ভাঙচুর
সারা দেশে সহিংস ভাঙচুর: সরকারকে কার্যকর ভূমিকা নেওয়ার আহ্বান টিআইবির
ধানমন্ডি ৩২ ও প্রায় সারা দেশে গত দুইদিন সংঘটিত অস্বাভাবিক ভাঙচুর ও সহিংসতায় গভীর উদ্বেগ ও তা প্রতিরোধে সরকারের বিবৃতিনির্ভর নির্লিপ্ততায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদশে (টিআইবি)।
শনিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) এক বিবৃতিতে এই আহ্বান জানায় টিআইবি।
উদ্ভূত পরিস্থিতিকে গণতান্ত্রিক উত্তরণ, সুশাসন ও রাষ্ট্রীয় স্থিতিশীলতার জন্য ঝুঁকিপূর্ণ উল্লেখ করে এমন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধে শুধু বিবৃতি দিয়ে দায়িত্ব সম্পন্ন করা নয়, সরকারের কার্যকর ভূমিকা অপরিহার্য বলেও মনে করে সংগঠনটি।
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘একথা অস্বীকার করার উপায় নেই যে, দলীয়করণ ও পরিবারতন্ত্রের সীমাহীন লালসা-তাড়িত কর্তৃত্ববাদী শাসনামলে বঙ্গবন্ধু, মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সবচেয়ে বেশি অপূরণীয় ক্ষতি করেছে গণহত্যার দায়ে অভিযুক্ত স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা ও তার দোসররা। বহুমাত্রিক অধিকার হরণের শিকার আপামর দেশবাসীর ক্ষোভের মাত্রা বহুগুণে বৃদ্ধি পেয়েছে পলাতক শেখ হাসিনা ও তার দেশি-বিদেশি সহযোগীদের নির্লজ্জ ও ষড়যন্ত্রমূলক প্রচারণার প্রেক্ষিতে।
আরও পড়ুন: বইয়ের প্রচ্ছদ থেকে ‘আদিবাসী’ গ্রাফিতি বাদ দেওয়ায় টিআইবির উদ্বেগ
তাই বলে আইনসিদ্ধ প্রতিক্রিয়ার পথ অনুসরণ না করে দেশব্যাপী যে প্রতিশোধপ্রবণ ভাঙচুর ও সহিংসতা চলেছে, তা কোনোভাবেই প্রহণযোগ্য হতে পারে না, এটি জুলাই অভ্যুত্থান পরবর্তী একটি স্থিতিশীল বাংলাদেশ সর্ম্পকে দেশ-বিদেশে ইতিবাচক কোনো বার্তা দিবে না।’
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক বলেন, ‘আগে থেকে সহিংস কর্মসূচির ঘোষণা থাকার পরও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থা ও তার সঙ্গে সহায়ক হিসেবে দায়িত্বপালনরত সেনাবাহিনী, তথা সরকার কার্যকর নিয়ন্ত্রণ বা প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে আশঙ্কাজনকভাবে নির্লিপ্ততার পরিচয় দিয়েছে। পরবর্তিতে ঘটনাটি ‘অনাকাক্সিক্ষত ও অনভিপ্রেত’ এমন বিবৃতি দিয়ে দায় এড়ানোর চেষ্টাও লক্ষণীয়।’
তিনি বলেন, ‘কর্তৃত্ববাদের দীর্ঘ ১৬ বছরের পুঞ্জীভূত বিশাল জঞ্জাল অপসারণ করে শান্তিশৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠায় অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সদিচ্ছা হয়তো বিতর্কের ঊর্ধ্বে, তবে তার প্রয়োগে সুচিন্তিত ঝুঁকি নিরসন কৌশলের ওপর ভিত্তি করে যেকোনো উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সরকার ও সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো কতটা সক্রিয়, সাম্প্রতিক ঘটনাবলীর কারণে এই প্রশ্ন যৌক্তিকভাবে উত্থাপিত হতে পারে। তাই শুধু দায়সারা বিবৃতি দিয়ে নয়, যেকোনো পরিস্থিতি আইনসিদ্ধভাবে মোকাবিলায় সরকারের দৃশ্যমান ও কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।’
