এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক
ঢাকা-উত্তরপশ্চিমাঞ্চল আন্তর্জাতিক বাণিজ্য করিডোর উন্নয়ন: বাংলাদেশকে ৩০০ মিলিয়ন ডলার ঋণ দেবে এডিবি
এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (এডিবি) এবং বাংলাদেশ সরকার মঙ্গলবার (২৮ নভেম্বর) বাংলাদেশের উত্তরপশ্চিমাঞ্চলের সঙ্গে রাজধানী ঢাকার আন্তর্জাতিক বাণিজ্য করিডোর উন্নয়নে ২৭৭ দমমিক ৮৮ মিলিয়ন ইউরো (৩০০ মিলিয়ন ডলার) ঋণচুক্তি সই করেছে।
ঢাকায় ইআরডিতে এক অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ও এডিবির পক্ষে যথাক্রমে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সচিব মো. শাহরিয়ার কাদের সিদ্দিকী এবং এডিবির কান্ট্রি ডিরেক্টর এডিমন গিনটিং ঋণচুক্তিতে সই করেন।
আঞ্চলিক উন্নয়ন ব্যাংকটি বলেছে, সড়কপথে বাংলাদেশের ৭০ শতাংশ যাত্রী পরিবহন হয় এবং ৬০ শতাংশ পণ্য পরিবহন হয়।
এই সহায়তা এডিবি’র দ্বিতীয় সাউথ এশিয়া সাবরিজিয়নাল ইকোনোমিক কো-অপারেশন (সাসেক) ঢাকা-উত্তরপশ্চিমাঞ্চলের করিডোর সড়ক প্রকল্পের জন্য ১ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলারের মাল্টিট্রাঞ্চ ঋণের তৃতীয় ধাপ।
এডিবি কান্ট্রি ডিরেক্টর এডিমন গিনটিং বলেন, ‘এই প্রকল্প সড়ক পরিবহন ব্যবস্থার আধুনিকীকরণ এবং উপআঞ্চলিক সংযোগ ও বাণিজ্যের উন্নয়নে বাংলাদেশের প্রতিশ্রুতিকে সমর্থন করে।’
তিনি বলেন, এটি ঢাকা ও দেশের উত্তরপশ্চিমাঞ্চল সড়ক করিডোরে যানবাহন পরিচালনার খরচ, ভ্রমণের সময়, যানবাহনের নির্গমন, দুর্ঘটনা ও যানজট কমাতে সাহায্য করবে।
গিনটিং আরও বলেন, ‘প্রকল্পটি করিডোর সংলগ্ন এলাকার অর্থনৈতিক উন্নয়ন ত্বরান্বিত করতে এবং ভুটান, নেপাল ও ভারতের সঙ্গে উপ-আঞ্চলিক বাণিজ্য সহজতর করতে সহায়তা করবে।’
প্রকল্পটি এলেঙ্গা থেকে হাটিকুমরুল হয়ে রংপুর পর্যন্ত ১৯০ কিলোমিটার অংশকে চার লেন করে বাংলাদেশের একটি দক্ষ ও আধুনিক পরিবহন ব্যবস্থার লক্ষ্য অর্জনে অবদান রাখবে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের জ্বালানি সক্ষমতা বৃদ্ধিতে ২০০ মিলিয়ন ডলার ঋণ দেবে এডিবি
এটি রাস্তার নিরাপত্তা বাড়াবে এবং নারীদের ভ্রমণকে নিরাপদ করতে ফুটব্রিজ, ফুটপাথ ও ধীরগতির ট্র্যাফিকের জন্য দুটি ডেডিকেটেড লেন অন্তর্ভুক্ত করবে।
কারণ গবেষণায় দেখা গেছে, নারীরা; বিশেষ করে পায়ে চলা বা ধীরগতির যানবাহন যেমন রিকশার মতো রুট বেশি ব্যবহার করে।
সড়ক ও জনপথ বিভাগের সড়ক পরিচালনা ও ব্যবস্থাপনাও জোরদার করা হবে। রাস্তা নির্মাণের জন্য জলবায়ু-স্থিতিস্থাপক নকশা গ্রহণ করা হবে।
১৯৯৪ সালে যুগান্তকারী যমুনা সেতু প্রকল্প অনুমোদনের পর থেকে এডিবি ঢাকা-উত্তরপশ্চিমাঞ্চলের সড়ক করিডোর উন্নয়নে বাংলাদেশকে সহায়তা করে আসছে।
২০১২ সালে অনুমোদিত সাসেক সড়ক সংযোগ প্রকল্পের অধীনে সড়কটির ৭০ কিলোমিটার জয়দেপুর-এলেঙ্গা অংশটি নির্মাণ করা হয়েছিল।
এটি বুড়িমারী ও বেনাপোল স্থলবন্দরগুলোর কার্যকারিতাও উন্নত করেছে, যা যথাক্রমে ভুটান ও ভারতে প্রবেশদ্বার।
