ুন: চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুর গেলেন খন্দকার মোশাররফ
‘টাকা পাচারের প্রজেক্ট’
মির্জা আব্বাস বলেন, ‘এদেশে উন্নয়ন শুরু করেছিলেন জিয়াউর রহমান এবং এই উন্নয়নের শেষ নাই। কিন্তু আজকে যে উন্নয়ন হচ্ছে এটাকে উন্নয়ন ঠিক বলা যাবে না, এটা হলো প্রজেক্ট, টাকা পাচারের প্রজেক্ট।’
তিনি বলেন,‘যে কারণে আজকে দেশে ডলার সংকট, অর্থের সংকট, খাদ্যপণ্যের সংকট… যত ক্রাসিস আছে সেগুলো হচ্ছে শুধুমাত্র সরকারের দুর্নীতি ও লুটপাটের জন্য। যেভাবে লুটপাট হয়েছে এটা জনগণ জানে, সোশ্যাল মিডিয়া খুললে দেখা যায় সব কিছু।’
মির্জা আব্বাস সকাল সাড়ে ১১টায় স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, নজরুল ইসলাম খান, চেয়াপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আমান উল্লাহ আমান, আবদুস সালাম, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেলসহ নেতৃবৃন্দকে নিয়ে শেরে বাংলা নগরে দলের প্রতিষ্ঠাতার কবরে পুস্পমাল্য অর্পন করেন। তারা প্র্রয়াত নেতার আত্মার মাগফেরাত কামনা করে মোনাজাত করেন।
এ সময়ে দলের কেন্দ্রীয় নেতার কামরুজ্জামান রতন, রফিকুল ইসলাম, মহানগর উত্তর আমিনুল হক, যুব দলের সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু, স্বেচ্ছাসেবক দলের রাজীব আহসান, তাঁতী দলের আবুল কালাম আজাদ, উলামা দলের শাহ নেসারুল হক প্র্রমূখ নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
আগে প্রতি ঈদে বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া তার স্বামী জিয়াউর রহমানের কবর জিয়ারত করতেন। ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি দুর্নীতি মামলার রায়ে খালেদা কারাগারে যাওয়ার পর থেকে দলের মহাসচিবসহ স্থায়ী কমিটির সদস্যরা এ ধারাবাহিকতা অনুসরণ করছেন।
সরকারের নির্বাহী আদেশে শর্তসাপেক্ষে খালেদা জিয়ার মুক্ত আছেন। বছরের দুটি ঈদে স্থায়ী কমিটির সদস্যরা তাদের নেত্রীর সঙ্গে দেখা করেন। এবারও ঈদের দিন রাত সাড়ে ৮টায় তারা খালেদা জিয়ার গুলশানের বাসায় গিয়ে শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন।
পরে বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্য আমান, সমাজকল্যাণ সম্পাদক কামরুজ্জামান রতন ও যুব দলের সভাপতি সুলতান সালাহ উদ্দিন টুকু বনানীতে প্রয়াত জিয়াউর রহমানের ছোট ছেলে আরাফার রহমান কোকোর কবর জিয়ারত করেন।
আরও পড়ুন: ‘শিগগিরই’ বিএনপি এক দফা আন্দোলন শুরু করবে: ফখরুল
১ বছর আগে