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক বলেন, ‘এমনটি অব্যাহত থাকলে নজিরবিহীন আত্মত্যাগের বিনিময়ে সূচিত ‘নতুন বাংলাদেশের’ অভীষ্ট লক্ষ্য অর্জনের পথ রুদ্ধ হয়ে পড়বে। একইসঙ্গে গণতান্ত্রিক উত্তরণ, সুশাসন এবং বিশেষ করে সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় স্থিতিশীলতার সম্ভাবনাকে ঝুঁকিপূর্ণভাবে খাদের কিনারায় ঠেলে দেওয়া হবে।
তিনি বলেন, ‘মনে রাখা দরকার, শেখ হাসিনাসহ কর্তত্ববাদের সকল দোসরদের সুনির্দিষ্ট অপরাধের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও জবাবদিহি নিশ্চিত করা ‘নতুন বাংলাদেশর’ স্বপ্নপূরণের সর্বোচ্চ প্রাধান্যপ্রাপ্ত করণীয়। তবে, এ জন্য প্রতিশোধপ্রবণ ও আত্মঘাতী মব-জাস্টিস নয়, দেশীয় ও আন্তর্জাতিক আইনের পথ অনুসরণ করা বাধ্যতামূলক।’
একই সঙ্গে ভিন্নমত পোষণকারীদের মামলা দিয়ে হয়রানির সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে এসে সকলের গণতান্ত্রিক অধিকার সুরক্ষায় রাষ্ট্র ও সরকার কার্যকর ব্যবস্থা নেবে এবং সংশ্লিষ্ট সকল অংশীজন সহনশীলতার পরিচয় দেবে— এমন প্রত্যাশাও করে টিআইবি।
আরও পড়ুন: সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ-২০২৪ ভিন্নমত-গণমাধ্যমের স্বাধীনতা খর্বের ঝুঁকি সৃষ্টি করবে: টিআইবি
৩ ঘণ্টা আগে
সিরাজগঞ্জে প্রয়াত এমপি স্বপনের দুটি বাড়িতে ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ
সিরাজগঞ্জে বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিমপাড় সয়দাবাদ পুনর্বাসন এলাকায় সিরাজগঞ্জ-৬ (শাহজাদপুর) আসনের প্রয়াত এমপি আওয়ামী লীগ নেতা হাসিবুর রহমান স্বপনের দুটি বাড়িতে হামলা, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে।
বৃহস্পতিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) রাতে বিক্ষুব্ধ জনতা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে লাইভ করে এ বিষয়টি প্রচার করে।
প্রায় ১০ মিনিটের এ ভিডিওতে দেখা যায়, একটি মিছিল নিয়ে সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার সয়দাবাদ ইউনিয়নের পুনর্বাসন এলাকায় ওই দুটি বাড়িতে এ ধ্বংসযজ্ঞ চালানো হয়। এ সময় আওয়ামী লীগের আস্তানা, সয়দাবাদে হবে না—মর্মে বিভিন্ন স্লোগান দেওয়া হয়। ভাঙচুর শেষে তারা মিছিল নিয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।
এ বিষয়ে স্বপনের স্বজনদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন বলেন, ওই এলাকায় তিনটি প্লটে প্রয়াত এমপি স্বপনের তিনটি বাড়ি রয়েছে। এর মধ্যে একটি একতলা ও একটি দোতলা মিলে দুটি পাকা বাড়িতে হামলা চালানো হয়েছে।
প্রয়াত স্বপন ২০২১ সালের ২১ সেপ্টেম্বর করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা যান। এর আগে এসব বাড়ি তিনি মেয়েদের নামে লিখে দেন। বর্তমানে এসব বাড়ি ভাড়া দেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হুমায়ন কবির বলেন, ‘এ ঘটনা লোকমুখে শুনেছি। তবে এখন পর্যন্ত কেউ কোনো অভিযোগ করেনি।’
২১ ঘণ্টা আগে
শেখ হাসিনার পৈতৃক সম্পত্তিতে ভাঙচুর ও লুটপাট
খুলনার দিঘলিয়ার নগরঘাট এলাকায় শেখ হাসিনার পৈতৃক সম্পত্তিতে ভাঙচুর ও লুটপাট চালিয়েছে স্থানীয়রা। বৃহস্পতিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) রাত সাড়ে ১০টার দিকে এ ঘটনা ঘটে৷