পরিবহন অবকাঠামো এডিবির সাসেক প্রকল্পের কেন্দ্রবিন্দু, যা আঞ্চলিক উন্নয়নে সহায়তা করে।
এডিবির অর্থায়নে ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সাসেক সদস্য দেশগুলো পরিবহন খাতে ১৩ দশমিক ১৭ বিলিয়ন মূল্যের ৪৬টি প্রকল্পসহ ১৮ দশমিক ৪১ বিলিয়ন ডলারের বেশি মূল্যের ৭৯টি প্রকল্প সই ও বাস্তবায়ন করেছে।
আরও পড়ুন: দেশের গ্রামাঞ্চলে কমিউনিটি স্থিতিস্থাপকতা ও জীবিকা নির্বাহের জন্য ১২০ মিলিয়ন ডলার ঋণ দিচ্ছে এডিবি
এশিয়া প্যাসিফিককে সহায়তা করতে আগামী দশকে ১০০ বিলিয়ন ডলারের নতুন তহবিল উন্মোচন এডিবির
১ বছর আগে
গ্রামীণ সড়কের উন্নয়নে ফের সহায়তা বাড়িয়েছে এডিবি
দেশের চলমান গ্রামীণ সংযোগ উন্নয়ন প্রকল্পের জন্য ১৯০ মিলিয়ন ডলার অতিরিক্ত তহবিল অনুমোদন দিয়েছে এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (এডিবি)। এটি গ্রামীণ রাস্তাগুলোকে উন্নত করতে, কৃষি এলাকাগুলোকে আরও উৎপাদনশীল করে তুলতে এবং গ্রামীণ আর্থ-সামাজিক কেন্দ্রগুলোর উন্নতিতে অবদান রাখছে।
মঙ্গলবার এডিবির প্রধান পল্লী উন্নয়ন বিশেষজ্ঞ মাসাহিরো নিশিমুরা বলেন, ‘এটি এই প্রকল্পের জন্য এডিবির দ্বিতীয় ধাপের অতিরিক্ত অর্থায়ন। এর মাধ্যমে বাংলাদেশের গ্রামীণ জীবনযাত্রার অবস্থা উন্নয়নের জন্য সড়ক নেটওয়ার্কের আরও উন্নতি এবং জলবায়ু ও দুর্যোগ স্থিতিস্থাপকতা এবং সড়ক সম্পদ ব্যবস্থাপনায় উদ্ভাবনী বৈশিষ্ট্যের প্রবর্তন হবে।’
তিনি বলেন, ‘এই প্রকল্প গ্রামীণ এলাকায় পরিবহন দক্ষতা ও নির্ভরযোগ্যতা উন্নত করতে, কৃষি উৎপাদনশীলতা বাড়াতে এবং দেশের টেকসই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে সাহায্য করার জন্য কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে সহায়তা করছে।’
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের জন্য ৪০০ মিলিয়ন ডলারের ঋণ অনুমোদন এডিবি’র
চলমান প্রকল্পটি ২০১৮ সালের নভেম্বর মাসে অনুমোদিত হয়েছিল। যার লক্ষ্য ছিল প্রায় ১৭০০ কিলোমিটার গ্রামীণ রাস্তা সংস্কার করা, গ্রামীণ অবকাঠামো সংস্থা ও রাস্তা ব্যবহারকারীদের ক্ষমতা জোরদার করা এবং গ্রামীণ সড়কসংক্রান্ত মাস্টার পরিকল্পনা উন্নত করা।
২০২০ সাল থেকে মূল লক্ষ্যের সঙ্গে ৯০০ কিলোমিটারের বেশি গ্রামীণ রাস্তা যুক্ত করা হয়েছে।
বর্ধিত এই ঋণ আরও ১৩৫০ কিলোমিটার গ্রামীণ রাস্তার মান, জলবায়ু স্থিতিস্থাপকতা এবং সুরক্ষা বৈশিষ্ট্যগুলোর উন্নয়ন ঘটাবে।
এডিবি জানায়, এটি উপজেলা পর্যায়ে ১৮০টি ভ্রাম্যমাণ সড়ক রক্ষণাবেক্ষণ অফিসে সরঞ্জাম ও ট্রাক সরবরাহ করবে এবং জলবায়ু পরিবর্তনের অভিযোজনে প্রকৃতিভিত্তিক বায়োইঞ্জিনিয়ারিং সমাধানগুলোর ক্ষেত্রে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগের সক্ষমতা বৃদ্ধি করবে করবে।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেলপথ নির্মাণে ৪০০ মিলিয়ন ডলার দেবে এডিবি
এডিবি ২০২৩ অর্থবছরে বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস ৫.৩% কমিয়েছে
১ বছর আগে