এ সময় তারা ‘আমার সোনার বাংলায় মুজিববাদের ঠাঁই নাই, জ্বালো-জ্বালো আগুন জ্বালো, আওয়ামী লীগের আস্তানা ভেঙে দাও গুঁড়িয়ে দাও, মুজিববাদের আস্তানা ভেঙে দাও গুঁড়িয়ে দাও’ ইত্যাদি স্লোগানও দেয় উত্তেজিত জনতা।
জানা যায়, পাকিস্তান আমলে শেখ মুজিবুর রহমান তার স্ত্রী বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের নামে খুলনার দিঘলিয়ার ভৈরব নদের পাশে নগরঘাট এলাকায় ১ একর ৪৪ শতক (৪ বিঘা) জমিতে পাট গুদাম ও এক কক্ষের ঘরসহ জমি কেনেন। ওই জমিতে নির্মাণ করা হয় পাট গোডাউন, যা বর্তমানে ‘শেখ হাসিনার গোডাউন’ নামে পরিচিত।
আরও পড়ুন: ফেনীতে সাবেক এমপিদের বাড়ি ও আ.লীগ কার্যালয়ে ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগ
এই জমির কথা শেখ হাসিনা নিজেও জানতেন না। ২০০৭ সালে তার ব্যক্তিগত আইনজীবীর মাধ্যমে ওই জমির কথা জানতে পারেন তিনি।
এই পাট গুদাম দেখাশোনা করতেন শেখ মুজিবের ছোটভাই শেখ আবু নাসের। এছাড়া শেখ মুজিব তার জীবদ্দশায় পাটের গুদাম ও এক কক্ষের আধাপাকা ঘর ছিল সেই জমিতে।
১ দিন আগে
ফেনীতে সাবেক এমপিদের বাড়ি ও আ.লীগ কার্যালয়ে ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগ
ফেনী-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আলাউদ্দিন আহমেদ চৌধুরী নাসিম ও ফেনী-৩ আসনের সংসদ সদস্য লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অবসরপ্রাপ্ত) মাসুদ চৌধুরীর বাড়িসহ জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে ভাঙচুর চালিয়েছে বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা।
বৃহস্পতিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় ফেনীর পৌরসভার বারাহীপুরের বাড়ি ও শহরের স্টেশন রোড এলাকায় হামলা ও ভাঙচুর চালানো হয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্ররা বুধবার রাতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের বিভিন্ন প্ল্যাটফর্ম, ফেসবুক গ্রুপ ও ব্যক্তিগত আইডি থেকে হামলার ঘোষণা দেয়। ঘোষণার পর বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৭টায় তারা ফেনীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে সমবেত হয়ে নাসিমের বাড়ির দিকে রওনা দেন। সেখানে হামলা ও ভাঙচুর চালানোর পরে ফেনী রেলস্টেশন রোডের জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে ভাঙচুর চালায়। এ সময় তাদের সঙ্গে স্থানীয়রাও অংশ নেয়। এছাড়া মাসুদ চৌধুরীর সোনাগাজী গ্রামের বাড়িতে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছে তারা। এ সময় বাড়িতে কেউ ছিল না। তবে সব জিনিসপত্র পুড়ে গেছে।
আরও পড়ুন: ঝিনাইদহে শেখ মুজিব টাওয়ারের ম্যুরাল ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগ
ছাত্র প্রতিনিধি সোহরাব হোসেন শাকিল বলেন, ‘বুলডোজার কর্মসূচির অংশ হিসেবে ধানমন্ডি-৩২ গুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সন্ধ্যায় প্রোগ্রাম দেওয়া হয়েছে। তাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, বিপ্লবী ছাত্র সমাজ ও আহত ভাইরা মিলে আজকে এখানে কর্মসূচি পালন করি।’
ফেনী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মর্ম সিংহ ত্রিপুরা বলেন, ‘পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে।’
এর আগে, গত ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগের খবরে বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা নাসিমের ফেনীর বাসভবন ও স্টেশন রোডের জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে।
১ দিন আগে
ঝিনাইদহে শেখ মুজিব টাওয়ারের ম্যুরাল ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগ
ঝিনাইদহের ১২৩ ফুট উঁচু দেশের বৃহত্তম শেখ মুজিব টাওয়ারের ম্যুরাল ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতা।
বৃহস্পতিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) রাতে কালীগঞ্জ উপজেলার কাষ্টভাঙ্গা ইউনিয়ন শমশেরনগর এলাকায় ঘটনাটি ঘটে।
স্থানীয়রা জানায়, শমশেরনগরের শেখ মুজিব টাওয়ারের ম্যুরাল ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতা। এরপর ভাঙচুর করা ম্যুরালগুলো বারবাজার শহরে এনে সড়কের ওপরে রেখে আগুন দিয়ে দেয়।
আরও পড়ুন: শেখ সেলিমের বনানীর বাসায় আগুন
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ঝিনাইদহ জেলা কমিটির সমন্বয় হোসাইন আহমেদ বলেন, ‘বাংলার মাটিতে শেখ হাসিনা পরিবারের কোনো ম্যুরাল থাকবে না, থাকবে না ফ্যাসিবাদের কোনো চিহ্নও।’ এজন্য শেখ মুজিবের ওই ম্যুরালগুলো ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
ঝিনাইদহের কালীগঞ্জের কাষ্টভাঙ্গা ইউনিয়ন শমশেরনগর এলাকার আওয়ামী লীগ নেতা রাশেদ শমসের এই শেখ মুজিব টাওয়ার তৈরি করেছিলেন।
১ দিন আগে
ধানমণ্ডি ৩২: সরঞ্জাম লুটতে ব্যস্ত অনেকে, কেউ করছে চুরি
শেখ মুজিবুর রহমানে ধানমণ্ডির ৩২ নম্বর বাড়িতে গতকাল (বুধবার) রাতে শুরু হওয়া ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ কর্মকাণ্ড এখনও চলছে। তবে বৃহস্পতিবার এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে লুটপাট।
আজ (বৃহস্পতিবার) বিকাল ৫টার দিকে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে ভিড় একটুও কমেনি বরং বেড়েছে। এর মধ্যেই কেউ কেউ ইট, লোহার জিনিসপত্র খুলে নিয়ে যাচ্ছেন।
এমনই একজনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এগুলো খুলছি ভাঙারির দোকানে বিক্রি করব বলে।’
এ সময় ইট হাতে চলে যেতে দেখা যায় অনেককে। ইট সংগ্রহ করতে ভাঙনের কাজে যোগ দিয়েছেন অনেকেই। আরও দেখা যায়, একটি পোড়া গাড়ি ভ্যানে করে নিয়ে যাচ্ছে কিছু মানুষ।
আগুনে দেওয়াল পুড়ছে, তবু তারা লোহা ও বিক্রয়যোগ্য যা কিছু আছে, লুট করতে ব্যস্ত।
মাইকিং করে ভবনটি ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ ঘোষণা করে সবাইকে সরে আসতে বললেও অনেকেই পরোয়া করছেন না।
এর মধ্যে সেখানে আবার খাবারের দোকান বসিয়েছেন কেউ কেউ।
আরও পড়ুন: ধানমণ্ডি ৩২ নম্বরে ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ নিয়ে সরকারের বিবৃতি
হায়দার আলী নামে এক দই বিক্রেতা বলেন, ‘আজকেই এখানে প্রথম আসছি। আগে টাউনহলে বিক্রি করতাম। এখানে ভাঙচুরের জন্য মানুষ বেশি, তাই বিক্রিও বেশি হচ্ছে।’
শুধু দই নয়, এই ঘটনা ঘিরে গড়ে ওঠা অন্য খাবারের দোকানগুলোতে ভীড় লক্ষ করা গেছে।
৩০ টাকা দরে স্যান্ডউইচ বিক্রি করছেন শফিকুর রহমান। আজই প্রথম এসেছেন কি না—জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘অন্যদিন আসব কী করতে? এত মানুষ এখানে আছে বলেই আজ এসেছি।’
অনেকে শুধু দেখতে এসেছেন। কেউ বলছেন, ছবি তুলতে এসেছেন।
লুটপাটের মাঝে কেউ কেউ চুরি, পকেটমারিও করছে। সব মিলিয়ে বিকাল ৫টা পর্যন্ত অস্থিতিশীল পরিস্থিতি বিরাজ করছিল ধানমণ্ডি ৩২ এ শেখ মুজিবুর রহমানের বাড়িটিতে।
১ দিন আগে
ধানমণ্ডি ৩২ নম্বরে ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ নিয়ে সরকারের বিবৃতি
রাজধানীর ধানমণ্ডির ৩২ নম্বরে অবস্থিত শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক বাড়িতে ভাঙচুর, আগুন ও লুটপাটের ঘটনায় বিবৃতি দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার।
বৃহস্পতিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে পাঠানো বিবৃতিতে বলা হয়, ধানমণ্ডির ৩২ নম্বর বাড়িতে ভাঙচুরের ঘটনা অনভিপ্রেত ও অনাকাঙ্ক্ষিত। পলাতক অবস্থায় ভারতে বসে জুলাই অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে শেখ হাসিনার উসকানিমূলক বক্তব্যের কারণে জনমনে গভীর ক্রোধের সৃষ্টি হয়েছে যার বহির্প্রকাশ ঘটেছে।
গত ছয় মাসে ৩২ নম্বরের বাড়িটিতে কোনো ধরনের আক্রমণ, ধংসযজ্ঞ হয়নি জানিয়ে শেখ হাসিনার বক্তব্যের দুটি অংশ ঘিরে এই ঘটনা ঘটেছে বলে বিবৃতিতে বলা হয়েছে।
বিবৃতি অনুসারে তার একটি হচ্ছে, জুলাই গণঅভ্যুত্থানে যারা আত্মদান করেছেন শেখ হাসিনা তাদের অপমান, অবমাননা করেছেন। শহিদের মৃত্যু সম্পর্কিত অবান্তর, আজগুবি ও বিদ্বেষমূলক কথা বলে পলাতক শেখ হাসিনা জুলাই গণঅভ্যুত্থানকে অবজ্ঞা ও অশ্রদ্ধা করেছেন।
দ্বিতীয়টি, শেখ হাসিনা দুর্নীতি, সন্ত্রাস ও অমানবিক প্রক্রিয়ায় নিপীড়ন চালিয়ে ক্ষমতায় থাকাকালে যে সুরে কথা বলতেন, গণঅভ্যুত্থানের মুখে পালিয়ে যাওয়ার পরও তিনি একই হুমকি-ধামকির সুরে জুলাই গণঅভ্যুত্থানকে, অভ্যুত্থানে অংশ নেওয়া প্রতিটি মানুষের বিরুদ্ধে কথা বলে চলেছেন, হুমকি ধামকি দিচ্ছেন। শেখ হাসিনা দেশে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির হুমকি দিয়েছেন।
আরও পড়ুন: ধানমন্ডি-৩২’র ঘটনায় একটি মহলের ষড়যন্ত্র থাকতে পারে: হাফিজউদ্দিন
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘মানুষের মনে জুলাই গণহত্যা নিয়ে যে ক্ষত রয়েছে, সে ক্ষততে শেখ হাসিনা একের পর এক আঘাত করে চলছেন। তার এই সহিংস আচরণের প্রতিক্রিয়া হিসেবে ৩২ নম্বরের বাড়ি ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে।’
‘অন্তর্বর্তী সরকার দেশ ও জনগণের জানমালের রক্ষায় সর্বোচ্চ সতর্ক আছে। আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সর্বাত্মকভাবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার যথাযথ চেষ্টা করছে।’
মানবতাবিরোধী অপরাধে একজন ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি শেখ হাসিনা বক্তব্য দেওয়া থেকে বিরত থাকলে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি এড়ানো সম্ভব বলে মনে করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।
সরকার আশা করে, ভারত যেন তার ভূখণ্ডকে বাংলাদেশে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করে—এমন কাজে ব্যবহৃত হতে না দেয় এবং শেখ হাসিনাকে বক্তব্য দেওয়ার সুযোগ না দেয়। অন্তর্বর্তী সরকার ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি চায় না।
আরও পড়ুন: শেখ হাসিনার কার্যক্রম নিয়ে নয়া দিল্লিকে প্রতিবাদ জানিয়েছে ঢাকা: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা
বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, জুলাই হত্যাকাণ্ডে যারা জড়িত ছিল তাদের বিচারকাজ পুরোদমে এগিয়ে চলছে। এই বিচার নিশ্চিত করে গণহত্যাকারীদের উপযুক্ত শাস্তি দিতে অন্তর্বর্তী সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। উসকানিমূলক কর্মকাণ্ডে যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে কী কী আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া যায় তা সরকার খতিয়ে দেখবে।
১ দিন আগে
ধানমণ্ডি ৩২-এর বাড়িতে ব্যাপক ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ
গেট ভেঙে ধানমণ্ডি ৩২ নম্বরে অবস্থিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বাড়িতে প্রবেশ করে ব্যাপক ভাঙচুর চালাচ্ছে বিক্ষুব্ধরা।
বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেওয়া অনলাইন ভাষণের প্রতিবাদে ধানমণ্ডি-৩২ নম্বরে বুলডোজার নিয়ে মিছিল করার ঘোষণা দেয় বিক্ষুব্ধরা।
ঘোষণা অনুযায়ী রাত ৯টায় বুলডজার নিয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের বাড়ি গুঁড়িয়ে দেয়ার হুমকি দিলেও বিক্ষুব্ধরা কর্মসূচি পাল্টে রাত ৮টার মধ্যে মিছিল নিয়ে বত্রিশ নম্বরে পৌঁছে যায় এবং বাড়ির ফটক ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে ভাঙচুর শুরু করে।
এ সময় বিক্ষুব্ধরা বলেন, ৩২ নম্বরের এই বাড়ি স্বৈরাচার আর ফ্যাসিবাদের প্রথম প্রতীক। এই বাড়িকে নিশ্চিহ্ন করে দেওয়া হবে। দেশে মুজিববাদ বলে কিছু থাকবে না। ফ্যাসিজমের কোনো চিহ্ন থাকবে না।
এ সময় তারা শেখ হাসিনার ফাঁসি চেয়ে স্লোগান দেয়। অনেকেই বাড়ির দোতালায় উঠে ভাঙচুর চালায় এবং হাতুড়ি, শাবল ও কাঠ দিয়ে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি ও বাড়ির অন্যান্য অংশ ভাঙচুর করে।
২ দিন আগে
গত বছর ‘প্রতিমা ভাঙা’ যুবক এবারও ভাঙল সরস্বতী প্রতিমা
আগামী সোমবার (৩ ফেব্রুয়ারি) সরস্বতী পূজা। পূজা শুরু হওয়ার তিন দিন আগে ফরিদপুরের একটি কালী মন্দিরে সরস্বতী প্রতিমা ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় এক যুবককে আটক করা হয়েছে।
শুক্রবার (৩১ জানুয়ারি) রাত ১১টার দিকে জেলার ভাটিলক্ষ্মীপুর এলাকার কালী মন্দিরে ঘটনাটি ঘটে। পরে সাড়ে ১২টার দিকে ওই যুবককে আটক করে থানায় নিয়ে যায় ফরিদপুর কোতোয়ালি থানা পুলিশ।
আরও পড়ুন: ঠাকুরগাঁওয়ে মন্দির ও প্রতিমা ভাঙচুর: সুষ্ঠু তদন্তের দাবি ফখরুলের
পুলিশ জানিয়েছে, আটক ওই যুবকের নাম মো. মিরাজউদ্দীন। তিনি ইজিবাইক চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করেন। তিনি রাজবাড়ী সদর উপজেলার বসন্তপুর ইউনিয়নের বাজেদপুর গ্রামের বাসিন্দা এবং বর্তমানে রাজবাড়ী রাস্তার মোড়ে একটি বাসায় ভাড়া থাকেন।
মন্দির কমিটির সদস্য রামচন্দ্র মালো বলেন, ‘আমাদের মন্দিরটি ভাটিলক্ষ্মীপুরের একটি সড়কের পাশে। শুক্রবার রাত ১১টার কিছু আগে মন্দিরের সামনে একটি ইজিবাইক এসে দাঁড়ায়। এরপর এর চালক মন্দিরের বারান্দায় ঢুকে সরস্বতী প্রতিমা ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিয়ে ভাঙচুর করেন। পরে স্থানীয়রা তাকে আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দেয়।’
আগেও এই ব্যক্তি (মিরাজউদ্দীন) ফরিদপুর শ্রী শ্রী রাধাগোবিন্দ ইসকন মন্দিরের সরস্বতী প্রতিমা ভেঙেছিল। ২০২৪ সালের ৭ই ফেব্রুয়ারির ওই ঘটনার পর তাকে পাগল বলে ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল বলে দাবি রামচন্দ্র মালোর।
এদিকে মন্দির কমিটির দেওয়া এ-সংক্রান্ত ২৬ সেকেন্ডের একটি সিসিটিভি ফুটেজেও এই ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেছে।
৬ হাজার টাকা চুক্তিতে মৃৎশিল্পীকে দিয়ে এ প্রতিমা বানানো হয় বলে জানান সরকারি রাজেন্দ্র কলেজের ছাত্র সমর মণ্ডল। তিনি বলেন, ‘আমরা এই মন্দিরের পাশের একটি ছাত্রাবাসে থাকি। এখানে আমরা ছাত্ররা মিলে সরস্বতী পূজা করতে চেয়েছিলাম। অনেক বন্ধুকে নিমন্ত্রণও দিয়েছি। কিন্তু প্রতীমা এমন এক সময় ভাঙা হল যে সংস্কারের সময়ও পাওয়া যাবে না।’
আরও পড়ুন: ফরিদপুরের ভাঙ্গায় মন্দিরের প্রতিমা ভাঙচুর
ফরিদপুর কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আসাদউজ্জামান বলেন, ‘আটক যুবককে পুলিশ হেফাজতে রাখা হয়েছে।’
ফরিদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশন্স) শৈলেন চাকমা বলেন, ‘মন্দির কমিটির একজন বাদী হয়ে মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। মামলা হওয়ার পর ওই যুবকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হবে।’
৬ দিন আগে
নড়াইলে ৯০-এর গণঅভ্যুত্থানের স্মৃতিস্তম্ভ ও ম্যুরাল ভাঙচুর
নড়াইলে ৯০-এর গণঅভ্যুত্থানে নিহত মানিক ও চয়নের স্মৃতিস্তম্ভ ও ম্যুরাল ভাঙচুর করা হয়েছে।
শনিবার (২৫ জানুয়ারি) সরকারি ভিক্টারিয়া কলেজের শহিদ মিনারের পাশে এবং কলেজের পূর্ব পাশের সীমানার কাছে এ ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শনিবার ভোর সাড়ে ৫টার দিকে ২৫ থেকে ৩০ জন ব্যক্তি শাবল ও হাতুড়ি দিয়ে তাদের স্মৃতিস্তম্ভ ও ম্যুরালে ভাঙচুর করে।
জানা যায়, তৎকালীন ছাত্রলীগনেতা মানিক সাহা ১৯৯০ সালের ২৯ নভেম্বর ছাত্রশিবিরের সঙ্গে এক সংঘর্ষে নিহত হন।
ছাত্রলীগ নেতা চয়ন মল্লিক ১৯৯২ সালের ১৬ অক্টোবর ছাত্রদলের হাতে খুন হন। এ দুটি ঘটনায় হত্যামামলা হলেও কেউ সাজা পায়নি।
আরও পড়ুন: সংস্কারের কাজ দৃশ্যমান হলেই নির্বাচন: মাহফুজ আলম
এ বিষয়ে নিহত মানিক-চয়ন স্মৃতি সংসদের সাধারণ সম্পাদক ফরহাদ হোসেন ও মানিক সাহার ভাই সোনা সাহা এ ঘটনার নিন্দা জানান।
নড়াইল সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সাজেদুল ইসলাম বলেন, এ বিষয়টি জানা নেই। খোঁজ-খবর নেওয়া হচ্ছে।
১ সপ্তাহ আগে